মন্তব্যের মন্তাজ - ৭

অনিকেত এর ছবি
লিখেছেন অনিকেত (তারিখ: সোম, ১৮/০৮/২০০৮ - ১:২২অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আজকের লেখার অবতারনা----আপনাদের একটি গান শোনাবো বলে।

আমি জানিনা এই গানটি আপনারা শুনেছেন কিনা। এইটি 'বং কানেকশন' নামের হালের এক বাংলা ছবি থেকে নেয়া। এমনিতে আমার বাংলা ছবির গান শোনা হয় না বহুদিন। এর পেছনে আমার নিজস্ব উন্নাসিকতা বহুলাংশে দায়ী। তবে নিজের সমর্থনে আমি বেশ কিছু বাংলা ছবির গানের কথা উল্লেখ করতে পারি---যে গান গুলো এক সময় আমাকে অনেক দুঃস্বপ্ন ও নিদ্রাহীন রাত উপহার দিয়েছে। সচলায়তনের বন্ধুদের প্রতি আমার এক ধরনের দায়বদ্ধতা থাকায় আমি সেসব গান উল্লেখ করা থেকে নিজেকে বিরত রাখছি।

গানটির লিঙ্ক হল এইখানটায়

আগেই বলে রাখছি---গানটি দুর্বল চিত্তদের জন্যে নয়, বিশেষ করে রবীন্দ্র-অনুরাগী ষাটোর্ধ কেউ গানটি 'দেখলে' নিজ দায়িত্বে দেখবেন।

পৃথিবীতে আমি যে তিনটি জিনিস ভীষন ভালবাসি---- গান তাদের মাঝে অন্যতম। প্রথম দিকে আমি নিজেকে 'শুদ্ধতাবাদী' বলে ভাবতে পছন্দ করতাম। রবীন্দ্র-নজরুল-ডিএল রায়-রজনীকান্ত-অতুলপ্রসাদ এই পঞ্চ ভাস্করের গান ছাড়া আর কোন কিছু কেই পদের মনে হত না। এমনকি রোগ এতদূর ছড়িয়ে গেল যে---এই সব 'ভাল' গানের বাইরে কোন গান ভালো লাগলে নিজেকে শক্ত হাতে শাসন করতাম।

যাই হোক কালে কালে আমার এই প্রতিক্রিয়াশীল মনোভাব বদলায়। আমি এখন গানের ক্ষেত্রে নিজেকে সর্বভুক ভাবতে পছন্দ করি। আমি গান নিয়ে সকল রকম পরীক্ষা নিরীক্ষার পক্ষে। হয়ত বিজ্ঞানের মানুষ বলেই এরকম। বিজ্ঞানের চোখে কোন কিছুই প্রশ্নের উর্ধে হতে পারে না। প্রশ্নবাদী মন (সংশয়বাদী ইচ্ছে করেই বললাম না) না থাকলে বিজ্ঞান নিয়ে কাজ করা মুসকিল। হোক না একটা থিওরী আইন্সটাইন বা ফ্রিম্যান ডাইসন বা ভাইনবার্গের মস্তিষ্ক-প্রসূত---আপনার মনে যদি খটকা লাগে আপনি তৎক্ষনাৎ ঘাড় তেড়া করে প্রশ্ন করতে পারেন। কেউ এসে বলবেনা---আরে আরে করিস কি ব্যাটা, তোর কি মাথা খারাপ না পেট গরম হয়েছে যে তুই এই রকম মহারথীদের থিওরী নিয়ে প্রশ্ন তুলিস??

দুর্ভাগ্যবশত, জীবনের বাকি প্রায় সব গুলো ক্ষেত্রেই আমাদের এর উল্টোটা মোকাবেলা করতে হয়। সকল সময় কোন না কোন রক্তচক্ষু আমাদের ভাবনা চিন্তা নিয়ন্ত্রন করছে। কোন সময় মোল্লা, কোন সময় সরকার, কোন সময় আমাদের প্রিয় বুদ্ধিজীবিরা----সবাই আমাদের মুক্ত চিন্তার মুখে লাগাম টেনে আছেন। মোল্লা আর সরকারের ব্যাপারে সবাই কথা বলেন। কিন্তু বুদ্ধিবৃত্তিক সন্ত্রাসের বিষয়ে কেউ কথা বলতে চাননা।

আমি এমন অনেক লোক দেখেছি রবীন্দ্রনাথ বলতে অজ্ঞান---আক্ষরিক অর্থেই অজ্ঞান। রবীন্দ্রনাথ আমাদের এক সাংস্কৃতিক Taboo ! জানিনা কত জনের বিরাগ ভাজন হলাম এই কথা বলে। রবীন্দ্রনাথ বড় কবি, আমাদের ভাষায় 'বিশ্ব কবি', দুই দুইটি দেশের জাতীয় সঙ্গীতের রচয়িতা তিনি, সাহিত্যের প্রায় প্রতিটি শাখায় তিনি বিচরন করেছেন ঈর্ষনীয় অনায়াস-সাধ্যতায়, হাজার গানের লিপিকার, সুরকার তিনি ইত্যাদি ইত্যাদি-----আমরা ভেতো বাঙ্গালী, এমন মহার্ঘ্য ঘি-ভাত আমাদের পেটে সইবে কেন? কাজেই আমাদের বদহজম হবে এইটাই স্বাভাবিক। তাই রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে আমাদের চোঁয়া ঢেকুর তোলার শেষ নেই।

সকলেই জানেন রবীন্দ্রনাথ তাঁর নিজের গানের ক্ষেত্রে বেশ রক্ষনশীল ছিলেন। সঙ্গীতে রক্ষনশীলতা নতুন নয়। আমাদের এই রক্ষনশীলতাই জন্ম দিয়ে গেছে নানান ঘরানার। জন্ম দিয়েছে এক রাশ মহান 'অন্ধ' গায়কের। অসীম প্রতিভা নিয়ে এসে তারা পড়ে রইলেন একেক পর্ণকুটিরে। পাতিয়ালা ঘরানার কেউ গাইবেন না কিরানা ঘরানার রীতিতে, এমনকি এই ধরনের প্রচেষ্টাকেও সাংঘাতিক ভাবে নিরুৎসাহিত করা হবে। রবীন্দ্রনাথ মহান প্রতিভা নিঃসন্দেহে---কিন্তু তার নিজের গান নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষার ঘোরতর বিরোধী ছিলেন। ১৬ আষাড় ১৩৪৭ এ এক সঙ্গীত বিষয়ক বক্তৃতায় কবি বলছেনঃ

" এখন এমন হয় যে আমার গান শুনে নিজের গান কি না বুঝতে পারি না। মনে হয় কথাটা যেন আমার,সুরটা যেন নয়। নিজে রচনা করলাম, পরের মুখে নষ্ট হচ্ছে, এ যেন অসহ্য। মেয়েকে অপাত্রে দিলে যেমন সব কিছু সইতে হয়, এও যেন আমার পক্ষে সেই রকম।....................তোমাদের কাছে আমার মিনতি, তোমাদের গান যেন আমার গানের কাছাকাছি হয়; যেন শুনে আমিও আমার গান বলে চিনতে পারি।"

নিজের সৃষ্টির প্রতি এমন মমতা থাকা স্বাভাবিক। কিন্তু মমতা যেন এমন না হয় যে গায়কের ক্ষমতার অপচয় ঘটায়। রবীন্দ্রনাথ তার সময়েই অত্যন্ত কঠোর হাতে তার গানের উপর 'বিদ্রোহ' দমন করেছেন, স্মরনীয় দেবব্রত বিশ্বাসের ' ব্রাত্যজনের রুদ্ধ সঙ্গীত'।

নজরুল এই ব্যাপারেই অনেকটাই উদাসীন ছিলেন। গায়কের স্বাধীনতা দেয়াতে তিনি অকুন্ঠ ছিলেন। অবশ্য এই অপার 'স্বাধীনতা'র কুফলও আমরা দেখতে পেয়েছি। নজরুলের অনেক গানের বর্তমান রূপ আর আদি রূপের মাঝে আকাশ-পাতাল ফারাক। কোনটা ভাল শুনতে, সেইটা নিয়ে অবশ্য বিতর্কের অবকাশ আছে।

বিশ্বভারতীর নাগপাশ থেকে রবীন্দ্রনাথের মুক্তি মেলার সাথে সাথে আমরা বেশ কিছু আলোড়ন দেখতে পেলাম। একে একে বেশ অনেক জন রবীন্দ্রসঙ্গীত নিয়ে পরিমিত পর্যায়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করেছেন। পরীক্ষা নিরীক্ষা অবশ্য অধিকাংশ ক্ষেত্রেই যন্ত্রানুষঙ্গে হয়েছে। পাশ্চাত্য রীতির সঙ্গীতায়োজনে বেশ কিছু গান হয়েছে---সে গুলো নিঃসন্দেহে শ্রুতি-মধুর। পশ্চিম বঙ্গে শ্রীকান্ত আচার্য্য, স্বাগতালক্ষ্মী, লোপামুদ্রা প্রমুখ এ রকম বেশ ক'টি কাজ করেছেন। অমিত বন্দোপাধ্যায়ের সঙ্গীতায়োজনে(শ্রীকান্তের অশিকাংশ গানে ইনিই যন্ত্রানুষঙ্গে থাকেন) এই গানগুলো একেবারে প্রথম সারির না হলেও নিরীক্ষামূলক প্রচেষ্টা হিসেবে সাধুবাদ পাবার যোগ্য। এ প্রসঙ্গে, শ্রীকান্তের 'প্রেম এসেছিল' এলবামটি বা 'হৃদয় আমার' এলবামটির কথা উল্লেখ করতে পারি। এই এলবামগুলোর সঙ্গীত আয়োজনে কিছু কিছু অবধারিত ক্ষেত্রে Percussion Instrument এর অনুপস্থিতি এক অন্যরকমের আবহ তৈরী করে। উদাহরন স্বরুপ এই গানটি বা এই গানটির কথা বলতে পারি।

আমাদের দেশে অর্নব ও তার স্ত্রী সাহানা বাজপেয়ীর একটি রবীন্দ্রসঙ্গীতের এলবাম করেছেন এই আধুনিক যন্ত্রানুষঙ্গে। সেই এলবামের বেশ ক'টি গান আমার খুবই প্রিয়। সাহানা, অর্নব দু জনেই শান্তিনিকেতনের ট্রেনিং পাওয়া লোক। অর্নব নিজে চমৎকার এস্রাজ বাজান (এস্রাজ, সারেঙ্গী প্রায় লুপ্ত হতে চলেছে)। কাজেই প্রাচ্য-পাশ্চাত্যের সহজ পাচ্য এই মিশ্রন নিঃসন্দেহে শ্রবন সুখকর।

উস্তাদ আমজাদ আলি খাঁ আর সুচিত্রা মিত্র মিলে এক বার চেষ্টা চালিয়েছিলেন। সুচিত্রা গাইছিলেন মুল গানটি আর উস্তাদ আমজাদ আলী তার সরোদের মন্দ্রিত স্বরে নিয়ে আনছিলেন রূপান্তরের পরত। অতি সম্প্রতি পন্ডিত অজয় চক্রবর্তী প্রায় একই প্রচেষ্টা চালিয়েছিলেন। স্বভাবতই তার সে প্রচেষ্টা কে অনেকেই সুনজরে দেখেন নি।

একটু আগে যেমন বলছিলাম, পরীক্ষা নিরীক্ষার ফল সব সময়ে সুখকর হয় না। গানের ক্ষেত্রে নজরুল এর উদাহরন হয়ে আছেন। সকলেই যে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে মন মাতানো কিছু উপহার দিতে পারবেন---এমনটা আশা করা অযৌক্তিক। ঠিক তেমনি অযৌক্তিক হবে এই কথার ধুয়া তুলে experimentation বন্ধ করে দেয়া।

সমুদ্র মন্থনে কেবল অমৃত নয় গরলও উঠে এসেছিল। আমরা যদি অমৃতের পিয়াসী হই, গরলের অনিবার্যতা মেনে নিয়েই চলতে হবে----- বিষের ভয়ে যদি ঘরে কপাট দিয়ে থাকি, তাহলে অমৃত লাভের কোন সম্ভাবনা দেখিনা।

লেখার একেবারে শুরুতে দেয়া গানটা আমার কাছে আপাতত গরলের উদাহরন হয়েই থাকছে।


মন্তব্য

আলমগীর এর ছবি

ধুর! আগে হয়ে গেছে এটা নিয়া একচোট।
আমি ভাই নচিকেতার পাগল ভক্ত, তাই ভাল্লাগছে হাসি

পুনশ্চ: রেফারেন্স খেয়াল করি নাইক্কা।

অনিকেত এর ছবি

হে হে হে

নিঝুম এর ছবি

বং কানেকশনের ব্যাপারটা আগে জানা ছিল না । এখন জানলাম । গানের মাঝে উ লা লা , উলা লা ... নিয়ে কিছুক্ষন চিন্তা করলাম । পেছনের অদ্ভুত মিউজিক গুলো নিয়েও মাথা খাটালাম । ফলাফল হচ্ছে... মাথা ঝিম ঝিম করছে ।

নুশেরা তাজরীনের সাইট টা দেখলাম । বেশ রুচিশীল , চমত্‌কার । কেন যে তিনি সচলে লেখা ছেড়ে দিলেন... কে জানে ? তার সাথে আবার দেখা করিয়ে দেবার জন্য ধন্যবাদ অনিকেত ভাই কে ।

আর গান পাগলা অনিকেত ভাইকে এই লেখার জন্য অনেক ধন্যবাদ। দরকারী লেখা ।
--------------------------------------------------------
... বাড়িতে বউ ছেলেমেয়ের গালি খাবেন, 'কীসের মুক্তিযোদ্ধা তুমি, কী দিয়েছ আমাদের'? তিনি তখন আবারো বাড়ির বাইরে যাবেন, আবারো কান পাতবেন, মা জননী কি ডাক দিল?

---------------------------------------------------------------------------
কারও শেষ হয় নির্বাসনের জীবন । কারও হয় না । আমি কিন্তু পুষে রাখি দুঃসহ দেশহীনতা । মাঝে মাঝে শুধু কষ্টের কথা গুলো জড়ো করে কাউকে শোনাই, ভূমিকা ছাড়াই -- তসলিমা নাসরিন

অনিকেত এর ছবি

নিঝুউউউউউম,
ধন্যবাদ রে ভাই।
তোমার শরীর কেমন এখন?

মনজুরাউল এর ছবি

ঠিক কোনটার উপর জোর দেওয়া হল বুঝতে পারলাম না,
(আমার অক্ষমতাও হতে পারে)। সনাতনী রবীন্দ্রসঙ্গীত বা আধুনিক যন্ত্রানুষঙ্গের রবীন্দ্রসঙ্গীত দুটো দুই মেজাজের ,দুই স্বাদের। কে কোনটা চেখে দেখবে সেটা তার রুচি।

যেমন পীযুষ কান্তি সরকার বিশ্বভারতীর অবগুণ্ঠণ উঠে যাবার আগেই নতুন ধরণের মীড় ব্যবহার করে শ্রুতিপ্রিয় হয়েছেন। তেমনি বন্যা'র গাওয়া 'খাঁচার পাখি বলে......' কে কোন ভাবেই কি আধুনিক যন্ত্রানুষঙ্গে বাঁধা যায় ?গানটার মেজাজ হারাতে পারে ।

আপনার পোস্টটা ভাল লাগল।আমি সঙ্গীতবোদ্ধা নই,তবে এটা বিশ্বাস
করি যে _সব কিছুই একসময় পুরোনো হয়,সঙ্গীত বাদে ।

.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......

.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......

অনিকেত এর ছবি

প্রিয় মঞ্জুরাউল, আপনার মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ।

আমি আসলে দু'টি জিনিস বলতে চেয়েছিলামঃ----

১) গানের ক্ষেত্রে (এবং সেই সাথে শিল্পকলার অন্যান্য ক্ষেত্রে) আমাদের পরীক্ষা নিরীক্ষার স্বাধীনতা থাকা উচিত। কেউ যদি প্রচলিত বা প্রতিষ্ঠিত কাঠামোর বাইরে গিয়ে কিছু করতে চায়---আমাদের উচিত হবে তাকে নিরুৎসাহিত না করা।

২) আমাদের বঙ্গদেশীয় সঙ্গীতের ক্ষেত্রে রবীন্দ্র সঙ্গীতের বিপুল শ্রোতৃবৃন্দ রয়েছেন। কিন্তু আমরা প্রায় সবাই এইটা নিয়ে নিরীক্ষার ঘোর বিরোধী। আমাদের এর জড়ত্বের পেছনে রবীন্দ্রনাথের নিজের ভুমিকাও ছিল। তিনি নিজে তার গানের 'শুদ্ধতা' নিয়ে ছিলেন উৎকন্ঠিত। তাঁর নিজের সেই উৎকন্ঠা শত গুনে বর্ধিত হয়েছে তাঁর গানের শ্রোতাদের মাঝে। আমাদের একটা সমস্যা হল, সব কিছুতেই একটা পুজার ভাব নিয়ে আসা। শিল্পকলার ক্ষেত্রে আমাদের পূজারীর প্রয়োজন নেই---প্রয়োজন সাহসী অভিযাত্রীর। 'বং কানেকশন' ছবির এই গানটিতে সেই রকম একটা দুঃসাহসী প্রচেষ্টা দেখা গেছে। হয়ত আমার শুনতে ভালো লাগে নি, হয়ত অনেকের লেগেছে। আমার ভালো লাগেনি বলে আমার কোন অধিকার নেই এই রকমের প্রচেষ্টা থামিয়ে দেবার। নিরীক্ষার সুযোগ সবার থাকা উচিত। নিরীক্ষার ফলাফল কালের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবে----আমাদের মোটা লেন্স চোখে বুদ্ধিজীবিদের নির্দেশনায় নয়।

আমার কেন যেন কখনোই পীযুষকান্তির গান ভালো লাগে নি। এইটা একেবারেই আমার ব্যক্তিগত অভিমত। আমার কাছে তার গান শুনলে মনে হয়,--'এই বুঝি বেসুরো হয়ে গেল-----এই গেল বোধহয়-----'। গান শুনতে গিয়ে আমি কোনো টেনশনে ভুগতে চাইনা।

বন্যার গান প্রসঙ্গে আপনি যা বলেছেন, আমি তার সাথে একমত তো বটেই, মোটের উপর এইটাই বলতে চেয়েছিলাম লেখাটাতে। প্রতিটি গানের নিজস্ব একটা সত্ত্বা আছে, আছে
নিজস্ব 'চলন'। গানের ক্ষেত্রে যন্ত্রানুষঙ্গ নিয়ে নিরীক্ষা করতে গেলে সেইটা মাথায় রাখা জরুরী। আর এই বোধ'টাই শিল্পবোধ। আমার প্রিয় এক রবীন্দ্রসঙ্গীত হল
" গভীর রজনী নামিল হৃদয়ে----"
অত্যন্ত জটিল সুরের চলন এই গানে। দুম করে তাই এ গানের সঙ্গীতায়োজনে যে কোন যন্ত্র ব্যবহার করলে হবে না।

কেন জানি মনে হচ্ছে, আমি আবারো হয়ত আপনাকে হারিয়ে ফেলেছি। যদি তাই হয়, দয়া করে জানাবেন। আরো একবার ব্যাখ্যার চেষ্টা চালাব। সুচিন্তিত মন্তব্যের জন্য আবারো ধন্যবাদ।

অনিন্দিতা এর ছবি

সব কিছুই একসময় পুরোনো হয়,সঙ্গীত বাদে ।

একমত।

স্নিগ্ধা এর ছবি

অনিকেত - আপনি নিজেই তো চমৎকার রবীন্দ্র সঙ্গীত গাইতে পারেন, তো হাতে কলমে নিরীক্ষার ব্যাপারটা বাস্তবায়িত হয়ে যাক? হাসি

অনিকেত এর ছবি

হে হে হে হে (খাড়ান......আমারো দিন আসব, এই ভাবে জন সমক্ষে আমারে বেইজ্জত করলেন......!!!)

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

বং কানেকশান অনলাইনে কোথায় পাওয়া যাবে বইলেন তো।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

অনিকেত এর ছবি

মুর্শেদ ভাই,

একটা লিঙ্ক নীচে দিলাম।

http://www.rongila.com/content/category/6/21/55/

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

সম্ভবত কনফুসিয়াসের পোস্টে এই গান নিয়া একচোট হইছে আগে...
রবীন্দ্রসঙ্গীত নিয়া শ্রীকান্ত আচার্যরও একটা ভীন্নকাজ আছে... শুনতে পারেন পথের সাথী এ্যালবামটা...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।