LHC কি এবং কেন? আখেরী কিস্তি [ আপডেট সহ]

অনিকেত এর ছবি
লিখেছেন অনিকেত (তারিখ: বুধ, ১০/০৯/২০০৮ - ১১:৩৬পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

এই লেখা যখন শুরু করছি, তখন আমার LHC countdown timer সময় দেখাচ্ছে আর মাত্র ৯ ঘন্টা পরেই চালু হতে যাচ্ছে এ যাবত কালের সর্ব বৃহৎ এবং সবচেয়ে শক্তিশালী particle accelerator।

কি ঘটতে যাচ্ছে তখন? আসলেই কি আমাদের আয়ু মাত্র ঘন্টা কয়েক?

এই ভয়েই কি আমি নিজে ২১ ঘন্টা ধরে সচলায়তনে লগ-ইন করে বসে আছি---যাতে আমার শেষ মুহুর্তের কথা গুলো আমি আমার কিছু প্রিয় মানুষের সাথে শেয়ার করে নিতে পারি??? (এহহে---এইটা একটু বাড়াবাড়ি হয়ে গেল হাসি )

যাই হোক ফিরে যাই আমাদের আলোচনায়।

LHC : Large Hadron Collider। এর মধ্যে আমরা মোটামুটি প্রথম শব্দ আর শেষ শব্দ নিয়ে কথা বলেছি। এই মধ্যপদটির মানে কি?

নিউক্লিয়াসের মাঝে যারা ঘাপটি মেরে আছেন---প্রোটন আর নিউট্রন----তারা আবার ছোট ছোট কিছু কণা দিয়ে তৈরী, যাদের Quark বলে। তো, যারা কোয়ার্ক দিয়ে তৈরি(প্রোটন, নিউট্রন) তাদের একটা সাধারন নাম হল Hadron (গ্রীক adros থেকে এসেছে যার মানে 'ভারী')। নিউক্লিয়াসের বাইরে যারা আছেন--- ইলেক্ট্রন এবং আরো কিছু কণিকা যেমন মিউওন,যেগুলো কসমিক রশ্মি তে পাওয়া যায়---এরা আবার কোয়ার্ক দিয়ে তৈরী নয়। এদের তাই অন্যনাম---Lepton(গ্রীক leptos মানে,----ঠিক ধরেছেন 'হালকা')।

আমাদের LHC তে প্রোটন ব্যবহৃত হচ্ছে। সেই জন্য নামের মাঝে Hadron। নামকরনের সার্থকতা বোঝা গেল?

যেহেতু হাতে সময় বেশি নেই কাজেই জলদি করে মূল প্রসঙ্গে চলে আসি। LHC আমাদের কি কাজে লাগবে? কেনই বা একে নিয়ে এত্ত হইচই।

কারন গুলো একে একে বলি তাহলে?

প্রথম কারনঃ

আমাদের আশে পাশের চেনা জগৎটা শাসন করছে---না, শুধু প্রেম আর ক্ষুধা নয়, চারটি 'আদি' বল। আর যত প্রকারের বল ও বল প্রয়োগের ঘটনা আমরা অবলোকন করি (হ্যা, হ্যা, ছোটবেলায় ইস্কুলে স্যারেরা আপনার কানে যে বল প্রয়োগ করেছিলেন, সেটাও) তার সবই কিন্তু এই চারটি বলের সন্নিবেশনে তৈরী। বল গুলো হল যথাক্রমে :

Strong force:এইটা প্রোটন-নিউট্রনের মাঝে কাজ করে।

Weak force: এর জন্যে আকাশ ভরা সুর্য তারা আমাদের আলো বিলায়। এদের শক্তির উৎস হল এই বল।

Electromagnetic force: এ আমাদের চেনা জিনিস, বিদ্যুত আর চুম্বকের ব্যাপার।

Gravitational force: এইটা হল আমাদের সবচাইতে চেনা বল---মহাকর্ষ। এই বলের জন্যই আপনি ছোটবেলা বরই চুরি করতে গিয়ে গাছ থেকে ধপাস হয়েছিলেন হাসি

তো, এই চারটি বল কি ভাবে কাজ করে, কিভাবে একে অন্যের সাথে মেলামেশা করে এবং সবচাইতে জরুরি ঘটনা হল---এরা কি কোন সময় একীভুত ছিল? বা এক করা যায়?----এই সব প্রশ্ন নিয়ে যারা দিনরাত দিস্তার পর দিস্তা কাগজ নষ্ট করছেন তারা শেষমেষ একটা মডেল খাড়া করেছেন। সেই মডেলটার কাজ হল এই সব 'অদ্ভূতুড়ে' অশৈলী কাজ ব্যাখা করা। এই মডেলের নাম হল Standard model। LHC এর অন্যতম প্রধান কাজ হল এই মডেল কতটুকু কার্যকরী সেইটা যাচাই করা।

এখন পর্যন্ত Standard Model বেশ ভাল ভাবেই কাজ করেছে এবং কিছু কিছু ভবিষ্যত বানীও করেছে। কিন্তু এইটা অপুর্নাঙ্গ। এই মডেল কিছু কিছু ব্যাপারে ভীষনরকম চুপ। যেমন পদার্থের ভর। Standard Model ব্যাখ্যা করতে পারেনা কেন কিছু কণা ভীষন ভারি আর কেনই বা কিছু কিছু কণা ভর-হীন। একটা ব্যাখ্যা অবশ্য দেয়ার চেষ্টা হয়েছে যেটা Higgs mechanism নামে সমধিক পরিচিত। এইটা আবার কি? Higgs mechanism বলছে যে সারাটা বিশ্ব একটা বিশেষ 'ক্ষেত্রের' মাঝে নিমজ্জিত---Higgs field। আমাদের চেনা বৈদ্যুতিক ক্ষেত্রের মতই এটা অদৃশ্য কিন্ত তার উপস্থিতি জানান দিতে পারে। ধারনা করা হয়, বিভিন্ন কণা বিভিন্ন ভাবে এই Higgs field এর সাথে ঘষাঘষি করে। যার খাতির যত বেশি---সে তত ভারী। এই বিশেষ ক্ষেত্রের উপস্থিতি জানার উপায় হচ্ছে---একটা বিশেষ রকমের নতুন কণা আবিষ্কার করা যার নাম হলো higgs boson। Standard model যদি ঠিক হয়ে থাকে তাহলে আমাদের LHC কিন্তু Higgs boson আবিষ্কার করবে !!! Standard Model এর অনুসারীরা নিশ্বাস বন্ধ করে অপেক্ষায় আছেন---অনেকে নানা জায়গায় নতুন চাকরীর জন্য আবেদন করছেন শোনা যাচ্ছে।

দ্বিতীয় কারনঃ

আমাদের যে চারটি মুল বলের কথা বলা হয়েছে ---ধারনা করা হয় এরা আদতে একটা বলের প্রকারভেদ। বিজ্ঞানীরা হিসেব কষে দেখেছেন সৃষ্টির মুহুর্তের কিছু পরেই এই 'একীভুত একমেবাদ্বিতীয়ম' বলটি দেখা দেয় এবং এর কিছু পরে অবশ্য সেটা বাকী চার অংশে ভাগ হয়ে পড়ে। ঠিক কতটুকু সময়ের মাঝে এইটে ঘটেছিল? বিজ্ঞানীদের ধারনা সৃষ্টি মুহুর্তের অর্থাৎ বিগ-ব্যাং এর ১০^(-৪৫) সেকেন্ডের কিছু আগে পর্যন্ত এই super force ছিল--অখন্ড, একপ্রান, একীভুত। ১০^(-৪৫) সেকেন্ড মানে হল ১ সেকেন্ড কে ১ এর পেছনে ৪৫টা শুন্য-ওয়ালা সংখ্যা দিয়ে ভাগ করলে যা হবে ---তাই। আপনার নিশ্চয়ি জানা আছে এক সেকেন্ড কতটুকু সময়---'এক' বলাতেই এক সেকেন্ড শেষ।

যাই হোক, চারটি বলের মাঝে তিনটি কে মোটামুটি এক করা গেলেও চার নম্বরটি--মহাকর্ষ--- কিছুতেই মিলতে চাইছে না। এদেরকে একীভূত করার প্রচেষ্টা নিয়ে Supersymmetry নামের এক থিওরী। এ থিওরী সত্যি হলে কিছু বিশেষ কনা দেখতে পাবার কথা।LHC সেইটা খুজবে। আমাদের এই মহাবিশ্বের মাত্র ৪% জিনিসের হিসাব পাওয়া গেছে। এই ৪% হল আমাদের চারপাশে যতকিছু দৃশ্যমান বস্তু আছে, তাদের সবাইকে হিসেবে এনে। তাহলে বাকি ৯৬% ভাগ গেল কই?
বিজ্ঞানীরা বলছেন Dark matter (২৩%) আর Dark energy (৭৩%) নামের দুইটি জিনিসের কথা। Dark matter বা 'কৃষ্ণ বস্তু' আসলে আমাদের Supersymmetry -র predict করা কণা। কিন্তু সবচাইতে অস্বস্তির কারন হয়ে আছে dark energy বা 'কৃষ্ণ শক্তি'। এইটি সারা মহাবিশ্ব জুড়ে একেবারে সমান ভাবে ছড়িয়ে আছে---অর্থাৎ কোথাও বেশি কোথাও কম, এমন নয়। ধারনা করা হয় এইটের কারনেই আমাদের মহাবিশ্ব এমন পাগল-পারা হয়ে বেড়ে চলেছে। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা তাদের হিসেব করে বলেছেন যে আসলেই এই ধরনের কিছু থাকতে পারে।LHC পরখ করবে তাদের বক্তব্যের সত্যতা।

তৃতীয় কারনঃ

মহাবিশ্ব কেবল বস্তু(matter) দিয়ে তৈরী। কিন্তু নিয়ম বলে সৃষ্টির শুরুতে বস্তু ও প্রতি বস্তু(Anti-matter) সমান সমান ছিল। কিন্তু এখন কেন আমরা কেবল বস্তু গুলো দেখি? তাদের সঙ্গীরা লুকালো কোথায়? LHC জবাব খুজবে এটারও।

চতুর্থ কারনঃ

সাম্প্রতিক থিওরীরা বলছে যে বিগ-ব্যাং এর অব্যবহিত পর, সমস্ত কিছু একটা ঘন থিকথিকে স্যুপের মত ছিল। এই স্যুপের নাম হল Quark-gluon plasma বা সংক্ষেপে QGP। আমাদের LHC সেই সৃষ্টি মুহুর্তে আমাদের কে নিয়ে যেতে পারে। কিভাবে? পরস্পরের বিপরীতমুখি দু'টো প্রোটন বিমের বা সীসার বিমের মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটিয়ে। এ রকম অবস্থায় LHC এর ভেতরে তাপমাত্রা হবে সূর্যের ভেতরের তাপমাত্রার ১০০০০০ গুন বেশি!!!!

-আর এই তথ্য দিয়েছে আমাদের মাথা খারাপ করে। কি সর্বনাশ!! সুর্যের চেয়ে বেশি তাপমাত্রা যদি তৈরী হয় তাহলে আমরা টিকব কি করে??

শুধু কি তাই? কিছু কিছু বিজ্ঞানিদের মতে এত প্রচন্ড গতিশীল প্রোটন বিমের সংঘর্ষে তৈরি হতে পারে ছোট ছোট ব্ল্যাক হোল। আর আমরা যেমন জানি---ব্ল্যাক হোলের কাজই হল সব কিছু গিলে খাওয়া। তবে? শেষ পর্যন্ত ব্ল্যাক হোলের পেটেই কি যেতে হবে?

ভয় পাবার কিস্যু নেই----

বলছেন LHC এর বিজ্ঞানীরা। প্রচন্ড গতিশীল প্রোটনের শক্তি মাপা হয় TeV বা টেরা ইলেক্ট্রন ভোল্টে। সবচাইতে গতিবেগ সম্পন্ন প্রোটনের শক্তি হবে ৭ TeV---যা এখন পর্যন্ত পৃথিবীতে তৈরী করা যায় নি। কিন্তু প্রকৃত ক্ষেত্রে TeV শুনে ভড়কানোর কোন কারন নেই। TeV কে যদি আমাদের পরিচিত শক্তির মাত্রায় নিয়ে আসি---সেটা হবে এক মশার ওড়ার সময়ে ব্যয়িত মোট শক্তির কাছাকাছি!!!

শেষ কবে আপনি মশার ওড়া দেখে ভয় পেয়েছেন???

LHC এর লোক জন বলছেন,এটা সত্যি যে আমরা 'সৃষ্টি
মুহুর্তের অবস্থা' তৈরি করতে যাচ্ছি---কিন্তু আপনারা যেটা খেয়াল করছেন না--সেটা হল, গোটা ঘটনা ঘটছে অত্যন্ত ক্ষুদ্র এক পরিসরে। সংঘর্ষের স্থানের ক্ষুদ্রত্ব আর সেখানে উৎপন্ন শক্তির পরিমান কে যখন আমরা আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের আওতায় নিয়ে আসব, তখন দেখব যে এইটা আসলে তেমন কিছুই না। বরং ঠিক এই মুহুর্তে এর চেয়ে অনেক গুন শক্তিশালী
মহাজাগতিক রশ্মি আমাদের পৃথিবীর বুকে আছড়ে পড়ছে। আর পৃথিবীর বয়েস জানেন তো? প্রায় ৪৬০ কোটি বছর। এত্তদিনের মহা জাগতিক রশ্মির সংঘর্ষে যখন আমরা ঘায়েল হইনি----তখন পুচকে LHC এর ভয়ে থরিহরি কম্পমান না হলেও চলবে। একথা সত্য যে LHC বেশ বড়সড় শক্তির উদ্ঘাটন করবে---কিন্তু মহাবিশ্বের আরো আরো সব মাস্তানের কাছে এইটা নস্যি।

আর ব্ল্যাক হোল?? হু, সেইটা তৈরি হবে ঠিকই কিন্তু এত স্বল্পজীবি হবে যে তারা প্রায় সাথে সাথেই উবে যাবে এবং বেচারাদের জন্ম হয়েছিল কি না আদৌ--সেটা বুঝতে হবে তারা ধংসের পর আরো কিছু ছোটখাট কনিকার ছূটোছুটি দেখে।

বুঝলেন তো? ভয়ের কিস্যু নেই। আমি আছি না??

ওহ হ্যা ভাল কথা---এসবই কিন্তু আমাদের এখনকার থিওরীর উপর ভিত্তি করে বলা। এগুলো যে ঠিকই তার
কি কোন গ্যারান্টি আছে??

হুমম, আর সাড়ে সাত ঘন্টা পরেই জানা যাবে---

কি বলেন???

আপডেটঃ

ওরে মরি নাই মরি নাই-------
বাইচ্যা আছি, বাইচ্যা গেছি----

এবং LHC এর উদবোধনও সফল


মন্তব্য

তারেক এর ছবি

সবগুলো পর্ব পড়লাম। এত্ত সহজ করে বলেছেন... কী বলবো? দূর্দান্ত !
আর ভাই, মাফ সাফ করে দিয়েন। দুই দিনের দুনিয়া চোখ টিপি
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

অনিকেত এর ছবি

থ্যাঙ্কু বস। ভালো লাগায় ভাল লাগল
জীবনের শেষ মুহুর্তটা আরেকটু সহনীয় হয়ে উঠল
চোখ টিপি

রাফি এর ছবি

সহজ ভাষায় জটিল ব্যাপার অনেকটাই বুঝলাম। বেশ মজাদার কিছু উপমা দিয়েছেন। খুব খুব ভাল লেখা...।

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

অনিকেত এর ছবি

থ্যাঙ্কু রাফি।

অপ্রিয় এর ছবি

হিগস্ বোসন এর বোসন যে আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সত্যেন্দ্র নাথ বসুর বোস থেকে এসেছে এটি বলে দিলে অনেকের ভাল লাগতো। আগের পর্বগুলো পড়িনি, সেখানে বলে থাকলে ঠিক আছে।

+++++++++++++++++++++++++++++
ঈশ্বরে বিশ্বাস নেই এই পাপীর, তবে বিশ্বাস করি এই আমি বিশ্বাসীদেরই প্রার্থনার ফসল

+++++++++++++++++++++++++++++
ঈশ্বরে বিশ্বাস নেই এই পাপীর, তবে বিশ্বাস করি এই আমি বিশ্বাসীদেরই প্রার্থনার ফসল

কীর্তিনাশা এর ছবি

গুরু গুরু (গুরু)গুরু গুরু

এই এক্সপেরিমেন্টের রেজাল্ট জানিয়ে পোস্ট দিবেন কখন?
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

ফারুক হাসান এর ছবি

পাবলিকরে ভয় ধরায় দেয়ার জন্য এইটাই যথেষ্ঠ

এখনও ভয় পান নাই? তাইলে এইটা দেখেন...

চাচা মিয়া বলছেন ভয়ের কিচ্ছু নাই

তারেক এর ছবি

জটিল তো ভিডিওগুলা !
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

শিক্ষানবিস এর ছবি

অনেক কিছুই পরিষ্কার হয়ে গেল। হ্যাড্রন আর লেপ্টনের বিষয়টা মাঝে মাঝেই পেঁচিয়ে ফেলতাম। এখন থেকে আর ভুল হবে না।
ভয়ের আসলেই কিছু নেই। কারণ এলএইচসি সম্বন্ধে সবচেয়ে ভাল জানেন এই প্রকল্পে কাজ করা আট হাজার বিজ্ঞানীরাই। তারাই যখন বলছেন এতে ভয়ের কোন কারণ নেই, তখন তা থাকার প্রশ্নই উঠে না। নিরাপত্তা নিয়ে কোন সমস্যা থাকলে তো ইওরোপের কোন দেশই তা অনুমোদন করতো না। তাদের বেঁচে থাকার শখ নিশ্চয়ই আমাদের চেয়ে কম না।

আমি উইকিপিডিয়ায় দেখলাম, আজকে শুধু পুরো কলাইডারে প্রোটন রশ্মি চালনা করা হবে, চূড়ান্ত সংঘর্ষ ঘটানো হবে ২১শে অক্টোবর। এটা কি ঠিক?
আর হ্যা, পরীক্ষাটা হয়ে যাওয়ার পর আপডেট জানাতে ভুলবেন না যেন!

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

উপাদেয় করে লিখেছেন চলুক
সূর্য্যের ভেতরের তাপমাত্রা মানে কি একদম কোরের ১৫ বিলিয়ন ডিঃ এর দশহাজারগুন? বলেন কি?????
আমারতো মনে হচ্ছে তাহলে সবচেয়ে বড় সম্ভাবনা হলো কিছু নিউট্রিনো ধরা পড়বে চোখ টিপি

আচ্ছা, যে জায়গাটা বুঝছিনা, প্রোটনে প্রোটনে সংঘর্ষে ওরকম উঁচু তাপমাত্রা হলেই যে কোয়ার্কগ্লুওন তৈরী হবে সেটা কি নিশ্চিত? মানে, বিগ ব্যাংয়ের সময় তো বিশাল শক্তিও উপস্থিত ছিলো। নাকি শক্তি এখানে ফ্যাকটর না?

আরেকটা যে খচখচানি, সেটা হলো বিলিয়ন বিলিয়ন প্রোটনকে নিশ্চয়ই কোলাইডারে ছাড়া হবে? এরা একই মুহূর্তে মিলিয়ন মিলিয়ন লেভেলে সংঘর্ষ ঘটাতে পারে এমন সম্ভাবনা আছে? বুঝতেছিনা, তাহলে একই মুহূর্তে মিলিয়ন মিলিয়ন ব্ল্যাক হোল তৈরী হওয়ার চান্স আছে কিনা।
(ভাই, কণা-টণার বিষয়ে একবারেই অজ্ঞ আমি, যা জিজ্ঞাসা করলাম তা আপনার লেখার উপর ভিত্তি করেই, উল্টাপাল্টা প্রশ্ন মনে হলে মনে কিছু নিয়েননা চোখ টিপি )
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

অনিকেত এর ছবি

প্রিয় জ্বিনের বাদশা,

আপনার চমৎকার প্রশ্নের জন্য ধন্যবাদ।

প্রোটনে প্রোটনে সংঘর্ষে ওরকম উঁচু তাপমাত্রা হলেই যে কোয়ার্কগ্লুওন তৈরী হবে সেটা কি নিশ্চিত? মানে, বিগ ব্যাংয়ের সময় তো বিশাল শক্তিও উপস্থিত ছিলো। নাকি শক্তি এখানে ফ্যাকটর না?

LHC তে প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ৬০০ মিলিয়ন সংঘর্ষ হবে। এই সংঘর্ষেরই একটা ফল QGP। আর বিগ-ব্যাং এর যে কথা বলছেন, সেইটাই তো আমরা পরখ করে দেখতে চাইছি। বিগ-ব্যাং এর কিছু পরেই ঐ QGP phase ছিল।LHC আমাদের সেই মাহেন্দ্রক্ষনে নিয়ে যাবে।

আর ব্ল্যাক হোল বিষয়ে বলতে পারি---ব্ল্যাক হোলের মূল শক্তিটা আসে তার অন্তঃস্থিত পদার্থের ভরের কারনে। একটা নক্ষত্র যখন মৃত্যুর মুখোমুখি হয়, তখন তার নিজের বিশাল ভরের কারনে মহাকর্ষ বলের প্রভাবে সে দ্রুত সংকুচিত হতে থাকে এবং এক পর্যায়ে সে ব্ল্যাক হোলে পরিনত হয়।

আমাদের LHC তে ব্ল্যাক হোল তৈরি হবে কিন্তু সেটা পদার্থের ভরের কারনে নয় কিন্তু। সেইটা হবে প্রচন্ড গতিবেগে ঘুরতে থাকা প্রোটোন-প্রোটন সংঘর্ষের কারনে। আর প্রোটন তো জানেনই---ছোট্ট একটা কণা। কাজেই ব্ল্যাক হোল তৈরি হলেও যেহেতু এত পলকা তাই খুব 'নির্জীব' টাইপের কিছু একটা হবে--তার উপর স্বল্পজীবি।
বুঝতেই পারছেন তাহলে-----

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

ধন্যবাদ, ক্লিয়ার হলো
বিশেষ করে ব্ল্যাক হোলের ব্যাপারে মনে হয় নিশ্চিন্ত হওয়া যায় ... কারণ তৈরী ব্ল্যাখোলের g যত বেশীই হোক, ভর এত কম হবে যে একটা মশাকেও হয়ত গিলতে পারবেনা চোখ টিপি
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

বজলুর রহমান এর ছবি

Weak force: এর জন্যে আকাশ ভরা সুর্য তারা আমাদের আলো বিলায়। এদের শক্তির উৎস হল এই বল।

কথাটি বিভ্রান্তিকর। আসলে ফিউশন প্রক্রিয়াতে মুক্ত প্রোটন থেকে হিলিয়াম তৈরীর সময়ে (বেশ কয়েক জটিল ধাপে) ভর কমে যাওয়াতে বেশীরভাগ শক্তি নির্গত হয়, এবং ফিউশন সবল বলের কারণেই হয়ে থাকে।

তবে নিউক্লিয়াসের ভারসাম্য বজায় রাখতে কিছু দুর্বল বেটা ক্ষয় হয়, যাতে ইলেক্ট্রন, পজিট্রন, নিউট্রিনো এই সব বেরিয়ে আসে। সেটা তারাদের শক্তির মূল উৎস নয়।

ফিউশনের সময়ে প্রচন্ড বেগে কণাদের ধাক্কাধাক্কির ফলে অনেক তাপমাত্রার সৃষ্টি হয়, এবং তার ফলে ফোটন কৃষ্ণবস্তু বিকিরণ হিসাবে বেরিয়ে আসে, যা আমরা আলো হিসাবে দেখি।

অনিকেত এর ছবি

মোটেই বিভ্রান্তিকর নয়

Weak force আসলেই কিন্তু সুর্যের শক্তির উৎস।

কিভাবে?

আপনি যেমন বলেছেন, সুর্যের শক্তিটা আসে ফিউসন প্রক্রিয়ায়। সেইটা কি? এই প্রক্রিয়ায় হাল্কা ভরের দূটো পরমানু এক হয়ে ভারী একটা পরমানু তৈরি করে।

আমাদের weak force এই ঘটনার একেবারে প্রথম ধাপ ঘটানোর জন্য দায়ী। weak force এর কারনেই হাইড্রোজেন পরমানু মিলে 'ভারী হাইড্রোজেন'(Deutoruim) তৈরি হয় যেটা ছাড়া আসলে ফিউসন শুরুই হতো না!!!

কাজেই weak force ছাড়া সুর্য জ্বলত না...!!

১৯৭৯ সালে সালাম-ভাইনবার্গ-গ্ল্যাসো যখন electroweak interaction জন্যে Nobel prize পান তখন Nobel committee যে press release দিয়েছিল সেখান থেকে উদ্ধৃত করছিঃ

"The energy of the sun, all-important for life on earth, is produced when hydrogen fuses or burns into helium in a chain of nuclear reactions occurring in the interior of the sun. The first reaction in this chain, the transformation of hydrogen into heavy hydrogen (deuterium), is caused by the weak force. Without this force solar energy production would not be possible"

বজলুর রহমান এর ছবি

শক্তি নির্গমন প্রক্রিয়ার প্রথম পদক্ষেপকে যদি কেউ "শক্তির উৎস' বলে তাহলে বিভ্রান্তির সম্ভাবনা থাকে। সামগ্রিক হিসাবে প্রায় পুরো শক্তি-ই আসে সবল বল থেকে।

অনিকেত এর ছবি

I stand by my comment!

হিমু এর ছবি

জিওতে পড়লাম কিছু ইন্টারেস্টিং ব্যাপার। তবে আপনার এই সিরিজ পড়ে কণিকাপদার্থবিদ্যার প্রতি আকর্ষণ অনুভব করছি আবারও। কোয়ার্ক সম্পর্কে সময় ও সুযোগ পেলে লিখবেন, এ ব্যাপারে জানি খুব কম।


হাঁটুপানির জলদস্যু

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- বিজ্ঞানীরা যদি ভুলভাল হিসাব করে থাকে তাইলে? তার মানে আমি আর কিছুক্ষণ পরে ভ্যানিশ হইয়া যাব? আয়হায়, ভ্যালেন্তিনার লগে তো এখনো কথা হইলো না আমার! মন খারাপ
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

অনিকেত এর ছবি

আমারে নাম্বার দেন
আপনার হইয়া কথা কইয়া লমু চোখ টিপি

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- নাম্বার আছে কিন্তু দিমু না। আপনের লগে বিশ্বাস নাই। ইনফ্যাক্ট কারো লগেই নাই। দেঁতো হাসি
অনেক জনগণ ভ্যালেন্তিনার পিছে পইড়া আছে, তার মধ্যে সচলায়তন ইউনিয়ন পরিষদের জনৈক মেম্বর সাব অন্যতম। আর মজলিসে শুরার বাকী দুই বালকের নাম নাই বা নিলাম।

কিন্তু কথা হইলো, বাইচ্যা কি আছি নাকি নরক থাইকা ব্লগাইতাছি- এইটা ইট্ট কনফার্ম কইরেন বস। বড়ই টেনশনে আছি!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

জিফরান খালেদ এর ছবি

কথা হইলো আমরা কি মারা যাইতেসি নাকি না?

যদি না গিয়া থাকি, তাইলে, অনিকেতবাবু আরেকটু আগান। আরেকটু ক্যান, অনেকদূর আগান। ভাল্লাগতেসে।

অনিকেত এর ছবি

এখনো তো মরি নাই---হে হে হে

থ্যাঙ্কু বস, আপনার কমেন্টের জন্য

tulip [অতিথি] এর ছবি

আমার পোস্ট তো গেলো না!

স্নিগ্ধা এর ছবি

সাড়ে সাতঘন্টা পরে বেঁচে থাকলে (জানি, থাকবোই মন খারাপ ) আপনার লেখার প্রশংসা করে যাবো -

সবজান্তা এর ছবি

লেখাটা অতীব সুস্বাদু হয়েছে বস।

আপনাকে একটা অনুরোধ করি, রাখবেন ?

সচলায়তনে বিজ্ঞানের উপর লেখালেখি হয় খুব কম, শিক্ষানবিস আর অভিজিৎ'দাই যা লেখেন। একসময় পদার্থবিজ্ঞান বিশেষত জ্যোতিপদার্থবিজ্ঞানের প্রতি দুর্বার আকর্ষণ বোধ করতাম। কিন্তু এই মিস্ত্রিগিরির পড়াশোনা করতে যেয়ে ওসবের জ্ঞানও শূন্যের কোঠায়।

অনেকদিন আগে সুবিনয় মুস্তফী নবিশদের জন্য চমৎকার অর্থনীতির পাঠ লিখেছেন। আমার অনুরোধ এটাই, থেমে যাবেন না। পদার্থবিজ্ঞানের বিষয়গুলিকে এমন সহজভাবে লিখতে থাকুন। আমাদের পড়াও হলো, বাংলা সাহিত্যে প্রাঞ্জল বিজ্ঞান রচনার অভাবও মিটলো।


অলমিতি বিস্তারেণ

অনিকেত এর ছবি

ভাই রে,

এমন সদয় মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
আমি পদার্থবিজ্ঞান নিয়ে কাজ করি। কিন্তু জ্যোতির্বিজ্ঞান বা High energy particle physics কিন্তু আমার বিষয় না। আমার মুল ক্ষেত্র CFD-Computational Fluid Dynamics.

কিন্তু তোমার এই মন্তব্যে উৎসাহ বোধ করছি। এখন থেকে মাঝে মাঝে এইরকম কিছু লেখা দেবার চেষ্টা করব। তবে নির্ভয়ে থাক। এত্ত বড় লেখা আর দিবো না---অবশ্য যদি আবারো আমাদের মরন মুহুর্ত্ত এসে হাযির হয়, তাহলে অন্য কথা, হে হে হে

tulip [অতিথি] এর ছবি

বলতে গেছিলাম collision cross section বলে একটা জিনিস আছে। তাই billion billion proton ছুটে গেলেও মুখোমুখি collsion হয় খুব ছোটো জায়গা জুড়ে।

অনিকেত এর ছবি

চমৎকার কথা। টিউলিপ, আপনিও কি এই অভাগাদের লাইনে নাকি? Physicist??

tulip [অতিথি] এর ছবি

অনিকেত,
আপনার লেখাটি চম‌তকার!
আমি সামান্য theorist,মাঝেসাঝে experiment র খবর রাখতে হয়।

অনিকেত এর ছবি

সর্বনাশ!!!

এখন থেকে সাবধানে 'গুল' মারতে হবে
হাসি

সবজান্তা এর ছবি

এই লিঙ্কটাই ভালো লাগছে সবচেয়ে বেশি

http://hands-on-cern.physto.se/ani/acc_lhc_atlas/lhc_atlas.swf

আরেকটা মজার ছবি দিলো খুব কাছের এক বন্ধু,

http://www.google.com/logos/lhc.gif


অলমিতি বিস্তারেণ

শিক্ষানবিস এর ছবি

লিংকগুলো দারুণ।
"হ্যান্ড্‌স অন সার্ন" সাইটে দেখলাম "প্রমিত মডেল" এর একটা টিউটোরিয়ালও আছে। কাজে লাগবে।

অনিকেত এর ছবি

লিঙ্ক গুলোর জন্য ধন্যবাদ

উন্মাতাল তারুণ্য এর ছবি

দারুণ লেখা! অনিকেত ভাই, দয়া করে থামবেন না। বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান নিয়ে এই রকম দম ফাটানো থ্রিলার কেউ লেখে না। আপনার মত করে এই স্টাইলে লেখা গোটা কতক বই থাকলে বাংলার অলিতে গলিতে বেশ কিছু ক্ষুদে বিজ্ঞানী তৈরি হত।

অনিকেত এর ছবি

অশেষ ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
ভালো থাকবেন।

tulip [অতিথি] এর ছবি

লেখা খুব ভালো হয়েছে। নতুন পর্বের জন্য বসে আছি।
বাংলায় এইধরনের উপাদেয় করে লেখার খুব প্রয়োজন,তাহলে অনেকে আগ্রহ পাবে।

অনিকেত এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

একজন Theorist এর কাছ থেকে প্রশংসা পাওয়া আমার জন্যে বিরাট ব্যাপার।

ভালো থাকবেন, আর আপনিও কিছু লিখুন না কেন?

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

দারুন, অনিকেতদা! আপনার বোঝানোর ঢং সত্যিই প্রশংসনীয়। এত সহজ করে বলেছেন যে খুব চমৎকার লাগল। হাসি
_________________________________________
বিষন্নতা ছোঁয় আমায় মাঝে মাঝেই, কখনো কি ছোঁয় না তোমায়?

অনিকেত এর ছবি

থ্যাঙ্কু বস

নিরিবিলি এর ছবি

যাক...
বাইচ্যা আছি, বাইচ্যা গেছি----

অনিকেত এর ছবি

হাসি

tulip [অতিথি] এর ছবি

অতিথি লেখক হিসাবে ব্লগ লিখতে গেছিলাম। দেখি সরি বলে!
কয় ২৪ ঘন্টা পরে আইতে!তিনবার এইরম হইলো! মন খারাপ(((

অতিথি লেখক এর ছবি

theorist শুইনা মনে হইল আমার grand সব theory গুলান সচল এ দিতে থাকলে কেমুন হয়? হো হো হো)))
-tulip

অনিকেত এর ছবি

খুবই ভালো হয়।

দিতে থাকেন----

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

অসাধারন এই পোস্টের জন্য আপনাকে জাঝা!!

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

অনিকেত এর ছবি

থ্যাঙ্কু বস

tulip [অতিথি] এর ছবি

যেমুন ধরেন,আমার পয়লা theory:
spacetime যদি continuous না হইয়া ছোটো ছোটো গোল
গোল sphereহইত! ছোটো মানে অতি ছোটো। Planck length এরো কম।
হো হো হো)))))))))

tulip [অতিথি] এর ছবি

দোসরা theory হইলো:
গরম হাইড্রোজেন প্লাজমা যদি spiral আকারে ঘুরাইয়া ঘুরাইয়া
stable করা যাইত,তারপরে যদি pp' দিয়া ignition করা যাইত!
হাসি :-) হাসি

tulip [অতিথি] এর ছবি

চিন্তা কইরেন না,আরো আছে।
হো হো হো হাসি)) হো হো হো) হো হো হো)

জিফরান খালেদ এর ছবি

tulip ভাই বা অনিকেত ভাই,

আপ্নেরা হারুন অর রশীদ (ফিজিক্সেরটা, সমাজবিজ্ঞানেরটা না) স্যারের মত কইরা বা আরও ভাল কইরা বিজ্ঞান ও দর্শনের উপর যদি লিখতেন। তার একটা বই আসিলো... বিজ্ঞান ও দর্শন... কি যে ফাটাফাটি... প্রতিটা পদার্থবিজ্ঞানীর দার্শনিক পটভূমিকা লয়া লিখা... জগত, অস্তিত্ব, মিনিং এইগুলা লয়া একেকজনের চিন্তা কি সিলো, সেইটা কিভাবে তাগোর কাজ প্রভাবিত করসে... এইসব... আপনারা কেউ যদি করেন, তো নাদান বান্দা উপকৃত হই... খেয়ালে রাইখেন...

অনিকেত এর ছবি

প্রিয় জিফরান,

আপনার কথাটা মনে থাকল।

হারুন স্যারের অনেক লেখার মুগ্ধ পাঠক আমি নিজে। স্যারের পক্ষে যে অনায়াস-সাধ্যতায় বিজ্ঞান ও দর্শন নিয়ে আলাপ করা সম্ভব, সেটা আমার পক্ষে কখনোই সম্ভব না---প্রধান কারন মুলত আমার নিজের জ্ঞানের স্বল্পতা।

কিন্তু তারপর ও অনুরোধটি মনে রইল।

ভালো থাকবেন

জিফরান খালেদ এর ছবি

ধন্যবাদ ভাইয়া।

জাস্ট মনে রাইখেন। বা, এই ধরণের বই পাতিও যদি থাকে, হারুন স্যারেরটার মতো, তাইলেও যদি আমারে জানাইতেন! বজলুর রহমান বা টিউলিপ ভাইয়ের প্রতিও আমার এই অনুরোধ।

হারুন স্যারের কি এইরকম আর বই আসিলো? থাকলে আমি আনায়া লমু।

আমি অপেক্ষায় থাকবো বস। আপনিও ভাল থাকেন।

রণদীপম বসু এর ছবি

আমি ভাই মন্তব্য করমু অক্টোবর একুশের পর। এখনো ভুত হইয়া যাওয়ার কোন পরীক্ষা কি করছে ? কতকগুলো প্রোটন কণা একবার ক্লকওয়াইজ এবং পাঁচ ঘণ্টা পর আবার এণ্টি ক্লক ওয়াইজ ছাইড়া টেস্ট করছে কেবল যন্ত্র কাজ করে কিনা যাচাই করতে। এটা যদিও সফল, তবে আসল সংঘর্ষ তো হবে পরে, যখন পরস্পর বিপরীতমুখী অনেকগুলো প্রোটন কণারে মারামারি করার স্বায়ত্বশাসন দিয়া পাগলা মোষের মতো ছাইড়া দিবো।
তখনই তো বুঝা যাইবো গুল মারতাছেন না কি হাছা কইতাছেন। তয় ভাই কইয়া রাখি, আমি কিন্তু আবার কাউরে না কইতে পারি না। আপনের কথা বিশ্বাস কইরা আরো কাউকে কাউকে যে না কইতে পারি নাই, যদি হাছা হাছাই ভুত হইয়া যাই, তাইলে আপনেরে কিন্তু ছাড়তেছি না মনে রাইখেন। নরকের গেইটে দাঁড়াইয়া থাকমু আপনের লগে বুঝাপড়া করনের লাইগা।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

অনিকেত এর ছবি

হা হা হা .........

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

বস্,
প্রথম টেস্টে প্রোটনের ভেলোসিটি কতদূর উঠাইছে?
কি কি আপডেট দিতেছিলো পয়েন্ট ফোরে আসছে, ফাইভে আসছে -- কিছুইতো বুঝলামনা মন খারাপ
আপনে একটু বুঝাইয়া দিতেন যদি গরীবের বড় উপকার হইত চোখ টিপি
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

সৌরভ এর ছবি

ভালো হইসে লেখাটা। সহজ হইসে।


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

অনিকেত এর ছবি

থ্যাঙ্কু বস

তীরন্দাজ এর ছবি

সময় কম বলে অনেকদিন কিছৃ পড়ার সময় পাইনা। আপনার শেষ পর্বটি চোখে পড়ার পর প্রথম পর্ব থেকেই শুরু করলাম। এক নি:শ্বাসে শেষ করে ফেল্লাম। এত সুন্দর করে এতো কঠিন বিষয়কে তুলে ধরা অসম্ভব ক্ষমতা আপনার! অবাক হয়ে যেতে হয়! আপনি আরো লিখবেন, এই কামনা ও অনুরোধ রইল।

পৃথিবী গেলে যাক! আপনার লেখার হাতটি যেন টিকে থাকে!

**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

অনিকেত এর ছবি

আপ্নাকে অনেক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
আপনার ভালো লেগেছে শুনে আমার ভাল লাগল।

ভালো থাকবেন।

tulip [অতিথি] এর ছবি

অনিকেত,
কণা-পদার্থবিদ্যা লইয়া সহজ সরল কইরা কয়েকটা লেখা লিখেন না কয়েক কিস্তিতে! কেন এইসব experiment দরকার, কেন
fundamental দিকের research দরকারি, শুধু applied দিকের research ই সব নয়, সেইসব লইয়া! লিখবেন?

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍বিজ্ঞান বিষয়ক ভারী ভারী লেখায় দাঁত বসাতে পারি না বলে এড়িয়ে চলি সচরাচর। এটাও সে-রকমই একটা লেখা ভেবে চোখ বুলিয়ে কেটে পড়ার ধান্ধা করতে গিয়ে উপলব্ধি করলাম, আমার মতো নাদানও অনেক কিছু বুঝতে পারছে। নিজের বুদ্ধিবৃত্তির ওপর হারানো আস্থার কিয়দংশ ফিরে পেলাম, মনে হচ্ছে হাসি

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
পাকিস্তানিদের আমি অবিশ্বাস করি, যখন তারা গোলাপ নিয়ে আসে, তখনও। - হুমায়ুন আজাদ

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

অনিকেত এর ছবি

হাসি

রেনেট এর ছবি

গত সপ্তাহে ব্যস্ত থাকার কারণে পোস্টগুলো গরম গরম পড়তে পারিনি। এখন একটানা সব কিস্তি পড়লাম। চমতকার লাগলো সিরিজটা।
আমাদের মত অবুঝদের জন্য নিয়মিত সহজভাষায় বিজ্ঞান শিক্ষা চাই হাসি
-----------------------------------------------------
We cannot change the cards we are dealt, just how we play the hand.

---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

অনিকেত এর ছবি

হাসি

দেবোত্তম দাশ এর ছবি

অনিকেতদা, আপনার এই সিরিজের সব লেখা পড়েছি, ধন্যবাদ দেওয়া হয় নি আপনাকে, এতো ভালো দরকারী লেখা, ভীষন ভালো লেগেছে, আপনাকে আবারো ধন্যবাদ ।
------------------------------------------------------
স্বপ্নকে জিইয়ে রেখেছি বলেই আজো বেঁচে আছি

------------------------------------------------------
হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন’রা কি কখনো ফিরে আসে !

অনিকেত এর ছবি

দেবোত্তম দা,

আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুব ভালো লাগল।
সামনে এই ধরনের কিছু লেখা লিখার উৎসাহ পাওয়া গেল।

ভাল থাকবেন।

শিক্ষানবিস এর ছবি

অত্যন্ত দুঃখের সাথে জানানো যাচ্ছে,
যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে, আগামী দুই মাস এলএইচসি কোন কাজ করতে পারবে না। ইতোমধ্যেই তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
সমস্যাটা আমি নিশ্চিত না। বিবিসি'র খবরে দেখলাম "কুয়েঞ্চ" নামে এক বিশেষ প্রক্রিয়ার কারণে কলাইডারের ১০০টি চুম্বকের তাপমাত্রা ১০০° সেলসিয়াস হয়ে গেছে, যেখানে তাদের তাপমাত্রা থাকার কথা -২৭১.১° সেলসিয়াস। দুটো চুম্বকের সংযোগস্থলে বৈদ্যুতিক গোলযোগের কারণেই নাকি এমনটি হয়েছে।
সুতরাং ২১শে অক্টোবর আর কলাইডারের তাণ্ডব লীলা দেখা হচ্ছে না। আরও ২-৩ মাস অপেক্ষা করতে হবে।

সাইফ এর ছবি

বস, আর তো আপডেট দিলেন না। LHC এর কি হইল? কে কারে লাল করল? নাকি কালো গাথার মাঝে হারায় গেসে পুরা lab??? জানান দিয়েন।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।