কার গান এটা?

অনিকেত এর ছবি
লিখেছেন অনিকেত (তারিখ: শুক্র, ১৭/১০/২০০৮ - ৬:৪৮পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বাইরে আসার পর যত গুলো ভিন দেশের মানুষের সাথে পরিচয় হয়েছে, তাদের মাঝে তুর্কিদের আমার অসম্ভব বিরক্তিকর লেগেছে।(পাকিদের আমার বিরক্তিকর লাগে না---কেবল মুখে থুতু আসে)

একটু কঠোর কথা হয়ে গেল। কিন্তু আমাকে যতগুলো ঘটনার মাঝে দিয়ে যেতে হয়েছে---প্রায় সব গুলো ঘটনা আমার মন্তব্যে সায় দেবে।

আমার মনে হয়েছে, তুর্কিরা খুব সম্ভবত ইউরোপের সবচাইতে Confused জাতি। একদিকে তাঁরা আচার আচরনে পুরো দস্তুর ইউরোপীয়ান, আর অন্যদিকে ধর্মাচরনে প্রচন্ড গোড়া। আপনারা নিশ্চয়ই ভাবছেন----সেটা কোন জাতি নয়? সবারই এরকম 'একটু আধটু' থাকে।

ভালো কথা, থাকতেই পারে। আমি নিজে যে দেশের, সেটারো তো অবস্থা বিশেষ সুবিধার না--পৌত্তলিকতার অজুহাতে শিল্পের মাথায় খড়গ চালানো শুরু হয়েছে।

তুর্কিরা একটা আন্তঃমহাদেশীয় (transcontinental) দেশ। এর তিনটি প্রদেশ সম্পুর্ন ভাবে ইউরোপে আর বাকি অংশ ইউরোপ এশিয়ায় ভাগ হয়ে আছে। আমি জানিনা এদের ভৌগলিক অবস্থান তাদের এই confused state এর জন্য দায়ী কিনা।

আমার পর্যবেক্ষন খানিকটা এই রকমঃ

১। আমি যত গুলো তুর্কি ছেলেদের সাথে মিশেছি, দুর্ভাগ্যবশতঃ সব ক'টিকেই আমার চরম দূর্বৃত্ত মনে হয়েছে। তারা গোয়ার, রগচটা এবং কোন এক বিচিত্র কারনে নিজেদের নিয়ে অমুলক আত্ম-শ্লাঘায় ভোগে।

২। অনেক সময় অনেক কিছু নিয়ে তাদের সাথে আলাপ হয়েছে---যে গুলো প্রায় অনিবার্যভাবে ঝগড়ার দিকে মোড় নিয়েছে। আমি নিজেকে সাধু-সন্ত ভাবি না। কিন্তু আমার যথেষ্ট ধৈর্য্য আছে বলেই বিশ্বাস করি। কিন্তু এদের সাথে তর্কে নেমে আমার একাধিকবার ধৈর্য্যচ্যুতি ঘটেছে।

৩। প্রায় সব ক'টি তুর্কি ছেলে দেখেছি---মেয়েদের কে অত্যন্ত নীচু চোখে দেখে। পরে জানলাম যে এইটা নাকি ছোট বেলা থেকেই তুর্কি ছেলেদের মাথায় ঢুকিয়ে দেয়া হয় যে তার শ্রেষ্ঠতর--মেয়েরা আছে কেবল তাদের সেবাদাসী হবার জন্যে। তারা তাদের নিজের দেশে কি করে--সেটা নিয়ে আমার মাথা ব্যথা নেই। কিন্তু দেশের বাইরে এসেও তাদের বদামী তাদের পিছু ছাড়েনি। একাধিকবার দেখেছি, তুর্কি পুরুষ অত্যন্ত রূঢ় ভাষায় একেবারে অপরিচিতা তুর্কি নারীদের সম্বোধন করছে বা বিতর্কের মাঝে থামিয়ে দিয়েছে 'নির্বোধ' ঘোষনা দিয়ে। কাজেই যখন তুর্কি মেয়েদের কাছ থেকে শুনি যে তারা তুর্কি পুরুষ দু চোখে দেখতে পারে না---তখন আমি খুব একটা আশ্চর্য হই না।

যাই হোক লিষ্টি দিতে চাইলে অনেক লম্বা হবে। আমি জানিনা এইটা কেবল আমার দুর্ভাগ্য কি না---যতগুলো তুর্কির সাথে আমার দেখা হয়েছে---তাদের কোন না কোন আচরন আমাকে হয় ক্ষিপ্ত করেছে, না হয় বিরক্ত করেছে।

সেদিন আমার অফিসে হঠাৎ করে তর্ক শুরু হয়েছে ভাষার গতি-প্রকৃতি নিয়ে। রুমে এক বুলগেরিয়ার মেয়ে আছে----রালিৎসা। দেখা গেল সেও তুর্কিদের ব্যাপারে তেমন সহানুভুতি প্রবন নয়। তার কারন অবশ্য আমার মত এত "Superficial" নয়। ঐতিহাসিক কারনেই তারা তুর্কিদের দেখতে পারে না---সেই অটোমান সাম্রাজ্যের প্রসারের যুগ থেকে। আর আর্মেনিয়ান গনহত্যার কথা কে না জানে। Genocide শব্দটি ব্যবহার শুরু হয়েছল এই হৃদয় বিদারক ঘটনাকে কেন্দ্র করে।

ভাষা নিয়ে আলাপ ধীরে ধীরে ইতিহাস ছুঁয়ে নানান জায়গায় কন্ঠি বদলে শেষে গানে এসে থামল। রালিৎসা জানালো---সম্প্রতি সে একটা প্রামান্যচিত্র দেখেছে। নাম "Whose song is this?"

খুবই Interesting একটা ছবি। ছবিটার শুরু এই ভাবেঃ
ছবির ডিরেক্টর আদেলা পীভা এক বুল্গেরিয়ান চিত্র পরিচালক। তো এক সন্ধ্যায় তিনি বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন এক রেষ্টুরেন্টে---সাথে জনা কয়েক বন্ধুবান্ধব যারা প্রায় সবাই বিভিন্ন বলকান অঞ্চলের ।

রেষ্টূরেন্টে গান হচ্ছিল। হঠাৎ করে একটা গান শুরু হতেই ঘটল মজার ঘটনা----আদেলা'র টেবিলে বসা সকলেই এই গানটিকে তাদের যার যার অঞ্চলের গান হিসেবে দাবী করা শুরু করলেন। শুধু তাই নয়---তাদের কথা বার্তা শুনে বোঝা গেল---এদের প্রায় প্রত্যেকের দেশের হয় লোক-সঙ্গীতে না হয় চলচিত্রে এই গানটি কোন না কোন ভাবে পরিবেশিত হয়েছে। প্রায় সকলেই এই গানটি শুনেছেন, ভিন্ন ভাষায় অবশ্যি। অনেকের গানটি 'কন্ঠস্থ' না হলেও মুখস্থ তো বটেই। প্রত্যেকেই দাবী করতে থাকলেন যে তাদের ভার্সানটাই মৌলিক---বাকী সবাই চোরের গুষ্টি!

ঠিক এই মুহুর্তেই আদেলা তার ছবির মসলা পেয়ে গেলেন। তিনি এই গানটির উৎস সন্ধানে বেরিয়ে পড়লেন। উদ্দেশ্য খুব মহৎ-----যদি গানটির সঠিক উৎস জানা যায়, তাহলে হয়ত এই বলকান অঞ্চলের চৌচির মানচিত্রে একটা সাধারন গুনীনিয়ক পাওয়া যাবে। হয়ত তিনি দেখাতে পারবেন---রাজনৈতিক আর ঐতিহাসিক কারনে এরা সকলে একে অন্যের পর হয়েছে ঠিকই---কিন্তু এরা সকলেই একই সংস্কৃতির আলো ছায়ায় বেড়ে উঠেছে। সবার মুলসুরটি একই তানে বাঁধা।

তুরস্ক, গ্রীস, আলবেনিয়া, বসনিয়া, সার্বিয়া, মেসিডনিয়া হয়ে আবার বুলগেরিয়ায় ফেরত আসা, এই হল প্ল্যান।

শুরু হল একটা গানের উৎস সন্ধানে প্রথম বারের মত এক দুঃসাহসিক অভিযান। সৃষ্টির আদি লগ্ন থেকে, মানুষ বেরিয়েছে একের পর এক অভিযানে। প্রান বাজী রেখে নেমে পড়েছে বিপদ শঙ্কুল অজানা কোন দেশে। আমাজনের উৎস খুঁজতে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছেন কত অভিযাত্রী।

কিন্তু গানের জন্য অভিযাত্রা? খুব সম্ভবতঃ এইটাই প্রথম (এবং সম্ভবত শেষ)।যে কোন রোমাঞ্চকর অভিযাত্রার চেয়ে এই কাহিনী কোন অংশে কম নয়। আমরা আদেলার সাথে পাড়ি জমাই একেক দেশে---শুনি একই গান একই সুরে কিন্তু ভিন্ন ভাষায় ভিন্ন মেজাজে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা গেছে গানটি মুলতঃ প্রেমগীতি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেশপ্রেম জাগানিয়া। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ধর্মের লেবাস পরানো প্রার্থনা সঙ্গীত। কেউ কেউ এমনও বলেছেন যে এই গানটির মুল গায়িকা আসলে তাদের দাদী...!!!

আমি আর পুরোটা এখানে ভাঙছি না। শুধু অনুরোধ রইল ছবিটা দেখার। এইখানে উঁকি দিয়ে দেখতে পারেন। প্রিন্ট তেমন আহামরী নয় কিন্তু।

কিন্তু আসলে যে কারনে লেখাটা শুরু---সেটা কিন্তু আমার তুর্কি বিদ্বেষ বা ভাষার বিবর্তন বা ইতিহাস আলোচনা করা নিয়ে নয়।

আমি যখন গানটা শুনলাম---তখন ভীষন ভাবে চমকে উঠেছি!!! আরে, এই গান তো আমার জানা, আমার চেনা। এই গান আমার বহুবার শোনা নজরুল গীতি
"শুকনো পাতার নুপুর পরে" (প্লীজ 'মিলা ভার্সন' না!!)

কত অজানারে জানাইলে তুমি
কত জনে দিলে ঠাঁই
দূর কে করিলে নিকট বন্ধু
পর কে করিলে ভাই----

সত্যিই কি?----


মন্তব্য

আলমগীর এর ছবি

শুকনো পাতা তুর্কী সুর জানতাম। (কিছুদিন আগে রবি-নজরুল কে কোথা থেকে মেরেছে নিয়ে তর্ক হচ্ছিল, তখন থেকেই জানা।)

আপনি শেষ মেষ তুর্কি মেয়ের প্রেমে পড়লেন। ভাল।

অনিকেত এর ছবি

পড়তে আর পারলাম কই ?
এর আগেই তো মেজাজ খারাপ হয়ে গেল----

রেনেট এর ছবি

এক তুর্কী মেয়ের সাথে পরিচয় হয়েছিল...নাকউচু স্বভাবের...বাকী মানুষের কথা জানি না হাসি
-----------------------------------------------------
We cannot change the cards we are dealt, just how we play the hand.

---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

তানভীর এর ছবি

আমার অভিজ্ঞতা ভিন্ন। কিছু চমতকার তুর্কী মানুষের সাথে আমার পরিচয় এবং বন্ধুত্বও হয়েছে। এক সময় এদের সাথে সামারে প্রতিদিন ফুটবলও খেলতাম। তবে তুর্কীদের মধ্যে আমিও দুই ঘরানার মানুষ দেখেছি। যদিও অন্য ধরণের তুর্কীগুলোর সাথে আমার বেশি পরিচয় হয় নি বা আমরা সযত্নে পরস্পরকে এড়িয়ে গেছি। আপনার হয়তো এদের সাথেই বেশি ওঠা-বসা হয়েছে। এই অন্য ঘরানার তুর্কী বলতে আমি ইউরোপিয়ানদের মত আচার-আচরণের তুর্কীদের বুঝিয়েছি। বাকীদের আমার কাছে অনেকটা আমাদের মতই মনে হয়েছে।

= = = = = = = = = = =
ঊষার দুয়ারে হানি আঘাত
আমরা আনিব রাঙা প্রভাত
আমরা ঘুচাব তিমির রাত
বাধার বিন্ধ্যাচল।

অনিকেত এর ছবি

নিশ্চয়ই। সব তুর্কিদের ঢালাও ভাবে বদ বলতে আমি ইচ্ছুক নই। এমনকি যাদের কথা শুনে আমার মেজাজ খারাপ হয়---তাদের মাঝেই অন্তত একজন আছে, যার কিছু কিছু জীবনদর্শন আমাকে রীতিমত মুগ্ধ করেছে।

নিঝুম এর ছবি

তুর্কী দের গায়ে অনেক জোর । আমার বন্ধু অমি জানে... (হে হে হে )
নজরুলও কাটপিস মারত নাকি ?? কেম্নে কি ??
--------------------------------------------------------
কারও শেষ হয় নির্বাসনের জীবন । কারও হয় না । আমি কিন্তু পুষে রাখি দুঃসহ দেশহীনতা । মাঝে মাঝে শুধু কষ্টের কথা গুলো জড়ো করে কাউকে শোনাই, ভূমিকা ছাড়াই -- তসলিমা নাসরিন

---------------------------------------------------------------------------
কারও শেষ হয় নির্বাসনের জীবন । কারও হয় না । আমি কিন্তু পুষে রাখি দুঃসহ দেশহীনতা । মাঝে মাঝে শুধু কষ্টের কথা গুলো জড়ো করে কাউকে শোনাই, ভূমিকা ছাড়াই -- তসলিমা নাসরিন

অনিকেত এর ছবি

আমার একটা ব্যাখ্যা আছে---অবশ্য পুরোটা আমার নিজের না, আমার বন্ধু'ফক্কুল' এরও এতে অবদান আছে----নজরুল প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে আফগানিস্থান, ইরান ও কাছাকাছি আরো কিছু জায়গায় দিন কাটিয়েছেন। যদি আমরা ধরে নিই, যে এই গানটি ঐ পারস্য এলাকার কোন আদি লোকসঙ্গীত---এইটা খুবই সম্ভব, নজ্রুল সেই সময়ে এটা শুনে থাকবেন এবং পরবর্ত্তিতে এর উপর ভিত্তি করে গান রচনা করেছিলেন।

গানটির রচনাকাল জানা গেলে এই ধারনাটা আরেকটু ভালো করে যাচাই করা যাবে।

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

সব জাতির মানুষের মধ্যেই ভাল-খারাপ দুই'ই আছে। আপনার কপাল খারাপ, তুর্কীদের মধ্যে বদগুলার সাথেই আপনার পরিচয় হইসে।

সিনেমার কাহিনীটা খুবই ইন্টারেস্টিং লাগল। লিখসেনও মজার করে। তবে ঠেলাগাড়ির নেট-স্পীড নিয়ে ইউটিউবে মুভি দেখার মত বিলাসিতা আমারে মানায় না চোখ টিপি তবে যদি টরেন্ট পায়া যাই, তাইলে একটা ট্রাই মাইরা দেখতে পারি।

রবি ঠাকুর-নজরুল'ও সুর চুরি করত! খাইছে! এইটা তো আগে জানতাম না! মন খারাপ
_______________
বোকা মানুষ মন খারাপ

অনিকেত এর ছবি

"রবি ঠাকুর-নজরুল'ও সুর চুরি করত! খাইছে! এইটা তো আগে জানতাম না! "

--হা হা হা

আসলে রবীন্দ্রনাথ বা নজরুলের মত প্রতিভারা এই সকল কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়লে সেটাকে 'অনুপ্রেরনা' বলা হয়----মুম্বাইএর অনু মালিক করলে সেটা ১০০% চুরি।

রবীন্দ্রনাথ প্রচুর পশ্চিমের গানে 'অনুপ্রানীত' হয়ে গান রচনা করেছিলেন। উদাহরনস্বরূপঃ

'কতবার ভেবেছিনু আপনা ভুলিয়া'
'পুরানো সেই দিনের কথা' ইত্যাদি

এইগুলোর জন্য আবার বাহারী একটা নাম আছে -- "রূপান্তরী" বা 'রবীন্দ্রনাথের ভাঙ্গা-গান'। রবীন্দ্রনাথ অবশ্য শুধু পশ্চিমা গান নয়, প্রচুর এদেশীয় গানেও 'অনুপ্রানীত' হয়ে গান লিখেছেন (বলা ভাল, সুর করেছেন)।গগন ডাক হরকরার 'আমি কোথায় পাবো তারে', এই গানটি আমাদের জাতীয় সঙ্গীতের মুল প্রেরনা। অনেক রাগাশ্রয়ী গান---প্রচলিত ধ্রুপদাঙ্গের বা খেয়াল 'ভেঙ্গে'ও কিছু গান তৈরি করেছেন।

ঠিক তেমনি নজরুলেরও প্রচুর গানে পশ্চিমা সঙ্গীতের 'প্রভাব' লক্ষনীয়।আমি ঠিক নিশ্চিত নই----আমাদের রণ-সঙ্গীত 'চল চল চল উর্ধ্ব গগনে বাজে মাদল--" খুব সম্ভবত সেই রকম একটি।

আমার ব্যক্তিগত অভিমত---আমি এতে দোষের কিছুই দেখিনা। শিল্প সব সময় নব নব শিল্প সৃষ্টির অনুপ্রেরনা হয়ে থেকেছে, এবং এতে আমাদের সম্ভার কেবল সম্পদশালীই হয়েছে, সমৃদ্ধ হয়েছে।

অনিন্দিতা এর ছবি

'অনুপ্রানীত' শব্দটার বানান বোধ হয় অনুপ্রাণিত হবে।

অনিকেত এর ছবি

ধন্যবাদ, শুধরে দেবার জন্য।
ভবিষ্যতে সাবধান থাকব।

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

অনিকেত'দা, বিষয়টা আসলেই জানা ছিল না আমার।

তবে আপনার ব্যক্তিগত অভিমতের সাথে আমি কিছুটা একমত। এইসব অসামান্য সৃষ্টির কারণে আমাদের শিল্পভান্ডার তো অবশ্যই সমৃদ্ধ হয়েছে, তবে তা কিন্তু মোটেও এই কাজটাকে জাস্টিফাই করে না। কাউকে না বলে কিছু নেয়াটা তো চুরির সমতুল্যই। তাই রবি ঠাকুর বা নজরুল যদি ওইসব "ভাঙা গান" এর মূল উৎস যথার্থভাবে অ্যাকনলেজ না করে থাকেন, তাহলে তা অবশ্যই একটা খারাপ কাজ হয়েছে। আর খারাপ উপায়ে প্রাপ্ত ভাল জিনিস উপভোগ করাটাও খুব একটা ভাল কিছু নয়।

তারপরও কথা থাকে। উপরের কথাগুলো আমার ভেতরের ক্ষুদ্র অংশের অভিমত। আমি শুদ্ধ মানুষ নই। তাই আমার ভেতরকার বৃহৎ অংশ বলে, সামান্য একটু হেরফের করে তাঁরা এইসব অসাধারণ শিল্প রেখে গেছেন আমাদের জন্য, এইটা অবশ্যই দারুন একটা ব্যাপার। আর অনু মালিকের চুরি করার পরও সদম্ভে কথা বলা মেনে নিতে পারি না কিছুতেই! "চোর" ছাড়া আর কোনকিছু মুখে আসতে চায় না ওর ব্যাপারে। এইসব নকল করে তারা তাদের ভাল কাজের অবমাননা করে, অনেকটা শূন্য দিয়ে গুন করার মত একটা কিছু!
_______________
বোকা মানুষ মন খারাপ

শিক্ষানবিস এর ছবি

তুর্কীদের সম্বন্ধে অনেক বুঝলাম। আগে অবশ্য তেমন কিছু জানতাম না। একটা মুভি দেখে কিছু ধারণা হয়েছিল। "ফাতিহ আকিন" এর "দি এজ অফ হেভেন" এ তুর্কী সমাজের অনেক কিছুই উঠে এসেছে। আপনার কিছু পর্যবেক্ষণের প্রমাণও সেখানে ছিল। সিনেমাতে অবশ্য তুর্কী আর জার্মানদের এক সূতোয় তুলে ধরার একটা প্রয়াস লক্ষ্য করা যায়। মুভিটা অসাধারণ।

নজরুলের তুর্কী সুর অনুকরণের বিষয়টাই যুক্তিযুক্ত মনে হচ্ছে।

অনিকেত এর ছবি

থ্যাঙ্কু বস

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

ইউটিউব এখন চেষ্টাই করি না।
আপনে গানটা দিতেন যদি তাইলে একটা চেষ্টা করতাম শুনতে।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অনিকেত এর ছবি

নজরুল ভাই,
চেষ্টা করছি এখানে গানের লিঙ্ক দেওয়ার।

স্নিগ্ধা এর ছবি

অন্ততঃ একজন তূর্কী পুরুষকে আমি খুব, খুব, খুবই সুচক্ষে দেখি -
সে সুভদ্র, সুজন, সুদক্ষ, সুভাষী (ইয়ে, সুপুরুষটা ঠিক বলতে পারলাম না মন খারাপ ) এবং তার খাতিরেই আমি অনিকেতের এমন তূর্কী পুরুষ বিদ্বেষী পোস্টের সুতীব্র সমালোচনা করছি :রেগে টং

আহা, আমার সেই তূর্কী হেয়ার ড্রেসার যেন আমি মরার পরে মরে !!

আর, অনিকেত - "শুকনো পাতার..." গানটি আনিলাও গেয়েছে বোধহয়। সুন্দর গেয়েছে, শুনেছেন ?

অনিকেত এর ছবি

স্নিগ্ধা'পু,

শেষমেষ তুর্কিরা আপনার চুল কেটে মন জয় করল????

আর, না--আনিলারটা শোনা হয় নি।

আপনার কাছে লিঙ্ক আছে??
দেশ থেকে আসার সময়, সুটকেস ভর্ত্তি করে গানের সিডি আর আমার জন্য মিঠাই-মন্ডা আনতে ভুলবেন না যেন!!

রাফি এর ছবি

বেশ অভিনব একটা তথ্য দিলেন!
ধন্যবাদ অনিকেত ভাই।

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

অনিকেত এর ছবি

থ্যাঙ্কু, রাফি

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

কয়েকটা কথা কই। প্লিজ, রাগ নিয়েন না মনে।

কোনও জাতিকে (পাকিরা হিসেবের বাইরে) ঢালাওভাবে অপমানজনক বিশেষণে ভূষিত করতে দেখলে কষ্ট পাই আমি। আপনি যদিও মূলত কিছু ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণের কথা লিখেছেন, তবু সেগুলো বেশ সরলীকরণগন্ধী।

বিদেশীদের মুখে "বাঙালি একটা জঘন্য জাতি" বা এই ধরনের অন্য কোনও বাক্য শুনলে কেমন লাগবে, বলুন?

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
Life is what happens to you
While you're busy making other plans...
- JOHN LENNON

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

অয়ন এর ছবি

কোন পাকিস্তানী যদি বলে " বাঙালি একটা জঘন্য জাতি, আমাদের পোদ মেরে দিয়েছে", আমি খুবই আনন্দিত হবো।

পাকিস্তান হারার পর ওয়াসিম আকরাম যখন বললো আমরা আমাদের ভাইয়ের কাছে হেরেছি, ইচ্ছা করছিলো কুত্তাটার মুখে একটা লাথি মারি।

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

কোন পাকিস্তানী যদি বলে " বাঙালি একটা জঘন্য জাতি, আমাদের পোদ মেরে দিয়েছে", আমি খুবই আনন্দিত হবো।

এভাবে তো ভেবে দেখিনি! এক্কেবারে ঠিক্কথা!

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
Life is what happens to you
While you're busy making other plans...
- JOHN LENNON

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

অনিকেত এর ছবি

সহাস্যে একমত!

অনিকেত এর ছবি

অয়ন একটা চমৎকার উত্তর দিয়েছেন, যেইটার সাথে আমি বেশ খানিকটা একমত।

আর সরলীকরনের কথা বলেছেন--- সন্ন্যাসী'দা অ-নে-ক গরল পান করে তবে এই রকম 'সরল' হতে হয়েছে। জানি কোন কারনে আমার ভাল অভিজ্ঞতা হয়নি তুর্কিদের নিয়ে। কিন্তু একটা দুটো হলে এক কথা ছিল। ঝাকে ঝাকে তুর্কিরা মোটের উপর একই রকম ব্যবহার করেছে।

আমি যখন তাদের কাছে অভিযোগ করেছি এই নিয়ে---তাদের মধ্যে যারা একটু মাথা ঠান্ডা, তারা স্বীকার করেছে যে তাদের মাঝে এই জিনিসটা 'কমন' এবং খুব সম্ভবতঃ 'upbringing' দায়ী।

আমি জানি যে, এই ভাবে কোন জাতি কে লেবেল দেয়াটা ঠিক না---কিন্তু কিছু কিছু সময় ঠিক কাজ করতে মন চায় না---তাই না?

আমি মহাপুরুষ নই---এবং হবার ইচ্ছাও পোষন করিনা
কারন?? কারন তারা Boring হাসি

আর রাগ করার প্রশ্নই ওঠে না সন্ন্যাসী দা। আপনি আমার লেখা পড়েছেন এবং মন্তব্য করেছেন---এইটাই আমার কাছে অনেক আনন্দের।

ভাল থাকবেন।

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

চামে আমারে "মহাপুরুষ" কইয়া গাইল দিলেন, মনে হয়? চোখ টিপি

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
Life is what happens to you
While you're busy making other plans...
- JOHN LENNON

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

অনিকেত এর ছবি

হে হে হে হে ------

হিমু এর ছবি

আমি যে শহরে থাকি, তাতে প্রচুর তুর্কি। এযাবৎ মাত্র একজন তুর্কিকেই ভালো লেগেছে আমার কাছে, সে হচ্ছে যার কাছ থেকে আমি গরুর মাংস কিনি। ট্রামে-বাসে-ট্রেনে পথে হাটেঘাটেমাঠে যত তুর্কি মহিলা ও পুরুষ দেখলাম, তাদের সবাইকেই "খামাখা উগ্র" মনে হয়েছে। এরা মুখিয়ে থাকে ঝগড়া করার জন্য। তবে তুর্কিদের গড় আকার জার্মানদের মতোই, তাই মারপিট লাগলে আমি দুইটা লাথি মেরেই দৌড় দিবো হাসি


হাঁটুপানির জলদস্যু

অনিকেত এর ছবি

হা হা হা ---

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।