ড্যানি বয়েল এর নতুন ছবি---Slumdog Millionaire। সেইটা দেখে ফিরলাম মাত্র।
১৯৯৬ তে "Trainspotting" ছবিটি ব্রিটিশ এই চলচ্চিত্রকারকে পাদ প্রদীপের আলোয় নিয়ে আসে। প্রতিশ্রুতিশীল ব্রিটিশ চলচ্চিত্রকারদের মাঝে বয়েলের নাম বেশ ঘন ঘন উচ্চারিত হয়। Trainspotting ছবিটি আমার দেখা হয়নি। এমনিতে আমার নতুন নতুন পরিচালকদের ছবি দেখার খুব উৎসাহ। এর পেছনে একটা কারন অবশ্যই--- তাদের নতুন কিছু তুলে ধরার অদম্য স্পৃহা, প্রথার বাইরে গিয়ে জীবনকে সংজ্ঞায়িত করার চেষ্টা---ছবির পরতে পরতে ছড়িয়ে থাকে। তাদের ছবি দেখা মানে নতুন প্রানের উদ্ভাসন, বছর পুরোনো চশমার কাঁচ বদলে ঝকঝকে চোখে তাকানো সামনের দিকে।
অবশ্য একটা সমস্যাও থাকে এদের। স্থান করে নেবার তাড়নায়, দৃষ্টি আকর্ষনের চেষ্টায় মাঝে মাঝেই গিমিক নির্ভর ছবি তৈরী হয়। সেগুলো হয়ত স্বল্প-কালীন খ্যাতির তরঙ্গ তুললেও দীর্ঘ মেয়াদে বিস্মৃতির কাঠ-বাক্সে আটকা পড়ে থাকে। Trainspotting এর trailer দেখে আমার সে রকম মনে হওয়ায় তেমন আগ্রহ বোধ করিনি।
তার নতুন এই ছবিটি নিয়ে আলোচনার ঝড়-ঝাপ্টা বেশ কিছুদিন ধরে আমার চোখে পড়েছে। সাধারনত এইসব ক্ষেত্রে আমি সচেতনভাবে ছবিগুলো দেখা পরিহার করি----কারন উপমহাদেশীয় কোনকিছু নিয়ে ছবি হলেই ইদানিং তুমুল লাফালাফি শুরু হয়ে যায়। প্রতিটি প্রয়াস অস্কারের দাবী জানায়। ছকবাঁধা কিছু প্রশংসার বুলি ভাসতে থাকে হাওয়ায় হাওয়ায়।পরবর্ত্তিতে আমরা অশ্রু-সজল চোখে অস্কার অনুষ্ঠান শেষে ঘুমুতে যাই।
কাজেই আজ সন্ধ্যে বেলায় আমার বন্ধু শ্রীনি যখন জানাল যে সে আর তার বউ ছবি দেখতে যাচ্ছে--আমি যাব কি না, আমি প্রায় না করেই দিয়েছিলাম। পরে ট্রেইলার দেখে মনস্থির করলাম এমনিতেও বাসায় বসে এমন কোন বিশ্ব উদ্ধার করছি না।
জুতোজামা চাপিয়ে বাইরে বেরিয়েই মনে হল---খুব ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছি। প্রচন্ড ঠান্ডা। মনে হল ঠান্ডা বাতাস এসে চটাং চটাং করে চড় বসিয়ে দিয়ে গেল গালে। কিন্তু শ্রীনি আর প্রিয়া তখন বাইরে দাঁড়িয়ে হি হি করে কাঁপছে। এখন পালালে আর ইজ্জত থাকবে না।
যেহেতু উপমহাদেশীয় পটভুমিকায় কাহিনী সন্নিবদ্ধ--কাজেই প্রচুর 'দেশী' লোকজনের ভীড় আশা করছিলাম। দেখা গেল প্রচুর 'বিদেশী' লোক বসে আছে।
একেবারে শেষ সারিতে বসে জায়গা নিয়ে বসতে না বসতেই দেখি একের পর এক কাপড়-চোপড় উড়ে উড়ে আসছে। শ্রীনি এবং প্রিয়া--দু'জনেই ভীষন শীত কাতুরে। শীতের দিনে তাদের ওজন পাঁচ-ছয় কেজি বেড়ে যায়---কাপড় চোপড়ের যন্ত্রনায়। হলে এসেই গরম লাগা শুরু করেছে। বস্ত্র নির্মোচন ও শুরু হয়েছে। আমার পাশের সিট খালি। কাজেই তাদের গরম কাপড়ের দারোয়ান আমাকেই হতে হল।
আগে থেকেই একটু ধারনা ছিল কাহিনী সম্পর্কে। তেমন আহা-মরি কিছু মনে হয় নি। আমার মুল আগ্রহ বয়েলের কাজ দেখা, আর অবশ্যই---ইরফান খানের অভিনয় দেখা। ঝুম্পা লাহিড়ির Namesake এর চলচ্চিত্রায়নে এই লোকটির কাজ আমার খুব ভালো লেগেছিল।
ছবি শুরু হল। আলো-আধারির মাঝে বসে আছেন দুইটি চরিত্র। তাদের একজন বয়েসে নবীন,ভীত চোখ, সারল্যে ভরা কিশোর-মুখ। অন্যজন প্রবীন। এইটি Who wants to be a millionaire প্রোগ্রামের স্টেজ। কিশোর-মুখ ছেলেটি আমাদের নায়ক---- বুঝে নিতে দেরী হয়না কারো। আমরা টের পাই---সে দাঁড়িয়ে আছে এক অভাবনীয় সম্ভাবনার সামনে। আর একটি প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিলেই মুম্বাইয়ের এক সামান্য চা-ওয়ালা বদলে যাবে। বিশাল অংকের অর্থ, স্বপ্নকে ও হার মানানো এক মসৃন জীবন--- এই সব কিছুর মাঝে তফাৎ, শুধু একটি প্রশ্নের উত্তর।
প্রশ্নের মুখে তাকিয়ে থাকা কিশোর-মুখ, জামাল। চারদিকে উৎকন্ঠার নিশ্বাস। এমনি সময় বয়েল আমাদের একটানে নিয়ে যান এক ইন্টারোগেশান রুমে। যেখানে জামাল কে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে দড়ি বেঁধে। ইলেক্ট্রিক শক দিয়ে, পিটিয়ে তাকে মৃত-প্রায় করে রাখা হয়েছে। বার বার জিজ্ঞেস করা হচ্ছে---কি করে সে এত সব প্রশ্নের উত্তর জানতে পারল।
গোটা ছবিতে আমরা এই রকম মুহুর্মুহু ভাবে দৃশ্য থেকে দৃশ্যান্তরে যাই। সময়ের অলিগলি বেয়ে উঠে আসে ঝকমকে মুম্বাইয়ের পথে পথে বেড়ে ওঠা এক ছোট্ট ছেলের জীবন যুদ্ধ। তার রোদেলা শৈশব, মেঘলা কৈশোর। আর খুব দ্রুত আপনি বুঝে ফেলেন---এ হচ্ছে সেই চির-পুরাতন ইচ্ছাপুরনের গল্প, যা আমরা শুনতে ভালবাসি। আমাদের যাপিত জীবনের সকল অপরিপুর্নতা, অচরিতার্থতা ছাপিয়ে আমরা এক ছোট্ট ছেলের হাত ধরি। আমরা চোখ বন্ধ করে কায়মনো বাক্যে প্রার্থনা করি তার নিরঙ্কুশ বিজয়। ছবির ঐ ঝকঝকে পর্দায় আমাদের নায়কের বিজয়ে আমরা বিজয়ী বোধ করি। তার কান্নায় বুক ভাঙ্গে আমাদের।
ছবিটি সম্পর্কে আর আসলে বলার তেমন কিছু নেই। বয়েল প্রথার বাইরে যাননি কোথাও। নায়কের জীবন সংগ্রাম, তার প্রেম, তার পতন---সব ঠিকঠাক ছক মেপে করা। কেবল এরই ফাঁকে ফাঁকে হঠাৎ হঠাৎ উকি মেরে যায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, মুম্বাইয়ের অন্ধকার জীবন, হালের কল-সেন্টার সংস্কৃতি আর এমনি আরো কিছু সচিত্র কোলাজ।
আমাদের নায়ক সয়ে যায় অপমান। হারায় তার প্রেমিকা। হারায় তার মা। এক ঘুর্নিপাকে হারায় তার আপন ভাইকে। কি পরিচিত ঠেকছে এই কাহিনী? এক সময় সততা নিষ্ঠা অধ্যবসায় তাকে নিয়ে আসে অভাবনীয় স্বপ্ন পূরনের মোহনায়। সব শেষে আপনি জানতে পারেন--পৃথিবীতে এখনো কেউ কেউ লাখটাকার খেলায় খেলতে বসে--টাকার লোভে নয়, হারিয়ে ফেলা হৃৎপিন্ডের সন্ধান নিতে।
ছবির শেষে আপনি হাসিমুখে বাড়ি ফিরবেন---এইটা নিশ্চিত। আপনার সাথের মেয়েটি কিছুক্ষন পর পর চোখ মুছবে--তাও সত্যি। আর ঘরে এসে আপনার মনে পড়বে Pursuit of Happiness কিংবা Shawshank Redemption, কিংবা এমনি আরো কিছু জীবন যুদ্ধে নিয়তি কে হার মানানোর উপাখ্যানের কথা।
প্রাচ্য কিংবা প্রাশ্চাত্য---- মানুষ এখনো স্বপ্ন দেখে জীবনের মুখে রাশ পরানোর। পুর্ব বা পশ্চিম---এখনো মানুষের মনে অবাক সূর্যোদয় ঘটায় অসম্ভবের সম্ভাবনার আলো। এখনো আমরা বিজয়ী বোধ করি রুপালী পর্দায় নায়কের উত্থানে। বলিঊড, হলিউড,ঢালিউড---মানুষের মন ছোঁয়ার মোক্ষম মন্ত্র--মানুষের বিজয় দেখানো।
প্রতি বছর গড়ে শত শত হিন্দি ছবিতে সেটা ঘটে চলে, নিদেন পক্ষে খান কয়েক হলিউডি ছবিতে দেখি একই কাহিনী। তবুও প্রতিবার আমরা আত্ম সমর্পন করি এর কাছে। হয়ত এই রকম স্বপ্ন-পুরনের স্বপ্নই আমাদের তাড়িয়ে বেড়ায়, এগিয়ে নিয়ে যায় আপাত অর্থহীন অস্তিত্বের বিপরীতে।
ছবিতে চমৎকার অভিনয় করেছেন ইরফান খান, অনিল কাপুর। জামালের ভুমিকায় নবাগত দেব প্যাটেল উতরে গেছেন বলেই মনে হল। বিকাশ স্বরুপের "Q & A" উপন্যাসের উপর ভিত্তি করে চিত্রনাট্য লিখেছেন সিমোন বোফয়। তবে ছবির সব চাইতে মনোগ্রাহী কাজ করেছেন এন্থনী ডড মান্টেল--director of photography হিসেবে। সঙ্গীতায়োজন এ আর রাহমানের---সাম্প্রতিক নখ-দন্ত হীনতার ছাপ নিয়ে বিরাজমান। ছবিটির দৈর্ঘ্য ২ ঘন্টা।
মন্তব্য
ছবিটা দেখার আগ্রহ হচ্ছে।
অনেক দিন পর আপনার লেখা পেলাম অনিকেত দা।
তবে আপনার বিজ্ঞান বিষয়ক লেখাগুলু পাচ্ছিনা আর। আবার ছাড়া শুরু করেন না বস!!
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
কীর্তি,
এই কয়দিন বড় ব্যস্ততার মাঝে গেছে রে ভাই। দেখি, সামনের কিছু দিনের মাঝে, আর কিছু না হোক--শুধু তোমার কথা রাখার জন্য হলেও একটা লেখা দেব।
ভাল থেকো বস।
ধন্যবাদ দাদা,
অপেক্ষায় থাকলাম।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
মিউজিকও দিয়েন...
ছবিটা দেখার আগ্রহ রইলো... ভালো প্রিন্ট পাইলে হয়...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
অনেকদিন পর লিখলেন অনিকেত'দা। আপনাকে মিস করছিলাম...
রিভিউটা সুন্দর লাগল। সিনেমাটা দেখব। আমি এ.আর. রহমানের বিশাল ফ্যান। এই সিনেমাতে আশাবাদী ছিলাম ওঁর মিউজিক নিয়ে। তবে আপনি তো হতাশ করে দিলেন... এটা ঠিক, ওঁর সাম্প্রতিক কাজগুলো আগের মত হচ্ছে না। "ইয়ুভরাজ"-এও আমার কাছে কেবল তিনটা গানই ভাল লেগেছে (দুইটা বেশি ভাল)। "গজিনী" নিয়েও প্রত্যাশা পূরণ হয়নি।
যাই হোক, সিনেমাটা দেখার পর জানাব কেমন লাগল। ভাল থাকুন। নিয়মিত লিখুন...
আগ্রহীদের জন্য ডাউনলোড লিংক:
ইয়ুভরাজ: http://www.apunkabollywood.net/browser/category/view/4284/yuvvraaj-(2008)
গজিনী: http://www.apunkabollywood.net/browser/category/view/4421/ghajini-(2008)
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাই
এই ছবিটি খুব আ্যভারেজ ইন্ডি-ইংলিশ একটি ছবি। কিছু মনকাড়া দৃশ্য আছে, অতিব্যবহারে বা কখনো অতি দর্শনেও তা হারিয়ে যায়। এ আর রেহমান আছেন, খুব মুন্সিয়ানা নিয়ে নন। মোটের ওপর হতাশ আমি ছবিটা দেখে। In pursuit of happYness বা Shawshank Redemption পর্যায়ে পৌঁছুতে বা ও ই ছবিগুলো মনে করাতে হলে এই ছবিকে আরো বেশ কয়েক ধাপ পেরুতে হবে অবশ্যই।
জীবন জীবন্ত হোক, তুচ্ছ অমরতা
সম্পুর্ন একমত
একটা বিষয় বেশ চোখে পড়ল, আপনি রিভিউয়ে বেশ পরিষ্কার করে লিখেছেন। সেটা হল, মানুষের স্বপ্নপূরণ নিয়ে সিনেমা করলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা বিপুল জনপ্রিয়তা পায়। এক "শশ্যাংক রিডেম্পশন" দেখলেই তো বোঝা যায়। এই সিনেমা অবশ্যই খুব ভাল, কিন্তু সর্বকালের সেরা হওয়ার মত না, অথচ আইএমডিবি-তে অনেকদিন ধরে সেরকম একটা স্থানই অধিকার করে আছে। এবার স্লামডগ মিলিয়নেয়ার ও বোধহয় সেই সূত্র প্রমাণ করল।
— বিদ্যাকল্পদ্রুম
আমি কিন্তু একমত নই যে ছবিটি একেবারেই ব্যর্থ বা স্রেফ অ্যাভারেজ। শুরুর দিকটা বিশেষ করে খুবই ভাল লেগেছে। উপন্যাস থেকে নেওয়া বলেই কিছুটা কোহেরেন্স ছিল। শেষটা আরো ভাল করা যেত অবশ্যই, তবে তা করতে গেলে অনেক লম্বাও হয়ে যেত। আপেক্ষিক বিচারে বেশ ভাল বলবো।
স্বপ্ন নিয়ে বানালেই কিন্তু ছবি হিট হয় না। শশ্যাঙ্ক রিডেম্পশন ভাল লাগার কারণ স্রেফ স্বপ্নপূরণ নয়। কে চায় বৌ মারা যাক, বছরের পর বছর জেলে পঁচতে হোক? কষ্টের বিনিময়ে কেষ্ট মেলার ছবি বলেই হিট হয়েছিল।
ইশতি, আমি খানিকটা একমত তোমার সাথে। একেবারে ব্যর্থ, তা আমিও বলব না।
কিন্তু সেইটা ছবির কারিগরী দিকের জন্যে। মনে হয় উপরে লিখেওছি। Cinematography খুবই ভাল লেগেছে। কিন্তু কোন ছবি শুরু হবার ৩০ মিনিটের মাঝে যদি তুমি বুঝে ফেল আসলে সেইটা কি ভাবে শেষ হতে চলেছে---তাহলে সেটা নিয়ে তেমন ভাল কিছু বলা যায় না, তাই না?
আর কষ্টের বিনিময়ে কেষ্ট মেলাটাই তো আমাদের স্বপ্ন পূরন---কষ্ট আমি, তুমি এবং আরো অনেকেই করে যাচ্ছি। সফল হবার মাত্রা কিন্তু সে হিসেবে ঠিক সমানুপাতিক নয়।
ছবিগল্প শুনেই মনে হচ্ছে ভালো লাগবেনা
তবে আপনার বর্ণনা ভালো লাগলো
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
হা হা হা ---ধন্যবাদ
ছবিটা দেখার মাঝে আছি। কিছুদূর গিয়েই মনে হল যে এই নামে আপনার একটা লেখা পড়েছিলাম। দুর্দান্ত মুভি। সবার দেখা উচিত। দুর্দান্ত মেকিং।
ছবিটা দেখার ইচ্ছা আছে। ড্যানি বয়েলের "২৮ ডেইস লেটার" খুব একটা ভাল লাগে নাই। কিন্তু তার গত বছর করা "সানশাইন" সিনেমাটা খুব ভাল লেগেছিল। খুব কম সায়েন্স ফিকশন সিনেমাতেই মহাজাগতিক যুগে মানুষের বাস্তব অবস্থা কেমন হবে তা তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়, সেদিক দিয়ে সানশাইন বেশ সফল। বোঝা যায়, ড্যানি বয়েলের ভবিষ্যৎ আছে। এরই মধ্যে আরেকটা হিট সিনেমা করে ফেললেন। অনেক নাম শুনছি "স্লামডগ মিলিয়নেয়ার" এর।
রিভিউ খুব ভাল লেগেছে।
— বিদ্যাকল্পদ্রুম
থ্যাঙ্কু বস।
কচ্ছপ গতির নেট স্পিড দিয়ে ডাউনলোড করে সিনামাটা দেখলাম। প্রতিক্রিয়া হিসেবে আপনার কথাই উদ্ধৃত করি।
তাও ভালো শেষে একটা হ্যাপি এন্ডিং ছিল। তবে সিনেমাটা এভারেজ। :D
=============================
স্ল্যামডগ দেখলাম ... ভালো লাগছে কিন্তু অসাধারণ কিছু না ...
ভালো না লাগার একটা কারণ খুবই সিলি, ইন্ডিয়ার রাস্তার পোলাপানের মুখে ইংলিশ ডায়লগ একদম মানায় নাই ... আমার মনে হইছে ডায়লগগুলি যদি হিন্দিতে শুনতাম তাহলে অভিনয় আরো প্রাণবন্ত মনে হইতো ... যদিও এইখানে আসলে কারো কিছু করার নাই ...
কাহিনীতে খুব প্রেডিক্টেবল, অভিনয় এভারেজ, মিউজিক বেলো এভারেজ ...
ভালো দিকের মধ্যে ব্যাতিক্রম কাহিনী, কিছু কিছু সিকোয়েন্স [আমার ব্যক্তিগত পছন্দ অটোগ্রাফ নেয়ার সিকোয়েন্সটা, অসাধারণ :D]
সবচে অবাক হইছি আইএমডিবি রেটিংয়ে এই ছবি এইট পয়েণ্ট সেভেন, যেখানে অনেক অনেক ভালো ছবি আছে সাত থেকে আট রেঞ্জে ...
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...
গল্পের কারণে নয় কিন্তু সম্পাদনার গুনে ভালো লাগলো। তাছাড়া গ্লোবাল আসপেক্টে ভাবলে আংরেজী ভাষায় নির্মাণ ভালোই লেগেছে। বিশেষ করে সফলতার সাথে ভাষাটার ব্যবহার করা গেছে মনে হলো; এটলিষ্ট একজন ফরেনার হিসেবে ইংরেজী ডায়ালগই আমার ভালো লাগলো হিন্দীর চেয়ে। সমসাময়িক হিন্দী ছবির তুলনায় এটা বেশ ভালো ছবিই মনে হলো। সবকিছু মিলিয়ে বেশ ভালো লাগলো। ওয়েল ডান
আমার নিজের বেশ পছন্দের দৃশ্যের মাঝে আছে মমতাজ মহলের "রোড এক্সিডেন্টের মৃত্যুর" ঘটনাটা জামাল যখন পশ্চিমা ভ্রমনকারীদের অত্যন্ত জোরের সাথে বোঝানোর চেষ্টা করেছিল।
সারাটা ছবি দেখার সময় যে ভয়টা কেবল উঁকিঝুঁকি মারছিল, ছবি শেষে সেই ভয়টাই বাস্তবে রুপ নিল। আমি মনে আমার লেখায় উপরে লিখেছি, ছবিটা নিদারুন রকমের 'হিন্দী ছবি টাইপ'। গোটা ছবিতে যে উপাদানের অভাবে পুরোপুরি হিন্দি ছবি হয়ে ঊঠতে পারছিল না---ছবির শেষে ট্রেন স্টেশনে সমবেত নৃত্যের মধ্যে দিয়ে সে অভাবটাও ড্যানি বয়েল পূরন করে দিয়েছেন।
আমার মতে, ছবির সবচাইতে নিকৃষ্ট এবং চরিত্র-উন্মোচনকারী দিক হল এই অংশটি।যারা সন্দেহে ভুগছিলেন যে এইটি কি আসলে ইংরেজীতে করা হিন্দী ছবি কিনা, তাদের সন্দেহের নিরসন ঘটেছে এইখানেই।
আজকে গোল্ডেন গ্লোবে দেখলাম স্ল্যামডগ মিলিয়নেয়ারের জয়জয়কার ... বেস্ট মুভি, বেস্ট ডিরেক্টর, বেস্ট স্ক্রীনপ্লে আর বেস্ট ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক [এ আর রেহমানকে এই প্রথম কোন এওয়ার্ড অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে ধন্য হয়ে গেছি জাতীয় মন্তব্য দিতে দেখলাম] ...
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...
সেইটাই দেখলাম।
এখন আমার মনে হচ্ছে--কেবল আমিই কি উলটো বুঝলাম কি না! সবাই যে হারে স্লামডগের গুনকীর্তন করছে---কে জানে। আমি অবশ্য এখনো আমার নিজের ধারনাই বহাল রেখেছি। এত্ত সহজে পার্টি বদল করব না , হে হে হে ----
এইমাত্র দেখলাম সিনেমাটা।
কী বলব... ওয়েল, আমি হতাশ! এই সিনেমা নিয়ে এত মাতামাতি, এত উচ্ছ্বাস - সবই ওভারহাইপড মনে হল। বিশেষ করে, গোল্ডেন গ্লোব মাতানো এই ছবি, যেটা কি না আবার অস্কারেও দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মনোনয়ন পেয়ে দুনিয়া জুড়ে আলোচনার কেন্দ্রে পৌঁছে গেছে, সেটা থেকে যা প্রত্যাশা করেছিলাম, তা মেটেনি।
অনিকেত'দা, আপনার রিভিউয়ের বেশিরভাগ কথার সাথেই একমত। আমার ব্যক্তিগত মত - মেকিং খুব অসাধারণ কিছু না, সিনেমাটোগ্রাফিও তেমন নজরকাড়া না, অভিনয় অনেক জায়গাতেই কাঁচা লেগেছে যার কারণে সংলাপও কিছুটা মার খেয়ে গেছে মনে হয়। আরেকটা ব্যাপার তো কিংকর্তব্যবিমূঢ় উপরে বলেই দিয়েছে, হিন্দিতে কথা বলতে বলতে হঠাৎ করে অনর্গল ইংরেজিতে কথা বলা শুরু করা দেখে বেশ বেমানান লেগেছে, এরচেয়ে সংলাপগুলো আগাগোড়া হিন্দিতে থাকলে আরো বাস্তবসম্মত মনে হতো। মিউজিক আমার কাছে রহমানের অন্যান্য কাজগুলোর তুলনায় অনেকটাই অ্যাভারেজ মনে হয়েছে। সিনেমা শেষে ট্রেন স্টেশনে হঠাৎ করে নাচানাচিটা বেখাপ্পা লেগেছে, এবং ইচ্ছাকৃত কি না জানি না, নাচের বেশিরভাগ মুদ্রাই বেশ কিছু জনপ্রিয় গানের কপি মনে হয়েছে।
শেষে বলা যায়, সিনেমাটা "ভালোই" মনে হল। তবে আমি মনে হয় না কখনো দ্বিতীয়বার দেখতে চাইব এটা। কিছু কিছু সিকোয়েন্স খুব ভাল লাগলেও, সামগ্রিকভাবে এই ছবি নিয়ে এত মাতামাতি করার কিছু নেই বলেই আমার বিশ্বাস।
সর্বতো ভাবে একমত
ঝাকানাকা
http://omg.yahoo.com/photos/2-hot-2-handle/2635?nc
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
আহা আহা,
স্লামডগের এই সুন্দরীর ছবি দেয়ার জন্যে মুর্শেদ ভাইকে দশ লক্ষ তারা---
নতুন মন্তব্য করুন