“বাঙ্গালী জাতির ন্যায় বিশ্বাসহীন জাতি নাই। ভূত-প্রেত,হাঁচি-টিকটিকি,আধ্যাত্মিক জাতিভেদ ও বিজ্ঞান বহির্ভূত অপূর্ব বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা-সকলের প্রতি এক প্রকার জীবনহীন জড় বিশ্বাস থাকিতে পারে, কিন্তু মহত্বের প্রতি তাহাদের বিশ্বাস নাই।”
-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (আলস্য ও সাহিত্য)
বালক বয়েসের অনেকটা সময় নিজের মনে বড় হওয়ার সুযোগ পাওয়ায় বেশ কিছু গোলমেলে জিনিস সাথে করে নিয়ে বড় হচ্ছিলাম। বন্ধুবান্ধব থাকার একটা মস্ত সুবিধা হল এই যে, আপনার সব ‘গোলমেলে’ আইডিয়ার অংকুরেই বিনাশ ঘটে ওদের হাতে (অবশ্য সেইসাথে বেশ কিছু ভাল আইডিয়াও মারা যায়)। তবে মোটের উপর লাভের পাল্লাটাই ভারী। আর ছোটবেলার বন্ধুদের মত এমন নির্দয় সমালোচক আর কেউ আছে বলে আমার জানা নেই। আপনার যে কোন ধ্যান-ধারণা যে আসলে নিতান্তই ‘ভ্রান্ত ধারমা’ এবং আপনার বুদ্ধিশুদ্ধি যে আসলে গাছপালার সমগোত্রীয়---সেই কথা আপনার বন্ধুরা অপার ‘আন্তরিকতা’-র সাথে বুঝিয়ে দিতে কুন্ঠা বোধ করবে না। আমি অমিশুক হবার কারণে ছোটবেলায় তেমন বন্ধুভাগ্য হয়ে ওঠেনি। আর কারো সাথে মতবিনময়ের সুযোগ না থাকায় নানান ধরণের আজগুবি চিন্তা মাথায় নিশ্চিন্তে নিরাপদে ঘুরঘুর করত।
সময়ের চড় খেয়ে খেয়ে আমার সেইসব ‘মৌলিক’ ধ্যান-ধারণার অনেকগুলোই অকালে মৃত্যু বরণ করেছে। সব চাইতে বেশি সময় যেটা আমার গায়ে আঠার মত লেগেছিল---সেটা হল মহাপুরুষ খোঁজার ব্যারামটি। আমার কেবলি মনে হত, আমাদের এই পৃথিবী কেবল ‘যদু-মধু-কদু’ দিয়ে চলতে পারেনা। সাধারণ মানুষেরা বড় বেশি ‘সাধারণ’। এদেরকে একটা নির্দিষ্ট পথে চালিত করতে, তাদের জীবনকে একটা সফল পরিনতির দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে কিছু ‘বিশেষ’ মানুষের দরকার। এই বিশেষ মানুষগুলোই আমাদের মাঝে থেকে উদাহরণ সৃষ্টি করেন, অন্ধকারে পথ দেখিয়ে নিয়ে যান। এঁরা পৃথিবীতে আসেন কেবল একটা উদ্দেশ্য নিয়েই---সেটা হল মানুষের এই ভেড়ার পালকে ঠিক পথে চালনা করা। এঁরাই হলেন ‘মহাপুরুষ’! আজ আমরা যে এখনো ‘আমরা’ হয়ে আছি, এই পৃথিবীটা যে এখনো রসাতলে যায় নি---তার মূল কারণ ঐ লোকগুলোর পরিশ্রম আর আত্মবলিদান।
আমি ভেবে ভেবে সব ‘প্রতিষ্ঠিত’ মহাপুরুষদের মাঝে কিছু গরিষ্ঠ সাধারণ গুননীয়ক খোঁজার চেষ্টা করতে লাগলাম। অধিকাংশ মহাপুরুষ দেখা গেল শুরুতে সাধারণ মানুষ ছিলেন। আর দশজন মানুষের মতই একেবারে সাদামাটা। বেশিরভাগ মহাপুরুষের শৈশব কেটেছে দারিদ্র্যের সাথে সংগ্রাম করে। খুব সম্ভবত এইক্ষেত্রে উজ্জ্বল ব্যতিক্রম গৌতম বুদ্ধ---রাজকুমার ছিলেন তিনি। অনেক মহাপুরুষের প্রাথমিক জীবিকাও ছিল খুব সাধারণ—কৃষ্ণ গরু চরাতেন, আমাদের মুহাম্মদ মেষপালক ছিলেন(এই গরু চরানো বা মেষপালনের সাথে পরবর্তিতে একদল ‘দিকভ্রান্ত’ গর্দভরূপী মানুষকে সঠিক পথে পরিচালনা করার মিল খুঁজে পেলে আশ্চর্য হবেন না যেন), যীশু ছিলেন সামান্য ছুতোর। জীবনের পরের ধাপগুলোতে এসে এই সাধারণ জীবনে জন্ম নেয়া, সাধারণ জীবনযাপন করা লোকগুলো হঠাৎ করেই যেন মূল স্রোত থেকে আলাদা হয়ে যান। তাদের সমস্ত মেধা শ্রম তারা নিয়োজত করেন মানুষের মঙ্গলসাধনে। এই জায়গায় এসে আমি দেখলাম, মহাপুরুষদের মাঝে আবার শ্রেনীভেদ আছে। মোটামুটি দুই ধরনের মহাপুরুষ আছেন—একদল নিজেদের ঈশ্বরপ্রেরিত বলে দাবী করেছেন এবং ফলশ্রুতিতে ধর্মপ্রচারে নিয়োজিত হয়েছেন আর অন্যদল নিজেদেরকে একজন মানুষ হিসেবেই দেখেছেন। কেবল তাদের কাজে-কর্মের মাধ্যমে নীরবে নিভৃতে মানবজাতির তথা মানব সভ্যতার বিজয়রথ কে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। সভ্যতার অগ্রগতিতে এদের কারোরই অবদান ছোট করে দেখার মত নয়। তবে যদি আমাকে জিজ্ঞেস করেন, আমার ব্যক্তিগত পছন্দের মহাপুরুষরা হলেন ঐ দ্বিতীয়দলের লোকগুলো। তারা ঈশ্বরপ্রেরিত মহাপুরুষদের চেয়ে কোন অংশে কম ছিলেন না---কিন্তু সযত্নে নিজেদেরকে ঈশ্বরের মহিমা থেকে সরিয়ে রেখেছেন। সে কারণে একজন বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানী, চিকিৎসক, দার্শনিক আমার যতটা কাছের মানুষ বলে মনে হয় একজন ঈশ্বরপ্রেরিত মহাপুরুষ ততটাই দূরের বলে ভাবি। ঈশ্বরপ্রেরিত মহাপুরুষরা নানান অসাধ্য সাধন করেছেন, ঘটিয়েছেন নানান অলৌকিক ঘটনা। সেগুলো তারা অলৌকিক ঘটনা বলেই রেখে দিয়েছেন। সাধারন কোন মানুষকে ডেকে বলতে যাননি, এই শোনো, এই যে আমি এইমাত্র এক গ্লাস জল কে মদ করে ফেললাম, এইটে আসলে ‘এইভাবে’ করেছি। তার বদলে ঈশ্বরপ্রেরিত মহাপুরুষেরা সব সময় চেয়েছেন নিজেদেরকে একধরনের আলো-আঁধারির মাঝে লুকিয়ে রাখতে। এইটে জরুরি ছিল তাঁদের জন্যে—কারণ তারা চেয়েছিলেন মানুষের ‘অখন্ড’ শ্রদ্ধা(পড়ুন ‘ভীতি’)। অনেকটা যাদুকরদের মত—মনোরঞ্জন হয়ত করেন, কিন্তু মনোবাঞ্ছা পূরণ করেন না।সেদিক থেকে দেখুন একজন আলেকজান্ডার ফ্লেমিং (আলেকজান্ডার বো নয়—খুউপ খিয়াল কৈরা) বা একজন টমাস আলভা এডিসন তাদের আবিষ্কারকে জাদু বলে ঘোষনা করেন না। বরং মানুষকে ডেকে বোঝান কিভাবে এই অসাধ্য সাধন তারা করেছেন। আর ঠিক এই জায়গাটাতেই এঁরা এগিয়ে যান হাজার মাইল—বাকীদের চেয়ে।
আরো কিছুদিন পরে আমি দেখলাম যে আসলে এই দুই শ্রেনীর মহাপুরুষ ছাড়াও আরো এক শ্রেনীর মহাপুরুষ আছেন আমাদের মাঝে। এরা নিজেদের কে একেবারেই আমাদের সাথে মিশিয়ে রেখেছেন। আমাদের নিত্যদিনের জীবনযাপনে তাদেরও রয়েছে সমান অধিকার। আমাদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে তাঁরা পথ চলেন। পথের কাঁটায় আমাদের সাথে তাদেরও পায়ে রক্ত ঝরে। প্রবল ঝড়ে তাদের ঘরের চাল উড়ে যায়, বানে ভেসে যায় তাদের সন্তান। আবার সবার মত তাদের ঘরের চালেও এসে বসে পায়রা,কুমড়ো ফুলে ফুলে নুয়ে পড়ে লতাটা। আজ আপনি যে টেম্পুতে করে কাজে এসেছেন অথবা যে রিক্সায় চেপে বাড়ি ফিরবেন অথবা যে বাসের পাদানীতে ঝুলতে ঝুলতে কলেজ যাচ্ছেন, ঠিক আপনার পাশের লোকটিই, টেম্পুচালকটি অথবা রিক্সাচালকটিই কিন্তু হতে পারে এমন এক মহাপুরুষ। তারা আমাদের মত দেখতে, আমাদের মত শুনতে কিন্তু তবুও ঠিক আমাদের মত নয়। টেম্পুতে যখন একযাত্রী জানান যে তার পকেটমার হয়েছে, তখন আমি-আপনি নন, ‘ঐ’ লোকটিই সবার আগে মানিব্যাগ খুলে তার ভাড়া দিয়ে দেয়। আধাঘন্টা লক্করঝক্কড় বাসে আপনার-আমার পাশে ঝুলতে থাকা ‘এই’ লোকটিই কিন্তু বিনা বাক্যব্যয়ে বুড়ো মানুষটিকে তার সীট ছেড়ে দেয়। এইসব লোকেরা ছায়ার মত আমাদের ঘিরে আছেন, আমাদের প্রতিদিনের জীবনের অনুষঙ্গ হয়ে। এইসব নাম-না-জানা মহাপুরুষগুলোই কিন্তু একটু একটু করে আমাদের বদলে দেন। এদের জন্যেই পরবর্ত্তিতে যখন টেম্পুতে পকেটমার হয়ে যাওয়া যাত্রী ওঠে, নিজের অজান্তেই হয়ত আমার হাত বাড়িয়ে দেয় তার ভাড়ার টাকা। এদের জন্যেই হয়ত বাসে এক বয়েসী লোককে হাসিমুখে নিজের সীট ছেড়ে দিতে দ্বিধা করি না। এইসব লোকগুলো হয়ত নিজেরাও জানে না তারা কী ভূমিকা রেখে চলেছে আমাদের জীবনে। তারা নিজেরাও জানেনা যে তারা আসলে চলেফিরে বেড়ানো মহাপুরুষ। তারা আস্তিনে লুকিয়ে রেখেছেন এক আজব সোনার কাঠি যার ছোঁয়ায় প্রতিদিন মানুষ একটু একটু করে বদলে যায়, আজীবন মাথা ঝুঁকিয়ে পথচলা ভীতু কিশোর হঠাৎ করেই চোখ তুলে চায় দিকচক্রবালের দিকে।
আমার পরম সৌভাগ্য আমি এমন একজনের দেখা পেয়েছিলাম জীবনে।
আমার এই অকিঞ্চিতকর জীবনে যে অল্পক’টি গর্ব করার মত ঘটনা এসেছে, তার মাঝে অন্যতম হল এই মানুষটার সাথে পরিচয় হওয়া। আমার মাঝে মাঝে ভাবতে অবাক লাগে যে এক সময় এই লোকটার নীচের তলায় আমরা থাকতাম। গর্বে আমার বুকটা ফুলে যায় যখন ভাবি এই লোকটা আমাকে ডাকনামে চেনেন। এই লোকটা নানান সময়ে আমার সাথে আড্ডা দিয়েছেন একেবারে বন্ধু হয়ে। ঈশ্বরবিশ্বাস থেকে শুরু করে হিন্দী গান—কোনকিছু আমাদের আড্ডার বাইরে ছিল না। আমার জীবনের অন্যতম স্মরনীয় ঘটনার একটা হল ভোর তিনটার সময় সিলেটের এক অখ্যাত পাহাড়ের চুড়ায় তার সাথে বাউল গান শুনতে যাওয়া। একেবারে আর দশটা মানুষের মত, আর দশটা মানুষের সাথে মাথা ঝুঁকিয়ে ঝুঁকিয়ে তিনি গান শুনেছেন। অন্ধকারে পাহাড় বেয়ে বেয়ে ওঠার সময় পথ থেকে কুড়িয়ে নিয়েছিলেন একটা ছোট্ট লাঠি। তুমুল শীতের রাত। পাহাড়ের চূড়ায় একটা ছোটকরে আগুন জ্বালানো হয়েছে। সেইটা ঘিরে জমায়েত হয়েছেন বিশ-পঁচিশজন গ্রামবাসী। আরো আছেন নানান জায়গা থেকে আসা নাম না জানা বাউল শিল্পীরা। একজন একজন করে গান গাইছেন। সেই জমাট শীতের রাতের জমজমাট গানের আসরে শহুরে লোক বলতে কেবল আমরা চারজন। বড় নির্দয় শ্রোতা সেই আসরে। গান ভাল না লাগলে দ্বিধাহীন কন্ঠে গাঁয়ের লোকরা বলে উঠছে, ‘বইযা, বইযা বে’ (বসে যা, বসে যা, তোকে আর গাইতে হবে না)। সাথে সাথে তড়াক করে লাফ দিয়ে উঠছেন পরবর্ত্তী গাতক। গান ভাল লাগলে কেউ কেউ উঠে এসে পাঁচ টাকার নোট দিয়ে যাচ্ছে। সেইটা আবার গাতক গম্ভীর মুখে তার গায়ের চাঁদরে সেফটিপিন মেরে আটকে দিচ্ছেন। টাকার অংকটা বড় নয় এদের কাছে (অবশ্য দরিদ্র শ্রোতার দল, এই পাঁচটাকাই হয়ত তাদের জন্যে অনেক, চারটে ডিমের দাম!)। আমার সেই মহাপুরুষ লোকটি দেখলাম দিব্যি ওদের সাথে মিশে গেছেন। ওদের সাথে মাথা ঝুঁকিয়ে হাতের লাঠি দিয়ে টুক টুক করে তাল দিচ্ছেন আর অনুচ্চ স্বরে গাইছেন, “সিলোট’র মাটি—আহা রে সিলোট’র মাটি---”
পরবর্ত্তীতে তাকে একবার একটা চিঠি লিখে জানিয়েছিলাম যে আমার ‘সূত্রমতে’ তিনি আসলে একজন মহাপুরুষ! রীতিমত সন্ত্রস্ত হয়ে তিনি এই ‘সম্মান’ প্রত্যাখান করেছেন। শুধু তাই নয় মৃদুকন্ঠে বকে দিয়েছেন। একজন ভাল লেখক মানেই একজন ভাল মানুষ—এই কথা ঠিক না।
সেদিন তার কথা মেনে নিয়েছিলাম, বিনা বাক্যব্যয়ে।
সেইসময় তার সকল কথাই ছিল আমার কাছে বেদবাক্য। কিন্তু ধীরে ধীরে আমার মোহাবিষ্টতা কেটেছে। আমি জানতে পেরেছি যে শেষ পর্যন্ত তিনিও মানুষ, আর সবার মত তিনিও ভুল করেন। সবার মত তিনিও রাগেন, তিনিও চেঁচান, হয়ত সবার মত আড়ালে তিনিও কাঁদেন। কিন্তু যে জায়গাটাতে তিনি সবার চেয়ে আলাদা সেটা হল তার ঐ আস্তিনে লুকানো সোনার কাঠিটা। আপাত অদৃশ্য সেই কাঠিটা দিয়ে তিনি ছুঁয়ে দিয়েছেন অসংখ্য প্রাণ। আর আজ তাই আমার দেশের পথে প্রান্তরে সাদা পোষাকে ঘুরে বেড়ায় সংশপ্তকের দল---প্রাণ বাজী রেখে যারা লড়ে চলে শেষ পর্যন্ত। এটা সত্যি যে কিছু দিন পর পর রাস্তায় নেমে আসে শেয়াল-শকুনের দল। কিছুদিন পরে পরেই আকাশ মেঘলা হয়ে আসে। কিন্তু এখন শকুনের দল দেখে আমরা আর ভীত নই। শেয়ালের ডাক শুনে আমাদের ঘরে কোন শিশু আর ভয়ে কাঁদে না।
কারণ আমরা জানি এই লোকটির জন্যে আমরা পেয়েছি এক অমৃত বারতা।এই আঁধার এসেছে থাকার জন্য নয়। এই আঁধার এসেছে আলো কে আপন করে দেবার জন্যে। শেয়াল শকুনের দল কী করবে যখন অযুত নিযুত সংশপ্তক আলোর বর্শা হাতে নিয়ে পথ আগলে দাঁড়িয়েছে??
আসুন, এই লোকটার সাথে আপনাদের পরিচয় করিয়ে দিই।
ওহ, আপনারা তো তাঁকে চেনেনই। নীচে দেখুন তাঁর ছবি।
স্যার, আপনি হয়ত অনেক জানেন, অনেক বোঝেন।
কিন্তু আমি নিশ্চিত, আপনি সব জানেন না।
এই নাদান বান্দা একটা জিনিস জানে যেটা আপনি জানেন না।
আর সেটা হল, আপনি আমাকে যে বলেছিলেন, আপনি মহাপুরুষ নন---কথাটা ভুল!
[ছবি কৃতজ্ঞতাঃ ফ্লিকার]
মন্তব্য
আমার কৈফিয়তঃ
গতকাল আলমগীরের পোষ্টটা দেখে আমি আক্ষরিক অর্থেই মুহ্যমান হয়ে পড়েছিলাম। এইটা এমন কোন গুপ্ত বিষয় নয় যে আমি জাফর স্যারের বিশাল ভক্ত। শুধু আমি নই, এই সচলায়তনেই তাঁর অনেক মুগ্ধ পাঠক পাঠিকা আছেন।
ভদ্রলোক ভাল লেখেন।
তার একটা মুগ্ধ পাঠককুল থাকতেই পারে।
কিন্তু জাফর স্যার এইখানটায় একটা তফাত তৈরি করে দেন। অনেকেই হয়ত তাঁর লেখার সে রকম ভক্ত নন (নানান কারণে)। কিন্তু সেটা জাফর স্যারকে তাদের 'প্রিয় মানুষ' হবার পথে কোন বাঁধার সৃষ্টি করে না। কারণ বাংলাদেশের লোকেরা এই সাদাসিধে লোকটাকে ভালবাসে কেবল তার লেখার জন্য নয়---তাঁকে ভালবাসে কারণ আমরা আমাদের দেশটাকে যেরকম দেখতে চাই---এই লোকটি সেই সকল স্বপ্নপূরণের প্রতীক।
আমরা যে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় উজ্জীবিত আধুনিক বাংলাদেশকে দেখতে চাই, জাফর স্যার আমাদের সেই স্বপ্ন দেখান, কাঁধে হাত রেখে বলেন, এটা সম্ভব।
অনেকে কেবল কথা বলেই চুপচাপ বসে থাকেন। জাফর স্যার আমাদের দেখিয়েছেন কথার চেয়ে কাজ করে দেখানোটা কতটা জরুরী। দিনের পর দিন যদি কেউ মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে বিরামহীন কথা বলে যায়, বা আধুনিকমনস্কতা কতটুকু জরুরী সেটার উপর ক্রমাগত জোর দিয়ে যায়---তার উপর একটা মহল চটে উঠবে। এইটাই স্বাভাবিক। আলমগীর যে ঘটনাটা উল্লেখ করেছে, তারও আগে রেনেট একবার আমাকে এইরকম একটা ঘৃণ্য প্রচেষ্টার খবর দিয়েছিল। আমি তখন থেকেই জেনেছিলাম স্যার ক্রমশ রূঢ় থেকে রূঢ়তর আক্রমনের মুখে পড়বেন।
কারন আমাদের শত্রুরাও জানে---ওরা যা চায়, ওদের যে ধ্যান ধারণা তার সম্পূর্ণ বিপরীতে ঘাড় শক্ত করে দাঁড়িয়ে আছেন জাফর স্যার। মুক্তিযুদ্ধ আর বিজ্ঞানমনস্কতা---এইদুইটাই প্রতিক্রিয়াশীলদের জন্যে মৃত্যুদূত। কাজেই তারা সর্বান্তকরণে চাইবে তাকে সরিয়ে ফেলতে, নিদেনপক্ষে জনগনের সামনে হেয় করতে। এদের সাম্প্রতিক কর্মকান্ড সেইসবেরই আলামত প্রদর্শন করছে।
আমার উপরের লেখাটা প্রবল ঘোরের মাথায় লেখা। স্যারের উপর যে কোন আক্রমনে আমি ব্যক্তিগত ভাবে বিপন্ন বোধ করি। এইটা আমার একটা দূর্বলতা হতে পারে। সেই দূর্বলতার ছাপ সারাটা লেখায় ছড়িয়ে আছে।
আমার নানান দোষ-ত্রুটি আছে। সেসবের জন্যে অধিকাংশ সময়েই বড় ম্রিয়মান হয়ে থাকি।
কিন্তু এইটি এমন একটি দূর্বলতা যার জন্যে আমি কখনোই লজ্জিত বোধ করব না।
এই লেখা আর মন্তব্যের পর আর কিছু বলার নেই অনিকেতদা। আপনার লেখাটার ও প্রয়োজন ছিলো। কি ইউটিউবে ফালতু ভিডিও আপলোড হলো আর আমরা চেঁচিয়ে সারা---এইসব যারা ভাবছে তাদের জন্য বলছি ছাগুরা আমাদের এই পরিশীলিত নীরবতার সুযোগটাই নেয়। আমরা যে সবকিছু মেনে নেবো না--- ঐ তথাকথিত গ্রুপের ঘৃণ্য প্রচেষ্টা আমাদের ভালোবাসার কাছে যে উড়ে যাবে তার জন্যই এতো কথা।
***********************************************
আমার লেখায় বানান এবং বিরাম চিহ্নের সন্নিবেশনের ভুল থাকলে দয়া করে ধরিয়ে দিন।
********************************************************
আমার লেখায় বানান এবং বিরাম চিহ্নের সন্নিবেশনের ভুল থাকলে দয়া করে ধরিয়ে দিন।
ধন্যবাদ বর্ষা
বিষয়-বস্তু ঠিক আছে - মুহম্মদ জাফর ইকবালের মতন অসাম্প্রদায়িক চেতনায় উজ্জীবিত মহাপুরুষদের উপর ছাগুদের অযাচিত আক্রমনের জবাব দেয়াটা জরুরি - তবে মনে হয় পোস্টের প্রথম অর্ধেকটা বেশি নাটকীয় হয়ে গেছে বরং আপনার কৈফিয়ত বেশি সুন্দর করে গুছিয়ে লিখেছেন
থ্যাঙ্কু স্কোপ'দা
আমার কিন্তু প্রথম অংশটা খুবই ভালো লাগল!!
--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'
--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'
বরাহরা আছে তো কী হয়েছে?
আমরাও আছি!
অনিকেতদা,
লেখাটা পড়ে চোখে পানি চলে আসলো। স্যারের সাথে এরকম কতশত স্মৃতি যে আছে আমার, আমাদের সবার।আমার সবচেয়ে ভালো লাগে এই ব্যাপারটা যে--যে মুগ্ধতা নিয়ে তাঁর ছাত্র হতে গিয়েছিলাম প্রায় ৮ বছর এত কাছ থেকে দেখেও সে মুগ্ধতা এতটুকুও কমেনি; যদিও মতের অমিল যে হয়নি তা নয়!
আর জাফর স্যারের কাছ থেকে যে জিনিসগুলো আমি শিখতে চাই তার মধ্যে অন্যতম হল--এত এত প্রশংসা শুনেও পা মাটিতে রাখতে পারা!
ভালো থাকুন আমাদের প্রিয় স্যার--আমাদের জন্য, আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য--বাংলাদেশের জন্য!
আপনার লেখা পড়ে মাথাটা একটু ঠান্ডা হল, কালকে আলমগীর ভাইয়ের লেখাটা দেখে কান্ডজ্ঞানশূন্য হয়ে গিয়েছিলাম। মন্তব্য করার ভাষাও খুজে পাচ্ছিলাম না, অসংখ্য ধন্যবাদ সুন্দর করে গুছিয়ে লেখাটা দেবার জন্যে।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
ধন্যবাদ বস পড়ার জন্য।
আমি একটা ছোটো সংযোজন করি।
আমরা বীরপূজা খুব ভালোবাসি। আইকন কাঁধে নিয়ে পাহাড় বাইতে পারি। কিন্তু নিজেরা তাঁদের মতো হতে চাই না।
আমরা এখন বাংলাদেশের তাবৎ সমস্যায় মুহম্মদ জাফর ইকবালের মতো মানুষদের দিকে তাকিয়ে থাকি, নিজেরা কিছু করি না। অথচ আমাদের প্রতিটা ঘরে ঘরে, মহল্লায়, ক্যাম্পাসে, অফিসে তাঁর মতো একাধিক মানুষ দরকার।
হুমায়ূন আজাদ কেন শারীরিকভাবে আক্রান্ত হয়েছিলেন? জাফর ইকবাল কেন অনলাইনে বরাহপোনাদের কীবোর্ডে আক্রান্ত হন? কারণ তাঁদের মতো দৃঢ়স্বর লোক কম। আজকে ঘরে ঘরে তাঁদের মতো মানুষ থাকলে বরাহের দল মুখ খোলার আগে দুইবার ভাবতো।
জাফর ইকবাল স্যারকে আমরা শিখণ্ডী না বানাই। বরং নিজেরা জাফর ইকবালের মতো দৃঢ়চেতা হই।
সেটাই---জাফর ইকবালের গুণগুলো ধারণ করাই সবচেয়ে জরুরী।
সহমত
হিমুর সাথে সহমত। শুধু কথা বলার জন্য না বলে ব্যাপারটি আমাদের কাজেও দেখাতে হবে। জাফর ইকবাল স্যারের মূল্য আমার কাছে এতো বেশী কারণ উনি ওনার সুন্দর জীবনযাপন দিয়ে মুক্তচিন্তাধারীদের মাঝে ব্যতিক্রমের উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন।
********************************************************
আমার লেখায় বানান এবং বিরাম চিহ্নের সন্নিবেশনের ভুল থাকলে দয়া করে ধরিয়ে দিন।
********************************************************
আমার লেখায় বানান এবং বিরাম চিহ্নের সন্নিবেশনের ভুল থাকলে দয়া করে ধরিয়ে দিন।
________________________________
তবু ধুলোর সাথে মিশে যাওয়া মানা
অনিকেত, এই মাত্র আলমগীর ভাইয়ের পোস্টটাতে কমেন্ট করলাম, তারপরই আপনার এই আবেগ জাগানিয়া থরথর শিহরণ লাগানিয়া বীরপূজার ভক্তিরসের লেখাটা পড়লাম। একটু আগেই বলেছিলাম, বাঙালি আমরা জাতি হিসেবে বড্ড বেশী আবেগপ্রবণ। বড্ড বেশী। আপনার এ লেখাটা আমাকে ছুঁয়ে গ্যালো নিশ্চিত, তবে আশঙ্কার জায়গটা হলো সেইটেই যে, আপনার তাঁর সাথে বাউল গান শোনা কাজ করা বা পড়ার অভিজ্ঞতা হয়েছে, ঘোরের বশে মোহমুগ্ধতাটা আমাদের সাথে ভাগ করে নেবার অবকাশটাও আছে, কিন্তু আমরা ধরুন আমি তাঁকে কোনোদিনও দেখিনি, কিন্তু ছোট্ট একটা মানুষের মধ্যেও তিনি দুষ্ট ছেলের দল গড়ার উদ্দীপনা দেন, বা ধানশালিকের দেশে তাঁর ওয়ার্ড প্রসেসর দিয়ে কম্পোজ করা খুদি খুদি অক্ষরের উপন্যাস পড়ে স্কুলপড়ুয়া আমি যারপরনাই বিস্মিত, অথবা আরো বড় হয়ে সিঙ্গল মাদারের বাচ্চা হয়ে একটা অভিমানী ছেলের কৈশোরের মায়ামাখা গল্পে বালিশ ভিজিয়ে কাঁদা --- এগুলোই কিন্তু বৃহত্তর পাঠক সমাজের সাথে তাঁর যোগসূত্র। আর যাদের কথা বলছেন, আমি আপনি সেই স্তর পেরিয়ে এলেও, ওই স্কুলপড়ুয়ার দল এখনও ওই মহাপুরুষটাকেই খুঁজে ফিরছে, ঠিক যেমনটা আমরা খুঁজে ফিরতাম। তাদের সামনে আদর্শ বড় কম। আদর্শ কাউকে পেলে ছোটবেলার বীরপূজার ভক্তি যাতে বড়বেলায় গুণীজনের সম্মান রক্ষার স্তর পর্যন্ত টিকে থাকে, সেটুকু নিশ্চিত করাটাই সবচে' জরুরী হয়ে পড়েছে এখন। দুঃখের বিষয় হলো সুশীল ও অশীল দুই সমাজেই ঈর্ষা অতি ভয়ঙ্কর তাঁর বিরুদ্ধে। অজানার দূরত্বটুকুকে মেনে নিয়েই তাঁর অগ্রযাত্রা কামনা করি, কিন্তু পাশে হাতগুলোকেও আরও শক্তপোক্ত হতে বলি। ইতরজনের ইতরামির অনিঃশেষ স্খলন আমাদের আবেগের ফল্গুধারায় রুদ্ধ হবে কি'না জানিনা, লাঠ্যাষৌধির অপেক্ষায় আছি।
ধন্যবাদ সেঁজুতি।
আপনার সাথে সহমত।
অসংখ্য ধন্যবাদ অনিকেত'দা, এই লেখাটির জন্যে...
জাফর ইকবাল স্যারকে আমিও চোখ বুঁজে মহাপুরুষের কাতারে রাখি!!
--------------------------------------------------
"সুন্দরের হাত থেকে ভিক্ষা নিতে বসেছে হৃদয়/
নদীতীরে, বৃক্ষমূলে, হেমন্তের পাতাঝরা ঘাসে..."
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
ধন্যবাদ তিথীডোর
ভাল থাকুন সকল সময়
..................................................................
আমি অতো তাড়াতাড়ি কোথাও যেতে চাই না;
আমার জীবন যা চায় সেখানে হেঁটে হেঁটে পৌঁছুবার সময় আছে,
পৌঁছে অনেকক্ষণ ব'সে অপেক্ষা করার সময় আছে।
ধন্যবাদ পান্থ!
- আশার কথা হলো, তাঁর মতো দৃপ্ত মানসিকতার মানুষ তৈরী হচ্ছে বাংলাদেশে। ছাগুদের প্রোপাগান্ডা এই সকল মানুষ তৈরীকে রহিত করতে পারবে না। ছাগুরা এখন বেঁচেবর্তে খেলেও বেশিদিন আর নাই!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
তোমার মুখে ফুলচন্দন পড়ুক
জয়তু জাফর ইকবাল।
জাশি'র অপপ্রচারে স্যারের জনপ্রিয়তা বা গ্রহনযোগ্যতায় তিলমাত্র প্রভাবও পড়বেনা। বাংলার ঘরে ঘরে স্যারের মতো মানুষ দরকার।
ভীষনভাবে সহমত
ভাই, আপনি সবাইকে কোটি কোটি তারা দেন, আজকে আমি আপনারে কয়েক কোটি তারা দিয়ে দিলাম
এই লাইনটা পড়া মাত্রই জাফর ইকবাল স্যারের কথা মনে হয়েছিল আমার । কয়েক প্যারা নামার পর পোস্টের নিচে দেখি সেই জাফর ইকবাল স্যারেরই ছবি । আমি তো অবাক !
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
ধন্যবাদ এনকিদু, অসংখ্য ধন্যবাদ
আমি বোধহয় অনিকেতের মতোই বেশ একটু আবেগপ্রবণ গোছের।
লেখার শুরুর দিকে মনে হচ্ছিল, পোস্টটা আমারই, মাঝ রাতে উঠে ঘুমের ঘোরে একটা পোস্ট দিয়ে তারপর আবার ঘুমোতে চলে গেছি, খেয়াল নেই।
পোস্ট নিয়ে মতামত নাই দিলাম। ওপরের অংশেই সেটা প্রকাশ্য।
তবে পোস্টে একটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার আছে। জাফর ইকবাল শুধু নন, এসেছে আরো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অনেক মানুষের কথা। আমরা প্রতিনিয়ত আমাদের চারপাশের মানুষের অনেক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আত্মত্যাগের বলে এই পৃথিবীতে বেঁচে আছি। এরা বড় সাধারণ মানুষ, বড় সাধারণ চিন্তাভাবনা, কিন্তু ক্ষণিকের পরিচয়ে ক্ষণিকেই একটা ছোট ভালো কাজ, একটু এগিয়ে আসা, একটু সহানুভূতিপ্রবণ হয়ে ওঠা, এই ব্যাপারগুলো চিরকালই আমার কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে।
বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের কর্ণধার আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ সবসময় বলতেন, আমি একজন রাজা খুঁজছি, যে এসে এই জাতিকে পথ দেখাবে, আলো হাতে তুলে বলবে, ঐ যে পথ, এগিয়ে যাও! কোথায় আমার সেই রাজা? কবে আসবে সে?
স্যারের এই চিন্তা নিয়ে আমি বিশাল গোলমালে পড়ে গিয়েছিলাম। ঐ বাচ্চা বয়সে যেকোনো বিষয় নিয়েই খুব সিরিয়াস হয়ে উঠতাম এবং রাতদিন চিন্তা করতাম!
তারপর একদিন স্যারকে গিয়ে মাথা চুলকাতে চুলকাতে খুব টেনশনের গলায় বললাম, স্যার, অনেক তো ভাবলাম, কিন্তু আমার মনে হয়, রাজা বোধহয় কোনো ব্যক্তিবিশেষ নয়, রাজা হচ্ছে অনেকে মিলে একটা শক্তি...
স্যার বোধহয় হেসেছিলেন। কী জবাব দিয়েছিলেন মনে নেই।
তবে এত তপস্যা করে পাওয়া ধারণাটা মাথায় গেঁথে গেল। অনিকেতের মতোই তখন থেকে আমিও খোঁজ করতাম মানুষের ভালো গুণের, মানুষের ভালোমানুষি, সংগঠিত করার আশ্চর্য ক্ষমতা, কথা বলার জাদুকরি শক্তি আমাকে ভারী অবাক করে দিত। মনে হত, এই লোকটা তো অনেক ভালো নেতা হতে পারে, এর কথা অনেক মানুষ শুনবে। সেই লোকটা কেন মহাত্মা গান্ধীর মতো একটা নেতা হয়ে যাচ্ছে না, এই ব্যাপারটা আমাকে খুব অবাক করত। তবে একসময় না একসময় মানুষের জন্য ঠিকই তাকে এগিয়ে আসতে দেখব, এরকম বিশ্বাস করতাম। তবে তাদের কাউকেই শেষপর্যন্ত সেরকম করে এগিয়ে আসতে দেখি নি।
এই ছেলেমানুষি পর্যবেক্ষণের মেদযুক্ত অভ্যাস পরে ঝরে পড়ে যায়। কিন্তু মানুষের শুভকামী মনোভাবের জোরালো প্রকাশ, অর্থাৎ কার্যকরী ভালোমানুষি যেটা, সেটার ওপর আমি চরম আস্থা রাখতে শুরু করি। তখন ঠিক করেছিলাম, জীবনে কখনো ভালোমানুষ না হতে পারি, কখনো খারাপ মানুষ হব না। বিবেকহীন মানুষ হব না।
অনিকেতের পোস্টটা জাফর ইকবালকে নিয়ে। লেখক জাফর ইকবাল লোকটা এত বেশি ভালো যে বাংলাদেশের লোক বলেই মনে হয় না।
তিনি যাদের জন্য কাজ করছেন, সেই আমরা মূলত স্বার্থপর, আত্মকেন্দ্রিক, অলস, বাকচতুর ও চতুর দুটোই, সবচেয়ে বড় কথা, মূলত পলায়নপন্থী। আমেরিকা থেকে লোক নেবার জন্য একটা জাহাজ এসে বঙ্গোপসাগরে দাঁড়ালে গুটিকয় লোক বাদে সবাই দৌড়াবে সেই জাহাজে ওঠার জন্য, এও সত্য।
আমি দেশের মানুষকে দোষ দেই না। অভাবে, কষ্টে, নিপীড়নে, দিনের পর দিন অপদার্থ এবং বদমাশ সরকারগুলো সবার মনকেই বিষিয়ে দিয়েছে। বিশেষত, অল্প কয়দিন আগেই মন্ট্রিয়াল নামের একটা সুন্দর শহর থেকে ঘুরে এসে আমার দেশের মানুষের জন্য আরো মায়া লাগছে। আমার ছোটবেলার দেখা ঢাকা ছিল সেই মন্ট্রিয়ালের মতোই, ফাঁকা ফাঁকা রাস্তা, প্রত্যেক পাড়ায় পাড়ায় একটা করে বিশাল খোলা মাঠ, প্রায় বাড়ির সামনেই ফুলের বাগান। আমাদের এই দেশটাকে বিষিয়ে দিয়েছে মুষ্টিমেয় শয়তান, আর জেনে বা না জেনে তাদের সহযোগী হয়েছি আমরা। মন্ট্রিয়ালে ঘুরে এসে আমি বুঝতে পারলাম যে, আমার দেশের লোকের মুখ থেকে হাসি মুছে গেছে। কারো প্রতি কারো কোনো আগ্রহ নেই, শ্রদ্ধা নেই।
এমন অবস্থায় জাফর ইকবালরা তাহলে কোন জায়গায় দাঁড়িয়ে আছেন?
এই পাজি স্বার্থপর মানুষগুলো তো কিছু নিয়েই মাথা ঘামায় না, তাহলে?
উঁহু, বাংলার মানুষকে ভুল বুঝবেন না। ও হে ভাইসব, একদম ভুল বুঝবেন না! এই হারামজাদারা ভারী আবেগবান। শালারা খেতে পায় না, তবু ভালোবাসে। গাধার বাচ্চারা কিছুই শেখে নি, শুধু ভালোবাসতে শিখেছে। পেটে দুটো পানিভাত আছে কি নেই, চোখভর্তি পানি ঠিকই আছে!
সারা বাংলাদেশ জুড়ে ছনের বেড়ায় ঢাকা ঘরগুলোতে অদেখা টিমটিমে কুপিবাতির মতো এদের হৃদয়গুলো একেকটা প্রদীপ হয়ে ঠিকই জ্বলছে, বিশ্বাস করুন!
জাফর ইকবালরা দাঁড়িয়ে আছেন সেই শুভশক্তির জমিনের ওপরেই। আমাদের সমর্থন আর ভালোবাসার ওপরেই। আমরা সাগরের ওপর সেতু গড়তে পারি নি, কিন্তু বাঁধ দিয়ে সাগরের পানিকে জনপদ ভেঙ্গে নিয়ে যাওয়া থেকে ঠেকিয়ে রেখেছি।
আমাদের এই মাটি যতদিন ভালোবাসায় ভিজে থাকবে, সেই উর্বরা মাটি থেকে জাফর ইকবালরা জন্মাবেই। বার বার।
আবেগের দরকার নেই তা নয়। আবেগ আর কাজ দুটোরই দরকার আছে।
বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসার অসীম ক্ষমতা সম্পর্কে কখনো বিশ্বাস হারাই নি, আশা করি হারাবও না মৃত্যু পর্যন্ত।
এ মাটি শুকোবে না কোনোদিন।
--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'
--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'
মৃদুল ভাই,
আমি জানিনা আমার এই লেখা এমন চমৎকার কমেন্ট দাবী করে কি না
আপনাকে প্রণাম---
অনিকেতের পোস্ট আর মৃদুলের কমেন্ট দুটোই দুর্দান্ত।
মৃদুলদা, অসম্ভব সুন্দর এই কমেন্টের পর ধন্যবাদ দেয়াটাও ধৃষ্টতা।
ভালো থাকুন।
---- মনজুর এলাহী ----
ব্রেটল্ড ব্রেখটের নাটক 'গ্যালিলিও'র একটা ডায়লগ ছিলো...
ব্রুনো গ্যালিলিওকে বলছে- "দূর্ভাগা সে দেশ, যার কোনো নেতা নেই"
গ্যালিলিও ব্রুনোকে উত্তরে বলেছিলো- "দূর্ভাগা সে দেশ, যার কোনো নেতা প্রয়োজন"
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
সহমত
সবই তো আপনেরা বইলা ফেললেন। আমি শুধু নমস্কার জানায়া গেলাম।
------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
অনেক অনেক শুভ কামনা, শিয়াল দা
ভাষা নাই শুভ ভাই।
পড়ার জন্যে ধন্যবাদ বস
লেখাটি খুব ভাল লাগল । আমিও আবেগ প্রবণ হলাম ।
হিমু ভাই এর সাথে একমত অন্যদের পিঠ চাপড়ানো/পূজা করার চেয়ে নিজেদের তাদেঁর মত করার চেষ্টা করা উচিত ।
বোহেমিয়ান
পড়ার জন্য ধন্যবাদ বোহেমিয়ান
ভালো থাকুন, অনিকেতদা।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
তুমিও ভাল থাকো বুনোহাঁস
শুভেচ্ছা নিরন্তর
কালকে আলমগীর ভাইয়ের লেখাটা পড়ার পর থেকেই মেজাজ খুব খারাপ ছিলো, যতবারই তার লেখায় মন্তব্য করতে গেছি ততবারই দেখি গালিগালাজ ছাড়া আর কিছু মাথায় আসে না- পরে সেই চেষ্টা বাদ দিলাম। সবাই দেখলাম লিঙ্ক শেয়ার করতেছে ফেসবুক টুইটারে- আমার সেই ইচ্ছাও করলো না।
একটু আগে খোমাখাতায় ঢুকে দেখলাম এই পোস্টের লিঙ্ক। লগিন না করেই পড়লাম।
সত্যি কথা- জাফর স্যার আমার প্রিয় ঔপন্যাসিক নন, কিন্তু আমি তার ছোটগল্পের অসম্ভব ভক্ত। আমি জানি না মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে 'একজন দুর্বল মানুষ' বা 'ভালবাসার নক্ষত্র' এর মতো ছোটগল্প আর লেখা হয়েছে কি না। একবার তাকে সরাসরি বলেছিলাম- সার এইসব হাবিজাবি বাদ দিয়া ছোট গল্প লেখেন না ক্যান? উনি হেসে আমার ঢাকাইয়া একসেন্ট নকল করে বলেছিলেন- লেখুম রে, লেখুম।
সেইদিন এক ঘরোয়া আড্ডায় তর্কাতর্কি হচ্ছিলো পচাত্তরের পরে রাজাকারদের পুনর্বাসন বিষয়ে - আমি এক প্রাক্তন (পড়ুন 'পতিত') মুক্তিযোদ্ধা, বর্তমানে প্রখ্যাত সুশীল আর ছুপা পাকমনপেয়ারু পিতৃবন্ধুকে মোটামুটি পিষে ফেলেছি প্রায়- এমন সময় উনি শেষ অস্ত্র ব্যবহার করা শুরু করলেন- 'সেইসময় তো তোমার জন্মই হয়নি, এইবার অফ যাও বাবা টাইপের' কথাবার্তা- আমিও ঘাড় শক্ত্ করে শ্রদ্ধেয় চাচাজানকে যথোপযুক্ত জবাব দিয়ে গেলাম।
এই তর্ক করার সাহস আমি একজন বিশ্রী গোঁফওয়ালা ভদ্রলোকের কাছ থেকেই পেয়েছি। ঠোঁটকাটা বেহায়া একজন লোক, দিনের পর দিন মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অনর্গল কথা বলে যাচ্ছেন- সবসময় একটা জিনিস নিয়েই বকরবকর করেন। যিনি তথাকথিত নিরপেক্ষ নন, শাদাকে শাদা আর কালোকে কালোই বলেন- গাঢ় শাদা বা হাল্কা কালো বা ধুসর এরকম কোনো টার্ম ব্যবহার করেন না, পাকিস্তানী বাহিনীকে 'হানাদার বাহিনী' বলেন না, নিজামি-মুজাহিদদের নাম ধরেই বলেন- 'এদেশীয় দোসর' বলেন না।
মাথা উঁচু করে হাঁটা একজন মানুষ। মাথা উঁচু করে হাঁটতে শেখানো একজন মানুষ।
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না
ওডিন, মনটা অসম্ভব আলো হয়ে উঠল তোমার কথাগুলো পড়ে।
আমি লেখাটায় যে সংশপ্তকের কথা বলেছিলাম আজ তাদের একজনের সাথে দেখা হয়ে যাওয়ায় মনটা দারুন খুশি হয়ে গেল।
ভাল থাকো ওডিন, এইরকম লোকই আমাদের দরকার...!
অনিকেতদা, আমার অতটা সৌভাগ্য হয়নি স্যারের এতোটা কাছে আসার। আমার মুগ্ধতা শুরু হয়েছিলো তাঁর বইয়ের পাতায়। বড় হতে হতে জানছিলাম তাঁর ব্যাপারে। মুগ্ধতা বেড়েছিলো গুণিতক হারে।
বরাহদের আক্রমণ কখনোই ঠেকাতে পারবেনা স্যারের মতো মানুষকে।
প্রসংগক্রমে একটা তথ্যসন্ত্রাসের সাথে স্যারের উপর রটানো ঘটনার মিল খুঁজে পাচ্ছি। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলাটাও বরাহদের জারজবাপদের তরফথেকে আজগুবিভাবে বংগবন্ধুর উপর চাপানো হয়েছিলো। আজ এতো বছর পর বরাহ এবং বরাহপোনারা তাদের জারাজবাপদাদাদের পদাংক ডিজিটালভাবে অনুসরণ করছে। কিন্তু একটা কথা তাদের মাথায় মনে হয় খেলছেনা। আগরতলা মামলার পর বংগবন্ধুর পাশে একাট্টা হয়েছিলো বাংলাদেশের সবকটি মানুষ। আজ দরকার হলে আবারো তার পুনঃরাবৃত্তি হবে।
বরাহশিকার জারি থাকুক।
---- মনজুর এলাহী ----
ধন্যবাদ মনজুর।
ভাল থাকুন সব সময়--
লেখাটা খুব ভালো লাগলো, ভাইয়া। সময়ের অভাবে বিস্তারিত বলতে পারলাম না বলে দুঃখিত। ব্যক্তিগত ভাবে এই মানুষটাকে চেনেন আপনি, এ-কারণে অনেক হিংসা হচ্ছে আপনাকে।
থ্যাঙ্কু ইশতি
ভাল থাকো, সব সময়
ঈশ! আপনি এত কাছ থেকে দেখেছেন!
আমি ওঁর লেখাগুলো পড়ি (আজকাল ওঁর কিশোরকিশোরীদের নিয়ে লেখা গল্পগুলো বেশী ভালো পাই, সেই কাবিল কোহকাফী, বকুল, লিটু, দীপু, কাজল, মেকু নারীনা তিন্নি এদের গল্প, সম্প্রতি পোষা পশুপাখী নিয়ে একটা লেখা "সঙ্গীসাথী পশুপাখী" পড়ে একেবারে অভিভূত হয়ে গেলাম ) আর ভাবী এই চিরসবুজ মনের অধিকারী মানুষটাকে সামনে দেখতে পেলে কেমন লাগবে!
"আমার বন্ধু রাশেদ" আর "রঙীন চশমা" সারাজীবন ভুলতে পারবো না! আর সেই ভাবী স্ত্রীর কাছে টাকা ধার করার গল্পটা, বিয়ে হয়ে গেলে মহিলা বললেন, "তবে যে হাত দেখে বলেছিলে খুব বড়লোকের সঙ্গে বিয়ে হবে!"
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
আসলেই তুলিরেখা---আমার নিজের মাঝে মাঝে খুব ভাগ্যবান ভাবতে ইচ্ছে করে। আর ইয়াসমীন হকের কথা বলছেন? আপনার যদি তাঁর সাথে দেখা হয়, আমি বাজী ধরে বলতে পারি, জাফর স্যারের চেয়েও আপনার তাঁকে বেশি ভাল লাগবে। এই দুইজন আমার দেখা সেরা দম্পতিদের মাঝে দ্বিতীয় সেরা--প্রথম সেরা দম্পতি অবশ্যই আমার বাবা-মা, হা হা হা ----
আপনি লুক ভালু।
মুহম্মদ জাফর ইকবালের উপর আক্রমণ হলে মনে হয় আমার উপরেই আক্রমণ হলো। আলমগীর ভাইয়ের পোস্ট দেখে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে বসে ছিলাম ২ দিন। মানুষ এতটা ছোটলোকও হতে পারে!
জাফর স্যার, আপনার ভয় নেই। আমরা চারিদিক থেকে ঘিরে রাখবো আপনাকে।
অনিকেতদাকে অসংখ্য ধন্যবাদ পোস্টটির জন্য।
---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে
জাফর ইকবালকে নিয়ে শিবিরদের লাফালাফি যেমন খারাপ, যারা তাকে মহাপুরুষ বানিয়ে বসে আছেন সেটাও তেমন খারাপ।
১) বিজ্ঞানে অবদানে কেউ বিজ্ঞানী হয়। সেভাবে বিবেচনা করলে মু জা ই একদম নগন্য। কয়েক হাজার বাংলাদেশী দেশেবিদেশে আছে, যারা তার চেয়ে বেশি অবদান রেখেছে। অথচ সে যেভাবে নিজেকে বিশাল এক বিজ্ঞানী হিশাবে হাজির করেছে, এবং সাধারনকে গিলি্যেছে, সেটা খুবই খারাপ উদাহরন। সত্যিকারের বিজ্ঞানীদের কাছে এটা লজ্জাজনক। সায়েন্স ফিকশন লিখলেই কেউ বিজ্ঞানী হয়ে যায় না।
২) মু জা ই বর্তমানের সেরা সায়েন্স ফিকশন লেখক বটেই
৩) ভাল শিশু সাহিত্যিক ও
৪) কিন্তু উনি খুবই জনপ্রিয়খোকী। টিভিতে কোনো এক নাটকেও একবার অভিনয় করেছিলেন। নিজের নাম, চেহারা প্রচারে কেন তিনি এত ব্যস্ত? তখন থেকেই ভক্তি চলে গেছে। না আমি শিবির না। আমি কোনো দলের না।
৫) হুমায়ুন আহমেদের মত মু জা ইও একজন ব্যবসায়ী। সাধু সাজার কোনো দরকার আছে কি? বছর বছর গন্ডা গন্ডা বই লেখে, মুলত ব্যবসা করতে। গবেষণার সময় কোথায় পাবে?
৬) মু জা ই'র মত এত নিজের প্রচার করা লেখা আমি কোথাও পড়িনি। ক্যালটেকে কামলা ছিল (পোস্টডক), সেটা নিয়ে কি না লেখা! মনে হচ্ছে সে ফাইনম্যান হয়ে গেছে। ক্যালটেকে undergraduate, graduate student হিসেবে ঢোকাটা অনেক সন্মানের। সে রকম ৫০-১০০ জন বাংলাদেশী ছিলো এবং আছে। কেউ এত প্রচার করে না।
দুনিয়ার কোনো দেশে, জাতিতে এত কম বিজ্ঞানে কাজ করে, কেউ বিজ্ঞানী ভাব নিয়ে চলে না।
৭) কমী হিসেবে ভালো - কিন্তু ওভাররেটেড।
৮) বিজ্ঞানের বাইরে কোনোকিছু লেখার মত পড়ালেখা তার নাই। সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীরা যে কলাম লেখে, তার তুলনায় সে ধুলাবালি। অথচ সে জনপ্রিয়!
৯) কেউ কি আমাকে বলতে পারবেন, মু জা ই কেনো মুক্তিযুদ্ধে করেনি? সে কোন মুখে আমাদের মত নতুন প্রজন্মকে বলে - "তোমরা নোবেল পেতেও পার। কিন্তু কোনোদিন মুক্তিযোদ্ধা হতে পারবে না।" সত্যি কথা। কিন্তু তার মুখ থেকে? তার (এবং হু আ এর) তো সে সুযোগ ছিল। তিনি কেনো মুক্তিযোদ্ধা হননি? Hypocrite.
১০) কলামের শুরু করেন এভাবে -"আমরা যারা রাজনীতি বুঝিনা"- তারপর বিশাল আলোচনা। এ ধরনের hypocrisy কেনো লেখার মধ্যে আসবে?
১১) মু জা ই যেদিন ব্যবসা বাদ দিবে, সেদিন তাকে আমি ভাল মানুষ বলবো। বছরে একটা বই, বা দু বছরে একটা।
১২) আরো অনেক লেখা যায়। যার যেটুকু প্রাপ্য সেটুকু সন্মানই তাকে দিন। তাকে মাথায় নিয়ে লাফানোরও কিছু নেই, আবার নর্দমায় ফেলারও কিছু নেই। ফেডআপ এই ওভাররেটেড লোককে নিয়ে খারাপ, ভালো সব পোষ্টিংএ।
১. একটু কি বলবেন, তিনি নিজেকে ঠিক কীভাবে কোথায় বিশাআআল বিজ্ঞানী হিসেবে উপস্থাপন করেছেন? তাঁর দাবীটা কোট করে সেটাকে খণ্ডন করুন।
৪. জনপ্রিয়খোকী শব্দটার সাথে আমি পরিচিত না। তিনি টিভিতে এককালে অভিনয় করেছিলেন, সেটা কোন কাল? একটু উল্লেখ করবেন। টিভিতে অভিনয় করলেই যদি লোকের জাত চলে যেতো, তাহলে তো ভালোই হতো।
৫. তাহলে ফাইনম্যানও ব্যবসায়ী। তিনিও পুস্তক রচনা করেছিলেন, যেগুলি ভালো বিক্রি হয়েছিলো। তাই না? আর তিনি শিক্ষক হিসেবে নিয়োজিত, সেই নিয়োগের আলোকে একটু জানান আমাদের, তিনি গবেষণা থেকে কীভাবে বিরত। তাঁর পাবলিকেশনের লিস্টটা একটু দেখান। তিনি গবেষণা থেকে বিরত থাকায় জাতি ও বিশ্বের কত বড় ক্ষতি হয়েছে, সেটাও জানান।
৬. ক্যালটেক নিয়ে তিনি "ভাব নিয়েছেন" এমন কিছু লেখার লিংক দিন বা স্ক্যানড কপি দিন।
৭. তিনি ওভাররেটেড হলে আসুন আমরা একটা রেটিং সংস্থা খুলি, এবং কে কত বড় কর্মী তার সঠিক রেটিং দেই।
৮. বিজ্ঞানের বাইরে পড়ালেখা না করেই একটা কিছু নিয়ে তিনি লিখেছেন, এমন একটা লেখার লিঙ্ক দিন বা স্ক্যান্ড কপি দিন।
৯. মনে হয় ওনার সাহসে কুলায় নাই যুদ্ধ করার। যুদ্ধ করতে সাহস লাগে। বাংলাদেশের বহু লোকই যুদ্ধ করে নাই ভাই। তখন ওনার সাহসে কুলায় নাই, কিন্তু যারা যুদ্ধ করেছে, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা তার নষ্ট হয় নাই। এভাবে দেখতে পারেন ব্যাপারটা।
১০. এই সারকাজম হয়তো ওনার লেখার স্টাইল। আপনি ধমক দিয়ে তাকে কীভাবে লিখতে হবে, সেটা এনফোর্স করতে পারেন কি? এর মধ্যে হিপোক্রিসির কী দেখলেন?
১১. ইকবাল সাহেবকে আপনি আমরণ খারাপ লোক বলে যান না ভাই। সমস্যা কোথায়? আকাশে যেদিন দুইটা চাঁদ উঠবে, সেদিন তাঁকে ভালো লোক বলেন, কোনো প্রবলেম নেইকো।
১২. এবার আপনাকে বলি একটা কথা। আপনি জাফর ইকবালের ওপর চটা। যারে দেখতে নারি তার চলন বাঁকা। তিনি যে কাজগুলো ঠিকমতো করতে পারছেন না বলে আপনি দাবী করছেন, এক কাজ করুন, আপনি সে কাজগুলো আরো ভালো মতো করে দেখিয়ে দিন। আমরা আপনাকে মাথায় করে নাচি। ওনাকে নর্দমায় ফেলে দেই। কবে শুরু করবেন?
রাসেল,
জাফর স্যার ও তাঁর ভক্তবৃন্দের ভক্তিতে আপনি 'ফেড আপ'। সেটা বুঝতে পারলাম। কিন্তু কিছু কিছু জিনিস বুঝতে পারলাম নাঃ
ঠিক কি কি বিবেচনায় তিনি 'নগন্য' বলে মনে হয়েছে আপনার? মানে, আমি জানত চাইছি জাফর স্যার বিজ্ঞানে কি কি অবদান রেখেছেন এবং সেগুলো কেন নগন্য?
এই মন্তব্য লিখতে গিয়ে দেখলাম হিমুও আপনাকে কিছু সুনির্দিষ্ট প্রশ্ন করেছে এবং তার উত্তর আপনি এড়িয়ে গেছেন। ঐ একই প্রশ্নগুলো আমিও করতাম কিন্তু মনে হচ্ছে আপনি সেটাও এড়িয়ে যাবেন।
আপনার একটা কথার সাথে আমি সহমত---তাঁকে দেবতা বানানোর দরকার নেই। স্যারকে আমি কিভাবি, সেইটা লেখাতেই উল্লেখ করেছি বলে আবার লিখছি না। আমার নিজের ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দের বাইরে এসে যদি দাঁড়াই এবং সকল দোষ-ত্রুটি হিসেবে এনেই দেখি---জাফর স্যার এই সময়টায় সবচেয়ে জরুরি একজন মানুষ--- সেইটা তিনি সুসাহিত্যিক, বা বিজ্ঞানী (বা অবিজ্ঞানী, আপনার মতে) এইসব কোন কারণে নয়। তিনি জরুরি কারণ তিনি আমাদেরকে একটা খুব প্রয়োজনীয় দাবীর মুখোমুখি করে দিয়েছেন---সেটা হল, দেশ থেকে শুয়োরের বাচ্চা নিধন করা।
তার আর যত দোষ থাকুক, তিনি যে অক্লান্ত ভাবে 'শুয়োর মারার' আহবান জানিয়ে যাচ্ছেন, শুধু এই একটা কারণেই তাঁকে মাথায় তুলে রাখা দরকার।
তাই প্রশ্নটা হল, আপনি ঠিক দলে আছেন তো?
আর ইউ শুয়োর (Are you sure)?
ক্লাস টুতে যখন পড়তাম, বন্দে আলি মিয়া কেই বড় কবি ভাবতাম। ক্লাস নাইনে যখন পড়তাম হুমায়ুন আহমেদকেই বিশ্বের সেরা সাহিত্যিক মনে হত। এখন মধ্য তিরিশে আর সেটা ভাবিনা। আমি জাফর ইকবালকে খারাপ বলছিনা। উনি ভাল করেন, চালিয়ে যাক। কিন্তু ওভাররেটেড, আমার বয়সে তাই মনে হয়। আমিও একবয়সে ওনার মুরীদ ছিলাম।
আপনার আগের মন্তব্যের জবাবে হিমু ভাই, অনিকেতদা সব বলেই দিয়েছেন। আমি কিছু সংযোজন করি:
৪নং পয়েন্টে জাফর স্যারের জনপ্রিয়তার কথা বলেছেন। জাফর স্যার কিন্তু তাঁর জনপ্রিয়তা ভালো কাজ করার জন্য ব্যবহার করেন। গণিত অলিম্পিয়াড আয়োজনে স্যার জড়িত আছেন বলেই এটা এত দ্রুত সফলতা ও জনপ্রিয়তা পেয়েছে তা অস্বীকার করবেন? একমুখী শিক্ষার বিরুদ্ধে আন্দোলনে তাঁর মত জনপ্রিয় একজন যুক্ত ছিলেন বলেই সরকার পিছু হটতে বাধ্য হয়েছিল। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ইস্যুতে তরুণ প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ করতেও তাঁর মত জনপ্রিয় একজন কলম ধরেছেন। এসকল কাজেই তাঁর জনপ্রিয়তাকে মানবতার কল্যাণে ইতিবাচকভাবে ব্যবহার করা হয়েছে।
৭নং পয়েন্টে বললেন “কমী হিসেবে ভালো - কিন্তু ওভাররেটেড”। জাফর স্যারকে আপনি নিছক কমীই বলছেন? ওনার সাংগঠনিক দক্ষতা আপনার চোখে পড়ে না? আর “ওভাররেটেড” মানে কি? আমাদের দেশে কতজন মানুষ নিঃস্বাথর্ভাবে দেশের জন্য কাজ করে যাচ্ছে? আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ, জাফর ইকবালের মত মানুষদের তালিকা তো দীর্ঘ হবে না। এই অল্প কিছু মানুষদেরও যদি আমরা প্রাপ্য সম্মান না জানাই, তাহলে ভালো কাজ করার উৎসাহ কেউ পাবে?
৮নং পয়েন্টে বললেন “বিজ্ঞানের বাইরে কোনোকিছু লেখার মত পড়ালেখা তার নাই”। লেখালেখি করার জন্য কি শুধু পড়ালেখাই লাগে? সৃজনশীলতা ব্যাপারটা তাহলে কি? আপনার কাছে তথ্য-উপাত্ত সমৃদ্ধ জ্ঞানগর্ভ লেখাই শুধু ভালো লেখা? জাফর স্যারের অনেক লেখা হৃদয়ে নাড়া দিয়ে যায়, প্রাণশক্তি জাগিয়ে তোলে, প্রতিবাদে ফেটে পড়ার প্রেরণা জোগায়, দেশের জন্যে ভালো কিছু করা জন্য উদ্বুদ্ধ করে। শুধু জ্ঞানগরিমা দিয়ে কি তা সম্ভব?
সহজ সরল কথায় কিন্তু অকাট্য যুক্তিতে ভরা সজীবের স্বতঃস্ফূর্ত উত্তরটা ভারী চমৎকার লাগল!
--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'
--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'
মানুষের মন পাল্টায়। আজকে ভাল লাগছে না, দেখবেন কালকে ঠিক ভাল লেগে গেছে। ভয়ের কিছু নাই।
রাসেল সাহেবের জায়গামতো জ্বলে উঠলো ক্যানো?
ছেলেবেলার আইডল... এখনো তাকে সেভাবেই দেখি।
_________________________________________
সেরিওজা
১৩) জাফর ইকবালের সমালোচনা করলেই সে জামাত/শিবির অথবা শুয়োর হয়ে যাবে, এটা খুবই খারাপ অন্ধভক্তি।
১৪) ১৯৮০ এর দশকে হুমায়ুন আহমেদ বিখ্যাত হওয়ার পরে মু জা ই free ride পেয়ে এসেছে। যারাই হু আ'র বই পড়েছে, সবাই মুজাই র নাম জানত। হুমায়ুন আহমেদ অনেক/অসংখ্য বই, ইন্টারভিউ তে মুজাই কে promote করেছে সে সময়ে। বাংলাদেশের যারাই হুআ এর নাম জানত, সবাই জানত তার এক ভাই আমেরিকাতে এক মহাবিজ্ঞানী(?) আছে, যে সত্তরের দশকে কয়েকটা সায়েন্সফিকশন লিখেছে। সেভাবেই আমি তার নাম জেনেছি। তার বই পড়েছি তার অনেক বছর পরে। এটা একটা অকাট সত্য কথা। হুআ এর মায়ের নামও অনেকে জানে। তিনি কি কোনো বই লিখেছেন? বাংলাভাষার অনেক সুসাহিত্যিক মাহমুদুল হক, শহিদুল জহির, শওকত আলী, আরো অনেকে শুধু যদি এ রকম ফ্রি পাবলিসিটি পেত!
১৫) শুধু পিএইচডি করলেই কেউ বিশিষ্ট বিজ্ঞানী হয়ে যায়না। মুজাই বিজ্ঞানী বটে, কিন্তু বিশিষ্ট বিজ্ঞানী না। বিভিন্ন বিষয়ে বাংলাদেশের ১০০০ জন পাওয়া যাবে, যারা তার চেয়ে বেশি পেপার লিখেছে বা বেশি citation পেয়েছে। মুজাই first author বা main author হিশেবে একহাতে গোনা যায় এ রকম কয়েকটা পেপার লিখেছেন, যার citation খুবই নগণ্য। বিজ্ঞানে অবদান নিরপেক্ষ ভাবে বিচার করা যায়। তাকে পাঠকরা ভালবাসে, তার মানে এই না যে, সে যা তার চেয়ে বেশিভাবে বাড়িয়ে বলতে হবে বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে। ক'জন সেই ১০০০ জন ডেডিকেটেড বিজ্ঞানীদের নাম জানেন? একজন সায়েন্সফিকশন লেখক সাধু ভাব নিয়ে বিশিষ্ট বিজ্ঞানী সেজে বসে আছেন।
১৬) বিজ্ঞানের কথা এজন্যই এসেছে, কারন হুআ এর কল্যাণে ১৯৮০ এর শেষ দিকে অসংখ্য বাংলা পেপারে আমি মুজাইর সাক্ষাতকার, ইত্যাদি পড়েছি। সে বিশাল এক বিজ্ঞানী! কামলা খাটছে, গবেষনা পেপারের নাই খোজ, অথচ তার ভাবখানা সে ফাইনম্যান হয়ে গেছে। এ ধরনের মিথ্যাচারের কি কোনো দরকার ছিলো? ছোটোবেলায় সে আমাকে ঠকিয়েছে। limelight হল তার বেচে থাকার রক্ত। জনপ্রিয়তা তার আ্যাডিকশন।
১৭) যে যোগ্যতায় সে নিজেকে প্রচার করেছে ১৯৮০ এর দশকে, তাতে এই ব্লগেরই ৫০ জন পাওয়া যাবে যারা প্রত্যেকে ১০০ টা করে ইন্টারভিউ পেতে পারে বাংলা পেপারে। যেমন ধরুন, রাগিব হাসান কয়টা ইন্টারভিউ পেয়েছে?
১৮) বাংলাদেশে যারাই পিএইচডি ধারী বসবাস করছেন, এদের ৬০% ই খুব ভাল চাকরি নিয়ে বিদেশে থেকে যেতে পারতেন। কিন্তু তারা ফিরেছেনে দেশে। অর্থনীতি, বিজ্ঞান, ইত্যাদিতে অনেকে কাজ করছেন। কেউ ঠিক তাদের অতীতের অমুক তমুক বিক্রি করে পয়সা, সুনাম কুড়ায়না। বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেককে নিশ্চয় চেনেন অনেকেই। মুজাইর এত মিডিয়াপ্রিতি আর সাধু সাজার কি দরকার? সাধু বাবা কেনো পিএইচডির পর ফিরেনি? বা পোষ্টডক এর পর? চাকরি করে টাকা কামিয়ে দেশে ফিরে এখন প্রণাম কামাচ্ছেন। হুমায়ুন আহমেদ তো পিএইচডির পর পকেটে ১০০ ডলার নিয়ে ফিরে এসেছিলেন। ইচ্ছা করলেতো উনি তা নাও করতে পারতেন। কই কেউ তো তাকে মারহাবা দেয় না। আরো হাজার হাজার লোক চিনি। কই তারাও তো কেউ মারহাবা নেয় না।
১৯) সে অনেক ভালো কাজ করে ভালো। বাংলাদেশে কমপিটিশন কালচার চালু করেছে বুয়েটের কায়কোবাদ, ১০০ তম গণিত অলিম্পিয়াড দেশ হিশেবে বাংলাদেশ হওয়ার অবদান মুজাইর চেয়ে তারই বেশি। সে তো এ নিয়ে সাধু বাবা সেজে লাইমলাইট নেয় না। limelight হল তার বেচে থাকার রক্ত। জনপ্রিয়তা তার আ্যাডিকশন।
১৯) হিমু সাহেব - জি, তিনি ২০০৩ এর দিকে এক নাটকে এসেছিলেন, জনপ্রিয়তা বিশেষজ্ঞ হিশেবে একটু যেচে দেখার। পরে কেউ পছন্দ করেননি, তাই বাদ দিয়েছেন।
২০) হিমু সাহেব - জি, ফাইনম্যান বই লিখেছেন। মোট ৬/৭ টা সারাজীবনে, দুটো জনপ্রিয়, বাকি জ্ঞানের।
২১) মুজাই আর তার ভাই যত ইচ্ছা বই লিখুক, বছরে ১০ টা করে বা ৫ টা করে, শুধু সাধু না সাজলেই হল। ব্যবসা-বাণিজ্যকে ব্যবসা-বাণিজ্যই বলুক, সাহিত্যচর্চা বা মানবসেবা না বলে।
২২) একজন পীরের তিনটা দিক থাকে - ১) অন্ধভক্তি, ২) সেটাকে পুজি করে ব্যবসা, ৩) উপরওয়ালার সাথে কানেকশন দেখানো। মুজাইর এই তিনটা দিকই আছে। ১) তার ফেসবুক ফ্যানপেজে গেলে দেখা যায় লেখা - "you are the greatest mathematician", "you are the greatest scientist", "you are a 'gineous' (আমার বানান না)", "I love you more than my parents"..blah blah..আর ব্লগএও তো একই কথা। এতটা অন্ধভক্তি বিদ্যাসাগর, বিবেকানন্দ রাও পেত না। কোনো সত্যি কথা বললেও সব ধেয়ে আসে তাদের পীরকে পীর হিশেবে না মানার জন্য শাস্তি দিতে। ২) গন্ডা গন্ডা বই ছেড়ে দিয়ে বছর বছর ফ্যানদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। ছাপার লেখা মানেই জ্ঞান, এই থিওরী আমাকে দিবেন না প্লিজ। ৯৮% ছাপার লেখাই ফালতু। ৩) উপরওয়ালার সাথে কানেকশন নিয়ে বলা হয়ে গেছে। পীররা দেখায় আরব কানেকশন। আর ইনি দেখায় তার আমেরিকা কানেকশন। বাড়িয়ে বাড়িয়ে প্রচার করে, মানুষের কান ঝালাপাল করে দিয়েছেন। জয় বাবা সাধুবাবা।
২৩) তিনি শুয়োর নিধনে ব্যস্ত। সাবাশ চালিয়ে যান।
২৪) আবু সাইদ আবদুল্লাহ কে নিয়ে ঠিক সমালোচনা করলেও তো কেউ ব্লগারদের মাইর খায় না। জয় বাবা সাধুবাবা।
২৫) তার পরিবারেও একজন আছে, পদার্থবিজ্ঞানে পাবলিকেশন '০' (ঘোড়ার ডিম, একদম শূণ্য)। তিনি আবার প্রফেসর। মাস্টার্স পদার্থে ঠিক আছে। লেকচারার তো হতে পারেন। অথবা যে বিষয়ে পিএইচডি, কেমিকাল কিছু, সেটাতে প্রফেসর হোন। সত্য কথা শুনতে খারাপ লাগারই কথা। জয় বাবা সাধুবাবা।
২৬) তবু চালিয়ে যান। যতটুকু করছেন ততটুকুই বা কে করে।
২৭) আমার মনে হয় নতুন জেনারেশনের নতুন আইডল দরকার। যারা ষাটের দশকে বা তার পরে জন্মেছেন। ৭১ এর পরে ৪০ বছর হয়ে যাচ্ছে। এখনো একই লোকেরা, হিপোক্রিটের দল, যুদ্ধে ফাকি মারার দল, গলাবাজির দল, রাজাকারের দল, ইত্যাদি আর আমাদের দরকার নেই।
২৮) আরো অনেক কিছুই বলা যায়। এটাই আমার শেষ মন্তব্য। ধন্যবাদ।
রাসেল,
অনেক ধন্যবাদ ফিরে এসে উত্তর দেবার জন্যে।
আমি আপনার 'উত্তর' গুলো পড়েছি। একেবারে শেষে লিখেছেন যে এইটাই আপনার 'শেষ মন্তব্য'। অস্বীকার করব না-- তাতে মনটা একটু খারাপই হয়েছে।
না, এমন আবার ভাববেন না যে, আপনার কমেন্ট আমাদের এইখানে বিস্তর মজার খোরাক দিয়েছে সেজন্য হঠাৎ কর বন্ধ হয়ে গেলে পরে আমরা একটা বিনোদন থেকে বঞ্চিত হব। আপনার কমেন্টগুলো আমি আসলেই ভাল করে পড়েছি এবং বোঝার চেষ্টা করেছি আসলে আপনি কী বলতে চাইছেন।
মানুষের অল্প কিছু কথা শুনে তার সম্পর্কে ধারণা করে নেয়াটা অনুচিত এবং প্রমাদসঙ্কুল। আমি তাই সেটা করতে যাচ্ছি না। আমি দুঃখিত, আমার উপরের মন্তব্যে 'শুয়োর' একটা Pun করার লোভ এড়াতে পারিনি বলে। কিন্তু সেটার উদ্দেশ্য আপনাকে কোন গ্রোত্রভুক্ত করানো ছিল না, এইটা বলতে পারি।
আপনি মন্তব্য যেখানে শেষ করেছিলেন (১২ তম),তারপর থেকেই আবার শুরু করেছেন। আমি ভাবছিলাম এই নতুন মন্তব্যগুলোতে আপনার সুনির্দিষ্ট উত্তর কিছু পাব।
বলতে বাধ্য হচ্ছি, আমি হতাশ হয়েছি।
আপনি এত কষ্ট করে এতগুলো লাইন লিখলেন কেন? আগের ১২টি মন্তব্য আবার কপি-পেস্ট কর দিলেই চলত।
আমি ধরে নিচ্ছি আপনি একজন স্থিতধী মানুষ। কাজেই আমার কথাগুলো কোন আক্রমন না ধরে নিয়ে একটু ধুনে দেখুন, কেমন?
প্রথমেই খেয়াল করলাম আপনার 'সাধু' প্রীতি। 'সাধু' শব্দটা ৮ বার এসেছে সারাটা মন্তব্যে । এইটা খুবই স্বাভাবিক যে আপনি হয়ত এইখানে 'সারকাজম' আনার চেষ্টা করেছেন। আমি বোঝার চেষ্টা করছিলাম, জাফর স্যারের কোন দোষ তাঁকে আপনার কাছে 'সাধু' হিসেবে প্রতীয়মান করছে। আমি তাঁকে অনেক কাছে থেকে দেখেছি। হতে পারে আমি তাঁর একজন বিরাট ভক্ত সেজন্যে তাঁর 'সাধুত্ব' দাবী করার মুহূর্ত্তগুলো খেয়াল করা হয়নি। কিন্তু আমি বাকী সবার কাছে অনুরোধ জানালাম, এমন কোন ঘটনা/উদাহরণ যদি কারো কাছে থাকে, তাহলে তথ্য প্রমানসহ পেশ করতে।
আপনি হয়ত এইটাও বোঝাতে পারেন যে, আমরা, তাঁর ভক্তকুল তাঁকে সাধু হিসেবে প্রচার করছি। সেইটাও কিন্তু ভুল হবে। এখানে আমাদের কেউই তাঁকে কোন সাধুপুরুষ হিসেবে প্রচার করতে আসিনি। তিনি যা, তিনি তাই। দোষত্রুটি নিয়ে একজন সাধারণ মানুষ। আমার লেখায় মনে হয় সেটা উল্লেখও করেছিলাম। আমাদের কাছে তিনি কেন গুরুত্বপূর্ণ (লক্ষ্য করুণ, শব্দটা 'গুরুত্বপূর্ণ', 'সাধু' নয়!) সেইটা আমি বেশ ক'বার ব্যাখ্যা করেছি, অন্যেরাও করেছেন। দয়া করে একবার সেগুলোতে চোখ বুলিয়ে নিন।
আপনি আক্ষেপ করেছেন বাংলাদেশের অনেক সুসাহিত্যিক জাফর স্যারের মত এমন 'প্রচার' পাননি। সত্যি কথা। এর একটা কারণ হতে পারে (আপনার যুক্তি ধার করে নিয়ে বলছি), তাঁদের হয়ত কোন প্রথিতযশা বড় ভাই ছিলেন না, আর থাকলেও তারা তাদের ছোটভাইয়ের প্রচার করতে চান নি। এটা যদি মেনেও নি--তাতে জাফর স্যারের দোষটা বুঝতে পারলাম না। আপনার ধারণা তিনি হু্মা-কে(আপনি যাকে হু আ বলেন তাকে আমি হুমা বলি) অনুরোধ করেছিলেন তাকে নিয়ে প্রচার করার জন্যে? সেরকম ভাবার জন্যে আপনার কাছে কী প্রমাণ আছে?
পেপার বা জার্নালে পাব্লিকেশান নিয়ে আপনি বেশ অবসেসড মনে হচ্ছে। আপনি প্রথমে যেখানে জাফর স্যার কে 'সত্যিকারের বিজ্ঞানী' বলে স্বীকার করতে চান নি। আগের কিস্তিতে দেয়া আপনারই মন্তব্য তুলে দিচ্ছিঃ
"বিজ্ঞানে অবদানে কেউ বিজ্ঞানী হয়। সেভাবে বিবেচনা করলে মু জা ই একদম নগন্য।"
"সে যেভাবে নিজেকে বিশাল এক বিজ্ঞানী হিশাবে হাজির করেছে, এবং সাধারনকে গিলি্যেছে, সেটা খুবই খারাপ উদাহরন।"
আর এই পর্যায়ে এসে বলেছেনঃ
তাহলে আমরা আপনাকে চেপে ধরায় তার 'নগন্য' বিজ্ঞানী থেকে 'বিজ্ঞানী পদে উত্তরন হয়েছে--এইটা কি ধরে নেব?
আরো মজার কথা বলেছেন আপনিঃ
এতে মনে হচ্ছে আপনি তার সাধু ভাব নিয়ে বিজ্ঞানী 'সেজে' বসায় বেশ বিরক্ত। যাই হোক, এই পর্যায়ে আপনাকে একটা বিজ্ঞানের প্রশ্ন করার লোভ সামলাতে পারছি না। আপনি কি টিপিসি সম্বন্ধে জানেন? টিপিসি নিয়ে জাফর স্যারের কাজ নিয়ে আপনি অবহিত আছেন?
যাই হোক, জাফর স্যার বিজ্ঞানী কি বিজ্ঞানী না সেইটা কখনোই আমার লেখার মূল বিষয় ছিল না। এইটা নিয়ে এতখন বকবক করলাম, কারন আপনি এই বিষয় নিয়ে বেশ অশান্তিতে ভুগছেন বলে মনে হয়েছে।
আপনার মন্তব্য গুলোতে চোখ বুলোলে আরো একটা জিনিস দেখিঃ তাঁকে আপনার একজন 'জনপ্রিয়তা-লোভী' ব্যক্তি বলে মনে হয়েছে। এই বিষয়টি নিয়ে আপনি আগের কিস্তিতেও বিষোদ্গার করেছেন। এবারো করেছেন। জনপ্রিয় সবাই হতে চায় (কম-বেশি)। আপনিও চান নিশ্চয়ি। না চাইলে আপনাকে বেশ একটা উজ্জ্বল ব্যতিক্রম বলে ধরে নিতে হবে। প্রশ্ন হল, স্যার জনপ্রিয়তাকে কী কাজে ব্যবহার করছেন? সেটা নিয়ে কিছু বলুন। নাহলে এইটা স্রেফ হিংসুটে বাচ্চাদের ছিঁচকাদুনেপনার মত শোনায়।
আপনার কথা বার্তায় আপনাকে বিজ্ঞান মনষ্ক একজন বলেই মনে হয়। একজন বিজ্ঞান মনষ্ক লোক হিসেবে এইটাও নিশ্চয়ই আপনার জানা থাকার কথা যে শুধু মাত্র বিবৃতি দিলে তাকে লোকে বিবৃতিবাজ বলে। আপনি যেকোন বিবৃতি(statement) দিলে সেটাকে সমর্থন দেবার মত যথেষ্ট তথ্য-উপাত্ত দিতে হবে। আপনি যেসব দাবী করে গেছেন একের পর এক সেগুলো নিয়ে একটাও তথ্য হাজির করতে দেখলাম না এবারেও। হিমু আপনাকে বারবার বলেছে তথ্য হাজির করতে। সেটা না করে আপনি আবার আগের মতই কথা বলে গেলেন। ব্যাপারগুলো আপনাকে খুব একটা সম্মানজনক অবস্থানে নিয়ে যাচ্ছে না।
আপনি অবশ্য এতেই থেমে থাকেন নি। চলে গেছেন ড ইয়াসমীন হক নিয়ে কথা বলতে। বেশ কিছু চমকপ্রদ মন্তব্য করেছেন আপনার স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে। আমি বিস্তারিত না বলে আবারো অনুরোধ করব আপনার মন্তব্যগুলোর স্বপক্ষে তথ্য প্রমান নিয়ে আসুন।
জাফর স্যার সাধু বাবা কি অসাধু বাবা, তিনি নগন্য বিজ্ঞানী কি আদৌ বিজ্ঞানী নন, তিনি জনপ্রিয়তার লোভী কিংবা সেটা নন---এইসব নিয়ে আমার লেখাটা ছিলনা। তারপরেও আমি এবং আমরা একের পর এক আপনার উৎকট সব মন্তব্যের জবাব দিয়ে গিয়েছি। আপনি একের পর এক নানান বিদ্বেষমাখা মন্তব্য করে যাচ্ছেন এবং সেগুলোর পক্ষে-বিপক্ষে একটাও তথ্য দিতে পারছেন না--আমাদের দিক থেকে বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও।
আমি চেয়েছি আপনাকে সুযোগ দিতে, আপনার অবস্থানটা সবার কাছে সঠিক ভাবে তুলে দিতে। আপনি সেসবের কোন সদব্যবহার করতে পারেন নি। এর কারণ হতে পারে দুইটাঃ
এক) আসলে আপনি কিছুই প্রমান করতে পারবেন না। আপনার উদ্দেশ্য কখনোই কিছু প্রমান করা ছিল না। আপনার উদ্দেশ্য ছিল, আমাকে মাফ করবেন শব্দটা ব্যবহার করতে হচ্ছে বলে, 'ছাগুগিরি' করা।
দুই) এক নম্বর কারণটা আবার পড়ুন।
আপনাকে আরো একবার আহবান জানাচ্ছি, আমাদের প্রশ্নের উত্তরে তথ্য প্রমান সহ উপস্থিত হবার জন্যে। আপনার ভয়ের কিছু নেই।
কথা দিচ্ছি আমরা আপনার কেশাগ্রও স্পর্শ করব না।
আমরা বরাহ শাবক, ছাগুদের পর্যন্ত প্রচুর পরিমানে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিই।
---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে
২৯) উত্তর না দিয়ে থাকা গেলনা। গালাগালি করার কি কোনো দরকার ছিল? আমি 'ছাগু' হলে আপনি 'ছা' বাদ দিয়ে যা থাকে তা
৩০) আমি যথেষ্ট যুক্তি দিয়েই লিখেছি। citation ওয়েবসাইট থেকে প্রমান দেখে নিন যে, ইয়াসমিন হক পদার্থে একেবারে শূণ্যটা পেপার লিখে প্রফেসর হয়ে বসে আছেন। সত্য হজম করতে এত কষ্ট হচ্ছে কেন?
৩১) আমি তাদেরকে কখনো ব্যক্তিগতভাবে দেখা করিনি। আমি নিশ্চিত তারা খুবই ভাল মানুষ। অমায়িক, স্নেহপরায়ন, এবং আরো অনেক কিছু। অধিকাংশ মানুষই ব্যক্তিগতভাবে ভালই হয়। এখানে তাদের পাবলিক পারসোনা বা সমাজে/সাহিত্যে/কাজে তাদের ইমেজ, প্রভাব, ইত্যাদি নিয়ে কথা হচ্ছে। সেখানেও তারা খারাপ না। আমি শুধু বলছি যে মুজাই ওভাররেটেড। আপনি তাদেরকে চেনেন, তাই biased, আমি না. এবং এই ওভাররেটেড বিষয়টা সম্পুর্নই তার নিজের বানানো। কারণ limelight হল তার বেচে থাকার রক্ত। জনপ্রিয়তা তার আ্যাডিকশন।
খুব যত্ন সহকারে তিনি এ কাজটি করেছেন। আপনারা এখন সব অন্ধভক্ত হয়ে বসে আছেন। সাধু বাবার জয়গানে মুগ্ধ। বাংলাদশের সেরা বিজ্ঞানী উনি। সেরা গণিতবিদ। সেরা সবকিছু। আর যারা সেরা তারা সব নিখোজ।
৩২) "টিপিসি" নিয়ে আপনি কি জানেন? আমার যততুকু জানা সবটুকু মুজাইর নিজের প্রপাগান্ডা মুলক বই থেকে, বইয়ের নাম - দেশের বাইরে দেশ । তার পোষ্টডক এর প্রজেক্ট ছিলো টাইম প্রজেকশন চেমবার। পোষ্টডকে সবারই এ রকম প্রজেক্ট থাকে। Dave Nygren নামে এক আমেরিকান ১৯৭৮ সালে এই ডিটেকটর বের করেন। CERN এর ওয়েবসাইট থেকে পড়ে নিন -
http://cerncourier.com/cws/article/cern/29014
কোথায় মুজাই'র নামতো কোথাও নাই। নিজের ঢোল নিজে পেটানো বইএ তার নিজের গল্প ছারা, দুনিয়ার আর কোথাও কি মুজাইর টিপিসিতে অবদান উল্লেখ আছে। আপনি এবার বলুন, আপনি মুজাইর নিজের ঢোলমার্কা বই ছাড়া অন্য কি কিছু জানেন। আপনিও নিশ্চয়ই কোনো ভালো প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করছেন। আপনি যেহেতু মুজাইর মত ঢোলবাজ হতে পারবেন না, তাই নোবেল না পেলে আপনার কথা কেউ জানবেনা। আর মুজাই একটা ষ্টান্ডার্ড পোষ্টডক প্রজেক্ট যে রকম কিনা সবাই করে, সেটা বাদ্য বাজিয়ে (নিজেরটা নিজেই) আজ সবার কাছে বিশাল কিছু সেজে প্রনাম কুড়াচ্ছেন। এটাকেই বলে ওভাররেটেড। অবশ্যই তারা প্রজেক্টে সবাই মিলে একটা ভাল কিছু করেছেন। কিন্তু সেটা কি উল্লেখ করার মত কিছু? তার নিজের লেখা ছাড়া আর কোথাও কেন তার নাম নেই তাহলে?
আপনি জেনে অবাক হবেন, তার নাম একজায়গায় আছে। সেটাও তার 'দেশের বাইরে দেশ' ঢোল বাজানো বইএর রেফারেন্স দিয়ে। বাংলাদেশের ১৭ বছরের এক অন্ধভক্ত বালক, উইকিপিডিয়াতে টিপিসি এনট্রিতে মুজাইর নামে এক লাইন যোগ করেছে। আমার মতে পুরা এনট্রিটা ন্ষ্ট হয়ে গেছে এই কারনে। উইকিপিডিয়া এনট্রি নিরপেক্ষ হওয়ার কথা। ১৭ বছরের এক ছেলে কি জানে মুজাইর নিজের ঢোল পিটানো বইয়ের বাইরে। আপনারাও মুজাইর গল্প খেয়ে খেয়ে অন্ধভক্ত। এ নিয়ে আর বেশি কথা বললে আমার বমি হয়ে যাবে।
৩৩) তবে উনি সফল। তার প্রচার তো মানুষ খেয়েছে। সত্যিকারে ভালো বিজ্ঞানী না হলেও নগণ্য অবদানের বিজ্ঞানীও বাংলাদেশে ভাত পায় বিশাল কিছু জাহির করে। আর সত্যিকারে বিজ্ঞানীরা ভাত পায়না এই ভন্ড পীড়ের মুরীদদের ভীড়ে।
৩৪) কিছুদিন আগে এখানে এরকম একজন লিখেছিল সুইডেনের এক মহাজ্ঞানীকে নিয়ে। মুজাই তার চেয়ে একটু উপরে। কিন্তু আন্তর্জাতিক cricket এ তার রানের গড় ০.১৭ (শূণ্য দশমিক এক সাত). যেখানে সাবার গড় থাকে ৫০ এর কাছাকাছি। এত কম গড়ের কাউকে কোনোদিন কেউ cricketer বলবে? অথচ উনি এক বিশাল কিছু (ইয়াক, ইয়াক)????
৩৫) তার সমাজে অনেক কিছু নিয়ে কাজের উদ্দেশ্য ভাল। কিন্তু সাধুবাবা সাজা কেন? উনি তার ব্যবসা সম্পর্ক ছিন্ন করে কি ছোটদেরকে বাণী দিতে পারেন না?
অনিকেতদা এতকিছু বলার পরও কিছু বুঝলেন না। কেউ জেগে ঘুমালে তো তাকে জাগানো যায় না। জাফর স্যারের ভক্তরা কি শুধু এটাই বলে বেড়ায় তিনি দেশের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞানী? আপনার পুরো লেখার সারবক্তব্য, জাফর ইকবাল বিজ্ঞানী হিসেবে তেমন জাতের কেউ না। আবার একফাকে বললেন, “এখানে তাদের পাবলিক পারসোনা বা সমাজে/সাহিত্যে/কাজে তাদের ইমেজ, প্রভাব, ইত্যাদি নিয়ে কথা হচ্ছে।” কথা তো সেখানেই। জাফর স্যার মূলত জনপ্রিয় তাঁর লেখালেখি ও দেশের কাজে অবদান রাখার জন্য। শুধুমাত্র বিজ্ঞানী হিসেবে মূল্যায়ন করলে ব্যাপারটা খন্ডিত হয়ে যায়, সামগ্রিকতা পায় না।
আপনি বাণিজ্য বাণিজ্য করে এত চেঁচাচ্চেন। জাফর স্যারকে কি আপনার অর্থলোভী মনে হয়? আমেরিকা থেকে ফিরে আসার কথা বাদ দিলাম, দেশে এসেও তিনি ঢাকার কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে না জয়েন করে সিলেটের মত মফস্বল এলাকার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন জয়েন করলেন? ঢাকায় থাকলে তো বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে খ্যাপ মারতে পারতেন, প্রাইভেট কোম্পনীগুলোতে কনসালটেনসি করে টাকা কামাতে পারতেন। সরাসরি ছাত্র হবার সুবাদে জানি, অনেক বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্যারের জন্য মোটা মাইনের অফার ছিল। স্যারের সাথে গণিত অলিমপিয়াডে একসাথে কাজ করেন যে কায়কোবাদ স্যার, তিনি কিন্তু বুয়েট ছেড়ে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে ঠিকই চাকরি করেছেন। বাংলাদেশের নামকরা সাহিত্যিকরা শিশুকিশোর উপযোগী সাহিত্যরচনায় যেখানে উদাসীন, সেখানে স্যার সফলতা পাওয়ায় আপনার গায়ে জ্বালা ধরে যায় কেন?
কিছু প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করি, আপনাকে কি জামাত শিবিরের কেউ কখনো জীবননাশের হুমকি দিয়েছে? বাসার সামনে বোমা ফাটিয়েছে? আর সেসব পরোয়া না করে নীতিতে অটল থাকার মত সাহস দেখিয়েছেন? স্যারের এই নীতিগত অবস্হান তরুণ প্রজন্মের কতজনকে সাহসী করে তুলেছে, এটা আপনি বোঝেন না, নাকি বুঝতে চান না? আপনার অবস্হান সম্পকে একটা কথাই বলা যায়, “যারে দেখতে নারি তার চলন বাঁকা”।
- রাসেল ভাইছাব অখনো যান নাই? আমি তো আপনের লাইগ্যা একটা গান বাইন্ধা আনছিলাম। যান নাই তো কী হৈছে, আমার গানটা আপনের হুনন লাগবোই।
যেওনা "সাথী", ওওওওওও, যেওনা "সাথী".....
গান শেষ। এইবার দাওয়াত। আপনে যেইখানেই থাকেন অতিসত্বর মঞ্চের কাছে চলে আসেন। আর বিদায় বুদাই লৈয়েন না। কইলজায় লাগে। তারপরেও যদি যানগিয়া, তাইলে আর কি, আবার আইসেন। আবার আসলে কিন্তু চাইরটা ডাল-ভাত খেয়ে যেতেই হবে, হুঁ!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
জনাব রাসেল, আপনার শিশুসুলভ বিশ্লেষণ দেখে হাসি সামলাতে পারলাম না। আপনার যুক্তি খন্ডন করার কোন আগ্রহ বোধ করছিনা, আগে একটু হেসে নেই
রাসেল সাহেব,
১৩) জাফর ইকবালের সমালোচনা করলেই সে জামাত/শিবির অথবা শুয়োর হয়ে যাবে, এটা খুবই খারাপ অন্ধভক্তি, এতে আমার কোনো দ্বিমত নেই। তবে দেখতে হবে "সমালোচনা"টা কেমন। আপনি তো পেপারকে খুব সিরিয়াসলি নেন বলে মনে হয়েছে, আপনি পেপারের ঢঙে গুছিয়ে একটা পোস্ট লিখুন। তাতে তথ্যসূত্র দেবেন, ডকুমেন্টসের স্ক্যানড কপি বা লিংক দেবেন। আমরা সাভিনিবেশে পড়বো। তা না করে জাফর ইকবাল সাধুবাবা, জাফর ইকবাল গবেষণা করে না, জাফর ইকবাল পচা ... এরকম কিশোরীদের মতো কান্তেসেন ক্যান?
১৪) আমি জন্মেছি এবং বড় হয়েছি ১৯৮০ এর দশকে। হুমায়ুন আহমেদের একটা মাত্র বই বাল্যকালে পড়েছি, সেটার নাম নীল হাতি। সেখানে জাফর ইকবালের কথা লেখা ছিলো না। তবে আমাদের বাসায় তাঁর "হাত কাটা রবিন" ছিলো, সেটা ক্লাস থ্রি-তে উঠে পড়েছিলাম। কপোট্রনিক সুখ দুঃখ আরো পরে। ক্লাস সেভেনে বা এইটে থাকতে পড়েছিলাম দুষ্ট ছেলের দল। এরপর খুঁজে পেতে পড়েছি টি রেক্সের সন্ধানে। গল্প সমগ্র ছাপা হবার পর বাকিগুলো পড়েছি। আপনি যেভাবে হুমায়ূন আহমেদকে পীর ধরে চিনেছিলেন, আমি সেভাবে চিনিনি। এবং আপনি হয়তো স্বীকার করবেন, তৃতীয় ব্যক্তিদের অভিজ্ঞতা তৃতীয় কিসিমের হবে।
বাংলাভাষার অনেক সুসাহিত্যিক মাহমুদুল হক, শহিদুল জহির, শওকত আলীর নাম লোকে জানে না, সেই দোষ কি জাফর ইকবালের? সায়েন্স ফিকশন বা কিশোর উপন্যাসের চাহিদা আছে, সুচারু উপন্যাসের পাঠক পিরামিডের ওপরের দিকে বলে তাঁদের সংখ্যা কম। আপনি খোঁজ নিলে দেখবেন রসময় গুপ্তের পাঠকের সংখ্যা রবীন্দ্রনাথের পাঠকের সংখ্যার চেয়ে বেশিই হবে। সেটা গুপ্তবাবু বা ঠাকুর মশাই, কারো দোষই নয়।
১৫) শুধু পিএইচডি করলেই কেউ বিশিষ্ট বিজ্ঞানী হয়ে যায়না। একমত। তবে জাফর ইকবালকে মহাবিজ্ঞানী হিসেবে মনে হয় না এখানে কেউ গুরুজ্ঞান করছেন। জাফর ইকবাল জনপ্রিয় তাঁর অ্যাকটিভিজমের কারণে। অ্যাকটিভিস্ট হিসেবে তাঁর সমালোচনা করছেন না আপনি।
বিজ্ঞানে অবদান নিরপেক্ষ ভাবে বিচার করা যায়। তাকে পাঠকরা ভালবাসে, তার মানে এই না যে, সে যা তার চেয়ে বেশিভাবে বাড়িয়ে বলতে হবে বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে। এখানেও আমি একমত। আপনি কি একটু নিজের কথা কাজে লাগাবেন? নিরপেক্ষভাবে কোট করবেন জাফর ইকবালের দাবিগুলি? যাতে করে আমরা দেখতে পারি, কোথায় কী ভাষায় তিনি নিজেকে অতিরঞ্জিত করে উপস্থাপন করেছেন?
ক'জন সেই ১০০০ জন ডেডিকেটেড বিজ্ঞানীদের নাম জানেন? আবারও আপনি একই ভুল করছেন। সেই ১০০০ নিবেদিত বিজ্ঞানীর নাম জানতে কি জাফর ইকবাল বাধা দিচ্ছেন? সেই ১০০০ নিবেদিত বিজ্ঞানীকে মানুষের কাছে তুলে ধরার দায় কি একা জাফর ইকবালের? আপনি একটা সিরিজ লিখুন সচলায়তনে, সেই ১০০০ নিবেদিত বিজ্ঞানীর সাথে আমাদের পরিচয় করিয়ে দিন।
একজন সায়েন্সফিকশন লেখক সাধু ভাব নিয়ে বিশিষ্ট বিজ্ঞানী সেজে বসে আছেন। আপনি এই কথাটা বারবার বলে এটাকে ফ্যাক্ট বানানোর চেষ্টা করছেন। কোট করুন না।
১৬) কামলা খাটছে, গবেষনা পেপারের নাই খোজ, অথচ তার ভাবখানা সে ফাইনম্যান হয়ে গেছে। এ ধরনের মিথ্যাচারের কি কোনো দরকার ছিলো? ছোটোবেলায় সে আমাকে ঠকিয়েছে। limelight হল তার বেচে থাকার রক্ত। জনপ্রিয়তা তার আ্যাডিকশন।
ছোটোবেলায় আপনি ভোদাই কিসিমের ছিলেন বলে মনে হচ্ছে আমার কাছে। আমার শৈশবে কখনোই জাফর ইকবালকে বিরাআআট বিজ্ঞানী বলে মনে হয় নাই আমার, এখনও সেরকম কিছু ভাবি না। আপনি যাকে তাকে ফাইনম্যান ভেবে বসলে দোষটা কি জাফর ইকবালের?
লাইমলাইট আর জনপ্রিয়তা কেউ ভালোবাসলেই কি সে খারাপ? জাফর ইকবাল কি যে কোনো মূল্যে এই লাইমলাইট আর জনপ্রিয়তা ধরে রাখছেন? তিনি কি এর লোভে কোনো জন-অহিতকর কাজে সম্পৃক্ত? যদি না হন, তাহলে হুদাই দোষ দিচ্ছেন।
১৭) যে যোগ্যতায় সে নিজেকে প্রচার করেছে ১৯৮০ এর দশকে, তাতে এই ব্লগেরই ৫০ জন পাওয়া যাবে যারা প্রত্যেকে ১০০ টা করে ইন্টারভিউ পেতে পারে বাংলা পেপারে। যেমন ধরুন, রাগিব হাসান কয়টা ইন্টারভিউ পেয়েছে? বাংলা পেপারে ইন্টারভিউয়ের সংখ্যা দিয়ে যদি মাপতে হয়, তাহলে চিত্রনায়িকা পপি, শাবনূর, হালের অপু বিশ্বাসরাই হয়তো বাংলাদেশের মাথা। আপনি ১৯৮০ এর দশক থেকে আজ পর্যন্ত জাফর ইকবালের কয়টা ইন্টারভিউ প্রকাশিত হয়েছে, তার পরিসংখ্যান দিন। আর তার দায় কি কিছু পত্রিকার ঘাড়েও দেবেন নাকি একা জাফর ইকবালকেই টানতে বলবেন?
১৮) মুজাইর এত মিডিয়াপ্রিতি আর সাধু সাজার কি দরকার? সাধু বাবা কেনো পিএইচডির পর ফিরেনি? বা পোষ্টডক এর পর? চাকরি করে টাকা কামিয়ে দেশে ফিরে এখন প্রণাম কামাচ্ছেন। আপনার কথা খুবই যৌক্তিক। কিন্তু ফিরে আসার কারণে কেউ তাকে প্রণাম করছে না, ফিরে এসে তিনি কী করছেন, সেটা দেখে হয়তো প্রণাম ঠুকছে। হয়তো মানুষ একজন নিবেদিত অধ্যাপকের ইমেইজকেই প্রণাম করছে।
১৯) সে অনেক ভালো কাজ করে ভালো। বাংলাদেশে কমপিটিশন কালচার চালু করেছে বুয়েটের কায়কোবাদ, ১০০ তম গণিত অলিম্পিয়াড দেশ হিশেবে বাংলাদেশ হওয়ার অবদান মুজাইর চেয়ে তারই বেশি। সে তো এ নিয়ে সাধু বাবা সেজে লাইমলাইট নেয় না। লাইমলাইট নেয়ার ব্যাপারটা একটু বুঝিয়ে বলেন না ভাইডি। কায়কোবাদ তো কিশোরদের কাছে জনপ্রিয় না। জাফর ইকবাল জনপ্রিয়। তিনি একটা আহ্বান করলে পোলাপান উৎসাহিত হয়। এতে সমস্যাটা কোথায় একটু বলেন তো?
১৯) হিমু সাহেব - জি, তিনি ২০০৩ এর দিকে এক নাটকে এসেছিলেন, জনপ্রিয়তা বিশেষজ্ঞ হিশেবে একটু যেচে দেখার। পরে কেউ পছন্দ করেননি, তাই বাদ দিয়েছেন। আপনার রাগটা কোথায়? নাটক করায়? নাকি নাটক করা বাদ দেয়ায়?
২০) হিমু সাহেব - জি, ফাইনম্যান বই লিখেছেন। মোট ৬/৭ টা সারাজীবনে, দুটো জনপ্রিয়, বাকি জ্ঞানের। আপনি কি বলতে চান, ফাইনম্যান চাইলে শ'খানেক লিখতে পারতেন না? এটা তো অভিরুচির ব্যাপার কে কয়টা লিখবে। আপনি আমি বলার কে?
২১) মুজাই আর তার ভাই যত ইচ্ছা বই লিখুক, বছরে ১০ টা করে বা ৫ টা করে, শুধু সাধু না সাজলেই হল। ব্যবসা-বাণিজ্যকে ব্যবসা-বাণিজ্যই বলুক, সাহিত্যচর্চা বা মানবসেবা না বলে। তাহলে তো ভাই, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানোও এক ধরনের ব্যবসা।
২২) একজন পীরের তিনটা দিক থাকে - ১) অন্ধভক্তি, ২) সেটাকে পুজি করে ব্যবসা, ৩) উপরওয়ালার সাথে কানেকশন দেখানো। মুজাইর এই তিনটা দিকই আছে। ১) তার ফেসবুক ফ্যানপেজে গেলে দেখা যায় লেখা - "you are the greatest mathematician", "you are the greatest scientist", "you are a 'gineous' (আমার বানান না)", "I love you more than my parents"..blah blah..আর ব্লগএও তো একই কথা। এতটা অন্ধভক্তি বিদ্যাসাগর, বিবেকানন্দ রাও পেত না। কোনো সত্যি কথা বললেও সব ধেয়ে আসে তাদের পীরকে পীর হিশেবে না মানার জন্য শাস্তি দিতে। ভাইডি, অন্ধভক্তদের দায় তো আপনি আইডোলের উপর চাপাতে পারেন না সবসময়। কতগুলি বাচ্চা বানানকাঁচা পোলাপান ফেসবুকে কী লিক্সে না লিক্সে, সেটার দায় আপনি জাফর ইকবালকে কেন দিচ্ছেন? ধরেন, ফাইনম্যান যদি আজকে জানতেন, আপনার মতো একজন ভক্ত তাঁর আছে, তিনি কি আপনার কথাবার্তার দায় নিতেন?
২) গন্ডা গন্ডা বই ছেড়ে দিয়ে বছর বছর ফ্যানদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। ছাপার লেখা মানেই জ্ঞান, এই থিওরী আমাকে দিবেন না প্লিজ। ৯৮% ছাপার লেখাই ফালতু। তো ভাইডি, আপনি একটা কাজ করেন না কেন? আপনি একটা খুব ভালো বই লিখে কম্পিটিশন বাড়ান। আপনি মাঠে নাই দেখেই হয়তো জাফর ইকবাল খালি মাঠে হালি হালি গোল করতেসে।
২৩) তিনি শুয়োর নিধনে ব্যস্ত। সাবাশ চালিয়ে যান। এই জায়গায় এসে আপনাকে একটু ছাগুবান্ধব মনে হচ্ছে। আপনি সত্যি করে বলেন তো ভাই, বরাহশিকারে সমস্যা কোথায়? আপনার জ্বলে ক্যান? আপনার বাপ/চাচা/মামা/খালু/ফুপা/শ্বশুরদের মধ্যে কি যুদ্ধাপরাধী আছে নাকি দুইচাইরজন?
২৪) আবু সাইদ আবদুল্লাহ কে নিয়ে ঠিক সমালোচনা করলেও তো কেউ ব্লগারদের মাইর খায় না। জয় বাবা সাধুবাবা। উনার নাম আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। আপনি তো ভাই রাগের চোটে ব্লাড প্রেশারে ইসে ফেটে মরে যাবেন মনে হইতেসে। খুল ডাউন ভাই, খুল ডাউন। ব্লগারদের মাইর খাওয়ার মতো কাম করলে তো দুই চাইরডা লাত্থিগুতা খাইবেনই।
২৫) তার পরিবারেও একজন আছে, পদার্থবিজ্ঞানে পাবলিকেশন '০' (ঘোড়ার ডিম, একদম শূণ্য)। তিনি আবার প্রফেসর। মাস্টার্স পদার্থে ঠিক আছে। লেকচারার তো হতে পারেন। অথবা যে বিষয়ে পিএইচডি, কেমিকাল কিছু, সেটাতে প্রফেসর হোন। সত্য কথা শুনতে খারাপ লাগারই কথা। জয় বাবা সাধুবাবা। আপনি আরো খুলে বলেন। রাগের চোটে আপনার কথা হচ্ছে না। কার কথা বলতে চান? সেই ব্যক্তির অপরাধ কী? করোবোরেট করার মতো তথ্যসূত্র কই?
২৭) আমার মনে হয় নতুন জেনারেশনের নতুন আইডল দরকার। যারা ষাটের দশকে বা তার পরে জন্মেছেন। ৭১ এর পরে ৪০ বছর হয়ে যাচ্ছে। এখনো একই লোকেরা, হিপোক্রিটের দল, যুদ্ধে ফাকি মারার দল, গলাবাজির দল, রাজাকারের দল, ইত্যাদি আর আমাদের দরকার নেই। আপনি হবেন? আসেন ভাই, নাইমা পড়েন। কেউ মানা করবে না।
২৮) আরো অনেক কিছুই বলা যায়। এটাই আমার শেষ মন্তব্য। ধন্যবাদ। ব্লগে এই কথাটা আসলে কখনো বলতে নাই। এই কথা দিয়ে রাখতে পেরেছে এমন লোক খুব কম। জো ওয়াদা কিয়া ও নিভানা পড়েগা ♪♫ ...
এই মন্তব্যটা আগে দেখি নাই ... বিরাট একটা লাইক দিয়ে গেলাম
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...
আম্মো দিলাম!
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।
মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে তাঁর স্পষ্টভাষীতা আমার ভালই লাগে। কিশোর হিসেবে জাফর ইকবাল আর হুমায়ুন আহমেদের বই পড়েই আমার দেশপ্রেম জেগেছিল। এটা খুবই দুঃখজনক যে বাংলা ভাষায় তিনি ছাড়া আর কাউকেই পপুলার সায়েন্স রাইটিং এ তেমন একটা দেখা যাচ্ছে না।
মন ছুইয়ে দেয়া লেখা তারেক ভাই
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
আমরা ব্লগে যখন জাফর ইকবাল স্যারকে নিয়ে কথা বলছি তখন স্যার ঘুমাচ্ছেন। সেটা একদিক দিয়ে ভালো। আমরা অনাবাসে নিরাপত্তার তাপানুকূল অবসরে দেশ নিয়ে ভাবি। আর স্যার পশ্চিমের ফাঁপা জীবন ছেড়ে দেশে চলে এলেন, বুদ্ধদেব বসুকে কলকাতা ইউনিভার্সিটি নেয়নি। রিপন কলেজের ছোট ক্যাম্পাসেই কাজ করেছিলেন। জাফর ইকবালেরো তাই হলো, কিছুদিন আগে একটা সড়ক দুর্ঘটনা থেকে প্রাণে বেঁচেছেন। তবে সিলেট উপকৃত হয়েছে, ঢাকায় আসতে হয় সমাজসেবায়। খুশী মনেই বইমেলায় বটতলায় একটা মজার স্নিকার্স পরে বসে থাকেন। ইন্টারভ্যূ করার ক্ষেত্রে অনেক ব্যস্ততার মাঝে ফোন ধরেছেন।কখনো এতটুকু গাম্ভীর্য দেখাননি আমাদের চারপাশের গজদন্তের মিনারগুলোর মতো। এরকম বাতিঘর আমাদের ভাবনার জগতে অভিঘাত তৈরি করেছে, আমার ভাবনার জগতে তাঁর উদ্ভাস আছে।
অনিকেত আপনি আপনার অগ্রজপ্রতিম জাফর ইকবালকে যেভাবে আত্মস্থ করেছেন, দেখবেন আপনার অনুজপ্রতিম কেউ আপনাকে সেইভাবে আত্মস্থ করবে, এটা একটা ভাবনার রিলে রেস,সেই প্রত্যাশা আর অভিনন্দন।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।
মাসকাওয়াথ ভাই,
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আর কৃতজ্ঞতা।
আপনার এই সহৃদয় কথাগুলো আমাকে অনুপ্রাণিত করল ভীষন ভাবে।
ভাল থাকুন, সকল সময়ে, সকল কে নিয়ে---
জনাব রাসেল, কেন জানি মনে হচ্ছে আপনি সেল(বিক্রি) হয়ে গেছেন! যুক্তি না পেয়ে অবুঝের মত গলা ফাটাচ্ছেন।
যারা তার সান্নিধ্য পেয়েছে তাদের বাদ দিন। আমরা যারা তাকে স্রদ্ধা করি, তাদের বেশিরভাগ তাকে চিনেছি লেখার মাঝে, দীক্ষা নিয়েছি দেশপ্রেমের আর অসাম্প্রদায়িকতার। তাই আমরা তাকে sir সম্বোধন করি। কারণ আমাদের মনন তিনি গড়ে তুলেছেন। কাটখোট্টা তত্ত্ব গেলা মুখস্থ মানুষ না হয়ে বোধবুদ্ধি সম্পন্ন খাটি মানুষ হতে শিখিয়েছেন। আস্ত একটা প্রজন্মের মনে তিনি আলো জ্বেলে দিয়েছেন। তাই তিনি আমাদের কাছে একজন মহান শিক্ষক। তিনি কটা আবিষ্কার করেছেন আর কটা paper করেছেন তাতে কিছু আসে যায়না।
জ়াফর ইকবাল স্যার-এর অন্ধ ভক্ত নেই। কারণ তার শিষ্যরা অন্ধ নয়। তাই ভিন্নমত থাকলে যুক্তি নিয়ে কথা বলে, স্যারের মতের বিরুদ্ধেও। আর আপনি প্রশ্ন তুলছেন তার নাটক করা নিয়ে, তার মিডিয়া প্রীতি নিয়ে, পীরালী নিয়ে। এতোই মিডিয়া প্রীতি থাকলে একটা TV খুললেই তো হতো! আপনার যুক্তিতেই বলেন বই লেখা ছাড়া আর কি ব্যবসায় উনি জড়িত? অলিম্পিয়াড বা ভাষা প্রতিযোগ কি ব্যবসা? এইগুলির মগজ কারা অজানা নয়। কিন্তু তার জনপ্রিয়তা কাজে লাগানোয় আপনার গা জ্বলে কেন? শিশু-কিশোর দের জন্য কেউ তো লেখেই না, সেখানে তিনি একটি পাঠকশ্রেণী গড়ে তুলেছেন। বস্তা-পচা লিখে বেশিদিন পাঠক ধরে রাখা যায়না।
আপনি কি জানেন মাত্র ১০ পাতায় মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে একটি সংকলন প্রকাশ করা হয়েছে? ১০ টাকার এই পুস্তিকাটি কেন উনাকে দিয়ে লেখানো হয়েছে? আপনার জানার কথা নয়। কারণ না জেনে কাউকে হেয় করতে আপনার বাধে না।
ইন্টারনেটের অদ্ভূত তথ্যভান্ডারে প্রায় প্রতিটি বিষয়ের পক্ষে-বিপক্ষে মত পাওয়া যায়। যাচাই করে নেবেন না চিলে কান নিয়েছে শুনে চিলের পিছনে ছুটবেন সেটা আপনার ব্যাপার। আর বাংলাদেশে তিনি যে জামাতিদের চোখের বিষ তাও পুরোন কথা। তাই অহেতুক তার সাথে লীগ কে জুড়ে দিলে নিজেই ছাগু হবেন। জাফর ইকবাল কে অপছন্দ করেন ভালো কথা, না করতেই পারেন। কিন্তু উল্টা-পাল্টা কথা বলেন কেন? মুখে চুল্কানি হলে হিমু ভাই-এর কথার উত্তর দেন, নয়ত ফোটেন...............
নতুন মন্তব্য করুন