সংবিধিবদ্ধ সর্তকীকরণঃ বিশা-আ-আ-আল পোষ্ট। নষ্ট করার মত প্রচুর সময় থাকলে, নিজ দায়িত্বে অগ্রসর হউন।
<><><><><><><><><><><><><><><><><><><><><><><><><><><><><>
দু'সপ্তাহের বেশি হতে চলল এই নতুন বছরের।
নতুন বছরটার গায়ের জামায় ইস্ত্রির দাগ এখনো স্পষ্ট। কাছে গেলে ভুর ভুর করে বেশ একটা 'নতুন নতুন' সুবাস আসছে। পাশে দিয়ে হেঁটে গেলে নতুন বছরটার জুতোর মশমশ আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। নতুন বছরের মন-মেজাজ এখনো খুব ভাল। মাঝে মধ্যেই শিস দিয়ে গুনগুন করছে গানের কলি। মাস ছয়েক পরে যখন এই জৌলুষ আর রইবে না, তখন বছরটার দিকে তাকালে আপনার মায়াই লাগবে। ডিসেম্বরে এসে তো বছরের দিকে প্রায় তাকানোই যায় না---উস্কুখুস্কু চুল, ক্লান্ত ঢুলু ঢুলু চোখ অনিদ্রায় লাল টকটকে হয়ে আছে, পায়ের জুতোর ফিতে খোলা, হোঁচট খেতে খেতে এখানে সেখানে রঙ উঠে গেছে, ভাল কথা বললেও হেঁকে ওঠে, তেড়ে আসে---যেন কোন রকমে সে মাসটা পার করতে পারলেই বাঁচে!
নতুন বছরের শুরুতে, বছরটার মতই সবাই তাই খুশি খুশি থাকতে চেষ্টা করে। রাস্তা-ঘাটে পরিচিত, আধা-পরিচিত, স্বল্প পরিচিত লোকজন পেলেই হালুম করে ঝাপিয়ে পড়ে 'হ্যাপি নিউ ইয়ার' বলতে থাকে সবাই। দেখলেই রাগে পিত্তি জ্বলে যায় এমন লোক এসে যখন পিঠ চাপড়ে দেয়, তখনও চিমসে মুখে হাসি টেনে এনে বলতে হয়--'হ্যাপি নিউ ইয়ার'! তবে নতুন বছরের সবচাইতে বড় যন্ত্রণা হল 'নিউ ইয়ারস রিজোল্যুশন'! সহজ বাংলায় হল এইটা একটা আচাভুয়ার বোম্বাচাক---আরো সোজা বাংলায় বললে বলতে হয়--- এইটা এমন এক ঘোড়ার ডিম যেইটা কোন ঘোড়া পাড়ে নি, এমনকি পাড়তে চায়ও না। অথচ সবাই এসে এইটার খোঁজ নেবে। "এই নতুন বছরে প্ল্যান কি করলে হে?", "তোমার নিউ ইয়ারস রিজোল্যুশন কি এইবারে?" এই রকম শতেক যন্ত্রণা! শুধু কি তাই? জনে জনে এই কথাটা বলতে বলতে মুখে ফেনা উঠে প্রাণ যায় যায় দশা! যে বলছে আর যে শুনছে---দু'পক্ষই জানে যে কথাগুলো স্রেফ মিথ্যে---তারপরও শুনতে চাওয়া, তারপরও শোনাতে যাওয়া।
আমি রিজোল্যুশন-টুশন ভাল পাই না।
ক্লাশ ফাইভে থাকতে নতুন বছরের শুরুতে রিজোল্যুশন ঠিক করেছিলাম যে বছরের শেষে ঠিক ফর্সা হয়ে যাব! সে অনুযায়ী সকাল-বিকেল গোসল করা, নারকেলের ছিবড়ে দিয়ে ঘষে ঘষে গায়ের ছাল-চামড়া তুলে ফেলার মত প্রানান্তকর চেষ্টা ও প্রচুর আন্তরিকতা থাকা সত্ত্বেও যখন দেখলাম বছর শেষে গায়ের রঙের কোনো এদিক-সেদিক হলনা বরং নারকেলের ছিবড়া দিয়ে ঘষার কারণে চামড়ার নানান স্থানে জ্বলুনি ও কাটা ঘায়ের মত দাগ দেখা দিল--তখনি বুঝে গেলাম এইসব রিজোল্যুশান-টুশান সব ফালতু বাতেঁ! হুদাহুদি 'পইচ্চম' করার কোন মানে হয় না। যা হবার এম্নেই হবে--আর নইলে হবে না!ব্যস!
গত বছর অর্থাৎ ২০১১ আমার জন্যে 'বিশেষ' একটা বছর ছিল। এমনিতে ছোট থাকতে আমার ধারণা ছিল এক বছর যদি ভাল যায়---তার পরের বছর নির্ঘাত খারাপ যাবে। শুধু তাই নয়--কেমন করে জানি বের করে ফেলেছিলাম জোড় সংখ্যার বছর গুলো আমার জন্যে ভাল যায়, আর বেজোড় সংখ্যার বছর গুলো খারাপ! তাই মেট্রিক পরীক্ষা যখন জোড় সংখ্যার বছরে পড়ল--আমার মুখটা অমনিতেই হাসি-হাসি হয়ে গেল। বাবা-মা এইদিকে আমার টেষ্টের রেজাল্ট-ফেজাল্ট দেখে বিশেষ রকমে চিন্তিত। আমি ওদিকে নিশ্চিন্ত মনে গায়ে বাতাস লাগিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি। আরে কুছ পরোটা নেহি---জোড় সংখ্যার বছর, রেজাল্ট খারাপ হতেই পারে না। কিমাশ্চর্যম! দেখা গেল এক বারেই পরীক্ষা পাশ করে গেছি। বাবা-মা ও বেশ আশ্চর্য হলেন মনে হয়। আমি কেবল হুঁ হুঁ করে মাথা নাড়তে নাড়তে বললাম, আগেই বলেছিলাম, হুঁ হুঁ বাবা!
বড় হবার অনেক সুবিধে। তেমনি অসুবিধেও অনেক। সবচেয়ে বড় অসুবিধে হল ছোটবেলার বিশ্বাসগুলো কেন জানি কম-জোরি হয়ে যায়। বড় হয়ে আমি অবাক হয়ে দেখলাম সেই জোড়-বিজোড়ের খেলা তেমন আর ভাল করে জমছে না। মোটের উপর সবগুলো বছরই কেন জানি একই রকম যেতে লাগল---খারাপ রকম! মাঝে মধ্যে দুয়েকটা হয়ত মন-ভাল করার মত কিছু হয়। কিন্তু মোটের উপর সবগুলো বছর যেন আগের বছরের কপি-পেস্ট!
যা হোক বলছিলাম, ২০১১ এর কথা। ২০১১ তে এসে আমি আমার 'শতবর্ষব্যপী' চলমান পি এইচ ডি-র রথে সাফল্যের সাথে রাশ টানতে পেরেছিলাম। বিশ্ব-অর্থনীতির এই আকালের দিনেও কেমন করে জানি একটা মোটামুটি চাকরীও যোগাড় করে ফেলেছিলাম। আমার এতদিনের বসত-বাড়ি আর মৌরসী পাট্টা যেখানে গেড়ে বসেছিলাম, সেখান থেকে পাততাড়ি গুটিয়ে চলে আসতে হয়েছে নিউ ইয়র্কে। নিউ ইয়র্ক শুনলেই অভ্রভেদী দালান আর যে জন-অরণ্যের কথা চোখে ভাসে--আমি যেখানটায় থাকি, সে জায়গাটা তার পুরোই উলটো। আমি থাকি প্রায় জঙ্গলের ভেতর। পাহাড়-ঘেরা-পাখি-ডাকা-ভালুক-হরিণ-হাঁটা জঙ্গল। আশেপাশে তেমন মানুষ-জন নেই। জায়গাটা দেখেই আমার পছন্দ হয়ে গেছিল। বাহ, এই রকম একটা নির্জন নিরালা জায়গাই তো এতদিন খুঁজছিলাম!! নতুন বাসাটায় ওঠার সপ্তা দুয়েক পর ছিল পূর্ণিমা। গভীর রাতে জঙ্গলের মাঝে প্রথম পূর্ণিমা দেখার অভিজ্ঞতা হয়েছিল গত বছরের আগের বছর----সেকথায় পরে আসছি। আর দ্বিতীয়বার দেখা হল নতুন বাসাটায় এসে। এক কথায় অপূর্ব! জিনিসটাকে আরো গুরুতর রকমের উপভোগ্য করে তুলল বাসার কয়েক গজ দূরে দিয়ে কুলকুল করে বয়ে যাওয়া এক ছোট্ট স্রোতস্বিনী!
এত সুখ পেয়ে অকারণেই মনটা খুঁতখুঁত করছিল। সারমেয়-র পেটে খাঁটি গব্যঘৃত যেমন সয় না, আমার কপালে সুখও তেমনি সয় না। মনটা শুধু কুডাক ডাকছিল--
প্রথমেই গেলেন জগজিৎ! গত আট-দশ বছরে আমি এমন কোন দিন বা রাত কাটাই নি যে সময় জগজিৎ-এর একটি হলেও গান আমি গুনগুন করিনি বা আইপডে শুনিনি। বাস্তবিক অর্থেই আমার মনন আর সত্ত্বার আষ্টে-পৃষ্ঠে বাঁধা ছিলেন জগজিৎ! তাঁর অভাবটা এখনো মন মেনে নিতে পারে নি। অক্টোবর মাসে তো রীতিমত হুড়োহুড়ি পড়ে গেল। একের পর এক বিখ্যাত লোকেরা পাততাড়ি গুটিয়ে নিলেন এই পৃথিবী থেকে।
ডিসেম্বরে এসে শুনলাম সবচেয়ে বড় দুঃসংবাদটা।
শ্রীণি বদলি হয়ে গেছে! শ্রীণি-রা চলে যাচ্ছে ইস্টকোষ্ট ছেড়ে ওয়েস্ট কোষ্টে, ক্যালিফোর্নিয়ায়!
এই জায়গাটায় এসে মনে হয় কিছু কিছু জিনিস পরিষ্কার করা প্রয়োজন।
প্রথম কথা হল, শ্রীণি-টা কে?
শ্রীণি আমার বন্ধু।
দক্ষিন ভারতের এক ছেলে। বয়েসে আমার ঢের ছোট কিন্তু বুদ্ধিমত্তায় আমার চেয়ে দড়। গত আট বছর ধরে জগজিতের পরেই শ্রীণিবাসন হল দ্বিতীয় ব্যক্তি যে আমার সাথে সবচেয়ে বেশি সময় কাটিয়েছে। আজ থেকে দশ বছর আগে হলেও এই লাইনটা লিখে শান্তিতে পরের লাইনে চলে যাওয়া যেত। এখন আর যাওয়া সম্ভব নয়! না হে দুষ্টমতি লোকজন!! আমাদের দুইজনের কেউই সমকামী নই (অবশ্য বলছিনা যে সমকামী হওয়ার মাঝে দোষের কিছু আছে---শুধু বলতে চাইছি যে আমরা তা নই)! শ্রীণি প্রায় দুই বছর চুটিয়ে প্রেম করে শেষে তার প্রেয়সীকে বিয়ে করে এনেছে। শ্রীণির ডাকনাম হল রাজেশ। এবং তার স্ত্রীর নাম হল---ঠিক ধরেছেন, প্রিয়া! আমার ধারণা শতকরা ৭০ ভাগ ভারতীয় ছেলেমেয়েদের ডাকনাম রাজেশ/প্রিয়া। অনেকে অস্বীকার করবেন হয়ত---কিন্তু সেইটা স্রেফ Denial অথবা Amnesia তে ভোগার কারণে!!
যাই হোক, শ্রীণি অনাদিকাল হতে (পড়ুন, প্রায় আট বছর ধরে) আমার রুমমেট। মাঝখানে বিয়ে করে পাখা গজিয়েছিল বলে আলাদা বাসা করেছিল কিছু দিন। তারপর ভাগ্যের টানাপোড়নে আবার একসাথে থাকতে হয়েছে বেশ কিছু দিন। শ্রীণির বউ প্রিয়া আমার বন্ধুর চেয়েও বেশি কিছু-- সে একাধারে আমার বন্ধু, আমার বোন, আমার উপদেষ্টা--সবকিছু। কিছু ছোট ছোট উদাহরণ দেই---তাহলে বুঝতে পারবেন এই দুইটি প্রাণী কিভাবে আমার জীবনে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছেঃ
উদাহরণ এক)
আমার গাড়ি নেই। আম্রিকার মত জায়গায় গাড়িটা আসলে ঠিক বিলাসের বস্তু নয়--- বরং প্রাত্যহিকতার অনুষঙ্গ। আম্রিকার কিছু কিছু শহর আছে যেখানে পাব্লিক ট্রান্সপোর্টেশান সিস্টেম খুব ভাল। অনেকে হয়ত গাড়ি না কিনেই আজীবন কাটিয়ে দিতে পারেন---উদাহরণ হিসেবে শিকাগো, নিউ ইয়র্কের নাম বলতে পারি এই মুহূর্ত্তে। কিন্তু আমি যেখানটায় থাকতাম সেখানে গাড়ি না থাকাটা আত্মহত্যার সামিল। কিন্তু সেইরকম একটা জায়গায়ও আমি গাড়ি ছাড়া ছিলাম প্রায় পাঁচ বছর। কেম্নে থাকতে পারলাম? শ্রীণি এবং আরো কিছু দয়ালু বন্ধু ছিল বলে। আমার প্রয়োজন-অপ্রয়োজনে তারা আমাকে লিফট দিয়ে সাহায্য করেছে অকাতরে। আমি আগেই বলেছি, শ্রীণি খুব বুদ্ধিমান ছেলে। সে ভেবেচিন্তে বের করে ফেলল আমি কেন গাড়ি কিনি না। কারণ খুব সোজা---আমি ভীষন আলসে! আমি এতই আলসে যে গাড়ি কিনলে সেইটা চালাতে হবে---এই ভেবে আমি গাড়ি কিনছি না! এই ধরণের দোষারূপ নিতান্ত অমূলক এবং স্বার্থসিদ্ধিমূলক বলে আমি প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম--তাতে লাভ হয় নি। কেন জানি আমার বন্ধুরা সব সময়ে আমার ব্যাপারে 'খারাপ' জিনিসটাই সহজে বিশ্বাস করে---এইটা বলেও কিছুখন ফ্যাঁচফ্যাঁচ করেছিলাম---সেটাতেও লাভ হয়নি। শেষমেষ 'টাকা নেই' বলে যখন ভাবছি যে মোক্ষম দান চেলেছি, শ্রীণি উঠে পড়ে তখন হিড় হিড় করে টেনে ব্যাঙ্কের দিকে নিয়ে যেতে লাগল। বুঝলাম, এ ফন্দিটাও কাজ করছে না তেমন ভাল করে। শুনলাম সে বিড়বিড় করে বলছে, টাকা নেই তো কি হয়েছে ধার করবি! ব্যাটা ফাইজলামি পেয়েছিস? আমরা কি তোর শোফার??
শ্রীণির যে গাড়ির ব্যাপারে খুব উৎসাহ সেইটা কি বলেছিলাম? বলিনি? বেশ। তার গাড়ির ব্যাপারে অশ্লীল রকমের আগ্রহ। সে প্রায় সবার সামনেই বলে যে তার প্রথম প্রেমিকা হল তার গাড়ি আর দ্বিতীয় প্রেমিকা তার স্ত্রী। অস্বস্তির বিষয় হল--কথাটাতে খাদের পরিমান খুব কম এবং প্রিয়া সেটা জানেও।
যাই হোক, এক শুভ দিনে আমার জন্যে দেখে শুনে পারপল (Purple) রঙের একটা গাড়ি কিনে ফেলা হল। জ্বী, ঠিকই শুনেছেন--গাড়ির রঙ হল পারপল! আমার এক আম্রিকান বন্ধু গাড়ি দেখে বলল, তোমার ভাগ্যে আর মেয়ে-বন্ধু বোধহয় আর জুটল না। তবে 'ছেলে-বন্ধু'র কপাল খুলে যাবার কথা! এই গাড়ি দেখলে দুনিয়ার সব 'গে'-রা মাছির মত এসে জুটবে!!
গাড়ি তো কেনা হল। কিন্তু আমি যেই কে সেই। গাড়ি কিনলে লোকজন গাড়ি চালায়, দূরে কোথাও বেড়াতে যায়। এতদিন যেসব রেস্টুরেন্টে খাওয়া যায়নি ইচ্ছেমতন, এখন ইচ্ছে করলেই সেখানে গিয়ে খাওয়া যায়। সবচেয়ে বড় কথা, আমি আমার শহরের বুকের ভেতর একটা ছোট্ট 'জাফলং' আবিষ্কার করেছি বহুদিন আগে--অবিকল আমার সিলেটের জাফলং এর মত জায়গা। আরো একটু বেশি নিরালা নিঝুম। কলকল করে বয়ে চলা ছোট্ট একটা নদী আছে। সেইখানে পাথরের উপর বসে ইচ্ছেমতন নদীর শীতল জলে পা ভিজিয়ে বসে থাকা যায়, পাখির গান শোনা যায়---এতদিন সেইখানে ইচ্ছে মতন যেতে পারিনি--এখন ইচ্ছে করলেই পারি!
কিন্তু আমি যাই না। আমি কিছুই করিনা। গাড়ি এড়িয়ে চলি।
কারণ আমার লাইসেন্স নেই। লাইসেন্স নিতে হলে পরীক্ষা দিতে হয়, গাড়ি রাস্তায় চালিয়ে হাত মকশো করতে হয়--নানান হ্যাপা। কে যায় ঐ ঝামেলায়??!!
এইবার প্রিয়া কোমর বেঁধে লেগে পড়ল। কানের কাছে ঘ্যান ঘ্যান করতে করতে প্রাণ অতিষ্ট করে তুলল। শেষে বিরক্ত হয়ে বললাম, আচ্ছা ঠিকাছে, পরীক্ষা দেব। কিন্তু ফেইল মারলে আমার দোষ না কিন্তু! প্রিয়া বলল, সবাই নাকি দুয়েকবার ফেল মারে! প্রিয়া নিজেই দৌড়াদৌড়ি করে আমার পরীক্ষার দিনখন ঠিক করে আনল। আমি খুব ব্যাজার মুখে পরীক্ষা দিতে গেলাম। কিন্তু বেরিয়ে এলাম হাসিমুখে!
প্রিয়া, আমি ফেল মেরেছি!
প্রিয়া কিছুখন অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল। পরে বলল যাহ, তুমি ফাইজলামি করছ। মোটেও না, বলে বীর দর্পে কাগজ দেখালাম। সে আরো অবাক হয়ে গেল। আমি বললাম এত অবাক হচ্ছ কেন? তুমিই তো বলেছিলে লোকজন দুয়েকবার ফেল মারে। প্রিয়া মাথা নাড়তে নাড়তে বলল, হুঁ বলেছিলাম ঠিকই, কিন্তু রিটেন পরীক্ষায় ফেল করে সেটা তো বলিনি। বলেছি ড্রাইভিং টেস্টে ফেল করে! তুমি রিটেন টেস্টে ফেল করলে কী চিন্তা করে??
শ্রীণি দেখলাম অসহায়ের মত মাথা দোলাচ্ছে আর বিড়বিড় করে বলছে 'ফাকার' (এই প্রিয় নামে আমাকে সে ডাকতে খুব পছন্দ করে)! 'রিটেন' টেষ্টে কেউ ফেল করে না ---এইটা শুনেই হয়ত বা একটু আঁতে ঘা লাগল। চোখ-মুখ শক্ত করে ড্রাইভিং টেষ্টের বই মুখস্থ করা শুরু করলাম। এক হপ্তা পর পরীক্ষা দিয়ে কোনরকমে কুল-মান রক্ষা হল। এইবার আসল খেল---গাড়ি চালাতে হবে রাস্তায়!
শ্রীণির কেমন করে জানি ধারণা হয়েছে---আমি কাবিল গোছের লোক। আমি আসলে অনেক কিছু জানি--আলসেমী এবং আরো কিছু 'অব্যাখ্যাত' কারণে আমি আমার ক্ষমতার পূর্ণ প্রয়োগ ঘটাচ্ছি না। সে খুব হাত নেড়ে-টেড়ে বলল, ড্যুড, তুমি চোখ বুঁজে পাশ করে যাবে। কোনই চিন্তা কইরো না। আমিও খুশি হয়ে বললাম, বেশ, কোনই চিন্তা করব না।
এক মাস পরের কথা---
ড্রাইভিং টেষ্ট চলছে আমার। ইন্সট্রাকটর বলছে, গাড়ি ব্যাক করে নিয়ে আসো। আমি গাড়ি ব্যাক করে নিয়ে এসে সোজা কালভার্টের উপর তুলে দিলাম। আড়চোখে তাকিয়ে দেখলাম দূরে শ্রীণি উন্মাদের মত লাফাচ্ছে, তার মুষ্টিবদ্ধ হাত কঠোর একটা শপথ নিয়ে বারবার আকাশে উঠে যাচ্ছে! কেন জানি মনে হল, ইন্সট্রাক্টর নয়--আমার উদ্দেশ্যেই সে এইসব অঙ্গভঙ্গী করছে।
ড্রাইভিং টেষ্ট দেবার আবার নানান হ্যাপা ছিল। খুব সকাল বেলা উঠতে হয়, উঠে গিয়ে লাইন দিতে হয়। আমি আবার ঘুমুতে যাই ভোর চারটের দিকে। কাজেই ভোর ছ'টায় যদি গিয়ে টেষ্টের জন্য লাইন দিতে হয়--আমার পক্ষে জীবনেও সেই টেষ্ট দেয়া হবে না। শ্রীণি এবং প্রিয়া দুইজনেই ব্যাপারটা জানে। শেষে প্রিয়া নিজেই বলল, অসুবিধা নেই। আমি তোমাকে ছয়টায় ডেকে দেব। কিন্তু তুমি আমাদের একটা ছোট সাহায্য করতে পারবে? আমি উদাস হয়ে বললাম, বল, কী দরকার?
' তুমি পরীক্ষার আগের দিন রাতে একটু জলদি জলদি ঘুমানোর চেষ্টা করবে?'
নিতান্ত অনিচ্ছা সত্ত্বেও রাজী হলাম। ভোর ছ'টায় ঘুম ভাঙ্গল প্রিয়ার ফোনের আওয়াজে। রাগে এবং ঠান্ডায় কাঁপতে কাঁপতে বেরিয়ে দেখি শ্রীণি এবং প্রিয়া দুইজনেই বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। প্রিয়ার হাতে ধোঁয়া ওঠা এক কাপ চা। আমার জন্যে।
উদাহরণ দুই)
প্রিয়ার অনেক গুলো 'বদ-অভ্যাসের' মাঝে সবচেয়ে ভয়াবহটি হল 'সারপ্রাইজ দেয়া'। সে ছোটকাল থেকেই সবাই করে সারপ্রাইজ দিয়ে আসছে। কোন কিছু সহজ স্বাভাবিকভাবে করা তার পক্ষে সম্ভব না। তার আত্মীয়-স্বজন-বন্ধু-বান্ধব সবাই তার এই সারপ্রাইজ রোগের শিকার ও ভুক্তভোগী। বিশেষ করে তার পরিবারের সবাই তার কাছ থেকে সারপ্রাইজ পেতে পেতে এখন একেবারে সারপ্রাইজ-প্রুফ হয়ে গেছে। আমার ধারণা সারা ভূ-ভারতে ঐ একটি মাত্র পরিবার আছে যাদের কোনকিছুতেই সারপ্রাইজ করা সম্ভব না। ছোট্ট উদাহরণ দেই। প্রিয়ার দিদিমার জন্মদিন। প্রিয়া দেশে যাবার বন্দোবস্ত করছে অনেকদিন ধরেই। এইবারে বিশেষ প্ল্যান হল, জন্মদিনের দিন সকালে গিয়ে বাসায় হাজির হয়ে দিদিমা-কে চমকে দেয়া। সেই প্ল্যান অনুযায়ী সব আয়োজন চলছে। তারা দেশের পথে রওনা দিয়ে দিল। এইদিকে দেশে কেউই জানে না। আমরা এইদিকে সাঙ্ঘাতিক রকমের উৎকন্ঠায় ভুগছি। প্রায় আশি শতাংশের ধারণা জন্মদিনের দিন প্রিয়াকে দেখে তার অশীতিপর দিদিমা জীবনের 'শেষ' সারপ্রাইজটি পাবেন---এমন খুশির ধাক্কা সহজে নেয়া সম্ভব নয়। সবকিছু চুকে যাবার পর প্রিয়ার সাথে আমাদের কথা হল। বললাম, দিদিমা কেমন সারপ্রাইজড হলেন, প্রিয়া? খুব মনমরা গলায় প্রিয়া বলল,' একেবারেই সারপ্রাইজড হয় নি। আমি সাত সকালে বাসায় গিয়ে চুপি চুপি ঠাকুরঘরের সামনে দাঁড়িয়ে আছি---যে পূজো সেরে দিদিমা বাইরে এসেই আমাকে দেখবে! ওমা, দিদিমা দেখি পুজো সেরে বেরিয়ে এসে খুব ঠান্ডা গলায় বলল, 'কী রে প্রিয়া কখন এলি'---মানে, এমন ভাবে বলল, মনে হল আমি যেন পাশের ঘর থেকে এসেছি!! একেই বলে 'সারপ্রাইজ-প্রুফ'!
যাই হোক, প্রিয়ার পরিবার সারপ্রাইজ-প্রুফ হতে পারে---আমরা তো নই! মোটের উপর এমন হল--এখন প্রিয়াকে দেখলেই ভয় করে। কখন কী সারপ্রাইজ দিয়ে বসে কে জানে! তো, বছর দুয়েক আগের কথা। অধমের 'জর্মদিন' ঘনিয়ে আসছে। জন্মদিন-টন্মদিন হওয়া মানে আতংকে দিন কাটানো--প্রিয়া কখন কী করে বসবে কে জানে! দুশ্চিন্তায় আমার চোখের নীচে কালি পড়ে গেল। ঠিক জন্মদিনের এক সপ্তাহ আগে প্রিয়া এসে খুব ভাল মানুষের মত মুখ করে বলল এই উইক এন্ডে তোমার কোন প্ল্যান আছে নাকি? আমি আমতা আমতা করে বললাম, না মানে প্ল্যান, মানে---
-কোন মানে-টানে শুনছি না। এই উইকেন্ডে আমরা এক জায়গায় বেড়াতে যাব। চল আমাদের সাথে। কোন ওজর-আপত্তি শুনছি না।
আমার যেন ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়ল। যাক, এই বার তাহলে প্রিয়া জন্মদিনে চমক কিছু দিচ্ছে না। হয়ত বাইরে যাওয়াটাই চমক। যাক অল্পের উপর দিয়েই গেল। যতদিন ঘনিয়ে আসতে লাগল, ব্যাপারটা কেন জানি তত নিরীহ মনে হচ্ছিল না। উদাহরণ স্বরূপ প্রিয়া বলল, আমি যেন একটা তাঁবু কিনে ফেলি। বেড়াতে গিয়ে তাঁবু? মানে ক্যাম্পিং করব নাকি?? হুঁ। আমি প্রায় বারো হাত মাটির নীচে ডুবে গেলাম। ক্যাম্পিং-ট্যাম্পিং মুভি আর বইতে পড়তে ভাল লাগে। নিজে করতে গেলে নির্ঘাত মারা পড়ব। কী মুশকিলে পড়া গেল রে বাবা। আগেই বোঝা উচিত ছিল!!
যাই হোক নির্ধারিত দিনে ক্যাম্প,কুপি কিনে রেডি হলাম। এইসব কাজে বত্রিশ পাটি দাঁত কেলিয়ে একজনকে ঝাঁপিয়ে পড়তে দেখা যায়---সে আর কেউ নয়--আমার আদি অকৃত্রিম অনুজ-প্রতীম সাইফ। সাইফ, তার বঊ প্রজাপতি আর তাদের রাজকণ্যা সামারা---এই ত্রয়ীও রেডি ক্যাম্পিং এর জন্য। বিশেষ করে সামারা খুবই এক্সাইটেড। উৎসাহ-উদ্দীপনার রংধনুর এক প্রান্তে আছে সামারা--অন্য প্রান্তে আছি আমি। যতই আয়োজন দেখি--কেন জানি শিউরে শিউরে উঠি--আর কপাল চাপড়াই। কী কুক্ষনে যে রাজি হয়েছিলাম!
দেখতে দেখতে ক্যাম্পিং এর দিন এসে গেল। শ্রীণি-প্রিয়া-আমি-সাইফ-প্রজাপতি-সামারা আর প্রিয়ার আপিসের কিছু বন্ধু বান্ধব। মোটামুটি বিশাল লটবহর নিয়ে আমরা রওনা দিলাম। সেদিন দেখা গেল রোদও উঠেছে সেইরকম। প্রচন্ড গরমে সবাই হাস-ফাঁস করছি। যাই হোক। ঘন্টা দুয়েক পর ক্যাম্পিং স্পটে হাজির হওয়া গেল। দেখা গেল শুধু আমরা নই---আমাদের মত আরো অনেক বেকুব ওইখানে ক্যাম্পিং করতে এসেছে। এমন গরম যে ডিম ভেঙ্গে হাতে রাখলে হাতেই ডিম-পোচ হয়ে যাবে-----সেই গরমে আমরা এসেছি ক্যাম্পিং করতে জঙ্গলে। মোটামুটি ভাল রকমের জঙ্গল। এর মাঝে সবাই দেখি যার যার তাঁবু খাটানো শুরু করেছে। শ্রীণি দেখা গেল তাঁবু টাঙ্গানোয় সিদ্ধ হস্ত। সে নাকি এইখানে আগেও কয়েকবার এসেছে। সবার তাঁবু টাঙ্গানো হলে পর আমারটার পালা। টাঙ্গাতে গিয়ে দেখলাম আমি বাচ্চাদের সাইজের তাঁবু কিনে নিয়ে এসেছি। এতে বড় জোর সামারা সোজা হয়ে ঘুমুতে পারবে। আমার তো প্রশ্নই ওঠে না। সব মিলিয়ে মেজাজ যখন সপ্তমে তখন দেখা গেল প্রিয়া বলছে--চল সমুদ্রে যাই! সমুদ্র?!! এইখানে সমুদ্র আছে নাকি?? ওমা, নাহলে আর এত কষ্ট করে এইখানে আসা কেন? এইবার আমি নড়েচড়ে উঠলাম--আহ, সমুদ্র!!
হুড়োহুড়ি করে সবাই সমুদ্রের দিকে রওনা দিলাম।
বিশাল লম্বা একটা কাঠের পাটাতন বনের ভেতর দিয়ে একেবেঁকে চলে গেছে। সেইটা ধরে আমরা হাটতে লাগলাম। খানিকদূরে যেতেই সেই চিরপরিচিত ঠান্ডা মিঠে হাওয়া, নোনতা হাওয়ার সুবাস আর প্রাণজুড়োনো জলের কলস্বর!! সারাদিনের ক্লান্তি-শ্রান্তি, ছোট তাবুর দুঃখ সব ভুলে আমি এবং আমরা হৈ হৈ করে পানিতে নেমে পড়লাম। সাগর-মাতা আমাদের পরম মমতায় বুকে টেনে নিলেন। তখন সন্ধ্যা হয়ে এসেছে। সূর্য অস্ত গিয়েছে কিছুখন হল। আকাশে এখনো খানিকটা রক্তাভা লেগে আছে। কিন্তু এরই মাঝে হঠাৎ করেই সবাইকে অবাক করে দিয়ে আকাশে উঠল বিশাল এক রূপোর থালা! পূর্ণিমা---আজ পূর্ণিমা!! গলা পর্যন্ত ঈষদুষ্ণ সমুদ্রের জলে ডুবে থেকে নীল আকাশের বুকে বিশাল চাঁদটা দেখতে পাওয়াটা আমার এই নশ্বর জীবনের একমাত্র অলৌকিক ঘটনা!
সেই রাতে ঠিক রাত বারোটার সময় প্রিয়া ম্যাজিকের মত বের করে নিয়ে আসল কেক। আমার জন্মদিনের কেক।
ঘন অন্ধকার, ঝিঁ ঝিঁ পোকার ডাক, খানিক দূরে জ্বলছে অগ্নিকুন্ড, মাঝে মাঝে গাছের পাতার ফাঁক গলে তীক্ষ্ণ বর্শার মত চাঁদের আলো ঝাপিয়ে পড়ছে মাটির বুকে---আমি, আর আমাকে ঘিরে থাকা কিছু প্রিয় মুখ----আমার সেদিন বাস্তবিকই মনে হয়েছিল---এই পৃথিবীতে আমার আর চাওয়ার কিছু নেই, পাবারও কিছু নেই। সবাই ঘুমুতে চলে গেলে, 'ছোট তাঁবুতে ঘুমুতে পারবো না' এই অজুহাত দেখিয়ে আমি একলা চলে এসেছিলাম সাগরের তীরে। বিশাল বিস্তীর্ণ সাগরের পার। রুপালী জোছনার আলোয় সারাটা সাগর তীরকে মনে হচ্ছে দুগ্ধ-ফেননিভ শয্যা। তীরে এসে ঢেউগুলো আছড়ে পড়ছে। ফসফরাসের জন্যে ঢেঊগুলোয় যেন আলোর হলকা জ্বলছে! সারাটা সাগর পারে আর কেউ নেই। আমার সামনে বিশাল নীল সমুদ্র, মাথার উপর অবাক পূর্নিমা।
যখন-তখন বিনা কারণে আমার চোখে পানি চলে আসে। সেদিন আমার বুকটা এক অব্যক্ত যাতনায় শতচ্ছিন্ন হয়ে গেলেও চোখ বেয়ে এক ফোঁটা জলও এলো না। আমি অবাক হয়ে ভাবছিলাম---আমার এত কষ্ট হচ্ছে কেন? পরে মনে হয়েছিল--এত বিশাল অপরূপ দৃশ্যটা বুকে ধরতে হলে যে গভীরতার দরকার আমার ততটা নেই। বিশ্ব জুড়ে অপার রূপের আয়োজনে আমি হাজির হয়েছিলাম আমার ছোট্ট হৃদয়-ঘটি নিয়ে। তাতে আর কতটুকুই রূপ ধরে, বলুন!
তবে কেউ যদি কখনো আমাকে জিজ্ঞেস করে, তোমার জীবনে অলৌকিক কোন ঘটনা দেখেছ? আমি নির্দ্বিধায় সেইদিনের কথাটা বলে দেব। সেই অপার রূপের আলোয় ভিজতে ভিজতে আমি সারা রাত কাটিয়ে দিয়েছিলাম।
আমি একজন দুর্বল মানুষ। সহজেই কাতর হয়ে পড়ি। সহজেই বিচলিত হয়ে পড়ি। তেমনি সহজেই খুশি হয়ে যাই খুব। আমি আমার এই দুর্বলতার খবরটা ভাল করেই রাখি। পৃথিবী খুব শক্ত জায়গা। বিশেষ করে আমার মত মানুষের জন্যে তো বটেই। পদে পদে রয়েছে বিপন্নতার বিপর্যস্ততার দোলাচাল। আমি চেষ্টা করি আমার নিজের বিপন্নতাকে আড়াল করে রাখতে। আমি যে কত সহজে ভেঙ্গে যাই---এই তথ্যটা সবার কাছ থেকে লুকিয়ে রাখতে চাই। আমার সবচাইতে বড় ভয়---আমার আপনজনদের নিয়ে। তাঁদের কাছেই আমি সবচেয়ে বেশি উন্মুক্ত--তাদের কাছেই আমি সবচেয়ে বেশি নগ্ন।
শ্রীণি-প্রিয়া-রা চলে যাবে এইটা আমার জন্যে বিশাল বেদনার খবর। ওরা আমাকে বাতাসের মত ঘিরেছিল। আমি পি এইচ ডি শেষ করে দু'মাসের মত বেকার বসে ছিলাম। এই দু'মাসের প্রতিটি দিন এরা দুইজনে দুইবেলা আমার খবর নিত। আমার হাতে টাকা-পয়সা সাধারনত থাকে না। আর ওই সময় তো বলাই বাহুল্য। প্রিয়া জানে যে আমি মুখ ফুটে চাইব না কখনো। সে নিজে থেকে কিছুদিন পর পর আমাকে টাকা দিত। শ্রীণি সব সময়ে বলত, Keep your chin up! এদের ঋণ কখনো ভোলার নয়।
অথচ তারা যখন বিদায় নিচ্ছিল---আমি তাদের সাথে দেখা করিনি। প্রিয়া আকুল হয়ে ডেকেছে-- বাসায় এসে বেড়িয়ে যাও ক'দিন। যাইনি। মাঝে মাঝে জিটকে কথা হত। প্রিয়াকে বলতাম, আমাকে এই রকম করে ফেলে যাওয়াটা কি তোমাদের ঠিক হচ্ছে? প্রিয়া বলত, আরে আমরা তো আর মারা যাচ্ছি না। মাত্র কয়েক ঘন্টা দূরে আছি। তুমি যখন চাইবে--চলে আসবে আমাদের ওখানে। আমি বুঝদারের মত মাথা নাড়তাম।
ওদের যে জিনিসটা বলা হয় নি---সেটা হল, আমি নিজেকে লজ্জার হাত থেকে বাঁচানোর জন্যেই তাদের সাথে দেখা করিনি। আমি এমনি দুর্বল এক মানুষ--হয়ত তাদের বিদায় দিতে গেলে কেঁদে-কেটে একটা কান্ড করতাম। এরচেয়ে এইই ভাল--তারা দুইজনে ভেবে নিলে যে ছেলেটা কী ভীষন স্বার্থপর! আর স্বার্থপর তো বটেই--আমার দিকটা দেখতে গিয়েই তো ওদের দেখা হল না।
শ্রীণি-প্রিয়া চলে গেছে ক্যালিফোর্নিয়ায়। নতুন জায়গা, নতুন মানুষ। ব্যস্ততায় কাটছে সময় ওদের।
এই পারে আমি বসে বসে ভাবছি নতুন এই বছরে একটা রিজোল্যুশান বানাবো কি না---নতুন এই বছরে আমার রিজোল্যুশান কোন ফর্সা মানুষ হওয়া নয়---নতুন এই বছরে আমি হতে চাই একটু শক্ত-পোক্ত একজন লোক---নিদেনপক্ষে বন্ধুর কাছে গিয়ে যে কান্নাকাটি না করে, কোন সীন তৈরী না করেই বলে আসতে পারবে---এই তোরা কি জানিস, তোদের আমি কতটা ভালবাসি?
মন্তব্য
আমিই মনে হয় প্রথম।
হ্যাঁ বস, তুমিই প্রথম! অনেক ধন্যবাদ কষ্ট করে এই দীর্ঘ লেখাটি পড়ার জন্য!
খুবই ভাল লাগল অনিকেতদা। দুর্বল মানুষ হওয়ার অনেক জ্বালা।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
পড়ার জন্যে অনেক ধন্যবাদ ত্রিমাত্রিক কবি।
আসলেই তাই রে ভাই---
ভাল থাকুন সকল সময়ে!
আপনি এবেলা না কাঁদলেও আমার কান্না পেল, ভীষণ পেল। একটা কথা শুধু জানিয়ে যাই... এই লেখার প্রতিটি জিনিষ আমার জীবনের প্রতিটি খাপের সাথে মিশে যায়...
অনেক শুভেচ্ছা নিয়েন দাদা। ভালো থাকুন...
ডাকঘর | ছবিঘর
কষ্ট করে এই দীর্ঘ লেখাটা পড়ার জন্যে অনেক ধন্যবাদ, বস!
অনেক অনেক ভাল থাকুন।
শুভেচ্ছা নিরন্তর!
শেষটুকু নিজের মত করে নিয়ে নিলাম। সবাই শক্ত হয়ে গেলে পৃথিবী চলবে কিভাবে?
“ভালবাসতে না জানলে জীবনের ষোল-আনাই ফাঁকি ....”
পড়ার জন্যে আর এমন সুন্দর একটা মন্তব্যের জন্য অশেষ ধন্যবাদ তানিম!
শুভেচ্ছা অহর্নিশ!
লেখাটা অন্তর ছুঁয়ে গেল । ভালো থাকবেন আপনি ।
পড়ার জন্যে অনেক ধন্যবাদ সাবেকা!
আপনিও অনেক ভাল থাকুন।
শুভেচ্ছা নিরন্তর!
জীবনের প্রয়োজনে কাছের মানুষগুলো যখন দুরে চলে যায়, তখন মনে হয় এর চেয়ে ভাল ছিল যদি পরিচয়ই না হত। সেদিন আমিও এভাবে একজনকে বিদায় দিলাম। হ্য়তো আর কখনো দেখা হবেনা। বিদায় দিয়েছি হাসিমুখে, কিন্তু চোখ তো জলে ভরেই যায়।
আপনার কাছের মানুষগুলো কাছেই যেন রয় নতুন বছরে। শুভকামনা রইলো।
একেবারেই মনের কথাটা বলেছেন। নতুন বছরে আপনার জন্যেও রইল অপার শুভেচ্ছা।
ভীষণ ভালো লাগলো আপনার এই লেখাটা। অনেক ব্যপারগুলো নিজের জীবনের সাথে মিলেও গেল, বিশেষ করে ঐ জোড়-বিজোড় সালের ব্যপারটা!
শুভ কামনা রইলো, ধন্যবাদ।
পড়ার জন্যে এবং এমন সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ ধ্রুবনীল।
শুভেচ্ছা নিরন্তর।
পিয়াজডি আর নতুন চাকরি-বাক্রির জন্য আবারো অভিনন্দন! রিজোল্যুশানে ভাবছিলাম এ বছর আরো একটা জিনিস এড করবেন...বিবাহ
হে হে হে ---পড়ার জন্যে অনেক ধন্যবাদ তানভীর ভাই!
অনেক অনেক ভাল থাকেন বস!
শুভেচ্ছা নিরন্তর
চমৎকার লাগলো। মানুষের জীবনটাই কেটে যায় বিদায় জানিয়ে জানিয়ে...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
পড়ার জন্যে অনেক ধন্যবাদ তাসনীম ভাই।
শুভেচ্ছা নিরন্তর!
আহারে বেচারা।
হা হা হা, আসলেই 'আহা রে'
পড়ার জন্য ধন্যবাদ অদিতি।
শুভেচ্ছা নিরন্তর!
বন্ধুরা চলে যাবে, নতুন বন্ধুরা এসে পুরনো ক্ষত সারিয়ে দেবে, এটাই তো নিয়ম।
সুন্দর একটা লেখার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। প্রতিটি বাক্য উপভোগ করেছি। শেষের বাক্যে এসে ভয়াবহ মন খারাপ লেগেছে। আমার হারিয়ে যাওয়া দোস্তদেরকে মনে পড়েছে
“Peace comes from within. Do not seek it without.” - Gautama Buddha
ধন্যবাদ উচ্ছলা!
শুভেচ্ছা জানবেন।
আরে শেষ হয়ে গেল? এত সুন্দর করে লেখা। আমারও চাঁদ ও সমুদ্র দেখার খুব ইচ্ছে।
শাফি।
একদিন ঘুরে আসুন---দেখবেন অনেক ভাল লাগবে!!
শুভেচ্ছা নিরন্তর!
আমি একেবারে গেলাম, মারা যদি নাও যাই, বাউলা হইয়া গেলাম!
আহা, কী লিখেছেন, কী লিখেছেন! সেই সমুদ্র ভরা দিকদিগন্ত ভাসানো অবাক জ্যোস্না ঢুকে গেল আমার চোখেমুখে মনে সবখানে, ছোটো তাঁবু কিনে বা তাঁবু ছাড়াই একদিন আমিও রওনা হবো সেই অলৌকিক ক্যাম্পিং স্পটে! দেখবেন!
ভালো থাকবেন, সুন্দর হোক নতুন বছর।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
বহুদিন পর আপনার মন্তব্য পেয়ে খুব ভাল লাগছে তুলিরেখা!
নতুন বছরটা আপনারও অনেক অনেক ভাল কাটুক---চাঁদ, জোছনা আর সমুদ্রের সাথে দেখা হয়ে যাক একদিন--এই কামনা রইল।
শুভেচ্ছা নিরন্তর
সব কিছুর পর ও , "হ্যাপি নিউ ইয়ার"
আপনাকেও 'হ্যাপি নিউ ইয়ার' রিডার!
শুভেচ্ছা নিরন্তর!
রাতদুপুরে এই লেখাটা ভালো লেগে গেলো ভাইয়া।
আমিও একই ইচ্ছা রাখি এই বছর। চাই শক্ত হতে। গ্রাড নাইটের ভোররাতের মতন ভেউভেউ করে কাঁদতে আর চাইনা
লেখাটা পড়ার জন্যে অনেক ধন্যবাদ আমার প্রিয় গল্পকার!
গ্র্যাড নাইটের কাহিনী শুনতে মন চায়---একদিন লিখে ফেলো না কেন?
অনেক শুভেচ্ছা রইল বস!
আচ্ছন্ন করে দিলেন একেবারেই। আমিও দুর্বল মানুষ, সংবেদন্শীল। শক্ত হতে চেষ্টা করছি প্রতিদিন। যাকে ভেবেছিলাম মুক্তি সেই হয়ে এল বন্ধন হয়ে, আর যে বন্ধনগুলোকে পরাধীনতা ভেবে মুক্তি খুঁজেছি তাই হয়েছে আজ দুর্লঙ্ঘ স্বাধীনতা।
শুভ কামনা অনেক।
আপনার মন্তব্যটা হৃদয় স্পর্শ করেছে।
অনেক অনেক ভাল থাকবেন ইফতি!
আসাধারন লাগলো। বেশ বড় লেখা কিন্তু এক নিশ্বাসে পড়ে ফেললাম। বিদায় সবসময়ই অনেক কষ্টের।
বড় লেখা সত্ত্বেও কষ্ট করে পড়ার জন্যে অনেক ধন্যবাদ জাদুকর।
বড় নির্মম সত্য!!
আপনার লেখা পড়ে স্পষ্ট বোঝা যায় আপনি একজন অনুভূ্তিপ্রবণ মানুষ। এরকম আবেগপূর্ণ লেখা বহুদিন পড়িনি।
চমৎকার বন্ধুভাগ্য আপনার - প্রকাশ্যে ঈর্ষা জানিয়ে গেলাম।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
লেখাটা পড়া এবং এমন চমৎকার মন্তব্যের জন্য অশেষ কৃতজ্ঞতা ফাহিম!
শুভেচ্ছা নিরন্তর!
বহুদিন পর এমন চমৎকার একটা আবেগী লেখা পড়লাম। লেখাটা চলতে থাকলে আরো ভালো লাগতো। আপনার মতো মানুষ কিন্তু সহজেই খুব কষ্ট পায়। এটা আমার চেয়ে ভালো আর কে জানে!
ভালো থাকবেন।
এত বড় লেখাটা কষ্ট করে পড়া ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ পিপি'দা!
অনেক অনেক ভাল থাকবেন।
অনিঃশেষ শুভ কামনা!
এরকম দারুণ একটা লেখা পড়ার জন্য আমার হাতে "নষ্ট" (!) করার মত সময় প্রচুর আছে ।
আপনার লেখাটা পড়ে আমার মনটা ভারি হয়ে গেল আমার এক বন্ধুর জন্যে । ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে আমরা চারবছর একসাথে কাটিয়েছি । আর তারপর ঝুপ করে একদিন এক-বিছানা দূরত্বটা বেড়ে তিন হাজার কিলোমিটার হয়ে গেল । আজ প্রায় দুবছর হল ওর সাথে দেখা হয়নি । ফোনে কথা হয়, চ্যাটে আড্ডা হয়, ফেসবুকে ছবি দেখা হয়, তবু যা হয় না তার জন্যেই মন খালি হয়ে যায় । না আমি কাঁদিনি, শুধু শক্ত-পোক্ত হতে গিয়ে দুঃখে শক্ত হয়ে গেছি।
তাই আপনাকে একটা কথা জানাই, "শক্ত-পোক্ত" হবার জ্বালাও অনেক ।
ভাল থাকবেন দাদা ।
লেখাটা পড়ার জন্যে অনেক ধন্যবাদ প্রদীপ্ত'দা! আপনার বন্ধুর কথা শুনে আমার মনটাও খারাপ হল। দেখবেন--এক দিন ঠিক দেখা হয়ে যাবে আপনাদের দু'জনের--তখন আবার জমবে মেলা---
ততদিন ভাল থাকুন, অনেক অনেক ভাল
অনিঃশেষ শুভ কামনা!
লেখাটা পড়ার পর কিটারো'র বিকল্প কিছু মাথায় এলো না। যেন এক জাঁকজমক আয়োজন শেষে রয়ে গেছে বিষাদমাখা অদ্ভুদ কিছু মূর্ছনা!
ভাল থাকবেন অনিকেত'দা।
love the life you live. live the life you love.
অনেক অনেক ধন্যবাদ প্রিয় পল! অনিঃশেষ কৃতজ্ঞতা রইল কিটারোর মূর্ছনা উপহার দেবার জন্যে!
সাহস করে পড়ে ফেললাম পুরাটা, আর মিস করলাম সেই সারপ্রাইজ হওয়া।
ভাল থাকুন।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ ছিল যেন বিশাল পোস্ট পড়ার আগে হাত এ পর্যাপ্ত সময় আছে কিনা দেখে নেই. সেটা দেখা হইনি কারণ পড়তে পড়তে কখন পড়ার মধ্যে ডুবে গিয়েছিলাম টের পাইনি . নিজেকে একজন দুর্বল মানুষ প্রমান করে পুরো লেখাটা পড়ে ফেললাম. অনেক কিছুই আমার সাথে খুব মিলে যায়. আমিও প্রিয় মানুষদের সাথে দেখা করতে ভয় পাই এই ভেবে যে নিজের কষ্টটা লুকাতে পারব না.হাসি মুখে বলতে পারব না আমি ওদের অনেক ভালবাসি. তবে আমার দুর্বলতা আরো অনেক জায়গায়. কখনো কখনো কারো কথায় আঘাত পেলে শক্ত করে তাকে বলতে পারি না আমি আঘাত পেয়েছি. ছোটবেলায় বড় মামা বোকা দিলে তার সামনে না কেদে বাসায় এসে কাদতাম. কিন্তু তাকে কখনো বলতে পারি নাই আমি উনার কথায় অনেক রাগ করেছি বা আঘাত পেয়েছি. এখনো ভাইয়া যদি একটা কড়া কথা বলে উল্টো বলতে পারি না এইটা কেন বললে? চুপ করে শুনতে হয়. মনে হয় আমি অনেক বেশি দুর্বল. এরকম দুর্বলতার অজস্র প্রমান নিয়ে একটাই জীবন সেটাকে বহন করে চলেছি.
পড়ার জন্যে অনেক ধন্যবাদ এলোমেলো মেঘ!
আপনার নিকটা খুব মনে ধরল। ভাল থাকুন সকল সময়ে---
ঘ্যাচাং
নতুন বছরে একটা নতুন লেখা দিতে এত দেরি করলে চলে?
সবাই লিখেছেন প্রায়, আপনার লেখাটা বাকি ছিল, তিথী লিখল যেদিন সেদিন মনে হল আপনার লেখাটা বকেয়া পড়ে আছে!
মনখারাপ এখন তো শুধু আপনার একার নয়, আমরাও সবাই মিলে ভাগ করে নিলাম, এখনো কি কমেনি?
শুভেচ্ছা আর শুভকামনা আপনার জন্য। আর মন একটু ভাল হলে আমাদের জন্য কিছু গাইবার অনুরোধ, ভাল থাকুন।
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
অনেক ধন্যবাদ মর্ম --কষ্ট করে লেখাটা পড়া এবং এত চমৎকার মন্তব্য করার জন্যে।
দেরীতে হলেও নতুন বছরের শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্যে।
ভাল থাকুন সকল সময়ে, সকলকে নিয়ে---
বরাবরের মতই আবেগটুকু ছুয়ে গেলো।
ধন্যবাদ চরম উদাস!
শুভেচ্ছা অহর্নিশ!
পড়ার জন্যে অনেক ধন্যবাদ শামীম ভাই----
নতুন বছরটা আনন্দে কাটুক আপনার।
শুভেচ্ছা নিরন্তর
ভেবেছিলাম আজকে আপনার বিশাল পোষ্ট পড়বো না। কিন্তু দিন শেষে ঘুমোতে যাবার আগে উঁকি দিতে এসে আটকে গেলাম। শেষ না করে উঠতে পারলাম না। মনটা ভিজিয়ে দিলেন একেবারে। অসাধারণ আবেগময় বন্ধুতা!
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
অনেক অনেক ধন্যবাদ নীড়'দা--এত বড় লেখাটা কষ্ট করে পড়ার জন্যে।
শুভেচ্ছা অহর্নিশ!
আপনার এই লেখাটা আমি সব্বার আগে পড়েছি। কিন্তু মন্তব্য করতে গেলে কথা খুঁজে পাইনা। শুধু বলি, থ্যাঙ্কিউ অনিকেতদা। এই লেখাটা পড়া আমার খুব দরকার ছিল। লিখেছেন বলে কৃতজ্ঞ।
আরেকটা কথা বলি... পোস্ট পড়বার জন্য পাঠককে ট্যাক্সো দেবার নিয়ম থাকলে আপনি এতদিনে আমার জন্যেই দেউলে হয়ে যেতেন, নিশ্চিত।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
পড়ার জন্যে অনেক ধন্যবাদ আশা'দি!
দেরীতে হলেও নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানিয়ে গেলাম।
অনেক অনেক ভাল থাকুন!
এত্তো পচা লেখা!
হা হা হা---পড়ার জন্যে অনেক ধন্যবাদ কৌস্তুভ'দা
অনিঃশেষ শুভ কামনা।
খুব মন ছোঁয়া, বিশুদ্ধ আবেগে মোড়া।
facebook
পড়ার জন্যে অনেক ধন্যবাদ তারেক অণু! আপনার ভ্রমন কাহিনীগুলোর আমি বিশেষ ভক্ত!
অনেক অনেক শুভ কামনা
অনেক ভালো লাগল।
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
অনেক ধন্যবাদ সজল'দা!
শুভেচ্ছা নিরন্তর!
খুব ছুঁয়ে গেলো অনিদা। অনেক অনেক ভালো থাকুন।
পড়ার জন্যে অনেক ধন্যবাদ বন্দনা।
শুভেচ্ছা অহর্নিশ!
আপনার শব্দচয়ন দারুন লাগে অনিদা, যেমন ,অহর্নি্শ, নিরন্তর, অনিঃশেষ।
অনেক ধন্যবাদ বন্দনা!
আপনাকে ভালো লাগলো
নতুন মন্তব্য করুন