আমরা হলাম রাঘব বোয়াল,ওরা হল পুঁটি
ভালবেসে চড়-থাপ্পড় মারছি একটি দু'টি
পাহাড়ি লোকেরা খুব আনাড়ি
দেশটা নাকি তাদেরও বাড়ি?
এমনি সকল আজগুবি ভাব ঘুরছে তাদের মাথায়
বাঙ্গালিরা যে মা-বাপ তাদের, এইটা কে যে বুঝায়?
ইচ্ছে হলেই টানব কোলে
দোল খাওয়াব 'ভাইয়া' বলে
ইচ্ছে হলেই আমরা আবার জ্বালাব বাড়ি ঘর
সমান-সমান ভাগ চাইবি? হুঁশ হলো না তোর?
পাকিরা গেছে একাত্তরে, যায় নি তাদের ভূত
পাহাড়ে আমরা পাকি এখন, অযুত-লক্ষ-নিযুত!
মন্তব্য
শুধুই পাহাড়? সমতলও কম কিসে ভাই কম কিসে
পাকি লনে বঙ্গমেয়ে ঘুরে বেড়ায় সারাদেশে
পাকি স্বাদের খাঁটি খাবার কত্তজনের খুব প্রিয়
এসব কথাও ভাবায় বটে, এইসবও মাথায় নিয়ো।
দেবদ্যুতি
আমার কিছু বন্ধু, পরিচিতজন আছে পাহাড়ের এবং সমতলের ‘অবাঙালি’। তারা যখন বাঙালিদের কীর্তিকলাপ প্রমাণসহ বলে, কিছু করার থাকে না, শুধু মাথাটা নিচু হয়ে যায়-কষ্টে, বেদনায় আর লজ্জ্বায়।
আমরা যাকে পাকিপনা বলি, পাহাড়ে সেটাকে বাঙালিপনা বলা হয়। স্বাধীনতার পরে একটা অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র গড়তে কতটা যে ব্যর্থ আমরা, সেটা প্রকাশ পায় পাকিস্তানের নৃশংসতার ছায়া নিজেদের আচরণে দেখে। কারণ খুঁজতে গেলে অনেক আলাপ উঠে আসবে। তবে সত্যি বলতে কী, কোন নামে ডাকা হচ্ছে এতে আসলে পাহাড়ের ভূমিহারা, স্বজনহারা, সম্ভ্রমহারা মানুষগুলোর কিছু এসে যায় না। যে নামেই ডাকা হোক, ঘৃণা বাঙালির পাতেই পড়ছে। আমরা বরং ডিনায়ালে না থেকে এটাকে মোটাদাগে বাঙালির হারামিপনা বলেই স্বীকার করে নিই, আর এই ঘৃণা থেকে মুক্ত হতে নিজের স্বার্থেই সোচ্চার হই।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
পাকিস্তান আমলে কাপ্তাই লেক বানিয়ে যখন পার্বত্য চট্টগ্রামের একাংশ ডুবিয়ে দেয়া হয়েছিল তখন দেশে সামরিক শাসন চলছিল। তারা চেয়েছিল উত্তর-পুর্ব ভারতসংলগ্ন এই এলাকায় সব সময়ে উত্তেজনা ও যুদ্ধাবস্থা বজায় থাকুক। যাতে এর মওকায় উত্তর-পূর্ব ভারতে চলমান বিচ্ছিন্নতাবাদকে সহযোগিতা করা যায়।
স্বাধীনতা পরবর্তী কালে কিছুটা রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবে আর অনেকটা যুদ্ধ পরবর্তী সক্ষমতার অভাবে পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যার সমাধানের সূচনা না করে সমস্যাটিকে জিইয়ে রাখা হয়।
এই রাজনৈতিক সমস্যাটিকে আজকের মতো জটিল ও কঠিন করে তোলার কৃতিত্ব সামরিক শাসক জেনারেল জিয়ার। সমতল থেকে সেটেলার নিয়ে বসিয়ে এই সমস্যাকে সশস্ত্র সংগ্রামের দিকে ঠেলে দেয়। ফলে পাহাড়ে স্থায়ীভাবে সামরিক বাহিনী বসে যায়, যা আজো অব্যাহত আছে।
আরেক সামরিক শাসক এরশাদ তার পূর্বসূরীর পথ ধরে গুচ্ছগ্রাম বানিয়ে সেখানে সেটেলার বসিয়ে গেছে এবং সামরিক বাহিনীর অবস্থান আরো জোরদার করেছে।
খালেদা জিয়ার প্রথম সরকারের সময় পালে পালে সেটেলার বসানো না হলেও সামরিক বাহিনীর অবস্থান একই রাখা হয়।
শেষোক্ত এই তিন আমলে বেশ কিছু গণহত্যার কথা ঘটেছে। অন্যান্য অত্যাচারের কথা বলাই বাহুল্য।
শেখ হাসিনার প্রথম সরকারের সময়কার করা শান্তিচুক্তির ফলে যে আশা জেগেছিল তা হতাশায় পরিণত হয়েছে চুক্তির যথাযথ বাস্তবায়ণ না হওয়ায়। অত্যাচার আর হত্যা যথারীতি চলেছে। এখন আরো ১৮ বছর পার হবার পর গোটা সমস্যায় ভাগিদারের সংখ্যা বেড়ে গেছে অনেক, তাদের দলও অনেক। সমস্যা এখন আরো জটিল হয়েছে। এই সমস্যা সমাধানে সরকার তার নীতি পরিবর্তন করলে হয়তো আরো ১৮ বছরের চেয়ে কম সময়ে এই সমস্যার অধিকাংশের সমাধান করা সম্ভব।
তবে যে বাঘ একবার নরমাংসের স্বাদ পেয়ে গেছে তাকে আর হরিণ/খরগোশ দিয়ে ভোলানো কি সম্ভব?
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
একেবারেই হক কথা !!
ডুপ্লি ঘ্যাচাং
পাহাড়ে বাঙালি সেটলার আর সামরিক বাহিনী যে হারামিপনা চালাচ্ছে, তা অবিলম্বে বন্ধ হওয়া দরকার। কিন্তু সরকার পাশে না থাকলে সেটা কীভাবে সম্ভব হবে, জানি না। সাধারণ মানুষ আমরা যারা, মোটা দাগে আমরাও তো চুপ। শক্ত প্রতিবাদ নাই জন্য বছরের পর বছর এরকম চলে আসছে। অথচ বেড়াতে গেলে ওই পাহাড়ে ঠিকই যাই আমরা, পাহাড়িদের আন্তরিকতা গায়ে মেখে ফিরি। এরপর কুম্ভকর্ণের মতো সব ভুলে থাকা। পাহাড়ে আরও যে কত রক্ত ঝরবে, কত প্রাণ যাবে, কে জানে। এসব ভাবলে খুব কষ্ট লাগে।
--সেইটাই কথা। সরকার এইসব বিষয়ে আন্তরিক না আর আমরা যারা আম-জনতা তাদের স্মৃতিশক্তি বড়ই দুর্বল!!
বনের পাকিস্তান চলে গেছে ৭১ এ, মনের পাকিস্তান রয়ে গেছে। এই পাকিপনা বন্ধ হোক।
কিছু বলার নাই, কিছু করার নাই আমাদের। আর যাদের করার আছে তারা কিছুই করে না। নিজের কাছে খুব অপরাধী লাগে নিজেকে।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
পাহাড়ে তো আছে মাউন্টেন,
আর গোটা কয় ফাউন্টেন।
একটু-আধটু 'কালচার'
খাক না ওদের ভালচার!
আমরা করবো পিকনিক
তুলবো একটু ভিডু-পিক।
'সন্ত্রাসী' আর 'বার্মি'?
ডান্ডা ধরেছে আর্মি।
ফরর ফরর (বাড়ি ফিরে নাক ডেকে ঘুমানোর শব্দ)।
তোমাদের কোন প্রতিবাদ কারো কানে যায় কি আর?
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
দুই-চারদিন পেপার আর টিভিতে কিছু দেখলাম। এখন কোথাও কিছুই নাই!!! আমরা এমন কেন?!? আর এই 'পাকিপনা' শব্দটা... খুব খারাপ লাগছে শুনতে। করব 'বাঙ্গালপনা' আর 'পাকিপনা' ছাতায় মাথা ঢাকব; খুব সহজ, না?
ছাতা ফুটো হতে সময় লাগে না।
- ভোরের বৃশ্চিক।
“পাকিরা গেছে একাত্তরে, যায় নি তাদের ভূত
পাহাড়ে আমরা পাকি এখন, অযুত-লক্ষ-নিযুত!”
বাহ !
------------
রাধাকান্ত
নতুন মন্তব্য করুন