আমাদের দেশে রাস্তায় বেরুলে প্রথমেই আপনার নজর কাড়বে কোন জিনিসটা?
না, ট্রাফিক জ্যাম বাদ দিয়ে!
হ্যা, ঠিক ধরেছেন। বড় বড় হোর্ডিং এ আরো বড় বড় বিজ্ঞাপনগুলো। আমি সঠিক পরিসংখ্যান জানিনা তবে আন্দাজ করে নিতে কষ্ট হয় না যে বিজ্ঞাপনের বেশির ভাগই হচ্ছে মেয়েদের নিয়ে। মানে বিজ্ঞাপনগুলোতে মেয়েদের ছবি ব্যবহৃত হয়েছে প্রোডাক্ট নির্বিশেষে। আমি দেশ ছেড়েছি ২০০০ সালে। তখন বিটিভিতে জনপ্রিয় একটি বিজ্ঞাপন ছিল লুঙ্গির। সেই লুঙ্গির বিজ্ঞাপনেও নিতান্ত অপ্রাসঙ্গিক ভাবে একজন নারীকে দেখানো হল। আর এইটা কেবল আমাদের দেশের বিষয় নয়। সারা পৃথিবী জুড়েই চলছে নারীদের অপ-বিজ্ঞাপন।
এইসব অপবিজ্ঞাপনের কুফল বলে শেষ করার নয়। সবচেয়ে বড় যে কুফল তা হল 'Unrealistic Body Image' বা অপ্রাকৃত দেহ-ধারণার প্রসার। ছোট বড় নির্বিশেষে মেয়েদের মনস্তত্ত্বে এই বিজ্ঞাপন গুলো বিরূপ চাপ ফেলে। চিন্তা করুণ, আপনার ছোট মেয়েটা স্কুলে যাবার সময় রোজ একটা বিশাল বিলবোর্ডে এক অসামান্য রূপসীর মুক্তোঝরানো হাসিমুখ দেখে আর তার নিজের পোকায় ধরা দাঁতের কথা ভাবে। আপনি হঠাৎ করেই দেখবেন আপনার মেয়েটা সবার সামনে হাসা বন্ধ করে দিয়েছে। আপনি অনেক চেপে ধরলে কোন এক দুর্বল মুহূর্তে সে হয়ত আপনাকে বলে দিতে পারে যে সে মনে করে তার হাসিটা কুৎসিত---বিলবোর্ডের ঐ ললনার মত না। আপনার বাচ্চাটা যা জানেনা তা হল ঐ হাসিটাও আসল হাসি না। ফটোশপে ঘন্টার পর ঘন্টা সময় ব্যয় করে, এয়ারব্রাশ করে, তিলে তিলে ঝকমকে করে তোলা হয়েছে এই হাসিটা। বাস্তবে হয়ত এই ললনার হাসি দেখলে অনেকের প্রাণ পাখি খাঁচা ছাড়া হবার জোগাড় হবে।
আপনাকে বুঝতে হবে, আপনার নিজের শিশু সন্তানটিকেও বোঝাতে হবে---বিলবোর্ডের এই ছবিগুলো বিজ্ঞাপন। কিছু লোভী মানুষ ব্যবসা করতে চাইছে। রূপকথার মত এইগুলোও সত্যি নয়। ঝকঝকে হাসি, ঢলঢলে চুল, ধবধবে ফর্সা ত্বক---এইসব গুলো জীবনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি নয়। মানুষ একটা বিজ্ঞাপনের চেয়ে বড় কিছু। এইসব কিছুর চেয়ে ঢের বেশি শ্রেয়তর একটা নির্ভার নিরুদবিগ্ন শৈশব। একটা শিশুর জন্য এম্নিতেই আমরা হাজারো মেকি প্রতিযোগিতা তৈরি করে করে তার জীবন অতিষ্ট করে তুলি। লক্ষ টাকার বিজ্ঞাপন যেন আপনার আমার অলক্ষ্যে তার জীবনকে লক্ষ্য করে না তোলে।
আর যারা বিজ্ঞাপনের সাথে জড়িত তাদের কাছে অনুরোধঃ
-- মেরুদন্ডটি খুঁজে বের করুণ
-- অপ্রাকৃত দেহ-ধারণার বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিন
-- বাণিজ্য করতে করতে বেনিয়া হয়ে যাবেন না
পশ্চিমের দেশ গুলো এরই মাঝে এইসব বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়েছে। আমরা পশ্চিমের সবকিছু নকল করতে ভালবাসি। ভ্যালেন্টাইন্স ডে নামক এক যন্ত্রণা থেকে শুরু করে হালের হ্যালোউইন ডে উদযাপনের হিড়িক। তো, তাদের ভাল কিছুও নকল করুণ না কেন? লন্ডনে সকল পরিবহনে এইরকম অপ্রাকৃত দেহধারণার বিজ্ঞাপন চিত্র নিষিদ্ধ হচ্ছে। আমেরিকার বিখ্যাত চেইন্সটোর CVS ফার্মেসী ঘোষনা দিয়েছে যে তাদের কোন স্টোরে এখন ডিজিট্যালি পরিবর্তিত বিজ্ঞাপন চিত্র ব্যবহার করা যাবে না। আর যদি ব্যবহার করতেও হয় তাহলে ঐ ছবির পাশে লিখে দিতে হবে যে এইটি আসলে একটি ডিজিট্যালি পরিবর্ধিত ও পরিবর্তিত ছবি। প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ করি--এই লেখার সাথে যে ছবিটি যুক্ত আছে নীচে, তা আসলে ২০১৪ সালে ভিক্টোরিয়া'স সিক্রেট কোম্পানির একটি বিতর্কিত বিজ্ঞাপন চিত্র। এই বিজ্ঞাপন নিয়ে প্রচুর সমালোচনা হয়, ২৬ হাজার মানুষ পিটিশন করে। তারপরও কোম্পানিটি বিজ্ঞাপন সরায় নি। কেবল তাদের বিজ্ঞাপনের ট্যাগ লাইনটি একটু পাল্টে দিয়েছিল-- A body for everybody...
আসলে এই বিজ্ঞাপন সন্ত্রাস থেকে বেরিয়ে আসতে হলে দরকার একটা সামগ্রিক সচেতন প্রয়াস। অপ্রাকৃত দেহধারণার বিষয় শুধু আপনার মেয়েকে শেখানোর জন্য নয়---এইটি আপনার ছেলের জন্যেও সম পরিমানে দরকার। আপনার ছেলেকে, বন্ধুকে, ভাইকে প্রয়োজনে পিতাকে পর্যন্ত বলুন এই বিষয়ে। শেখার কোন বয়েস নেই--বিশেষ করে ভদ্রতা শেখার ও মানবিকতা শেখার। যুগের পর যুগ চলে আসা পুরুষতান্ত্রিক ভোগবাদী ধারণা কেবল পুরুষকে গ্রাস করেছে ভাবলে ভুল করবেন। এর গ্রাসে সবার আগে মেয়েরা গেছেন।
আমার খুব মনে পড়ছে একটা গানের অনুষ্ঠানের কথা। ভারতীয় কোন এক চ্যানেলের একটা তথাকথিত গানের প্রতিযোগিতার অনুষ্ঠান--'সারেগামাপা-গানে গানে তোমার প্রাণে' বা এই জাতীয় নামের। সেখানে এক প্রতিযোগিনী আসল গান গাইতে। তাকে নিয়ে অনুষ্ঠানের মূল সঞ্চালক সুদর্শন যীশু সেনগুপ্ত বেশ মিনিট খানেক তার ওজন নিয়ে কুৎসিত মশকরা করলেন। আমি অবাক হয়ে দেখলাম ঐ অনুষ্ঠানে উপস্থিত মাননীয় বিচারকবৃন্দ (যার মাঝে হেঁড়েকন্ঠশ্রী কুমার শানু ছিলেন, এমনকি একজন নারী বিচারক হিসেবে ছিলেন অলকা ইয়াগনিক) তুমুল উপভোগ করলেন। এই ব্যাপারটা যে রসিকতা--সেটা বোঝানোর জন্য নানা রকম সাউণ্ড বাজানো হল নেপথ্যে।
আমি অবাক হয়ে দেখলাম। পরের দিন তাদের মূল ওয়েবসাইটে প্রতিবাদ জানানোর চেষ্টা করলাম। সফল হয়নি।
আমি জানি ঠিক এমন ভাবে মেয়েদের হেনস্থা করে চলেছি আমরা যুগ যুগান্তর ধরে--কখনো সজ্ঞানে, কখনো অজ্ঞানে। কিন্তু ভুল শুধরে দেওয়ার সুযোগ এখনো আছে আপনার হাতে।
সচেতন হোন, মানবিক হোন।
মন্তব্য
খুব সাম্প্রতিক ঘটনা। আমি কোন ধরনের শাকসবজি খাই না। আমার কলিগেরা ঠিক তার উল্টো। দুপুরে লাঞ্চ করতে বসে রোজ তাই আমাকে লাইনে আনার জন্য ধস্তাধস্তি করা হয় এবং নানাজাতীয় প্রলোভন প্রর্দশন করা হয়। শেষোক্ত প্রলোভনটি ছিল ত্বক সুন্দর হবে।
এক পা কবরে চলে গেছে এখন আর স্কিন দিয়ে কী হবে! আগেও বা কীই আর হতো?
--আরো ভালো বিয়ে হতো।
চামড়া দেখে পছন্দ করবে, এমন ছেলে তো আমি বিয়ে করতাম না রে ভাই।
--আরে আমরা তো মজা করছি, আপনি সিরিয়াস হয়ে যাচ্ছেন কেন!
এই হলো উচ্চশিক্ষিত বাঙালির মজা করার ক্ষমতা, বোধ এবং লেভেল।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
জাতি হিসাবে আমাদের দুইটি জিনিসের সেন্স একেবারেই নেই--- অন্যের প্রাইভেসি আর নিজের এক্তিয়ারের সেন্স।
বাংলাদেশে যারা বিজ্ঞাপন বানান তাদের মধ্যে কতজন কোন পণ্যের বিজ্ঞাপন বানাচ্ছেন, সেটাতে কী আছে না আছে, সেগুলো আসলে কতটুকু কী কাজে দেয় সে সম্পর্কে কতটুকু জানা-বোঝার চেষ্টা করেন সেই বিষয়ে আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে। আমি অনেকগুলো বছর ধরে বাংলাদেশের অনেকগুলো ইন্ডাস্ট্রিতে বিজ্ঞাপনের ব্যাপারটি কাছ থেকে দেখেছি। দুয়েকটা গল্প বলি।
১। পণ্যঃ কন্ডেন্সড মিল্ক
বাজারে চালু কন্ডেন্সড মিল্কগুলো যে মোটেও কোন মিল্ক না, এটাকে যে কন্ডেন্সড ভেজিটেবল ফ্যাট বলা যুক্তিসঙ্গত এই আলোচনা যখন চলছে তখন একটা কন্ডেন্সড মিল্কের বিজ্ঞাপনে দেখানো হলো গোয়ালিনীরা দুধভরা মাটির কলস মাথায় নিয়ে যাচ্ছেন। অর্থাৎ, দর্শকদের এমন একটা ধারণা দেয়ার চেষ্টা যে এই কন্ডেন্সড মিল্ক সয়াবিনের গাঁদ নয়, বরং খাঁটি গরুর দুধ। এর নির্মাতাকে (যিনি এর স্ক্রীপ্টরাইটারও বটে) এই ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি উত্তর দেন, যেহেতু এটার নামে 'মিল্ক' শব্দটা আছে সুতরাং এটা দুধই বটে। সুতরাং তার বিজ্ঞাপনে কোন ভুল নেই। সুকুমার না-পড়া লোকজনও বরকন্দাজকে বর, চালতাকে চাল, আমলকীকে আম, জলপাইকে জল বলেন না; কিন্তু এই জ্ঞানীকে সে কথা কে বোঝাবে!
২। পণ্যঃ চিপস্
এক চিপসের বিজ্ঞাপনে দাবি করা হলো তাদের চিপস্ আলু বা ভুট্টা দিয়ে না বানিয়ে ফ্রেশ শ্রিম্প আর চিকেন দিয়ে বানানো। এখানে কয়েকটা বিষয় লক্ষণীয়। প্রথমত, আলু আর ভুট্টা শব্দ দুটো বাংলায় বলা হলেও চিংড়ী আর মুরগীকে বাংলায় না বলে ইংলিশে বলা হলো। মানে এখানে কোন বাংলা 'ক্ষ্যাত' জিনিস নাই, সব ইংলিশ 'স্মার্ট' জিনিস দিয়ে বানানো তাই এই চিপস্ বাজারের অন্য চিপসের চেয়ে স্মার্ট। দ্বিতীয়ত, আলু আর ভুট্টা মোটেও ক্ষতিকর কোন খাবার না। বিশ্বের বিলিয়ন বিলিয়ন মানুষের প্রাত্যহিক আহার হচ্ছে আলু আর ভুট্টা। সুতরাং এখানে আলু আর ভুট্টা সম্পর্কে একটা বিভ্রান্তিকর বার্তা দেবার চেষ্টা আছে। চিপস্টার প্যাকেটে লেখা আছে ওটা আলু/ভুট্টা/শ্রিম্প/চিকেন দিয়ে বানানো নয় - ট্যাপিওকা দিয়ে বানানো। ট্যাপিওকা খারাপ কিছু নয়, তবে সেটা চিংড়ীও না মুরগীও না। এই ব্যাপারে বিজ্ঞাপন নির্মাতা ও স্ক্রীপ্টরাইটারকে জিজ্ঞেস করলে উভয়ে জানান খোদ চিপস্ কোম্পানীর মালিক তাদেরকে বলেছেন এটা ফ্রেশ শ্রিম্প আর চিকেন দিয়ে বানানো সুতরাং প্যাকেটের গায়ে যা কিছু লেখা থাকুক, বিজ্ঞাপনে ভুল কিছু বলা হয়নি।
বিজ্ঞাপন যে সব মিডিয়ায় প্রচারিত হয় সে সব মিডিয়াতে যদি এগুলো যাচাইয়ের কোন উপায় থাকতো, অথবা এই ব্যাপারে কোন রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ সংস্থা থাকতো তাহলে উপরোল্লেখিত বিজ্ঞাপনদুটোর মতো সবৈর্ব মিথ্যাচার প্রচারিত হতে পারতো না।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
--এইটা হল আসল কথা। কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। যার যেমন মনে হচ্ছে --করে দিচ্ছে। আমি তো মাঝে মাঝে ভাবি আমাদের কে যে আরো কুৎসিত কিছু দেখতে হয় নি--সেই আমাদের ভাগ্য!
যে পণ্য নারী, পুরুষ উভয়ে ব্যবহার করেন সেটার বিজ্ঞাপনে পুরুষের উপস্থিতি অমাবস্যার চাঁদের মতো কেন? যে বিজ্ঞাপনে নারী, পুরুষ কারোর চেহারা/দেহ প্রদর্শনের দরকার নেই সেখানেও কেন নারীদেহ প্রদর্শিত হয়? অফিসের ফ্রন্ট ডেস্ক/রিসেপশন/টেলিফোন অপারেটর পদগুলোতে নিয়োগে কেন নারীদের প্রাধান্য দেয়া হয়? মিছিলের সামনের সারিতে কেন নারীদের ব্যানার ধরতে দেয়া হয়? গায়ে হলুদটা ভাইয়েরই হোক আর বোনেরই হোক, উপহারের ডালাগুলোকে সাধারণত কেন পরিবারের মেয়েদের বইতে হয়। বাসায় অতিথি আসলে কেন পরিবারের মেয়েদের ওপরে খাবার পরিবেশনের ভার দেয়া হয়? ................ এমন কোটি কোটি প্রশ্ন দাঁড় করানো যাবে। উত্তরগুলো কি আমরা জানি না? আবার জিগায়!
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
@ষষ্ঠ পাণ্ডব'দা
অফিসের রিসিপশনে বা ফ্রন্ট ডেস্কে কিংবা কল সেন্টারে নারীরা শুধুমাত্র কর্মী না তারা "বিজনেস স্ট্রেটেজির" একটা অংশ, যা প্রায়ই বিরক্তিকর ঘটনাগুলোর কারণ হয়ে দঁাড়ায়। আমার দাদা একটা কথা প্রায়ই বললেন ব্যবসায়ি দের কাছে ধর্ম আর নৈতিকতা ভিত্তিহীন তারা ব্যাবসার স্বার্থে নিজেকে জারজওও প্রমাণ করতে পারে!
আপনি যদি ঢাকার সুপার শপ গুলিতে যান কিংবা বড় কোন শপিং মলে(যা মূলত পশ্চিমা পোশাক বা জিনিস পত্র বিক্রি করে) তাহলে দেখবেন তারা নারীকে সত্যিই পণ্য হিসেবে ট্রিট করে!!!
-বৃদ্ধ কিশোর
হ্যাঁ, ব্যবসায় কৌশলের অংশ হিসেবে নারী কর্মী ব্যবহারের আরও অনেক উদাহরণের কথা আমরা জানি। এর অনেকগুলোই অযথা। অর্থাৎ সেখানে জোর করে নারী কর্মী নিয়োগ দিয়ে আসলে কোন লাভ হয় না। তবু লোকের মানসিকতা বদলায় না। মন্তব্যের ঘরে এক লহমাদা' বলেছেন, "অনেক পথ হাঁটা বাকি"। আসলে বহু বহু আলোকবর্ষ পথ হাঁটা বাকি আছে।
অটঃ আপনার ইমেইল অ্যাড্ড্রেসে "anime" শব্দটা দেখতে পাচ্ছি। আপনি যদি anime-এর ভক্ত না হন তাহলে কোন কথা নাই। আর আপনি যদি anime-এর ভক্ত হন তাহলে দুটো কথা আছে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
অনুমান করেন :-?
-বৃদ্ধ কিশোর
একটা ডাইকোটামাস প্রশ্নের উত্তরে অনুমান করার কিছু নেই।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আইনে নাকি বলা আছে 'ক্রেতা সাবধান'! আইনে অমন কথা বলা থাকুক আর না থাকুক ক্রেতামাত্রই জানেন তাকে কেনার সময় সতর্ক থাকতে হবে। এখন ক্রেতা যদি অবুঝের মতো ঠকেন তাহলে তার দায় ক্রেতার ওপর অনেকটাই বর্তায়।
সিনেমাতে যে লোকটার কল্লা নামিয়ে দিতে দেখা গেলো তার কল্লাটা যে অক্ষত আছে সেটা সবাই জানেন। তারপরও পর্দার গল্পকে কেউ সত্যি ভাবলে দায়টা কার?
যে বানোয়াট গল্পটা অপ্রাপ্তবয়স্কদের টার্গেট করে বানানো সেখানে আজগুবী জিনিস দিয়ে দর্শক-শ্রোতাকে হীনমন্যতায় ভোগানো প্রতারণার শামিল। এখানে জনস্বার্থ হানির মামলা হওয়া উচিত।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
পান্ডব'দা, আমার মনে হয় যে আমরা অত্যন্ত সফল ভাবে আমাদের সমাজে একটা ক্রুর কুটিল ক্যাপিটালিস্টিক সমাজ তৈরী করে ফেলেছি। আমার ধারণা ছিল আমেরিকার চেয়ে ক্যাপিটালিস্টিক দেশ আর কিছু হতে পারে না--সেখানে যথাযথ দাম পেলে নিজের মা-কে পর্যন্ত হাটে তুলে দেবে। কিন্তু আমরা অসাধ্য সাধন করেছি--ওদেরকেও টপকে গেছি। আমরা আমাদের পণ্য বিক্রির জন্য এমন কিছু নেই যা করি না। ফল বিক্রির জন্যে সিরিঞ্জ দিয়ে আলগা রং ঢুকাই, ফর্মালিন দেই মাছে--আরো কত কী। যে লোকটা তার ফল বেচতে গিয়ে এই কর্মটি করছে সে, বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর মঙ্গলের কথা বাদ দিলাম, নিজের ছেলে এই ফল কোথাও খেয়ে অসুস্থ হয়ে যেতে পারে--সেইটাও ভাবছে না।
বিক্রি করার জন্য আমরা প্রত্যেকে আমাদের বিবেক সবার আগে বিক্রি করে দিয়ে বসে আছি।
বিজ্ঞাপনে সম্পূর্ণ সত্য বলাটা বিরল আচরণ। একদম শুদ্ধ বিজ্ঞাপনেও কিছু না কিছু প্রচ্ছন্ন মিথ্যে থাকে। মিথ্যে না হলেও সত্যটা একটু বাড়বাড়ি করে বলা থাকে। এটা মোটামুটি মেনে নেয়া যায়। কিন্তু যা একদম নেই সেটা আছে বলে যে বিজ্ঞাপন কিংবা যে ক্ষতিকর উপাদানটি নেই বলে প্রচার করা হলেও সেটি যদি আছে প্রমাণিত হয় তাহলে কঠোর কঠিন শাস্তি প্রয়োগ করা উচিত। কিন্তু আমাদের দেশে তেমন শাস্তির বিধান থাকলেও প্রয়োগ আশা করি না আর দশটি দুরাশার মতোই।
বিজ্ঞাপনে নারীদের যত্র তত্র অপব্যবহার নিয়ে কী বলবো? এটা যুগের চাহিদা টাইপ সর্বত্র গ্রহনযোগ্য হয়ে গেছে মনে হয়। নারীরাও এটা নিয়ে রা কাড়ে না, পুরুষদের তো কথাই নেই।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
@নীড় সন্ধানী,
একদম খঁাটি কথা বললেন।
-বৃদ্ধ কিশোর
মেয়েদের নিয়ে কি অদ্ভুত, অবাস্তব, অশালীন 'জোক্স' চলতে থাকে সামাজিক মাধ্যম-এর হরেক আড্ডা-গুলোয়! আমি বা আমার স্ত্রীর অসহ্য লাগতে থাকায় কখনো মুখ খোলায় দেখি আমরা বাকিদের থেকে আলাদা পড়ে গেলাম। মেয়েদের মধ্যেও অনেকে সেটাই স্বাভাবিক মনে করেন। অনেক পথ হাঁটা বাকি।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
আবহমান কাল থেকে প্রচলিত কৌতুক, মজার গল্পগুলো তো বটেই যাবতীয় রূপকথা, উপকথা, লোককথা'র অন্যতম বিষয় হচ্ছে নারীকে হেয় করা, অবজ্ঞা করা, অপমান করা, ছোট করা। ডার্টি/নন-ভেজ জোকগুলোর মধ্যে যৌনতার মোড়কে নারীকে প্রতিনিয়ত অপমান করা হয়। হাজার হাজার বছর ধরে যে নারীবিদ্বেষী রীতি-নীতি-আইন-বিধান-ভদ্রতা-সমাজ ইত্যাদির কাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে তাতে নারীরা যদি সেটাকে স্বাভাবিক মনে করেন তাহলে তাদেরকে দোষ দেয়া যায় না। আমাদের মানুষ হতে আরও অনেক পথ বাকি আছে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
পান্ডব দা, সেদিন রাধারমনের একটা গান শুনছিলাম। এক অন্তরায় রাধারমন বলছেন
চিন্তা করেন এইভাবে নারীবিদ্বেষ একেবারে গ্রামের লোকে মুখে মুখে বসে গেছে--এবং এইটা নিয়ে অন্য চিন্তার কোন স্থান নেই।
আমাদের আসলেই পেরুতে হবে অনেক অনেক চড়াই উৎরাই। সেইটা কষ্টের কথা না--কষ্টের কথাটা হল, আমরা এখনো পথেই নামিনি!
--আসলেই দাদা
ভারতীয় জি বাংলা চ্যানেলে "মীরাক্কেল" নামে একটা বাংলা কমেডি অনুষ্ঠান হচ্ছে গত ১০-১২ বছর ধরে। দু বাংলাতেই এটা দারুন জনপ্রিয় এবং এতে গত কয়েক সিজন ধরে বাংলাদেশ থেকেও পারফর্মাররা অংশগ্রহণ করছে। অনুষ্ঠানটা আমিও দেখি এবং ভালো লাগে। শুধু দু'টি বিষয় ছাড়া। নির্মাতারা এই অনুষ্ঠানটাকে পুতু-পুতু বাঙালি সেন্সিবিলিটিমুক্ত খুব ইশমার্ট", আধুনিক, প্রাগ্রসর, আর্বান, কস্মোপলিটান ইত্যাদি ইত্যাদি - হিসেবে প্রেজেন্ট করতে চান, অন্তত তাদের কথাবার্তা শুনে তাই মনে হয়। অনেক ক্ষেত্রে হয়তো তাইই, কিন্তু কালো গাত্রবর্ণ আর নারী - এই দুইটা প্রসঙ্গ আসলেই সব হিসেব উলটে যায়। তখন তাদের চেয়ে বড় নিয়ান্ডার্থাল খুঁজে পাওয়া অতি কঠিন কাজ। কালো গাত্রবর্ণকে চুড়ান্তভাবে হেয় করে যাচ্ছেতাই ভাষায় ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ-ঠাটা-তামাশা হয়নি, এমন পর্ব খুব কমই হয়েছে এই সিরিজে। এগুলি যদিও বেশির ভাগ সময় করা হয় ওদের নিজস্ব টীমের দুয়েকজন সদস্যকে আপাত-টার্গেট করে এবং এমনভাবে যেন বন্ধুরা-বন্ধুরা জোক করছে, আদর করেই করছে এবং যাকে নিয়ে বলছে সে আসলে রাগ করছে না। এক-আধবার হলে তাও হয়তো মেনে নেয়া যেত এই ঢংটুকু, কিন্তু বছরের পর বছর ধরে প্রায় প্রতি পর্বে (সহস্রাধিক) যখন ব্যতিক্রমহীণভাবে এই কৃষ্ণ-বিদ্বেষ অনবরত উগ্রে দেয়া হয়, তখন তা আর কিছুতেই ইনোসেন্ট ফ্রেন্ডলি-ব্যান্টার হিসেবে চালানো যায় না, বরং এক অন্তর্গত কুৎসিত গাত্রবর্ণবাদ (কালারিজম)-এর পাব্লিক বহিঃপ্রকাশ ও মিডিয়াগত প্রচারণা ঘটে তাতে। একটা অত্যন্ত পশ্চাতপদ, ঘৃণ্য, অমানবিক এবং মনুষ্যত্বের অবমূল্যায়নকারী অপ-মূল্যবোধের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রোমোশন ও স্ট্রেন্দেনিং হয়। কিন্তু দেখে মনে হয় না এ বিষয়ে এদের বিন্দুমাত্র উপলব্ধি আছে, কিম্বা থাকলেও তারা এর বিন্দুমাত্র দাম দেয়!
একই বিষয় "নারী" প্রসঙ্গেও প্রযোজ্য। নারী নিয়ে স্যালাশাস তো বটেই (শ্লীলতা-অশ্লীলতার তর্কে বা প্রসঙ্গেই যাব না এখানে), কিন্তু কত হাজার-হাজার বার তীব্রভাবে হেয়কারী, হেনস্থাকারী, তুচ্ছতাচ্ছিল্যমূলক, বৈষম্যমূলক, নারীর মনুষ্যত্বের জন্য অপমানজনক এবং অবমূল্যায়নকারী, লিঙ্গবৈষম্যমূলক ও লিঙ্গবিদ্বেষী, হাসিমুখে হাসির ছলে হাসির নামে ঘৃণার-বিষপূর্ণ মিছরির-ছুরিরূপী তথাকথিত রঙ্গতামাশার চর্চা করা হয়েছে - তার আসলেই কোনো ইয়ত্তা নেই। এই অনুষ্ঠান নিয়মিত না দেখলে বোঝা যাবে না মেয়েদের কত রকম ভাবে ও কত প্রকারে হেয় করা যায়, হেনস্থা করা যায়, খাটো করা যায়, অপমান করা যায়, অব্জেক্টিফাই করা যায়, বিমানবিকীকরণ করা যায়, স্থুল বা সুক্ষ্ণভাবে করা যায়, উঠতে-বসতে করা যায়, নির্দোষ হাসি-তামাশার নামে করা যায়। আর হাসি-তামাশার মোড়কে করা হয় বলে সবসময় এইদিকটা সবার চোখেও পড়ে না, বা পড়লেও অডিয়েন্সের অনেকের ভেতর আগে থেকেই ঐ একই মনোভাবের প্রশ্রয় বা অধিষ্ঠান থাকে বলে সেটা হাল্কা হয়ে যায় বা পিছলে বেরিয়ে যায় মনে হয়। আমি এই অনুষ্ঠানটা দেখে শিখছি মেয়েদের ভাষার কারিকুরিতে ও তার অলিতে-গলিতে-কানাগলিতে কতবার ও কতভাবে আসল ছুরির চেয়েও খতরনাক মিছরির-ছুরি মারা যায়, কতরকম বার্ব বা হুল ফোটানো যায়। নিজে পুরুষ হয়েও এতকিছু জানতাম না আগে; মীরাক্কেল দেখে এখন শিখছি এ্যান্ড আই এ্যাম শক্ড। যাজ্ঞে, একটা মজার ব্যাপার হলো, ছেলেদের নিয়ে এরা কিন্তু এই জাতীয় রঙ্গতামাশা একেবারেই করে না। নৈব নৈব চ! সম্ভবত অভ্যন্তরীণ নিষেধাজ্ঞা আছে।
****************************************
মন মাঝি, সিরিয়াসলি বলছি, মীরাক্কেলকে উদাহরণ ধরে টেলিভিশনের এই জাতীয় রিয়ালিটি শো'গুলোতে যে ব্যাশিং চলে সেটা নিয়ে একটা পোস্ট দেন। আলোচনাটা সেখানে করি।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
ষষ্ঠ পাণ্ডব, এই কাজ আমার পক্ষে আর সম্ভব না। স্যরি! ফ্র্যংকলি বলি, বেশ অনেক বছর ধরেই আমি বাংলা টিভি দেখা একদম কমিয়ে দিয়েছি - এবং গত ৫-৭ বছর ধরে একেবারেই দেখি না। সংক্ষেপে বললে, এইসব মস্তিষ্কশুন্যকারী "বুলশিট" আমার ব্রেইন আর নিতে পারে না। একদমই না! জীবনে অনেক বুলশিট হজম করেছি, করতে হয়েছে, আর পারছি না। না নিউজ, না ঠকশো, না নাটক, না অন্যকিছু। স্মার্ট প্যাকেজিং-এর কারনে এই মীরাক্কেলটাই দুই বাংলা মিলিয়ে একমাত্র এবং একটুখানি ব্যতিক্রম ছিল, কিন্তু সেটাও ক্রমাগত অধঃপতনের কারনে বাদ দিয়েছি।
আপনার অনুরোধটা রাখতে পারলাম না বলে দু;খিত।
****************************************
দুঃখিত হবার কিছু নেই। একটা একটা করে বাদ পড়তে পড়তে আমার টেলিভিশন দেখা 'মীরাক্কেল'-এ গিয়ে ঠেকেছিল (সংবাদ ছাড়া)। সেটাও শেষের কয়েকটা সিজন দেখনি। আসলে দেখতে আর আগ্রহ বোধ করিনি। আপনার দশা যদি একই প্রকার হয় তাহলে আর আলোচনা করবেন কী করে!
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
পশ্চিমা দেশের আরেকটা পর্যবেক্ষণ সহভাগ করি:
দোকানের পোস্টারে, ম্যাগাজিনের পাতায়, বাসায় আসা ক্যাটালগ -এসবের মাঝে আপনি যথেষ্ট সংখ্যক মঙ্গোলয়েড চেহারার নারী মডেল দেখতে পাবেন। বিশেষ করে পোষাকের বিজ্ঞাপণে এই সংখ্যা অনেক। সে অনুপাতে মঙ্গোলয়েড ছেলেদের উপস্থিতি প্রায় নেই বললেই চলে। অথচ, সংখ্যা হিসেবে মঙ্গোলয়েড ছেলের সংখ্যা কম না (সম্ভবত বেশি, পড়তে আসা ছাত্রদের হিসাবে ধরলে।)
কোন পোষাকের বিজ্ঞাপনে মঙ্গোলয়েড ছেলে থাকলে "হয়ত" ককেশিয়ানদের মাঝে ঐ পোষাক কেনার আগ্রহে ভাটা পড়বে, কিংবা কোন ককেশিয়ান মেয়ে তার বাবা, ভাই, জামাই বা বয়ফ্রেন্ডের জন্য ঐ শার্ট কিনতে আগ্রহ পাবে না। অন্যদিকে, মেয়েদের পোষাকের মডেলিং মঙ্গোলয়েড মেয়েরা করছে অহরহ।
আগ্রহী হলে এই আলোচনাটা দেখতে পারেন https://www.youtube.com/watch?v=-WZVerBzPXQ
ভারতের অনেক অনুষ্ঠানের কথা আলোচনায় এসেছে। আশ্চর্যের বিষয় হল, ভারতে টিভির অনুষ্ঠানে অনেক সময়ই 'মানুষ'কে আর 'মানুষ' মনে করা হয় না।
শেষে একটা ভিডিওর কথা মনে পড়ল: গায়ের রং 'উজ্জ্বল' নয়, এমন এক মেয়ে এক চাকরির ইন্টারভিউ দিতে গেল। নিয়োগকর্তা চাকরিপ্রার্থী ময়ের দিকে ৫ সেকেন্ড তাকালো, তারপর তার ফাইল নিয়ে ভালো করে দেখলো, এবং জানালো মেয়েটি যোগ্য নয়। মেয়েটি মন খারাপ করে বাসায় যাবার পথে ফেয়ার অ্যান্ড লাভলীর বিজ্ঞাপণ দেখতে পেল। ফেয়ার অ্যান্ড লাভলী মেখে সে কয়েক সপ্তাহেই 'উজ্জ্বল' গায়ের রংয়ের অধীকারিনী হল, এবং আবাারও ঐ অফিসে গেল। ইন্টারভিউয়ের চেয়ারে বসার আগে তার হাঁটা স্লো-মোশন হল, চুল গায়েবী উৎস থেকে আসা বাতাসে উড়ল, ইত্যাদি, ইত্যাদি। নিয়োগকর্তা এবারও তার দিকে কয়েক সেকেন্ডে তাকিয়ে, ফাইলের দিকে তাকালো এবং জানালো মেয়েটি যোগ্য নয়। যেটা আসলেই বাস্তবসম্মত, এই দুই ইন্টারভিউয়ের মাঝে তার কোন যোগ্যতার উন্নতি আসলেই হয় নি।
শুভেচ্ছা
মঙ্গোলয়েড জাতিগোষ্ঠীর মানুষের দেশে দেখবেন বিজ্ঞাপনের নারীদেরকে ককেশিয়ান চেহারার বানানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করা হয়।
ককেশীয় দেশগুলোর কোন কোনটাতে বিজ্ঞাপন, চলচ্চিত্র, সিরিয়াল এমনকি বইয়েও এককালে ককেশীয় চরিত্র ছাড়া অন্যদের কেউ প্রায় থাকতোই না। পরে সেখানে একটু একটু করে আফ্রিকানরা ঢুকতে থাকে - প্রধানত দুর্বল চরিত্র হিসেবে। গত তিন দশকে সেখানে এশিয়ানরা (আসলে মঙ্গোলয়েডরা) ঢুকতে থাকে। গত দশ বছরে সেখানে এক/আধজন ভারতীয়ও ঢুকতে থাকে। আরবরা সেখানে কালেভদ্রে ঢুকতে পারে, তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে দুরাচার চরিত্র হিসেবে। বাজার অর্থনীতির দুনিয়ায় অডিয়েন্স ঠিক করে প্রকাশিতব্য/প্রচারিতব্য বস্তুর কনটেন্ট কী হবে, চরিত্রগুলোতে কারা থাকবে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
টিভি দেখলেই মনে হয় দেশে দুইটা পন্য বিক্রি হয়। হরলিক্স আর ফেয়ার এন্ড লাভলী। শিশুদের অনুপযোগী খাবারগুলোকে যেভাবে উপকারী, সুস্বাদু বলে দাবী করা হয়। বিজ্ঞাপন ডাক্তার বলে, “আমার বাচ্চাকে খাওয়াই”।
---------------------------------------------------
মিথ্যা ধুয়ে যাক মুখে, গান হোক বৃষ্টি হোক খুব।
নতুন মন্তব্য করুন