পর্ব : ০২
ছাত্র সংঘ নাম পরিবর্তন করেও শিবিরের খুব একটা লাভ হয় না। তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৭৮ সাল থেকে অবস্থান নেওয়ার চেষ্টা শুরু করে। কিন্তু বারবার তারা প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনগুলোর বাঁধার মুখে পড়ে। সবাই তাদেরকে একাত্তরের ঘাতক আলবদরদের পূর্বসূরি হিসেবেই দেখতে শুরু করে। শিবির তাদের সংবিধানের দুই ধারা মোতাবেক ’আল্লাহ প্রদত্ত ও রাসূল ( সঃ ) প্রদর্শিত বিধান অনুযায়ী মানুষের সার্বিক জীবনের পুনর্বিন্যাশ সাধন করে আল্লাহর সন্তোষ অর্জনের’ ডাক দিয়ে আশানুরূপ সাড়া পায় না। ঢাকার মানুষের কাছে, ছাত্রসমাজের কাছে তারা মৌলবাদ আর রাজাকারের উত্তরসূরির মর্যাদা পায়। তাদের ইসলামের ডাককে সবাই ভাওতাবাজি মনে করে। তারপর রাজধানী ঢাকায় নানা কার্যক্রমে ব্যর্থ হয়ে জামাতের নীতিনির্ধারণী মহল শিবিরকে নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করে। জামাতের কার্যকরী পরিষদের সভায় ১৯৭৮ সালে এই সিদ্ধান্ত হয়, ছাত্র সংঘ নাম পাল্টিয়েও যেহেতু শিবিরের কোনো লাভ হয়নি, তাই শিবিরকে নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে। তখন জামাতের নেতৃত্ব শিবিরকে ঢাকা কেন্দ্রিক না রেখে সারাদেশব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করে। তারা শিবিরকে শহর কেন্দ্রিক না রেখে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এবং মফস্বল আর গ্রাম কেন্দ্রিক রাজনীতিতে বিস্তৃত করার পরিকল্পনা করে। এই বিষয়টি পরবর্তীতে শিবিরের উত্থানে সবচেয়ে বড় টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে কাজ করে।
শিবির : ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে
ইসলামি ছাত্রশিবির, আসুন শুরুতেই আমরা জানি, এরা পশু, এরা বর্বর, এরা পিশাচ, এরা একাত্তরের রাজাকার আলবদরদের উত্তরসূরি।
ইসলামি ছাত্রশিবিরকে চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়ার মূল পরিকল্পনা ছিল মীর কাশেম আলীর। সত্তরের দশকের শেষ দিকে রাজাকারদের যখন স্বৈরাচার সরকার এদেশে প্রতিষ্টার সুযোগ করে দেয়, তখন পালিয়ে থাকা, আত্মগোপনে থাকা অনেকেই প্রকাশ্যে বের হয়ে আসে। জেল থেকে একে একে ছাড়া পেতে শুরু করে দালাল আইনে আটক থাকা আলবদর রাজাকাররা। চট্টগ্রামে শিবিরের বিস্তারে মীর কাশেম আলী তখন জেল থেকে মুক্তি পাওয়া অনেক আলবদর কর্মীকে ছাত্রশিবিরের স্থানীয় রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার আহবান জানায়। যেহেতু মীর কাশেম আলী নিজে পাকিস্তান আমলে জামাতের ছাত্র সংগঠন ছাত্র সংঘের চট্টগ্রামের সভাপতি ছিলো, তাই সত্তরের দশকের শেষ দিকে শিবির যখন চট্টগ্রামে তাদের রাজনীতির সূচনা করে তখন কাশেম আলী চট্টগ্রামের শিবিরের রাজনীতিতে তার বাহিনীর লোকজনকেই প্রাধান্য দেয়। যাদের একাত্তরে এদেশের মানুষের রক্তে হাত রাঙ্গানো ছিলো, কোনো কোনো ক্ষেত্রে যে বাহিনী বর্বরতায় হার মানিয়েছিলো পাকিস্তান সেনাবাহিনীকেও সেই বর্বর পিশাচ বাহিনীর অনেকেই নিজেদের শরীর বাঁচাতে এবং একটি নিশ্চিত রাজনৈতিক আশ্রয়ের আশ্বাসে ছাত্রশিবিরে যোগ দেয়।
চট্টগ্রামে নিজেদের কতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে তারা শুরুতেই মানুষের মনে একটা আতঙ্ক ঢুকিয়ে দিতে একাত্তরের মতো বর্বরতার আর্শয় নেয়। মূলত বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্টানে নিজেদের অস্তিতের ঘোষণা দিতে এবং শিক্ষা প্রতিষ্টানগুলোতে নিজেদের অবস্থান তৈরি করতেই তারা চট্টগ্রাম থেকেই শুরু করে তাদের হত্যার রাজনীতি। এই হত্যার রাজনীতি শুরু করা হয় শিবির নামটি শুনে মানুষ যাতে ভয় পায়, মানুষ যাতে শিবিরকে সমীহ করে চলে, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্টানে ছাত্র সংগঠনগুলো যাতে শিবিরকে রাজনীতির মাঠে প্রবেশের সুযোগ দেয়, সমীহ করে, ইসলামি ছাত্র শিবির নাম শুনে যাতে ভয়ে ছাত্ররা শিবিরে যোগ দেয়, এসব কিছু কারণেই।
আধিপত্য বিস্তারে চট্টগ্রামে শিবির শুরু করে হত্যার রাজনীতি :
বাংলাদেশে ইসলামি ছাত্রশিবিরের হাতে প্রথম খুন হন চট্টগ্রাম সিটি কলেজের ছাত্র সংসদের নির্বাচিত এজিএস ও ছাত্রলীগ নেতা তবারক হোসেন। ক্যাম্পাসে প্রকাশ্য দিবালোকে শিবির কর্মীরা রামদা ও কিরিচ দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে তবারক হোসেনকে। মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে তবারক যখন পানি পানি বলে চিৎকার করছিলেন তখন এক শিবির কর্মী তার মুখে প্রস্রাব করে দেয়। একাত্তরের ওদের পূর্বপুরুষদেরকেও ছাত্রশিবিরের পান্ডারা সেদিন বর্বরতায় হার মানিয়েছিলো। এই একটি খুনের মাধ্যমেই শিবির হিংস্রতার পরিচয় দিয়ে মানুষের মনে ভয় ঢুকিয়ে দেয়। যারা এই খুনের প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন, পরবর্তী সময়ে অনেক পত্রপত্রিকায় তারা বিভিন্ন সময়ে এই হত্যাকান্ড নিয়ে কথা বলেছেন, তারা বলেছেন শিবিরের সেদিনের বর্বরতার কথা, পৈশাচিকতার কথা। প্রত্যক্ষদর্শীদের মধ্যে একজন হলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি নাজিমউদ্দিন। এই বিষয়ে একটি দৈনিকের সাথে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন,’ শিবিরের সন্ত্রাসীরা সেদিন তবারক হোসেনকে কিরিচ দিয়ে উপুর্যপুরি কুপাতে কুপাতে হত্যা করে। কিরিচের এলোপাতাড়ি কুপে মুমূর্ষ অবস্থায় তবারক যখন পানি পানি বলে চিৎকার করছিলেন তখন এক শিবির কর্মী তার মুখে প্রসাব করে দেয়। পরবর্তীতে সাক্ষীর অভাবে এই হত্যাকান্ডে জড়িত সবাই বেকসুর খালাস পেয়ে যায়। কারণ, এই বর্বর পশুদের বিরুদ্ধে ভয়ে তখন কেউই রাজি হয়নি।
এই ঘটনার পর ছাত্রশিবির সাধারণ ছাত্র ও অন্যান্য ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীদের মনে ভয় ঢুকিয়ে চট্টগ্রামে নিজেদের একটা অবস্থান তৈরি করে নিতে সক্ষম হয়। তারপর তারা তাদের রাজনীতি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বিস্তৃত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করে । সেই লক্ষ্যে তারা নিজেদের মতাদর্শে বিশ্বাসী ছাত্রদের দিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামি ছাত্রশিবিরের কার্যক্রম পুরোদমে শুরু করে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম নগরীতে কাজ করতে থাকে ছাত্রশিবিরের ভিন্ন ভিন্ন ইউনিট। নগরীর কলেজগুলোর দখল নেওয়ার জন্য তারা দফায় দফায় সংঘর্ষে লিপ্ত হয় ছাত্রলীগ আর ছাত্র ইউনিয়নের সাথে। তখন তারা চট্টগ্রাম নগরীর কলেজগুলোতে শুরু করে রগ কাটার রাজনীতি। তাদের বিরুদ্ধে যারাই কথা বলতো তাদের হাত পায়ের রগ কেটে দিতে শুরু করলো শিবিরের পশুরা।
ছাত্রশিবির চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় টার্গেট করে তৎকালীন সময়ে একটি নেটওয়ার্ক গড়ে তুলে। তারা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্দিকে নিজেদের আস্তানা গড়ে তুলে। শিবিরের অনেক কর্মী ও নেতারা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় নিজেদের কতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশের এলাকায় বিয়ে করে সংসার করতেও শুরু করে। তারা স্থানীয় অধিবাসীদের নানা ধরণের আর্থিক সুযোগ সুবিধা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্দিকের গ্রামগুলোতে মেস ও ছাত্রাবাস গড়ে তুলে। তারপর সেখানে শিবির নিজেদেরকে দরিদ্র কর্মীদেরকে থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করে দেয়। প্রথমদিকে তারা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের বাধার সম্মুখীন হলেও এরশাদ সরকারের আমলে বিশ্ববিদ্যালয়ে পুরোপুরি নিজেদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে ফেলে। আশির দশকে তারা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সিরাজুস-সালেহীন বাহিনী গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয়ে তান্ডবলীলা চালায়। এই বাহিনীর নাম শুনলেই তখন দেশের মানুষের চোখে এসে ভাসতো এক হিংস্র বর্বর কাহিনীর কথা। যারা কোনো কারণ ছাড়াই তখন শুধুমাত্র মানুষের মনে আতঙ্ক ঢুকানোর জন্যই যার তার হাত পায়ের রগ কাটতে শুরু করে। এই বাহিনীর তান্ডবের কাছে অসহায় হয়ে পড়ে সাধারন ছাত্রছাত্রীরাও। তৎকালীন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র ব্যক্তিগত আলাপে আমাকে জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি রগকাটার রাজনীতি শুরু না করতো তাহলে শিবির কখনোই নিজেদের অবস্থান তৈরি করতে পারতো না। শিবির বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের মনে তাদের হিংস্র কার্যকলাপের মাধ্যমে ভয় ঢুকিয়ে দিতে সক্ষম হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ক্যাম্পাসে তারা খুব সহজেই নিজেদের অবস্থান নিয়ে ফেলে। তাছাড়া তখন যারা ছাত্রলীগ বা বাম রাজনীতি করতেন, তাদের অনেকেই চট্টগ্রাম নগরীতে থাকতেন। অন্যদিকে শিবির বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোকে নিজেদের জনবল ও শক্তি বাড়িয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশের এলাকায় বাড়ি ঘর মেস ছাত্রাবাস করে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় এলাকাটাকে নিজেদের জন্য অভয়ারণ্য হিসেবে গড়ে তুলে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্রে রেখে বৃত্তাকারে তারা একটি প্রতিরক্ষা দুর্গ গঠন করে। যার ফলশ্রুতিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামি ছাত্রশিবিরের এত মজবুত অবস্থান তৈরি হয়ে যায়।
চট্টগাম কলেজে নিজেদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে ১৯৮৪ সালের ২৮ মে ইসলামি ছাত্রশিবির কর্মীরা চট্টগ্রাম কলেজের মেধাবী ছাত্র শাহাদাত হোসেনকে ঘুমের মধ্যে জবাই হত্যা করে। শাহাদাত হোসেন সে রাতে তার উচ্চ মাধ্যমিকের ব্যবহারিক পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে ঘুমোতে যান। ঘুমের মধ্যেই হারুন ও ইউসুফ গলায় ছুরি চালিয়ে জবাই করে হত্যা করে শাহাদাতকে। শাহাদাতের অপরাধ ছিলো সে হারুন ও ইফসুফের কথায় ছাত্রশিবিরে যোগ দেয়নি ! পরবর্তীতে শাহাদাত হত্যাকান্ডের জন্য এই দুজনের সাজা হয়। কিন্তু দু’বছর পরই উচ্চ আদালতের রায়ে দুজনে শাহাদাত হত্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত অবস্থায় জামিনে জেল থেকে বের হয়ে আসে। পরবর্তীতে এই মামলা থেকে হারুণ ও ইউসুফ বেকসুর খালাস পেয়ে যায় ! শাহাদাত হত্যাকান্ডের পর আবার আঁতকে উঠে ছাত্রসমাজ, চট্টগ্রামের কলেজগুলোতে শুরু হয় শিবির বিরোধী আন্দোলন। কিন্তু ততদিনে অনেক দেরি হয়ে গেছে। বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রশিবির নামের সংগঠন, যারা ইসলামের পতাকা উড়িয়ে সৎ লোকের শাষণের ডাক দেয়, তারাই হত্যা আর রগকাটার রাজনীতি শুরু করে ততদিনে চট্টগ্রামে নিজেদের শক্ত অবস্থান তৈরি করে ফেলেছে। তখন তাদের বিরুদ্ধে আন্দোলনে যারা গিয়েছে তাদেরকে শিবির নামের পশুরা কঠোরভাবে দমন করার চেষ্ঠা করেছে। তাদের বিরুদ্ধে যারা কথা বলেছে, যারাই শিবির হঠাও আন্দোলন করেছে তাদের অনেকের হাত পায়ের রগ কেটে দিয়েছে শিবিরের সন্ত্রাসীরা।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবির প্রথম হত্যা করে ছাত্রমৈত্রী নেতা ফারুককে। ১৯৯০ সালের ২২ ডিসেম্বর ক্যাম্পাসে শান্তিপূর্ণ এক মিছিলে গুলি চালিয়ে তারা ফারুককে হত্যা করে। ১৯৯৩ সালে শিবির চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এনামুল হকের ছেলে ছাত্রদল নেতা মোহাম্মদ মুছাকে শিবির কর্মীরা নৃশংস ভাবে হত্যা করে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তাদের আধিপত্য টিকিয়ে রাখার জন্য। এরপর তারা এই বিদ্যাপীঠে নিজেদের একটা শক্ত অবস্থান তৈরি করে নেয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেকগুলো হল দখলে নেওয়ার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা গ্রামগুলোতে মেস ও ছাত্রাবাসের সংখ্যা বাড়াতে থাকে। মূলত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের মিনি ক্যান্টনমেন্ট হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশের গ্রামগুলো।
অন্যদিকে সন্ত্রাস ও হত্যার রাজনীতির মাধ্যমে চট্টগ্রাম কলেজ ও সরকারি মহসিন কলেজ পুরোপুরি নিজেদের দখলে নিয়ে ইসলামি ছাত্রশিবির। ১৯৯৭ সালে চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট দখল করার জন্য ইসলামি ছাত্র শিবিরের ক্যাডাররা ছাত্র সংসদের ভিপি মোহাম্মদ জমির ও ছাত্রদলের সাধারন সম্পাদক ফরিদউদ্দিনকে গুলি করার পর তাদের হাত পায়ের রগ কেটে হত্যা করে। একই বছরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশেই মোজাম্মেল কচেজে হামলা চালিয়ে শিবির ক্যাডাররা হত্যা করে বকুল নামের এক শিবির কর্মীকে। ১৯৯৮ সালের ৬ মে ছাত্রলীগ নিয়ন্ত্রিত আমানত হলে হামলা চালায় শিবির। এসময় তাদেও হামলায় ভর্তি হন বরিশাল থেকে ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা ছাত্র আইয়ুব আলী। ২২ আগস্ট ১৯৯৮ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইউনিয়ন কর্মী সঞ্জয় তলাপাত্রকে হত্যা করে শিবির ক্যাডাররা। নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করতে গিয়ে শিবির দেশের সবচেয়ে আলোচিত ও ভয়ংকর হত্যাকান্ড ঘাঁয় চট্টগ্রামের বহদ্দারহাটে। ২০০০ সালে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন অবস্থায় শিবির চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট মোড়ে একটি মাইক্রোবাসে থাকা ছাত্রলীগের ৮ নেতা কর্মীকে ব্রাশফায়ারে হত্যা করে। এই হত্যাকান্ড দেখে দেশের মানুষ আবার তাদের বর্বরোচিত নারকীয়তার সাথে নতুন করে পরিচিত হয়। এই হত্যাকান্ডের পেছনের কারণ অনুসন্ধানে গিয়ে জানা যায়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন অবস্থায় শিবিরের অবস্থান যখন হুমকির মুখে পড়ে গিয়েছিলো তখনই তারা ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতৃত্বকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করে। এরই ধারাবাহিকতায় একেবারে পরিকল্পিত ভাবে শিবির ক্যাডাররা গুলি করে হত্যা করে ছাত্রলীগের ৮ নেতাকর্মীকে। এরপর ২০০১ সালে ২৯ ডিসেম্বর ফতেয়াবাদের ছড়ারকুল এলাকায় শিবির ক্যাডাররা ব্রাশফায়ারে হত্যা করে ছাত্রলীগ নেতা আলী মর্তুজাকে। সর্বশেষ শিবির ক্যাডাররা এ বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি নগরীর ষোলশহর রেলস্টেশনে কুপিয়ে হত্যা করে রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র এ এম মহিউদ্দিন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আলাওল হলের আবাসিক ছাত্র ছিলেন। মহিউদ্দিন খুন হওয়ার পর শিবির মহিউদ্দিনকে নিজেদের কর্মী বলে দাবি করে ! এছাড়া শিবির ক্যাডাররা গোপাল কৃষ্ণ মূহুরীকেও হত্যা করে। দুর্গম এলাকা ফটিকছড়িতে নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করতে গিয়ে তারা পর্যায়ক্রমে ছাত্রলীগের বেশ কজন নেতাকর্মীকে হত্যা করে। তাদের এই হত্যা ও রগকাটা রাজনীতির, সন্ত্রাসী ও জঙ্গিবাদী কার্যকলাপের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের আভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা কতৃপর্ক্ষ ইসলামি ছাত্রশিবিরকে সন্ত্রাসী সংগঠস হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি অধিভূক্ত ন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম ফর স্টাডি অব টেরোরিজম এন্ড রেসপন্স টু টেরোরিজমের তৈরি ফাইলে ছাত্রশিবিরের ব্যাপারে বলা হয়, ভয়ংকর জঙ্গি সংগঠন। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে জঙ্গি তৎপরতা চালানো ছাড়াও শিবির আন্তজার্তিক পর্যায়ের জঙ্গি সংগঠনগুলোর সাথে নিজেদের একটা নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে।
বর্তমানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও নগরীর ৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিবির নিজেদের দখলে রেখেছে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্টানের ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে শিবির নিয়মিত নানা অজুহাতে চাঁদা আদায় করে। এছাড়া তারা চট্টগ্রামে অস্ত্রের ব্যবসাও করে। অস্ত্রের ব্যবসার জন্য তাদের রয়েছে দেশব্যাপী এক বিশাল নেটওয়ার্ক। চট্টগ্রামের দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় রয়েছে তাদের পরিচালিত মাদ্রাসা। যেগুলোতে তারা শিবির কর্মীদেরকে নানা ধরণের অস্ত্র তৈরির প্রশিক্ষণ দেয়া ছাড়াও জঙ্গিবাদে উদ্ভূদ্ধ করে থাকে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বা নগরীর অন্যান্য কলেজে যখন শিবিরের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে কোনো সংঘর্ষে জড়াতে হয় অথবা তারা যখন প্রতিপক্ষের উপরে হামলা করতে যায় তখন এসব মাদ্রাসার ট্রেনিংপ্রাপ্ত ক্যাডাররাই মূলত এসব কাজ করে থাকে।
বর্তমানে চট্টগ্রামে শিবির পরিচালিত অনেক ধরণের শিক্ষা প্রতিষ্টান আছে। এই শিক্ষা প্রতিষ্টানগুলোর মধ্যে যেমন কিন্ডারগার্টেন স্কুল আছে, তেমনি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসাও আছে। আরো আছে শিবির পরিচালিত নানা ধরণের কোচিং সেন্টার। নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য তারা কিন্ডারগার্টেনের কোমলমতি শিশুদের হাতে তুলে দেয় রঙ বেরঙের স্টিকার ও কিশোরকন্ঠ নামের একটা ম্যাগাজিন। এই কিশোরকন্ঠ নামের ম্যাগাজিন দিয়েই তারা প্রাথমিক ভাবে বশীভুত করে শিশু কিশোরদের ।
এছাড়া ফুলকুঁড়ি আসর তো আছেই। ফুলকুঁড়ি আসর নামের শিবিরের এই সংগঠনটি গড়ে উঠে ১৯৭৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর এরপর ছাত্র শিবিরের কার্যক্রমের সাথে এই সংগঠনটির কার্যক্রমও দেশব্যাপী বিস্তৃত করে শিবির। ফুলকুঁড়ির নানা ধরণের সাংস্কৃতিক কার্যকলাপ ( ইসলামিক ) শিশু কিশোরদেরকে জড়িয়ে, পাঠাগার থেকে শিশু কিশোরদেরকে ইসলামিক বই পড়তে দিয়ে তারা পড়তে দিয়ে কোমলমতি শিশু কিশোরদেরকে তারা শিবির নামের ঘৃণ্য সংগঠনে টেনে আনছে। গ্রাম থেকে যে ছেলেরা চট্টগ্রাম নগরীর কলেজ অথবা যারা চট্টগ্রামের বাইরে থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসে তাদেরকে হলে বা মেসে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়ে, নানা ধরণের আর্থিক সাহায্য সহযেগিতা করে, লেখাপড়া শেষে জামাত পরিচালিত প্রতিষ্টানে চাকরির নিশ্চয়তার কথা বলে তারা সহজ সরল গ্রামের ছেলেদেরকে খুব সহজেই শিবিরের রাজনীতিতে ঢুকিয়ে ফেলে।
সূত্র :
দৈনিক সংবাদ
দৈনিক জনকন্ঠ
দৈনিক সমকাল
সাপ্তাহিক ২০০০
সাপ্তাহিক
মন্তব্য
আশির দশকে শিবিরের তান্ডবের অনেক ঘটনাই মনে পড়ল আপনার লেখা পড়ে ।
চট্টগ্রামে শিবির এক ভয়াবহ আতংকের নাম, সেই আতংক মনে হয় এখনো আছে। আপনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা লিখেননি, কিন্তু ওখানেও ৮০ এর দশকে শুরু হয়েছিল শিবিরের বর্বরতা।
আশির দশকের শেষেই ঢাকা ছাড়া দেশের সবগুলো জায়গাতে শিবির একটা জায়গা দখল করে নেয়। জিয়াউর রহমান শুরুতে ছিলেন পৃষ্ঠপোষকতা, পরে এরশাদ করেছে। স্বাধীনতার দশ বছরের মধ্যে বরাহদের পুনঃপ্রতিষ্ঠার কাজ যেসব নেতারা করেছেন, তাদেরকেও বৃহৎ শুয়োরের মতই মনে হয়েছে আমার কাছে।
আপনি একটা পর্ব রাখুন যেখানে শিবিরের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের ঘটনাগুলোও লিপিবদ্ধ থাকবে। স্বাধীনতার মাত্র দশ বছরের মধ্যেই আমাদের এত বড় পরাজয় কেমন গ্লানিবোধেরই জন্ম দেয়।
সিরিজ চলুক, প্রতিটা পর্ব পড়ছি...
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে আলাদাভাবে লিখবো। পরের পর্বে থাকবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে উত্থান, আধিপত্য বিস্তার ও ত্রাসের রাজনীতি কায়েম এগুলো নিয়ে।
....................................................................
বৃষ্টির মধ্যে রোদ হয়ে তুই
পাতার গায়ে নাচ
কষ্টের রঙে সুখ হয়ে তুই
আমার মাঝে বাঁচ...
__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________
এটার তারিখ দেয়া দরকার।
এই হত্যাকান্ডের প্রত্যক্ষদর্শী আমার ছোটখালা, তখন চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স করছিলেন। গুলী করার পর ফারুকের মাথা ইট দিয়ে থেতলে দেয়া হয়েছিল মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য। ফারুক হত্যাকান্ডের অন্যতম খুনী বর্তমান জামাত সাংসদ হামিদ হোসেন আজাদ।
চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের প্রথম একশন সম্ভবতঃ জাতীয় ছাত্রসমাজের তৎকালীন সভাপতির হাত কেটে নেয়া।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________
জাতীয় ছাত্রসমাজ নেতা হামিদের কাটা হাত নিয়ে শিবিরের মিছিলের কথা লেখায় খুঁজছিলাম আপনার।
শিবিরের বর্বরতার বর্ণনা দিতে ও শুনতে গেলে শরীর গুলিয়ে আসে। অথচ এদেরকেই যখন সাধারণ প্রতিবাদী চাত্ররা প্রতিরোধ করে, তখন কিছু সুশীল এগিয়ে আসেন হারেরেরে বোল তুলে। শিবিরের হিংস্রতার প্রতিরোধে এগিয়ে আসা মানুষগুলোও তখন হয়ে যান তাদের কাছে ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী।
আরে, শিবির যারা করে তারা হলো পরিষ্কার শুয়োরের বাচ্চা। পাকিস্থানী আর এদেশীয় জামাতি গাদ্দারদের নোংরা সঙ্গমের ফসল। এদের সঙ্গে ভালো করে কথা বলতে যাওয়াটাই তো মস্ত বড় পাপ। আর এদেরকে বাঁচাতে চাওয়া হলো অতিশয় নোংরা দালালী। কোনো মানুষের বাচ্চার পক্ষে এই দালালী করা সম্ভব না।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
তথ্যসূত্রগুলো আরেকটু অন্যভাবে দেয়া যায় কি? তথ্যটির পাশেই [১], [২], [৩] করে কি দেয়া যায় না? পত্রিকার নাম উল্লেখ করলে কোন তারিখের ইস্যু, সেটাও বলা প্রয়োজন।
আপনার এই সিরিজটির পেছনে শ্রমের জন্যে ধন্যবাদ জানবেন।
সিরিজটা করতে গিয়ে তথ্য সহায়তা নিতে হচ্ছে একেক পত্রিকার একেক ইস্যূ থেকে। দেখা যাবে, যদি হিসেব করা হয় তাহলে এই পর্বের জন্য মোটামুটি একশোর বেশি ইস্যূ থেকে তথ্য নিয়ে আসতে হয়েছে। পরবর্তী পর্বে পত্রিকার নাম ও তারিখ দেওয়ার চেষ্টা করব।
..................................................................
বৃষ্টির মধ্যে রোদ হয়ে তুই
পাতার গায়ে নাচ
কষ্টের রঙে সুখ হয়ে তুই
আমার মাঝে বাঁচ...
__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________
এখানে একটা হত্যাকাণ্ডের কথা বাদ গেছে যেটা চবি ক্যাম্পাসে বেশ আলোড়ন তুলেছিল। সালটা ছিল খুব সম্ভবত ১৯৯৬। সে সময় শিবিরের একটা অবরোধ চলছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা শহরগামী বাসে শিবির ক্যাডাররা গুলি চালালে একজন চবি অধ্যাপকের পুত্র (মুশফিক ভাই, পুরো নাম বোধহয় মুশফিকুন্নবী) নিহত হন। বিচার দূরের কথা, ভালমত কোন তদন্তই হয়নি (কেন হয়নি সেটা নিয়েও অনেক জনশ্রুতি আছে, এখানে আর না বললাম)।
আর ফুলকুঁড়ি নিয়ে অনেক অম্ল-মধুর অভিজ্ঞতা আছে। ক্লাস ওয়ানে থাকতেই এক ভাইয়া (যাদের বাসার সামনের রাস্তায় 'তুই রাজাকার' চিকা মারা থাকত) আমাকে ধরে নিয়ে যায় এক মজলিশে। আমিতো আর জানি না কিসের কি, গিয়ে রবীন্দ্র সংগীত-টঙ্গীত গেয়ে চলে আসলাম। ওরা মুখ চাওয়া-চাওয়ি কেন করছিল অনেক পরে বুঝতে পেরেছি
আমাদের স্কুলে ছুটির পর পর একজন ভাইয়া আসতেন। আমাদের নানারকম গিফট দিতেন। ডলারের ছাপ মারা সুগন্ধী কালির একটা কলম চেয়ে নিয়েছিলাম আমি, লোভ সামলাতে পারি নাই। কুইজ কম্পিটিশন, ক্রিকেট টুর্নামেন্ট এসবের আয়োজনও করতেন। সেই ভাইয়ার সাংগঠনিক দক্ষতা ছিল অসাধারণ। মোটামুটি বছর দুয়েকের মধ্যে আমার বন্ধু-বান্ধবেরা "স্বাধীনতার পঁচিশ বছর পর রাজাকার থাকে না" জাতীয় ডায়লগ দেওয়া শুরু করে। ক্লাস এইটে বৃত্তি পাওয়ার পর ওরা একটা সংবর্ধনা দিয়েছিল। আমি জ্বরের ছুতা ধরে সেখানে যাইনি, তবু সেই ভাইয়া বাড়ি বয়ে আমাকে (শিবিরের ছাপ মারা) ক্রেস্টটা দিয়ে গিয়েছিলেন। না নেওয়ার সাহস হয়নি।
মুশফিক হত্যার সালটা সম্ভবত ১৯৯৩ ছিলো ?
উনি কি ছাত্রদল করতেন ?
উনার বাবা কি বিএনপি পন্থি অধ্যাপক ছিলেন ?
....................................................................
বৃষ্টির মধ্যে রোদ হয়ে তুই
পাতার গায়ে নাচ
কষ্টের রঙে সুখ হয়ে তুই
আমার মাঝে বাঁচ...
__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________
না, আপনি মুসা ভাইয়ের কথা বলছেন (মূল লেখায় এটা এসেছে)। মুশফিক ভাই কোন রাজনৈতিক দলের সাথে জড়িত ছিলেন না। 'সাদাসিধে', 'গোবেচারা' এই শব্দগুলোর এপিটোম বলা যেত তাকে। তবে হ্যাঁ, মুসা ভাইয়ের মত তার বাবাও বিএনপিপন্থী ছিলেন।
সাল তারিখে আমার বিশাল সমস্যা। ঠিকমত জেনে জানাচ্ছি। তবে ৯৬/৯৭ হবার সম্ভাবনা বেশি। তখন তো ছাত্রলীগের সাথে শিবিরের রীতিমতো মব ওয়ার চলছিল। একে-৪৭ এর নাম (আর বাজনা) তখন প্রথম শুনি। এর আগে তো খালি কাটা রাইফেল, কিরিচ আর স্ক্রু-ড্রাইভার ছিল
এই তথ্যটা কোথাও পাইনি। তবে সংযুক্ত করার চেষ্টা করছি।
অবাক হলাম, এই বিষয়টা নিয়ে এত পত্রিকা ঘাটাঘাটি করলাম, অথচ একটাতেও এই খুনের বিষয়টি পেলাম না !
.........................................................................
বৃষ্টির মধ্যে রোদ হয়ে তুই
পাতার গায়ে নাচ
কষ্টের রঙে সুখ হয়ে তুই
আমার মাঝে বাঁচ...
__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________
আমিও অবাক হলাম। তবে ওটা পরিকল্পিত কোন হত্যাকাণ্ড ছিল না বলে কাভারেজ কম ছিল বোধহয়। মুসা ভাইয়েরটা অনেক বেশি পাবলিসাইজ হবার কারণ তার রাজনৈতিক সম্পৃক্তি (তাও সরকারি দলের সাথে) আর হত্যাকাণ্ডের নৃশংসতা। তারপরও চট্টগ্রামের পত্রিকা যেমন পূর্বকোণ বা আজাদীতে আসার কথা। আমার যদ্দূর মনে পড়ে জনকণ্ঠতে(?) আমাদের স্কুলের ছাত্র-শিক্ষকদের একটা প্রতিক্রিয়াও ছাপা হয়েছিল।
আর আমি একজনকে জিজ্ঞেস করে জানলাম ঘটনাটা '৯৮ এর (আমার যা মেমোরি!)। চবি'তে '৯৮ খুব জঘন্য সময় ছিল। সারা বছর মারামারি, অবরোধ। আমার বাবা প্রশাসনিক কাজে জড়িত থাকায় পারিবারিকভাবেও খুব উৎকণ্ঠার মধ্যে কেটেছে সময়টা।
উপরের কথাটাই সত্য বলে মেনে এসেছি সবসময়। শিবিরের পৈশাচিক কার্যকলাপের কথা পড়তে ইচ্ছা করছে না এখন। অবশ্যই পড়ে নেব কখনো।
এই পোস্টের জন্য ধন্যবাদ।
- অসাধারণ এক সিরিজ চলছে। এটি শেষ হলে একে ই-বুক করার অনুরোধ রইল।
- চট্টগ্রাম প্রসংগ যখন আসলো, তখন আমার খালুর অভিজ্ঞতা কিছু বলি। তিনি তখন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। সময়টা ৯২-৯৩ এর দিকে। রাজনীতি না করলেও ছাত্রদলের নেতাদের সাথে তার যোগাযোগ ছিল। একই সাথে একই ব্যাচমেট হওয়ায় শিবিরের কয়েক জনের সাথেও তার পরিচিতি ছিল। এই পরিচিতির সুবাধেই তিনি একবার শিবিরের রোকন বা এই ধরণের এক সম্মেলনে যেতে পেরেছিলেন। এই ধরণের সম্মেলনে বাহিরের কাউকে ঢুকতে দেয়া হয়না। তাই তার শিবির বন্ধুটি তাকে পাশের রুমে পর্দার আড়ালে লুকিয়ে রাখে। তাই তিনি সব কথা শুনতে পাননি, তবে এখনো যে কথাটা ওনার স্পষ্ট মনে আছে। একজন বলছে, " ...লোকটাকে ধরে মুখ চেপে ধরে রাখতে হবে। তারপর নাইলনের রশি দিয়ে দুই হাতের কব্জিতে আর দুই পায়ের গোড়ালিতে শক্ত করে বাঁধতে হবে যাতে রক্ত প্রবাহ না হয়। এভাবে রাখলে দশ মিনিটের মধ্যে কোনো রক্তপাত ছাড়াই সে মারা যাবে।" যে বলছিল সে ছিল ডাক্তার। ওনি অস্পষ্ট ভাবে যা শুনছিলনে তাতে বুঝতে পেরেছিলেন সেখানে মানুষ হত্যা করার বিভিন্ন পদ্ধতি বর্ণনা চলছিল। ওনি এরপরে আর কখনোই এ ধরণের সুযোগ পান নাই তবে আরো বিভিন্ন ভাবে তিনি জানতে পারেন যে, শিবিরের যে কোনো সম্মেলনে মানুষ খুন করার ব্যাপারটা আলোচিত হয়।
- দ্বিতীয় যে ঘটনাটির তিনি প্রত্যক্ষদর্শী তার সময়কাল ৯২ সাল। তিনি যাচ্ছিলেন শহর থেকে তার গ্রামের বাড়িতে। তার বাসটা সম্ভবত রাঙ্গুনিয়ার এক জায়গায় থামে যেখানে বাসটি সাধারণত থামে না। থামার সাথে সাথেই ধর ধর বলে শিবিরের লোকজন বাসে উঠে যায়। তারপর খুজতে খুজতে একজনকে পেয়ে যায়। লোকটা কে ছিল তা তিনি জানতেন না তবে পরদিন পত্রিকা দেখে জানতে পারেন তিনি ছাত্র নেতা ছিলেন। সবাই ভয়ে বাস থেকে নেমে যায়। হঠাৎ করে তারা বাসে পিছনে ককটেল ফুটায়। মানুষ ভয়ে আরো দূরে সরে যায়। কিন্তু আমার খালু যেখানে দাঁড়িয়ে ছিলেন সেখান থেকে বাসের পিছনটা স্পষ্ট দেখা যায়। তিনি যিনি চোঁখে দেখলেন শিবির লোকেরা গরু যেভাবে জবাই করে ঠিক সেভাবে ওই নেতাটিকে জবাই করে। তিনি সেদিন আর গ্রামের বাড়িতে যাননি। তার শহরের বাসায় ফিরে আসেন। তার স্বাভাবিক হতে বেশ কয়েকদিন সময় লাগে।
শিবিরের প্রশিক্ষণ, মানুষ হত্যার পদ্ধতি ইত্যাদি আলাদা একটা পোস্ট লিখবো।
........................................................................
বৃষ্টির মধ্যে রোদ হয়ে তুই
পাতার গায়ে নাচ
কষ্টের রঙে সুখ হয়ে তুই
আমার মাঝে বাঁচ...
__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________
চলুক...
কমেন্টে যেসব তথ্যও এসেছে তাও সংযোজন করা হোক ।
দিন তারিখ সহ তথ্য সূত্র উল্লেখ করে যোগ করে দেবেন প্লিজ।
ইবুক হয়ে যাক একটা!
_________________________________________
ৎ
_________________________________________
ওরে! কত কথা বলে রে!
দিন তারিখ খুজে খুজে বের করা কষ্টসাধ্য কাজ, তাই যদি কোন সাহায্যের প্রয়োজন হয় রেফারেন্স লিখতে জানাবেন। এই বান্দা সাধ্য অনুযায়ী যা করার করতে রাজী।
marchagu2010এটgmail.com
যুগান্তর (এপ্রিল ২০, ২০১০)
ঢাবি’র জামায়াত ও বিএনপিপন্থী শিক্ষকরা কড়া নজরদারিতে
মুসতাক আহমদ/সালাউদ্দিন সোহাগ
শক্তিশালী ও নিশ্চিদ্র গোয়েন্দা নেটওয়ার্কের আওতায় এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকে সামনে রেখে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সমন্বয়ে এ নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে সরকার। পাশাপাশি পাতা হয়েছে নানারকম গোয়েন্দা ফাঁদ। কর্মরত এ গোয়েন্দারা বিশ্ববিদ্যালয়ের জামায়াত ও বিএনপিপন্থী প্রায় দু’শতাধিক শিক্ষক এবং ইসলামী ছাত্রশিবির ও অন্যান্য বিরোধী ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীদের নজরদারির মধ্যে রেখেছে। দায়িত্বশীল সূত্রে আরও জানা গেছে, গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক গঠন এবং জামায়াত ও বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের তালিকা তৈরিতে সহায়তা করেছে খোদ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সরকারি অনুরোধে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা চিহ্নিত শিক্ষকদের নাম ‘ইওলো মার্ক’ করে গোয়েন্দা দফতরে পাঠান। সেখান থেকে যাচাই-বাছাই শেষে চূড়ান্ত তালিকা প্রণয়ন করা হয়। এরপর ওই তালিকার একটি কপি ফের কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়। সূত্র আরও জানায়, ২৫ মার্চ যুদ্ধাপরাধ বিচারে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠনের পরপরই মূলত শিক্ষকদের এই তালিকা চূড়ান্ত করা হয়। যদিও তালিকা প্রণয়নের কাজ শুরু হয় আরও আগে। তবে ১১ এপ্রিল পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) অনুরোধে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো আলাদাভাবে তালিকা প্রণয়ন করে। এই তিনটি থেকেই পরবর্তীতে চূড়ান্ত তালিকা করা হয়। এ ব্যাপারে এসবি থেকে একটি প্রভাবশালী গোয়েন্দা সংস্থাকে প্রেরিত পত্রে সুস্পষ্টভাবে বলা হয়, ‘আপনার জোন এলাকায় যে সকল সরকারি প্রতিষ্ঠান আছে তাদের মধ্যে জামায়াতে ইসলামী মতাবলম্বী প্রভাবশালী কর্মকর্তাদের নাম, ঠিকানা ও তাদের কর্মকাণ্ডের বিবরণ অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে সংগ্রহ করে আগামী ১৪ এপ্রিলের মধ্যে গোপনীয়তা রক্ষা করে প্রেরণের জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো।’ সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, ইডেন এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ নিয়ে একটি জোন হওয়ায় পত্রটি ওইভাবে লেখা হয়েছে। আর পত্রে কেবল জামায়াতে ইসলামীর ব্যাপারে বলা হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে যেহেতু জামায়াত-বিএনপি যৌথভাবে সাদা দলভুক্ত হয়ে প্লাটফর্ম তৈরি করেছে, সেজন্য বিএনপিপন্থীদের মধ্যে যারা জামায়াত-ঘেঁষা সেসব শিক্ষকের তালিকাও তৈরি করা হয়েছে। সূত্র জানায়, নজরদারিতে রাখা শিক্ষকদের তিনটি ক্যাটাগরিতে বিভক্ত করা হয়েছে।
প্রথম ক্যাটাগরিতে রয়েছেন ৩৪ জন। যাদের ‘কট্টরপন্থী’ ও ‘অত্যন্ত প্রভাবশালী’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। মূলত এই ৩৪ জনের সার্বিক কার্যক্রম সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ে রাখা হয়েছে। এ গ্র“পটি দেশে-বিদেশে নানাভাবে বিচার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে ভূমিকা রাখতে সক্ষম বলে গোয়েন্দাদের ধারণা। দ্বিতীয় ক্যাগাটারিতে রাখা হয়েছে মধ্যম বয়সের অধ্যাপক ও সহযোগী অধ্যাপক পদমর্যাদার শিক্ষকদের। এ ক্যাটাগরিতে ৯৭ জন শিক্ষক রয়েছেন। এদেরও বিপজ্জনক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। গোয়েন্দাদের তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধাপরাধী বিচার শুরু করলে রাজপথে যদি শিক্ষকদের আন্দোলন হয়, তবে এসব শিক্ষক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার পাশাপাশি সাধারণ ছাত্রদের রাজপথে নামানোরও প্রচেষ্টা চালাতে পারেন। তবে তৃতীয় অংশটি ততটা বিপজ্জনক নয় বলে গোয়েন্দাদের ধারণা। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক হিসেবে বিগত পাঁচ বছরে এই অংশটি যোগদান করেছে। ফলে দলের প্রতি অনুগত হলেও পেশাগত সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশংকায় এরা জোরালো ভূমিকা রাখবে না বলে গোয়েন্দা রিপোর্টে বলা হয়েছে।
সূত্র জানায়, গোটা ক্যাম্পাসকে শক্তিশালী গোয়েন্দা নেটওয়ার্কের মধ্যে আনার প্রধান উদ্দেশ্য ক্যাম্পাসের ভেতরে নাশকতা কিংবা সরকারবিরোধী আন্দোলন করে যাতে কেউ বেরিয়ে যেতে না পারে। যে কারণে একদিকে গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক আরেকদিকে ফাঁদ পাতা হয়েছে। ক্যাম্পাসের ভেতর-বাইরে পাতা এই ফাঁদে কাজ করছে সিআইডি, ডিবি, এসবি, এনএসআই এবং ডিজিএফআই’র অন্তত অর্ধশত সদস্য। তাদের কাজ হচ্ছে চিহ্নিতদের নজরদারির মধ্যে রাখার পাশাপাশি ক্যাম্পাস সম্পর্কে সার্বক্ষণিক তথ্য যথাস্থানে পৌঁছানো। এসব ফাঁদের মধ্যে রয়েছে ক্যাম্পাসের অস্থায়ী চায়ের দোকানসহ ভাসমান চা-কফি, বিড়ি-সিগেরেট, পান, বাদামের দোকান। এর মধ্যে কেবল সিআইডিরই চারটি দোকান রয়েছে। এই দোকানগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ তিনটি প্রবেশ মুখ এবং বাকিটি একটি প্রসিদ্ধ চত্বরে অবস্থিত বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে। সূত্র জানায়, এর বাইরে আরও অর্ধশতাধিক গোয়েন্দা দিনরাত চব্বিশ ঘণ্টাই ক্যাম্পাসে কাজ করছে। এসব গোয়েন্দা সদস্যের কেউ ফেরিওয়ালা আবার কেউবা ভিক্ষুক কিংবা রিকশাওয়ালা বেশে কাজ করছে। যাদের অনেককে গোয়েন্দা সংস্থার নিয়মিত সদস্যরা পর্যন্ত চেনেন না।
নজরদারিতে থাকা জামায়াতপন্থীরা : গোয়েন্দা তালিকা অনুযায়ী নজরদারিতে থাকা শিক্ষকরা হলেন: বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আব্বাস আলী খান, আরবি বিভাগের অধ্যাপক এবিএম ছিদ্দিকুর রহমান নিজামী, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আবদুল লতিফ, অধ্যাপক ড. এএইচএম মুজতবা হোছাইন, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ আতাউর রহমান মিয়াজী, আইন অনুষদের অধ্যাপক ড. এম এরশাদুল বারী, অধ্যাপক ড. মাইমুল আহসান খান, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আতাউর রহমান, মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সিরাজুল হক, ব্যাংকিং বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মুহাম্মদ মুজাহিদুল ইসলাম, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. ইউএবি রাজিয়া আক্তার বানু, সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কামরুল আহসান চৌধুরী, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম, লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. আকা ফিরোজ আহমদ, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, মৃত্তিকা পানি ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক আমিনুর রহমান মজুমদার, ড. মোহাম্মদ আখতার হোসেন, উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক একেএম নজরুল ইসলাম, প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মোকসেদ আলী হাওলাদার, প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাইয়াদ সালেহীন কাদরী, অধ্যাপক ড. খলিলুর রহমান, মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আজিজুর রহমান, অনুজীব বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আনিসুর রহমান খান, অধ্যাপক ড. মোহম্মদ মোজাম্মেল হক, ফার্মাসিউটিক্যাল কেমিস্ট্রি বিভাগের অধ্যাপক এমিরেটাস ড. আবদুল জব্বার, অধ্যাপক চৌধুরী মাহমুদ হাসান, অধ্যাপক ড. আবদুর রশিদ, ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাঃ হাবিবুর রহমান, ভুগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক ড. আবদুর রব, ভূতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ফজলুল হক, ফলিত পদার্থ বিজ্ঞান, ফলিত রসায়ন ও রাসায়নিক প্রযুক্তি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আবদুল কাইয়ুম, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. হায়দার আলী, আধুনিক ভাষা ইন্সটিটিউটের পরিচালক আবদুর রহীম। জানা গেছে, এসব শিক্ষককে জামায়াতপন্থী এবং অত্যন্ত প্রভাবশালী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
বিএনপিপন্থী শিক্ষকরা : নজরদারিতে থাকা বিএনপিপন্থী শিক্ষকরা হলেন: সাবেক কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ, কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক সদরুল আমীন, বিজ্ঞানের ডিন রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. তাজমেরী এসএ ইসলাম, রোকেয়া হলের প্রভোস্ট প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. লায়লা নূর ইসলাম, এফ রহমান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক আবদুস সাত্তার, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, মৃত্তিকা পানি ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক ড. এসএমএ ফায়েজ (সাবেক ভিসি), পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আফম ইউসুফ হায়দার (সাবেক প্রো-ভিসি), আইন বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক আসিফ নজরুল, এসএম হলের প্রভোস্ট ও আইবিএর চেয়ারম্যান অধ্যাপক জিএম চৌধুরী, আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. বোরহান উদ্দিন খান, জীব বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবুল বাশার, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি অনুষদের ডিন অধ্যাপক শাহিদা রফিক, আরবি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আবদুল মাবুদ, রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. আবুল খায়ের, ম্যানেজম্যান্ট স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম, অধ্যাপক শহীদ উদ্দিন আহমেদ, অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ।
তালিকা হয়েছে শিবিরের ৫৯ ক্যাডারের : শিবিরের ব্যাপারে গোয়েন্দা রিপোর্টে বলা হয়েছে, সংগঠনটি বিশ্ববিদ্যালয়কে ঘিরে শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে। ক্যাডারভিত্তিক সংগঠনটির ক্যাম্পাসে ১১টি হলসহ মোট ৩০টি শাখা ইউনিটের কমিটি রয়েছে। রিপোর্টে যাদের ব্যাপারে নজরদারি করতে বলা হয়েছে তারা হলেনÑ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি এবং বিদ্রোহী হিসেবে পরিচিত আনিসুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ওবায়েদুর রহমান, বিজ্ঞান পাড়ার বিভিন্ন হলের নেতা শেখ ফরিদ, নাজমুস সালেহীন, মোস্তাফিজুর রহমান, মাহফুজুল হাসান, তাজনুর, মনজুরুল, মহিউদ্দিন, আহাদ আলী, উত্তরপাড়ার হলগুলোর নেতা জোবায়ের, হাবিব, দক্ষিণ পাড়ার হলগুলোর নেতা নুরুল, ফারুক, আজহার, জয়নুল, মুজাহিদুল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান, মাহবুব, আতিক, আলিম, মুশাহিদ, জহিরুল, মহসিন। হলের বাইরে আবাসিক এলাকার নেতাদের মধ্যে মনিরুজ্জামান, মুকুল, লোকমান, রাজ্জাকুল হায়দার, মামুন হাওলাদার, বেলাল, রাকিব। অনুষদ নেতারা হলেন: রাজিব, তৈমুর, মারুফ, ফয়েজ, কামরুল, মাহমুদ, রবিউল, হাসানুল বান্না, নাসিরউদ্দিন, রাশেদুজ্জামান, মাসুম বিল্লাহ, হুসাইন, মেহেদী, আব্বাস, শাহেরউল্লাহ ও আবু সুফিয়ান। এছাড়া ওবায়দুল্লাহ, নেজাম, ফরহাদ, ওয়ালিউদ্দিন, কাইয়ুম, মইনুল, সাদেকুল শরীফউল্লাহ ও জুয়েলের ব্যাপারে বিশেষভাবে নজর রাখতে বলা হয়েছে।
অনুজীব বিজ্ঞান বিভাগের জামাতপন্থী ছিক্ষক মো: মাহফুযুল হক এর নাম লিস্টে বাদ পরেছে।
এই মাফাফুযুল হক, চেয়ারম্যান আনিস এবং নাটের গুরু মোজাম্মেল হক (ধানমন্ডির ওমর সুলতান ডায়াগন্সটিকের মালিক) মিলে এক শিবির সমর্থক ছাত্র শাহনুরকে থিসিস-ভাইভাতে ৯৫% মার্কস দিয়ে প্রথম শ্রেণীতে ২য় করে (৯৫% মার্কস দিয়েও প্রথম করতে পারে নাই) অনুজীব বিজ্ঞানের প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ দিতে চেয়েছিল, কিন্তু পারে নাই। তাই বলে তারা পিছিয়ে যায় নাই, তাকে ঠিকই জেনেটিক ইন্জিনিয়ারিং বিভাগে প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে।
ব্রাভো জাকির ব্রাভো । অসাধারণ ।
এই নির্মমতার স্বীকার যারা হয়েছেন বা হচ্ছেন তাদের যন্ত্রণা হয়তো কিছুটা হলেও লাঘব হবে যদি এই শুয়রের বাচ্ছাদেরও একই পদ্ধতিতে মারা হয় ।
এই পাকিস্তানী ঔরসজাত বেজন্মাদের নির্মমতাকে বিচার বিশ্লেষণ করে নতুন একটা নাম দেয়া হোক ।যে নাম পড়লে বা শুনলে শুয়রও লজ্জা পায় ।
সকুলে ইসলামিক ফাউনেডশনের লোকজন আসতো, তারা বিভিনন জনপ্রিয় লেখকদের দিয়ে লেকচার দেয়াতো। আমরা মু্গধ হতাম। কিছুদিন পর তারা প্রতিযোগিতার নাম করে চালাতো বাছাই পর্ব । বাছাইয়ের এক পর্বে তারা বাড়ি বাড়ি যেেয় খুব আপন হওয়ার চেষটা করতো। টিভিতে চান্স করে দিতো। আমিও ছিলাম তাদের টার্গেট। বাসার লোকজনের সচেতনতায় রক্ষে হয়।
জাকির ভাইকে ধন্যবা। সিরিজ চলুক।
'ইসলামি ছাত্রশিবির, আসুন শুরুতেই আমরা জানি, এরা পশু, এরা বর্বর, এরা পিশাচ, এরা একাত্তরের রাজাকার আলবদরদের উত্তরসূরি।'
জাকির ভাই চালিয়ে যান,
বস, শহীদ শাহাদাত হোসেন ছাত্র ইউনিয়নের সদস্য/কর্মী ছিলেন।
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
এদের নির্যাতনের বর্ণনা পড়ে গা গুলিয়ে ওঠে। লেখককে অসংখ্য ধন্যবাদ এই গুরুত্বপূর্ণ সিরিজের জন্য। সবকটা সিরিজ মিলিয়ে একটা উইকি এন্ট্রি দেওয়া যায় কি?
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
নতুন মন্তব্য করুন