বিয়ের দুটি অনুষ্ঠান

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি
লিখেছেন আব্দুল্লাহ এ.এম. [অতিথি] (তারিখ: রবি, ০৮/০৯/২০১৩ - ৮:০৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

গত শতাব্দীর সত্তরের দশকে বাবার সরকারী চাকুরীর সূত্রে আমরা থাকতাম উত্তর জনপদের এক প্রত্যন্ত থানা সদরে। আমি পড়তাম ক্লাস ফাইভে, সহপাঠী/সহপিঠীনিদের প্রায় সবাই রংপুরের আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলতো, আমার বেশ অস্বস্তি লাগতো এবং আমার অপরিনত ভাবনায় তাদের মনে হতো অসংস্কৃত জনগোষ্ঠী, শুদ্ধ করে কথা বলতে পারে না। কিন্তু তাই বলে গণযোগাযোগ তো আর থেমে থাকে না, দ্রুতই সহপাঠী/সহপাঠীনিদের বেশ কজনের সাথে বিশেষ অন্তঃরঙ্গতা গড়ে উঠলো। তেমনি একজন বান্ধবী স্বপ্না, তার সাথে নানা জায়গায় ঘুরে বেড়াই, নানা কিছু দেখি আর শিখি। একদিন সকাল বেলা আমাদের বাসায় এসে স্বপ্না জানালো তার "মুক্তা বুজানে'র বিয়াও", গীতের দল এসেছে। বুজান মানে বুবু অর্থাৎ আপা, আর বিয়াও হলো বিবাহ। বিয়ের অনুষ্ঠান তাদের পুরান বাড়ীতে, অর্থাৎ দাদার আমলের বাড়ীতে, স্বপ্নার সাথে ওদের পুরান বাড়ীতে গিয়ে হাজির হলাম বিয়াও এবং "গীতের দল" দেখতে। যেয়ে দেখি বড় একটা ঘরে জলচৌকির উপরে সেজেগুজে বসে আছে মুক্তা আপা, আর পাশে বড় মাদুরের উপরে একজন মধ্যবয়সী মহিলার নেতৃত্বে একদল মেয়ে বিয়ের গীত গাইছে। গানের কথা এবং বিষয়বস্তু তেমন একটা বুঝতে পারি না, কিন্তু সেসব যে খুবই অর্থবহ এবং চিত্তগ্রহী তা বেশ অনুবব করতে পারি। দলনেত্রী যিনি, তিনি আবার মাঝে মাঝে আসন ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে কোমর দুলিয়ে নাচের মুদ্রাও প্রদর্শন করেন। গানের বিভিন্ন পর্যায়ে ঘর ভর্তি নানা বয়সের মহিলার দল কখনো বাঁধভাঙ্গা হাসিতে ফেটে পড়ে, কখনো বা এ ওর গায়ে ঠেস দিয়ে অর্থপূর্ন দৃষ্টি বিনিময় করে। স্বপ্নার সাহায্যে গীতের মর্মোদ্ধারের চেষ্টা করি, কিন্তু কিছুটা বিব্রত স্বপ্না একটা রহস্যপূর্ন হাসি হেসে আমার সে প্রচেষ্টাকে ধামাচাপা দিয়ে দেয়। অগত্যা বোকা যেমন কোন কিছু না বুঝেই অন্যের হাসি দেখে নিজেও হাসে, আমিও তেমনি ঘরভর্তি নানাবয়সী নারীর স্ফুর্তির জোয়ারে কিছুটা অকারনেই আপ্লুত হই। বিয়ের অন্য কোন আনুষ্ঠানিকতা আমার আর চোখে পড়ে না, কয়েকটা দিন আমি সেই বিয়ের গীত দেখে ও শুনেই কাটিয়ে দেই।

বহুবছর পরে দিনকয়েক আগে সেই মুক্তা আপার মেয়ে কান্তার বিয়ে হয়ে গেল। কালের প্রবাহে মুক্তা আপা এখন ঢাকার বাসিন্দা, আমার সাথে যোগাযোগ আছে, তার বর সচ্ছল ব্যবসায়ী। আমি সাধারনতঃ বিয়ে শাদীর অনুষ্ঠান সচেতনভাবেই এড়িয়ে চলি, কিন্তু এই ক্ষেত্রে এড়িয়ে যেতে পারলাম না। গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে নিতান্ত বাধ্য হয়ে আমাকেও যেতে হলো, সে অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিকতা একটি সম্পূর্ন নতুন আঙ্গিকে যেন আমাকে আবার ফিরিয়ে নিয়ে গেলো বহু বছর আগের মুক্তা আপার বিয়ের গীতিময়তার সেই যুগে। চমৎকার একটি ষ্টেজ সাজানো হয়েছে, তাতে গর্বিতা ভঙ্গীতে বসে আছে হলুদবরন সাজে সুসজ্জিতা কান্তা। ষ্টেজের সামনে বেশ কিছুটা জায়গা ফাঁকা রেখে আমন্ত্রিত অতিথিদের বসার ব্যবস্থা। ষ্টেজে এবং তার সামনের উন্মুক্ত স্থানে বর্নিল আলোক সম্পাতের ব্যবস্থা হয়েছে, একপার্শ্বে ব্যান্ডের নানা ইন্সট্রুমেন্টের আয়োজন। গায়ে হলুদের সাথে এসবের কি সম্পর্ক সে নিয়ে ভাবতে ভাবতেই হই হই করে বরপক্ষ থেকে লোকজন এসে পড়লো। এবারে বোঝা গেল সেসবের প্রসঙ্গিকতা, শুরু হলো এ যুগের বিয়ের গীত, সেই সঙ্গে নৃত্যও। ব্যান্ডের উদ্যাম ঝংকার সহযোগে একের পর এক গীত হতে থাকলো মোহিনী সব গান, তার সাথে ষ্টেজের সামনের সেই উন্মুক্ত প্রান্তরে জমাট নৃত্য। একটি গানই শুধু বাংলা, "লীলাবালী লীলাবালী বরজবতী সই গো"। বাকী সব চটুল হিন্দী গান, তার কিছু কিছু আমি শুনেছি বা দেখেছি, যেমন চেন্নাই এক্সপ্রেসের লুঙ্গী ড্যান্স। জানতে পারলাম যারা গান গাইছে এবং যারা নাচছে তাদের কেউই প্রফেশনাল কেউ নয়, তবে তাদের প্রায় সবাই প্রাতিষ্ঠানিকভাবে গান কিংবা নাচ শিখেছে বা শিখছে। একজন ডিজে কয়েকদিন ধরে রিহার্সেল দিয়ে সবাইকে আজকের অনুষ্ঠানের জন্য প্রস্তুত করেছে, সেই ডিজে অবশ্য প্রফেশনাল, তাকে ভাল পেমেন্টে কন্ট্রাক্ট করা হয়েছে। সেদিনের মত এদিনও উচ্ছাসের কোন কমতি ছিল না, সেদিন গানের কোন কথা আমি বুঝতে পারি নাই কিন্তু এদিন প্রায় সবই বুঝলাম, সেদিনের শিল্পী-দর্শক-শ্রোতা সবাই ছিল গ্রাম্য ঘরানার, কিন্তু এদিন সবাই শিক্ষিত মার্জিত ও রুচিবান। কিন্তু ওল্ড ব্যাক ডেটেড আমি কুন্ঠিত হয়ে হৃদয়ঙ্গম করতে থাকি কালের বিবর্তনে আমরা কিভাবে ক্রমশঃ রিক্ত ও নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছি।


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

লেখকের নাম কোথায়?
বর্তমান অনুষ্ঠানটির ঘটনাস্থল কোথায় - ভারতে না বাংলাদেশে? হিন্দী গানের আধিক্যের কারণে প্রশ্নটা মনে এল।
আপনার রিক্ত ও নি:স্ব হয়ে যাওয়ার অনুভূতি আপনার কাছে অবশ্যই অত্যন্ত বাস্তব। আসলে, এই অনুভূতি আবহমানের। সব যুগে বহু মানুষ-ই এক-ই ভাবে অনুভব করেছেন।
- একলহমা

অতিথি লেখক এর ছবি

আরে! নামটা বাদ গেল কখন !!
যাই হোক, লেখকের নাম আব্দুল্লাহ এ এম।

বর্তমান অনুষ্ঠানটির ঘটনাস্থল কোথায় - ভারতে না বাংলাদেশে?

লেখায় উল্লেখ করেছি- "কালের প্রবাহে মুক্তা আপা এখন ঢাকার বাসিন্দা", সুতরাং ঘটনাস্থল ভারতে নয়।

আব্দুল্লাহ এ এম

অতিথি লেখক এর ছবি

ঠিক, ঠিক, আমার-ই নজর এড়িয়ে গেছে, আব্দুল্লাহ-ভাই।
আর, এই-টা আপনি নজরে এনে দেওয়ার পর আপনার সাথে সাথে, আমিও খানিকটা বিষণ্ণ হয়ে পড়লাম। মনে মনে একটা গর্ব, একটা নিশ্চিন্তি অনুভব করতাম যে ভারতের বাঙালীরা না পারলেও বাংলাদেশের বাঙালীরা হিন্দীর প্রবল প্রভাবকে ঠেকেতে পেরেছে। সেই ভরসাটাও তা হলে ভাসিয়ে দিতে হল! এ-ই হয়, বাণিজ্য-ঘোড়ার সওয়ার যারা, সংস্কৃতির রথ তারাই চালায়।
- একলহমা

অতিথি লেখক এর ছবি

হিন্দীর আগ্রাসন দুঃখজনক ব্যাপার, কিন্তু তার চেয়েও দুঃখজনক ব্যাপার হলো বিয়ের আসরে গাওয়ার জন্য আমাদের নিজেদেরই ছিল একটি সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ধারা, আমরা নির্বোধের মত সেই সম্পদ বিসর্জন দিয়ে হাস্যকর প্রয়াসে লিপ্ত হচ্ছি।

আব্দুল্লাহ এ এম

এক লহমা এর ছবি

ঠিক।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

ছায়াবৃত্ত এর ছবি

মন খারাপ করা একটা রুঢ় সত্যি মন খারাপ

অতিথি লেখক এর ছবি

মন খারাপ

আব্দুল্লাহ এ এম

রায়হান আবীর এর ছবি

হুম ...

অতিথি লেখক এর ছবি

চিন্তিত

আব্দুল্লাহ এ এম

খালেদ সাইফুল্লাহ এর ছবি

নিঃস্ব হলাম কোথায়? আমরা তো এখন অতি উন্নত লুঙ্গি ড্যান্স শিখেছি।

খালেদ সাইফুল্লাহ

অতিথি লেখক এর ছবি

লুঙ্গি আমাদের কাছে অপরিচিত কিছু নয়, কিন্তু লুঙ্গি পড়ার আমাদের নিজস্ব একটি ষ্টাইল আছে, ভিন্ন ষ্টাইলে ধারন করতে গেলে লুঙ্গি খুলে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। চোখ টিপি

আব্দুল্লাহ এ এম

স্বপ্নীল সমন্যামবিউলিসট এর ছবি

গড়াগড়ি দিয়া হাসি

-------------------------------------------------
ভালবাসা কেবল নিজেকে দেয় এবং নিজ থেকে নেয়-
ভালবাসার যেমন নিজেরও কিছু নেই, তেমনি সেও কারো নয়;
কেননা, ভালবাসার জন্য শুধু ভালবাসাই যথেষ্ট।

স্বপ্নীল সমন্যামবিউলিসট এর ছবি

অবস্থা যা বললেন আর যা কমেন্টগুলোতে দেখলাম- তারচেয়েও হাজারগুন বেশি ভয়াবহ। বয়সের কারনে- গত দুবছরে বন্ধুদের বিয়েতে এটেন্ড করতে করতে- ঘুমের মধ্যেও শরীর থেকে বিরানীর গন্ধ বের হয়।।।
ঢাকার যে কয়েকটা ভালো কনভেনশান সেন্টার আছে- সেগুলোর আশেপাশের মানুষগুলোকে কষ্ট করে এমটিভি দেখতে হয় না।
আর- কি সব বিশ্রী নাচ যে সবাই শিখছে- বুড়া ধারি মহিলা-পুরুষ একে অপরের সাথে অশ্লীল ভঙ্গীতে নাঁচতে থাকে (এটাকে আমাদের অঞ্চলে বলে উব্বা নাচন।)।
এর থেকে বের করে কোথায় নিয়ে যাবেন?
রবীন্দ্রনাথের জোয়ারে ভেসে যাবার আগে, বাংলা সংস্কৃতির প্রকৃত রূপ কি কেউ হলপ করে বলতে পারবেন??
সংস্কৃতি বহতা পদ্মার মতো।
এককালে দুকূল ছাঁপায় তো আরেককালে, স্লুইসগেটের পোষা বেড়াল হয়।
আপন গতিতেই খুঁজে নেবে শেকড়।
বাঁধা দিতে গেলেই আরো বিগড়ে যাবার চান্স।

-------------------------------------------------
ভালবাসা কেবল নিজেকে দেয় এবং নিজ থেকে নেয়-
ভালবাসার যেমন নিজেরও কিছু নেই, তেমনি সেও কারো নয়;
কেননা, ভালবাসার জন্য শুধু ভালবাসাই যথেষ্ট।

অতিথি লেখক এর ছবি

আপন গতিতেই খুঁজে নেবে শেকড়। বাঁধা দিতে গেলেই আরো বিগড়ে যাবার চান্স।

সে অর্থে বাধা দেয়ার কথা বলছি না, তবে বাধা দিতে হবে নিজেদের সংস্কৃতিকে যথাযথ মূল্য দিয়ে, তাকে বিজাতীয় সংস্কৃতি দিয়ে প্রতিস্থাপিত হতে না দিয়ে। নিজের বিয়ের অনুষ্ঠানটার ব্যাপারে আমার একটা পরিকল্পনা ছিল, সেটা হবে এরকম- অনুষ্ঠানের জন্য একটা বড় লঞ্চ ভাড়া করা হবে, নিমন্ত্রিত অতিথিদের নিয়ে সকালে বিবাহ যাত্রা শুরু হবে ওয়াইজ ঘাট থেকে। বুড়িগঙ্গা, ধলেশ্বরী, মেঘনার প্রাকৃতিক পরিবেশে ঘুরে বেড়াবে লঞ্চ, তার মাঝে চলবে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা। খাওয়া দাওয়ার আয়োজনে থাকবে কাটারীভোগ চালের ভাত, সঙ্গে ইলিশ চিতল মুরগী আর খাসির বিভিন্ন পদ ও বাছাই করা কয়েকটি মিষ্টি ও দই। পনের বিশটা বিয়ের গান(অবশ্যই বাংলাদেশের বাংলা) আমার সকল ভাগ্নে-ভাগ্নি, ভাতিজা-ভাতিজী, বন্ধু-বান্ধবীদের মধ্য থেকে একটি দল গঠন করে রিহার্সেলের মাধ্যমে প্রস্তুত করে পরিবেশন করা হবে।
দুঃখের বিষয়, আর্থিক অসামর্থের জন্য আমার সে পরিকল্পনা সফল করতে পারি নি, কিন্তু আশা করি অন্য কেউ এর চেয়ে চমৎকার কোন বৈবাহিক কর্ম পরিকল্পনার সফল বাস্তবায়ন করবে, যা প্রচলিত বিরিয়ানী খাওয়া-খাওয়ী আর উব্বা নাচনের যন্ত্রনা থেকে আমাদের মুক্তি দিবে।

আব্দুল্লাহ এ এম

সত্যপীর এর ছবি

আমাদের একটা পুরোদস্তুর বাংলা মিউজিক চ্যানেল দরকার। টিভি চ্যানেল। আজকাল সবাই গান টিভিতে দেখে, গান যে কিনে শোনার জিনিস সেইটা অনেকেরই মাথায় ঢোকেনা। খুব অল্প লোকেই হিন্দি গান কিনে সিডিতে চালায়, বেশীরভাগই টিভির অবদান। বিভিন্ন চ্যানেলে খাবলা খাবলা বাংলা গানের অনুষ্ঠান না করে ননস্টপ বাংলা গানের টিভি চ্যানেল দরকার রুট লেভেলে পৌঁছুতে গেলে।

(সেইক্ষেত্রে নতুন যন্ত্রণা হবে ভিজে মামুদের বাংড়েজিতে টক করা, তবে তা আরেক প্রসঙ্গ)।

..................................................................
#Banshibir.

সাফি এর ছবি

তবে গত তিন চার বছরে হলুদের আসরে হিন্দীর উপদ্রপ একটু কমেছে বলে মনে হল, মিলা/কনা/হাবিব এদের গানটান ই বেশী বাজে। আমার বা আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের সবার বিয়েতেই সচেতন ভাবেই হিন্দী বর্জন করা হয়েছিলো।

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনার কথায় কিছুটা আসস্ত হলাম, কিন্তু এই ট্রেন্ডের খবর বোধ হয় মুক্তা আপাদের বাসায় এখনো পৌঁছেনি।

আব্দুল্লাহ এ এম

অতিথি লেখক এর ছবি

সেরকম একটা চ্যানেল সম্প্রতি চালু হয়েছে-Channel-16, দেখা যাক তার কোন প্রভাব পড়ে কি না।

আব্দুল্লাহ এ এম

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানগুলো এখন হিন্দী নাচ গানের বাংলাদেশ কেন্দ্র মন খারাপ

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অতিথি লেখক এর ছবি

এই অনুষ্ঠানগুলো আবার না নতুন একটা ভাষা "বান্দী"(বাংলা+হিন্দী) এর জন্ম দেয়।

আব্দুল্লাহ এ এম

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

সেদিন এক বিয়ের প্রোগ্রামে গেছিলাম। ডিজে আনা হয়নি - তবে সিডি প্লেয়ারে বাজছিল হিন্দি গান। আর তার সাথে তাল মিলিয়ে নাচছিল একদল শিশু - বয়স হবে ছয় থেকে বারো/তেরো। কত অল্প বয়সে আমাদের ছেলেমেয়েরা হিন্দি নাচ শিখে যাচ্ছে- আর ভুলে যাচ্ছে নিজেদের সংস্কৃতি!!

____________________________

অতিথি লেখক এর ছবি

কত অল্প বয়সে আমাদের ছেলেমেয়েরা হিন্দি নাচ শিখে যাচ্ছে

ভাষা ও সংস্কৃতি শিক্ষা করার জন্য শৈশবকালই আদর্শ সময়। চোখ টিপি

আব্দুল্লাহ এ এম

শিশিরকণা এর ছবি

তাও তো একখান বাংলা গান ছিল।

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

অতিথি লেখক এর ছবি

@শিশিরকণা,

হ্যাঁ বাংলা গানা একখানা ছিল বটে, তবে অনুপাতটা ১:২০/২৫

আব্দুল্লাহ এ এম

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

মন খারাপ

"বরজবতী" নাকি "বড় যৈবতী" ? চিন্তিত

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

"বড় যৈবতী"

____________________________

অতিথি লেখক এর ছবি

আমি গানটি প্রথম শুনেছিলাম(কিংবা দেখেছিলাম) খুব ছোটবেলায়, তখন বোধ হয় টু-থ্রী তে পড়ি, জহির রায়হানের "আনোয়ারা" ছবিতে। সেটা দেখে আমার ধারনা হয়েছিল গানটি বোধ হয় এরকম- লীলাবালি লীলাবালি ভরতবতী সই গো কি দিয়া সাজামু তোরে...

পরে খুব সম্ভবতঃ হুমায়ূন আহমেদের কোন লেখা দেখে ভুল বুঝতে পারি যে এটা হবে-লীলাবালি লীলাবালি বরজবতী সই গো কি দিয়া সাজামু তোরে...

কিন্তু আপনার প্রশ্ন থেকে নেট ঘেটে আক্কেলগুড়ুম হয়ে গেল- আরো যে সব ভার্সন পেলাম তার কয়েকটি নিম্নরুপ, আমার উল্লেখিত ভার্সনটিও আছে-

লীলাবালি লীলাবালি বড় যৈবতি সই গো
কি দিয়া সাজামু তোরে...

লীলাবালি লীলাবালি পর যৈবতি সই গো
কি দিয়া সাজামু তোরে...

লীলাবালি লীলাবালি পরম যুবতি সই গো
কি দিয়া সাজামু তোরে...

লীলাবালি লীলাবালি বড় যুবতী সই গো
কি দিয়া সাজাইমু তোরে...

লীলাবালি লীলাবালি বড়ই যুবতী সই গো
কি দিয়া সাজাইমু তোরে...

লীলাবালি লীলাবালি বল যুবতী সই গো
কি দিয়া সাজাইমু তোরে...

নেটেই জানলাম হুমায়ূন নাকি তার কোন একটি বইয়ে গানটি এইভাবে লিখেছেন- লীলাবালি লীলাবালি বর অযুবাতি সই গো কি দিয়া সাজামু তোরে...

বর অযুবাতি সিলেটি বাক্য, তার অর্থ বর এসেছে।

আরো জানলাম গানটি আদতে লিখেছিলেন সৈয়দা হাবিবুন্নাহার খান, সম্পর্কে তিনি সৈয়দ মুজতবা আলি'র বোন।

আব্দুল্লাহ এ এম

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

চলুক

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

হিমু এর ছবি

আপনি সচলায়তনে নিবন্ধন করেছেন কি?

অতিথি লেখক এর ছবি

হ্যাঁ, অনেক আগেই তো।

আব্দুল্লাহ এ এম

হিমু এর ছবি

আপনার নিক আর ইমেইল ঠিকানাটা একটু কষ্ট করে কনট্যাক্ট অ্যাট সচলায়তন ডট কমে মেইল করে দিন প্লিজ।

ব্রুনো  এর ছবি

হাততালি
অগ্রিম অভিনন্দন। (যা ভাবতেছি তা না হলে অভিনন্দন আর হাত্তালি ফিরায় নিমুনে)

অতিথি লেখক এর ছবি

মন খারাপ
উত্তরের কোন জেলায় ছিলেন ভাই?
কোন সালের দিকে বলতে পারেন?

-------------------------------
কামরুজ্জামান পলাশ

অতিথি লেখক এর ছবি

প্রধানতঃ বৃহত্তর রংপুরের বিভিন্ন জায়গায়, এই ঘটনাটি নীলফামারী জেলার।

আব্দুল্লাহ এ এম

সাইদ এর ছবি

আমার নিজের বিয়েতে ভিডিও যে করেছিল তাকে অনেক বার বলেছিলাম কোন হিন্দি গান না দিতে। বেয়াদবটা আমার কথা শুনে নাই। টাকা নিয়ে কিছুদিন ঘুরাইছিলাম। কিন্তু ব্যাপার হল সব খানেই তো হিন্দির জয় জয়কার। তবে আমার মনে হয় এই আগ্রাসন রুখতে মান সম্পন্ন অনুষ্ঠানের পাশাপাশি আমাদেরও বিপণনটা (যেটাকে বলে পাবলিককে খাওয়ানো) আরো একটু শিখা দরকার।

অতিথি লেখক এর ছবি

বেয়াদবটা আমার কথা শুনে নাই। টাকা নিয়ে কিছুদিন ঘুরাইছিলাম

কি আর করবেন, তবুও সান্ত্বনা, টাকা নিয়ে কিছুদিন ঘুরাইতে পারছেন। পরেরবার যখন বিয়ে করবেন, সাবধান থাকবেন ঐ বেয়াদবটা যেন কাছে ভিড়তে না পারে। চোখ টিপি

আব্দুল্লাহ এ এম

বন্দনা এর ছবি

পরেরবার যখন বিয়ে করবেন, সাবধান থাকবেন ঐ বেয়াদবটা যেন কাছে ভিড়তে না পারে। চোখ টিপি

গড়াগড়ি দিয়া হাসি

বন্দনা এর ছবি

আপনার অব্জার্বাশন বেশ ভাল। ছোটবেলায় গ্রামের বাড়ীতে গায়ে হলুদে হাল্কাপাতলা গান-নাচ হতে দেখছি। তবে এখনকার ডিজে মার্কা গায়ে হলুদে এখন ও যোগ দেয়ার সুযোগ হয়নি , কিন্তু ফেসবুকের সুবাধে ছবি দেখা হয়েছে বেশ কিছু। কয়েকজনের বিয়ের ভিডিও দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল,গানের সাথে ব্যাকগ্রাউন্ডের বৈসাদৃশ্য থাকার জন্য বেশিক্ষন এই জিনিস সহ্য করা যায়না।তবে আগে হিন্দি নাচ না হলে ও বিয়ের ভিডিওতে হিন্দি গানের ব্যবহার বেশ ভালো ছিল।

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ বন্দনা,

আগে হিন্দি নাচ না হলেও বিয়ের ভিডিওতে হিন্দি গানের ব্যবহার বেশ ভালো ছিল।

হিন্দি তখন সুঁই হয়ে ঢুকেছিল, এখন ফাল হয়ে বের হচ্ছে।

আব্দুল্লাহ এ এম

সাইদ এর ছবি

দেঁতো হাসি

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

শুধু কী বিয়ের অনুষ্ঠানগুলোতে, সব ক্ষেত্রেইতো একধরনের বিজাতীয় সংস্কৃতি আমাদের উপর ভর করেছে।
এখনই ভাববার সময়। খুব বেশি দেরি হয়ে গেলে আর কিন্তু........................।
লেকাটা ভাল লেগেছে বাহে। ষাটের দশকে আমি অংপুরে ছিলাম। হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

এখনই ভাববার সময়। খুব বেশি দেরি হয়ে গেলে আর কিন্তু.

মুই তো আগে থাকি ভাবিবার আঁচ, আপনের ঘরও ভাবেন বাহে।

আব্দুল্লাহ এ এম

অতিথি লেখক এর ছবি

বাংলা গান শ্রোতাদের চাহীদা পুরণ করতে পারছে না। তাই অকেটা বাধ্য হয়ে অন্য ভাষার গান নিয়ে মাতামাতি তার সাথে খানিকটা হিড়ীক তো আছেই।

-আরাফ করিম

অতিথি লেখক এর ছবি

চাহিদার ব্যাপারটাও আপেক্ষিক। চাহিদার ট্রেন্ডটা দেশজ উপাদানমূখী করার জন্য শিল্পী, কলাকুশলী এবং মিডিয়াকে অগ্রনী ভূমিকা গ্রহন করতে হবে, সেই সাথে দেশের মানুষকেও অনুকূল সাড়া দিতে হবে।

আব্দুল্লাহ এ এম

রিয়াজ এর ছবি

বর-কনে এ বিষয়ে দায়িত্ব নিতে পারেন কিছুটা,"ছোটরা যা করার করুক" বা "বড়রা যা বলবে তাই হবে" এ মনোভাবটা না রেখে।যেহেতু তারা-ই অনুষ্ঠানের কেন্দ্রে থাকেন,তাদের কথা গুরুত্ব পাবে।তারা বাংলা গান ছাড়তে বলবে-ছোটরা এসব গানই শিখবে,এভাবে চর্চা এগুবে।

অতিথি লেখক এর ছবি

একমত।

আব্দুল্লাহ এ এম

অতিথি লেখক এর ছবি

প্রসঙ্গক্রমে বলি, রংপুরে এখন ব্যান্ড-হিন্দি-কলকাতার চটুল গান ছাড়া অনুষ্ঠান দেখা যায় না। শুধু ঘরোয়া গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানগুলোয় কিছু আঞ্চলিক গান গাওয়া হয়। আপনার বর্ণনা যেভাবে দিলেন, ঠিক সেরকম!

রাসিক রেজা নাহিয়েন

অতিথি লেখক এর ছবি

জ্বী, সেটা বুঝতে পারি।

আব্দুল্লাহ এ এম

অতিথি লেখক এর ছবি

পড়েছিলাম আগেই কিন্তু মোবাইল থেকে বাংলা লিখতে পারি না বলে মন্তব্য করতে দেরি হয় গেল। এখন মোটামুটি সচ্ছল সব পরিবারেই গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে হিন্দি গানের সাথে নাচের অনুষ্ঠান হয় আর গানের ক্ষেত্রে শিলা, মুন্নি কিংবা চামেলির মত চটুল গান প্রায়োরিটি পায়।
ইসরাত

অতিথি লেখক এর ছবি

খাইছে

নীড় সন্ধানী এর ছবি

এদেশে বিয়ের অনুষ্ঠানগুলোকে আমার কাছে মুর্তিমান উপদ্রপ মনে হয়।

নিজের মামা, চাচা, ফুপার পরিবারের উদাহরন দেই যাদের পরিবারে তিনটি অনুষ্ঠান হয়েছে কিছুদিন আগে। তিনজনই খুব সুশীল, ধার্মিক, বিজাতীয় অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে সোচ্চার। কিন্তু নিজের ছেলেমেয়ের বিয়েতে অপসংস্কৃতি রোধ করতে পারলেন না। আমি খুব বিরক্তির সাথে অনুষ্ঠানগুলোতে গিয়েছিলাম এবং তিন জনকেই প্রশ্ন করেছিলাম, যে জিনিসের বিরুদ্ধে কথা বলেন, কেন নিজের ঘরে সেই অনুষ্ঠান করতে গেলেন।

একজন বললেন, আমি এসবে নাই, ওরাই সব করেছে, খালি টাকা চেয়েছে দিয়েছি।
আরেকজন বললেন, তোমার মামী চেয়েছে আমি কি করবো? ওসব না করলে প্রতিবেশীদের কাছে মান থাকে না।
অন্যজন বললেন, আজকালকার পোলাপানের চাহিদা, কি করবো? কেউ কথা শুনলো না।

অতএব আমি বুঝলাম কেন এই কুসংস্কৃতি ক্রমবর্ধমান। সবারই অজুহাত তৈরী আছে।

কিন্তু সত্যি সত্যি চাইলে যুগের এসব অপহাওয়া বন্ধ করা সম্ভব। তার আগে নিজেকে নিজের সিদ্ধান্তের প্রতি সৎ রাখতে হবে। আমি খুব বিনয়ের সাথে বলি, আমাদের পরিবারের কোন বিয়ের অনুষ্ঠানে ওই হাওয়াকে বিন্দুমাত্র প্রশ্রয় দেইনি, তাতে আমাদের সামাজিক মান সম্মান(!) একটুও কমেছে বলে জানা নেই। চাল্লু

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

আমাদের পরিবারের কোন বিয়ের অনুষ্ঠানে ওই হাওয়াকে বিন্দুমাত্র প্রশ্রয় দেইনি

চলুক জানি, আপনার মতো অনেকেই আছেন, সে কারনেই ভরসা হারাই না।

সত্যপীর এর ছবি

সাব্বাসোভিনন্দন হাততালি

..................................................................
#Banshibir.

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

ধনিয়া ফাতা দুই আনার

এক লহমা এর ছবি

অভিনন্দন হাততালি

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- সহ ধন্যবাদ!

অতিথি লেখক এর ছবি

বাংলা গানের যে অদ্ভুত বৈচিত্র্য তা বোধহয় আর কোন ভাষার গানে পাওয়া যাবে না।এক রবীন্দ্র সংগীতের কাছেই সবকিছু মিয়্রমান হয়ে যায়,এরপর নজরুল সংগীত,ভাটিয়ালি,লালনগীতি,পল্লীগীতি,ভাওইয়া,লোকগীতি,হাছন রাজার গান সহ আরো অসংখ্য ধারা রয়েছে বাংলা গানে।আমাদের আধুনিক গান এর মানও যথেষ্ট ভালো ছিলো একটা সময়(যন্ত্র গায়ক বালাম,আরেফিন রা রাজত্ব করার আগে)আর আমি আমদের ব্যান্ড সংগীতকে ও বিশ্বমানের মনে করি,অন্তত ভারত থেকে অনেক এগিয়ে।কিন্তু এতো সমৃদ্ধ থাকার পর ও আমরা হিন্দি গানে মেতে থাকি এটা লজ্জার।ওদের প্রচার ওদেরকে বিশ্ব দরবারে আজকের অবস্থানে নিয়ে গেছে।

আমার একবন্ধু একবার আমায় বলেছিলো তুই যেইগানটা তেমন পছন্দ করিস না সেই গানটা সারাদিনে ৫০বার শোন,দেখবি তারপরের দিন তুই মনে মনে সেই গান গাইছিস।এটা কিন্তু সত্যি,সারাদিন চোখের সামনে দেখলে আর আর শুনলে তার প্রভাব পড়বেই।কারন সবাইতো স্রোতের বিপরীতে প্রথমে থেকে সাতার কাটতে শিখেনা।হিন্দি গানের একনিষ্ঠ ভক্ত যারা তারা সস্তা বিনোধনের মানুষ এটা নিয়ে আমার কোন সন্দেহ নেই।কারনটা বলি,হিন্দি ভাষা হিসাবে বেশ দুর্বল এটা জানতে খুব বেশি জ্ঞানী হওয়া লাগেনা।এখন যেমন লুঙ্গি ডেন্স এই গানটাকে বাংলা করলে কি দাড়ায়?এটা যদি বাংলাদেশে কেউ ছবিতে কিংবা অডিওতো গাইতো তাহলে সবাই নাক সিটকাতো।যেমন আসিফের ও প্রিয়া তুমি কোথায় গান শুনে যারা নাক সিটকায় তারাই আবার হিমেশের ও হুজুর তেরা তেরা(এরপরের লাইনগুলো আর জানি না)কিংবা আশিক বানায়ে গানে বুদ হয়ে থাকে।(আসিফকে উদাহারন না দিয়ে অন্য কাউকে দিতে পারতাম কিন্তু আসিফকে যারা নাক সিটকায় বলে বস্তির/অশিক্ষিত মানুষের গায়ক।সেই শিক্ষিত রাই আসিফের চেয়ে নিম্নমানের গানের কথায় গান গাওয়া হিমেশের গান শুনে হাই বলিউমে,আর এখনকার গায়ে হলুদ প্রোগারামগুলো হিন্দি গান ছাড়া হবে এমন ভাবনাটা প্রায় অসম্ভব।তাই খুব সহসায় এই আগ্রাসন থেকে আমাদের মুক্তি নেই।

মাসুদ সজীব

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

আমার জানামতেই পনের বিশটি চমৎকার বিয়ের গান আছে, গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে সে গানগুলো চমৎকার ভাবে উপস্থাপন করলে কি এমন অসুবিধা বুঝি না।

অতিথি লেখক এর ছবি

অসুবিধা হলো মানসিকতায়।একসময় আমি নিজে টুকটাক গান বাজনার সাথে জড়িত ছিলাম,কৈশোরে যেমন বেশিভাগ বাঙালি মধ্যবিত্ত ছেলেদেরে স্বপ্ন থাকে একটা গীটার আর একটা ব্যান্ড আমারো তাই ছিলো।করেছিলামও একটা ব্যান্ড ইন্টারে পড়ার সময়।সেই বয়সে একটা ব্যান্ড করা আসলে প্রায় অসম্ভব ছিলো,তবু করেছিলাম।সবি ঠিক ছিলো,সমস্যা শুরু হলো প্রোগরাম করা নিয়ে,আমি কখনো গায়ে হলুদ প্রোগরামগুলো করতে চাইতাম না,হিন্দি গান করতো হতো বলে।কিন্তু বাকী সবাই চাইতো।আমাদের ভোকাল ছিলো আমাদের বন্ধু জনি আর এখনকার মোটামুটি বিখ্যাত উপস্থাপিকা গায়িকা(নাম টা উজ্জ থাক)।সেই গায়িকা গায়ে হলুদে গিয়ে দারুন জনপ্রিয় হতে থাকলো,একটু সুন্দর হলে যা হয় আরকি খাইছে

শুরু হলো ভাঙ্গনের গান,তিনি গড়তে থাকলেন তার একক ক্যারীয়ার।আমি ও ছেড়ে দিলাম ব্যান্ড।ভেঙ্গে গেল কৈশরোর রঙ্গিন স্বপ্ন,সে এক সীমাহীন বেদনার গল্প।গায়ে হলুদ এর প্রোগরাম গুলোতে বেশি ভাগ অনুরোধ থাকে হিন্দি গানের।আমি বেদনা নিয়ে কয়েকটা প্রোগরাম করে ছেড়ে দিয়েছি,আমি দেখেছি শহর থেকে প্রত্যন্ত গ্রামে এই হিন্দি গানের কি জোয়ার,এখনো সেই আগের মতোই আছে।

মাসুদ সজীব

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।