নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ তত্বাবধায়ক অথবা অন্তবর্তীকালীন সরকারের গ্যাঁড়াকলে

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি
লিখেছেন আব্দুল্লাহ এ.এম. [অতিথি] (তারিখ: বুধ, ২৫/০৯/২০১৩ - ৪:১৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

দেশ এখন নানাবিধ নির্বাচনী বিতর্কে উত্তপ্ত। নির্বাচন হবে কি না, হলে কি পদ্ধতিতে হবে, কবে হবে, না হলে কি হবে ইত্যকার নানা আলোচনায় বাংলার আকাশ বাতাস আজ মুখরিত। এত শোরগোলের মূল কারন নির্বাচনকালীন সময়ে সরকার ব্যবস্থা কি রকম হবে, সে নিয়ে সর্বমহলে চরম মতপার্থক্য। আওয়ামী লীগ তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ইস্যুতে সুপ্রীম কোর্টের একটি রায়ের প্রেক্ষিতে সংবিধান থেকে তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অপসারন করেছে, বিএনপি তাতে রাজী নয়। তাদের দাবী, নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন না হলে তারা সে নির্বাচনে অংশ গ্রহন তো করবেই না, এমনকি নির্বাচনও হতে দিবে না। এ কথা অনস্বীকার্য যে এই পরিপ্রেক্ষিতে আগামী নির্বাচন তথা দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যত নিয়েই দেখা দিয়েছে এক চরম অনিশ্চয়তা। এমতাবস্থায় রাজনৈতিক দলগুলোই শুধু নয়, বুদ্ধিজীবি মহল, সুশীল সমাজ থেকে শুরু করে আমজনতা পর্যন্ত নানা জন নিত্যনতূন নানা রকম নির্বাচনী ফর্মুলা আবিস্কার করে চলেছেন। এ সব ফর্মুলার প্রাকটিক্যাল ইমপ্যাক্ট কি, তা একটু পর্যালোচনা করে দেখাই এই নিবন্ধের উদ্দেশ্য। তার আগে এই সংকটের প্রেক্ষাপটটা একটু ঝালাই করে নিলে বোধ হয় ভাল হয়-

সমস্যার শুরু লেজে হোমো এরশাদের সময়ে, ১৯৮৬ সালের সংসদ নির্বাচনের কার্যক্রমে। এর আগেও স্বাধীনতা পরবর্তীকালে বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে ১৯৭৩ সালে এবং জিয়াউর রহমানের শাসনামলে ১৯৭৯ সালে দুটি সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে, কিন্তু সে দুটি নির্বাচন নিয়ে সামান্য কিছু কথাবার্তা হলেও এমন বিশ্বাসহীনতার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় নি(যদিও জিয়াউর রহমান এবং এরশাদের দুটি প্রেসিডেনশিয়াল হ্যাঁ/না ভোট ছিল নির্বাচন ব্যবস্থার নামে একটা তামাশা মাত্র)। প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি'র নেতৃত্বে পনের ও সাত দলীয় জোট এরশাদের পদত্যাগের দাবীতে যুগপত আন্দোলন করে আসছিল, সে আন্দোলনের তোড়ে মাঝে মাঝেই এরশাদের গদি টলয়মান হয়ে উঠছিল। এমন পরিস্থিতিতে সংসদ নির্বাচনের ঘোষনা দিয়ে এরশাদ কতৃক এইমর্মে হুমকি দেয়া হয় যে নির্বাচনে অংশ না নিলে দেশে জরুরী অবস্থা ঘোষনা করা হবে এবং রাজনৈতিক কর্মকান্ড নিষিদ্ধ করে দেয়া হবে। দু জোটই এরশাদের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহনে অস্বীকৃত থাকলেও আওয়ামী লীগ অকস্মাৎ মত পরিবর্তন করে নির্বাচনে অংশ গ্রহন করতে সম্মত হয়, প্রতিবাদে তাদের জোট থেকে পাঁচটি বাম দল বের হয়ে যায়। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আট দলীয় জোট, জামাত এবং অন্যান্য কয়েকটি ছোট দল নির্বাচনে অংশ গ্রহন করে। বিএনপি নেতৃত্বাধীন সাত দল এবং পাঁচটি বাম দল নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করে। সারা দেশে নজিরবিহীন সন্ত্রাস, ভোট কেন্দ্র দখল, এবং ভোট জালিয়াতীর মাধ্যমে ভোটগ্রহন পর্ব সম্পন্ন করা হয়। এতদসত্বেও ভোটের ফলাফল ঘোষনার সময় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোটের জয়লাভের সম্ভাবনা দেখা দেয়। সর্বশেষ অবস্থা অনুযায়ী যখন এরশাদের জাতীয় পার্টি ৩৬টি, আওয়ামী লীগ এককভাবে ৩৬টি এবং আটদলীয় শরীকেরা আরও কয়েকটি আসনে বিজয়ী হয়ে জোটগতভাবে এগিয়ে, তখন মধ্যরাতে অকস্মাৎ ফলাফল ঘোষনা স্থগিত করে দেয়া হয়। এরপর ৭২ ঘন্টা পরে যখন পুনরায় একযোগে বাকী ফল ঘোষনা করা হয়, তখন দেখা যায় জাতীয় পার্টী নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জয়লাভ করেছে। সেই সংসদও একসময় ভেঙ্গে দিয়ে অষ্টাশি সালে পুনরায় একটি নির্বাচন দেয়া হয়, যাতে প্রধান কোন দলই আর অংশগ্রহন করে নি। বিশ্বাসহীনতার সেই শুরু। এই কারনেই একটি তত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে এরশাদের পদত্যাগের দাবী জোরদার হয়ে ওঠে এবং চুরান্ত পর্যায়ে এসে ১৯৯০ সালে এরশাদ পদত্যাগে বাধ্য হয়।

একজন নিরপেক্ষ তত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান চয়ন করা সহজ ছিল না, এ নিয়ে দুটি জোটে মতপার্থক্য এমন প্রকট হয়ে ওঠে যে সমস্ত প্রকৃয়াটি ভেস্তে যাওয়ার উপক্রম হয়। মূলতঃ উভয় জোটের সমর্থক ছাত্রনেতাদের সদিচ্ছা এবং দৃঢ়তায় শেষ পর্যন্ত শাহবুদ্দিন আহমেদের অধীনে একটি কেয়ারটেকার সরকার গঠিত হয় এবং নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। স্পষ্টতঃই কেয়ারটেকার ব্যবস্থা ছিল এরশাদ রেজিম পরিবর্তনের জন্য একটি সাময়িক ব্যবস্থা, কিন্তু বিশ্বাসহীনতার যে সংস্কৃতি, তা অটুট থাকে। প্রথমে মিরপুর এবং পরে মাগুরার উপনির্বাচনে ভোট কারচুপির সুস্পষ্ট আলামতের প্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগ পরবর্তী নির্বাচনও তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠানের দাবী করে বসে। বিএনপি দৃঢ়ভাবে সে দাবী প্রত্যাখ্যান করে এবং দলীয় সরকারের অধীনেই নির্বাচনের পথে এগিয়ে যায়। ফলাফল ১৫ই ফেব্রুয়ারীর প্রায় ভোটারবিহীন নির্বাচন। যাই হোক, শেষ পর্যন্ত তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে অন্তর্ভূক্ত করা হয় এবং ভালোয় ভালোয় পরপর দুটি নির্বাচন সে ব্যবস্থায় অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সুষ্ঠ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য যে কোন কাজেই আসে না সেটা পরিস্কার হয়ে যায় ২০০৬ সালে এসে, মাঝখান থেকে বিচার ব্যবস্থা দলীয়করনের একশেষ। তারপরও সকল দল, এমনকি আওয়ামী লীগও তত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতিই বহাল রাখার পক্ষে ছিল, কিন্তু সব কিছু গোলমাল হয়ে যায় এ সংক্রান্ত একটি রীট মামলার বিপরীতে হাইকোর্টের রায়ে। হাইকোর্ট তত্বাবধায়ক ব্যবস্থাকে সংবিধানের সংগে সাংঘর্ষিক হিসেবে রায় দেয়ার পর আওয়ামী লীগ তাদের মনোভাব পরিবর্তন করে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিল করে দেয়।

বিএনপি এ বিষয়ে প্রথম থেকেই বলে আসছে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে সে নির্বাচনে তারা তো অংশ গ্রহন করবেই না, এমনকি সেই নির্বাচনই হতে দেবে না। তারা অবশ্য সুষ্পষ্টভাবে তত্বাবধায়ক কিংবা নির্দলীয় অন্তর্বর্তী সরকারের কোন রুপরেখা প্রকাশ করে নি, বিক্ষিপ্তভাবে কখনো কখনো বলেছে পূর্বতন তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে পুনঃস্থাপন করতে হবে। এই দাবীর বিষয়টি একটু পর্যালোচনা করা যাক- ধরে নেই আওয়ামী লীগ এই দাবীটি মেনে নিল এবং তত্বাবধায়ক ব্যবস্থা সংবিধানে পুনঃস্থাপিত করলো, সেই হিসাবে তত্বাবধায়ক সরকার প্রধান হবেন বিচারপতি খায়রুল হক। বিএনপি'র কাছে কি তাঁর অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহন করবে? যদি না করতে চায়, তাহলে কি উপায়? খায়রুল হক স্বেচ্ছায় পদ গ্রহনে অস্বীকৃত না হলে তো কোন উপায় নেই কারন এটা একটা সাংবিধানিক পদ। সেক্ষেত্রে কে এম হাসানের বিরুদ্ধে যেমন আওয়ামী লীগ সর্বাত্মক আন্দোলনের পথ বেছে নিয়েছিল, বিএনপি ও কি সে পথেই যাবে? তাহলে আর তত্বাবধায়ক ব্যবস্থা সংবিধানে পুনঃস্থাপিত করে কি লাভ, এই কেওস তো পাঁচ বছর পর আবার হবে, তার পরেরবারও হবে, তার পরেরবারও। যদি বিএনপি খায়রুল হক কে মেনে নেয় এবং নির্বাচনে বিএনপি জোট হেরে যায় তাহলে কি সে ফলাফল তাদের কাছে গ্রহনযোগ্য হবে? বিচারপতিদের সবই তো দলীয় নিয়োগ বলে অভিযোগ, সুতরাং পরবর্তী নির্বাচনগুলোতেও এই সমস্যা থেকেই যাবে এবং যুগ যুগ ধরে একটি কেওস বিদ্যমান থাকবে। সবচেয়ে বড় কথা, এই ব্যবস্থা সংবিধানে পুনঃস্থাপন কতটা আইনসঙ্গত হবে? কেউ যদি এর বিরোধীতা করে একটি রীট আবেদন করে বসে, তার ফলাফল কি হবে? সুতরাং এ পদ্ধতিতে সংকট নিরসনের আদৌ কোন উপায় আছে বলে মনে হয় না, অন্য উপায় খুঁজতে হবে। বিএনপি না বললেও অন্য অনেকেই এ বিষয়ে কিছু কিছু দিক নির্দেশনা দিয়েছেন, সেগুলো একটু দেখা যাক।

টিআইবি একটি ফর্মুলা প্রস্তাব করেছিল, যার মোদ্দা কথা হলো সদস্যরা সমঝোতার ভিত্তিতে একজন সরকারপ্রধান এবং ১০ সদস্যের একটি নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করবেন। এই বিষয়ে সেই অতি প্রচলিত বচনটির কথা মনে পড়ছে, সাত মন ঘি ও জুটবে না, রাধাও নাচবে না। সমঝোতাই যদি হবে, তাহলে আর এত ঝামেলা কেন।

এর আগে প্রয়াত অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমেদ একটি প্রস্তাবে বলেছিলেন, এখনও মাঝে মাঝে কেউ কেউ সে রকমটা বলেন- সবার সম্মতির ভিত্তিতে নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের একটি তালিকা প্রস্তুত করা হবে, তত্বাবধায়ক সরকারে যারা থাকবেন, তাদের অনুকূলে কয়েকজন সাংসদ পদত্যাগ করবেন, আর নির্দলীয় ব্যক্তিরা সেসব আসন থেকে নির্বাচন করে জয়ী হয়ে আসবেন। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী অনির্বাচিত ব্যক্তিবর্গ যাতে সরকার করতে না পড়েন, তাই এই তেলেসমাতি ব্যবস্থা। নির্বাচন যেন একটা তামাশার বিষয়।

ডক্টর আকবর আলি একটি ফর্মুলা দিয়েছেন, তা নিম্নরুপ-
১. ১৯৯৬ সালের তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থার মতো তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করতে চাইলে রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের কাছে এ বিষয়ে নির্দেশনা বা পরামর্শ চাওয়া হবে।
সুপ্রিম কোর্ট যদি এই মর্মে পরামর্শ বা নির্দেশনা দেয় যে তত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা সংবিধানের সংগে সাংঘর্ষিক, সুতরাং অগ্রহনযোগ্য, তাহলে কি সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে? কিংবা যদি বলে দুটি মেয়াদের জন্য এটা চলতে পারে, তাহলেও কি সমস্যার নিরসন হবে? সে ক্ষেত্রে সেই দুটি মেয়াদে তত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান কে হবেন সেটা কি আদৌ নিরুপন করা সম্ভব হবে?

২. দু’দল থেকে পাঁচ জন করে নিয়ে ১০ জনের মন্ত্রিসভা গঠন করা। কিন্তু সরকারি দল থেকে কারা নির্বাচিত হবেন সেটা নির্ধারণ করবে বিরোধী দল। অন্যদিকে, বিরোধী দল থেকে কারা নির্বাচিত হবেন সেটা নির্ধারণ করবে সরকারি দল।
এ প্রস্তাবের সমস্যা হলো দু দল ছাড়াও আরো যে সব দল সংসদে প্রতিনিধিত্ব করে যেমন জাপা, জামায়াত, তাদের ব্যাপারে কি সিদ্ধান্ত? সে জটিলতার কি সহজ কোন সমাধান আছে? সরকারের প্রধান কোন দল থেকে হবে, মন্ত্রণালয়গুলোর দায়িত্ব বন্টনে কি পদ্ধতি অনুসরন করা হবে, সে বিষয়ে মতপার্থক্য হলে(মতপার্থক্য যে হবে সে বিষয়ে তো কোনই সন্দেহ নাই) তার সুরাহাই বা হবে কি ভাবে? তা ছাড়া আমার দলের সদস্যদের আমি মনোনিত করতে পারবো না, করবে বিপক্ষ দল, এ ব্যবস্থা কোন দলের কাছে গ্রহনযোগ্য হবে? বলাইবাহুল্য, এই ব্যবস্থা আদতে একটি দীর্ঘমেয়াদী কেওস সৃষ্টি করবে।

৩. দুই দলই ১০ জন করে মোট ২০ জন দল নিরপেক্ষ সদস্যের তালিকা দেবে। উভয় দলের ৫ জন করে মোট ১০ জন সদস্য নির্বাচন করবে সংসদ। এই ১০ জনের মধ্য থেকে আলোচনার মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান গঠন করা হবে, প্রয়োজনে লটারি করে সরকার প্রধান নির্বাচিত করা হবে।
এই দল নিরপেক্ষ ব্যক্তিগন যদি উপ নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত না হয়ে আসেন, তাহলে সম্ভবতঃ সুপ্রীম কোর্টের রায়ের পরিপন্থী হবে, আর তাদের যদি একটি সমঝোতার মাধ্যমে উপনির্বাচনে জয়ী করে আনার ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়, এবং সেই নির্বাচনে যদি স্থানীয় কোন জনপ্রিয় কেউ খাড়ায়া যায়, তাহলে কি তাকে পুলিশ ও পেটোয়া বাহিনী দ্বারা পিটাইয়া জোরপূর্বক বসাইয়া দেওয়া হইবেক? নির্বাচন কি একটা তামাশার বিষয়?

৪. যদি শীর্ষ দুই দলের মধ্যে সমঝোতা না হয়, তাহলে বিরোধী দল প্রস্তাব দেবে তারা কোন কোন উপায়ে নির্বাচন করতে চায়। এসব প্রস্তাবের ওপর জনগণ তাদের পছন্দের পদ্ধতি নির্ধারণে গণভোট দেবে।
সেই নির্বাচন পরিচালনা করবে কে? বর্তমান নির্বাচন কমিশন? অনেকে অনেক বার বলা সত্বেও বিএনপি এখন পর্যন্ত সুস্পষ্টভাবে নির্বাচনকালীন কোন পদ্ধতির প্রস্তাব করে নি। যদি তারা একটি বা একাধীক ফর্মুলা সহ কোন রুপরেখা প্রস্তাব করে, ভোটাভুটির সময় সংগত কারনেই সেখানে একটি "না" ভোটের প্রভিশনও থাকা প্রয়োজন যাতে সেসব প্রস্তাবের কোনটি গ্রহনযোগ্য না হলে সে মতামত দেয়া যায়। জনগনের ভোটে যদি "না" জয়যুক্ত হয়, তাহলে কি বিএনপি সেই ফলাফল মেনে নিবে? তা ছাড়া শুধু বিরোধী দল, মানে বিএনপি প্রস্তাব দেবে? অন্য দলগুলোর কোন প্রস্তাব দেয়ার ক্ষমতা থাকবে না? বর্তমান সংসদে সবচেয়ে বেশী আসনে নির্বাচিত দল হিসেবে আওয়ামী লীগেরও তো একটি প্রস্তাব থাকতে পারে, সে প্রস্তাবটি গোনার মধ্যে ধরা হবে না?

এরশাদ চাচা ক্ষনে ক্ষনে সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের জন্য বিশেষ সুপরিচিত, তাই তার কোন কথা সিরিয়াসলি নেয়া খুব মুশকিল। তবু তার অতি সাম্প্রতিক একটি প্রস্তাবনা অনেকের নাকি বেশ মনে ধরেছে, তা হলো- নির্বাচন হবে দলীয় ভিত্তিতে, প্রার্থীর ভিত্তিতে নয়। একটি দলের প্রাপ্ত মোট ভোটের আনুপাতিক হারে সে দলের সাংসদ সংখ্যা নির্ধারিত হবে। অর্থাৎ কোন দল চল্লিশ শতাংশ ভোট পেলে তাদের এক শ বিশ জন সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত হবেন, কোন দল দশ শতাংশ ভোট পেলে তাদের ত্রিশ জন। এইটা হলে বোধ হয় এরশাদের মনোনয়ন বানিজ্যে খুব সুবিধা হয়, এমনিতেই যেখানে মনোনয়ন দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া যায়, সেখানে নিশ্চিতভাবে এমপি হতে লোকে তো টাকার গাছ নিয়ে হাজির হবে তার কাছে।

এতসব নানা প্রস্তাবের বিপরীতে আওয়ামী লীগ ও চৌদ্দ দলের বক্তব্য হলো- যেহেতু বিচার বিভাগ তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নাকচ করে দিয়েছে, যেহেতু তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থায় বিবিধ ভয়াবহ সমস্যার সৃষ্টি হয়, যেহেতু গণতন্ত্রের মডেল রাষ্ট্রগুলোর কোথাও তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিদ্যমান নেই, যেহেতু তাদের দলীয় সরকারের অধীনে কয়েকহাজার স্থানীয় সরকার নির্বাচন এবং কয়েকটি সংসদীয় আসনে অত্যন্ত নিরপেক্ষতার সাথে সফলভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেহেতু মিডিয়া এবং জনগন এখন অত্যন্ত সজাগ, সুতরাং দলীয় সরকারের অধীনেই এখন সুষ্ঠভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব। সেটা আসলেই সম্ভব কি না, নির্বাচন সন্তোষজনকভাবে সম্পন্ন না হলে কি হবে, এমনকি নির্বাচন সম্পূর্ন নিরপেক্ষ ভাবে হলেও তার কি প্রতিক্রিয়া হবে সে সবই এখন কোটি টাকার প্রশ্ন।

টিআইবি'র মূল্যায়ন হলো নব্বই পরবর্তী যে কটি নির্বাচন এ দেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে, তার মধ্যে তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনগুলোই শুধু গ্রহনযোগ্যতা পেয়েছে, দলীয় সরকারের সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচন(১৫ই ফেব্রুয়ারী কিংবা এরশাদের আমলের নির্বাচনগুলো) বৈধতা পায় নি। সুতরাং দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে তা সকল পক্ষের কাছে গ্রহনযোগ্য হবে না। অন্যান্য সুধীমহল, যাঁরা কোন না কোন ধরনের নিরপেক্ষ একটি নির্বাচনকালীন সরকারের পক্ষপাতি, তাঁরাও একই মনোভাব পোষন করেন। তবে তত্বাবধায়ক ব্যবস্থায় নির্বাচনও যে সবসময় সকল পক্ষের কাছে গ্রহনযোগ্য ছিল, তাও বলা যায় না। নব্বই এবং দু-হাজার এক সালে হাসিনার সুক্ষ্ম ও স্থুল ষড়যন্ত্র তত্ব এবং ছিয়ানব্বই ও দু-হাজার আটে খালেদার দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্র তত্ব স্মর্তব্য। সুশীল সমাজ অবশ্য আরো বলে থাকেন, গত বিশ বছরে রাজনৈতিক সরকারগুলো দেশের প্রশাসন ও বিচার ব্যবস্থা সম্পূর্নভাবে ধংস করে ফেলেছে। এই কথাটি অতীব তাৎপর্যপূর্ন, এবং তা কমবেশী সত্যও বটে। তবে মজার বিষয় হলো গত বিশ বছরে যারাই ক্ষমতায় এসেছে, তারা তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের মাধ্যমেই এসেছে। সুতরাং তত্বাবধায়ক ব্যবস্থাও এ দেশে সরকার পরিবর্তনে মোটামুটি একটি ভূমিকা রাখতে সমর্থ হলেও সার্বিক গণতন্ত্রের বিকাশে কোন ভূমিকা তো রাখতে পারেই নি উপরন্তু প্রশাসন ও বিচার ব্যবস্থায় দলীয়করনের চুরান্ত করে ছেড়েছে। রাজনৈতিক অঙ্গনের মানহীনতাও ভয়াবহ। জাতীয় পর্যায়ের উচ্চ স্তর থেকে শুরু করে তৃনমূল পর্যন্ত যারাই রাজনীতি করেন, গুণগত কিংবা নৈতিক মানদন্ডে ক্রমাগত অবক্ষয়ের ধারাই প্রবাহমান। এই নীতিহীন ও গুণমানশূন্য সহিংস গনতন্ত্রের ধারা থেকে পরিত্রানের উপায় কি, সে বিষয়ে তো কারো কোন উচ্চবাচ্য দেখি না।


মন্তব্য

প্রান্তিক রহমান এর ছবি

সমস্যার কোন সমাধান নেই। তবে যেইটুকু বুঝতেসি লীগের আন্ডারে বিএনপি নির্বাচন করে ক্ষমতায় আসবে এবং ২০১৯ এর নির্বাচনের সময় লীগকে নিজের থুতু নিজেরি চেটে খেতে হবে।

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

তার মানে দলীয় সরকারের অধীনেই ভাল একটা নির্বাচন সম্ভব?

প্রান্তিক রহমান এর ছবি

এই বিষয়টা আসলে বোঝা যাচ্ছে না। লীগের দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের জন্য এত উতলা হওয়ার কোন কারন খুজে পাচ্ছি না। ২০১৮-১৯ এর সময় আবার কেয়ারটেকারের জন্য আন্দোলন করতে হবে সেইক্ষেত্রে। সেইসময় জনগনকেও পাশে পাবে না । লীগের কার্যকলাপ দেখে মনে হচ্ছে তারা যেকোন প্রকারেই ক্ষমতায় থাকতে চাচ্ছে। তাদের অধীনে আগে কখনো কারচুপি হয় নাই বলে এবার জাতীয় নির্বাচনেও হবে না এই কথা বিশ্বাস করার মত মানুষ বাংলাদেশে খুজে পাওয়া খুবই মুশকিল।

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

আপনি আসলে ঠিক কি ভাবছেন, সেটাই বুঝলাম না। প্রথমে বললেন "লীগের আন্ডারে বিএনপি নির্বাচন করে ক্ষমতায় আসবে"। এটা তখনই সম্ভব যখন নির্বাচন হবে ফ্রী এ্যান্ড ফেয়ার, অর্থাৎ এই আওয়ামী লীগের অধীনেই একটি গ্রহনযোগ্য নির্বাচন হবে। আবার বললেন "তাদের অধীনে আগে কখনো কারচুপি হয় নাই বলে এবার জাতীয় নির্বাচনেও হবে না এই কথা বিশ্বাস করার মত মানুষ বাংলাদেশে খুজে পাওয়া খুবই মুশকিল।" তা যদি না ই হবে, তাহলে আর বিএনপি ক্ষমতায় আসবে কিভাবে?
আপনি বলেছেন "লীগের দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের জন্য এত উতলা হওয়ার কোন কারন খুজে পাচ্ছি না"। আপনার মতে তাহলে কি পদ্ধতিতে নির্বাচন হওয়া উচিৎ, ফর্মুলাটা একটু ব্যাখ্যা করবেন প্লিজ?

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

ধরে নেই আওয়ামী লীগ এই দাবীটি মেনে নিল এবং তত্বাবধায়ক ব্যবস্থা সংবিধানে পুনঃস্থাপিত করলো, সেই হিসাবে তত্বাবধায়ক সরকার প্রধান হবেন বিচারপতি খায়রুল হক। বিএনপি'র কাছে কি তাঁর অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহন করবে? যদি না করতে চায়, তাহলে কি উপায়? খায়রুল হক স্বেচ্ছায় পদ গ্রহনে অস্বীকৃত না হলে তো কোন উপায় নেই কারন এটা একটা সাংবিধানিক পদ। সেক্ষেত্রে কে এম হাসানের বিরুদ্ধে যেমন আওয়ামী লীগ সর্বাত্মক আন্দোলনের পথ বেছে নিয়েছিল, বিএনপি ও কি সে পথেই যাবে?

উত্তর টা বিএনপি ভাল দিতে পারত... তবে, কে এম হাসানের যেমন সরাসরি দলীয় পদ-পরিচয় ছিল, খায়রুল হক সাহেবের কি তেমন কোনও ব্যাকগ্রাউন্ড আছে?

আকবর আলী খান সাহেবের ২ নম্বর পয়েন্টে আরো একটা ভয়ঙ্কর অসঙ্গতি দেখতে পাচ্ছি... অনেক নিন্দিত "৭০ অনুচ্ছেদ" আনা হয়েছিল 'ফ্লোর ক্রসিং' ঠেকাতে... সে সুযোগটা নতুন ভাবে দেবার প্রয়াস হয়ে গেল কি?

ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট নিয়ে বিশাল গোছানো লেখা, আবার পড়ে আসি হাসি

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

খায়রুল হক সাহেবকে বিএনপি কে এম হাসানের চেয়েও বেশী দলীয় বলে মনে করে বলেই তো মনে হয়।

গৃহবাসী বাঊল এর ছবি

এই মিনিট বিশেক আগে চিন্তা করতেছিলাম তত্ত্বাবধায়ক জিনিস্টা নিয়া কেউ লেখে না কেন? কারে গুতান যায়? মাথায় কয়েকটা নাম ছিল। আইসা সচল খুলতেই দেখি এইটা নিয়া লেখা। কি দিনকাল পড়ছে।
লেখা পড়িনাই। পইড়া আইসা দরকার পড়লে আবার কমেন্টাইতাছি। লেখছেন এইজন্য ধইন্যা

গৃহবাসী বাউল এর ছবি

কয়েকটা প্রশ্নঃ

১।

সর্বশেষ অবস্থা অনুযায়ী যখন এরশাদের জাতীয় পার্টি ৩৬টি, আওয়ামী লীগ এককভাবে ৩৬টি এবং আটদলীয় শরীকেরা আরও কয়েকটি আসনে বিজয়ী হয়ে জোটগতভাবে এগিয়ে, তখন মধ্যরাতে অকস্মাৎ ফলাফল ঘোষনা স্থগিত করে দেয়া হয়। এরপর ৭২ ঘন্টা পরে যখন পুনরায় ফল ঘোষনা করা হয়, তখন দেখা যায় জাতীয় পার্টী নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জয়লাভ করেছে।

এই ঘটনাটা আমি আজকে প্রথম জানলাম। অথচ, একানব্বই আর ছিয়ানব্বইয়ের নির্বাচনে বিএনপি'র একটা জনপ্রিয় স্লোগান ছিল "ছিয়াশির বেঈমান, চশ্মা পড়া বুবুজান"। আওয়ামীলিগ এইটা নিয়া উচ্চবাচ্য করে না কেন? তারা কেন এই ঘটনা খুলে বলে না? কাগুর এইসব ইতিহাস তো নতুন প্রজন্ম জানেই না, বরং অনেকে মনে মনে কাগুরে সাপুটও করে।

২।

প্রথমে মিরপুর এবং পরে মাগুরার উপনির্বাচনে ভোট কারচুপির সুস্পষ্ট আলামতের প্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগ পরবর্তী নির্বাচনও তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠানের দাবী করে বসে।

আওয়ামিলীগের আগের টার্মে এমন কোন ঘটনা কি ঘটসে যেইটা নিয়া বিএনপি এখন খোঁটা দিতে পারে? উপনির্বাচনে কারচুপি, জাল ভোট অর সাম্থিং লাইক দ্যাট? লীগের এই টার্মে তো সব নির্বাচন মোটামুটি সহিহ তরিকায় যথাযোগ্য উতসাহ-উদ্দীপনা ও ভাব গাম্ভীর্যের সাথেই হইতে দেখলাম?

৩।

হাইকোর্ট তত্বাবধায়ক ব্যবস্থাকে সংবিধানের সংগে সাংঘর্ষিক হিসেবে রায় দেয়ার পর আওয়ামী লীগ তাদের মনোভাব পরিবর্তন করে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিল করে দেয়।

এই রিট কি আওয়ামী লীগের কেউ করছিল? হাইকোর্টের আদেশ যদি একটা দল মানতে পারে তাহলে আরেকটা দলের মানতে সমস্যা কোথায়? হাইকোর্ট তো আর দল দেখে রায় দেয়নাই? নাকি দিছে? ইয়ে, মানে...

৪।

বিএনপি এ বিষয়ে প্রথম থেকেই বলে আসছে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে সে নির্বাচনে তারা তো অংশ গ্রহন করবেই না, এমনকি সেই নির্বাচনই হতে দেবে না।

তারা যদি এমন কিছু করে তাহলে এইটা তো হাই কোর্টের রায়ের সুস্পষ্ট অবমাননা। সেই ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আদালত কি তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিতে পারে না? আর বিএনপিরই যদি এই রায় নিয়ে দ্বিধা থাকে, তাহলে তারা কি এই রায়ের বিরুদ্ধে আপীল বা অন্য কিছু করতে পারে না? নির্বাচন হতে না দেওয়া তো গায়ের জোরের কথা হইল। অনেকটা "আমারে খেলায় নিবি না? যাহ, মাঠ কোপাইয়া ধানখেত বানাইলামু" টাইপের জিদ হইল।

৫।
অনেকে অনেকগুলি মতামত দিছেন দেখলাম। প্রচুর কষ্ট করছেন, পায়ের প্রচুর ঘাম মাথায় উঠাইছেন। এত কিছু করার কি দরকার আছে আদৌ? এই ভাবে মতামত দেওয়া, বা হাইকোর্টের রায়ের বাইপাস সার্জারী করার এখতিয়ার কি কারো আছে? যতগুলি তত্ব দেখলাম, একটাও তো খুব একটা স্ট্রুং না? কোনও না কোনও ভাবে দুই দলরে এক বানানোর ফন্দি। দুই দল কি কখনো এক হবে? বিশ্বে কোন দেশে কি সেইটা সম্ভব? দুইটা ভিন্ন আদর্শের দুইটা রাজনৈতিক দল কি কখনো এইভাবে এক হইছে বা হওয়া সম্ভব? আমি তো নর্থ আম্রিকায় থাকি, এইখানে তো এত ভদ্রলোক থাকা সত্বেও সম্ভাবিলিটি নাই বললেই চলে।

নাদান বালকের এহেন বালখিল্যময় প্রশ্নের জন্য খেমা করবেন। পরে মাথায় আরো প্রশ্ন আসলে করে যাব।
অনেক ধন্যবাদ।

-----------------------------------------------------------
আঁখি মেলে তোমার আলো, প্রথম আমার চোখ জুড়ালো
ঐ আলোতে নয়ন রেখে মুদবো নয়ন শেষে
-----------------------------------------------------------

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

১। বিএনপি এবং নির্বাচনে অংশ না নেয়া বাম দলগুলো(জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি) সেই নির্বাচনকে পাতানো বলে প্রমান করতে যথাসাধ্য প্রচার চালিয়েছে, এবং বলা যায় সফলই হয়েছে।

৩। হাইকোর্ট এ রিতকারি আওয়ামী লীগের কেউ নয়, তাতে কি? বিচারে তাল গাছ কে না চায়?

অতিথি লেখক এর ছবি

আমার সোজা কথা, আওয়ামী লীগের উচিত ছিলো কোর্টের রায়টা পুরোপুরি মেনে চলা, যেখানে পরিষ্কার লেখা আছে- আগামী দুইটি নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করা যেতে পারে।

-এস এম নিয়াজ মাওলা

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

কোর্টের রায়ের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হলো- তত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি সংবিধানের পরিপন্থী, তবে সংসদ চাইলে আগামী দুটো টার্ম এ ব্যবস্থায় নির্বাচন হতে পারে, কিন্তু বিচার বিভাগকে এই ব্যবস্থার বাইরে রাখতে হবে। আমার প্রশ্ন- সংসদ কি সেটা চাচ্ছে?
আর সংসদ চাইলেও সরকারের রুপরেখা কি হবে? কারা হবেন সে সরকারের সদস্য? কে হবেন সে সরকারের প্রধান? এ পর্যন্ত যে সকল প্রস্তাবনা দেখেছি, তাতে তো সংকট নিরসনের কোন সম্ভাবনা দেখছি না।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।