চিলতে ইতিহাস ১:
স্হান: শেরপুর জেলার সীমান্তবর্তী গ্রাম কামালপুর।
বকসিগঞ্জ-জামালপুর-টাঙ্গাইল-ঢাকা মহাসড়কের প্রবেশপথ কামালপুরের বিওপিতে ছিল পাকিস্তানীদের শক্তিশালী ঘাঁটি।এই ঘাঁটিতে আক্রমণ করে সেটা নিজেদের দখলে আনতে যে জিনিসটার সবচে' বেশি প্রয়োজন ছিল তার নাম দুর্জয় সাহস।
সময়কাল: ১৯৭১ এর ৩০ জুলাই দিবাগত রাত ৩:৩০ মিনিট। গাইডের ব্যর্থতায় সময় মত অকুস্হলে না পৌঁছাতে পারা, 'আর্টিলারি ফায়ার সাপোর্ট প্ল্যান' ভেস্তে যাবার মাশুল গুনতে হয়েছিল সেদিন সেই আক্রমণে কোণঠাসা হয়ে পড়া বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বেশ কয়েকজনের জীবন দিয়ে।
ক্যাপ্টেন সালাউদ্দিন মমতাজ, কামালপুর অপারেশনে অংশ নেয়া অসীম সাহসী বীরদের একজন যিনি নিজের রক্ত লাল সবুজ পতাকাটির জন্য উৎসর্গে এতটুকু ভীত না হয়ে সহযোদ্ধাদের উদ্দেশ্যে বলে যান: " খোদার কসম তোরা কেউ পিছু হটবি না। ....মরতে হয় শত্রুদের মেরে মর। বাংলাদেশের মাটিতে মর।"
চিলতে ইতিহাস-২
"We are fighting a just war. We shall win. Pray for us all. I don’t know what to write.. ..there is so much to write about. But every tale of atrocity you hear, every picture of terrible destruction that you see is true. They have torn into us with a savagery unparalleled in human history. And sure as Newton was right, so shall we too tear into them with like ferocity."
ইংরেজি অংশটুকু একটা চিঠির। যা একাত্তরের রণাঙ্গন থেকে শাফি ইমাম রুমী লিখেছিলেন তাঁর ইংল্যাণ্ড প্রবাসী মামা সৈয়দ মোস্তফা কামাল পাশাকে।
পাঠক ভাবছেন এই লেখার সাথে ইতিহাসের স্মৃতিচারণের সম্পর্ক কী? একদম নেই বলছেন? জাতি হিসেবে আমরা বড্ড ভুলোমনা। তাই সময় সুযোগ পেলেই এমন ইতিহাসকে টেনে সামনে আনতে হয়। এ কথা বার বার মনে করিয়ে দেবার জন্য, যে আমাদের এমন লাখো ইতিহাসের চিলতের কোলাজে পাওয়া পতাকা কাদের আত্মত্যাগের দান। কত দামে পাওয়া আমাদের মায়ের ভাষা, আমাদের স্বাধীনতা আর লাল সবুজের ঐ পতাকা।
এই পতাকা নিয়ে যে দলটি বিশ্বের ক্রিকেট দরবারে বাংলা নামের দেশটির প্রতিনিধিত্ব করছে তাদের প্রতিটি পদক্ষেপেই যেন এই ইতিহাসকে ধারণের সততা থাকে, মমতা থাকে। যে মায়ের বদন মলিন হলে সন্তানের চোখে জল আসে, সেসব সন্তানেরা যেন মায়ের মলিন মুখে হাসি ফোটাবার দুর্জয় আকাঙ্খায় অটল থাকে। নিজের ভাষার জন্য পৃথিবীতে খুব কম জাতিকেই বুকের রক্ত দিতে হয়েছে। আমরা সেই গর্বিত জাতি। এমন বীরত্ব গাথাঁর উত্তরসূরী হবার যোগ্যতা পেয়েছি আমরা। বিশ্বকাপ ক্রিকেটে অংশ নেয়া আর ক'টা দেশের আছে এমন গর্ব করার মত ইতিহাস??? বিশ্বকাপের বাইরেও এমন দুর্লভ গর্বের দেশ তেমন বেশি একটা নেই। খেলা শুরু হচ্ছে এই ভাষার মাসের হাত ধরে...যার ইতি ঘটবে আমাদের স্বাধীনতার মাসে গিয়ে। এমন একটা মুহূর্তে বাংলাদেশের কোটি মানুষের শুভকামনা তোমাদের জন্য।
পৃথিবীর আরো কত উন্নত দেশ আছে যাদের সৌভাগ্য হয়নি এখনও এই খেলাতে অংশ নেবার। তোমাদের হয়েছে। সেজন্য গর্বিত আমরা। হ্যাঁ আমরা গর্ব করিই বলতে পারি... “ঐ যে খর্বাকৃতির ছেলেটি, ও আমার ভাই, ও আমার বন্ধু, সে আমার বাংলাদেশের সন্তান!”
এই বলাতে কতটা গর্ব, কতটা ভালোবাসা মিশে থাকে সেটার সুখ অনুভবের সৌভাগ্য তারা কখনোই পাবে না, সেই সব কুসন্তান যারা বাংলাদেশের আলো হাওয়ায় বেড়ে ওঠে পাকিস্তানের মতো জন্ম শত্রুর গলায় মালা দেবার জন্য হন্যে হয়ে থাকে। তাদের প্রতি " শোনো ধিক্কার আজ ঘৃণার যেন কখনো ক্ষমা না করে আমার শহীদ মিনার।" বাংলাদেশকে নিজের দেশ বলাটাও এদের জন্য নির্লজ্জতার চূড়ান্ত। এসব নির্লজ্জদের সাত কাহনে তোমরা বিভ্রান্ত হয়ো না ভাইয়েরা আমার, বন্ধুরা আমার!
মাঝে মাত্র কিছু ঘন্টা বাকি বিশ্বকাপ ক্রিকেটের পর্দা ওঠার। খেলাও কিন্তু এক রকমের যুদ্ধ। ভেতো বাঙ্গালির পক্ষে যুদ্ধ জয় যে অসম্ভব নয়, একাত্তর তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ!
খেলাতে জয় পরাজয় আছে। জয়ে আত্মহারা হয়ে ভেসে যাবার যেমন সময় পাওয়া যাবে। একইভাবে হেরে গিয়ে মাটির সাথে মিশে যাবারও কিছু নেই। শুধু চাওয়া, খেলেই যেন জয় পরাজয়টা নির্ধারিত হয় ভাইয়েরা! কোনোভাবেই পিছু হটো না প্লিজ! মনে রেখো, মা কিন্তু স্বপ্ন দেখছেন, তাঁর খোকারা টগবগিয়ে রাঙা ঘোড়ায় চেপে যুদ্ধ শেষে ফিরে আসবে রাঙাধূলো উড়িয়ে। চেয়ে আছেন সালাউদ্দিন, তিনি তাঁর জ্বলজ্বলে চোখ মেলে অধীর হয়ে তাকিয়ে আছেন তাঁদের সন্তানেরা জয়ের জন্য কোনো কাপূর্ণ্য দেখাচ্ছে কিনা!
আমাদের প্রতিটি সূর্যোদয় আর সূর্যাস্তে দেশের জন্য জীবন দেয়া সালাউদ্দিন, রুমী, আজাদের মত লক্ষ শহীদ ঘাসের সবুজ হয়ে, পতাকার লাল নিয়ে বার বার ফিরে আসেন এই বাংলায়, ধানসিঁড়িটির তীরে। তোমরা ফিরে এসো খেলা শেষের একটা সুন্দর সমাপ্তি নিয়ে। এই আগুনে পোড়া সময়ের বাংলাদেশের কোটি প্রাণ তোমার জন্য শুভকামনা জানাচ্ছে। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা প্রতিটা বাংলাদেশি একটাই পতাকার প্রতি তীব্র ভালোবাসা নিয়ে তোমাদের জন্য প্রার্থনায় নতজানু জেনো। শুভ হোক! মঙ্গল হোক!!
সূত্র:
১। "বিজয়ী হয়ে ফিরব নইলে ফিরবই না" মেজর কামরুল হাসান ভূঁইয়া
২। উইকি
৩। ইউটিউব
মন্তব্য
খেলার সাথে রাজনীতি মেশাবেন না
-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
টাইগারদের জন্য শুভকামনা।
-পিয়াল
শুভকামনা জারি থাকুক পিয়াল
শুভ কামনা টীম বাংলাদেশের জন্য ।
মহাবিশ্বের পরিব্রাজক
পরিব্রাজকের শুভকামনা উড়ে যাও কাঙ্খিত গন্তব্যে।
শুরু থেকে শেষ অসম্ভব সুন্দর।
গানটি বাড়তি পাওনা, বন্ধু আর সহকর্মীদের জন্য ফেবুতে শেয়ার করলাম।
-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু
আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে
আমি না, ওরা বরং বলুক
ঠিক বললেম কিনা আপু?
অবশ্যই শেয়ার করবে, সুন্দর জিনিস সবার সাথে শেয়ার করলে তার আনন্দ পায়ে নূপুর বাজিয়ে নাচতে শুরু করে কিন্তু!
ঠিক। সুন্দর জিনিস শেয়ার করলে আনন্দ বাড়ে শতগুণ। শুভকামনা।
-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু
আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে
" খোদার কসম তোরা কেউ পিছু হটবি না। ....মরতে হয় শত্রুদের মেরে মর। বাংলাদেশের মাটিতে মর।"
জাতি হিসেবে আমরা গোল্ডেন ফিস মেমোরির অধিকারী। সেটা আর বলতে হয়?লাখো শহীদের উদ্দেশ্যে আজকে মনে মনে পলাশ আর কৃষ্ণচূড়া অর্পন করলাম ।
----------------
রাধাকান্ত
শ্রদ্ধা অর্পণের নিষ্ঠাকে শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিকতায় না বেঁধে, অন্তরে ধারণ করলেই দেখবেন সব ঠিকঠাক।
এটা একা শুধু আমারই আহ্বান না। কোটি বাঙ্গালির, না শুনে যাবে কোথায়!
বিশ্বকাপটা এনে দেও, এমন অদ্ভূত বায়না তো ধরিনি, শুধু সুন্দরভাবে খেলে আসুক এটাই প্রার্থনা।
গানটা সত্যি অসাধারণ!
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
ক্রিকেটের সোনার ছেলেরা আপনার আহবান শুনতে পেলে মনে হয় ভালো হতো। আজাদের জন্য গাওয়া গানটা শুনে বুকের ভেতর তীব্র আবেগ ভর করলো। এই গানটা আগে শুনিনি। চেতনার মাসে চমৎকার একটি পোস্টের জন্য ধন্যা
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
মেজর কাম্রুল হাসান ভুঁইয়ার সাথে সামনাসামনি কথা বলার সৌভাগ্য হয়েছিল। অসাধারণ একজন মানুষ। যত ভাল লিখেন তারথেকেও ভাল বলেন। তন্ময় হয়ে শুনতে হয়। বইটা সংগ্রহে আছে, সবারই পড়া উচিৎ। এত ত্যাগের বিনিময়ে পাওয়া এই দেশের খেলার সময় যখন পাকী বীর্যে উৎপন্ন কিছু জারজ পাকিস্তান সমর্থন করে, গালে পাকিস্তানের পতাকা লাগায় তখন ঘৃণায় শরীর কেঁপে উঠে। কিভাবে সম্ভব?
নামহীন অতিথি, দয়া করে লেখকের নামটা শুদ্ধ করে লিখুন ভাই/বোন।
আপনার এমন সৌভাগ্যে আনন্দ এবং ঈর্ষা দুটোই কাজ করছে কিন্তু!
শুনেছিলাম তিনি অসুস্হ এখন কী অবস্হা জানা আছে?
জানিনা রে কিভাবে সম্ভব! শুধু বলি খোদা তাদের হেদায়ত করুন।
ইনি ছেলেছোকরাদের সাথে আগ্রহ ভরে কথা বলতে পছন্দ করেন। প্রতি বইমেলাতেই এই ভদ্রলোকের সাথে দেখা হত, কখনও টুকটাক কথা। (একবার তো আগেরদিনের কথোপকথন পরদিনের পত্রিকায় ছেপে দিয়েছিলেন।) এইবারই প্রথম ওনাকে বইমেলায় দেখিনি। অসুখের খবর জানা ছিলনা। সুস্থ হয়ে উঠুন তাড়াতাড়ি, এই কামনা থাকল।
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
আমার কাছে মনে হয় যারা ম্যাচ তারা ছাড়া আর যেকোন খেলোয়াড়ই হারতে ঘৃণা করে।বাংলাদেশ ক্রিকেটের একটা খারাপ সময় যাচ্ছে।বোর্ড, কোচ,ম্যানেজার,অধিনায়ক,দলের সেরা খেলোয়াড় সবার মদজ্যেই কেমন জানি দূরত্ব আছে বলে আমার মনে হয়।আমি তাই আশাবাদী নই,কিন্তু আমার আশংকা ভুল হোক তাই চাই।
খারাপ সময় যাওয়া মানে সামনে ভালো সময়ের আসা কিন্তু!
ভালোটাতেই ভরসা রাখি আসুন
বাংলাদেশ ক্রিকেক দলের জন্য শুভকামনা।
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জন্য শুভকামনা।
দিদিগো, 'ক্রিকেট' বানানটা কিন্তু আমি পারি!
শুভকামনা বাংলাদেশ দলের জন্য, বাংলাদেশের জন্য
দেবদ্যুতি
এমুহূর্তে শুভকামনার কোনো বিকল্প নেই দেবদ্যুতি।
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জন্য শুভকামনা রইল।
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জন্য শুভকামনা রইল।
ভাবলেম মুক্তিযুদ্ধ ঢোকালে পাবলিকে খাবে বেশি বেশি! হিটেহিটাকার হয়া যাবে পুস্ট।
হলু কৈ রে! পাবলিকে দেখি এসব খায় না আর
হেহেহেহে ...পুরো কাপে হেরে তামা তামা হইলে কাচ্চি পার্টি হবে কিন্তু!
আমাদের পাড়ায় এক ভারতীয় প্রতিবেশির বাড়িতে পূজা ছিল।
দেশের জন্য দোয়া চেয়ে দাওয়াত করেছিলেন আন্টি। ওঁর হাতে দৈ চাট সেরাম মজার।
কিন্তু যাওয়া ঠিক হবে না বলে আর যাইনি। ঘরে বসে বসেই পাকিদের জন্য উপযুক্ত দোয়া আওড়াইছি
বাংলাদেশ ভালো খেলুক ভাই এটাই চাওয়া। শুভকামনা তাদের জন্য।
পাকিদের জন্য দোয়া জারি থাকুক
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
আবার জিগায়
ওফফ। আবার সেই ৪০ বচ্ছরের পুরানো চোথা। খেলার সাথে ইতিহাস মেশাতে হয় না গো! যাউকগা, আজকে একটা পয়া দিন। পাক্কুরা যেহেতু হার দিয়ে শুরু করল, বাংলাদেশের বিশ্বকাপ এ-এ-এ-নশাল্লাহ ভালই যাবে। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জন্য শুভকামনা রইল।
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...
ক্রিকেট টিম ভালো খেললে মনটাই ভরে যায়, দলের সাফল্য কামনা করছি
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
ঠিক বলেছেন ফাহিম। এমন আনন্দের সাথে কোনো কিছুর ঠিক তুলনাও হয় না যেন!
সেরকম কিছু আনন্দ দেবার সামর্থ্য দেখাক বাংলাদেশ দল, সেই কামনা।
নতুন মন্তব্য করুন