আমি বৃষ্টি চাই

আয়নামতি এর ছবি
লিখেছেন আয়নামতি [অতিথি] (তারিখ: সোম, ২২/০৬/২০১৫ - ১:৫৭পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

এদেশে বর্ষা ঋতু বলে বিশেষ কোনো ঋতু নেই। তাই বোধহয় বৃষ্টি পড়ে ভীষণ রকমের দীনতা নিয়ে। একটুও ভালো লাগেনা এমন কৃপণতা। দেশের উদার অকপট বৃষ্টিধারা তখন তুমুল মিস করি! মেজাজ খারাপ করে বিচিত্র ভাবনা ভাবি এদের বৃষ্টির গরিবি দেখে। দেশটা বড়লোক হলে কী হবে! বাংলাদেশের মতো এদের আকাশ উদার হয়ে ঢালতে জানেনা। কাঁদতে শেখেনি তেমন মুদ্রায়। এদেশের বৃষ্টি মাটির সোঁদা গন্ধ নিয়ে ভাসতে- ভাসাতে জানে না! আরো ভাবি এখানকার বাচ্চাগুলোর কথা। গুটুর গুটুর করে খালি কম্পু গুতানো কিংবা হাইফাই কোনো খেলনা নিয়েই ব্যস্ত থাকলো বেচারারা। বৃষ্টিতে কিভাবে ভিজতে হয়। আদুর গায়ে বৃষ্টির ধারা কেমন করে মাখতে হয়, সে আনন্দের খোঁজ হতভাগার দল পেলো না এ জীবনে। বৃষ্টিতে ভিজবি আয় খেলা ফেলে' বলে কোনো বেহিসেবি সময় ওদের হাতছানিতে ডাকলো না। খেলনা বন্দুকে পানি ভরে একে অন্যকে ভিজিয়ে আনন্দ পাওয়া দেখলে তাই কেন জানি মায়া লাগে ওদের জন্য। মনে পড়ে যায় নিজের ছেলেবেলার কথা। সেসময় কোনো কোনো বৃষ্টির দিন মনটা কিছুতেই মায়ের শাসন, বড়দের বকুনির ধার ধারতো না। পাড়ার আর দু'পাঁচজন দুষ্টুরশিরোমণির হা রে রে রে এর সাথে পাল্লা দিয়ে নেমে যেতাম ভিজে বেড়াল আমি। বৃষ্টিতে ভিজবো বলে। সে কি হৈ হুল্লোড়! আনন্দ স্বয়ং আমাদের বন্ধু তখন। সব ভুলে মুঠো মুঠো বৃষ্টি কুড়োতাম। আমরা তখন দিশেহারা বাঁধনছাড়া, পাগলপারার দল!

কোনো কোনো বৃষ্টির দিন ছুটতে ছুটতে চলে যেতাম নতুন কোনো পথের বাঁকে। যেদিকে হয়ত যাওয়া হয়নি কখনোই। লুকোচুরি খেলার অংশ হিসেবে তেমন জায়গা ছিল খুব পছন্দের। এভাবে একদিন পথ হারিয়ে ফেলেছিলাম। ঘোরবৃষ্টির মাঝে একদম অচেনা এক পথের মোড়ে দাঁড়িয়ে কেঁদেছিলাম কেমন বোকার মতো! এখন ভাবলে হাসি পায়। আবার হারিয়ে যাওয়া সেই আমি’টার জন্য বুকের ভেতরটায় কেমন একটা করে! এদিক ওদিক পথ খুঁজতে গিয়ে বন্ধুদের দেখা মিলে গিয়েছিলো। তাতেই বাড়ি ফেরার পথ খুঁজে পেয়েছিলাম সেদিন। বাড়ি ফিরে মায়ের বকুনি খেতে হয়নি। বরং আমি ফিরতেই, মা আমাকে ঝাপটে ধরে রেখেছিলেন অনেকটা সময়। আমার ভিজে কাপড় মায়ের শাড়িই শুধু ভিজিয়ে দেয়নি, তাঁর টুকটুকে মুখ জুড়ে জল ছোপছোপ খেলা দেখে আমি কেমন ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। সেবার ধুম জ্বর এসে যায় আমার। বৃষ্টি আমার ধাতে সয় না। ভিজলেই শর্দিতে ভুগতে হয়। যেকারণে বাড়ির বড়রা বৃষ্টিতে ভিজতে দেখলেই চোখ রাঙাতেন।

আর সব ব্যাপারে আমি শান্ত সুবোধটি থাকলেও বৃষ্টি হলেই কেমন বেপরোয়া। তখন আমি পাগলা জগাই, তখন আমি কাউকে না ডরাই। ঠান্ডা জ্বরের তোয়াক্কা না করে কত যে ভিজেছি তুমুল বৃষ্টির কোলাহলে! এখন এদেশে বৃষ্টির দিনে সেসব কথা মনে পড়ে ভীষণ। খুব করে চাই একদিন আকাশ ভেঙে বৃষ্টি পড়ুক। ধুম বৃষ্টিতে দাঁড়িয়ে ভিজি। আমূল ভিজে যাই আমি। ছুটতে ছুটতে আবার পথ হারিয়ে ফেলি। কিন্তু তেমন বৃষ্টি আসে কই এখানে! আকাশ ঠিকই রাজকীয় ভঙ্গিতে মেঘলা হয়। কিন্তু বৃষ্টির বেলায় ঠন ঠন। ছিঁচকাঁদুনি ছোট্ট মেয়েটা চট জলদি বায়না মিটে গেলে যেমন হঠাৎই কান্না ভুলে যায়। তেমন করেই যেন বৃষ্টি শুরু না হতেই রোদ এসে ফিক করে হেসে ফেলে এখানে।

অনেকের মতো আমাকেও বৃষ্টির দিন টেনে নিয়ে যায় ছেলেবেলার আনন্দমঠে। মায়ের সেই সোঁদা গন্ধমাখা শাড়ির ছায়ায়! সেই আনন্দের কাছে বার বার ফিরে যেতে ভালোবাসি বলেই বৃষ্টিকেও ভালোবাসি। আমি তাই প্রচণ্ড ব্যস্ত ব্যাকুল বৃষ্টি চাই।

------
কৃতজ্ঞতা: শিরোনাম শুভমিতার গান থেকে নেয়া।


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

এই মুহূর্তে আমার এখানে বৃষ্টি হচ্ছে। দেঁতো হাসি
বৃষ্টিতে ভিজে মানুষের জ্বর হয় কিভাবে? অ্যাঁ আমার তো হয় না।

- ইমতিয়াজ হাসান

আয়নামতি এর ছবি

আহ্ বৃষ্টি! হায় বৃষ্টি! আজব তো বৃষ্টি ফেলে সচলে কী করেন হে?
ম্যাকানিজমে পবলেম আছে আমার কী দুষ!

এক লহমা এর ছবি

সেই ত, বৃষ্টিতে ভিজলে শরীর খারাপ করে যায় যে! আজ আর তাই ভেজা হয় না। এখন আমার পরের প্রজন্মরা ভেজে। হ্যাঁ, এদেশেও ভেজে! দেঁতো হাসি বৃষ্টিতে না ভিজলে কেমনে কি! হাসি
লেখা ভাল লেগেছে। তারাগুলো দিয়ে দিলাম। হাসি চলুক
অঃটঃ - রোমেল চৌধুরীর এই পোস্টে মন্তব্যে দুটি অডিও লিংক জুড়েছি।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

আয়নামতি এর ছবি

ছুডুকাল থেকে আমার অল্পেই ঠাণ্ডার ধাত হাসি
এখানকার পিচ্চিগুলো স্নো নিয়ে যতটা মাতামাতি করে বৃষ্টি নিয়ে সেরকম করতে দেখিনা।
ধন্যবাদ হে আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-
হেহেহে ...এই মন্তব্য দেখার আগেই ওখানে ঢু দিয়ে শুনে এসেছি দেঁতো হাসি
চমৎকার লেগেছে আমার।

এক লহমা এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- হাসি

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

তিথীডোর এর ছবি

বৃষ্টির দিনে আমার ভাল ঘুম হয়। (yawn)

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

আয়নামতি এর ছবি

এই মাসটা তাইলে ঘুমাচ্ছো ধুমিয়ে হাসি

আবদুর এর ছবি

হায় বৃষ্টি! বৃষ্টির উদার-অকপট দেশে থেকেও যে আজ কত দিন বৃষ্টি দেখিনা, সারাদেশে বৃষ্টি হলেও চট্টগ্রাম শহর কেন জানি এবার বৃষ্টি মুক্ত ঘোষিত হয়েছে। গত মধ্যরাত হতে বৃষ্টি হচ্ছে আর সকালে ছাদে উঠে দেখি ছাদ কাক ভেজাও হয়নি, আমি ঘন্টা খানেক ছাদে থেকেও সকাল বেলা শুকনো শরীরে নিচে নামলাম, বুঝতে পারছেন কেমন বৃষ্টি হচ্ছে এই উদার বৃষ্টির দেশে। হায় বৃষ্টি!

আয়নামতি এর ছবি

চট্টগ্রাম তাইলে পঁচা ভাই খাইছে আমাদের ঢাকায় অন্নেক বৃষ্টি হয়। ঢাকায় চলে যান দেঁতো হাসি

আবদুর এর ছবি

হঁ্যা গিয়েছিলামতো এই মাস খানেক আগে, ভিজেও এসেছিলাম, তবে ভালো খবর হল এই দু’দিন ব্যাপক বৃষ্টি হচ্ছে।

আয়নামতি এর ছবি

হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

মন কেমন করিয়ে দিলেন ভীষন এক বৃষ্টিসুন্দর।

-------------------------------------------
ইচ্ছে মত লিখি
http://icchemotolikhi.blogspot.in/2015/06/sonnet-1.html

আয়নামতি এর ছবি

বৃষ্টি এমনই রে ভাই। শুনলেই মন কেমন করে। 'ইচ্ছে মত লিখি' আপনার নিক?
পোস্ট লিখে ফেলুন না একটা, মন কেমন করা নিয়েই হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

যা বলেছেন একদম। হা হা। মন কেমন করা নিয়ে পোষ্ট লেখার আইডিয়া টা ও খেলাম।
না না 'ইচ্ছে মত লিখি' আমার ব্লগের নাম। সচলায়তনে এত লেখার সম্বার দেখে একটা দিন নাম ইমেল সব দিয়ে প্রচুর সময় নষ্ট হল কিন্তু নথিভুক্ত করতে পারলাম না। এমন কদিন চলার পর ব্লগের নাম টাই দিচ্ছি আর অতিথি লেখকের লগিন ব্যভার করি। কি আর করা। মন খারাপ আমার ব্লগে নাম ঠিকানা ছবি সবি রেখেছি যেমন থাকে আর কি।
---------------------------------------
ইচ্ছে মত লিখি
http://icchemotolikhi.blogspot.in/

আয়নামতি এর ছবি

পছন্দ মতো একটা নিক বেছে নিয়ে সচল মডুদের মেইল করুন ভাই। তারা অন্নেক কাজের। শুধু একটু বেশি ঘুমান খাইছে

মেঘলা মানুষ এর ছবি

বেশি বৃষ্টিতে অনেকবার ভিজেছি, কিচ্ছু হয় না।
একবার কয়েক ফোঁটা পানি গায়ে পড়েছিল, জ্বরে ভুগেছিলাম সেবার।

এখন যেখানে আছি, সেখানকার বৃষ্টি অনেক বেশি ঠান্ড, ভিজতে পারি না আর আগের মত। মন খারাপ

আয়নামতি এর ছবি

এক কাজ করেন মেঘলা মানুষ, রেইনকোটের ভেতরে গরম কাপড় পরে বৃষ্টিতে ভিজে দেখেন ঠাণ্ডা কম লাগবে খাইছে
একবার শিলাবৃষ্টিতে সবাই সে রকম আনন্দ করছে অথচ আমি মুখ ভোচকে বসে আছি।
এটা দেখে মামা তার হেলমেটটা আমার মাথায় পরিয়ে উঠোনে নামিয়ে দিয়েছিলেন।
দৃশ্যটা মনে হলে আজও হাসি পায়!

তাহসিন রেজা এর ছবি

শৈশবে বৃষ্টিতে ভিজেছি অনেক। আমার আম্মা বৃষ্টিতে ভিজতেন। সাথে আমরা দুই ভাই। বাড়ির ছাদের পাইপ থেকে পড়া পানিতে আমরা তিনজন দাঁড়াতাম পালা করে। সেই বৃষ্টির পানি মা কলসিতে ধরে রাখতেন। বৃষ্টির পানিতে ভাত রাঁধলে কি যে ধবধবে শাদা ভাত রান্না হত!
আমার ছোটো ভাইকে কাঁধে নিয়ে আমি নেচে নেচে ভিজতাম বৃষ্টিতে। কোথায় যে গেল আমার সেই দিনগুলি।

এখন আর বৃষ্টি ভালো লাগেনা, বৃষ্টি হলে বাড়ির সামনে হাঁটু পানি জমে। পচা গলা পানি বাড়ির সামনের রাস্তা দিয়ে ভেসে যায়। তবু এর মধ্যেই পাশের বস্তির নিষ্পাপ শিশুদের জলকেলি দেখে মনে পড়ে আম্মার কথা, আমার ছোট্টো ভাইয়ের কথা!

------------------------------------------------------------------------------------------------------------
“We sit in the mud, my friend, and reach for the stars.”

অলীক জানালা _________

অতিথি লেখক এর ছবি

বৃষ্টির পানিতে ভাত রাঁধলে আসলেই ধবধবে সাদা হয়? আম্মুকে বলে দেখতে হবে তো!

আয়নামতি এর ছবি

বাহ! তাহসিন আপনি এমন করে বললেন পুরো দৃশ্যটা চোখের সামনে ভেসে উঠলো!
বৃষ্টির পানিতে ভিজলে ঘামাচি হয় না শুনেছিলাম। ভাতের ব্যাপারটা মাত্রই জানলাম। দারুণ তো!
অনেকদিন কিছু লিখছেন না আপনি। লিখে ফেলুন বৃষ্টিদিনের স্মৃতি কথা। চমৎকার হবে সেটা বলাই বাহুল্য।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

বৃষ্টির দিনে টিনের চালের সঙ্গীতের মতো মধুরতম নিদ্রাসঙ্গীত আর হতেই পারে না। আমাদের পুরোনো বাড়িটাতে কত বছর সেই আনন্দে দুপুরের ভাতঘুম কাটিয়েছি! মেঘ আর বৃষ্টির সাথে কিছু মানুষের বিশেষ সম্পর্ক থাকে, আমার সেরকম কিছু। হাসি

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

আয়নামতি এর ছবি

টিনের চালের বৃষ্টির মধুরতম সঙ্গীত শোনার সৌভাগ্য আমার হয়নি।
তবে এখানকার বাড়িগুলো এমন যে বৃষ্টি হলে ঘরের ছাদে চরটপটর শব্দ পাই।
এদিকটায় যতটা বৃষ্টি হয় তারচে বেশি হয় টর্নেডো, থাণ্ডার স্ট্রোর্ম ইত্যাদি।
ওসব নিয়ে আতংকিত হওয়া চলে ভাবালুতার বেইল নাই।

অতিথি লেখক এর ছবি

তা এদেশে বৃষ্টি এখনও হয় বটে, আয়নামতি কিন্তু আর ভেজা হয় কই তেমন করে? বৃষ্টির দিনে সকাল-সন্ধ্যে অফিস, রাতে ভিজতে পারি না জ্বর হয় বলে; ছুটির বৃষ্টিগুলো বাড়িওয়ালার ছাদের তালায় বন্দী মন খারাপ । অবশ্য গত বর্ষায় জানো তো, একদিন অফিসফিরতি পথে আগারগাঁও থেকে মোহাম্মদপুর হেঁটেছিলাম ছাতা মুড়িয়ে; একদম একলা, দারুণ বিকেলটা ভিজে গিয়েছিল পুরো-সেই ছেলেবেলাটার মতো। এক স্মৃতি নিয়েই জাবর কাটছি হে, বড্ড স্মৃতিকাতর কি না। দেশে আসবে কবে? বর্ষা থাকতে থাকতে এলে না হয় ভিজতে ক’টা দিন, না হয় একটু জ্বর হতোই, তাতে কীই বা এমন ক্ষতি বলো?

দেবদ্যুতি

আয়নামতি এর ছবি

হেহেহে, তোমার একলা বৃষ্টিতে ভেজার ঘটনা শুনে আমার আপুর একটা কাহিনি মনে পড়ে গেলু।
সে বেচারি স্কুলে যাচ্ছিল এক বৃষ্টিমুখর দিনে। কিছু ছাতা থাকে না ভীষণ পলকা?
দমকা বাতাসেই ফট করে উল্টে যায়। সেরকম এক ছাতা মাথায় দোকান পাট পেড়িয়ে স্কুলে চলেছে।
হুট করে গেলো তার ছাতা উল্টে। এরকম একটা মজার দৃশ্যে দোকানে বসে থাকা ভদ্র ভাইসকলে হাততালি দিয়ে টিজ করায় সেই যে আপু ছাতা ব্যবহার ছেড়েছে আজও সে ছাতা ব্যবহার করে না। ইশশশ এমন করে বলছো রে! লোভই হচ্ছে কিন্তু! একটু জ্বরে তেমন কিছুই আসে যাবে না। দেখা যাক ব্যাটে বলে হয় কিনা। তোমার স্মৃতিটুক লিখে ফেলো না বাপু!

অতিথি লেখক এর ছবি

কত যে স্মৃতি, বালিকা; পুরো একটা বালিকাবেলা বৃষ্টিমুখর আর ঐ দিনটা সেই বালিকাবেলার একটা হঠাৎ উড়ে আসা টুকরো... কোনো একদিন লিখব বটেন..... ঐ আপু কিন্তু গ্রেট, পছন্দ হলো খুব হাসি

দেবদ্যুতি

আয়নামতি এর ছবি

হাসি

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

হুমম... আর এদিকে ক'দিন ধরে হতচ্ছাড়া বৃষ্টিতে মেজাজ খারাপ হয়ে যাচ্ছে রেগে টং
এজন্যই জ্ঞানীরা কয়েছেন- "গ্রাস ইজ অলওয়েজ গ্রীনার... " ইত্যাদি ইত্যাদি চাল্লু

পুনশ্চঃ শুভমিতা'র কথায় মনে হল- "বৃষ্টি পায়ে পায়ে" গানটা শুনেছেন নাকি? হাসি

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

আয়নামতি এর ছবি

বৃষ্টির কারণে যেসব মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন তাদের কাছে আমার এ লেখা আদিখ্যতা'ই লাগবে
সন্দেহ নাই। আমি তো এট্টু স্মৃতিকাতর হলেম মাত্র। বৃষ্টিরে কী কইছি নাকি যাও ওদিকে গিয়ে পড়ো!

পুনশ্চঃ শুভমিতার সব গানই মোটামুটি শুনঞ্ছি মিয়া দেঁতো হাসি

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

আমি এখন যে দেশটায় আছি, সেখানেই তেমনি। শীতকালে বৃষ্টি, ভিজবার ইচ্ছে জাগায় না, নিজেকে অন্তঃপুরে গুটিয়ে নিতে বাধ্য করে।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

আয়নামতি এর ছবি

আপনি এখন কোন দেশে আছেন ভাইয়া? আমরা নাতিশীতোষ্ণ দেশের মানুষ, শীতের যন্ত্রণা এমন কাবু করে ফেলে বৃষ্টিতে ভেজার ইচ্ছেটাই উবে যায়। অনেকদিন পর আপনাকে দেখে ভালো লাগলো। ভালো থাকবেন ভাইয়া। হাসি

সুলতানা সাদিয়া এর ছবি

তিনদিনের খররোদ্রে রোজা লেগে গিয়েছিল। দুদিন ধরে বৃষ্টি। ধুম বৃষ্টি, ঝুম বৃষ্টি। মনটা আনচান করতেই সচলে ঢুকলাম। দেখি আয়নামতি বৃষ্টির কাব্য নিয়ে এসেছে। আহা, কি মিষ্টি! কি মিষ্টি। এখন সময়ের সাথে বড় বেশি হিসেব নিকেশ, বৃষ্টিতে ভেজার সময় কই। তবু সেদিন ছানাপোনা নিয়ে নিচে নামলাম। দুটিতেই অবাক, মা? তুমি আমাদের ভিজতে বলছো?
ছেলেটার ঠাণ্ডার সমস্যা। বললাম, ভিজিসনে, মাঝে মাঝে দৌড়ে দৌড়ে ছুটে যা, দ্যাখ বৃষ্টির পানি ধরতে কি মজা! ওরা যে কত্ত খুশি ছিল! সামনে একদিন সুযোগ করে আবার ওদের খুশি দেখতে চাই।
লেখা খুউব ভাল লেগেছে।

-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু

আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে

আয়নামতি এর ছবি

বেশ একদফা ভিজে নিলে সবাই মিলে না!
ভালু ভালু। কামনা করি আবার বৃষ্টি এসে(কমই আসুক, অনেকের কষ্ট হয় টানা বৃষ্টি হলে) তোমাদের ভেজার ব্যবস্হা করে দিক। আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

অতিথি লেখক এর ছবি

আমি বৃষ্টিতে বড়দের হাতে পিটুনির সম্ভাবনা না থাকলে কখনোই ছাতা ধরি না। এই ছাতা না ধরা নিয়ে আমার অনেক কাহিনী আছে। লেটেস্ট আমি ভার্সিটির সকাল ৭টার বাস ধরার জন্য বাসা থেকে বের হয়েছি ছাতা ছাড়াই। এত বৃষ্টির বাংলাদেশে ৬টা ৫০ একটা মেয়ের ছাতা ছাড়া হাঁটার দৃশ্য খুব একটা দেখা যায় না। কিছুক্ষণ হাস্যমুখী এক আপু আমার মাথায় ছাতায় ধরে বলে আরে ভিজে যাচ্ছ তো, ছাতা আনতে ভুলে গেছ! তুমি বলাতে আর অধিকার নিয়ে মাথায় ছাতা ধরাতে ভাবলাম ভার্সিটির বাসে হয়তো আমাকে দেখে থাকবেন। তাই আমি ছাতার নিচে থাকতে প্রতিবাদ না করে বললাম, ভুলে যাইনি, ইচ্ছা করেই আনিনি, আনলে আবার ছাতা ধরতে হয়। তারপর খানিকক্ষণ নিঃশব্দে হেঁটে আমি আমার বাস থামার জায়গায় গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়লাম। যেহেতু আমার ধারণা ছিল উনি ভার্সিটির-ই তাই মনে হচ্ছিল উনিও থেকে পড়বেন। আমি থেকে পড়ায় আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে বললেন, তাহলে তুমি এই সকালে ভিজবেই? বলে উনি চলে গেলেন। সাধারণত, এমন হলে আমি আমার আরামদায়ক ভেজায় সমস্যা বাঁধানোর জন্য বিরক্ত হতাম। কিন্তু আমার কেন যেন এই আপুর ক্ষেত্রে অপরাধবোধ হয়েছিল। মনে হয়েছিল একটা ধন্যবাদ দিয়ে বলতেই পারতাম এখানে আমার বাস আসবে...

নাবিলা

আয়নামতি এর ছবি

নাবিলার হাবভাব পছন্দ হলু। তোমার মতো বৃষ্টি সহ্যের ক্ষমতা দেয়া হলে আমিও এমনটাই করতেম দেঁতো হাসি আসলেই সময় মতো ঠিক কথাটা মুখ ফুটে না বলতে পারাটা পোড়ায় খানিক। তোমার বৃষ্টিতে ভেজার পাগলামি দেখে অন্যদিকে আপুটাও হয়ত ভেবেছেন আহা! এই বালিকার মতো সব ফেলে আমিও যদি সটান দাঁড়িয়ে যেতে পারতাম উদোম আকাশের নীচে! অন্যের মনটা পড়ে ফেলবার ক্ষমতাটা দেয়া হলে কত্ত মজার হইত বলো! দেঁতো হাসি

নীলকমলিনী এর ছবি

আমি এখন যে বাড়ীটিতে আছি সেটা একটা ছোট্ট লেকের ধারে, আজকাল প্রায়শই ঝুম ঝুম করে বৃষ্টি হচ্ছে আর আমি ঘরের ভেতরে বসে পানির উপর বৃষ্টি পড়া দেখছি মন ভরে। এরপর বৃষ্টির পানি জমিয়ে ভাত রান্না করবো ভাবছি। টিনের চালে বৃষ্টির শব্দ খুব মিস করি। শেষ কবে শুনেছিলাম তাও ভুলে গেছি। মারা যাবার আগে আরেকবার শুনতে চাই। আয়নামতি সুন্দর লেখাটির জন্য ধন্যবাদ।

আয়নামতি এর ছবি

কল্পনায় আপনার বিউটুন বাড়িটা ভাবতে চেষ্টা করলাম আপু! যে কোনো সময়েই ও রকম একটা লেকের ধার ভীষণ লোভনীয় কিন্তু। বৃষ্টি হলে তো সোনায় সোহাগা! কত্ত ভাবালু-মন খারাপিয়া সময় পার করে দেয়া যায় এককাপ চা কিংবা কফি আর পছন্দের একখান বই নিয়ে! ভাত রান্না করে ছবি তুলে আমাদের দেখাতে ভুলবেন না আপু। আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

সিদ্ধার্থ মাঝি  এর ছবি

ভালো লাগলো। বৃষ্টিতে কাদামাটিতে দল বেঁধে ফুটবল খেলা খুব মিস করি। তবে রিক্সার হুড ফেলে দিয়ে তুমুল বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে বাসায় যাওয়ার আনন্দটা এখনো অবশিষ্ট আছে।

সিদ্ধার্থ মাঝি

আয়নামতি এর ছবি

জীবনের এই মিস করার বিষয়টা আছে বলেই মনে হয় কিছু কিছু জিনিস/বিষয়ের প্রতি আমাদের আজীবন ভালোবাসা/মুগ্ধতা থেকে যায়। ওটুকু থাকা দরকার মনে হয়, না? একবার এক তুমুল বৃষ্টির দিনে রাস্তায় কোচিংয়ের এক ছেলেকে ভিজতে দেখে তাকে আমার রিক্সায় রাইড দিলাম। ওম্মা! পোলায় রিক্সায় বসেই হুড দিলে ফেলে। আমি তো পুরাই বেকুব! বললাম এইটা কী হলো? তুমি যেন আরো না ভিজো সেজন্য তোমাকে রিক্সায় ডাকলাম। উল্টা আমাকেই ভিজিয়ে দিলে! পোলাটা তখন বললো বারে তাই বলে ঘাড় গুঁজে বসে থাকতে হবে নাকি? তখন খেয়াল হলো, এই ছেলে তো রীতিমতো তাল গাছ একটা! এখনো মজা লাগে এই স্মৃতিটা মনে পড়লে। আপনার রিক্সায় ভেজার কথায় আজকে আবার মনে পড়ে গেলো!

মোহছেনা ঝর্ণা এর ছবি

বৃষ্টির দিনে এমন লেখা নষ্টালজিক করে তুলল।চট্টগ্রামে টানা বৃষ্টি হচ্ছে।

ভাবি এখানকার বাচ্চাগুলোর কথা। গুটুর গুটুর করে খালি কম্পু গুতানো কিংবা হাইফাই কোনো খেলনা নিয়েই ব্যস্ত থাকলো বেচারারা। বৃষ্টিতে কিভাবে ভিজতে হয়। আদুর গায়ে বৃষ্টির ধারা কেমন করে মাখতে হয়, সে আনন্দের খোঁজ হতভাগার দল পেলো না এ জীবনে। বৃষ্টিতে ভিজবি আয় খেলা ফেলে' বলে কোনো বেহিসেবি সময় ওদের হাতছানিতে ডাকলো না।

আসলেই ।
আমার ১বছর এগার মাস বয়সী মেয়ে বারান্দায় গ্রিলের ফাঁকে হাত বাড়িয়ে কি সুন্দর করে বৃষ্টির পানি ছোঁয়, মুখে লাগায়।আমি অবাক হয়ে ভাবি ও এটা শিখল কোথা থেকে যে বৃষ্টির পানি এমন আদুরে ভাবে ছূঁতে হয়, গায়ে মাখতে হয়। এটাই বোধ হয় আমাদের এদেশের স্বকীয়তা।
ভালো লেগেছে। অবশ্য আপনি সব সময় ভালোই লিখেন। ভালো থাকুন।

আয়নামতি এর ছবি

হেহেহে আমাকে একজন বলেছে এটা লেখার পর নাকি টানা বৃষ্টি চলছে চট্টগ্রামে। যেন দোষটা আমারই!
বাহ্! আপনার মেয়েটা দারুণ তো!!! ঠিকই, বৃষ্টি হলেই আমরা ভেজার জন্য ছটফট করি। খিচুড়ি ইলিশ ভাজা ইত্যাদির জন্য আনচান করি। এসবই আমারদের স্বকীয় বৈশিষ্ট্য বৈকি। এ্যা! আপনি আমার লেখা আগেও পড়েছেন নাকি আপু? আপনার ধৈর্য্য এবং হজম ক্ষমতার প্রশংসা করতে হয় তাহলে। আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

এক সময়ে বৃষ্টিতে ভিজতে রোমাঞ্চ অনুভব করতাম। এখন বৃষ্টির দিনে খিচুড়ি খেতে ইচ্ছে করে। হাসি

আয়নামতি এর ছবি

নাহ বৃষ্টিতে ভেজা ভালু না ভাবনাদা। তারচে' ভাবীকে বলুন খিচুড়ি রাঁধতে। সাথে একটু ঘি (ইশশ আপনার স্বর্গের খোঁজের ঐ ঘি এর সাগরটা কব্জা করা গেলে দারুণ হতো বলেন?) ইলিশ ভাজা, সালাদ। তোফা! আয়হায় আমার তো জিভে জল এসে গেল! রোজাটা ভেস্তে গেলু নাকি হে চিন্তিত

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

আচ্ছা, ইলিশ মাছও পাঠাচ্ছি!
[img]DSCN0624 by Kabir Ahmed 26, on Flickr[/img]

আয়নামতি এর ছবি

ডীপে থাকা ইলিশটা যে বের করে সুন্দর টেবিলক্লথখানা নষ্ট করিলেন তারজন্য ভাবী কেমন আদর আপ্যায়ন করেছিলেন জান্তেমঞ্চায় খাইছে দুঃখিত ভাবনাদা, ব্যাপক দেরি হয়ে গেলু উত্তর করতে, আশা করি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। ভালো থাকবেন। হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

জুনের বৃষ্টির রেশ এখনো হঠাৎ করে চলছে কিন্তু আমাদের বাংলাদেশে। এখন আশ্বিনের শেষ ( শেষ তো নাকি ? চিন্তিত ) কিন্তু গত তিন/ চার দিন ধরে ঢাকায় নাকি সকালের দিকে ধুন্ধুমার বৃষ্টি হচ্ছে। আর আমার প্লেসে আকাশ ঘন কালো ভাব ধরে বসে থাকলেও ফোঁটায় ফোঁটায় ঝরে কৃপণের মতোই।

তবে এ বছর বেশ ভালোই বৃষ্টি হয়েছে। আফসোসের ব্যাপার কি জানো , এতো বৃষ্টি হলো ভেজা হলো না। যে সময়ে বৃষ্টি হয়েছে আমি অফিসে ছিলাম। কিংবা বাসায় ফেরার পর রাতের দিকে যখন শাওয়ার নিয়ে ফেলেছি। মন মত ভেজা হয়নি। আর জ্বর! সেই যে কবে টাইফয়েড হয়েছিলো তারপর আর জ্বরের দেখা পাইনি। অন্তত এই উপলক্ষ্যে ছুটি তো কাটাতে পারতাম!

বৃষ্টিতে ভিজলে আব্বা খুব বকা দিত। যদি অসুখ করে এই ভেবে। আমি তার আল্লাদি মেয়ে ছিলাম কি না! বৃষ্টি হলে আমিই আর ভাইয়া মাঠে গিয়ে কিংবা ছাদে উঠে ভিজতাম আর বকাটা খেত ভাইয়া। তবুও ভাইয়া বলতো, আব্বা তো বকবেই, ভিজে নে।

স্মৃতিকাতর হলাম , তোমার মতোই।

ভালু থাকো। প্যাচপ্যাচে কাঁদা বৃষ্টিতে ভেজো।
ভালুবাসা রইলো

অপর্ণা মিতু

অতিথি লেখক এর ছবি

জান নাকি তোমার এই লেখাটায় আবার খুঁজেপেতে বৃষ্টির গল্প করব ভেবেছিলাম। অপর্নার কমেন্টের দরুন সাম্প্রতিক মন্তব্যের ঘরেই পেয়ে গেলাম, খুঁজতে হলো না। কাল থেকে বেশ বৃষ্টি হচ্ছে রে ঢাকায়, ঝমঝম ঝমঝম বৃষ্টি, পা ডোবানো কাপড় ভেজানো বৃষ্টি। তোমার জন্য পাঠাব নাকি খানিক?

দেবদ্যুতি

আয়নামতি এর ছবি

হেহেহে তুমি আসলেই একটা পাগল দ্যুতিবিবি। এই লেখাও নাকি কেউ খুঁজে!
দেও, পাঠিয়ে দেও, মেঘেদের খামে ভরে কিছুমিছু বৃষ্টি, সাথে সোঁদামাটির গন্ধটাও কেমন!
অনেক ভালো থেকো হে বালিকা। হাসি

আয়নামতি এর ছবি

কী চমৎকার করে বলে গেছো নিজের বৃষ্টিদিনের স্মৃতিটুকু! আমি এমনই খ্রাপ, উত্তর করতে কত্তগুলো দেরি করে ফেললাম। তুমি খুব লক্ষী মেয়ে, জানি রাগ করবে না।সামনের সপ্তাহে এদিকে বেশ ভালুরকমের বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। ধারেকাছে থাকলে ডেকে নিতেম তোমাকে। তুমিও ভালো থেকো, ভালোবাসা নিও শ্রীমতি অপর্ণা। হাসি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।