মানুষের উপকার করতে আমার খুব ভালো লাগে। আমি সবসময় চাই মানুষের উপকার করতে, ছোটবেলায় পড়া রচনাগুলোর মত উপকারি প্রাণি হতে। কিন্তু কেউ বিপদে না পড়লে উপকার কেমনে করুম? তাই আমি তক্কে তক্কে থাকি কখন কেউ বিপদে পড়বে আর আমি উপকার করমু। দরকার পড়লে আমিই বিপদে ফালামু, তারপরে সাহায্য করুম। কিন্তু উপকার আমারে করতেই হইবো।
তখন মনে হয় ক্লাস ওয়ান এ পড়ি। উপকারের প্রবল নেশা। এটাই স্বাভাবিক। যারা বড় নেতা হয় তাদের জীবনী পড়লে জানা যায় অতি শৈশব থেকেই গরীবের জন্য তাদের মন কেমন কেমন করে। বইএ ছিলো মহানবী(স) কিভাবে এক ভিক্ষুক কে ভিক্ষা থেকে কাজের জীবনে নিয়ে এসেছিলেন। আমি ভাবলাম থিয়োরি এপ্লাই করি। এক ভিক্ষুক আসলো। তার জিগাইলাম, আপনার বাসায় কি আছে? উদ্দেশ্য হইল, তার জিনিসপত্র বিক্রি করে কুড়াল কেনার সদুপদেশ দেয়া। সেই বেটা কইল, কিছুই নাই বাজান। আমি পড়লাম বিপদে। এখন কী করি। ভাইবা চিন্তা উপদেশ দিলাম, যান আরো কিছুদিন ভিক্ষা করেন, টাকা জমান, তারপরে আমার কাছে আইসেন।
এরকম নানা ভাবে নানা মানুষের উপকার করতে করতে আমি বুয়েট তামাত আইসা পড়লাম। আগে শুধু বালকদের উপকার করতাম, এখন বালিকাদের উপকার করতে মন চায়। উপকার এর পরে তারা মিষ্টি হাসি দেয়। আরো উপকার করতে আমার মন আনচান করে। মেকানিকাল ড্রইং এর ক্লাস। এক বালিকা বিপদে। সুপারম্যান হাজির। লাল পেনটুল টা খালি উরফে পড়ি নাই, কিন্তু গতিবেগ ঐ রকম ই আছিলো। কি সমস্যা, কি পারোনা? বালিকা কয়, ধরো এই জিনিশটার যদি প্রজেকশন নেই, তাইলে কি এই রেখাটা হিডেন লাইন হিসাবে আসবে? আবারো বিপদ। এই জিনিস তো আমি নিজেও ভালো বুঝিনা। আরেক দোস্তোরে আইনা হাজির করলাম, অই হালায় ওরে বুঝায়া দিলো, তারপরে আর কি, দুইজনে ভালোবাসা হয়া গেল, আমার কথা আর কেউ মনে রাখে নাই। এই জন্যই কথায় আছে না, মানুষের উপকার করতে নাই, বড় নিমকহারাম জাত।
একবার ঘোষণা দেয়া হইল বুয়েট এ ফিরি কারাতে শেখানো হবে। আমি ভাবলাম এইতো সুযোগ। অসহায় নায়িকাদের দুশ্চরিত্র ভিলেন এর কাছ থেকে রক্ষা করতে হবে। তারপরে তারা আমার বুকে ঝাঁপিয়ে পড়বে, আজকে তুমি না থাকলে কি যে হত। না না এটাতো আমার দায়িত্ব। এইসব আকাশ পাতাল ভাবতে ভাবতে মাঠে গেলাম। লিষ্টিতে নিজের নাম লিখতে গিয়া দেখি আমার আগে যে নামগুলো লেখা আছে তার মধ্যে অনেকগুলাই বালিকাদের নাম। মনটা খারাপ হয়া গেলো। আমি তাইলে কাগোর উপকার করুম? যাহ, শালা নামই দিমু না। পরে ভাইবা দেখলাম, নাম লেখানোই ভালো, মারদাঙ্গা বালিকারা যদি আমারে পিটাইতে চায়? নিজের জান তো বাঁচান লাগবো।
আরেকদিন রাইত বাজছে নয়টা। আমি কইলাম ,তোমারে আগায়া দেই। বালিকা কয় ,লাগবো না, আমি একলাই পারুম। আমি কই ,পারবা হেইডাতো আমিও জানি, কিন্তু আমার একটা দায়িত্ব আছে না। উঠলাম রিকশায়। বাড়ির কাছাকাছি আসার পর বালিকা কয়, তুমি নাইমা যাও। বাকিটা আমি যাইতে পারুম। তোমরা পোলারা হইলা হাঁসের মত, গা ঝাড়া দিলেই সব পরিষ্কার, কোনো কিছুই তোমাগো গায়ে লাগে না। কিন্তু এই সমাজ সংসার আমারে খারাপ কইবো।
এই উপকার করতে গিয়া অনেকের অনেক কথা শুনছি। অনেকে ভুল বুঝছে। আমার এক দোস্তো আমারে গাইল দিছিলো, তোমারে এত উপকার চোদাইতে কে কইছে? এতোবার পোং মারা খাওয়ার পরেও শিক্ষা হয় না? আমার শিক্ষা হয় নাই, হয় না। আছেন কোন ভাই বিপদে? জায়গায় দাঁড়ায়া আওয়াজ দেন, আমি আইতাছি।
মন্তব্য
হিহিহিহি...আমি তো ভেবেছিলাম উপকার করবার খায়েশ আপনার জানালা খুলে পালিয়েছে। এখন দেখছি দুয়ার খুলেই ডাকছেন অসহায় জনদের। দেবো নাকি ১০১টা লিস্টি ধরিয়ে হাতে? বুঝবেন কতো মুড়িতে কতো কাঁকর(ড়?)! লেখা খুব মজারু হয়েছে। শুভেচ্ছা জানবেন।
লিস্টি দিতে চাইলে দেন, আমার যতটা সাধ্য আমি করবো। ধন্যবাদ।
------------------------------------------------------------------
এই জীবনে ভুল না করাই সবচেয়ে বড় ভুল
------------------------------------------------------------------
এই জীবনে ভুল না করাই সবচেয়ে বড় ভুল
হা হা হা... রহমান ভাই দেখি বড়ই রসিক! লিখতে থাকেন প্যান্ট খুইলা... থুক্কু ...
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
মাহবুব ভাই, কি কন না কন। ধন্যবাদ।
------------------------------------------------------------------
এই জীবনে ভুল না করাই সবচেয়ে বড় ভুল
------------------------------------------------------------------
এই জীবনে ভুল না করাই সবচেয়ে বড় ভুল
মজার লেখা। তবে কিছু কিছু শব্দ অচেনা লাগলো, যেমন--
,তোমারে
,পারবা
,লাগবো
এরকম কমা দিয়ে শুরু হওয়া শব্দ যে আছে তা-ই জানতাম না
৫/৫
পিপিদাদা, আর শরমিন্দা কইরেন না, স্পেস গুলো ভুল জায়গাতে দিছি, তাই অজানা শব্দের উদ্ভব।
------------------------------------------------------------------
এই জীবনে ভুল না করাই সবচেয়ে বড় ভুল
------------------------------------------------------------------
এই জীবনে ভুল না করাই সবচেয়ে বড় ভুল
মেকানিকাল ড্রয়িং এর কথা মনে পরে গেল! আমি আবার নন ডিপাটমেন্টাল গুলা তে সেই রকম ধরা খেতে খেতে বাঁচতাম। মেকানিকাল ড্রয়িং এ বকা খেতে খেতে আমি পুরা বকা প্রুফ হয়েগেচিলাম। রোজ ১০ মিনিটের মত বকা খাইতাম। একদিন আমার রোল কল করার পর অন্য একছেলে ভুলে চলে গেছিল।সে বিরাট পরিমান বকা খাওয়ার পর আমি হাসি চাপতে না পেরে হো হো করে হেসে ফেলছি, আমার সাহস দেখেই হোক বা বকা দিয়ে ক্লান্ত হয়েই হোক টিচার আর ২য় বার বকা দেয় নাই।
রিক্তা
--------------------------------
হে প্রগাঢ় পিতামহী, আজো চমৎকার?
আমিও তোমার মত বুড়ো হব – বুড়ি চাঁদটারে আমি করে দেব বেনোজলে পার
আমরা দুজনে মিলে শূন্য করে চলে যাব জীবনের প্রচুর ভাঁড়ার ।
আরে! বুয়েটে তো আমিও এইরাম আছিলাম! কত গালিও খাইসি। আসেন ভাই, কোলাকুলি করি!
ননডিপার্টমেন্টাল সিভিল ড্রয়িংয়ের কোর্স করসিলাম একখান। আহ! সেই সোনালী দিনগুলা! বালিকারা (ইনক্লুডিং আমার বউ) আমার টেবিলের আশেপাশে ঘুরঘুর করত আমার ড্রয়িং দেখার জন্য, ডাক দিত কোন জায়গায় লাইন কেমনে হবে জিগেস করার জন্য। আমি ভাব নিতাম, কইতাম, "লাইনে থাক, আসতাছি।" এর পরে আর কোন কোর্স এত ভাল বুঝতামও না, বেইলও পাইনাই
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
হেহ, ভাবের যে গুষ্টি উড়ায় দিসিলাম খাতা লুকায়, সেই কাহিনী ফাঁস করব?
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
ঐ একবারই। পাত্তা তো পুরা টার্ম ঠিকই দিসিলি।
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
বাহ, কি সুন্দর ইটিশ পিটিশ, জীবন সুন্দর ও কল্যাণময় হোক।
------------------------------------------------------------------
এই জীবনে ভুল না করাই সবচেয়ে বড় ভুল
------------------------------------------------------------------
এই জীবনে ভুল না করাই সবচেয়ে বড় ভুল
রহমান ভাইয়ের রস আছে।
ইউনিভার্সিটি লাইফে আমি ছিলাম উল্টা দলের। আমাগো ক্লাসে দুই চারটা পোলাপাইন মেয়েদের সেবার জীবন উৎসর্গ করে বসে ছিল। আমি যতভাবে পারি সেই পোলাপাইনগুলার ইয়েতে আঙুল দেবার চেষ্টা করতাম।
কি মাঝি, ডরাইলা?
কস্কী মমিন !!! আপনে দেখি পুরাই আমার মতন !!!
_________________________________________
সেরিওজা
সুহান ভাইডি, চামে ভাব নিলা? দেহি তোমার ক্লাসমেটগোরে জিগাইলেই খবর বাইর হইবো।
------------------------------------------------------------------
এই জীবনে ভুল না করাই সবচেয়ে বড় ভুল
------------------------------------------------------------------
এই জীবনে ভুল না করাই সবচেয়ে বড় ভুল
পরথম দিকে আমি এমুন ই আছিলাম, এক দেড় বছর কোনো মেয়ের দিকে সু কু কোনো নজর ই দেইনাই। তারপরে আমার জিগরি দোস্তো প্রেমে পড়ল, সে একাই মেয়েদের সাথে কথা বললে কেমন দেখায়? তাই আমরা যারা আঙ্গুল গ্রুপে ছিলাম, তাগোরে নারী জাতির সাথে আলাপ করায়া দিলো। মদ কি আর নিত্য খাওয়ানো লাগে? নেশা ধরায়া দিতে পারলেই হইলো।
------------------------------------------------------------------
এই জীবনে ভুল না করাই সবচেয়ে বড় ভুল
------------------------------------------------------------------
এই জীবনে ভুল না করাই সবচেয়ে বড় ভুল
কঠিন জীবনদর্শন!
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
পশুদের ভিতর গরু উপকারী আর মানুষের ভিতর আবদুর রহমান।
উপকারী লেখায় পাঁচ তারা।
...........................
Every Picture Tells a Story
উপকারী লোকজন ভালু পাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
ধরণি দ্বিধা হও, মেকানিক্যাল ড্রইং এর নাম শুনলে আগে আমার একথাই মনে হয়। আমার হাত ঘামার ভয়াবহ অভ্যাস আছে,তাই ক্লাস শেষে যে বস্তুটা জমা দিতাম সেটা সফেদ পেপারে "ধবধবে কালো" কিসিমের কিছু একটাতে গিয়ে দাঁড়াতো। শেষমেশ কোন রকমে উপুর্যুপরি রিপিটের পর সে যাত্রায় রক্ষা পেয়েছিলাম।
আর কারাটে শিখার ম্রাত্মক খায়েশ ছিল,মাগার হাত পা ছোঁড়াছোড়ি করতে করতে কখন পায়জামার তলা ফাইসা যায়,সে ভয়ে আর গেলামনা।
অদ্রোহ।
হাত অনেকের ই ঘামে, এটার সমাধান হলো, ফুলহাতা জামা পরা, তাহলে ঘামটা খাতায় লাগবে না, আর মোছামুছি করার পরে কাগজে যে ইরেজার এর গুঁড়ো থেকে যায় ওগুলো একটু পরপর রুমাল বা টিসু দিয়ে সরিয়ে ফেলা।
পায়জামার ভয়ে কারাতে না শেখাটা কোনো কাজের কথা না, লুঙ্গি পরে চেষ্টা করা যেতে পারত।
------------------------------------------------------------------
এই জীবনে ভুল না করাই সবচেয়ে বড় ভুল
------------------------------------------------------------------
এই জীবনে ভুল না করাই সবচেয়ে বড় ভুল
লুঙ্গি পইরা "র্যাভেন" ইস্টাইলে ফ্লাইং কিক মারতে গেলে যে বিপদ! আর খুবই ভালনারেবল জিনিস। কুস্তাকুস্তির একপর্যায়ে ধরেন, অন্যজনে লুঙ্গির গিঠঠা ধইরা টান দিল
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
আমারও এক দোস্ত আছে, সিভিল ড্রয়িংয়ে ঠিক একই জিনিস তারও হইত। আমরা কইতাম, ব্ল্যাক বিউটি। বেচারা এমনিতেই আঁকাউঁকিতে খারাপ। পিচ্চিকালে নাকি আর সব সাব্জেক্ট মিলায়ে সবচেয়ে বেশি পায়ে ড্রয়িংয়ে ফেল করসিল
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
লেখা ভালো লাগছে ভাই। ভিক্ষুকরে কঠিন একটা কথা কইছেন। হাসিতে ভাংচুর...
ভিক্ষুকরে কঠিন কথা বলতে চাই নাই, উপায়ও ছিলো না, আমার কাছেও টাকা নাই, তার কাছেও বিক্রি করার মত কিছু নাই। তবে আমার উদ্যোগটা মহতী ছিলো।
------------------------------------------------------------------
এই জীবনে ভুল না করাই সবচেয়ে বড় ভুল
------------------------------------------------------------------
এই জীবনে ভুল না করাই সবচেয়ে বড় ভুল
আপনি দেখি বড় বিপদে আছেন!
সুমিমা ইয়াসমিন
ভাই...দিব নাকি লিস্টটা ধরায়??? আপনার একটা উপকারও হইল...চামে দিয়ে নিজেও একটা উপকার করে ফেললাম আরকি
ইশ্কুলে থাকতে আমিও কারাতে শিখতাম। ব্রাউন বেল্টও পাইসিলাম (!)
আমাদের কারাতে ক্লাশের ৯০% ই মেয়ে ছিল
লেখা অনেক ভালু পাইলাম :D:D
এইজন্যই তো সুপারম্যান পেন্টুলটা উপ্রে পড়ে।
মেয়ে
সিভিল ড্রয়িং এ একই অবস্থা ছিল আমার, ভাবে কবিতা লেখার চেষ্টা করতাম। তা দেখে ক্লাসের মাইয়ারা আরো দূরে চলে গিয়েছিল। সিগারেট ও কবিতার ব্যাপারে মেয়েদের সমস্যাটা কি বলেন তো রহমান ভাই?
মজারু হইছে, ১ বেশী (ওয়ান মোর)।
....................................
শ্যামল
মজারু লেখা। ভাই আমি বিপদে পড়ছি, একটু সাহায্য করেন, আমার সুপারভাইসার রে একটু বোঝাইবেন যে আমি কাজে ফাঁকি দেই নাই, খালি কাজ শুরু করছি দেরীতে।
নতুন মন্তব্য করুন