আপনারা এবার আমাকে বিশ্বাস করুন। গত এক বছরের সমস্ত গ্লানি কর্দমা ভুলে নতুন পোশাক পরিহিত শিল্পীরা আজকে স্টেজে উঠেছেন। এবার আপনাদের আর হতাশ হতে হবে না। এবার কিন্তু এরা কথা রাখবেন। স্বপ্নতাড়িত মানুষদের বোকা বানানো খুব সহজ। কথার ফানুস উড়িয়ে ঝলমলে পোশাক পড়িয়ে বাহারী নর্দন-কুর্দন করে বছর ব্যাপী রঙিন জলসা শেষে পাঁচ নৃত্যশিল্পী ফ্লপশোর পুরো দায়ভার নিয়ে নাট্রমঞ্চ ত্যাগ করলেন। নৃত্যশিল্পীদের ঝেঁটিয়ে বিদায় করা যায়। কিন্তু প্রযোজক-নির্দেশকরা যাবেন কোথায়? তারা হলো ধোয়া তুলসীপাতা। তবে সুস্থভাবে শিল্পীরা হাত-পা নিয়েই পদত্যাগ করলেন। অনেক দুর্মুখেরা বলছেন, তাদের অনেকে নাকি দেশত্যাগও করেছেন। হঠাত তারা পদ হারিয়ে আতঙ্কিত তাদের পশ্চাৎদেশ নিয়ে। পাছে জনতা যদি কিছু বলে বা করে। নৃত্যশিল্পীরা তাই নিরাপত্তা চেয়েছেন। এদেশে গুণীজনদের কদর এমনিতেই অনেক কম। তার পর আবার ফ্লপ শো'র শিল্পী বলে কথা!! তাও ভাগ্যিস, এবার পচা টমেটোর ফলন কম হয়েছিল। না হলে কি কোন উপায় ছিল?
এই মরার দেশে লোকসানের ভাগ গুণে শুধু পাবলিক। দিন যায়। প্রত্যাশা বাড়ে। দেনা বাড়ে। কিন্তু ফলন হয় না। লাভের ফসল পাবলিক দেখে না। শেয়াল পন্ডিত এক কাছিম ছানা দেখিয়ে পাবলিককে আর কতো বোকা বানাবে? এ বছরের মধ্যেই জনগণের স্বপ্ন ডালপালা গজিয়ে মহীরুহে পরিণত হবে শান্তি, নিরাপত্তা আর স্বচ্ছতা দিতে। পাবলিক টাসকি খেয়ে তাকিয়ে থাকে। ঘোলা জলে মাছ ধরার আনন্দই আলাদা। অনেকটা কপালের খেলের মতো। বড়শীতে ধরা পড়লে ভাল, না পড়লে কপালে ছিল না বলে সান্ত্বনা। হায় রে অভাগা বঙ্গসন্তান!!
মহল্লায় চা-পুড়ির হোটেল দোকান না চললে দোকান রং করে মিলাদ পড়িয়ে নতুন ম্যানেজমেন্টের সাইন দিয়ে আবার ব্যবসায় নামে নতুন নামে পুরনো দোকানী। খদ্দেররা আশায় আশায় চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে ভীমড়ি খেয়ে উগলে দেয়। দু'একদিন চলে। তারপর আবার যেই সেই। মুনাফাখোর দোকানদার অতি লাভের আশায় স্যাকারিন মেশায়। ফেলে দেয়া লিকারহীন সুশীলপাতা কেটলিতে পুড়িয়ে কালো করে লাভের অংক বাড়াতে চায়। দু'একদিন পরে টের পায়। আশায় গুঁড়ে বালি। দু'একদিন পর তল্পিতল্পা গুটিয়ে দোকানদার টানিয়ে দেয় দোকান বন্ধের সাইন। পাবলিক হলো নিরীহ কাস্টমার। না পেলে আর কি করা? ২৫ টাকা দরে তিন কেজি চালের জন্য তিনঘন্টা দাঁড়িয়ে একগাল হাসি মুখে মেখে চাল নিয়ে আবার তিনদিন পর লাইনে দাঁড়াবে। মাঝের দু'দিন ফাঁকা। নতুন ম্যানেজমেন্ট এবার চাল দেবে, ডাল দেবে। এক বছর পর কুম্ভকর্নের নিদ্রাভঙ্গ হলে দোষ কি দোকানদারের? সব দোষ পাবলিকের? এরা ভাত খায় বেশী। দোষ মজুতদারের। কারণ, গত এক বছরে সব মা*ারচো* মজুতদারদের জন্ম হয়েছে।
আজ সকালের খবরের কিছু অংশ দেখুন এখানে:
তবে এবার আপনারা বিশ্বাস করুন। স্বয়ং কবিরাজ নিজেই আশাবাদী। এদেশের পাবলিক হলো ম্যালেরিয়া রুগী। কুইনিন মুখে ঠেসে দিতে হবে উগলে দেয়ার আগ পর্যন্ত। কবিরাজ তার বনবনাজী নিয়ে বসেছে। হাতে আছে পুড়িয়া। রুগী বুঝে ব্যবস্থা। বিডিআর দাম কমাবে। চাল আনবে, ডাল আনবে। টাস্ক ফোর্স দূর্নীতি দূর করবে। মামলা সাজাবে। সাদা-নীলের মধ্যে গ্যাঞ্জাম বাড়িয়ে জেলে পচাবে ছাত্র-শিক্ষকদের। র্যাব আনবে শান্তি শৃংখলা। দু'একটা চেপে ধরা ইয়াবা সুন্দরীর দিকে তাকিয়ে পাবলিক ভুলে যাবে ক্রসফায়ারে পড়া লাশের কথা। সুশীল সমাজ আনবে বিশ্বাস আর আস্থা। দেশী-বিদেশী তোষামোদকারীদের লিস্ট বানিয়ে তাদেরকে দেয়া হবে কনসালটেন্সীর দোকানদারি। আর মোড়লদের ফোন, মূর্তি, ব্যাংক, কয়লা, ময়লা, গ্যাস, তেল-বেল দিয়ে খুশী রাখা হবে। সরকার হবে জাতীয়। কবিরাজী ঔষধে তেলজল মেখে পাবলিক জাতীয় সরকার মাথায় নিয়ে নাচবে। গণতন্ত্র সবার জন্য না। কনভেনশনাল গণতন্ত্র ব্যর্থ। এদেশে গণতন্ত্র বাস করে বন্দুকের গোড়ায়-এই কথায় যতো তাড়াতাড়ি ঈমান আনবেন ততো তাড়াতাড়ি আসবে শান্তি।
মন্তব্য
(বিপ্লব)
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
ধন্যবাদ।
জলপাই আচারের প্রথম বার্ষিকী নিয়ে কোন লেখা না নেই কেন? সুশীল সমাজ জবাব চাই।
অন্ধকারের উতস হতে উতসারিত আলো
আমরা চাকর বাকর মানুষ, আমাদের আবার কথা কি ??
কর্তা বাবুরা চালান , আমরা চলি ।
---------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে
-------------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে
সাধু! সাধু!
(বিপ্লব)
আমাদের চিন্তাই আমাদের আগামী: গৌতম বুদ্ধ
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
একেবারে ৫ তারা লেখা হইছে!!
সবই আপনাদের দোআ। ধন্যবাদ।
আপনারা প্লট সাজান, আমরা কেবল লিখি
অন্ধকারের উতস হতে উতসারিত আলো
নতুন মন্তব্য করুন