(আজকের লেখাটা উতসর্গ করলাম সামরিক জাঁতাকলে আটক ছাত্র-শিক্ষকদের জন্য। তাদের নি:শর্ত মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত নিন্দা ও ঘৃণা জানাতে থাকব অথর্ব-উদ্ধত আগ্রাসী নেকড়েদের প্রতি)
একটি অসাংবিধানিক অনির্বাচিত অথচ দৃশ্যত জনপ্রিয় সামরিক সরকারের প্রথম বার্ষিকীর ঠিক একদিন আগে এই সরকার একটু খোলস বদলাল। এক বছরের আমলনামা নিয়ে সরকারের মধ্যের সরকার আতঙ্কিত। চারজন উপদেস্টা পদচ্যূত হলেন। নতুন পাঁচজন নিয়োগ পেলেন। রং বদলালে আর খোলস বদলালে কি সরকারের ইমেজ বদলাবে? এই সরকারের সবচেয়ে বড়ো সাফল্য কি? সেই প্রশ্নের উত্তর একমাত্র জনগণ দিতে পারবে। বিবিসি'র বাংলা বিভাগের বিশেষ পরিবেশনা নিয়ে আজ সকালের আড্ডার পাতা সাজালাম। বাংলাদেশের নিউজ মিডিয়াতে সরকারের মূল্যায়ন সঙ্গতকারণেই খুব পরিমিত ও সতর্ক। এ ব্যাপারে আরও বিশ্লেষণমূলক লেখা নিয়ে আপনাদের কাছে পরে ফিরে আসব। গণতন্ত্র মুক্তি পাক- শহীদ নুর হোসেনের এই স্বপ্ন বাস্তবতায় কতোটা ধরা দেবে- তা নিয়ে প্রশ্ন প্রকট হয়ে উঠছে। এক ধরণের গুমোট পরিবেশে দেশ হাঁটছে অস্পস্টতা ও অস্বচ্ছতার দিকে।
আজকের বিবিসি'র বাংলা বিভাগের পরিবেশনায় তত্বাবধায়ক সরকারের প্রথম বার্ষিকী নিয়ে অনুষ্ঠানটি শুনে দেখুন:
|
কিছু প্রশ্ন বারবার ঘুরে ফিরে সামনে আসে। সরকার স্বচ্ছতার প্রতিশ্রুতি নিয়ে আসলেও সবকিছুতে কেন অস্পস্টতা বাস করে। সরকারের জবাবদিহিতা নেই বলে তারা কি জবাবদিহিতার উদাহরণ সৃস্টি করছে না কেন? এই সরকার ক্ষমতা নেওয়ার পর বেসামরিক চাকরিতে ক'জন সামরিক কর্তাব্যক্তি সরকারী নিয়োগ পেয়েছেন? সিডর দুর্গতদের জন্য সরকার কতো টাকা পেয়েছে আর কতো টাকা কোথায় কিভাবে ব্যয় করেছে- এই সাধারণ হিসেবটা জনগণের কাছে দিলে সমস্যা কোথায়? সামরিক ত্রাণ ভান্ডারে চাঁদা দেয়ার জন্য লাইন ধরে দাঁড়ানো পাবলিক দিয়ে সামরিক বাহিনীর সিভিল ইমেজ তৈরীর চেস্টার কি কোন প্রয়োজন আছে? আর যদি করতেই হয় তাহলে সংগৃহীত সকল অর্থ প্রধান উপদেস্টার ত্রাণ ভান্ডারে জমা দেয়া হয় না কেন? এই টাকা কিভাবে কোথায় ব্যয় হয়? সামরিক বাহিনীর অবদান খাটো করার জন্য বলছি না, বলছি শুধু স্পস্টতা আর স্বচ্ছতার খাতিরে। সরকারের ভেতর সরকার যখন থলের বেড়ালের মতো বেরিয়ে আসে তখন ভবিষ্যত যে শুভ না, তা বোঝা যায়। রাজনৈতিক সংস্কার নিয়ে সরকারের রাজনৈতিক এজেন্ডা যে সিভিল পোশাকে ঢেকে রাখা যাচ্ছে না, তা হয়তো অনেক নির্বোধরা বুঝে না?
এই সরকার অসম সাহসিকতার জন্য প্রশংসার দাবী রাখে। তবে এই সাহসিকতা দেখাতে গিয়ে সরকার যে সবসময় সততা দেখাতে পারেনি, তা কি জানে? জরুরী আইন তুলে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনা করে দ্রুত গণতন্ত্রের দিকে না গেলে সরকার নিজের পায়ে নিজেই কুড়োল মারবে। জবাবদিহিতা আর স্বচ্ছতা যদি গণতন্ত্রে উত্তরণের অনিবার্য শর্ত হয় তাহলে সময় এসেছে তা ফিরিয়ে দেয়ার। বন্যেরা বনে সুন্দর-এই কথা না বুঝে বন্য আর বর্বর আচরণ করলে নব্বইয়ের পরিণতি তরান্বিত হবে। তখন কিন্তু সুশীল সমাজ দিয়ে গণজাগরণ ঠেকানো যাবে না। তার আলামত গত একবছরে দু'বার চোখে পড়েছে। সামরিক বাহিনী নিয়ন্ত্রিত এই অনির্বাচিত সিভিল সরকারের উচিত তাদের ভুলগুলো শোধরানোর চেস্টা করা। অনতিবিলম্বে আটক সকল ছাত্র-শিক্ষকদের মুক্তি চাই। তাদের মুক্তি দিয়ে শুরু হোক প্রথম বার্ষিকীতে সরকারের সদিচ্ছার প্রথম বহি:প্রকাশ। আস্থার সংকটে বসবাস করা সত্যি বড্ডো বিপজ্জনক।
মন্তব্য
রাজা,তুমি নেংটো!
----------------------------------------
শমন,শেকল,ডানা
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
নতুন বাংলাদেশ
গড়ছে ক্যারা?
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ
অজ্ঞাতবাস
সামরিক শাসন মাত্রেই এরকমই এটা জানা ছিল। তবে এ এক অদ্ভূত মডেলে শাসন চলছে। মূল শাসনযন্ত্র থেকে যাচ্ছে সামরিক বাহিনীর হাতে আর জনগণের রোষ যাচ্ছে কিছু উপদেষ্টার বিরুদ্ধে।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
নিও মিলিটারীজম ।
কে বলে ওদের হাঁটুতে বুদ্ধি? ওদের বুদ্ধি ঠিকই আছে । মরবি তো মর ছাগলগুলো !
----------------------------------------
শমন,শেকল,ডানা
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
সামরিকতন্ত্র যে নতুন মুখোশে জেঁকে বসেছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। দেশী ভয়েসের সৌজন্যে দেখুন প্রথম বার্ষিকী নিয়ে এনটিভি ও চ্যানেল আইয়ের সংবাদ পর্যালোচনা:
অন্ধকারের উতস হতে উতসারিত আলো
জনগণ যে চারটে খেয়ে বাঁচবে সে সুযোগ এরা রেখে যাবে বলে মনে হচ্ছে না।
..................................................................................
শোনো, বীণা আমি বাজাইনি প্রতিবারই নিজে, এমনও হয়েছে
বীণায় রেখেছি হাত, নিজেই উঠেছে বীণা বেজে!
... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী
--- সত্যিই তাই, আস্থার সংকট, অস্তিত্বের সংকট...
রোদ্দুরেই শুধু জন্মাবে বিদ্রোহ, যুক্তিতে নির্মিত হবে সমকাল।
বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।
নতুন মন্তব্য করুন