পলিটিক্যাল জোক দিয়েই শুরু হোক আড্ডাবাজি

আড্ডাবাজ এর ছবি
লিখেছেন আড্ডাবাজ (তারিখ: বুধ, ২৫/০৬/২০০৮ - ১০:১১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

এই পলিটিক্যাল জোকটা এখন থেকে প্রায় সোয়া দুই বছর আগে আমার ব্লগে লিখেছিলাম। পড়ে পাবলিক মজাও পেয়েছিল। কিন্তু সেদিনের পাঠক কি একবারও ভাবতে পেরেছিল, সময়ের পানি গড়িয়ে হাস্যকর কৌতুকটা ২০০৮ এর বাস্তবতা হবে এই বাংলাদেশের মাটিতে। নিয়তির নির্মম পরিহাস!! অরিজিন্যাল কৌতুক সৌদী ব্যাকগ্রাউন্ডে হলেও সৌদী শেখদের দৌরাত্ম আর বাংলাদেশের উর্দি পড়াদের স্বেচ্ছাচারিতার মধ্যে পার্থক্য তেমন একটা নেই। তাই এই পলিটিক্যাল জোক দিয়েই শুরু হলো আবার নতুন করে আড্ডাবাজি। চলুন প্রথমেই জোকটা পড়ে নিই।

জামাতে ইসলামী, বিএনপি আর ঐক্যজোটের তিন র্কমী মদ্যপান করা অবস্থায় সৌদী আরবে ধরা পড়। সৌদী আরবে যেহেতু প্রকাশ্যে মদ্যপানের অপরাধ অত্যন্ত গুরুতর, তাই সেখানে এর শাস্তি হচ্ছে চাবুকের বিশ দোররা বাড়ি। আরবের শেখ যখন এই তিন কর্মীকে শাস্তির জন্য ব্যবস্থা নিচ্ছিলেন, তখন শেখ বললেন, "আজ আমার প্রথম বউয়ের জন্মদিন, তাই আমি তোমাদের প্রত্যকেকে চাবুক মারার আগে একটা করে আর্জি জানাবার অনুমতি দিলাম এবং তোমাদরে আর্জি মঞ্জুর করা হবে।

লাইনের প্রথমে দাঁড়ানো ঐক্যজোটের কর্মী বলল, "শেখ তুমি যদি চাবুক মারার আগে পিঠের সাথে একটা বালিশ বেঁধে দিতে। তার আর্জি মোতাবকে বালিশ বেঁধে চাবুক মারা শুরু হলো। বালিশ চাবুকের বাড়ি ১০ টা র্পযন্ত নিল, তারপর বালিশ গেল ফেটে। ব্যথায় কুঁচকে রক্তাত্ব অবস্থায় তাকে সরানো হলো বিশ দোররার পর।

এর পরে লাইনে ছিল বিএনপির র্কমী। সে ঐক্যজোটের কর্মীর বেহাল অবস্থা দেখে আর্জি জানাল দু'টো বালিশ বাঁধার। তার আর্জি মোতাবকে ২টা বালিশ বেঁধে চাবুক মারা শুরু হলো। বালিশ চাবুকের বাড়ি ১৫ টা র্পযন্ত নিতে পারল, তার পর বালিশ গেল ফেটে। ব্যথায় কুঁচকে গোঙ্গানো অবস্থায় বিএনপি'র র্কমীকে সরানো হলো বিশ দোররার পর।

সবার শেষে লাইনে ছিল জামাত কর্মী। সে কোন কিছু বলার আগেই শেখ জামাত র্কমীকে বলল, "তুমি হচ্ছো গোলাম আযমের দলের লোক। তাই তুমি ২টা আর্জি রাখতে পার"। জামাতী কর্মী খুশীতে গদগদ হয়ে বলল, "হুযুর, আমি নাদানের মতো কাজ করেছি, তাই তুমি আমাকে চাবুকের ২০ দোররা না, ১০০ দোররা মার। শেখের চোখ আনন্দে জ্বলজল করে উঠল। বলল, "তার পরের আর্জি"? জামাত কর্মী ব্যথায় কুঁকড়ানো বিএনপি কর্মীকে আঙ্গুলের ইশারায় দেখিয়ে বলল, "বালিশ টালিশ না, তুমি ঐ ব্যাটারে আমার (বিএনপি'র কর্মী) আমার পিঠের পেছনে বাইন্ধা দাও"।


ঘটনা হলো বাংলাদেশের জেলখানা আর দোজখখানার মধ্যে পার্থক্য খুব সামান্য। একটা এই দুনিয়ার শাস্তি আর আরেকটা আখেরাতি শাস্তি। তো দেশের জেলখানার উর্দি পড়া পাহারাদারদের পারভার্সন সৌদী শেখদের তুলনায় কি আর কম যায়?। তাই আমার পলিটিক্যাল জোকের মতো যখন তাদের জেরা করা শুরু হলো, তখন নিজামীর আবদার অনুযায়ী আমাদের যুবরাজকে পেছনে বাইন্ধা দেওয়া হয়েছিল। তারপর রাতের অন্ধকারে যা হওয়ার তাই হলো। নিজামী তো দিব্যি হাঁটতে চলতে পারে, কিন্তু আমাদের যুবরাজ তো শেষ। মেরুদন্ডের কয়েকটা ডিস্ক সরে গেছে। সে তো কোমর আর নাড়তে পারে না। গুতা কাকে বলে?

কথা হচ্ছে, যে সুস্থ সবল টগবগে যুবরাজ হাঁটতে হাঁটতে জেলে গেল, তার মেরুদন্ডের হঠাত কি হলো? এক বছরও লাস্টিং করল না। হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট হলো, তার কানাকড়িও উদ্ধার হলো না। যুবরাজের মামা বিদেশে বসে বগল দাবাচ্ছে। তার টিকিটাও ধরা হলো না। সত্যি কথা কি যুবরাজের গোষ্ঠীদের পাচার করা দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা উদ্ধার করতে গেলে অনেকেরই কানে টান পড়বে। যে নেকড়ের গোষ্ঠী এই হতভাগ্য জাতির টুটির উপর চেপে বসেছে, তার লক্ষ্য কোন কিছু পরিস্কার করা না। ইনিয়ে বিনিয়ে জাতীয়তাবাদী ধামাধরাদের নতুন ব্রান্ডের জন্ম দেওয়া। এর জন্য যদি আপাতত কারও ঘাড়ে বন্দুক রেখেই ফায়ার করতে হয়, তাহলে তাই হবে। সেই প্রক্রিয়া খুব সফলভাবেই শুরু হয়েছে...।


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

- ইয়া হাবিবি, উর্দি আলাদের আইপি সহ ব্যান চাই।
- গরীবের ঘর পাহারার জন্য কোটি টাকার সেপাইয়ের চাইতে দুই বেলা ভাত বেশি দরকার।

ইবা

কীর্তিনাশা এর ছবি

‍"যে নেকড়ের গোষ্ঠী এই হতভাগ্য জাতির টুটির উপর চেপে বসেছে, তার লক্ষ্য কোন কিছু পরিস্কার করা না। ইনিয়ে বিনিয়ে জাতীয়তাবাদী ধামাধরাদের নতুন ব্রান্ডের জন্ম দেওয়া। এর জন্য যদি আপাতত কারও ঘাড়ে বন্দুক রেখেই ফায়ার করতে হয়, তাহলে তাই হবে। সেই প্রক্রিয়া খুব সফলভাবেই শুরু হয়েছে...।"

একদম ঠিক।

যে লাউ সেই কদু
মধুকরই চাটে মধু।

----------------------------------
সোনার স্বপ্নের সাধ পৃথিবীতে কবে আর ঝরে !

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

চলুক আড্ডাবাজী...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

সেটাই... চলুক আড্ডাবাজি, সাথে আছি। গুঁতিত যুবরাজের কাহিনী শুনে অবশ্য আমি মোটেও দুঃখিত নই। মেরুদণ্ড ভাঙা থাকার সুফল হিসেবে মুক্তির পর নৈশকালীন সুখ থেকেও যুবরাজ বঞ্চিত থাকবেন। চোখ টিপি

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
মৌমাছির জীবন কি মধুর?

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

আকতার আহমেদ এর ছবি

অভিনন্দন আড্ডাবাজ, চলুক আড্ডাবাজি !

অমিত আহমেদ এর ছবি

দেখা যাক শেষ সমীকরণটা কি দাঁড়ায়।


ওয়েবসাইট | ফেসবুক | ইমেইল

অতিথি লেখক এর ছবি

দারুন কৌতুক এবং রাজনীতিবোধ, সচলায়তনে দুর্লভ।
এই জাতীয়তাবাদী ধামাধরারা নতুনই হোক বা পুরাতন, এদের ক্ষমতার কেন্দ্র হচ্ছে সামরীক বেসামরীক সরকারী কর্মকর্তাদেরই এক সুবিধাবাদী বড় অংশ। এই সরকারী এলিটরা এবং বিদেশী সুবিধাভোগী শক্তিরা কখনই চায়না যে সত্যিকারের জনপ্রতিনীধিরা দেশ শাসন করুক। আর আমরা, নির্বোধ শিক্ষিত মধ্যবিত্তরা বারবার এদের বিশ্বাস করে পোশাক উঁচিয়ে ধরি।

- অপ্রিয়

জুলিয়ান সিদ্দিকী এর ছবি

ভিন্ন স্বাদের রসে টসটসা! দেঁতো হাসি
____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।

___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!

দ্রোহী এর ছবি

সমীকরণের ফলাফল একই:

গরীব আগেও হোগামারা খাইতো, এখনও খায়....ভবিষ্যতেও খাইতে থাকবে।


কি মাঝি? ডরাইলা?

অতিথি লেখক এর ছবি

দারুণ বলেছেন।
গরীবের হোগা সৃষ্টিই হয়েছে মার খাওয়ার জন্য!

~ ফেরারী ফেরদৌস

অতিথি লেখক এর ছবি

শুরুর কৌতুক নিঃসন্দেহে দারুণ!

রাজনৈতিক দলগুলো গত ১৬ বছর অরাজকতা চালালো মহাসুখে। লুটপাট করে চেটেপুটে যা কিছু বাকি আছে এখন মনে হচ্ছে সেই ভাগ নতুন কেউ নিতে চায়। ১/১১ এর কথিত সুফল অধরাই রয়ে গেল!

সামরিক শাসন আসবে। নাহয় সেই আগের পিন্টু ভাইয়ের, শামীম ভাইয়ের বগল বাজানো শুনতে হবে। হাজারী ভাই যে কই গেল! ভারতে ভায়াগ্রার ব্যবহারে ব্যস্ত নিশ্চয়ই!

~ ফেরারী ফেরদৌস

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।