জেনারেল মঈন হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতা দিতে যাচ্ছেন। অত্যন্ত আনন্দের খবর। জেনারেল মঈন যে একজন ব্যতিক্রমী বাংলাদেশী জেনারেল যিনি ক্ষমতার লোভ সম্বরণ করে দেশের জন্য নীরবে কাজ করছেন তা নিয়ে তর্ক বাঁধিয়ে দুদকের মামলায় জড়াবার মতো সাহস ক'জন ক্ষণজন্মা দেশপ্রেমিকের আছে? তিনি নিজেও অবশ্য এমনটা দাবী করেছেন। লন্ডনে সাংবাদিকদের বলেছেন, বিশ্বের গণতন্ত্র বিপন্ন দেশগুলো এধরণের সাহসী কাজের জন্য বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীকে ডাকবে!! আমাদের অহংকার আকাশ ছুঁয়ে যায়।
জনগণ ক্ষমতার উৎস। সেই সত্যের প্রতিফলনের জন্য যখন বন্দুকের নলা দিয়ে হয় তখন ক্ষমতার উৎস জনগণ থেকে বন্দুকের আগায় গিয়ে ঠেকে। গণতন্ত্র, দ্রব্যমূল্য আর আইন শৃংখলা রক্ষায় একমাত্র সফল বিকল্প হচ্ছে সামরিক বাহিনী, তখন বোঝা যায় কতোটা সিস্টেমেটিকভাবে এদেশে সিভিল প্রশাসনকে ব্যর্থ করা হয়েছে। স্বয়ং সামরিক নেতা জিয়ার রাজনীতি কঠিন করার ব্রত তার পরবর্তী সেনা প্রজন্ম সযত্নে আগলে আঁকড়ে ধরে রেখেছে। তাই, দরিদ্র এই হতভাগ্য দেশে সামরিক বাহিনীর বিকল্প কোন শক্তি দাঁড়াতে পারে না। দেশী-বিদেশী ফড়িয়া আর বেনিয়ারা সামরিক বাহিনীর দিকে তাকিয়ে থাকে, কারন এদের মতো বিশ্বস্ত ধামাধরা কোথায় পাওয়া যাবে তাদের আর্থিক ও কৌশলগত স্বার্থ রক্ষায়? গণতন্ত্র রক্ষায় আর সংহত করতে সামরিক বাহিনী যতোই কৃতিত্ব দাবী করুক না কেন, এদেশে কিন্তু গণতন্ত্র নিধনে তাদের কৃতিত্বকে অস্বীকার করবে কিভাবে? ইতিহাস সাক্ষী এদেশে সামরিক বাহিনীর হাতে তাদের নিজেদের সদস্যসহ যতো রাজনৈতিক ও রাস্ট্রীয় নেতা ও কর্মী প্রাণ হারিয়েছে তা এদেশের সকল রাজনৈতিক সহিংসতাকে হার মানায়।
তারপরও আমরা সামরিক বাহিনীর প্রতি আস্থাশীল। অসি আর মসি লড়াইয়ের কেচ্ছা সময়ের স্রোতে বদলে গেছে। অসির ধার আর কৌশল যে আরও সূক্ষ্ম হয়েছে, তা মসীধারীরা অনেক আগেই ভুলে গেছে। তাই, মিথ্যে মামলায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা অন্তরীণ হয়ে থাকেন, ক্ষমা প্রার্থনায় ন্যুজ হয়ে থাকেন। আমরা ভুলে যাই, ক্ষমতা আগুণের মতো। ঔদ্ধত্যে ভরা। ক্ষমতা বড্ডো ক্ষমাহীন আর নির্দয়। হোক তা সামরিক ক্ষমতা অথবা রাজনৈতিক ক্ষমতা। তার উদাহরণ ভাসে চোখের সামনে। নির্দয়ভাবে ছাত্র-শিক্ষক-সাংবাদিকদের সামরিক আর পুলিশ বাহিনী পেটালো। মিথ্যে মামলায় জড়ালো। যাদেরকে পেটানো যায়নি, তাদের মুখে কুলুপ এঁটে দেওয়া হলো। বুট আর বুলেটের ক্ষমতা ও কদর যে ক্ষয়িষ্ণু গণতন্ত্রের যুগে মোটেও কমেনি বরং বেড়েছে তা খুব অসংযতভাবে দৃশ্যমান। বন্দুকের নল যে খোলস পাল্টেছে তা অনেকেই টের পায়নি। তাই, আজকাল শুধু বুলেট ছুঁড়ে লোকজনকে শান্ত করতে হয় না। কারণ, প্রাণ হরণ আজকাল শুধু প্রাণগত নয়, আত্মিক ও বৈষয়িকও হয়েছে। এই কাজটি যে খুব সিলেক্টিভাবে করা হচ্ছে তার সাক্ষ্য মান্নান ভুঁইয়া, নিজামী আর কোরেশীরা দিতে পারবে।
তারপরও আমরা গর্বিত। হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর প্রধানকে আমন্ত্রণ জানিয়ে নির্লোভ সেলিব্যাসির জন্য সেলিব্রিটির মর্যাদা দেয়া হচ্ছে তাতে আমরা গর্বিত। বক্তব্য রাখবেন অক্টোবরের ২১ তারিখে। কিন্তু যারা আমন্ত্রণ দিলেন তারা কেন যেন ভুল করে তাদের অনুষ্ঠানসূচীতে জেনারেল মঈনের নামটা উহ্য করে রাখল। না, বাংলাদেশী জেনারেল যে বক্তৃতা রাখবেন তার ঘোষণা হার্ভাডের কেনেডী স্কুল অব গভর্নমেন্টের কোন অনুষ্ঠানসূচীতে নেই। তাই বলে ভক্তরা কি নীরব থাকে? এর মধ্যে পাঠকদের একজন তো সরাসরি হার্ভাডে যোগাযোগ করে ব্লগে মন্তব্য রেখে গেল:
"I contacted Harvard University/JFK School of Govt's. Communication/public relations department to get clarification about a possible appearance by General Moeen at some forum or conference there on the 21st of October. Guess what, they searched but couldn't find the scheduling of such. Is this purported appearance for real or an attempt to prop up Moeen's so-called Harvard credentials"?
মন্তব্য
মানে ? ? ? ?
আর অক্টোবরের ২১ তারিখ তো রবিবার
প্রকৃতিপ্রেমিক, এটা কি বললেন? সব আনন্দ এভাবে মাটি করলেন। এই কে আছিস! প্রকৃতিপ্রেমিককে জলপাই গাছের সাথে বেঁধে রাখো।
অন্ধকারের উতস হতে উতসারিত আলো
নাকি গণতন্ত্র বিপন্ন করতে?
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
চুপ ! সব বুঝতে যান কেন ?বিদেশী সার্টিফিকেট দরকার আছে ।সময় হলেই টের পাবেন ।
মঈন ডাক্তার বলে কথা।
কি মাঝি? ডরাইলা?
হার্ভার্ডের এক ছাত্রের কাছ থেকে এই মাত্র ই-মেইল পেলাম ঃ
asked a kennedy school guy....
moyeen's talk has been cancelled. he is just meeting with a few kennedy
school profs... thats all.
দেখা যাক মিডিয়া এখন কি বলে।
এই সাইটে দেখলাম,
পরবর্তী আপডেট জানতে ইচ্ছুক।
-----------------------------------
যা দেখি তা-ই বলি...
-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ ।
ঠিকই। আপডেট চাই আগামী দু'দিনের মধ্যে। ধন্যবাদ।
অন্ধকারের উতস হতে উতসারিত আলো
হায় হায়। এজন্যই ইন্টারনেট বন্ধ করার দরকার। বেফাঁস কথা ফাঁস হয়ে গেলে বেকুবি বেকায়দায় পড়তে হয়। কোথাকার খবর কোথায় গিয়ে ঠেকে? ধন্যবাদ আপনাদের মন্তব্যের জন্য
অন্ধকারের উতস হতে উতসারিত আলো
সুশান্ত,
লাভ হবে না, ঠিকই। তবে লোকজন যতো কম জানে তত ভাল। এই যুগে তথ্য সবচেয়ে বড়ো অস্ত্র। এটা সবাই হাড়ে হাড়ে টের করতে পারছে। ধন্যবাদ।
অন্ধকারের উতস হতে উতসারিত আলো
নতুন মন্তব্য করুন