খবর শুনা, দেখা আর খবরের কাগজে পড়ার মধ্যে বিস্তর ফারাক আছে। কোন খবর লীড আইটেম হবে সেখানেই খবরগুলো বেশ সাবজেক্টিভ হয়ে দাঁড়ায়। আমাদের সময়, ইত্তেফাক, প্রথম আলো, দিনকাল, থেকে যে কোন খবরের কাগজ উল্টেপাল্টে কচলে দেখেন অনেক খবর শিরোনাম হয়েছে, অনেক খবর ভেতরের পাতায়ও জায়গা করছে না। আমার এক সাংবাদিক বন্ধু সম্প্রতি জামাত নেতা নিজামীর লন্ডন সফর নিয়ে নিউজ আইটেমটি খুঁজছিলেন, কিন্তু খুঁজে পাচ্ছিলেন না। ২৮শে অক্টোবরের হত্যা মামলার আসামী নিজামী বিনাবাধায় সস্ত্রীক দেশের বাইরে গেলেন কোন শোরগোল নেই। কোন সরকারী বিধিনিষেধ নেই!! নিউজ আইটেমও না। সরকারের গোয়েন্দা বাহিনী উত্তর বংগের সাংবাদিকদেরকে নির্দিস্ট ফর্ম পূরন করে বায়োডাটাসহ শ্বশুর-শাশুড়ীর খবরও জমা দিতে বলেছে এরকম গরম খবরও কিন্তু কোন পত্রিকায় স্থান পায়নি।
স্বাধীনতা, আর মুক্তিযুদ্ধকে কটাক্ষ করার দায়ে রাজাকার মুজাহিদ আর হান্নানকে নিয়ে দেশের লোকজন যখন ঝাঁপিয়ে পড়েছে তখন জামাতীরা বেশ নির্বিকার প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে। ভাবটা এরকম, কি আর হবে? কিছু যে হবে না-এটা তারা নিশ্চিত। জামাতীদের মধ্যে যে বর্ণচোরা ভাব আছে তা তারা সময়মতো ব্যবহারে বড়ই সিদ্ধহস্ত। সরকার অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় আছে, "কেউ মামলা করবে, তারপর কিছু একটা হবে"? যুদ্ধাপরাধী রাজাকার জামাতীদের নিয়ে যখন সবাই ব্যস্ত, তখন কেউ কি খেয়াল করে দেখেছেন তখন জামাত সুকৌশলে তাদের অপকর্মের বিষয়টি ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করার সাথে সম্পর্কিত করে দিচ্ছে। এখানেই জামাতীরা সফল। ধর্মের সওদাগরী করে কাবুলিওয়ালাদের মতো সাধারণ ধর্মবিশ্বাসীদেরকে ঠকায়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে মসজিদে উলু ধ্বনি না উঠলেও জামাতীরা ক্ষমতায় আসলে যে সংখ্যালঘু নিধন হয় তা অবধারিত। এ নিয়ে কাওকে মামলা করতে দেখি না। অথচ বানারীপাড়া সহ বিভিন্ন নির্যাতনের মামলাগুলো পূনর্জীবিত করলেও হাফ ডজন জামাত নেতা এখন জেলের ভাতে কাঁকড় বাছতে পারে।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে ধর্মভিত্তিক উপাদানকে পূনর্জীবিত করে জেনারেল জিয়া আর এরশাদ তাদের স্বৈরাচারী ক্ষমতার বৈধতা ও সমর্থন খুঁজে পেয়েছেন তাকে রাস্ট্রীয়ভাবে বিদায় করতে হলে সকল রাজনৈতিক দলগুলোকে এগোতে হবে। অন্যথায় এটা নিয়ে একটা ক্যাঁচাল লাগিয়ে আবারও নব্য এরশাদরা নিজামীদের সাথে নুতন ধান্ধার হিসেব কষবেন। এই সম্ভাবনাটা অমূলক না। দেশে এখন সবকিছুই ইশারায় হয়। বিধ্বস্ত বিএনপির শবদেহ টানার জন্য যেভাবে সাইফুর রহমান আর হাফিজকে বসানো হলো, তাতে বুঝা যায় দাবার গুটি কোনদিকে যাচ্ছে। অথচ বিশেষ গোষ্ঠীর যদি কোন ধান্ধা না থাকতো, তারা মরা লাশকে সিপিআর দেয়ার জন্য এতোটা উদগ্রীব হতো না। কারণ, এটা তাদের ম্যান্ডেটেও পড়ে না। একটা ব্যাপার খুব খেয়ালে রাখতে হবে, খোঁয়াড় থেকে ৭১'এর শেয়াল তাড়াতে গিয়ে রাজনৈতিক ছাগলছানারা যাতে ব্যাঘ্র মামার উদরস্থ না হয়!!
মন্তব্য
এসব পড়ে অসহায় ক্রোধে আক্রান্তই হই কেবল।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
তাইতো ।
-----------------------------------
মানুষ এখনো বালক,এখনো কেবলি সম্ভাবনা
ফুরোয়নি তার আয়ু
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
বিশ্লেষণটা ভালো হয়েছে।
যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!
নতুন মন্তব্য করুন