||১|| প্রাককথন
অনেকে অনেক উদ্দ্যেশ্য নিয়ে এ ছবিটি দেখলেও আমার বিশেষ আগ্রহ নিয়ে ছবিটি দেখার মূল কারন অন্যত্র। আমার নিজের সন্তানের মানসিক বিকাশ বিলম্বিত; যার প্রয়োজনে ডাক্তার, বিশেষজ্ঞ, হাসপাতাল, থেরাপিস্ট, সোসাল ফোরাম সব জায়গাতেই দৌড়াই। ছবিটির মূল চরিত্রে মানসিক প্রতিবন্ধী একটা ছেলে- সেটা দেখার কৌতুহলেই আমি ছবিটি দেখি। ছবির কাহিনী আর আমার মন্তব্য বলার আগে, আমি ছেলেটির সমস্যা, ডিসলেক্সিয়া (Dyslexia) নিয়ে একটু বলি। ডিসলেকটিক শিশুদের (৫ থেকে ১৪/১৫ বছর, বা আরো বয়স্কও হতে পারে) প্রধান সমস্যা এরা পড়তে পারে না। অক্ষরগুলো উল্টাপাল্টা, জড়ানো প্যাঁচানো দেখে। ডিসলেক্সিয়ার কারন চোখে কোন সমস্যা না, সমস্যা মস্তিষ্কের নিউরোনে। পড়তে পারে না বলে এসব বাচ্চাদের লিখতেও সমস্যা হয়। অনেক সময় মোটর স্নায়ুর সমস্যাও থাকে, যে কারনে কোন কিছু তাক (target) করা, এক পায়ে ভর করা ইত্যাদি ব্যপারগুলো এরা পারে না। ডিসলেক্সিয়ার কারন হিসেবে অনেকে জেনেটিক যোগসূত্রের কথা বলেন; আবার অনেকে পুরো ব্যপারটিকে স্রেফ পড়তে না পারার সমস্যা হিসেবে দেখেন।
আরো দুটি সমস্যা মাঝে মধ্যে আলোচিত হয় তা হলো, অটিজম (Autism) আর এসপারগার (Asperger) সিনড্রোম। এ দুটিও নিউরোনের সমস্যা- জেনেটিক সূত্র ছাড়া অন্য কোন কারণ এখন পর্যন্ত প্রতিষ্ঠিত নয়। অটিস্টিক/এসপারগারের শিশুদের সমস্যা কেবল পড়তে না পারার মধ্যে সীমাবদ্ধ না। কথা বলতে না পারা, চিন্তাশক্তি সীমিত হওয়া, মানসিক বিকাশ বিলম্বিত হওয়া এবং মোটর স্নায়ু সংশ্লিষ্ট কাজ করতে না পারা অটিস্টিক/এসপারগার রোগীদের লক্ষণ হতে পারে। ডিসেলিক্সিয়া, অটিজম বা এসপাগারের কাউকে প্রথম দেখায় বোঝার কোন উপায় থাকে না। এসব সমস্যার কোন ধরনের কোন প্রতিকার বা নিরাময়ী চিকিৎসা নেই। কেবল আগে-ভাগে বিশেষ থেরাপি বা বিশেষ উপায়ে বিভিন্ন বিষয় শিক্ষা দিয়ে তাদের সীমাবদ্ধতা অনেকটা দূর করা যায়।
||২|| ছবির (ধরণী 'পরে আকাশের তারা) কাহিনী
ইশান্ত ৭/৮ বছরের পড়াশোনায় অমনোযোগী এক বালক। তবে তার উৎকেন্দ্রিক (eccentric) বিশেষ কিছু ব্যপারে আগ্রহ আছে। পরীক্ষায় ফেল করে, বাবা-মার কথা শোনায় আগ্রহ নেই, সমবয়সী অন্য ছেলেদের সাথে মিশতে পারে না মোটর সমস্যার কারণে। ফলাফল হিসাবে, তার বাবা-মার শাসন জোটে; স্কুলের প্রিন্সিপাল তাদের ডেকে পাঠান, ছেলের সম্ভাব্য সমস্যার কথা বলেন। ইশানের বাবা-মা সেটা পাত্তা দেয় না, বরং মনে করে ইশানের একমাত্র সমস্যা একগুঁয়েমি। এ রকম মনে করার কারণ হলো ইশান্তের অপর ভাইয়ের পড়াশোনায় সব সময় প্রথম হওয়া, খেলাধুলায় ভাল করা। তো, সমাধান হিসেবে তারা ইশান্তকে একটা আবাসিক (বোর্ডিং) স্কুলে ভর্তি করে দেন। সেখানে ইশান্তের একটা বন্ধু জোটে, যার আবার একটা পা নেই। বোর্ডিং স্কুলের কড়া শাসন ইশান্তের কোন উন্নতি করতে পারে না, শিক্ষকরা উপহাস করেন, শারীরিক শাস্তিও জোটে। ঠিক এমনি সময়ে নিকুম্ভের (আমির খান) আগমন ঘটে। নিকুম্ভ পাশের একটা প্রতিবন্ধী স্কুলের টিচার, এখানে আসেন রিলিফ টিচার হিসাবে আর্ট শেখাতে। তো তিনি ইশান্তের সমস্যাটা অনুমান করতে পারেন। ইশান্তের সেই বন্ধু কিছুটা তথ্য, ইশান্তের নোটবুক ইত্যাদি দিয়ে সাহায্য করে। তিনি যখন অনেকটা নিশ্চিত হন ইশান্তের ডিসলেক্সিয়া সমন্ধে, তখন তিনি ইশান্তের বাবা-মার কাছে গিয়ে বিষয়টা বলেন। বাবা-মা মানতে নারাজ; কিন্তু এক পর্যায়ে তারা নিকুম্ভকে একটা সুযোগ দিতে সম্মত হন। তারপর নিকুম্ভ তার বিদ্যা দিয়ে বিশেষ উপায়ে ইশান্তকে অক্ষর সহ বিভিন্ন বিষয়ে পাঠ দেন। ইশান্তের অনেক উন্নতি ঘটে যায়, পড়াশোনায় ভাল করে। ইশান্তের এক সময় ভাল ছবি আঁকার হাত ছিলো; সেটা যেনে নিকুম্ভ সব ছাত্র/শিক্ষকদের নিয়ে একটা এক্সিবিশনের/ কনটেস্টের মতো আয়োজন করেন। ইশান্ত হয় প্রথম, নিকুম্ভ নিজে দ্বিতীয়। বাবা-মা এই সাফল্যে খুব খুশী হন, বড় ছুটিতে ইশান্তকে স্কুল থেকে বাড়ী নিয়ে যাওয়ার জন্য আসেন। বিদায় বেলায় ইশান্ত নিকুম্ভকে জড়িয়ে ধরে- এখানেই ছবি শেষ হয়।
||৩|| ছবির ভালোমন্দ
আমরা ছবি দেখি হয় বিনোদন (ফিচার/আর্ট ফিল্ম হলে) বা সচেতন (ডকু ফিল্ম হলে) হওয়ার জন্য। একটা ছবির উদ্দ্যেশ্যও সাধারণত এমনি হয়। তারে জমিন পারে এ দুটো বিষয়ের শঙ্করায়ণ ঘটেছে। এ ব্যপারটা বিপদজনক যদি না অডিয়েন্স ফিকশন আর বাস্তবতাটুকু আলাদা না করতে পারে। ছবিটির ভাব প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য, সেজন্য হয়ত পরিচালক সে ভরসা করতে পেরেছেন। ছবিটি ফিল্ম ফেয়ার সহ বেশ কয়েটি পুরষ্কার পেয়েছে, ভারতের রাষ্ট্রপতি পর্যন্ত প্রশংসা করেছেন। প্রতিবন্ধীদের নিয়ে অন্য যে দুটি ছবির কথা আমার মনে আসে তা হলো, ব্ল্যাক আর খামোশী। এ ছাড়া আমার আর কোন ছবির কথা মনে পড়ে না। সে হিসেবে আমির খান খুব বড় একটা কাজ করেছেন। ভারতের অনেক স্কুল শোনা যাচ্ছে এখন এ ধরনের বাচ্চাদের বিশেষ প্রয়োজনের ব্যপারে মনোযোগী হচ্ছে। অনেক বাবা-মা তাদের সন্তানদের নিয়ে সতর্ক হয়েছেন। এটুকু কাজ যে আমির করতে পেরেছেন তার জন্য সাধুবাদ প্রাপ্য। ছবির গান, নেপথ্য সংগীত, সিনেমাটোগ্রাফি ইত্যাদি মন কাড়া।
এবার সমালোচনায় আসি:
ক) ছবির ধরন বিবেচনায় ছবিটির সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হলো আমির খানের পোশাক। একটা প্রতিবন্ধী স্কুলের আর্ট শিক্ষক জিন্স, টাইট টি-শার্ট আর দশ ইঞ্চি উচু জুতো পরবেন এটা আমি মানতে পারি নি। আমির খান যতগুলো দৃশ্যে উপস্থিত, তার প্রতিটিতেই একই চিত্র।
খ) এর পরের দুর্বলতা হলো কাহিনীতে। একটা মানসিক প্রতিবন্ধী ছেলের অবস্থা সম্পর্কে তার শিক্ষিত বাবা-মা কিছুই জানবেন না, এটা মানতে পারি না। ছবিতে বাবাকে বিভিন্ন সময় উত্তেজিত হতে দেখা গেছে, ব্লাডি বলে গালি শোনা গেছে। কিন্তু যেটা দেখা যায়নি সেটা হলো শারীরিক শাস্তি। মানসিক প্রতিবন্ধী শিশুরা তাদের পরিবারে মাত্রাতিরিক্ত নির্যাতনের শিকার হয়- এটা প্রমাণিত তথ্য। মার ভূমিকাও ছিলো গৌণ। তা বাদেও, এ ধরনের পরিবারে স্বামী আর স্ত্রীর সম্পর্কের মধ্যে খুব টানা পোড়েন চলে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে সম্পর্ক টেকেই না; এ তথ্যটাও আসেনি।
গ) নীতিগত যে সমালোচনাটা আমি এ ছবি সম্পর্কে করতে চাই তা হচ্ছে, প্রতিবন্ধী শিশুদের বাবা-মাদের প্রত্যাশাকে আকাশে উঠিয়ে দেয়া। ছবির এক চতুর্থাংশ ব্যপ্তিতে ইশান্তের অধিকাংশ দুর্বলতা দূর হয়ে গেল- এটা ছবিতে যত সহজে দেখানো হয়েছে, বাস্তবতা তার চেয়ে অনেক অনেক দূর। প্রতিবন্ধী শিশুদের বাবা-মারা এখন তাদের শিশুদের দ্রুত সিনেম্যাটিক আরোগ্য প্রত্যাশা করবেন। ডিসলেক্সিয়া/অটিজম/এসপারগার নিয়ে অধিকাংশ গবেষণা হচ্ছে মার্কিন দেশে। পনের কোটি মানুষের দেশ বাংলাদেশে একজন স্পিচ-প্যাথোলজিস্ট নেই- ভারতেও সে অবস্থা রাতদিন পার্থক্য হবে সে আশা করি না। এ ধরনের বাস্তবতা ছবিতে আসেনি।
||৪|| আমাদের অজ্ঞতা
যে ধরনের মানসিক সমস্যাগ্রস্ত শিশুদের নিয়ে এ লেখাটা তাদের সবচেয়ে বড় বাধাটা সামাজিক- আমরা সাধারণ সুস্থ মানুষেরা তাদের দুর্বলতা উপলব্ধি করতে পারিনা। পশ্চিমারা এটার নাম দিয়েছে হিডেন ডিসেবিলিটি; কারন তাদের অক্ষমতাটা প্রকাশ্য নয়। আমাদের দেশীয় প্রেক্ষাপটে, দুর্বল কাউকে সম্মান করার সংস্কৃতি এখনও গড়ে উঠেনি। নিউরোনঘটিত যে কোন সমস্যার উত্তরণে দীর্ঘ সময়ের ব্যাপার, পুরোপুরি আরোগ্য হওয়াটাও অনিশ্চিত। তারে জমিন পার দেখার জন্য সব ধরনের দর্শকদের মধ্যে একটা শোরগোল পড়ে গেছে; ভয় হচ্ছে ছবিটি দেখে তারা প্রতিবন্ধীদের সমস্যা ও সমাধান নিয়ে খুব সরল একটা সমীকরণ রাখবে মাথায়। আমার নিজের অভিজ্ঞতা এ রকম শংকার জন্ম দিচ্ছে।
মন্তব্য
কিন্তু যেটা দেখা যায়নি সেটা হলো শারীরিক শাস্তি।
এই ব্যপারে এক মত।
ছেলের অবস্থা সম্পর্কে তার শিক্ষিত বাবা-মা কিছুই জানবেন না, এটা মানতে পারি না
এটা কিন্তু হয়। আমি হতে দেখেছি।
---
স্পর্শ
আমি নিজের কাছাকাছি কয়েকজনের পরিবারে অটিস্টিক বাচ্চা দেখেছি। সেই সামান্য দেখা থেকেই আপনার লেখার গুরুত্ব বুঝতে পারলাম। খুব মনোযোগ দিয়ে পড়া লেখাটা ভালো লাগলো ভীষণ।
তবে, অটিস্টিক বা ডিসলেক্টিক শিশুদেরকে এক কথায় অ্যাবনরমাল বলে বাতিলের খাতায় ফেলে দেয়া সমাজে হয়তো এই ধরনের ছবির গুরুত্ব কম নয়। মেসেজটা দেবার ধরন হয়তো ভিন্ন।
কাছাকাছি থেকেও বেশী কিছু অনুধাবন করা কঠিন। নিজে পরিস্থিতির শিকার না হলে, পুরোটা জানা যায় না।
আপনার ভাল লেগেছে এজন্য আমি ধন্য।
আলমগীর ভাই, কী লিখব বুঝতে পারছি না! কিন্তু আমার যেটা মনে হয়, আমাদের দেশের... দেশের না বলে কালচারের বললেই ভালো হয়--অধিকাংশ লোকই এক অর্থে অর্ধশিক্ষিত বা অশিক্ষিত। মেয়ে সন্তান হবার জন্য এখনো শতকরা আশি ভাগ পরিবারে মাকে দায়ী করা হয়, যেটা একটা হাস্যকর ব্যাপার এই আধুনিক পৃথিবীতে!
তো আমাদের এই অর্ধশিক্ষিত বা অশিক্ষিত কালচারে আমরা একটি বাচ্চার মানসিক বা স্নায়ুগত সমস্যা, যেটা আমরা চিনিই না, সেটাকে আমরা গুরুত্ব দেব, এরকম ভাবাই যায় না! বরং তাকে হ্যারাস করা আমাদের জাতিগত চরিত্রের মধ্যেই পড়ে!
...আমার বাসায় কয়েকদিন আগে একটি প্যাঁচা এসে আশ্রয় নিয়েছিল মানুষের ঢিল আর লাঠির তাড়া খেয়ে! প্যাঁচাটির একটি ডানা ভেঙ্গে গিয়েছিল এক স্কুলশিক্ষকের লাঠির আঘাতে! তারই এক ছাত্র পরে আমাকে ব্যাপারটা জানিয়েছিল! এই হচ্ছে আমাদের মানসিক চিন্তার স্তর!
তারে জমিন পরের চলচ্চিত্রগত অনেক খুঁত আছে... আফটার অল বম্বের হিন্দি ফিল্ম! কিন্তু ফিল্মের সমালোচনার দিকে পা না বাড়িয়ে আমরা বাস্তবতাকে নিয়ে আলাপ করি... ছবিটির প্রভাব যদি আমাদের মতো মানুষকে অন্যদের প্রতি একটু সহানুভূতিশীল করে তুলতে পারে, অন্তত একটি দুর্বল বাচ্চা যদি স্কুলে তার সহপাঠীদের তুলোধোনার শিকার না হয়ে সহানুভূতি আর মায়ার পাত্র হয়ে ওঠে, সেটাই অনেক বড় পাওয়া!
শিল্পের বিচার আমি করি খুব সাদা মাপের একটি জিনিস দিয়ে... আমার ভেতরে সেটা কতটুকু মানবিক অনুভূতি জাগিয়ে তুলছে এবং সেই অনুভূতি কতক্ষণ কন্টিনিউ করছে আমার মনে... আর সেটা যদি আমার আশপাশের পৃথিবীর প্রতি নতুন করে এক বুক ভালোবাসা জাগিয়ে তোলে আমার ভেতরে, তাহলে আমি তাকে শ্রেষ্ঠ শিল্পের মর্যাদা দিয়ে দেই সাথে সাথে... সেটা মার্কেজ বা ইমদাদুল হক মিলনের, যার লেখাই হোক না কেন!
আলমগীর ভাই, আমি নিজেও একজন পিতা! আমার সাত মাস বয়সী একটি মেয়ে আছে। আমি আশা করি, সে একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ হিসেবেই তার যাত্রা শুরু করবে! কিন্তু সন্তানের প্রতি পিতার যে ভালোবাসা, সেখান থেকে আমি অনুভব করছি আপনার মর্মবেদনা... আপনার হাত ধরছি আলমগীর ভাই... একসময় নিশ্চয় সব ঠিক হয়ে যাবে...!
---------------------------------------------
বুদ্ধিমানেরা তর্ক করে, প্রতিভাবানেরা এগিয়ে যায়!
--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'
আমি আপনাদের সাথে একমত। আমির খান অন্তত প্রতিবন্ধীদের বাবামার জন্য একটু সহানুভুতির বিনোদন দিয়েছেন। সাহিত্যের কথা বললে, রবি-নজরুল পড়ে তো সেরকম আশ্রয়ের কিছু পাই না।
আলমগীর - আপনার এবং আপনার স্ত্রীর জন্য আমার admiration এই লেখায় ঠিকমতো যদি প্রকাশ করতে না পারি সেই ভয়ে স্পষ্ট করে বলেই দিচ্ছি - তা সীমাহীন, সত্যি সত্যি।
আমি 'তারে যামিন পার' দেখি নি কিন্তু দু'একজন autistic বাচ্চাকে কাছ থেকে দেখেছি আর আমার এক বন্ধু বাচ্চাদের special school এ পড়ায়, তার কাছ থেকেও কিছু কিছু জিনিষ শিখেছি। সেদিন খবরে দেখলাম - এই এমেরিকাতেও, এতো (তথাকথিত) 'politically correct' জায়গাতেও অটিষ্টিক বাচ্চাদের বাবা মা'রা অনেক সময় ভিজিটিং কার্ডের মতো করে বানানো কার্ড সাথে নিয়ে ঘোরে যেটাতে লেখা থাকে "আমার বাচ্চা অটিষ্টিক, তার সাথে দয়া করে এমন কোন ব্যবহার কোর না যাতে সে মনে করে সে 'অস্বাভাবিক'" - মানুষ মাঝে মাঝে এমনই 'চিড়িয়া' দেখার মতো করে তাকায় যে বাবা মা'রা ওই কার্ড দিয়ে তাদেরকে এই অনুরোধ জানায়!!
আমি আপনার সাথে আংশিক ভাবে একমত - হয়তো সিনেমাটা দেখে বাবা মা'রা অবাস্তব আশা করবে, এবং দাম্পত্যে যে টানা পোড়েনের অনুপস্থিতির কথা আপনি বললেন হয়তো সেটাও একধরনের make believe এর জন্ম দেবে। কিন্তু তবু নাহয় 'হিট' সিনেমার কারণে, কি সুরেলা একটা গান, কি আমির খানের appeal এর কারণেই হোক - মানুষ যদি একটু অন্যভাবে দেখতে শেখে তাহলে দশ বছর পরের বাবা মাদের জীবন আরেকটু সহনীয় হবে। এবং আস্তে আস্তে পরের সিনেমাগুলোও আরেকটু বাস্তবানুগ হবে। এখনো শিক্ষিত বাবা মা'রা (আমারই চেনা আছে এরকম) নিজের কাছেই স্বীকার করে না যে তার বাচ্চার autism কি dyslexia কি অন্য কিছু থাকতে পারে।
ইলেইন হল নামের এক এমেরিকান মহিলা তার দত্তক নেয়া ছেলেটি অটিষ্টিক জানার পরে The Miracle Project নামে একটা প্রোগ্রাম শুরু করেন। সেই প্রোগ্রামে অংশগ্রহনকারী বাচ্চারা গান, বাজনা ইত্যাদি নানারকম শৈল্পিক মাধ্যমের মধ্য দিয়ে আস্তে আস্তে mainstream এর সাথে communication এর দূরত্বটা কমিয়ে আনে। এটা নিয়ে চমৎকার একটা ডক্যুমেন্টারি আছে - Autism, The Musical.
আমি জানি না নুশেরা তাজরীন আপনার কিছু হয় কিনা - কেন যেন গতকাল থেকেই মনে হচ্ছে তাকে কিছুটা হলেও আমি বিরক্ত বা ক্ষুব্ধ করেছি - যদি আপনাকেও তাই করে থাকি আপনাদের দুজনের কাছেই ক্ষমা চাইছি .........
ছবিটি দেখেছি। আপনার সমালোচনার সাথে পুরো সহমত প্রকাশ করছি।
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!
**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব
আপনার লেখাটা পড়ে সত্যি কি বলব বুঝতে পারছিনা খুব মন খারাপ হয়ে গেল।
মুভিটা দেখিনি কিন্তু ডিসিসটা সম্পর্কে জানতাম, যদিও এত ডিটেইলস জানতাম না। তা জানানোর জন্য ধন্যবাদ।
--------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
সব্বোনাশ ! উনি দেক্চি বস মানুষ। নমস্কার রইলো।
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
অরূপ দা,
আর ঠেলা দিয়েন না। আমার কোন কাজ পুরো শেষ করতে পারিনি। কারণ, অনুমান করতে পারবেন।
এখন পিএইচডির শেষ দিকে, এটা যেমনে করেই হোক আমার শেষ করতেই হবে।
আমার সাথে উনার পরিচয় বাংলা জুমলার প্রাণকর্তা হিসেবে।
ভাল হইছে। তারে জামিন পার আমার পি্রয় ছবি।
নাফে এনাম
ভালো লাগলো আপনার বিশ্লেষণ। প্রায় সবটুকুর সাথেই আমি একমত। তবে শিক্ষিত বাবা মা র অজ্ঞতার ব্যাপারে আপনি যে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন, তাতে আমি খুব বেশি সায় দিতে পারছি না। আমি নিজেই দেখেছি নিজের সন্তান এর লার্নিং ডিসেবিলিটি উপলব্ধি করতে পারেনি, শিক্ষিত বাবা মা। আপনি হয়তো লক্ষ্য করে থাকবেন, ঈশান্তের বাবা মা সবসময়ই ভেবেছে এটা ওর দুষ্টামি, একরোখামি। এই ভুলটাই মনে হয় অনেক বাবা মা করে।
আপনার লেখা দেখে মনে পড়ে গেল, কিছুদিন আগে আমি নিজেও একটা রিভিউ লিখেছিলাম এ চলচ্চিত্রের উপর। তবে আপনারটার মত এত বিশদ এবং বিশ্লেষণধর্মী নয়। তবে আপনার বক্ত্যবের বেশ কিছু জায়গাই মিলে গিয়েছে।
আবারো ধন্যবাদ এত সুন্দর একটা লেখার জন্য।
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
প্রতিবন্ধী বাচ্চাদের বাবামাদের কী হয়, সে নিয়ে পরে লিখব, আশা করি।
আপনার লেখায় শিল্পমান বিচার করেছেন, আমার সে যোগ্যতা নেই। আমার বিচারটা বেশী মানবিক হয়ে গেছে মনে হয়।
ধন্যবাদ
সুন্দর রিভিউ লিখেছেন। আপনার ছেলের আরোগ্য কামন করছি...অতি দ্রুত যেন সে সুস্থ হয়ে যায়...হয়ে যায় আইনস্টাইন কিংবা ঈষান আয়াস্তির মতো কেউ একজন...
তারে জামিন পার সিনেমাটি আমারও বেশ ভালো লেগেছিল.. অপরিপক্ক হাতে একটা রিভিউ লিখেছিলাম এইখানে...
---------------------------------
জ্ঞানীরা ভাবলেন খুব নাস্তানাবুদ করে ছাড়া গেছে...আআআহ...কি আরাম। বিশাল মাঠের একটি তৃণের সাথে লড়াই করে জিতে গেলেন।
ছোট্ট তৃণের জন্য অপরিসীম ঘৃণা।
ভালো লেখা... ছবিটা খুব ছাড়াছাড়া ভাবে দেখেছি বলে কিছু বলতে পারছি না... তবে বিশ্লেষনের ভঙ্গিটা ভালো লাগলো খুব...
আর অরূপদার দেওয়া লিঙ্কে গিয়ে তো আমি তব্দা... স্যালুট বস...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
তারে জামিন পার আমার প্রিয় সিনেমাগুলির একটা। আপনার সমালোচনা ভালো লাগলো। দোয়া করি আপনার ছেলে জলদি সুস্থ্য হয়ে উঠুক।
-নিরিবিলি
যা বলতে চেয়েছিলাম মৃদুল আহমেদ, সবজান্তা আগেই বলে দিয়েছে । আপনার ছেলে জলদি সুস্থ হয়ে উঠুক এই কামনাই করি ।
-----------------------------------------
রাজামশাই বলে উঠলেন, 'পক্ষীরাজ যদি হবে, তা হলে ন্যাজ নেই কেন?'
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
আলমগীর ভাই,
মানুষের আবেগ যেখানে খেলা করে, সেখানটাই অসম্ভব সফল আর সুন্দর হয়ে উঠে। লেখাটায় আপনার আবেগ পুরোমাত্রায় ছিলো এবং তার ফলে এই বিশ্লেষণধর্মী লেখাটা আমার মত অনেক পাঠকের মনকেই নাড়া দিয়েছে। আপনার সন্তান আজীবন ভাল থাকুক, সুখে থাকুক।
ফেরারী ফেরদৌস
ছুঁয়ে যাওয়া লেখার জন্য অভিনন্দন।
তবে ডিসলেক্সিয়া আর প্রথাগত প্রতিবন্ধিতার মাঝে পার্থক্য আছে।
ডিসলেক্সিক কারো যদি অন্য প্রতিবন্ধিতা না থাকে
তবে তার জন্য স্বাভাবিক ক্যারিয়ার গঠন
একটু সময় সাপেক্ষ তবে খুব কঠিন বা অসম্ভব না।
পাশ্চাত্যে অনেক উচ্চপদে কর্মরত প্রমানিত ডিসলেক্সিক।
প্রতিবন্ধী সন্তান মানেই দাম্পত্য টানাপোড়েন
- সম্পর্ক শেষ হয়ে যাওয়া
বিষয়টা এতো সরল করা উচিত না।
এবং বিনয়ের সাথে জানাচ্ছি
যেসব বাবা মা তাদের সন্তানের সবরকম অসামর্থ মেনে নিয়ে
পিতা - মাতা কিংবা স্বামী - স্ত্রীর দায়িত্ব পালন করে যান
তাদের জন্য এধরনের সরলীকরণ ঠিক মানবিক নয়।
আরেকটা দ্বিমত আছে
'খামোশি' সিনেমা কে প্রতিবন্ধীদের নিয়ে
তৈরী সিনেমা বলায়।
নানা পাটেকর এবং তার স্ত্রী ছিলেন মূক ও বধির।
প্রতিবন্ধী নন।
তাদের আর কোন শারীরিক বা মানসিক প্রতিবন্ধীতা ছিলনা।
মূক বধির সমাজের নিজস্ব একটা ভাষা আছে।
সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ।
বৃটেনের কথা বলতে পারি।
BSL (British Sign Language)
একটা সুশৃঙ্খল ব্যাকরণসমৃদ্ধ ভাষা।
ঠিক একই ভাবে আছে
ASL (American sign Language)
অটিস্টিক বা অন্য প্রতিবন্ধীরা মৌখিক যোগাযোগে
সীমিত যোগ্য হলে তারা বৃটেনে Macaton নামে
আরেকটি ইশারা ভাষা ব্যবহার করে।
শারীরিক - মানসিক অন্য বিকাশ ব্যাহত না হলে
মূক বধিরদের আমরা Lingustic Minority বলতে পারি।
প্রতিবন্ধী কোনভাবেই নয়।
আপনার সন্তান ভালো থাকুক।
আপনাদের প্রচেষ্টা থাকুক ভালো।
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
এ কথাটা খুব সত্যি। তবে বাচ্চাদের বেড়ে ওঠার সময় যে ধরনের সামাজিক দক্ষতা বা সোশাল স্কীল তাদের কাছ থেকে আশা করা হয় সে জায়গায় দু'ক্ষেত্রেই ঘাটতি থাকে - কম আর বেশী।
স্নিগ্ধা - একদম ঠিক।
ডিসলেক্সিক শিশু অন্যান্য শিশুর তুলনায়
দেরীতে শেখে।
তাদের শিক্ষা পদ্ধতিও সাধারণ শিশু থেকে আলাদা
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
সিনেমাতে নিশান্তের এতোসব সমস্যা কিন্তু দেখানো হয়নি। দুষ্টুমী ঠিকই করেছে, যেটা একজন স্বাভাবিক বাচ্চার লক্ষণ। স্নায়ু বা ব্যালেন্সিঙের সমস্যা হলে প্রকৃতির সুন্দর জিনিষগুলো তার চোখে পড়তো না। বোর্ডিং স্কুলে যাবার আগে নিশান্ত পরিবারের যে ছবিটা এঁকেছিলো, তা থেকে নিজেকে একটু একটু করে দূরে সরিয়ে নিয়ে গেছে এবং সেটা সে করেছে ট্যাক্টিক্যালী। তার পেইন্টিং খাতার পেছন থেকে সামনে আসলে বুঝা যায় সে আস্তে আস্তে দূরে সরে গেছে, প্রথম থেকে শেষের দিকে গেলে সেটা বুঝার উপায় নেই।
নিশান্তের সেন্স যদি কাজ না করতো কিংবা সে যদি প্রতিবন্ধীই হতো তাহলে এতোসব জিনিষের সূক্ষ্ন চিন্তা তার মাথায় খেলতো না। অন্তত আমি নিশান্ত কিংবা নিশান্তের মতো কাউকে ডিজএ্যাবল বা প্রতিবন্ধীর কাতারে ফেলবো না। অক্ষর না চেনা, কিংবা না চিনতে চাওয়া খুব ছোটবেলা থেকে পড়াশুনাটাকে 'ফান' হিসেবে না নিতে পারা কিংবা একটা ভীতিকর জিনিষ হিসেবে মনে করার কারণে হতে পারে। কিন্তু নিশান্তের মতো অনেকেউ আছে যাদের কথা শুনলে মাঝে মাঝে তব্দা খেয়ে যেতে হয়, 'এই ভাবনা তার মাথায় এলো কী করে'!
মন্তব্য বোধহয় বড় হয়ে যাচ্ছে আউফাউ প্যাচালে। যা বলতে চাচ্ছিলাম তা হলো, নিশান্তকে প্রতিবন্ধী মানতে মন সায় দিচ্ছে না। এখন নিশান্তকে স্ট্যান্ডার্ড ধরে তার মতো বাকীদের ক্ষেত্রেও আমার রায় একই হবে।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ঠিক! ডিসলেক্সিকদের কথা ঠিক জানি না কিন্তু অটিষ্টিক বাচ্চাদের অনেকে (খুব সম্ভবত বেশীর ভাগই) প্রখর বুদ্ধিমান হয়, অনেকে চমৎকার ছবি আঁকে বা অন্য কোন কিছুতে খুব দক্ষ হয়। বলা হয়ে থাকে ওদের ব্রেইনের এক অংশের ঘাটতি অনেক সময়ই অন্য দিকে অপর্যাপ্ত পরিমাণে পূরণ হয়ে থাকে।
মৃদুল, রায়হান, সবজান্তা, নিরিবিলি ও অনেকে
আপনারা আমার সন্তানের সুস্থ্যতা কামনা করেছেন, অনেক অনেক ধন্যবাদ। তবে, সেই একই কথা সুস্থ্য হবে এ আশা আমি করি না, তার অবস্থার প্রত্যাশিত উন্নতি হলেই আমরা তৃপ্ত হবো।
স্নিগ্ধা
আপনার আগ্রহের জবাব পরে দিব, দু:খিত। ধন্যবাদ অত শত কিছু লেখার জন্য।
গোধুলি দা
ডিসলেক্সি শব্দের উৎপত্তিটা দেখুন। আপনি ফেলুন না ফেলুন বাস্তবতা ভিন্ন। এখানে অস্ট্রেলিয়াতের তাদের সেভাবেই ক্যাটাগরাইজ করা হয়। সরকারী নিয়মের প্রয়োজনে অনেক সময় প্রকৃতের চেয়ে বেশী প্রতিবন্ধী করে দেখানো হয়। আপনার কথা আর আর অভিজ্ঞতা এক হলে আমিই খুব খুশী হতাম।
আলমগীর
মেইলের জন্য ধন্যবাদ আলমগীর
ঠিক। স্যার রিচার্ড বেনসন (ভার্জিন গ্রুপের মালিক) শুনলাম সেরকমই ছিলেন।
হা হা!
খেয়াল করেছেন কিনা আমি লেখার শুরুতে বলেছি, আমি একাধিক সোশাল ফোরামে গিয়েছি। এসব ফোরাম হলো সেসব বাচ্চাদের বাবামাদের সামাজিক মিলনের স্থান। প্রতিবন্ধী বাচ্চাদের ভবিষ্যত পরিকল্পনায় একজন সোশাল ওয়ার্কার যুক্ত থাকেন। তার কাজ হলো স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে সাহায্য করা। একজন সাইকোলজিস্ট থাকেন, কাউন্সেলিং করার জন্য। তারপরও রেসপাইট (যেখানে স্বামী-স্ত্রী কিছু সময়ের জন্য বাচ্চাকে কোথাও রেখে একান্তে নিজেদের মধ্যে সময় ব্যয় করে) বলে সুবিধা থাকে।
আপনার অন্য কথাগুলো নিয়ে আরেকটা লেখায় বলব, এ আশা করি।
সময় নিয়ে লেখাটা পড়েছেন, দুবার মন্তব্য করেছে, কৃতজ্ঞতা রইল।
মন্তব্য আসতে সময় লাগছে। আমি সবার কথার জবাব দিতে চেষ্টা করব, একটু সময় দিন অনুগ্রহ করে।
'তারে জামিন পার' ছবিতে অভিষেক বচ্চনকে যখন আমীর খান শৈশবে ডিস্লেক্সিক বলে উল্লেখ করেছে দেখি, প্রথমে বিশ্বাস হচ্ছিল না। স্পষ্টতই তিনি সে বাধা অতিক্রম করে এসেছেন। তবে যে দ্রুততার সঙ্গে এই ছবির গল্পে ছেলেটি প্রায় স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে সেটা হয়তো কিছুটা নাটকীয়তার প্রয়োজনে, বাস্তবে কম ক্ষেত্রেই ঘটবে। গল্পটার মূল বক্তব্য ছিল এ ধরণের , বা প্রতিবন্ধী (সাময়িক বা স্থায়ী) সব মানুষকে সহানুভূতি ও সম্মানের সাথে বিবেচনা করতে উজ্জীবিত করা। ডি,ভি,ডির মোড়কে দেখলাম লেখা আছে - Every child is special.
হাওয়া ভবনের নির্দেশে নিহত বিতর্কিত অধ্যাপক আফতাব আহমেদ এক অনাথ আশ্রম থেকে খুব ছোট এক শিশুকে দত্তক হিসাবে নিয়ে আসেন, নিজের সন্তান থাকা সত্ত্বেও। আরেকটু বড় হলে দেখা গেল সে প্রতিবন্ধী। আশ্রমের কর্তারা বললঃ তা হলে বদলে দেই স্যার, একটা সুস্থ বাচ্চা নিয়ে যান। আফতাব তা শুনে তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠল, আমি কি বাজারে মাল কিনতে এসেছি নাকি। এই অসহায় বাচ্চাটিকে খাওয়াবার সময়ই ঘাতকেরা তার প্রাণ নেয়।
একটু বলি, অধ্যাপক আফতাবের "নিজের" সন্তানটিও ঠিক নিজের না, এক আত্মীয়ের। কৈশোরে bone injuryর জন্য একবার মাস ছয়েক ফিজিওথেরাপি নিই, সেখানে দেখেছি আফতাব সাহেব তাঁর চিকিৎসার টানা কুড়িতম বছর পার করছিলেন। তাঁর আঘাত রক্ষীবাহিনীর দান। সেই ভয়াবহ গোঙানি আর চীৎকার ভোলার মতো না। ভদ্রলোকের মাথা এমনি এমনিই বোধহয় খারাপ হয়নি।
নুশেরা তাজরীন
গোধু দা
দেখিয়েছি তো, আপনি হয়তো ধরতে পারেননি। ইশান্ত প্রতিবেশী ছেলের হাতে যে মারটা খায় ফ্ল্যাটের নীচে খেলার সময়, তার কারণ ছিলো বলটা ঠিকমতো ছুঁড়তে না পারা। বল ইশান্ত ঠিকই ওই ছেলেদের/স্ট্যাম্পের দিকে ছুঁড়েছিল, কিন্তু তার তাক করার দক্ষতা না থাকায় সেটা পুরো ভিন্ন দিকে গিয়ে দেয়ালের ওপারে চলে যায়।
আলোচনা সমালোচনা খুব ভালো লেগেছে, যদিও ছবিটি একটানা পুরো দেখা হয়নি।
এখানেই সিনেমা আর বাস্তবতার পার্থক্য।
ঘটনা জেনে সমব্যাথী হলাম।
অন্যদেরকে:
আলমগীর ভাইয়ের এই কাজটার কথা কেউ দেখি বলে না।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
- আলমগীর ভাই, আমার নামের শেষে একটা আলাদা 'দা' লাগানোর আবশ্যকতা নেই। ঐটা শুনলে মনেহয় এখনি বুঝি কেউ কুড়াল-দাও-চাপাতি নিয়ে তেড়ে আসছে আমার দিকে।
আপনার আপনা এবং বাংলাকর্ডের কর্মের জন্য আপনাকে আন্তরিক জাঝা দেওয়া হইলো।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
আপনি ধুতি পাঞ্জাবি লাগাইছেন, হাতে মিষ্টান্ন ভাণ্ড, পায়ে চটি- এত কিছুর পর ....
কেমনে কি?
- আর কইয়েন না রে ভাই। সে এক বিরাট ইতিহাস...!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
অসাধারণ বিশ্লেষণ
---------------------------------------------------------
আমাকে ডাকে আকাশ, বোঝে মাটি হাওয়া জল
বোঝে না মানুষ আর বিনাশী মুদ্রার ছল
---------------------------------------------------------
ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল
অবরুদ্ধ মাঠ থেকে তুমি লাফিয়ে নেমোনা প্লিজ পাথরের পথে
________________________________________
http://ahmedurrashid.
আলমগীর
আমি বলিনি প্রতিবন্ধী সন্তানের বাবা - মা মানেই
পৃথিবীর সুখীতম দম্পতি হবেন।
শুধু বলতে চেয়েছি
তারা মাত্রই অসুখীতম নন।
সন্তানের যেকোন রকম দুর্বলতাতেই
বাবা - মার সম্পর্কে প্রভাব পড়ে।
সে প্রতিবন্ধীতাই হোক কিংবা
ড্রাগ বা অনৈতিক সম্পর্ক।
আমি অনেক বাবা মা কে জানি
প্রতিবন্ধী সন্তান কে নিয়ে মতদ্বৈততায়
তারা আলাদা সংসার শুরু করেছেন।
তার পাশাপাশি জানি
এমন অনেক দম্পতি
যারা তাদের দাম্পত্য এবং পরিবারের ব্যাপারে
কোনরকম আপোষে না গিয়ে সাধারণ জীবনযাপন করছেন।
আমি সমবেদনা জানাই প্রথম বাবা মার প্রতি।
তবে কোনরকম সরলীকরণ করে
কোনভাবেই চাইনা দ্বিতীয় বাবা মা কে অসম্মান করতে।
সোশ্যাল ওয়ার্কার শুধুমাত্র প্রতিবন্ধী শিশুর জন্যই নিয়োজিত, তা নয়।
যেকোন প্রবলেম চাইল্ডের জন্যই একজন সোশ্যাল ওয়ার্কার
বা একটা টিম কাজ করে।
শুধুমাত্র প্রতিবন্ধী সন্তানের বাবা মার আলাদা সময় দরকার?
অন্য দম্পতির প্রয়োজন নেই?
প্রতিবন্ধীর বাবা মা কে রেসপাইট দেয়া হয় এজন্য
যে তারা সন্তানকে (এমনকি পরিনত) একা রেখে
নিজেরা ব্যস্ত হতে পরেন না।
যেটা অন্য দম্পতি পারেন।
রেসপাইট কেয়ার এর উদ্দেশ্য হচ্ছে
প্রাইমারি কেয়ারার কে ব্রেক দেয়া।
তিনি বাবা মা হতে পারেন
হতে পারেন বোন ভাই যে কোন কেউ।
প্রতিবন্ধী একজন কে দেখাশোনা যেহেতু শারিরীক মানসিক
দুভাবেই পরিশ্রমের কাজ। তাই ব্রেক তাদের প্রাপ্য।
তাছাড়া প্রাইমারি কেয়ারারও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের ওপর
বা তাদের চাহিদামতো অন্য যে কোন কিছুতে পূর্ণ মনোযোগ দিতে পারেন যেটা প্রতিবন্ধী ব্যাক্তির উপস্থিতিতেঅনেকসময় সম্ভব হয়না।
তবে রেসপাইট কেয়ারের আরেকটি অন্যতম উদ্দেশ্য হলো
প্রতিবন্ধী ব্যক্তি (শিশু কিংবা পরিনত)কে 'হলিডে'
উদযাপনের একটা সুযোগ করে দেয়া।
আপনর কষ্ট বোঝার সামর্থ আমার নেই।
তবু প্রার্থনা করি
আপনার পরিবারের মঙ্গল হোক
----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
রানা
আমি কোথাও দৌড়াচ্ছি না।
ভাল থাকবেন।
আলমগীর,
আপনার লেখাটা আমারও খুব ভালো লেগেছে। আমাদের নিজেদের ঘরে এ ধরনের অনেক সমস্যাই থাকে, যা আমরা নিজের ঘরের বেলায় অবহেলা করি। কারো বাচচা হয়তো অঙ্ক করতে ভালোবাসে না, ছবি আকতে ভালোবাসে কিন্তু তাকে অঙ্ক করেই যেতে হয়, বাবা - মায়ের স্বপ্ন পূরন করার জন্য। এগুলোও এক ধরনের মানসিক কিংবা সামাজিক সমস্যা। সব্বার ছেলে - মেয়েকে ডাক্তার - ইঞ্জিনিয়ার হতে হবে, কেরানীর চাকরী করার জন্য তাহলে কি স্পেস থেকে লোক আনতে হবে? ভবিষ্যত ভালো করার জন্য বর্তমান, আনন্দঘন শিশুকাল কেড়ে নেয়।
কেনো যেনো কেউ বুঝতে চায় না, ভালো ছাত্র হওয়া, আর ভালো মানুষ হওয়া কিছুতেই এক কথা নয়। ডাক্তার - ইঞ্জিনিয়ার হওয়া সোজা কিন্তু মানষের মতো মানুষ হওয়াই কঠিন।
সিনেমার শেষটুকু আমার কাছে বেশ সিনেমাটিক লেগেছে। আমির খান এর মতো টিচার জামিন পার পাওয়া খুবই দুরহ বিশেষ করে আমাদের উপমহাদেশে।
অরুপকে ধন্যবাদ। আমি লিঙ্কটি সেভ করে রেখেছি, সময় সময় কাজে তো লাগবেই, বিশেষ করে মুক্তমনা মডারেশনে।
তানবীরা
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
মন্তব্যগুলো ছাড়াছাড়া ভাবে পড়লাম। আমার মুভিতে এ্যালার্জি আছে, বিশেষত হিন্দী মুভিতে। তাই মন্তব্য করতে পারলামনা। তবে আমার বউয়ের কাছে শুনেছি ছবিটা নাকি ভালো।
- ঈশ, আমারও যদি অনেকগুলো বউ থাকতো তাহলে নিশ্চয় অনেক ভালো ভালো সিনেমার কথা জানতে পারতাম, এট এ টাইম!
আফসোস
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
আলমগীর, আপনার লেখাটি পড়ে মনটা কেমন এলোমেলো হয়ে গেলো। আমিও একজন বাবা তো! সিনেমা আর বাস্তবতার শৈল্পিক দ্বন্দ্বের মাঝখানে আপনার লড়াইটাই হচ্ছে রিয়েলিটি।
আপনার সোনামনিটার জন্যে অনেক অনেক আদর আর ভালোবাসা।
আমাদের সম্মিলিত শুভকামনায় নিশ্চয়ই পুরোপুরি সেরে উঠবে সে।
হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!
ধন্যবাদ রিটন ভাই।
নতুন মন্তব্য করুন