রাইট (right) মানে 'ডান', আর রাইট মানে 'সঠিক' ভিন্ন শব্দ; বা রাইট/ডানের বিপরীত লেফট/বাম কিন্তু রঙ (wrong) বা 'ভুল' না তা ছ'বছরের মেয়েকে বোঝাতে গলদঘর্ম হই আমি। লেফট মানে 'অবশিষ্ট' তো আছেই। আবার উচ্চারণ একই কিন্তু বানান ভিন্ন, রাইট (write) মানে লেখাও হয়। একটা প্রাকৃতিক ভাষা আমরা এত অনায়াসে রপ্ত করি যে প্রায়ই এর জটিলতা খেয়াল করি না। অথবা আমাদের বুদ্ধিবৃত্তি এত উন্নত যে কোন শব্দের সঠিক প্রেক্ষাপট বুঝে নিতে সমস্যা হয় না। সবার ক্ষেত্রেই আবার এরকম ঘটে তাও না। যেমন, আমার অটিস্টিক মেয়ের বেলায়, শব্দের প্রসঙ্গ ব্যাখ্যা করা ছাড়া কোন কিছু বোঝানো কঠিন হয়ে যায়।
এই যখন অবস্থা তখন মেয়ের আগ্রহ জাগে বাংলা শেখার। কিছু কিছু বিবেচনায় বাংলা ভাষা ইংরেজির চেয়ে কঠিন, তাই চাচ্ছিলাম না সে এখনই বাংলা বর্ণ শিখুক। কিন্তু, বিডিনিউজের কিড পাতা দেখে যখন ক'দিনেই বর্ণগুলো শিখে ফেলে তখন কারো উৎসাহ আর ধরে না। প্রসঙ্গত বলে রাখি, বিডিনিউজের ওই পাতাগুলো যে কোন বর্ণমালা বইয়ের চেয়ে উৎকৃষ্ট, বিশেষ করে বর্ণগুলোর উচ্চারণ একেবারে শুদ্ধ।
এর কদিন পর দেশে গিয়ে বর্ণমালার বই, পড়ার জন্য সহজ বই, আর কিছু কার্টুন অনুবাদ হাতে করে নিয়ে আসে। দেশে এখন প্রচুর বই পাওয়া যায়, এটা ভাল দিক, কিন্তু একই সঙ্গে বইগুলোর ভেতরটা দেখলে মন খারাপ হয়ে যায়। এ লেখাটা বাংলা বর্ণমালা বই নিয়ে লেখা।
আমারা শিশুকালে যে সব বই পড়েছি, বা, একটু বড় হয়ে অন্য শিশুদের পড়তে দেখেছি তা থেকে এখনকার বইগুলো বেশ অন্যরকম। একটু সময় ব্যয় করার পর যে ভিন্নতাগুলো আমার চোখে পড়েছে তা হলো:
১. এখনকার বইয়ে ধর্ম প্রসঙ্গ বেড়েছে
২. অঙ্কন বা আর্ট পুরোপুরি বিদায় নিয়েছে
৩. রঙে, অলংকরণে, বাক্য গঠনে শিশু মনস্তত্ব উপেক্ষিত হয়েছে।
এবার একটু বিস্তারিত বলি।
ধর্ম বা নিগূঢ় বিষয়
একসময় প্রায় সব বর্ণমালা বইয়ে ছিল অ-তে অজগর । এখন দেখা যাচ্ছে, অ-তে অজু, বা অ-তে অলংকার (গহনা)। ঈ-দে ঈদ থাকলেও এ-তে এবাদত, ক-তে কোরান, ম-তে মসজিদ, দ-তে দোয়া, ত-তে তসবি কখনও দেখেছি বলে মনে পড়ে না। ধর্ম শিক্ষায় আমার আপত্তি নেই, কিন্তু একটা শিশুমন এ জিনিসগুলোকে কীভাবে অনুধাবন করবে তা আমার মাথায় ঢুকে না। শুরুর বর্ণ ছাড়াও, বর্ণ মিলিয়ে যে সব বাক্য থাকে তাতেও ধর্মীয় বোধের অযথা ব্যবহার আছে। যেমন, ঊ-তে 'ঊর্মি বসে কোরান পড়ে' (ঊর্মি নাম বিশেষ্য হিসাবে কতটা উপযুক্ত?), ঞ-তে 'মিঞা সাহেব সত্য বলে', ত-তে 'মোল্লা সাহেব তসবি পড়ে' (ত দিয়ে শুরু হচ্ছে না যদিও)। বোঝাই যাচ্ছে, বাংলাদেশের বই বলে ইসলাম ধর্মের বিষয় বেশী।
ধর্ম ছাড়াও, কিছু নিগূঢ় বিষয় স্থান পেয়েছে যেগুলো আমার বিবেচনায় কোন শিশু বোঝতে অক্ষম। যেমন, এ-তে একতা সাথে কিছু হাত একসাথে জড়ো করে একটা ছবি, ঋ-তে ঋতুর পাশে ছয়টা ঋতুর ছবি। একতা বা ঋতু আমি কেমনে করে একটা শিশুকে বোঝাব? বিষর্গ (ঃ) তে দুঃখ সব সময়, সব বইয়েই। যত দূর মনে পড়ে আমাদের সময় বইয়ে একজন অশ্রুসজল মহিলার ছবি দেখতাম। ইদানিং বইয়ে, ছিন্নবস্ত্র পরা, লাঠি হাতে ভিক্ষুকের ছবি আছে। এ সব ধারণা কীভাবে একটা শিশুর মাথায় দেয়া যায়, বা আদৌ দেয়া উচিৎ কিনা?
ধর্ম ও নিগূঢ় বিষয় ছাড়াও আরও প্রবেশ করেছে ইংরেজি শব্দ। এ-তে এরোপ্লেন মানা গেলেও ম-তে মোবাইল কেমন ঠেকে? এক প্রকাশনীর (তাদের দাবী মতে সর্বাধিক বিক্রীত ) বইয়ের প্রচ্ছদে আছে মোবাইল হাতে এক শিশুর ছবি।
আঁকা ছবি বনাম ক্যামেরায় তোলা ছবি
এক সময় শিশুদের বইয়ে আঁকা ছবিই থাকত। এখন বইয়ে দেখতে পাচ্ছি সব ক্যামেরাতে তোলা ছবি, ফটোশপে একটু করে ছায়া যোগ করে দেয়া। এর কারণ একটাই হতে পারে: অঙ্কন শিল্পী আর পাওয়া যায় না, অথবা পাওয়া গেলেও অনেক টাকা মজুরী দিতে হয়। তার চেয়ে ক্যামেরাতে প্রায় বিনা খরাচায় ছবি তুলে ফেলা যায়। ইন্টারনেট থেকে নামিয়ে নিলে তো কথাই নেই। এরপর ফটোশপে একটু কারিগরি করে নিলেই সারে। এটা খুব দুঃখের।
রঙের ব্যবহার, অলংকরণ ও বাক্য গঠন
উৎকট, এক কথায়। চোখ ধাঁধাঁনো করতে গিয়ে, রঙের বাড়তি ব্যবহার। প্রকাশকেরা একটা কথা হয়ত মাথায় রাখেন। বইটা কিনবে কারা? শিশুরা না তাদের বাবা/মারা? শিশুরা কী রঙ পছন্দ করবে তা বিবেচনা না করলেও চলে, বাবা-মারা দোকানে গিয়ে মলাট দেখে আকৃষ্ট হবে এমন বই বেশী বিক্রী হবে। বড়দের কাছে আকর্ষণীয় করতে গিয়ে বর্ণমালার ছবিগুলো ত্রিমাত্রিক হয়ে গেছে। অনেক বইয়ে যাচ্ছেতাই ভাবে রঙ ব্যবহার করা হয়েছে।
অলংকরণ বলে কিছু নেই; কেবল হুট-হাট করে বিদেশী কার্টুন চরিত্র যেমন পু-বেয়ার, মিকি মাউসের ছবি জুড়ে দেয়া ছাড়া।
বইয়ে ছন্দের খুব অভাব। এর কারণ সম্ভবত, রঙ যত সহজে দেয়া যায় ছন্দ তত সহজে নয়। প্রতিটি বর্ণের সাথে সংশ্লিষ্ট বাক্যগুলোতে একসময় ছন্দমিল থাকত, এখন সেটা দেখছি না। উদাহরণ দিই: "টাকা মিলে পরিশ্রেমে/ঠেলা ঠেলে বেজায় জোড়ে" (জোড়ে শব্দটি হওয়ার কথা ছিল জোরে), "দোয়েল পাখির রংটি কালো/ধান আছে ক্ষেত ভরে" । বইয়ের শেষ দিকে একটা দু'টা ছড়া থাকত সেটাও অনেকটা বিদায় নিয়েছে।
স্কুলজোনের ইংরেজী বইগুলো না দেখলে এ আক্ষেপগুলো আমার হতো না। এত সুন্দর তাদের প্রতিটা বই যে দেখলে মন ভরে যায়। কিছু বইয়ের সাথে একটা করে সিডি থাকে। সিডিতে বর্ণ, ডট-থেকে-ডট, রঙ করার প্রোগ্রাম, জিগ-স পাজল, ক্রসওয়ার্ড মিলিয়ে প্রচুর জিনিস। কয়েকটাতে বেশ কিছু ছড়াও আছে। খেলা শেষে নিজের নাম লিখে সার্টিফিকেট ছাপিয়ে নেয়া যায়।
এ লেখাটার মূল উদ্দেশ্য সমালোচনা না। স্বাভাবিক শিশুরা হয়ত এসব বই পড়েও ঠিক ঠিক বর্ণমালা শিখে ফেলে, পড়তে শিখে যায়। আমি ভাবছিলাম যেসব শিশুরা প্রাকৃতিক প্রতিকূলতার শিকার, কিংবা প্রবাসী তাদের জন্য খুব সহজ করে কোন বই করা যায় কিনা। কিছু (বর্গের শেষ) বর্ণ বাদ রেখে, সংযুক্ত বর্ণ পারতপক্ষে না ব্যবহার করে, রঙের সংযত প্রয়োগ করে একটা বই কি করা যায়? এতে কিছু ছড়া এবং সম্পর্কযুক্ত কিছু অলংকরণও থাকল। এ বই বিক্রী হবে না, হলেও তা থেকে আর্থিক লাভের সম্ভাবনা ক্ষীণ। তবু কেউ যদি আগ্রহী হন মন্তব্যে লিখে দিয়ে যাবেন।
মন্তব্য
একই ব্যাপার আমিও অনুভব করছি। সেদিন মেয়ে জিজ্ঞেস করে little মানে কী আর small মানে কী? তারপরে no মানে কী আর not মানে কী?
মেয়েটার ভাল যে বিষয়টা লক্ষ্য করি তা হলো সবসময় ইংরেজীর পাশাপাশি বাংলাটাও জানতে চায়। কিন্তু এভাবে কতদিন চালানো যাবে সেটা ভাবার বিষয়।
মজার বিষয় হলো দেশ থেকে কিছু আরবী বর্ণমালার বই আনা হয়েছিল। মেয়ের সব বিষয়েই আগ্রহ প্রবল। ওর মা গতকালই সেই বইটা পড়াচ্ছিল। পাশের ঘর থেকে আমি শুনছি ...
জিম- জিহাদে যায় মুসলমান/রাখতে দেশের, দশের মান
হা: হাকিম সাহেব হুকুম করে/কুরআন পাকের আইন ধরে
ধর্ম শিক্ষায় আমার কোন আপত্তি নেই। বরং উৎসাহি (আপনি জানেন সেটা)। কিন্তু প্রচন্ত বিরক্তি নিয়ে বইটা কেড়ে নিয়ে এসে উল্টানো শুরু করলাম। আমার মাথা ঘুরতে লাগল:
রা: রাইফেল হাতে তুলে নাও/ বীর মুজাহিদ এগিয়ে যাও
যো'য়া: যালিম জনে রুখে দাড়াও/সমাজ থেকে যুলুম তাড়াও (একজনকে চাবুক দিয়ে পেটানোর ছবি !)
অবাক হলাম কোথায় যাচ্ছে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা। কী শেখানো হচ্ছে শিশুদের! ধর্মের বই আমরাও পড়েছি, কৈ এমনটা তো ছিলনা ২০-২৫ বছর আগে? এটা কি বিচ্ছিন্ন কোন বই, নাকি সবখানেই এই অবস্থা?
অনেকেই ধর্মশিক্ষা তুলে দেয়ার জন্য সর্বত্রই লেখালেখি, প্রকাশনা ইত্যাদি চালিয়ে যাচ্ছেন। এসব চিত্র কেবল তাদের লেখনিকেই শক্তিশালি করে। মাথা ব্যাথার জন্য মাথা কেটে ফেলা নয়, মাথা ব্যাথা সৃষ্টির কারণগুলোকে চিহ্নিত করে সমাধান করা প্রয়োজন।
আমার মতে প্রতিক্রিয়াশীল না হয়ে বরং প্রগতির সাথেই ধর্মীয় শিক্ষাকে এগিয়ে নেয়া দরকার। সেটা দেশ ও জনগনের জন্য মঙ্গল হবে।
এই নষ্টামিটা একচেটিয়াভাবে করছে জামাত ... তাদের মানারাত নামে একটা স্কুল আছে, সেখানে সম্ভবতঃ গোলাম আযমের জীবনীও পড়ানো হয় (শোনাকথা যদিও)
"ধর্মের শিক্ষা" নাম ব্যবহার করে সহজেই এরা এসব বইয়ের মার্কেটিং করছে!
সাথে যোগ দেয় ইনকিলাবীয় চক্র -- এরা ঋ-তে ঋষী লিখে লম্বা দাড়িওয়ালা সাধুর ছবিওয়ালা বইকে "ভারতীয় ষড়যন্ত্র" হিসাবে আর্টিকেল ছাপায়
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
অনেক চিন্তা করলাম, উত্তরে কী বলব।
কিছু ভেবে না পেয়ে একটা দিলাম।
এটা থামানোর জন্য আপনার এখন আরবি বই লিখতে হবে। কেমনে লিখবেন জানি না।
- লেখাটা পড়ার সময় একটা কথা মাথায় আসছিলো। আসলে অনেক দিন থেকেই এই চিন্তাটা মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। শিশুদের জন্য গল্পের সংকলন না হোক অন্ততঃ বর্ণমালার বই বের করা যায় কীনা। আমাদের তো খাট্টুনিশ আছেনই। সুজন্দা (এবং / অথবা অরূপ)। তাঁকে চিপক্কে ধরলে আশাকরি তিনি না করতে পারবেন না, আর করলেই বা আমরা শুনবো কেনো? তিনি (এবং / অথবা অরূপ) আঁকবেন, আর ওপেন সোর্সের আওতায় সচলেরা মন্তব্যাকারে ছন্দ বা বর্ণমালার সাথে বাক্য গঠনে সহায়তা করবেন। সেটা প্রকাশায়তনের ব্যানারে প্রথমে বe হিসেবে প্রকাশ করা হবে। তারপর সময় ও সুযোগে সেটা প্রথাগত ছাপা মাধ্যমেও প্রকাশ করা হবে। শুদ্ধস্বরকে ধরা যেতে পারে চিপক্কে। খরচটা নাহয় আমরা চান্দা তুলে সরবরাহ করলাম, যে যেমন পারি।
আমরা তো কতো কিছুই করছি বড়দের জন্য। শিশুদের জন্য কেনো করবো না?
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ভালো প্রস্তাব
বর্ণমালার ই-বুক থেকেও শুরু করা যেতে পারে ....আঁকিয়েদের সক্রিয় অংশগ্রহনটা কী পয়েন্ট
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
ভীষন ভালো প্রস্তাব।
ছোটদের বইয়ে ধর্মের বাড়াবাড়িটা বাজে লাগে।
আর ওদের কল্পনার গন্ডিটাকেও কেন যেন অনেক ছোট করে আনা হচ্ছে বিভিন্নভাবে।
...........................
সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
ধুগো,
ছড়ার অভাব হবে না, এই যেমন:
দ-তে দ্রোহীর শুধু একটা শালী
ধ-তে ধুগোর চাই কয়েক হালি
ছন্দের মাত্রা না মিললে অনতিবিলম্বে বলবেন জনাব,
প্রয়োজন মাফিক শালীর সংখ্যা বাড়বে আরেক ধাপ।
...........................
সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
- হা হা হা
চোখে তো পড়ছিলোই। ভাবতেছিলাম সংখ্যা আরো কিছু বাড়ুক, তারপরেই কমেন্টাই। মোটে 'হালি'তেই আমারে আটকায়া রাখলেন জনাব? কাউরে ধরাধরি করা লাগলে বলেন, ঘুষটুষ দেয়া লাগলে সেইটাও বলেন, তাও মেহেরবানী কইরা সংখ্যাটা বাড়ান।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
এত নিম কমেন্টে আর বাড়ানো হবে না। যা ভাগে পড়ে তাই সই। আরো লোকজন আছে না
আমার কাছে ধুগো'র এই আইডিয়াটা সত্যিই খুব ভালো লেগেছে। সচলে যেহেতু আইডিয়া দেবার পাশাপাশি তার বাস্তবায়নের নজির আছে, তাই আমি আশাবাদী এই কাজটা করা সম্ভব। এই যজ্ঞে যেকোনো ধরনের কাজে লাগতে পারলে সানন্দে রাজী আছি।
*********************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
আমার খুবই আবিশ্বাস্য মনে হয়, উনিশ শতকে কিভাবে এত স্যাকুলার শিশুতোষ পুস্তক রচনা সম্ভব হয়েছিল?
বিদ্যাসাগরের কথা বাদই দিলাম।
একটি উদাহরন দেয়া যায় মদনমোহন তর্কালংকারের শিশুশিক্ষা থেকে,
আমার মনে হয় আশির দশক পর্যন্ত যাদের হাতেখড়ি হয়েছে, কোন না কোন ভাবে তাঁদের এই বিখ্যাত কবিতার সাথে পরিচিত হয়েছেন। বহুল পঠিত কবিতাটি ছিল
পাখী সব করে রব, রাতি পোহাইল।
কাননে কুসুমকলি, সকলি ফুটিল।
তর্কালংকার সংস্কূত পন্ডিত ছিলেন কিন্তু পাঠাপুস্তক প্রনয়নে ঈশ্বর বন্দনাকে বেশ দূরে সরিয়ে রেখেছিলেন।
আরেকটি উনাহরন “শিশুর কামনা” কবিতাটি। রচনা করেছিলেন খুব সম্ভবত সীতানাথ বসাক
সকালে উঠিয়া আমি মনে মনে বলি।
সারাদিন আমি যেন ভাল হয়ে চলি।
ঈশ্বর বন্দনার ছিটেফুটাই এখানে নেই, যা আছে পরিষ্কার নীতি শিক্ষা।
তবে সচলায়তন যদি শিশুশিক্ষা নিয়ে ই-বুক করতে চান, সেক্ষেত্রে বিদ্যাসাগরের বর্ণপরিচয় হতে পারে
অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপাদান। আমার মনে হয় সচলায়তনের এমন একটি উদ্যোগ নেয়া উচিত।
বিশেষ ধন্যবাদ স্মরণ করিয়ে দেয়ার জন্য। এসব বাক্য ভুলেই গেছি! নিউজপ্রিন্টে, আলতা রঙের প্রচ্ছদে, ছোট আকারের ছিল বিদ্যাসাগরের বর্ণ পরিচয়। (তাই কি?)
এধরনের একটা লেখা খুব দরকার ছিল। আমি এক ছাত্রী পড়াই এখানে। বাঙালি বড় ভাইয়ের মেয়ে। ওর বইগুলো দেখলে এক কথায় হিংসা হয় প্রতিদিন। আমরা কেন আমাদের ছেলেবেলায় এত ভাল বই পেলাম না? আর এখনকার বই দেখে মনে হয় আমরাও অনেক সৌভাগ্যবান ছিলাম।
আমিও বলতে গিয়েছিলাম যে এধরনের একটা উদ্যোগ নেওয়া উচিত। দেশ থেকে অনেক দিন ধরে দূরে, তাই নিজের ভাষাজ্ঞান অনেক দুর্বল হয়ে গেছে। কেউ কোন কাজে হাত দিলে সাথে আছি।
ছোটদের জন্য গল্পের কথা বিগ সি ও হিমু ভাই অনেক দিন ধরেই বলছেন। পাশাপাশি বর্ণ/ভাষা-পরিচয়েও হাত দেওয়া উচিত। নিদেনপক্ষে পাশ্চাত্যের পাঠ্যগুলোর অনুবাদের কাজে হাত দেওয়া যায়।
হুঁ
মোটাদাগে আলমগীর ভাইয়ের সাথে একমত। কিন্তু আপনি কাদের বই নিয়ে কথাগুলো বলছেন বুঝতে পারছি না। কারণ বাজারে এখনও অনেক বই আছে যেগুলোতে ধর্মের এই বাড়াবাড়িটা নাই।
শিশুদের জন্য এনজিওরা বেশ কিছু বই বের করেছে। সেগুলো নিয়ে সমালোচনা থাকলেও আমার মতে, এর বেশ কিছু বই সরকারি বইয়ের চেয়েও ভালো। তবে এনসিটিবির বইগুলোও বিষয়বস্তুর দিক দিয়ে খুব একটা খারাপ না। অবশ্য রঙের ব্যবহার, বাধাই, কাগজের মান ইত্যাদি দিক দিয়ে এনসিটিবির বইগুলো খুবই বাজে।
বাংলাদেশে ইসিসিডি (আর্লি চাইল্ডহুড কেয়ার অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট) নেটওয়ার্কও এ সম্পর্কিত বেশ কিছু কাজ করেছে। তারা মূলত শিশু মনস্তত্বের ওপরই বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। তাছাড়া সম্প্রতি সময়ে ইউনিসেফ বাংলাদেশের প্রাথমিক স্তরের জন্য বেশ কিছু সহায়ক বই বের করেছে যেগুলো সত্যিকার অর্থেই আকর্ষণীয় (যদিও এগুলোর বিতরণ শুরু হয় নি, তবে শিগগিরই হবে)।
আরেকটি বিষয় এখানে বলা দরকার। আমরা যখন পড়ালেখা শুরু করেছি, তখন শব্দনুক্রমিক পদ্ধতিতে ভাষা শিখতে হতো। যেমন- অ তে অজগর। এখানে অজগরের চাইতে অ-টা মুখ্য। কিন্তু বর্তমানে শব্দানুক্রমিক পদ্ধতি বাদ দিয়ে বাক্যনুক্রমিক পদ্ধতি অনুসৃত হচ্ছে। এতে শিশু যেমন সহজে শিখতে পারে, তেমনি ভাষার ওপর তার দখলও কিছুটা বেশি পোক্ত হয়। তাছাড়া শব্দানুক্রিমক পদ্ধতিতে শেখালে বর্ণমালাগুলো শিশুর কাছে বিমুর্ত হিসেবেই দেখা দেয়, যেটা বাক্যনুক্রমিক পদ্ধতিতে শিশু সহজেই শব্দকে বাক্য ও বস্তুর সঙ্গে মেলাতে পারে। ফলে তার শিখন-শিক্ষণ প্রক্রিয়াটি সহজ ও আনন্দময় হয়। আলমগীর ভাইকে অনুরোধ করবো শব্দনুক্রমিক পদ্ধতি বাদ দিয়ে বাক্যানুক্রমিক পদ্ধতিতে যাওয়ার জন্য।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
ব্লগস্পট ব্লগ ::: ফেসবুক
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
মনে মনে আপনাকেই খুঁজছে বাংলাদেশ।
আমি বলছিলাম বর্ণ পরিচয় বইয়ের কথা, যেগুলো বিভিন্ন প্রকাশনী প্রকাশ করে থাকে। বোর্ড বর্ণ পরিচয়ের বই বের করে জানতাম না। এনজিওদের বইও কখনও দেখিনি। একটা দুইটা ছবি তুলে দিতে পারেন? খুব ভাল হয়।
আর শব্দানুক্রমিক বনাম বাক্যানুক্রমিক পদ্ধতি কী তা পুরো বুঝতে পারছি না। আমি বই রচনার যোগ্যতা রাখি না। খুব বেশী হলে নেট ঘেটে কয়েকটা ছবি মেরে, সরল কিছু বাক্য জুড়ে মেয়ের জন্য একটা কিছু তৈরি করে দিতে পারি। ছবি আঁকায় আমার কোন বিদ্যা/জ্ঞান/দক্ষতা নেই।
আমার প্রধান উদ্দেশ্য একটু ভিন্ন: যেসব শিশু প্রবাসে বড় হচ্ছে, আর যে সব শিশুর সামর্থ্য সীমিত। এর বাড়তি, সাধারণ শিশুদের জন্যও করা যেতে পারে।
এনসিটিবি বর্ণ পরিচয়ের জন্য আলাদা বই প্রকাশ করে না। প্রথম শ্রেণীতে শিশুদের জন্য বাংলা পাঠ্য বই 'আমার বাংলা বই'-তে এ সম্পর্কিত পাঠ রয়েছে।
এখানে একটি এনজিওর বইয়ের একটি পৃষ্ঠা তুলে দিলাম যেখানে শিশুকে 'ক' শেখানো হচ্ছে। যেভাবে 'ক' শেখানো হচ্ছে
আর শব্দানুক্রমিক পদ্ধতি বাদ দিয়ে বাক্যানুক্রমিক পদ্ধতিতে শিশুদেরকে কীভাবে বর্ণ শেখাতে হয়, তা নিয়ে একটি পোস্ট দেবার ইচ্ছে রইলো।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
ব্লগস্পট ব্লগ ::: ফেসবুক
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
প্রথম শ্রেণীর বই কি প্রি-স্কুলারদের জন্য উপযোগী হবে?
আর, বাক্যানুক্রমিক পদ্ধতি জানার অপেক্ষায় রইলাম।
কাণ্ডারী হবার সামর্থ্য নাই তবে কর্মী হতে ইচ্ছুক, একেবারে সস্ত্রীক। একজন কষ্ট করে হাল ধরে ফেলেন, এই বান্দা সপরিবারে কামলা দেবার নিশ্চয়তা দিচ্ছে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
মনের কোণে রাইখেন চিন্তাটা, সুবিধামতো সন্ধান করব।
আমাকেও সন্ধান কইরেন।
সীতানাথ বসাক এর “শিশুর কামনা” কবিতাটিকে পরবর্তীতে কোন এক পুর্ব-পাকিস্তানি কবি (!)(নাম মনে পরতেছে না) বাঙ্গালিদের প্রতি সামাজিক আগ্রাসনের অংশ হিসাবে rewrite কর্ছিল (সরি 'করেছিলেন' লেখতে ইচ্ছা করতেসে না) এই ভাবে......
ফজরে উঠিয়া আমি দিলে দিলে বলি।
হর-রোজ আমি যেন নেক পথে চলি!!!
গত ১০/১২ বছর ধরে আবার শুরু হইসে এই সব (ব**-ছাল)...ভাবতেও অবাক লাগে ওরা কত নিশ্ঠা-একাগ্রকতা নিয়া নিরবে কাজ করে চলেছে দশক ধরে...হায় আমাদের পন্ডিত-আতেল সমাজ, আমাদের যদি এত নিশ্ঠা-একাগ্রকতা থাকত ...!!!
___________________________________________________________
< দিব্য চক্ষু ছাড়া, signature দেখা অসম্ভব >
এই ফজিলতপূর্ণ ছড়া আপনি কোথায় পেয়েছেন? আগে শুনিনি।
মন্তব্যের সাথে দ্বিমত পোষন করছি।
রুহুল আমীন খান কৃত শিশুর মোনাজাত থেকে দুটো লাইন উদ্ধৃত করছি, যা শিশুর কামনার প্যারোডি।
ফজর নামাজ পড়ে তুলে দুই হাত।
তোমার নিকট খোদা করি মোনাজাত।
ঢাকার ছারছীনা প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত “আধুনিক আদর্শলিপি” নামক বইয়ে এই প্যারোডি অন্তভূত। এই বই সম্পুর্ন ভাবেই মুসলমান ছাত্রদের জন্য লিখিত এবং মাদ্রাসায় পড়ানো হয়।
যে বই সম্পুর্ন ভাবে মুসলমান ছাত্রদের জন্য সেখানে রুহুল আমীন খানকে কোন ভাবেই পুর্ব-পাকিস্তানি কবি বা কবিতাকে বাঙ্গালিদের প্রতি সামাজিক আগ্রাসনের অংশ হিসেবে দেখতে আমার ঘোরতর আপত্তি আছে। তাহলে তো মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্হার বিরুদ্ধে কথা বলা উচিত।
উল্লেখ্য, এই বইয়ে বায়তুল মোকারমের কথা যেমন বলা আছে তেমনি শহীদ মিনার, স্মৃতিসৌধের সাথেও পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়েছে।
আলমগীর ভাই, সেই বিদঘুটে বিষাক্ত বইগুলোর প্রকাশনালয়ের নাম কি বলা যাবে
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
কারো নাম করে সমালোচনার দিকে যেতে চাচ্ছি না আমি। দেশে কতগুলো প্রকাশনা এ ধরনের বই প্রকাশ করে তাও জানি না। উপরে গৌতম যেমন বলেছেন, ভালো বইও আছে, তাই উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বই না হাতড়ে সমালোচনা করাটা অনুচিৎ হবে। এ পোস্টের পেছনে আমার মূল আশা সচলে অনেক গুণী মানুষ আছেন, তাদের কিছু সময়ের সমন্বয়ে সহজ কোন বর্ণ পরিচয় বই তৈরা করা।
তবু আপনার আগ্রহ হলে, মেসেজ দিবেন। আমি স্ক্যান করে কিছু পৃষ্ঠা পাঠিয়ে দিব। ধন্যবাদ।
চমৎকার লেখা, চমৎকার আলোচনা...
=============================
থ্যাংকস।
খুব ভাল একটা পোস্ট ভাইয়া। আসলেই বাচ্চাদের বইয়ে ধর্ম নিয়ে এমন বারাবারি কেন করবে। আমার যতদুর মনেপরে ছোটবেলায় আরবী হরফ শেখার সময় কখনো ছড়া দিয়ে শিখিনি। অবশ্য ক্লাস ২ পর্যন্ত বেশির ভাগ পড়াশোনাই আম্মুর কাছে শেখা দেশের বাইরে এবং ভিতরে ট্রাভেল করার জন্য যার কারনে ক্লাস ৩ থেকে কিছু কিছু স্কুলের পাঠ্যবই মনেপরে। কত ছবি থাকত হাতে আঁকা, সেগুলি আবার রং করতাম, মনেপড়ে মুখস্ত করতাম "আসমানিদের দেখতে যদি তোমরা সবে চাও, রহিমউদ্দির ছোট্ট বাড়ি রসুলপুরে যাও", বা "সফদার ডাক্তার মাথাভরা টাকতার খিদে পেলে পানি খায় চিবিয়ে, চেয়ারেতে রাতদিন বসেগোনে দুই তিন পড়ে বই আলোটারে নিভিয়ে", আরো মনেপরে "কমলাফুলি কমলাফুলি কমলালেবুর ফুল, কমলাফুলির বিয়ে হবে কানে মতির দুল"। আসলেই এসব নিয়ে এটা সাইট তৈরি করেন সাহায্য করতে পারলে করব
সেদিন দেখি বিটিভিতে ছোটদের একটা দারুন শো করছে, আপনি নিশ্চয়ই চ্যানেল এবিসিতে "সেসিমি স্ট্রিট" দেখেছেন, "সিসিমপুর" হলো তার বাংলা ভারশন। দারুন শো টা, ছোটদের বর্ণমালা ছারাও অনেক কিছু ইন্টারেস্টিং জিনিস শেখায় যেমন গ্রামে কিভাবে মাটির জিনিস বানায়। আপনা এসব দেখলে অনেক মজা পাবে, অনেক কিছু শিখতেও পারবে।
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
সিসিমপুরের বাংলার (অনুবাদের অংশটুকুর) করুণ দশা। অনেকটা আলিফ লায়লা স্টাইল। সেটা নিয়ে আর না বলি। বাকীটুকু ঠিক আছে।
এতগুলো ছড়া বলার জন্য:
মুমু মুমু ডাক পাড়ি
মুমু মোদের কার বাড়ি
আয়রে মুমু নেটে আয়
কে যেন পোস্ট দিয়ে যায়
(এই ছড়ার কোন পরিণতি/কনসেকুয়েন্স ভাবি নাই )
হাহাহাহাহা আইসা পড়লাম
কিন্তু বলেনকি সিসিমপুর আপনার ভাল লাগেনি আমার দেখে তো মজা লাগল, কি জানি!
মনেপড়ল, ছোটবেলায় টোনাটুনির বর্ণমালার ক্যাসেট গুলিও শুনতাম, সেই বর্ণমালার গান গুলো দারুন ছিল, ইংলিশ গুলিও।
খ আর ঠ এর টা মনে আছে,
খরগোশ, ও খসগোশ, জানো নাকি ভাই
খই দিয়ে মোয়া হয় খেয়েছো কি তাই।।
এই ঠক ঠক করে কে যায় রে? আমি ঠাকুর দাদা
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
সিসিমপুর খারাপ লাগছে কই নাই তো।
দেশে যে অংশটুকু করা তা খুবই সুন্দর। কিন্তু মাঝে মাঝে মূল ইংরেজী স্কিডের কিছু বাংলা ডাবিং আছে, যেগুলো বিরক্তিকর (আলিফ লায়লার ডাবিংএর মতো)।
১
নস্টালজিক করে দিলেন মুমু আপু । আপনার এই মন্তব্যটা পড়ার পর থেকে আমার চোখের সামনে আসমানী আর সফদার ডাক্তারের ছবিগুলো ভাসছে । হাড় জিরজিরে রোগা আসমানী । আর সফদার ডাক্তার রোগীকে জোর করে একটা কেঁচো খাইয়ে দিচ্ছে ।
২
ওয়েব সাইটের আইডিয়ার জন্য আপনাকে বিপ্লব । আমিও আছি, হাত লাগাব ।
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
এক্সেলেন্ট আইডিয়া।
বাংলা পাঠ্যপুস্তক দশক ওয়ারী ওয়েবে সংরক্ষন করা যেতে পারে, সাধারনত প্রতি দশকেই বাংলা পাঠ্যপুস্তকের আমূল পরিবর্তন ঘটে। স্মৃতি রোমন্হনের জন্যতো বটেই বাংলা পাঠের বিবর্তনের ধারাটি বোঝার জন্যও হবে উপাদেয়।
@এনকিদু - আরো শুনবা?
"রংতুলিতে ছোপছাপ, মাঠের পাশে ঝোপঝাপ, ঝোপের পাশে সোনার গাও, একটু খানি বসে যাও।। বসতে বসতে সন্ধা বইছে বাতাস মন্দা, খালের ওপর ছোটৎ নাও, ছোটৎ নাওয়ে পারি দাও।। আঁকছে খুকু রঙে, সবুজ সোনার বঙ্গে।।
আর এইসব ছড়ার সাইট বানানোর আইডিয়া ওপরে সবার কমেন্টে বর্ণমালার সাইট বানানো থেকে আসল। আসলেই করতে পারলে দারুন হবে
@গৌরীশ রায় দাদা - দেখা যাক গুরুদের কনভিন্স করা যায় নাকি এই উদ্দোগ নিতে
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
সিসিমপুর আমার পিচ্চি ভাগ্নীও গিলে খায় যাকে বলে। মাঝে মাঝে আমিও ওর সাথে বসে বসে দেখি। এবং সবচে লক্ষণীয় এই বয়েসী সবার কাছেই মোটামুটি অনেক ফেবারিট একটা প্রোগ্রাম এইটা। অনুষ্ঠানের মানও আমার কাছে খারাপ লাগেনি কোনভাবেই।
---------------------------------
বিষণ্ণতা, তোমার হাতটা একটু ধরি?
---------------------------------
বাঁইচ্যা আছি
ঊ-তে 'ঊর্মি বসে কোরান পড়ে' (ঊর্মি নাম বিশেষ্য হিসাবে কতটা উপযুক্ত?), ঞ-তে 'মিঞা সাহেব সত্য বলে', ত-তে 'মোল্লা সাহেব তসবি পড়ে' (ত দিয়ে শুরু হচ্ছে না যদিও)।
আমি জানি না , এইটুকু পড়ে কেনো হাসি পেয়ে গেলো। উর্বর মস্তিক বলতেই হবে।
তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
ত-তে তানবীরা আপুর হাসি পায়
থ-তে থোকা থোকা দাঁত দেখা যায়
এইরকম কাব্যপ্রতিভা !
আপনি তো একখান জিনিয়াস, আলমগীর ভাই !!
...........................
সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
এ কথা বলার জন্য আপনাকে ক ও খ উভয় গ্রুপ থেকে বাতিল করা হলো।
এখন গ্রুপ বিহীন হয়ে ঘোরাঘুরি করুন।
অট: আপনার প্রোফাইলে একটা ছবি কি ছিল? মুছলেন ক্যান?
হা হা হা
মনে হয় আমার নতুন দল গঠন করা আবশ্যক হইয়া পড়িয়াছে।
প্রোফাইলে ছবি? না তো...
...........................
সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
সিডনীতে বাংলা স্কুলের ক্লাস নেয়া হয় অনেক এলাকায়। বাংলা একাডেমী অস্ট্রেলিয়া এবং বাংলা প্রসার কমিটি নামের কতিপয় সংগঠনের উদ্যোগে প্রবাসী শিশুদের বাংলা অক্ষরজ্ঞান সহ আমাদের সংস্কৃতির সাথে পরিচয় করানোর উদ্যোগ নেয়া হয়ে থাকে। এদের পাঠ্যক্রম নিয়ে আমার তেমন ভাল ধারণা নেই। তবে বিদেশের ভূমিতে জন্ম নেয়া এসব বাচ্চাকে বাংলা অক্ষরজ্ঞান শিক্ষা দেয়া রীতিমত কঠিন বৈকি তা অনুধাবন করতে পারি। এর সাথে আছে পাঠদানে ব্যবহৃত উপযুক্ত বইয়ের অভাব। আমার মতে বাচ্চাদের বইতে ধর্ম নিয়ে অতিরিক্ত মাথা না ঘামিয়ে যে বিষয়ে মাথা ঘামানো উচিত তা হচ্ছে বইটি রচনায় শিশুতোষ শব্দাবলীর প্রয়োগ ঘটানো হচ্ছে কতোটা ? আমাদের দৈনন্দিন জীবন যাত্রায় ব্যবহার করি এমন শব্দগুলোর প্রাধান্য দেয়া উচিত শিশুদের অক্ষরজ্ঞান দেবার বইতে । আলমগীর ভাইয়ার এই মহতী উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। এমন একটা ভাল বই রচনা করা গেলে উপরোল্লিখিত সংগঠনগুলোর কাছে পৌছে দিতে পারি আমরা। আমার মতন একজন প্রায় অশিক্ষিত মানুষ এই কর্মযজ্ঞে কতটুকু অবদান রাখতে পারবো তা জানিনা তবে অতি ক্ষুদ্র কিছু করতে পারলে অবশ্যই নিজের কাছে ভাল লাগবে। সাথে আছি তাই সবসময়।
------------------------------
--------------------------------------------------------
আমি তাইলে একটু এডভারটাইস করি
http://www.banglaprosar.org.au/
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
সাইট ইংরেজিতে ক্যান? বাংলা করে ফেলতে বলেন।
খুবই ভালো উদ্যোগ।
------------------------------------------------------
স্বপ্নকে জিইয়ে রেখেছি বলেই আজো বেঁচে আছি
------------------------------------------------------
হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন’রা কি কখনো ফিরে আসে !
আলমগীর ভাই,
একেবারে আমার মনের কথা গুলো বলে ফেললেন। সচলায়তন এরকম শিশুশিক্ষার বইয়ের জন্যে খুব ভাল একটা জায়গা। আমার নিজের বাচ্চাটাও বড় হচ্ছে, কতবার মনে হয়েছে নিজেই বানিয়ে ফেলব কিছু একটা। সচলে এতজন মেধাবী ছড়াকার, আঁকিয়ের তুলনায় আমি অবশ্য কিছুই করতে জানিনা। তবু যদি কোন কাজে লাগি তাহলে ধন্য হব। শুরু হয়ে যাক তাহলে ই-বুক প্রকল্প।
একদিকে শিশুসাহিত্যে চরকিবাজী, অন্যদিকে শিশুশিক্ষায় চলছে এইসব ভয়ঙ্কর মৌলবাদী স্বেচ্ছাচারিতা। এখনই আমাদের সক্রিয়ভাবে এগিয়ে আসা উচিৎ। নইলে যে ভয়াবহ দুর্বিপাক নেমে আসছে আমাদের আগামী প্রজন্মের মাধ্যমে গোটা জাতির মাথায় তার খেশারত হয়তো কয়েক প্রজন্ম ধরে গুনতে হবে। আসুন আমরা সবাই যার যার সাধ্য ও যোগ্যতা অনুযায়ী কিছু একটা উদ্যোগ নেই।
সাম-ইনে কদিন ধরে শিশুদের জন্য কিছু উদ্যোগ নেয়ার প্রস্তাব চালাচালি হচ্ছে। আমি সেখানে আলাদা একটা গ্রুপ খোলার প্রস্তাব দিয়েছিলাম। সম্ভবত প্রস্তাবনাটা অনেকেরই মনঃপুত হয়েছে। সচলায়তনেও এরকম ভিন্ন কোন পেজ না সাইট খোলা যেতে পারে। যেখানে শিশুকিশোর উপযোগী যাবতীয় উদ্যোগগুলো নেটবন্দী করা যায়। যে যেভাবে পারি সমৃদ্ধ করার চেষ্টা করবো।
চমৎকার বিষয় নিয়ে পোস্টের জন্য অভিনন্দন জানাচ্ছি। পাশাপাশি সবার আগ্রহ দেহে আশান্বিতও হচ্ছি। যে কোন উদ্যোগে পাশে থাকার চেষ্টা করবো।
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
হুম... আমারে কী করতে হবে?
বহি প্রণয়নে আমি নাই, নিজে মূর্খ্য...
কামলা খাটতে হইলে রেডি...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
ধুগো আর মুমুর প্রস্তাব প্রচন্ড ভালো।
সাথে গৌরীশ রায়ের।
চলুক। সাথে আছি
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
আমি খুবই অল্প বয়সে বর্ণপরিচয় লাভ করেছি, আমার স্মরণে নেই বইতে কী ছিলো। অস্পষ্টভাবে এটা মনে আছে, ইংরেজি বইতে এ-তে APPLE এর বদলে ছিলো ALLIGATOR! আমি লিখতেও শিখেছি দ্রুত, গল্পের বইয়ের প্রচ্ছদে লেখা টেক্সট কপি করতাম বসে বসে, এটাও অস্পষ্টভাবে মনে আছে।
আমার বোনের মেয়েও দেখলাম চোখের সামনে পটাপট লিখতে পড়তে শিখে গেলো, কোন সমস্যা হয়নি দেখে ওর বই খুলেও দেখিনি কখনো। মাঝে মাঝে বড় কোন শব্দ শুনে শুনে লিখতে বলতাম, ভুল হলে দেখিয়ে দিতাম ক্যাম্নেকী।
আমার বোনের ছেলের সময় একটু সমস্যা দেখা দিলো। সে R লিখতে গিয়ে সেটার মিররড ভার্সনটা লেখে কোন এক কারণে, সিরিলিক Я র মতো। তখন তাকে বোঝাতে গিয়ে একটু ঘামতে হয়েছে। কিন্তু বই উল্টে দেখিনি, সামনে বসিয়ে হাতে লিখে লিখে দেখিয়েছি।
আলমগীর ভাইয়ের এই পোস্ট পড়ে আমার মাথায় বজ্রপাত হলো। এ-ই যদি হয় বর্ণপরিচয়ের নমুনা, তাহলে আমাদের অবিলম্বে কাজে হাত দিতে হবে।
একটি ই-বুক যত দ্রুত সম্ভব আসুন সবাই মিলে তৈরি করি। কাঠামো নিয়ে আলোচনা হোক। সুন্দর রংবেরং দিয়ে, প্রিন্টআউট করে বাচ্চাদের বর্ণপরিচয় শেখানো যাবে এমন একটা কিছু।
অ-য় অজগর আসছে তেড়ে, আমটি আমি খাবো পেড়ে-র বিলুপ্তি ঘটলো কেন? অজগর বাচ্চারা দেখেনি বলে? আমগাছ শহরে নেই বলে?
অ-য় অন্ধকার কারেন্ট গেলে
আগুন দেখো চুলায় জ্বলে
ইলিশ মাছের দোপেঁয়াজা
ঈগল হলো পাখির রাজা
...
এভাবে কি বলা যায়?
শিশুরা সম্ভবত দেখে দেখে সবচেয়ে দ্রুত শেখে। আমার মেয়ে তিন বা সাড়ে তিন বছর বয়সে spider বানান (হাতে) লেখা শিখেছে। কী-বোর্ডে তখনই সে mosquito বানান লিখতে পারতো। অনেকেরই হয়তো বিশ্বাস হবেনা, তবে একটুও বাড়িয়ে বলছিনা। কোনদিন ধরে ধরে শেখাইনি, যেটা করেছি তা হলো ফায়ারফক্সের গুগল সার্চে কী-ওয়ার্ড লিখে দিতাম, তারপর ইমেজ-সার্চ অপশনে ক্লিক করানো শিখিয়েছি। ব্যস্। এর পর থেকে নিজে নিজেই ছবি দেখে শব্দ শিখেছে। এখন ওর বয়স ৫। বানান করে কোনদিনই পড়তে শেখাইনি। ইদানিং দেখি ইউটিউবে গিয়ে টম এন্ড জেরীর কার্টুনের শিরোনাম ৭০-৮০% পড়তে পারে। মাঝে মাঝে জিজ্ঞেস করে 'এটা কী লেখা'। তখন পরীক্ষা করার জন্য ইচ্ছে করে ভুল বলি, সেটা সে সাথে সাথেই ধরতে পারে!
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য মায়ের কাছে শুনেছি পাশের বাড়ির বিহারী ছেলেমেয়েদের পড়া দেখে আমি বাংলা বর্ণমালা লেখা নিজেই থেকেই শিখেছি।
এ থেকে বোঝা যায় শিশুরা প্রকৃতি থেকেই শেখে। তাদের শুধু দরকার তেমন একটা পরিবেশ।
হাহাহাহা মনেপড়ে গেল, অন্য সোজা জিনিসগুলো ভুলে গেলেও, U তে Umbrella এটা বানান সহ মনে থাকত, কখনো ভুল হতো না। আমার এখনো এটা মুখস্ত করা মনেপড়ে, একটা প্যাটার্নে করতাম, Um-br-ella হিহিহি
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
'কারেন্ট' যাওয়া শব্দটা অনেকটা আমাদের 'মার্কেটিং'-এ যাওয়ার মতো। ইংরেজী থেকে আমদানী, কিন্তু ভুলভাবে। বাচচাদের না শেখানোই ভাল।
হিমুর ইংরেজী বর্ণ পরিচয়ের কথা পড়ে আমার নিজের ইংরেজী বর্ণমালা শেখার কথা মনে পড়ল। কোথা থেকে যেন এক আজব ধরণের বই যোগাড় করা হয়েছিল যার শুরুটা ছিল এমন ...
A= Airhostess
B= Boeing
C= Captain
D= Doctor
E= Engineer
G= Ground Hostess
H= Helicopter
.......................................
এখন সেই কথা চিন্তা করলেও মাথা ঘোরে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
এভাবে সাজানো যেতে পারে। ধরা যাক একটা কাক। সে বাচ্চাদের বর্ণমালার সাথে পরিচয় করিয়ে দেবে। তারপর কাকের পায়ের ছাপ অনুসরণ করে করে একটা বাচ্চা ক লিখতে শিখবে। ক-বর্গের জন্য একটা চ্যাপ্টার, চ-বর্গের জন্য আরেকটা ... এভাবে এগোনো যেতে পারে। প্রতিটি বর্ণের জন্য থাকবে অন্তত একটি করে পৃষ্ঠাজোড়া ছবি। ধরা যাক, ক-তে কাক। সেখানে একটি বিরাট ক কে ঘিরে অনেক কাকের ছবি থাকবে নানা ভঙ্গিতে। কেমন হয়?
বর্গ অনুযায়ি সাজানো যায় তবে আমার একটা পরামর্শ আছে। সেটি হলো ক খ গ ঘ এভাবে সিরিয়ালি সাজানোর দরকার নেই। এতে করে (আমার মনে হয়) উচ্চারণ শিখতে অসুবিধা হয়। পাশাপাশি প্রায় একই উচ্চারণের বর্ণগুলি না রাখলে মনে হয় ভালো হবে। (আমার ধারণা পুরাটা ভুল হতে পারে)।
প্রতিটি বর্ণের একটি করে পৃষ্ঠাজোড়া ছবি অনলাইন রিসোর্স হিসেবে হয়ত মন্দ হবে না, কিন্তু বই বের করলে খুব ভাল গ্যেট আপ নিবে সেটাও বলতে পারছি না।
দ্বিতীয়ত .. এক্ষেত্রে পৃষ্ঠা সংখ্যা হবে কমপক্ষে আশি। (বাক্য লিখা, বর্ণ পরীক্ষা ইত্যাদি অন্তভূত করে)। একটি শিশুর প্রথম বই আশি পৃষ্ঠার একটু বেশিই আমার কাছে মনে হচ্ছে। যদি রঙিন হয় সেক্ষেত্রে বই সাধারনের ক্রয় ক্ষমতার ভেতর থাকা বাঞ্ছনীয়।
আমার মনে হয় এক পৃষ্ঠায় অন্তত তিন থেকে চারটি বর্ণ থাকা উচিত। আর একান্তই যদি এক পৃষ্ঠায় একটি বর্ণ রাখতে হয় সেক্ষেত্রে বর্ণ লিখার জন্য বেশ কিছু জায়গা ছেড়ে দেয়া যেতে পারে।
আমি মনে করি বইটি শুধুমাত্র অনলাইন রিসোর্স হবে না, হবে সর্বজন গ্রাহ্য এবং নন্দিত।
ইবুকের পাশাপাশি প্রিন্টেড বই করা যায়না?
যেটা পিচ্চিকাচ্চির কাছে আরো সহজলভ্য হবে
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
- ৮০ পৃষ্ঠার বই অনেক বড় ঝামেলার ব্যাপার হয়ে যাবে। তবে একে যথাসম্ভব কার্যকর ও আনন্দনীয় করে কিছু খণ্ডে ভাগ করা যায়।
- নতুন ধরনের ছড়ার চিন্তা পছন্দ হয়েছে।
- Non-linear ভাবে বর্ণপরিচয় করানো গেলে ভাল হয়। প্রচলিত বইগুলোয় একাধারে অ-আ-...-ক-খ-...-ঁ পর্যন্ত শেখানো হয়। এর পরিবর্তে গল্পে গল্পে করা যায়?
- বর্ণ লেখা শেখানোর জন্য প্রতিটি বর্ণ লেখার ধরন নিয়ে কোন কার্টুন তৈরি করা গেলে হত। উদাহরণ, উন্মাদে বাংলাদেশের মানচিত্র দেখানো হয়েছিল হাঁটু ভেঙে, হারিকেন হাতে বসে থাকা এক বিমর্ষ ব্যাক্তির আদলে।
- শিশুরা প্রথমে ভাষা শেখে, তারপর যথাক্রমে সংখ্যা, বর্ণমালা, ব্যাকরণ, ইত্যাদি। বর্ণমালা শিখতে হলে ক্রম শেখার হ্যাপা আছে। পুরো প্রক্রিয়াটা আরো কার্যকর করার জন্য কি শিশুরা যেই অনুক্রমে শব্দ/ভাষা শেখে, সেই অনুক্রমেই বর্ণ শেখানো যায়? উদাহরণ, 'মা' শেখার সাথে সাথেই 'ম' চিনিয়ে দেওয়া যায়। প্রচলিত ধারায় 'ম' শেখার আগে ১১ + ২৪ = ৩৫টি বদখদ বর্ণ চিনতে হবে। শিশুরা মায়ের সাথে 'ম' চিনুক না। পথ-ঘাটে, কম্পিউটারে, বিজ্ঞাপনে, পত্রিকায় 'ম' দেখলে মায়ের দিকে তাকাক না, ক্ষতি কী?
ভাষা শেখার স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার বর্ণমালা শেখানোর ব্যাপারটিতে একমত। বর্ণমালা linear ভাবে শেখানোর প্রথমে দরকার নেই। বর্ণক্রম শেখাটা কঠিন, সেটা অনেক পরে শিখলেও চলে। আমি নিজে যখন বাচ্চাকে শেখাই তখন তাকে তার পরিচিত সহজ শব্দগুলোর লেখ্যরূপ দেখতে অভ্যস্ত করাই। তারপর আস্তে আস্তে তার মধ্যে বিভিন্ন বর্ণের সাথে পরিচয়। এখানে একটা দরকারী এবং কঠিন কাজ হল এমন কিছু সহজাত এবং সহজ শব্দ জোগাড় করা যেগুলোতে বর্ণমালার সবগুলো বর্ণ চলে আসে।
যেমন, ২-৩ বছরের বাচ্চার পরিচিত, যুক্তাক্ষরছাড়া কিছু শব্দ -
সম্পর্কবাচকঃ মা, বাবা, খালা, মামা, চাচা, নানা, দাদা, ফুফু,ভাইয়া, আপু, বোন,
সর্বনামঃ আমি, তুমি, ও, সে
ফল/খাবারঃ কলা, আম, আপেল, আনারস, লিচু,
মাছ, মাংস, লাউ, কদু, শসা, ডিম, ভাত
পিঠা, পায়েস,
টক, ঝাল,
পশুপাখিঃ গরু, ছাগল, মুরগি, হাস, চড়ুই, কাক,
কাজঃ গোসল, খেলা, পড়া, ঘুম, ধরা, যাও, খাও
প্রকৃতি/বস্তুঃ আকাশ, বাতাস, মাটি, ঘাস, পানি,
ঘর, বাড়ি, ছাতা, জুতা, থালা
রং - নীল, লাল, সবুজ, হলুদ, কমলা, আকাশী, বেগুনী, খয়েরী, কাল, সাদা
পরিমাণঃ অনেক, একটা, দুইটা, কম
শরীরঃ হাত, পা, মাথা, পেট, নাক, বুক, পিঠ, চোখ, কান
যে অক্ষরগুলো এলঃ
অ, আ, ই, উ, এ, ও
ক, খ, গ, ঘ
চ, ছ, জ, ঝ
ট, ঠ, ড,
ত, থ, দ,ধ, ন
প, ফ, ব, ভ, ম
শ, স, হ, য,র, ল
অনেক অক্ষরই এলনা - আরো যোগ করুন --
আমি যদি কোনভাবে কোনরকম সাহায্য করতে পারি, যেকোন রকম, প্লিজ জানাবেন। সাথে আছি এই উদ্যোগের।
নি:সন্দেহে চমৎকার উদ্যোগ । আমার ভাগ্নীর বর্ণমালার বই উল্টাতে গিয়ে ঠিক আপনার মত করেই ভাবছিলাম ব্যাপারগুলো। এই প্রজেক্টটা শেষমেষ বাস্তবায়িত হলে দুর্দান্ত হবে।
---------------------------------
বিষণ্ণতা, তোমার হাতটা একটু ধরি?
---------------------------------
বাঁইচ্যা আছি
লেখা আর মন্তব্য পড়তে পড়তে মনে পড়ে গেল একটা মজার গানের কথা। বর্ণমালা শিক্ষা বিষয়ে।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
যৌনদুর্বলতায় ভুগছি দীর্ঘকাল। দুর্বল হয়ে পড়ি রূপময়ী নারী দেখলেই...
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
ধন্যবাদ সন্ন্যাসী দা।
কেউ কি "আদর্শ লিপি" এর pdf বা এর কোনো কপি শেয়ার করতে পারবেন???
বা এর কোনো download link দিতে পারবেন plz....
নতুন মন্তব্য করুন