চাঁদের ছায়া এ-পিঠ ও-পিঠ

নজমুল আলবাব এর ছবি
লিখেছেন নজমুল আলবাব (তারিখ: শনি, ৩০/১০/২০১০ - ১:৫৬পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

অতঃপর নেমে আসে চাঁদ কেওয়াছড়ার মাঠে। সেখানে কুয়াশা জমে বিন্দু বিন্দু, আলোতে চিকিমিকি করে সবুজ চাদর। ছায়াবৃক্ষ পরস্পরে প্রেম বিলায় আর বাতাসে ডানা ঝাপটায় একাকী পেঁচা। আরেকটা নাম না জানা পাখি উড়ে যায় মাঠের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা শিরিষ ছেড়ে, সুভাষ সচেতন হয়, একটা বাজলো। কাঠালের নিচু ডালে বাঁধা প্রাচীন ঘণ্টায় আলতো ছোঁয়ায় হাতুড়ি, ঢঙ... রাত একটা বাজলো।

সুমনা আস্তে আস্তে নিজেরে ছাড়িয়ে নেয়, শফিকুলের হাতটা এতক্ষণ তার পেটে চেপে ছিলো। শ্রান্ত হাত সরানোর সময় হয়নি, কখন ঘুমিয়েছে নিজেই টের পায়নি। সুমনাও ইচ্ছে করেই হাতটা সরায়নি। ঘুমোতে দিয়েছে। এখন যখন সুভাষের ঘণ্টায় বেজেছে একটা, তখন নিজেরে সে মুক্ত করে। বিছানার কার্নিসে বসে কিছুক্ষণ, না, শফিকুল ঘুমুচ্ছে। ও আর জাগবে না যতক্ষণ না সুভাষ ঘন্টায় ছয়বার হাতুড়ি পেটাবে। ততক্ষণ সুমনার ছুটি, ইচ্ছেমতো কাটাবার মতো এইটুকুনই সময়।

অক্টোবরের শেষেই এখানে অনেক ঠাণ্ডা পড়ে। কুয়াশার স্তরগুলো অনেক গাঢ়। বাগানবিলাসে সাজানো সদরের দরজাটা ঝাপসা দেখায়। ব্রিটিশ আমলের সাজানো বাংলো, সামনে এক মাপে ছেটে রাখা ঘাসের উঠোন। সুমনা নেমে আসে উঠোনে, কুয়াশায় জবুথবু দুর্বা ঘাস, পায়ে শিরশিরে ঠান্ডা লাগে, ডালিয়ার গাছটা বড় হচ্ছে, হালকা সবুজ পাতা এখন এই চাঁদের আলোতে কেমন ফ্যাকাশে দেখায়। উঠোনের এককোনে রাখা দোলনাটা দুলছে, মিহি বাতাসে দুলছে। সুমনা আস্তে আস্তে এগিয়ে যায়, দুচালা ছোট্ট চালের নিচে সাদা রঙের দোলনা, দোল খেতে খেতে খেতে কোন সুদূরে হারায় সে।

স্কুল থেকে বাড়িটা কাছেই ছিলো। মাঝখানে একটা ছোট্ট পার্ক। সেই পার্ক রড দিয়ে ঘেরা। স্কুলের দিকের একটা রড কে যেনো ভেঙ্গে রেখেছিলো। সেই ফাঁক গলে অনায়াসে ঢুকে পড়তো সুমনা। তারপর তেরছা দৌড়ে পার্কের গেট পেরিয়ে বাড়ির সীমানা। একদিন অতি পরিচিত সেই ফাঁকায় কীভাবে যে আটকে গেলো সে, হাতের কাছে সাদা জামাটা ছিড়ে গেলো। এক হাতে সেটা ধরে আস্তে আস্তে ফিরে এলো বাড়ি। সেদিন পা'টা স্বতঃস্ফুর্ত ছিলো না। না ভয়, না লজ্জা, অন্য কী এক অনুভব ছিলো তার। পরিচিত রাস্তাটা বুঝি আজ থেকে বন্ধ হলো। বাড়িতে ঢুকতেই মা ত্রস্ত পায়ে এগিয়ে এলো। কিরে কী হয়েছে, উত্তর দেয়ার আগেই আবার বলে, যা দৌড়ে ঘরে যা, জামাটা বদলে নে। একটা শাড়ি পর। সে ভেবেছিলো জামার ছেড়াটা বুঝি মা দেখতে পেয়েছে। কিন্তু শাড়ি পরতে বলল কেনো? সাত-পাচ ভাবতে ভাবতে সে সত্যি সত্যি শাড়ি পরে ফেলে। তারপর আর ভাবনার সময় কোথায়? সাত দিনের মাথায় বিয়ে, তার দশ দিন পর এই নির্জনবাস।

প্রথম প্রথম মিশ্র এক অনুভূতি ছিলো। সারি সারি নির্জনতাটা সেভাবে বুঝতে পারতো না, আবার কখনো সখনো বড় তীব্র একা মনে হতো নিজেরে। সকালে একটু বেলা করে শফিকুল বেরিয়ে যেতো কাজে। ফিরেও আসতো বিকেল থাকতে থাকতে। নির্জনে রাত একটু আগেই আসে বুঝিবা। ভালোবাসার রকমফের তখনও করতে শেখেনি সুমনা, শুধু মনে হতো শফিকুল তারে বড়ো বেশি ভালোবাসে। মানবিক কিংবা পাশবিকের কোন পার্থক্য ছিলো না তার। নিজেও মেতে উঠতো মৌনতায়, যৌনতায়। এখন কেবলি মৌনতা টিকে আছে। মাঝে মাঝে মনে হয় মৌনতাও নাই আর, সে কেবলই একখণ্ড মাংস।

শফিকুল এখন সকালে বেরোয়। ফিরতে ফিরতে রাত হয়ে যায়, সন্ধ্যার আগেতো কখনই না। যেদিন সন্ধ্যায় আসে, সেদিন আবার বেরিয়ে যায় ক্লাবে। আর কোনো কোনো দিন ক্লাব ট্লাব সেরে তারপর আসে। নিয়মের মানুষ, সময় মেনে খাবে, অল্পক্ষণ টিভি দেখবে, তারপর বিছানায় যাবে, রোজ রোজ একইভাবে সুমনাকে কাছে টেনে নেবে, পরিশ্রান্ত হয়ে একইভাবে পাশ ফিরে ঘুমিয়ে পড়বে। নতুন কিছু নেই। কারখানায় বড় ঘন্টা আছে, সুভাষ সেখানে ঢং ঢং করে হাতুড়ি পেটাবে, সাড়ে ন'টায় বাড়ি ফেরা, দশটায় খাবার, তারপর টিভি, সাড়ে এগারোতে বিছানা, বারোটায় পাশ ফিরে শোয়া... এইতো।

এ বাড়িতে আসার পর, মাসখানেক কেটে গেলে কিছুটা ধাতস্থ হচ্ছে যখন, তখন একবার শফিকুলকে জিজ্ঞেস করেছিলো, সারাদিন সে কী করবে? শফিকুল অবাক চোখে তাকিয়ে থেকে বলেছিলো,কী করবে মানে? মেয়েরা ঘরে থেকে কী করে? সবাই যা করে তুমিও তাই করবে। কথা বাড়ানোর স্বভাব কখনই নেই ওর। তাই আর কথা বলেনি। কিন্তু কী করার আছে তার? সকালে রতন আসে পুরো বাড়ি ঝাড় দিতে, তার একটু পরে আসে শান্তিময়, বাগান করা তার দায়িত্বে, চন্দ্রনাথ আসে এদেরও আগে, একেবারে অন্ধকার থাকতে থাকতে সে হাজির হয়। সকালের খাবার তৈরি তার কাজ। সবকিছুই আসলে রুটিন বাঁধা। মা খালারা যেভাবে নিজেদের ব্যস্ত রাখেন সুমনার সেরকম কিছু হয় না। তবু সে মানিয়ে নেয়। শান্তিময় নিজের মতো করে যে বাগান সাজাচ্ছিল এতকাল, সেখানে টুপ করে ঢুকে পড়ে সুমনা। বারান্দায় বসে বসে অনুচ্চকণ্ঠে সে শান্তিময়কে এটা সেটা বলে, খুব দরকার হলে নিজেই নেমে যায়, তখন মনমোহিনী ছাতা ধরে রাখে তার মাথায়। শফিকুলের অনেক খেয়াল, গায়ের রংটা যাতে এতটুকু ময়লা নাহয়, সেজন্য নিয়ম করে তাকে হলুদ মাখতে হয়। একেবারে প্রথম রাতেই পেটে হাত বুলাতে বুলাতে শফিকুল বলেছিলো, এখানে মাংসের দলা তৈরি করোনা কখনো লক্ষ্মীটি, তারপর শরীরের ইতি উতি নানান ভূমিতে ছুঁয়ে ছুঁয়ে বলেছিলো প্লিজ... প্লিজ...প্লিজ... সুমনা সেসব ভুলেনি, ভুলবে না। তাই এখনও সন্তানবতী সুমনা সেই আগের মতোনই সমান প্রিয়দর্শিনী।

আজকের চাঁদের বয়েস কতো? পূর্ণিমার আগে পরে এখানে চাঁদ এতো বেশি কাছে আসে যে বয়েসটা ঠিক ধরা যায় না, অথবা সুমনা সেসবের হিসাব রাখতে পারে না। এ বাড়ির প্রথম রাতটাই ছিলো চাঁদ রাত। বিকেলের দিকে ওরা এসে পৌঁছেছিলো। শরীরটা জুড়িয়ে নিতে না নিতেই নেমে এলো অন্ধকার, আর একটু পরেই ঝুপ করে জেগে উঠলো আস্ত একটা চাঁদ। বারান্দায় বসে বসে দুজনে চা খচ্ছিলো তারা। এমন পাগল করা জোৎস্না দেখে সুমনা বসে থাকতে পারেনি। ছুটে এসেছিলো উঠোনে। দুহাত দু দিকে ছড়িয়ে দিয়ে কয়েকটা পাক খেলো সে, তার মনে হচ্ছিল চাদেঁর আলো বুঝিবা তারে ছুঁয়ে দিলো। শফিকুলও নেমে এসেছিলো একটু পরে, স্ত্রীর পাশে দাড়ালো কিছুক্ষণ, তারপর খুব আস্তে আস্তে সাবধানে বল্লো/বলল, একবার পেছনে তাকাও, দেখো দরজায় দাড়িয়ে আছে বাবুর্চি, আয়া, এদের সামনে এভাবে চলতে নেই। একটানা বাজতে থাকা রবীন্দ্রনাথের গান যেভাবে লোডশেডিং এ বন্ধ হয়ে যায়, সেভাবেই যেনো থেমে গিয়েছিলো সুমনা। তারপর কত চাঁদ নেমে আসে এই বনজ বৈভবে সুমনা তার খোঁজও রাখে না।

রাত বাড়ছে, কুয়াশা পড়ছে আরো ঘন হয়ে। রাতের কি আলাদা কোন ভাষা আছে? সেই ভাষা পড়া যায়? যায় বোধহয়। সুমনার সেসবে কোন আগ্রহ নেই। সে শুধু জানে, এই নির্জনের মাঝে আরো নির্জনতা আসে রাতের আঁধারে। সেই আঁধারে নিজেরে খুলে দেয়া যায় ইচ্ছেমতো, কেউ দেখবে না, খাবলে খাবে না। শুধু ছুঁয়ে দেবে, কোমল সে ছোঁয়া। সুমনা আলতো পায় হেঁটে যায়, বাংলোর পেছনে টলটলে পানির একটা পুকুর আছে, তার শানবাধানো ঘাটে বসবে বলে। এখানকার সবকিছুই গোছানো, ছবির মতো, নাটকের পাণ্ডুলিপির মতো। তবু রাতের এই সময়টাতে সবকিছুই অন্যরকম মনে হয়। অভ্যস্থ পায়ে সুমনা এগিয়ে যায়।

পুকুরে একসময় প্রচুর কচুরিপানা ছিলো। বছরখানেক আগে সেসব পরিস্কার করে মাছ ছাড়া হয়েছে, আফ্রিকান মাগুর। সুমনা চাইছিলো দেশী মাছ ছাড়তে, আর পুকুরের ঠিক মাঝখানে থাকবে শাপলা। কিন্তু শফিকুল সেসব হেসেই উড়িয়ে দিয়েছে। আফ্রিকান মাগুর দ্রুত বাড়ে, বিশাল সাইজের হয় একেকটা, আর খাবার দাবারও দিতে হয় না তেমন। ঘাটের পাশে একটা গামলা রাখা। রাতে মোরগ জবাই করা হয়েছে, সেটার নাড়িভুড়ি, ডানা, ঠ্যাং এসব রাখা হয়েছে। সকালে এসেই চন্দ্রনাথের প্রথম কাজ এগুলো ছুঁড়ে দেয়া। ঘাটে বসতেই মাছগুলো যেনো তার ঘ্রাণ পেয়ে যায়। শরীর দুলিয়ে দুলিয়ে ভাসতে থাকে ঘাটের আশেপাশে। সুমনা উঠে দাঁড়ায়। গামলাটা হাতে নেয়। চারটা মোরগের নাড়িভুড়ি, বেশ ভারী। দুহাতে ধরে গামলা উচিয়ে ছুঁড়ে মারে, ঝুপ করে নাড়িভুড়িগুলো পানিতে পড়ে। প্রচন্ড আলোড়ন তৈরি হয় পুকুরে। পুকুরের চারপাশ থেকে মাছগুলো ছুটে আসে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে। উচ্ছিষ্টগুলো ছিঁড়ে ফেলছে যেনো, মনে হচ্ছে নিজেদেরই মাংস খেয়ে ফেলবে।চাঁদের আলোয় চিক চিক করে উঠে জলের উপর ভেসে উঠা কালো কালো চামড়া। কী বিশ্রি কামড়াকামড়ি। দেখতে দেখতে সুমনার মাথাটা কেমন আউলে যায়, কয়েক ঘণ্টা আগের নিজেকেই যেনো দেখতে পায় পুকুরে... সুমনা ভাসছে... সুমনা ডুবছে... তাকে খাবলে খাচ্ছে কালো কালো হাত, নখর, দাঁত...

(এই শিরোনামে আবুল হাসান এর একটা কবিতা আছে)


মন্তব্য

নূপুরের ছন্দ এর ছবি

পড়লাম।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

আমিও


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

নজমুল আলবাব এর ছবি

ধন্যবাদ। আপনে ছাড়া আর কে প্রথম পড়বে বলেন

------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল

সুমন চৌধুরী এর ছবি

পর্লাম।

এইসব পইড়া কতক্ষণ ভুদাই হইয়া বইসা থাকা লাগে।

তাই থাকলাম।



অজ্ঞাতবাস

নজমুল আলবাব এর ছবি

ধন্যবাদ বদ্দা, আপনারে তব্দা খাওয়াতে পারাটাতো বিরাট প্রাপ্তি।

------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল

শাহেনশাহ সিমন [অতিথি] এর ছবি

হুমমম

নজমুল আলবাব এর ছবি
সুবর্ণা এর ছবি

গোছানো পরিপাটি । খুব ভাল লেগেছে ।
ভাল থাকুন । লিখুন ।

নজমুল আলবাব এর ছবি

ধন্যবাদ সুবর্ণা। ভালো থাকবেন আপনিও

------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল

নজমুল আলবাব এর ছবি

হ, না পড়লে খবর করে দেবে না...

------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল

দুষ্ট বালিকা এর ছবি

বুঝলাম! দেঁতো হাসি

-----------------------------------------------------------------------------------
...সময়ের ধাওয়া করা ফেরারীর হাত থিকা যেহেতু রক্ষা পামুনা, তাইলে চলো ধাওয়া কইরা উল্টা তারেই দৌড়ের উপরে রাখি...

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

নজমুল আলবাব এর ছবি
নৈষাদ এর ছবি

দেখলাম।

নজমুল আলবাব এর ছবি
যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

গল্পের জন্যে লেখককে:
কাজের মাঝেও একটানে পড়ে ফেললাম। আগেও দেখেছি, আপনার লেখার হাতটা চমৎকার। পড়তে ভালো লাগে। হাসি

আর মূল প্লট/থিমের জন্যে মন্তব্য:
আচ্ছা, বেশ! চিন্তিত
এবার কেন জানি আমারো লেখতে ইচ্ছা হলো একটা!

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

নজমুল আলবাব এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ মাস্তান, থুক্কু মাস্টার।

আপনার গল্পের অপেক্ষায় থাকলাম।

------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল

শান্ত [অতিথি] এর ছবি

ভালো লাগলো অপু ভাই

নজমুল আলবাব এর ছবি
মানিক চন্দ্র দাস এর ছবি

............................................কি কমু?? ভাষা নাই।

নজমুল আলবাব এর ছবি

বিষয়টা ভাবনার জন্য ভয়ংকর।

------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল

দ্রোহী এর ছবি

পড়লাম।

একেবারে মিহিদানা গল্প!

এবার বদ্দার কথামত ভুদাই হইয়া বইসা থাকি।


কাকস্য পরিবেদনা

নজমুল আলবাব এর ছবি

আমি নিজেওতো এক ভুদাই

------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

বাহ, নিদারুণ...

না ভয়, না লজ্জা, অন্য কী এক অনুভব ছিলো তার। পরিচিত রাস্তাটা বুঝি আজ থেকে বন্ধ হলো।

এই অংশটা খুব মনে ধরেছে।

_________________________________________

সেরিওজা

নজমুল আলবাব এর ছবি

ধন্যবাদ সুহান।

------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল

তিথীডোর এর ছবি

রাত বাড়ছে, কুয়াশা পড়ছে আরো ঘন হয়ে। রাতের কি আলাদা কোন ভাষা আছে? সেই ভাষা পড়া যায়? যায় বোধহয়। সুমনার সেসবে কোন আগ্রহ নেই। সে শুধু জানে, এই নির্জনের মাঝে আরো নির্জনতা আসে রাতের আঁধারে। সেই আঁধারে নিজেরে খুলে দেয়া যায় ইচ্ছেমতো, কেউ দেখবে না, খাবলে খাবে না। শুধু ছুঁয়ে দেবে, কোমল সে ছোঁয়া।

উত্তম জাঝা!

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

নজমুল আলবাব এর ছবি
অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

আপনার লেখা বরাবরই মুগ্ধতা নিয়ে পড়ি, অপু ভাই। এবারও ব্যতিক্রম হলো না।

নজমুল আলবাব এর ছবি

মুগ্ধতাটা ঝেড়ে একটু সমালোচনা করো এবার।

------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল

সুমিমা ইয়াসমিন [অতিথি] এর ছবি

বহুদিন পর তোর লেখা পড়লাম। ভালো লাগা রেখে গেলাম।

নজমুল আলবাব এর ছবি

ভালোলাগাটা নিলাম, কৃতজ্ঞতাটা জানালাম।

------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল

জুয়েইরিযাহ মউ এর ছবি

ভালো লাগলো পড়তে... চলুক

---------------------------------------------------------------
নির্জলা নৈবেদ্য


-----------------------------------------------------------------------------------------------------

" ছেলেবেলা থেকেই আমি নিজেকে শুধু নষ্ট হতে দিয়েছি, ভেসে যেতে দিয়েছি, উড়িয়ে-পুড়িয়ে দিতে চেয়েছি নিজেকে। দ্বিধা আর শঙ্কা, এই নিয়েই আমি এক বিতিকিচ্ছিরি

নজমুল আলবাব এর ছবি

জেনে ভালো লাগলো।

------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

এই তাইলে গঠনা?
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

গঠনা কারাফ ... নজুবাই কফিফেষ্ট মারে


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

নজমুল আলবাব এর ছবি

নইজ্যা একটা বদ।

------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল

মর্ম এর ছবি

রাতের আরো একটা সুন্দর ছবি দেখালেন, ভাল লাগল অনেক দিন পরে লেখা আপনার গল্প।
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...

~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...

নজমুল আলবাব এর ছবি

ধন্যবাদ মর্ম।

------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল

কৌস্তুভ এর ছবি

এইটা বড়োদের গল্প। আমি নাবালক। তাও পড়লাম। তাও ভাল লাগল।

নজমুল আলবাব এর ছবি

বড়দের গল্প পড়ে সেইটা আবার ভালো বলা!!!!! দুনিয়ার রসাতলে যেতে আর বেশি দেরি নাই।

------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল

বইখাতা এর ছবি

দারুণ ভাল লেগেছে। বিরক্ত হবেন কিনা জানিনা, খুব ভাল লেগেছে বলেই এই গল্পের সাধারণ পাঠক হিসেবে গল্প নিয়ে আমার সামান্য কিছু মতামত জানাতে ইচ্ছা করছে।

গল্পের প্রথমদিকে কয়েক জায়গায় 'নিজেরে', 'তারে' - এই শব্দগুলো মনে হয়েছে গল্পের বাকি অংশের ভাষার সাথে ঠিক যায়নি। একটু চোখে লেগেছে। এট অবশ্য বড় ব্যাপার না। তারপরও! শেষের প্যারায় যখন আফ্রিকান মাগুরের কথা বললেন তখুনি আসলে বুঝতে পেরেছি শেষটা কীভাবে হবে এবং পড়তে পড়তে খুব চাইছিলাম যা ভাবছি সেভাবে যেন শেষ না হয়। শেষটা বুঝতে পেরেছি, এমনটাই হওয়ার কথা ছিল, তবে কেন জানি পুরো গল্পের সাথে তুলনায় একটু মোটা দাগের শেষ মনে হয়েছে। এই ঘটনা/ বক্তব্য/ পরিণতিটাই কি অন্য কোনো ভাবে দেখানো যেতো? জানিনা। তবে অন্য কোনো ঘটনা/ বর্ণনা দিয়ে বা অন্য কোনো ভাবে দেখানো গেলে বেশি ভালো লাগতো, গল্পটাকে আরো নিখুঁত মনে হতো, গল্পের প্রথম অংশের প্রেক্ষিতে উপযুক্ত শেষ মনে হতো। আমি হয়তো ঠিকভাবে আমার অনুভুতি বোঝাতে পারলাম না। আর এটা কিন্তু নিতান্তই একজন সাধারণ পাঠকের অনুভুতি, এই গল্প নিয়ে। হাসি

আপনার গল্পগুলি ভাল লাগে।

নজমুল আলবাব এর ছবি

প্রিয় বইখাতা,
এই গল্পে আমার আমার সবচে পছন্দের মন্তব্য হলো এটা। এভাবে যেই বলে, তারে আমার আপনজন মনে হয়। ভালো থাকবেন। আপনার কমেন্টটা মনে রাখার চেস্টা করবো।

আমার গল্পগুলো (সেটা যদি সত্য সত্য গল্প হয়ে থাকে) আপনার ভালো লাগে শুনে সম্মানিতবোধ করছি। ভালো থাকবেন।

------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল

রানা মেহের এর ছবি

গল্প বেশি ভালো লাগেনি অইপ্যা।
খুব পরিচিত কাহিনী। একটু নতুন কিছু লিখবিনা?
সম্ভবত এই গল্পটা সুভাষের দৃষ্টিতে লিখলে অন্যরকম একটা ব্যাপার হতো

তবে কিছু বর্ণনা অতি সুন্দর। ওপরে সুহান যেটা বললো সেই জায়গাটা দারুন।
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

নজমুল আলবাব এর ছবি

গল্পটাতো শুরু করলো সুভাষ। প্রথম প্যারতেতো তারই প্রমাণ মেলে। কিঙবা ভাবনার ঘরে যে গল্প ছিলো, যা এখনও আছে সেটাতো সুভাষেরই। কিন্তু দ্বিতীয় প্যারায় এসেই সুমনা এমন টান দিলো যে সুভাষ বেচারা আর টিকতে পারলো না।

------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।