২/৭/১১
জীবন ছড়িয়ে আছে তোমার
এখানে সেখানে
জন্মমাত্রই পিতৃহীন, তারপর
জননীও দিয়েছেন পাড়ি অন্যভূবণে
মামা, চাচা, ভাই, কোথায়
না আশ্রয় খুঁজেছ তুমি! তোমার
স্মৃতিগুলো মুড়কির মতো
ছড়িয়ে পড়েছে সবখানে। আর
আজ সকল দুঃখবোধ জড়ো
হলো এই একাকী বাড়িতে…
পিতা আমার, চিরকালিন শিশু আমার
এইবার তবে বিদায়, অথবা চীর বসবাস
আমার বুকে, নিভৃতে…
২.
তেষট্টি বছরের পিতৃশোক!
কতটা ভার বুকে নিয়ে তুমি
কাটালে জীবন তোমার?
আব্বাগো, এতো দীর্ঘ দম আমার নাই।
অত লম্বা সময় আমি কষ্ট পোষতে পারবো না
আমারও চাই দীর্ঘ যতিচিণ্হ
৯/৭/১১
প্রথম ঘন্টায় হিসেবে মিলেছে গত ঘন্টার কণ্ঠস্বর
দ্বিতীয় দিনে বলেছি গতকাল, এভাবে প্রতিদিন
পূর্ববর্তি দিনকে টেনে এনে বলেছি আব্বা…
অষ্টম দিবসে এসে আর গত বলতে পারি না
বলতে হয় গত বৃহস্পতির আগের বৃহস্পতিবার!
হায়, এত দ্রুত তুমি দুরে সরে যাও
হায়, এত দ্রুত তুমি স্মৃতি হও!
কল লিস্ট থেকে তোমর নামটা উধাও
শেষবার দেখেছি ১৩৪ টা মিস্ড কল
৩২ টা কল আর ডায়াল লিস্টে কিছুই নেই!
হু, কিছুই নেই, আমি তোমাকে ফোন করিনি
ইদানিংকালে, কোনদিনই না মনে হয়, ঘন্টায়
ঘন্টায় উল্টোদিক থেকে কথা বলা হলে এপাশ
থেকে কি সেরকম টান থাকে? থাকে না বোধয়
১৩৪ টা মিস্ড কল মানে কমপক্ষে তিরিশটা সকাল,
বিশটা দুরের যাত্রা, কমপক্ষে বিশবার তোমাকে উপেক্ষা!
সবকিছু মনে পড়ে না, মনে পড়বে না। শুধু শেষবার
জীবনের শেষবার, চলে যাবার ঠিক আগে আগে একেবারে
স্বাভাবিক কণ্ঠে যখন বল্লে, ‘শরীরটা খারাপ লাগছে
একটু আসো,’ এই কথাটা ভুলবো না। কল লিস্ট থেকে
তোমার নাম মুছে গেছে, আরো অনেক লিস্ট থেকে কাটা
পড়বে তোমার নাম, শুধু খুব গোপনে গভীরে আমার কানে
বাজবে, শরীরটা খারাপ লাগছে, খারাপ লাগছে, খারাপ লাগছে…
অক্ষম পুত্র তোমার, সেই ডাকেও সাড়া দিতে পারে না!
কি অপার শূন্যতায় ফেলে গেলে আমায়, তা কি বুঝ তুমি?