আয়ুষ্কাল

নজমুল আলবাব এর ছবি
লিখেছেন নজমুল আলবাব (তারিখ: মঙ্গল, ২২/০৫/২০১২ - ৫:২৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমিনুল ভাই তখন আটত্রিশ বছরের যুবক। কিন্তু দেখলে মনে হয় কমপক্ষে পঞ্চাশ তার বয়েস। লম্বা পানজাবী, মাথায় টুপি, তার সাথে মিল রেখে গালে পাতলা দাড়ি। তাবলিগের চিল্লা দিয়ে বেড়ায়। উত্তরের কোন এক জেলা থেকে লম্বা তাবলিগী সফর দিয়ে সে আমাদের বাড়িতে এলো। তখন দুপুর, মার্চ মাসের হালকা গরমের দুপুর। তার গাল ভেঙ্গে বেশ ঢুকে গেছে। চোখের নিচে কালি। ঝোলার মতো ব্যাগটা কোন মতে দরজার কাছে রেখেই সে সটান শুয়ে পড়লো মেঝেতে। বাড়িতে হট্টগোল শুরু হলো। আমিনুল ভাই এর গা পুড়ে যাচ্ছে জ্বরে। সে কোনমতে বাড়ি পর্যন্ত এসেছে, আর কোলাতে পারছে না।

আব্বা বিকেলে বাড়িতে ফিরেই শুরু করলেন গালাগালি। তাবলিগীর গোষ্ঠি উদ্ধার করতে লাগলেন। আমিনুল ভাই চিচি করে মিহি কণ্ঠে শুধু চাচার হেদায়েত কামনা করছিলো। কিন্তু সেটা এমনভাবে, যেনো আব্বার কানে না পৌছে। আব্বা পারেনতো তখনই বাড়ি থেকে তারে বের করে দেন। তাবলীগের মতো বেকার কাজে যে জোয়ান ছেলে সময় কাটায় তার কোন দরকার নাই। আম্মা নানান চেষ্টায় আব্বারে সামলালেন সে যাত্রায়।

আমিনুল ভাই বাড়িতে আসার পর পরই মা বাড়ির পুরনো লোক মনতেরার বাপকে গ্রামের বাড়িতে পাঠালেন। সে সন্ধ্যার ঠিক লাগোয়া সময়ে বড় চাচীরে নিয়ে এলো। আব্বা আবারও রেগে গেলেন। ছেলেকে কেনো বাড়িতে তালা দিয়ে রাখলেন না, এমন পাগলরে ঘরে দড়ি দিয়ে বেধে রাখা দরকার এমন কথার উত্তর দেয়ার সাহস চাচীর ছিলো না। আব্বা শুধু টানা গজ গজ করে গেলেন। আমিনুল ভাই তখন অনেকটা সামলে নিয়েছে। হান্নান ডাক্তার তাকে দেখে গিয়েছে ইতিমধ্যে। পেটে দানাপানির সাথে ঔষুধও পড়েছে। সে আস্তে আস্তে তার দুস্টামি মাখা কথাও শুরু করেছে। আমরা গোল হয়ে তার চারপাশে বসে আছি। সে তাবলিগের গল্প করছে। লোভাতুর নানা বর্ণনা দিচ্ছে রাজশাহী অঞ্চলের। আমের বোল দেখে এসেছে। মে মাসের শেষ দিকে সে আবার যাবে, আল্লার রাস্তায় সফরের সাথে সাথে আম-লিচুও খাওয়া হবে বিস্তর। তার বর্ণনা ভঙি ছিলো অসাধারণ। মিন্টুভাই সেই ভঙিতেই ঠেসে গেলো। বায়না ধরলো তাকেও সাথে নিতে। আমিনুল ভাইতো কোনমতেই রাজী না। বার বার বলছে, নারে ভাই, ছোটচাচা আমারে বাড়ি থেকে বের করে দেবে তাইলে। মিন্টুভাই বল্ল সে নিজে আব্বারে বুঝাবে। তাছাড়া তখন তার স্কুল বন্ধ থাকবে। তখন একটু সায় দিলো আমিনুল ভাই। কিন্তু সাথে অদ্ভুত একটা কথাও বল্ল, কঠিন গলায় বল্ল, 'তোর এইসব মিন্টু ফিন্টু সেখানে চলবে না কিন্তু।' আমরা না বুঝে তার দিকে তাকিয়ে থাকলাম। এটা আবার কেমন কথা। তখন সে বুঝিয়ে দিলো। মিন্টু নামটাতো ভদ্রস্থ না, আর যেহেতু মিন্টুর একটা ইসলামী না আছে, সেহেতু সেই নাম, মানে মুনতাসির নামেই সেখানে তাকে পরিচয় দিতে হবে। তাছাড়া জামাতের নায়েবে আমীরের ভাই এর নাম মিন্টু হওয়া নাকি শোভন না। আমরা তখন জানলাম আমিনুল ভাই সেই তাবলীগ জামাতের নায়েবে আমীর, যার অর্থ সহ-সভাপতি।

আমিনুল ভাই ৩/৪ দিনের মাথায় সেরে উঠলো। লম্বা যাত্রার ধকল, ঘুম-খাবারের অনিয়মের জন্যই তার শরীর খারাপ হয়েছিলো। ডাক্তার-আব্বা-আম্মা-চাচী সবারই সেই মত। কিন্তু আমিনুল ভাই সেটা মানতে নারাজ। সে বল্ল তার আসলে অন্য সমস্যা। সেটা সময় হলেই বলবে। আব্বা দিন সাতেক পরে তাকে ডেকে নিলেন। তার সমস্যা কি সেটা জিজ্ঞেস করলেন। প্রথমে আমতা আমতা করলেও একসময় সে বল্ল, তার নাকি পানি খেতে ভালো লাগে না, তিতা তিতা লাগে। আব্বা একটুক্ষণ থম মেরে গেলেন, তারপর বল্লেন, জ্বরের জন্যই এমনটা হয়েছে। আমিনুল ভাই মাথা নাড়তে নাড়তে বল্ল, না। মাস খানেক ধরেই তার এমন হচ্ছে। আব্বা এবার বেশ অসহিষ্ণু হয়ে পড়লেন। ধমক দিয়ে বল্লেন কি যা ইচ্ছা তাই বলিস। তিরিশ বছর হয় নাই বয়স তর আবার পানি তিতা লাগবো ক্যান? আমিনুল ভাই শুধরে দিয়ে বল্ল তার বয়েস আটত্রিশ। আব্বা ধমক দিয়ে তারে সরিয়ে দিলেন। বিষয়টা ঠিক বুঝতে পারলাম না আমরা। পানি তিতা লাগাতো রাগ করার মতো বা ভয় পাবার মতো কোন বিষয় না। জ্বর হলেতো সবারই এমন লাগে। আমিনুল ভাই সে কথা আমাদের বুঝাতেও চায় না। তবু আমরা নাছোড় হয়ে তারে ধরি।

দাদাজানের তখন পয়তাল্লিশ বছর বয়েস। আব্বা মাত্র দশ বছরের। গ্রামের ভারতের ইশকুলে পড়েন। সেই বয়েসে দাদাজান বলতে লাগলেন তার মরণের সময় উপস্থিত, কারণ তিনি পানির স্বাদ পাচ্ছেন না। তিতা তিতা লাগে। এই অসুখেই দাদাজানের বাপ দাদা মারা গেছেন! তারপর সত্যি সত্যি দাদাজান সেই বছরটা না ঘুরতেই মারা গেলেন! গল্পটা ভয় ধরানোর। আমরা ভয় পেলাম, কিন্তু সেটা অল্প সময়ের জন্য। মিন্টুভাই আমাদের ভয় কাটিয়ে দিয়ে বল্ল, আমিনুল ভাই হিসাব মতো আরো সাত বছর বাঁচবে। পয়তাল্লিশ হতে নাকি আরো সাত বছর বাকি। তবুও সুরটা যেনো কোথায় কেটে গেলো। চাচী কাঁদতে কাঁদতে চোখ ফুলিয়ে ফেল্লেন, আর পরের সকালে জোর করে আমিনুল ভাইকে নিয়ে বাড়ি ফিরে গেলেন তিনি। আব্বা কিংবা আম্মা তেমন উচ্চবাচ্চ করলেন না। আমিনুল ভাই যাবার আগে মিন্টুভাইকে বলে গেলো জুন মাসের জন্য রেডি হতে। কিন্তু সেই জুনে আমিনুল ভাই আর রাজশাহী যেতে পারলো না। কাঠফাটা গরমের এক দুপুরে সে কোন কিছু জানান না দিয়ে মরে গেলো। আমাদের ভাইদের মাঝে ধাম করে একটা ড্যাশ চিহ্ন একে দিয়ে আমিনুল ভাই সত্যি সত্যি মরে গেলো।

মানুষের গড় আয়ু নিয়ে আব্বা খুব কথা বলতেন। বাংলাদেশের মানুষ গড়ে পঞ্চান্ন বছর বাঁচে এমন একটা তথ্য দিয়ে তিনি বলতেন তার নাকি এক্সট্রা লাইফ চলছে। কিন্তু সেটা বেশি টেনে নিতে পারলেন না। তেষট্টি বছর বয়েসে বুকের হাল্কা ব্যাথায় আব্বা চলে গেলেন। কিন্তু তার বছর খানেক আগে থেকেই আব্বা প্রস্তুত হচ্ছিলেন চলে যাবার জন্যে। প্রথম দিকে সেটা আমরা বুঝতে পারিনি। যখন বুঝলাম, তখন উড়িয়ে দিতে চাইলাম বিষয়টা। কিন্তু তবু মনের ভেতর খট-খট, খট-খট করতেই থাকলো। পারভিন তখন মাত্র বি,এ পাশ করে একটা স্কুলে ঢুকেছে। সে তার বেতন পেয়ে কয়েক ডজন পানির বোতল নিয়ে এলো। আব্বা প্রবল আগ্রহে সেটা খাওয়ার চেষ্টা করলেন, হলো না। ডাব খেলেন কিছুদিন, তারপর সেটাও তিতা লাগতে শুরু করলো। এসব করতে করতে মাস ছয়েক হয়তো গেলো, আব্বা হাল ছেড়ে দিলেন। তারপর সেই চুড়ান্ত দিন। আমরা শুধু অসহায়ের মতো আব্বার চলে যাওয়া দেখলাম।

আম্মার চোখে সমস্যা দেখা দিয়েছে। অস্বাভাবিক কিছু না। এ বয়েসে সবারই কম বেশি চোখের সমস্যা হয়। কিন্তু আম্মা তার সমস্যাটা বাড়িয়ে দিয়েছেন নিজে। তিনি চশমা পরতে পারেন না। চশমা পরলে নাকি সবকিছু দোতলা হয়ে যায়। প্রথম প্রথম চশমা পরলে এটা হয় সবার। সময়মতো সেটা কেটেও যায়। কিন্তু সেই সময়টাই দিচ্ছেন না। তার জীবনটা স্থবির হয়ে যাচ্ছে আস্তে আস্তে। ঘরের পরিচিত বলয় ছাড়া তিনি বেরুচ্ছেন না। আন্দাজে যা যা করা যায় সেটাই করে যাচ্ছেন। তবু খাবার টেবিলে তার রোজ বসতেই হবে। আমার খাবার দাবার ঠিকমতো হচ্ছে কী না এই দায়িত্ব আর কারো উপর ছেড়ে দিতে তিনি নারাজ। আমার বউ এ নিয়ে ঠাট্টা করে, আগে সেটা অভিমান ছিলো। মেনে নিয়েছে এখন। কিন্তু ঠাট্টাটা আর ছাড়েনি। আম্মা কঠিনভাবে আমাকে খাওয়াবেন বসে বসে। কি খাচ্ছি, কতটুকু খাচ্ছি সেটা দেখার সময় তার চোখে কোন সমস্যা থাকে না। তাই ফাকিঁবাজি করা যায় না। কয়েকদিন ধরেই তার হিসাব মতো আমি পানি কম খাচ্ছি। প্রতিবার খাবারের সময় সেটা বলছেন। আমার সমস্যা কি সেটা জিজ্ঞেস করছেন। আমি প্রবলভাবে তাকে বুঝাতে চেষ্টা করছি, আমার কোন সমস্যা নেই। যতটা পানি খাবার দরকার, ততটা আমি খাচ্ছি। তবু তার সন্দেহ দুর হয় না। আজ খুব ধীর গলায় তিনি বল্লেন- টিটন, সত্য করে বলতো বাবা, তোর কি পানি খেতে সমস্যা হয়, তিতা তিতা লাগে? আমি জোর গলায় হেসে উঠি। মাকে বলি, তুমি কি ভাবছো মা? আমি মরে যাবো এটা ভাবছো নাকি? নিশ্চিত থাকো সেইটা হবে না। আমি তোমারে কবরস্থ করবো, এইটা একটা পাক্কা কথা। মা কিছু বলেন না। তিনি আবারও আগের মতোই জিজ্ঞেস করেন, সত্য করে বল টিটন, আমারে ফাঁকি দিস না। আমি বলি, না মা, সত্যি বলছি, আমার তিতা লাগে না। মা নিশ্চিত হোন। আমি উঠে পড়ি। মায়ের সাথে মিথ্যা বলে আমি অফিসের পথে হাটি...


মন্তব্য

কল্পনা আক্তার এর ছবি

আলবাব ভাই এটা যেন শুধু গল্পই হয় অন্য কিছু না।

কল্পনা

নজমুল আলবাব এর ছবি

গল্পইতো। আর কিছু না।

শান্ত এর ছবি

ধুর যাও। কিতার মইধ্যো কিতা মাতো। গল্প লেখার আর বিষয় পাও নানি? ইতা গল্প ভবিষ্যতে দেখলে আমারারে যেলা মারো ওলা মাইর খাইবায়।

__________
সুপ্রিয় দেব শান্ত

অলস অনড়  এর ছবি

ভাইয়া এটা কি সিলেট এলাকার ভাষা? দেঁতো হাসি

নজমুল আলবাব এর ছবি
রাজিব মোস্তাফিজ এর ছবি

মাইর লাগানি লাগব আসলেই

চরম উদাস এর ছবি

চলুক

নজমুল আলবাব এর ছবি

ধন্যবাদ

মরুদ্যান এর ছবি

চলুক

নজমুল আলবাব এর ছবি

ধন্যবাদ

তাপস শর্মা এর ছবি

ডুপ্লি

তাপস শর্মা এর ছবি

নিত্যদিনের টানাপোড়েনের একঘেয়ে আখ্যান যেন... একঘেয়ে বললাম এই কারনেই যে, আমাদের মধ্যেকার এইসব ছোট্ট ছোট্ট জিনিষগুলি কেমন যেন অ্যাবস্ট্রাক্ট হয়ে যায়, কিছু ভিন্ন মাত্রায় কিংবা অমোঘ উদাসীনতায়।

সিমপ্লি অসাধারণ একটা লেখা!! চলুক

নজমুল আলবাব এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ

নিটোল এর ছবি

অনেক ভাল্লাগলো। হাসি

_________________
[খোমাখাতা]

নজমুল আলবাব এর ছবি

ধন্যবাদ

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

চমৎকার লেখা

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

নজমুল আলবাব এর ছবি

ধন্যবাদ

তারেক অণু এর ছবি

চলুক কিতা মাতো! অ্যাঁ

নজমুল আলবাব এর ছবি
এবিএম এর ছবি

এতো খুনী টাইপ লেখক আগে দেখি নি। দেঁতো হাসি
সামান্য কলমের খোঁচায় এতগুলো মানুষকে মেরে ফেললেন ? দেঁতো হাসি
পানি তিতা লাগার ব্যাপারটা পরিষ্কার না। চিন্তিত
লেখা ভালো লাগছে আলবাব ভাই। চলুক

নজমুল আলবাব এর ছবি

হু, সিনেম্যাটিক। লেখক একটা ডিপজল টাইপ ভিলেন। চোখ টিপি

আমার পরিবারে হার্ট এ্যাটাকে মারা যাবার একটা প্রবণতা আছে। পরিচিত আরেকটা পরিবার আছে ক্যানসার হয় ওদের। পানি তিতা লাগার বিষয়টাও সেরকম কিছু একটা। ব্যাখ্যা করার মতো না। কিন্তু ঘটনাটা সত্য। আশেপাশে খুঁজলে আরো পাওয়া যাবে।

সাবেকা  এর ছবি

আপনার ছোট ছোট, কয়েকটি লাইনের আছড়ে অদ্ভুত বিষণ্ণ সব লেখা বের হয় । পড়ে সব সময় কেমন যেন একটা জিম ধরানো অনুভূতি হয় । তবে এই লেখাটা যেন শুধুই গল্প হয় । ভালো থাকুন আপনি এবং আপনার প্রিয়জনেরা ।

নজমুল আলবাব এর ছবি

গল্পইতো।
আমার লেখা নিয়মিত পড়েন জেনে ভালো লাগলো। অনেক ধন্যবাদ।

মুস্তাফিজ এর ছবি

গল্প ভালো লেগেছে। কিন্তু সমস্যা কী যানো? তোমার গল্প পড়ে মন্তব্য লেখার আগে তিতা লাগে কীনা দেখার জন্য উঠে যেয়ে এক গ্লাস পানি খেয়ে এসেছি!

...........................
Every Picture Tells a Story

নজমুল আলবাব এর ছবি

হা... হা... হা...
আপনারতো তিতা লাগবে না। আপনার কেমন লাগতে পারে সেটা জানার জন্য খালাম্মারে ফোন দিতে পারেন। এমনও হতে পারে যে, আপনাদের হয়তো মিঠা বেড়ে যাবার প্রবণতা থাকতে পারে।

বন্দনা এর ছবি

এই বংশরীতিগুলা কেমন ভয়ানক। আমার নানা পানিতে মারা গেছেন, মায়ের তাই পানিতে বেশ ভয় যদি ও শহরে পানি নেই। কিন্তু গ্রামে গেলে পুকুরে গোসলে ও মায়ের ভীতি আছে সেটা টের পাই। প্রাণপণে চাই আপনার মুখে পানি সবসময় মিঠা লাগুক।

নজমুল আলবাব এর ছবি

আমার পানি তিতা-মিঠার সাথে এই গল্পের কোন মিল নাইতো।

কিছু বিষয় আছে আসলেই অবাক করে। আমার চেনা একটা পরিবার আছে যেখানে সবসময় একজন না একজন পাগল থাকে!

Guest_Writer নীলকমলিনী এর ছবি

কি ভাল আমার লাগলো গল্পটা পড়ে, কেমন করে বলি। তোমার লেখা পড়েছি অনেক, যদিও বেশ কম লেখ, প্রতিটি লেখাই মনে হয় তুমি বলছ, আর পাশে বসে আমরা শুনছি।
সব লেখাই বিষণ্ণতায় ভরা, পড়ে মন খারাপ লাগে। এরপর তোমার ছেলেকে নিয়ে একটি মন ভাল করা লেখা লেখ।

নজমুল আলবাব এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। দেখি একটা মন ভালো করা গল্প লিখতে পারি কিনা

নিলয় নন্দী এর ছবি

আপনার গল্পের ভাষা সব সময়েই খুব মায়াময়।
পারিবারিক সম্পর্কগুলো আপনার গল্পে চমৎকারভাবে উঠে আসে।
আরো চাই। চলুক

নজমুল আলবাব এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ আপনাকে

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

ভাল লাগলো। এক ধরনের বিষণ্ণতায় মনটা ছেয়ে গেল।
ভাল থাকুন।

নজমুল আলবাব এর ছবি

ধন্যবাদ

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

গল্পের কাহিনীর সাথে ব্যক্তি গল্পকারকে বেশির ভাগ পাঠক যদি মিলিয়ে ফেলেন তাহলে সেটিকে কী বলবো? এটা যদি লেখকের স্বেচ্ছাকৃত হয় তাহলে লেখক সফল হয়েছেন। আর স্বেচ্ছাকৃত না হলে কাহিনী নির্মাণের সময় পাঠক যেন বিভ্রান্ত না হন সেটা খেয়াল রাখা দরকার।

কাব্যিক গদ্য আর বিশুদ্ধ কাব্য - দুটোই আমার পছন্দ। আরো আসুক।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

নজমুল আলবাব এর ছবি

সচতেনভাবে কোন কিছু করা বেশ কষ্টকর। আমি অন্তত পারি না বা করি না। তাই পাঠক মিলিয়ে ফেল্লে সেটা লেখকের ব্যর্থতাই ধরতে হবে। নিজের চেনা গল্পের বাইরে কিছু লিখার চেষ্টা করি না কখনো। গল্পগুলোকে পরিচিত একটা আবহে নিয়ে আসার চেষ্টা করি এজন্য, কিন্তু সাথে সাথে এও চাই যে পাঠক গল্পটাই পড়ুক। বিষয়টা আসলে নিজের ভেতরেই গুলিয়ে যাচ্ছে।

আমার হাতেগোনা যে দুয়েকটা গদ্য বা পদ্য আছে তার সবটাই এক বসাতে লেখা। কয়েকবার বসে, অনেক চিন্তা করে শব্দের পর শব্দ সাজানোর ক্ষমতা অথবা ধৈর্য্য আমার একেবারেই নেই। সরলভাবে যা নেমে আসে সেটাই লিখি, এবং পাঠকের পাতে দিয়ে দিই। এসব কারণে কোনফাকে নিজেই এই গল্পের ভেতর ঢুকে পড়ি তা টেরও পাই না। তাই বলে সবটা বয়ানতো আর আমার নিজের না, কিন্তু সেইযে ছিটে ফুটো আমি ঢুকে পড়ি, সেটা আবার পাঠক ধরে ফেলে! এই ধরে ফেলাটা কখনো কখনো বিব্রতকর বটে, আবার যখন কেউ কেউ এর ভেতর থেকে আমারে টেনে বের করতে পারে না, তখন অভিমানও হয়, মনে হয়, এই যে এই গল্পের ছলে আমি আমার নিজেরে এখানে লিখলাম এটা কেউ বুঝলো না কেনো...!

মানুষ বিচিত্র একটা এলিমেন্ট, সেই বিচিত্রতা বয়ে বেড়াই আমি বোকালবাব। তাই চালাকি করে নিজেরে গোপন করে গল্প বলাটা রপ্ত করা এ জীবনে বুঝি আর হবে না। নিজের খামতি তাই পাঠকের উপর কেমন করে চাপাই? নাহ, সেই ভণ্ডামিটা করা যাবে না, কখনই না।

ধাম করে যদি আবার নেমে আসে এরকম কিছু, সেটা দেবো এখানে। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে পাণ্ডবদা

অতিথি লেখক এর ছবি

খুব ভালো লাগলো ।

মেহবুবা জুবায়ের এর ছবি

আমার মারা যাওয়া টা খুব দরকার, প্রতিদিন সকালে মনে হয় আজকে মরে যাবো কিন্তু সবসময়ই তো পানি ভালো লাগে। তিতা তো লাগেনা। হায় হায় অপু আমার কী হবে? কী করলে পানি তিতা লাগবে তার রেসিপিটা তাড়াতাড়ি দাও দেখি! মন খারাপ

--------------------------------------------------------------------------------

মরুদ্যান এর ছবি

আপা কি রসিকতা করলেন?? আপনার মারা যাওয়া জরুরী কেন হতে যাবে? মন খারাপ

সাবেকা  এর ছবি

মন খারাপ এমন করে বলছেন কেন, আপনি ভালো থাকুন ।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

কোন পানির কথা কন?
দিনের পানি না রাইতের পানি? চোখ টিপি

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।