কারবালা ইসলামের ইতিহাসের এক রক্তক্ষয়ী অধ্যায়। নিষ্ঠুরতা, শঠতা, প্রবঞ্চনার ইতিহাস এই কারবালা। তো কারবালার কথা যখন এভাবে বলা হয়, তখন আম মুসলমানের মনে এটাই খেলা করে যে, ইসলামের বিরুদ্ধে তাদের ভাষায় বিধর্মীদের আরেকটা মহা ষড়যন্ত্র এই কারবালা। কিন্তু আদতেতো তা নয়। কারবালা মুসলমানের বিরুদ্ধে মুসলমানদেরই যুদ্ধ। এবং এটা প্রথম যুদ্ধ নয়। এর আগে ইসলামের তৃতীয় খলিফা উসমান (রা.) নিহত হয়েছেন স্বজাতির হাতে। চতুর্থ খলিফা আলী (রা.) যুদ্ধ করেছেন স্বয়ং নবী (স.) এর প্রিয়তম পত্নী আয়শার (রা.) বিরুদ্ধে। এই দুটি বড় ঘটনার বাইরেও যুদ্ধ অথবা সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি আরও তৈরি হয়েছে কারবালা পুর্ববর্তী নাতিদীর্ঘ সময়ে। কিন্তু সেসবকে ছাপিয়ে কারবালা অন্য মহিমায় স্থান করে নেয় ইতিহাসে। এর পেছনে সম্ভবত মুসলিম নৃশংসতার একটা বড় অবদান আছে। মুসলমানদের উপর মুসলমানদের সবচেয়ে নৃশংস কর্মকান্ড এই যুদ্ধের মাধ্যমেই প্রকাশিত হয়েছে।
কারবালার ঘটনার পর ইসলামের সবচেয়ে সমৃদ্ধ সময় শুরু হয়। উমাইয়া এবং আব্বাসীয় খেলাফত এর পরের প্রায় ৬ শ বছর টিকে ছিলো। অন্যান্য সকল রাজবংশের মতো এই দুই বংশেও খুনাখুনি, হানাহানি, কামড়াকামড়ি সবই ছিলো। তারপরও এই সময়টাকে সুসময় হিসাবেই চিহ্নিত করা হয়ে থাকে। সম্ভবত এই কারনেই ইসলাম প্রতিটি কারবালার পর পূনর্জীবন লাভ করে এই রকম কথার প্রচলন হয়েছে।
তো ঘটনা হলো মুসলমানরা মুসলমানরে মারে। এটা নতুন কোন ঘটনা নয়। ইসলামের শুরু থেকেই এটা হয়ে আসছে। মারামারি, কাটাকাটির লম্বা ইতিহাস বয়ান করে লাভ নাই। গত কয়েক দশকের ঘটনাগুলো ঘাটলেই এর সত্যতা মিলবে। আর গত দশ বছরের বিষয়গুলোতো আর ইতিহাস খুঁজে দেখতে হবে না। ঘটনা হিসাবে নিজের মনেই সব স্মৃতি হয়ে আছে। পাকিস্তান, আফগানিস্তান হয়ে আরবের মরুভূমি পর্যন্ত যেতে যেতে রক্তের সমুদ্রে ডুবে মরতে হবে।
ধরে ধরে বর্ণনা করলে মাথা গুলিয়ে যাবে। আফগানিস্থানে একবার স্কুল ভর্তি শিশুদের উড়িয়ে দেয়া হলো বোমা মেরে, কারণ এরা কম্পিউটারের তালিম নিচ্ছিলো। কম্পিউটার নাসারাদের বস্তু। এর চর্চ্চা যারা করবে তাদেরকে মেরে ফেলতে হবে। সিরিয়ায় প্রতিদিন গণ্ডায় গণ্ডায় মুসলমানদের মারছে তাদেরই ভাই-বেরাদরে। পাকিস্তানের কথা আলাদা করে আর কি বলার আছে। প্রতিষ্ঠার মাত্র ২৪ বছরের মাথায় এই বর্বর রাষ্ট্র আমাদের উপর যে হত্যাকাণ্ড চালিয়েছিলো তাওতো এক অর্থে মুসলমানের উপর মুসলমানেরই হত্যাযজ্ঞ। যদিও এর আগে আমাদেরকে তারা হিন্দু-মালাউন-ভারতের দালাল উপাধি দিয়ে গুলির গায়ে হালাল শব্দটা সেটে দিয়েছিলো। আর এটাকে তারা জিহাদ হিসাবেই প্রচার করেছিলো পুরো মুসলিম বিশ্বে। সেই অর্থে এইটারে কারবালার সাথে তুলনা করা যাবে না। অন্তত আমাদের দেশের পাকিপ্রেমি হুজুরদের হিসাবে সেটা হবার নয়। বরং অধিকতর সাচ্চা মুসলমানদের হাতে দুর্বল ইমানের মুসলমানের মৃত্যুর সাল হিসাবে ১৯৭১ কে চিহ্নিত করলে তারা খুশি হবেন। উনারা সেটা করেও থাকেন। আর এইসব ঘটনাপ্রবাহকে ইহুদী নাসারাদের ষড়যন্ত্র হিসাবে উপস্থাপনেরও একটা জনপ্রিয় ধারণা বিদ্যমান। সেটা শুধু আমাদের বাঙ্গাল মুসলমানদের মধ্যেই বিরাজিত ধারণা নয়।
পৃথিবীর নানা প্রান্তের মুসলমানের সাথে কথা বলার সুযোগ হয়েছে আমার। এদের মাঝে যাদের যাদের সাথে এসব বিষয়ে আলাপ হয়েছে তারা এটাই বিশ্বাস করেন! তাদের কথার ভাবটা এমন, মুসলমানরা সবাই দুধের শিশু, ইহুদি নাসারারা এদেরকে কু পথে টেনে নিয়ে নানা অপকর্ম করিয়ে নেয়!
ইন্টারনেটের কল্যানে নৃশংসতার চিত্র এখন সহজেই পাওয়া যায়। ইউটিউবে একবার একটা ভিডিও কয়েক সেকেন্ড মাত্র দেখতে পেরেছিলাম। এর পর সহ্য হয়নি। পাকিস্তান অথবা আফগানিস্তানের তালেবানরা কাটা মাথা নিয়ে ফুটবল খেলছে! এখন যদি কোন মুসলিম বলেন, এই নিষ্ঠুরতাটা ইহুদিরা শিখিয়েছে, নয়তো কোন মুসলমান এটা করতে পারে না। এভাবে কাটা মুন্ডু নিয়ে খেলা করার মতো বর্বরতা মুসলমানদের কাজ না। তাদেরকে আবার কারবালায় ফিরিয়ে নিতে চাই। নবীদৌহীত্র হোসেন (রা.) এর কাটা মাথার কথা স্মরণ করুন। সেই কাটা মাথা নিয়ে মুয়াবিয়াপুত্র ইয়াজিদের উল্লাসের কথা মনে করুন। আল্লায় বাচাইছে তখন ভিডিও করার জামানা ছিলো না, থাকলে হয়তো হোসেনের মাথা নিয়ে ঠিক কি করা হয়েছিলো তা ইউটিউবে তুলে দিতো কেউ। আর সেটাতে হাজারে হাজারে লাইক পড়তো, যেমন এখন সিরিয়ার জিহাদীদের গলা কাটার ভিডিওতে পড়ে। এই লাইকগুলো ইহুদি খ্রিস্টানরা দেয় না, মুসলমানরাই দেয়। জিহাদ জিন্দাবাদ বলে।
পকিস্তানের তালেবানরা স্কুলে ঢুকে নির্বিচারে বাচ্চাদের খুন করেছে। এরকম খুনের ঘটনা পশ্চিমা দুনিয়ায়ও ঘটেছে। আমার পরিচিত কয়েকজন ঘটনাটা ঘটার ঠিক পরপরই এটাকে ইসলামের বিরুদ্ধে বিরাট ষড়যন্ত্র বলে ঘোষনা দেবার পাশাপাশি সেসব ঘটনাও মনে করিয়ে দেবার চেস্টা করেছেন। এরকম যারা করেন, তাদের সাথে কথা বলে সময় নস্ট করিনা কখনো। এক দুইটা কথা বলি খুব বেশি হলে। কিন্তু কখনই তর্ক করি না। ছাগলদের সাথে তর্ক করার অভ্যাস নাই আমার। তাই তাদেরকে শুধু মনে করিয়ে দিয়েছি, যুক্তরাস্ট্র বা ইংল্যান্ডে স্কুলে হামলার যেসব ঘটনা ঘটেছে তার সবগুলোই প্রায় সামাজিক সমস্যা, মানসিক সমস্যা। ধর্মের কারণে এমনটা ঘটেনাই। হয় কোন অসুস্থ মানুষ গুলি চালিয়েছে, নয়তো সামাজিক দুরাচারের কারণে অস্বাভাবিক (সেও অসুস্থই) মনের কেউ এটা করেছে। তাদের কেউ মহান যিশু, কিংবা মুসা নবী জিন্দাবাদ বলে শিশুদের মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে গুলি ছুড়েনি।
প্রতিটা কারবালার পর ইসলাম পূনর্জীবন লাভ করে বলার মাধ্যমে স্বীকার করে নেওয়া হয়, ইসলামে বারবার কারবালার মতো ঘটনা ঘটবে। সেই কারবালা কোনটা? সিরিয়াকে ধরবো? আফগানিস্তান নাকি পাকিস্তানকে ধরবো? ধরে নিলাম সবকটাই। যেহেতু কারবালার পুনরাবৃত্তি হতেই পারে। তো এতসব কারবালার পর ইসলাম কোথায় জিন্দা হচ্ছে? সেই পূনর্জীবন লাভকারী ইসলামরে কোথায় গেলে পাওয়া যাবে? বি গ্রেডের কারবালা বাংলাদেশ ছাড়াতো (এইখানে উচা জাতের মুসলমানরা নিচা জাতের মুসলমানরে প্যাদাইছে আর লগে প্রচুর মালাউন ছিলো হিসাবে এটারে বি গ্রেডে ধরে নিলাম) আর কোনখানে ইসলাম জাগ্রত হইলো না। তাওতো ইসলামী বিশ্বের মতে, এই দেশ সেই হিসাবে পড়বে না। (সামজিক উন্নয়নের সূচক আর কিছুমিছু টেকাটুকার হিসাবে দেশটা এগিয়ে যাচ্ছে, সেটা বুঝাচ্ছি।) আমি ফেলতেও চাই না। তবু মুসলমানিত্বের শান্তনা হিসাবে এই একটা দেশ ছাড়া আর কোন পূনর্জীবন লাভকারী দেশ খুঁজে পাই না। অবশ্য জিহাদিরা সিরিয়া পাকিস্তানরেই হয়তো জাগ্রত ইসলামের দেশ বলে বিশ্বাস করে।
কিন্তু এইসব জিহাদীর বাইরে যাদের অবস্থান। যারা ইসলামরে শান্তির ধর্ম বলে প্রচার করেন। যারা বলেন নাইজেরিয়ার বোকো হারেম যা করছে তা প্রকৃত ইসলাম না, তারা তাদের প্রকৃত ইসলাম বগলে নিয়ে বসে থাকেন কেনো? জাগ্রত ইসলামের ননী খাইবার আগ্রহ আছে সবার, কিন্তু রক্তারক্তি হইলে চোখে পট্টি বাঁধেন আবার সারা দুনিয়ায় ইহুদি নাসারারা মুসলমানদের শেষ করে দিচ্ছে বলে হা হুতাস করেন। তারা কেনো মুসলমানরা মুসলমানদের কাচা কাচা চাবায়া খেয়ে ফেল্লেও কথা বলেন না, সেটা বড় আজব বিষয়। যেই পাকিস্তানের এতগুলো শিশু নৃশংসভাবে খুন হলো, সেখানকারই এক বড় মোল্লা, তালেবানদের পক্ষে বক্তব্য দিয়েছে। লাল মসজিদের সেই লাল ইমামের লাল রক্তের প্রতি আগ্রহ থাকতেই পারে। পাকিস্তানি বলে কথা। কিন্তু এর বাইরে যত মুসলমান আছে, তারা কি করছে? কতিথ হালাল যৌনতায় রাজি না হওয়ায় ইসলামিক স্টেট এর মহান জিহাদিরা যখন দেড়’শ নারীকে হত্যা করে তখন যেমন এরা চুপ থাকে। নিরপরাধ শিশুদের বেলাতেও তাদের সেই একই ভূমিকা। এরা শুক্রবারের বিশেষ দোয়ায় আল্লার দরবারে ফরিয়াদ জানায়, বাচ্চাগুলোর পরলৌকিক মুক্তির দোয়া করে, তাদের বেহেস্ত প্রার্থনা করে। শোকাহত পরিবারের জন্য প্রশান্তি কামনা করে। কিন্তু যারা এই ঘটনা ঘটালো তাদের শাস্তি দাবী করে না! একটাবারও বলে না, হে মহান পাক পরওয়ার দেগার, তুমি এদের উপর গজব নাজিল করো। বরং বলে, হে আল্লাহ, যাদের মনে শয়তান বাসা বানাইছে, তুমি তাদেরকে দ্বীনের পথে ফিরাইয়া দেও!!! আবারও ইহুদী-নাসারাদের গাইল দেয়, বলে মুসলমানের ভেতর ঢুকে গেছে ইহুদী নাসারা, এদেরকে ধ্বংশ করে দাও...
প্রতি রোজায় ইসরাইলের নিষ্ঠুরতা যখন নিয়ম মেনে নতুন করে শুরু হয়, তখন যতো মুসলমান মিলে পথে ও প্রান্তরে, তারা কারবালা এলেই কেনো যে মুখে তালা মারে বুঝি না। রক্ত, রক্ত আর রক্ত। ধর্ম লাল হয়ে গেছে। তবু ইসলাম পূনর্জীবন লাভ করবে এই আশায় হয়তো এরা চোখে ঠুলি পরে আছে। কত কারবালা হলে এর শেষ হবে আল্লায় জানে।
মন্তব্য
এই কিছুদিনের মাঝে চলতে ফিরতে কিছু নতুন মানুষের সাথে পরিচয়। পাকিস্তানের-অস্ট্রেলিয়ার ঘটনার পর, জার্মানির রাস্তায় পরিচিত এ পর্যন্ত পাঁচ জন অতি সাধারণ ইউরোপিয়ান প্রথম পরিচয়েই মুসলিম অধ্যুষিত বাংলাদেশে আমি মুসলিম না হওয়াতে আমার পিঠে চাপড় দিয়ে হেসে কথা বলেছে। আর মাথা'দেখিয়ে বলেছে, মুসলমানদের 'কপফে' সমস্যা আছে। জার্মানিতে 'কপফ' শব্দটির মানে হল 'মাথা'।এই ব্যাপারটা খুবই খারাপ লেগেছে।
আপনার লেখা পড়ে ভাবছি, 'ভোর হবে কবে?'
রাজর্ষি
দুর্দান্ত, এবং খুবই গুরুত্বপূর্ণ লেখা।
আমারও এইটা মনে হয়। এদেরকে আমার মনে হয় তাদের মতো যারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় কিছুই করে নাই (বা হয়তো রাজাকারদের সহযোগিতা করসে, বা অন্তত, রাজাকারদের বিরোধিতা করে নাই), কিন্তু স্বাধীন হবার পরই জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে স্বাধীনতার ‘ননী’ ঠিকই খাইসে। যারা মডারেট, তাদের একটা বিশাল অংশ তলেতলে চায় যে সারা দুনিয়া ইসলামিক/শারিয়া আইনে চলুক, কিন্তু মুখ ফুটে তো আর সেইটা বলতে পারে না (যদি আবার লুকে বেকডেটেড বলে!)! এরা তাই মুস্লিম জঙ্গীদের হত্যার বিরুদ্ধে কিছু বলবে না। বা হয়তো বড়জোর ‘মৃদু ভর্ৎসনা’ করবেন। অনেকটা, বাংলা ভাই আর বিম্পির সম্পর্কের মতো।বাংলা ভাই থাকলে তো আর খালেদা জিয়া বা তারেক্জিয়ার নিজ হাতে খুন করার দরকার নাই। তাদের উদ্দেশ্য সফল নিয়ে কথা।
----------------------------
নয় মাসে হলো তিরিশ লক্ষ খুন
এরপরও তুমি বোঝাও কি ধুন-ফুন
তোমারেতো অখন লাদেনে তুকানি শুরু করবো। ইসলাম লইয়া অত বড় কথা!!!!!
__________
সুপ্রিয় দেব শান্ত
ব্লগবাড়ি । ফেসবুক
১। ইকবালের কবিতার লাইন "ইসলাম জিন্দা হোতা হ্যায় হর কারবালা কি বাদ" কে যদি সত্য বলে ধরে নেই তাহলে এটা মানতে হবে যে, ইসলাম প্রায়ই মারা যায় এবং একটা রক্তক্ষয়ী (ভাতৃঘাতী অথবা অমুসলিমদের সাথে) যুদ্ধের পর ইসলাম পুনরুজ্জীবিত হয়। ক্বুরআন পড়েছেন এবং ইসলামের মৌলিক শিক্ষা সম্পর্কে নূন্যতম জানেন এমন কেউই এ'কথা মানবেন না যে, ইসলাম প্রায়ই মারা যায়। এই কথাটা ইসলামবিরোধী এবং খাতামুন্নাব্যিয়ীন-এর যে কনসেপ্ট ইসলামের বিদ্যমান তার বিরোধী।
তাছাড়া, কারবালার ভাতৃঘাতী যুদ্ধের পর শাসনক্ষমতা ইমাম হুসাইন ইবনে আলী'র কাছ থেকে ইয়াযিদ ইবনে মু'আবিয়া'র কাছে চলে যাওয়া এবং খিলাফাতের নামে উমাইয়া রাজবংশ প্রতিষ্ঠিত হওয়াটাকে ইসলামের পুনরুজ্জীবন ভাবার পেছনে কারণগুলি কী কী?
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আচ্ছা, এটা তাহলে ইকবাল এর কাব্য। এর মুসলিমপ্রিয়তারতো শেষ নাই।
সম্ভবত, আবার বেঁচে উঠে টাইপ প্রবল আশাবাদ বা নিশ্চয়তা প্রদান করে বলে এই লাইন এতো পছন্দ করেন মুসলিমরা। এজন্য ইসলামের প্রকৃত ভাবনার সাথে এটি গেলো কীনা তার খবর নেওয়া হয় না।
রাজবংশের কাছে রাজত্ব চলে যাওয়া নিয়েতো মনে হয়না কোন ভাবনা কারো আছে। থাকলেতো এরকম কাব্য রচনা হতো না। যদিও পুরো সময় এতো জটিল রাজনৈতিক সমিকরণে টইটম্বুর যে আলোচনাটা একাডেমিক না হলে উত্তর পাওয়া যাবে না। যার জন্য এই মুহুর্তে আমি প্রস্তুত না। রেফারেন্স বলতে কোন বস্তুই হাতের কাছে নাই। তাৎক্ষণিক রাগ থেকে লেখা আর সূত্র ধরে আলোচনাতো ভিন্ন বিষয়।
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
অ্যাকাডেমিক আলোচনার আশায়ই এখানে কথা বলা শুরু করেছিলাম। আপনি সাদা পতাকা দেখালে আলোচনা আগাবে কী করে?
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
কবিতা টার রচয়িতা বোধ হয় হয় ইকবাল নন, মৌলানা মোহাম্মদ আলি জওহর(আলি ভাইদের এক ভাই)।
কবিতাটির দুটো ভার্সান আছে।
মুহম্মদ ইকবাল (১৮৭৭-১৯৩৮)-এর ভার্সানঃ
হর্ ইবতিদা সে পেহেলি, হর্ ইনতিহা কে বাদ
‘জা’ত-ই-নাবী’ বুলন্দ হ্যায় ‘জা’ত-ই-খুদা’ কে বাদ
দুনিয়ামে ইহতারাম কি ক্বাবিল হ্যায় যিতনি লো’গ
ম্যায় সব্কো মান্তা হুঁ, মাগার ‘মুস্তাফা’ কে বাদ
‘ক্বতল-ই-হুসাইন’ আস্ল ম্যায় মুর্গ-ই’ ইয়াযিদ’ হ্যায়
ইসলাম জিন্দা হোতা হ্যায় হর্ ক্বারবালা কে বাদ
মোহাম্মদ আলী জাউহার (১৮৭৮-১৯৩১)-এর ভার্সানঃ
ইয়ে তো ইসলাম সুরখুরু হুয়া হর্ বালা কে বাদ
লেকিন ওহ্ বাত না হুয়ি ক্বারবালা কে বাদ
‘ক্বতল-ই-হুসাইন’ আস্ল ম্যায় মুর্গ-ই’ ইয়াযিদ’ হ্যায়
ইসলাম জিন্দা হোতা হ্যায় হর্ ক্বারবালা কে বাদ
শেষের লাইন দুটো আসলে কার আমি নিশ্চিত না। দুইজন কবিই প্রায় এক বয়সী, সমসাময়িক। অ্যাকটিভও ছিলেন একই সময়ে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
উমাইয়া রাজবংশের শাসনকালে আরবরা পূর্বে কাশগড় থেকে পশ্চিমে আন্দালুসিয়া পর্যন্ত দখল করে নেয়। আবার উমাইয়াদেরকে জবাই করে যে আব্বাসিয়া খেলাফত প্রতিষ্ঠিত হয়, সেটাকে অনেকেই মনে করেন আরব সভ্যতার স্বর্ণযুগ। হয়ত এসব কারণেই "কারবালার পরে ইসলামের পুনর্জন্ম হয়" কথাটা চালু হয়েছে।
Emran
ধর্ম মাত্রই বিশ্বাস। বিশ্বাসের সঙ্গে যুক্তির সরাসরি বিরোধ আছে। সেইজন্য ধর্মের যুক্তি নিয়ে বলা কথাগুলোকে এড়িয়ে যেতে চাই প্রায়শই।
যিনি ধর্ম নিয়ে কথা বলেন, অথবা আলোচনা করতে চান তার অবস্থানটি আগে পরিষ্কার হওয়া দরকার। যেমন, যুক্তির সামনে যদি ধর্ম টিকতে না পারে তাহলে তখন তার অবস্থান কী হবে! সমস্যা হচ্ছে, কোনো বিশ্বাসী মানুষই বিশ্বাস ছেড়ে যুক্তি মানার ঘোষণা দেবে না। কারণ বিশ্বাস সেই অনুমতি দেয় না। বিশ্বাসীরা কখনোই ধর্ম নিয়ে আলোচনা করেন না। তারা ধর্ম প্রচার করেন। খুব উদার বিশ্বাসীরা মানেন যে, বিশ্বাসের কোনো অসংগতির জবাব তিনি না জানলেও তার জবাব আছে। একসময় সেই জবাবটি পাওয়া যাবে!
ধার্মিকের কাছে মুক্তভাবে মানবিকতা আশা করাও ঠিক বলে মনে হয়না।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
একদম ঠিক। প্রায়শই এরকম দু’একজন তথাকথিত যুক্তিবাদী লোকজনের সাক্ষাত পাই, যে ধরেন খুব স্মার্ট পোশাক-আশাকে, এবং ধরেন হয়তো সবসময় ঠিক হালাল খান না, বা ধরেন মাঝেসাঝে হয়তো একটা অ্যাপল সাইডার (বা বিয়ার বা অন্য কোনো অ্যালকোহল) খান, বা নিয়ম করে হয়তো স্ট্রিপক্লাবে যান। এই লিস্টের কিছুকিছু আবার তিনি স্বেচ্ছায় প্রচার করেন যাতে বলতে সুবিধে হয় যে, মুসলিম হয়েও ’আধুনিক’ জীবনযাপনে কোনো অসুবিধে হয় না (যদিও লিস্টের এইসব মাত্রই ‘আধুনিকতা’র লক্ষণ বলে কখনোই মনে হয় না আমার)। তো, সামান্য যুক্তিতেই ইনারা কাইত হইয়া শেষে বলেন, “...তার জবাব আছে। একসময় সেই জবাবটি পাওয়া যাবে!” অথবা, আরবী ভাষার উপমা-বিভক্তি-প্রত্যয়-কারক-সমাস-ধাতু ইত্যাদি না-জানলে প্রকৃত ইসলাম (বা কোরান) বোঝা মুশকিল। মজার বিষয় হচ্ছে, কারক-সমাস-ধাতুর কথা তখনই আসে, যখন আপনি অসঙ্গতি বা ভুলগুলো ধরিয়ে দেন। আপনি কোরান থেকে একটা ভালো কথা বলে (কিছু কিছু ভালো কথা পাওয়া যাবেই) দেখেন, তখন কারক-সমাসের সমস্যা নাই। ভালো কথাটা বইলাই আবার বইলেন, ওয়েল, এইটা আপাতভাবে ভালো মনে হইতেসে, কিন্তু কারক-সমাস-ধাতুর বিষয়টা নিশ্চিত না জেনে বলা যাচ্ছে না এইটা ঠিক ভালো না খারাপ। তখন দেইখেন চেহারার কী হাল হয়
----------------------------
নয় মাসে হলো তিরিশ লক্ষ খুন
এরপরও তুমি বোঝাও কি ধুন-ফুন
সবকিছু মিলিয়ে আদতে রাজনীতিই। যুক্তি, বিশ্বাস, মানবতাসহ সকল ভাবনা রাজনীতির কাছেই হাটু গেড়ে বসে। ধর্মের আফিমটা এই রাজনীতিতে একটু বেশি কার্যকর, এই যা।
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
যারা তথাকথিত মডারেট মুসলিম মানে যারা কিছু বললেই ঘ্যাষঘ্যাষ করে বলে ইসলাম শান্তির ধর্ম, বা এইটা প্রকৃত ইসলাম না বা ইসলাম এইসব সমর্থন করে না তারা ইসলামের বাকি সব কিছু তো দূরে থাক, কোরানটাও ঠিকমতো পড়ে দেখে নাই। হাদীস তো পরের কথা, এঁদের কাছে ইসলাম হলো পরের মুখে ঝাল খাওয়ার মতো, ছোটো থেকে শুনে আসা কথা, ইসলামিয়াতে পড়ে আসা কথা আর ইসলাম শান্তির ধর্ম এতটুকুই হলো ইসলামের ব্যাপারে এঁদের ধারণা।
এরা মূলত ইসলাম মানে নিজেদের মতো করে। এটা একটা আশার কথা, কারণ এরা প্রকৃত ইসলাম মানে না, না জানার কারণে। কিন্তু সবাই প্রায় ভাবে ইসলামটা সে ভালোই জানে। এই কারণে সমাজের বিশাল একটা অংশ হিপোক্রেট রয়ে যায়। তারা জানেই না তারা কী বিশ্বাস করে, কিন্তু তারা যেটা বিশ্বাস করে সেটাই সর্বশ্রেষ্ঠ বিশ্বাস। এই জায়গাটাতেই সমস্যার শুরু।
না জানার কারণে, না পারে নিজের বিশ্বাসকে ডিফেন্ড করতে না পারে সেটাকে ছেড়ে দিতে বা সেটার সমালোচনা করতে। কারণে কিছু একটা ছাড়তে হলে সেটাকে আগে ধরতে হয়, কিছুর সমালোচনা করতে হলে সেটা নিয়ে জানতে হয়। এজন্য এরা দেখবেন মুসলমান কর্তৃক মুসলমান মারা হলে চুপ করে থাকে। এরা যে কিছুটা অস্বস্তিতে পড়ে না তা না, কিন্তু সেই অস্বস্তি নিয়ে ভাবার মতো সময় এরা দিতে চায় না, হিপোক্রেসি তাদের কাছে খুব বড় কোনো সমস্যা না। আবার যখন অন্য ধর্মের লোকেরা ধর্মের কারণেই হোক বা অন্য কারণে হোক, মুসলমানদের মারে তখন তাদের না জানা বিশ্বাসে কিছুটা সুড়সুড়ি লাগে, কারণ সেই বিশ্বাসের পালে হাওয়া লাগানোর জন্য এর চেয়ে ভালো উপলক্ষ আর তারা পায় না। তখন দেখবেন হেশটেগ বিপ্লব থেকে শুরু করে নানা রকম বিপ্লবে এরা মত্ত হয়ে যায়।
আমার পর্যবেক্ষণ হলো, যারা এই দল থেকে বেরিয়ে আসতে পারে তারা সমাজের ক্ষুদ্র অংশ। একদল নিজের হিপোক্রিসির সাথে তাল মেলাতে না পেরে একটু খুঁড়ে দেখার চেষ্টা করে তারা মূলত দুই ভাগ হয়ে পড়ে একদল বিশ্বাস হারায় (স্বাভাবিক কারণেই, অন্যান্য ধর্ম বা বা উচ্চমার্গীয় দার্শনিক আলাপে না গিয়েও শুধুমাত্র জিহাদ, বিবাহ, নারী সংক্রান্ত কিছু সূরা আর হাদীস পড়লে যে কোনো সুস্থ মানুষ নিজেকে সেটার অংশ ভাবতে রাজী হবে না), আরেকদল কোনোদিনও বিশ্বাস হারাবে না এই সিদ্ধান্তে অটল থাকায় ধীরে ধীরে কট্টর হতে থাকে।
এই ধরণের লোকগুলোই সবসময় কারবালা ঘটানোর জন্য প্রস্তুত হয়, তাদের কখনও ব্যাবহার করে কখনও স্থানীয় রাজনীতি, কখনও আন্তর্জাতিক রাজনীতি আর কখনও বা তারা নিজেরাই নিজেদের রাজনীতি তৈরি করে, খিলাফতের স্বপ্ন দেখে। এরা মূলত বেঁচে থাকে সমাজের এই অধিকাংশ হিপোক্রেট ধর্ম না জানা, কোরান না পড়া মুসলিমদের হিপোক্রেসি আর তরলতার সুযোগ নিয়ে। এই হিপোক্রেট অংশ নিজে না জানার কারণে না পারে ডিফেন্ড করতে না পারে সমালোচনা করতে। তাদের মুখে তখন এক বাণি, 'ইহা প্রকৃত ইসলাম নয়'।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
কপাল, আমার। অস্বস্থিতে পড়া লোকজন পাই না।
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
যারা বলেন, 'ইহা প্রকৃত ইসলাম নহে' তাদের উদ্দেশ্যে আমার প্রশ্ন, তাহলে প্রকৃত ইসলাম কোনটি? আমরা কেউ কি নিশ্চিতভাবে এটা বলতে বা প্রমাণ করতে পারবো কোন সেক্ট, কোন মাযহাব, কোন ইমামত প্রকৃত ইসলাম? বেশি দূর যেতে হবে না বা বেশি তত্ত্বীয় আলোচনায় না গিয়েও এই বাংলাদেশে আমরা দেখতে পাই পীরবাদে বিশ্বাসীরা তাবলীগদের নাকচ করে, তাবলীগরা পলিটিক্যাল ইসলামকে নাকচ করে, পলিটিক্যাল ইসলাম কখনো মিলিটেন্সিকে সমর্থন করে আবার কখনো করে না, এই সব দলের অনেক লোক আবার আগামী মাসে ইজতেমাতে যাবে। সুন্নীদেরকে শিয়াদের মসজিদে দেখা যায় না যেমন শিয়াদের সুন্নীদের জামায়াতে। আহমদীয়াদেরকে আহলে সুন্নাহ্ জামায়াত ক্বাফির মনে করে, আবার আহ্লে হাদীসরা বাকিদের ভ্রান্ত মনে করে - তাদের মসজিদও আলাদা। সুতরাং, প্রকৃত ইসলাম দাবি করার আগে এই ব্যাপারটার ফয়সালা হওয়া উচিত কোন স্কুলটিকে আমরা সহীহ্ ইসলাম বলবো।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
সামান্য জ্ঞান থেকে এতদিনে বুঝেছি, প্রকৃত ইসলাম বলে আসলে কোথাও নাই। কিংবা প্রতিটি মুসলমান নিজে যেটা জানে এবং বোঝে, সেটাই প্রকৃত ইসলাম, সুতরাং এই সারে জাহানে অগণিত সংখ্যক প্রকৃত ইসলামের অস্তিত্ব রয়েছে। বাংলাদেশে আমরা সবাই জানি নামাজ পড়ার সময় প্রতি রাকআতে প্রথমে সূরা ফাতিহা, তারপর অন্য একটি সূরা বা তার অংশবিশেষ পড়তে হবে। আবার বাংলাদেশের প্রায় সকল মানুষ হানাফি মাজহাব ভূক্ত সুন্নি মুসলমান। তো সেই মাজহাবের প্রতিষ্ঠাতা আবু হানিফা'র মত হল- নামাজ পড়ার জন্য সূরা ফাতিহা পড়ার আদৌ কোন প্রয়োজন নাই, কোরান শরীফ থেকে যে কোন কিছু পড়লেই হবে(সূত্র-সহি বোখারী শরিফ)। আমার এক নামাজী বন্ধুকে এই তথ্য জানানোর পর সে এ ধরনের বেহুদা কথা বলার জন্য আমার উপর যার পর নাই নাখোশ হয়ে উঠেছিলো। অগত্যা তাকে বোখারী শরিফ থেকে সংশ্লিষ্ট অংশটুকু দেখিয়ে দেয়ার পর সে আবু হানিফা'র উপরই যেন কিছুটা নাখোশ হয়ে পড়লো, বলল- এইটা একটা কথা হল? এইভাবে কি নামাজ হতে পারে? লে হালুয়া!
আমি তো কোনোটারেই সহী বলতে চাই না
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
নজমুল ভাইয়া, আপনি ঠিক বলেছেন, এ ইসলাম সে ইসলাম নয়!
_________________________
সর্বাঙ্গ কন্টকিত-বিধায় চলন বিচিত্র
ওরেব্বাবা! মন্তব্য করার জন্য প্রস্তরযুগ থেকে উঠে আসলেন একেবারে!!!
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
প্রস্তরযুগেও সজারু ছিল নাকি?!
_________________________
সর্বাঙ্গ কন্টকিত-বিধায় চলন বিচিত্র
ইসলামকে কবর দিচ্ছে মুসলমানেরাই, তাও আইএস, তালিবান কিংবা বোকো হারাম নয়, প্রতিদিন নিয়ম করে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা খাঁটি মুমিনেরা। দুনিয়া জ্বলে পুড়ে খাক হয়ে যায়, তারা আল্লাহর জিকির নিয়ে ব্যস্ত থাকেন।
প্রতিরোধ এখনও আলোকবর্ষ দূরে, প্রতিবাদ করবারই লোক পাওয়া যায় না। বরং কখনো সখনো সাচ্চা মুসলমানের উল্লাস বের হয়ে আসে, মালাউন-ইয়াহুদি-নাসারাদের কিছু ক্ষতি করা গেছে এই ভেবে। নিজের ঘরে কাটাকুটি হলে সেই কথা প্রচার করা ভদ্রলোকের কম্ম নয়, সেটা ভেবেই হয়তো ওনারা মৌনব্রত নেন।
শেষ কথা হইলো, লাভ নাই। মুমিনের ইমান দাঁড়ায় কেবল হিঁদুর ঘরে আগুন দেবার বেলায় নয়তো তাদের মেয়েলোক ধরে টানাটানি করবার বেলায়। বাকি সময় সেটি নেতিয়েই থাকে, বাকি জীবনও থাকবে।
যাহারা বলে এই ইসলাম সেই ইসলাম নয়, ইসলাম শান্তির ধর্ম তাদের আসলে ধর্ম জ্ঞান শূণ্য কিংবা অসমাপ্ত। এদের সংখ্যা বেশি বলেই পৃথিবীতে এখনো বেঁচে থাকা এতটা অনিরাপদ হয়ে ওঠেনি। এই সংখ্যাধিক্যের জন্যেই মুসলমান মাত্রই টেরোরিষ্ট বলার সময় এখনো আসেনি (যেভাবে মুসলমান ভাইয়েরা তাদের কর্ম সম্পাদন করছে তাতে অদূর ভবিষ্যতে হয়তো এমন কথা প্রতিষ্ঠিত হয়ে যেতে পারে)। অন্ধ ধার্মিকরা শুধু বংশানুক্রমে ধর্মকে পোষক জীবের মতো শরীরে/মনে বয়ে বেড়ায় তারপর পরবর্তী প্রজন্মে ছড়িয়ে দিয়ে যায়।
অন্য যে কোন ধর্মের চেয়ে মুসলমানদের ইতিহাস বেশি রক্তাত্ত। এবং হাস্যকর হলেও সত্য ইতিহাস অজ্ঞতা থেকে এই রক্তাত্ত হওয়ার জন্যে এরা দোষ চাপায় ইহুদি-নাসারদের উপর। বিশ্বের সব জায়গায় এখন যত জঙ্গি তৎপরতা-আত্নঘাতী বোমা হামলা-হত্যার ঘটনা এখন ঘটছে তার বেশি ভাগি মুসলমানদের কোন না কোন সংগঠনের দ্বারা। কিন্তু আধুনিক মড়ারেট মুসলমানরা শুধু একটা বাক্য (ইহারা সাচ্চা মুসলমান নয়, ইসলাম এমন বলে নাই) বলে নিজেদের ধর্মের অন্ধকারাচ্ছন্ন দিক থেকে দৃষ্টি ফিরিয়ে নেয়। ধর্মের অন্ধকার থেকে যতদিন মানুষের মুক্তি নেই ততদিন পৃথিবীরি সভ্যতাও হুমকির সম্মুখীন।
-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।
নতুন মন্তব্য করুন