সমস্যা শুরু হয়েছিল বিয়ের দিনেই। শ্বশুর বাড়ির লোকজন দাদাকে মাত্র এক হাজার টাকা নজরানা দিলো! খেপে গেলেন মা, বাবা, বড় চাচা...।
ভাবী যে শো-কেস এনেছে সেটার তাকগুলো কদম কাঠের। সোফার ফোম খুব বাজে, দুদিনেই বসে যাবে। ড্রেসিং টেবিলটার ডিজাইন সেই মান্ধাতা আমলের। আরো কতো ভেজাল যে আছে.....!
ভাবীর অনেক খুঁতও বেরুতে লাগলো। কথা বলে কেমন করে, তিন বাড়ির মানুষ শুনতে পায়!
ঠা ঠা করে হাসে। বাপের বাড়ির এতো অপরাধের ব্যাপারেও তার কোনো বিকার নেই। এমন ভাব দেখায়...! যেন কিছুই হয়নি...
এরকম হলে কার না খারাপ লাগে! শরীর জ্বলবে না কার?
আর দাদাও এমন ভেড়ুয়া! বউ এতো বেহায়ার মতো চলে তবু কিচ্ছু বলবে না। যেন কিছুই হয়নি। বিয়েতে এতো অপমান, আর সে মিন মিন করে বলবে, 'থাক এসব নিয়ে কথা বাড়িয়ে আর লাভ কী!' কোনো আত্মসম্মান নেই। দু'দিনেই বউয়ের আঁচলের তলে ঢুকছে!
আমরা কেউ ভাবীকে পছন্দ করি না। আচরণেও সেটা বুঝিয়ে দেই। কিন্তু ভাবী সেটা গায়েই মাখে না। আর নিজেকে জড়াবে সবকিছুতে। আমরা হয়তো বসে গল্প করছি বা খেলছি, এসে বলবে_ 'আমিও খেলবো তোমাদের সঙ্গে...।'
বাবা বাটার জুতা পরেন। প্রাচীন ডিজাইনের ভোম্বল সাইজ জুতা পরছেন তো পরছেনই। দাদা কতোবার অন্য কোম্পানির জুতা এনেছেন, বাবা পায়ে দিয়েও দেখেননি।
আর মা বল সাবান না হলে কাপড় ধোয়াই বন্ধ করে দেন। কতো কতো নতুন ডিটারজেন্ট বেরিয়েছে, তাদের কতো বাহারি বিজ্ঞাপন! কিন্তু মা তার বল সাবান বদলাবেন না।
বাবা, মা, বড়চাচা_ সবারই এমন অনেক কিছু আছে, যা কখনো বদলানো হবে না। তিনজনই বলেন_ 'এসব বদলানোর প্রশ্নই ওঠে না।'
বল সাবান কিংবা বাটার জুতা বদলানো অসম্ভব। কিন্তু বউ বদলানো কোনো ব্যাপারই না। এটা আমরা সবাই জানি। মা বলছেন, দাদার বউ বদলে ফেলবেন।
---------------------------------------
এই গল্পটা নিয়মিত ব্লগাররা হয়ত কিছুটা চিনতে পারেন! আমি ব্লগে আসার অনেক আগেই হাসান মোরশেদ এর মাধ্যমে গল্পের সাথে কারো কারো পরিচয় হয়েছে।
যারা প্রথম আলো'র প্রথম দিকের পাঠক তাদেরও হয়ত নজরে পড়তে পারে গল্পটি। কারন প্রথম প্রকাশটা হয়েছিল 'বন্ধুসভায়'।
মন্তব্য
আবার পড়লাম। বউ, বাটা , বল সাবান।
ধন্যবাদ। শেষ পর্যন্ত এই ব্লগে একজন পাঠক পেল বেচারা।
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
খুব ভালো গল্প। অল্প কথায় এতো কিছু কীভাবে লিখতে হয়, শিখতে পারলাম না।
লেখাটা আগে চোখে পড়েনি কেন কে জানে! আপনার দোষ না, দোষ আমার চোখের।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
ধন্যবাদ জুবায়ের ভাই। আপনার দোষ নাই। এই লেখাটা প্রথম পাতায় দেয়া হয়নি। অরূপের সৌজন্যে এখানে এনে সংগ্রহ করা হয়েছে, এই যা। আপনি পড়েছেন, আমার খুব ভাল লাগছে।
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
আমি এটাই প্রথমবার পড়লাম। আপনি যে ১০ বছর আগেই অনেক বড় মাপের লেখকে পরিণত হয়েছেন তার একটা জ্বলজ্বলে প্রমান।
আর কিছু বলছি না। আপাততঃ আবেগে রুদ্ধপ্রায় আবস্থার মধ্যে আছি!
___________________________
বুড়োরা সবাই সমস্বরে বললো, "নবজন্ম", আমি চাইলাম "একটা রিওয়াইন্ড বাটন"
এক রাশ মুগ্ধতা।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
অদ্ভুত সুন্দর!
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
খুব ভালো লাগল। অনেক আগে পড়া রবীন্দ্রনাথের হৈমন্তীর কথা মনে পড়ে গেল।
অসাধারণ!!
চমত্কার গল্প৷ ভাল লাগল৷
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'
অসাধারণ...আমরা সবাই হৈমন্তীর অপু
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।
ধন্যবাদ আরেফীন, সন্ন্যাসী, পরিবর্তনশীল, ইয়োকেল, দময়ন্তী এবং জি.এম.তানিম কে।
এই অতিপুরাতন লেখাটাযে আপনারা খুঁজে খুঁজে বের করলেন! পড়লেন!! শেষে আবার কমেন্টও করলেন!!!
আমি আপ্লুত আপনাদের ভালোবাসায়। সব্বাইকে ধন্যবাদ।
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
খুবই চমৎকার একটা গল্প! অনেকদিন পর পড়া হলেও, ভাগ্যিস হলো
ধন্যবাদ স্নিগ্ধা। আপনাদের জন্য আমিও পড়লাম অনেকদিন পরে নিজের লেখা।
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
এই লেখাটা মিস্করলাম কেম্নে
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
চমৎকার লেখা ।
অল্প কথায় বেশি বলা , আসল কথা বলা ।
বোহেমিয়ান
ছোট্ট পরিসরে সত্যের প্রাঞ্জল উপস্থাপন!
মুগ্ধতা...
শেখার আছে অনেক কিছু!
---- মনজুর এলাহী ----
খুব ভাল হয়েছে।
এই লেখাটির জন্য ল্যাব এইড-বন্ধুসভার পুরুস্কার পেয়েছিল।আমার সে অনুষ্ঠান এ থাকার সুযোগ হয়েছিল।সিরড্যাপ মিলনায়তন সেই সৃতি আজও মনে দোলা দেয়।আর যারা আমাদের প্রিয় বন্ধুসভাকে নষ্ট করেছে তাদের প্রতি আজীবন ঘৃণা।
যাক্, একটা প্রাগৈতিহাসিক লেখায় কমেন্ট করে আমিও ইতিহাসের অংশ হতে পারলাম, সে জন্যেই অপু ভাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
লেখার কথা আর না-ই বললাম।
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
নতুন মন্তব্য করুন