প্রথম গল্পগ্রন্থ "অন্ধ তীরন্দাজে" আমরা যে কায়েস আহমেদকে দেখতে পাই, তার সাথে গল্পগ্রন্থ -লাশকাটা ঘরের কায়েস আহমেদের মেলাতে গেলে আমূল চমকে যেতে হবে। আগের সেই অবিন্যস্ততা, খ্যাপাটেপনা ঝেড়ে ফেলে এখানে তিনি অনেকটাই থিতু, বিষয়প্রকরণেও সমান মনোযোগী। গল্প বলার সহজাত ঢংকে তিনি খাপছাড়া তলোয়ারের মত ঝলকে ঊঠতে দেননি, তাকে শাণিত করেছেন যতনভরে, দেখিয়েছেন অসামান্য পরিমিতিবোধ। ইলিয়াস তার এই দ্বিতীয় গল্পগ্রন্থ সম্পর্কে নিজের উচ্ছ্বাস চাপা দিতে পারেননি, প্রগলভ সুরেই বলেছেন-
মানুষের নানা রকম বেদনাকে তিনি দেখতে পান সামাজিক ও রাজনৈতিক সংকটের অজস্র বিস্ফোরণ বলে। এখানে মানুষের কেবলই মার খাওয়ার অসহায় বেদনাবোধ নেই, রোগের চিকিৎসা করতে সংকল্পবদ্ধ মানুষকেও এখানে পাওয়া যায়।"
কায়েস আহমেদের সততাকে ইলিয়াস মূল্যায়ন করেছেন বিরল হিসেবে। এখানে পাঠক সওয়াল পুছতে পারেন এই সততার সংজ্ঞা কী? সে উত্তরও ইলিয়াস বাতলে দিয়েছেন- কাহিনির নামে কেচ্ছা ফাঁদার লোভকে বিসর্জন দিতে পারাটাই কায়েস আহমেদের সততা। বারোয়ারি প্লটের ক্লিশে বয়ানের প্রতি লেখকের যে গাত্রদাহ, গড্ডলিকা প্রবাহের স্রোতে গা ভাসিয়ে দেওয়ার বিমুখীতা, সেটাও কিন্তু ঝলক দিয়ে উঠেছে তার এই গল্পগ্রন্থটিতেই।
"লাশকাটা ঘর"-বেশ কিছু কারণেই একটি স্বতন্ত্র আলোচনার দাবি রাখে। নকশালবাড়ি আন্দোলনের এমন জাজ্বল্যমান চিত্র আমার স্বল্প এলেমে সমসাময়িক অন্য কোন বাংলাদেশি লেখকের এলাকায় এমনভাবে উঠে এসেছে কিনা জানা নেই। এই ব্যাপারে কায়েস আহমেদ রীতিমত বিশিষ্টতার স্বাক্ষর রাখেন । বিশেষ করে মহাকালের খাঁড়া, নিয়ামত আলীর জাগরণ, দুই গায়কের গল্প আর লাশকাটা ঘর গল্পগুলো ক্ষয়িষ্ণু নকশাল আন্দোলনের অসঙ্গতিকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়। শ্রেণিশত্রু কতলের নামের মারণঘাতী হুজুগ আখেরে তাই একটি আদর্শের অন্তসারশুন্যতাকেই ফুটিয়ে তোলে।
"মহাকালের খাঁড়া" গল্পে ভরত তার বৈধ ব্যবসার তলে কালোবাজারি করে বেশ দুপয়সা কামিয়ে নিয়েছে। কিন্তু তার মনে জুজু বাসা বেঁধেছে, চরমপন্থীরা তার মত মালদারদের আকছার মৃত্যুর সবক পাঠাচ্ছে। এসব নিয়ে সে ভয়ানক উদ্বিগ্ন, ছেলে সুরেনকেও আজকাল ভরত পারলে অহর্নিশ চোখে রাখে। সুরেন সেদিনের মরদ, সে যখন বলে এসব ফরমান তো কেবল পার্টির সাথে জড়িতদেরই পাঠাচ্ছে, তখন পোড় খাওয়া ভরত খেঁকিয়ে ওঠে-
এই তোর বুদ্ধি। পার্টি করিস আর না করিস, তুই ভরত কোলের ছেলে, ভরত কোলে ওদের চোখে শ্রেণী শত্রু, এখন বুঝলি রে গাড়োল। রাস্তায় চলিস কি চোখ বন্ধ করে?
বোঝা যায়, নকশালপন্থীদের খড়্গ আজকাল আমজতাকেও রেহাই দেয়না, মালদার হলেই ওদের রক্তচক্ষুতে পরিণত হতে হবে।শেষমেশ ভরতকে নিজের একমাত্র ছেলেকে খুইয়ে চরম মূল্যটা দিতেই হয়,এই ঘটনার বর্ণনা যেন অনেক বেশি জান্তব-
সুরেনের লাশকে ঘিরে ভিড়, ঠেলাধাক্কা এবং হৈ চৈ রত কয়েকটা মানুষ ঘরে দাঁড়িয়ে যায়। জায়গাটায় হঠাৎ করে নিঃশ্বাসরুদ্ধ নীরবতা নেমে আসে। মধ্যরাত্রির উন্মুক্ত আকাশতলে সেই স্তব্ধতার মধ্যে শোকোন্মত্ত পিতার "বা বা সু রে ন রে" এই ত্রিভুবন ভাসানো সর্বভেদ্য হাহাকার, ও তার বিপুল বেগে ধেয়ে আসা - খালি গায়ের ছোটখাট গোলগাল মানুষটিকে অবর্ণনীয় বিশালত্ব এনে দেয়।
"দুই গায়কের গল্প" গল্পে অবশ্য এই সুরটা এত প্রকটভাবে আসেনি।ভাগ্যের ফেরে জগন্নাথ চোখ হারিয়ে ঠুঁটো, সাগরেদ হরিদাসকে নিয়ে দিনমান সে গান গেয়ে বেড়ায়, আর সেটাই তাদের জীবিকা। তবে হরিদাস আবার একেবারে সুস্থ-সবল মরদ, কিন্তু তার জগন্নাথের শিষ্যত্ব নেওয়ার কারণ এক দুর্জ্ঞেয় রহস্য। হরিদাসের সংসার আছে, কিন্তু সংসারে থেকেও যেন সে সন্ন্যাসী।জগন্নাথ ওরফে জগার আবার এসবের বালাই নেই, মাঝে মাঝে "লীলা" করার বদখেয়াল ছাড়া সে সংসারে জড়ানোর তাগিদ খুব একটা অনুভব করেনা। একসময় দৈব দুর্বিপাকে মানিকজোড়ের বাঁধন ছিড়ে যায়, কারো সাতে পাঁচে না থাকা হরিদাস নকশালিস্ট-পুলিশের গোলাগুলিতে বেঘোরে প্রাণ হারায়। আর আপাত নির্লিপ্ত জগার মধ্যে ঘুমিয়ে থাকা আগ্নেয়গিরি জেগে ওঠে, কিন্তু্ তাতে কি লাভ হয় আদৌ ?-
এই অন্ধকার ফাটানো চিৎকার দিয়ে সে মাটি থেকে উপরে উঠে যায়। দু'হাতে উত্তোলিত হারমোনিয়াম ছুটে যায় সামনে। জগন্নাথের শরীর শুন্যে একটি মোচড় খায়। ধনুকের মত ব্যাঁকে; তারপর; যেনো ধনুক থেকে তীর ছুটে গেলো, জগন্নাথ সমস্ত শরীর দিয়ে পৃথিবী বিদ্ধ করে।
"নিয়ামত আলীর জাগরণ"-ও একই ছাঁচে ঢালা গল্প। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধফেরতা নিয়ামত নিজেকে একজন সৈনিক হিসেবে দাবি করে, খাকি কোত্তা গায়ে দিয়ে বেশ একটা ভড়ং ধরে। মানুষজন তার এসব স্তোকে অবশ্য বিভ্রান্ত হয়না, নিয়ামতকে তারা বিবেচনা করে স্রেফ একজন অকর্মণ্য জড়ভরতের সাথে। নিয়ামতও এসবের থোড়াই কেয়ার করে। কিন্তু ভাগ্যের ফেরে সেও ভুল সময়ে ভুল স্থানে থাকার খেসারত দেয়, নকশালপন্থি হিসেবে তাকে পাকড়াও করা হয়। নিজের খেয়ালে মগ্ন নিয়ামতও এই নকশাল জুজু থেকে রেহাই পায়না।
এই গল্পগ্রন্থের সবচেয়ে অভিনব গল্প সম্ভবত -"মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পৈতৃক ভিটে ও মালপদিয়ার রমণী মুখুজ্জে" গল্পটি। দুজন অনুসন্ধিৎসু মালপদিয়া গ্রামে যায়-মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঠিকুজির খোঁজে।মানিকের পূর্বপুরুষ এই গ্রামেই আস্তানা গেড়েছিলেন, সেই আস্তানার সুলুক সন্ধানে আসা যুবকদের উদ্দেশ্য সম্পর্কে শুরুতে ভ্রুকুটি তোলে গ্রামের মানুষ। একসময় সেই ভ্রান্তি অপনোদিত হয়, মানিকের পৈতৃক বাড়ির সন্ধানও তারা পেয়ে যায়। কিন্তু নিজেদের অজান্তেই আগন্তুকেরা এরচাইতে বড় আবিষ্কার করে ফেলে, সংখ্যালঘু মানুষের নিরাপত্তাহীনতা- সংকট সবকিছুই তাদের সামনে আচমকা বিমূর্ত হয়ে ওঠে। প্রথম দর্শনে এই গল্পটিকে একটি আটপৌরে প্রতিবেদন হিসেবে ভ্রম হতে পারে, কিন্তু লেখক গল্পটিতে প্রায়ই নিজের প্রাজ্ঞ রাজনীতি ও সমাজ মনস্কতা জানান দিতে ভোলেননি। দেশভাগের ছোবল থেকে যে কেউই রেহাই পায়নি, এ সত্য ও ভসে ওঠে তাদের সামনে। পলায়নপর মধ্যবিত্ত বা পোড়খাওয়া কৃষিজীবি সকলেই আদতে একই নৌকারই যাত্রী-
অর্থাৎ ভিন্ন একটি সম্প্রদায় যখন শাসন নিয়ন্ত্রণের নিয়ন্তা হয় , তখন শ্রেণীর পার্থক্য ,বর্ণের পার্থক্য ছাপিয়ে সংখ্যালঘুর সামনে প্রবল হয়ে দাঁড়ায় সেই ভিন্ন সম্প্রাদায়ের সাথে নিজেদের সম্প্রদায়গত পার্থক্য, সেখানে "মুখুজ্জেদের" সাথে "মণ্ডলদের" কোন ভেদ নেই।এই বিভাজিত চেতনার ভিত্তিতেই এই উপমহাদেশের রাজনীতি পরিচালিত হয়ে এসেছে। বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদ ভিত্তিক স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হলেও এই সাম্প্রদায়িক ভেদবুদ্ধির প্রবল মূঢ অন্ধকারের প্রতপক্ষ হিসাবে সুস্থ সবল দৃঢ-ভিত্তিক কোন মানবিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠিত হয়নি। কেন হয়নি ? সে অনেক কথা। সে কথা থাক।
মোদ্দা কথাটা লেখক অকপটে এভাবেই বলে দিয়েছেন ,কোন ছলচাতুরীর আশ্রয় না নিয়েই। ফলে মানিকের ভিটেমাটি পাওয়ার চেয়েও এই ব্যাপারটি মুখ্য হয়ে দাঁড়ায়।
লাশকাটা ঘর গল্পে লেখক মানুষের থিতিয়ে পড়া সম্পর্কগুলোকে আতশ কাঁচের নিচে ফেলেছেন, বারবার নিরীক্ষা করেছেন। কালীনাথ-নিশিকান্ত-মনোতোষ মাস্টার বা বাসুদেবরা তো আসলে একই পথেরই পথিক, তাদের সকলেরই হাড় মাংসে পচন ধরেছে, অভাবের সাথে যুঝতে থাকা মানুষগুলো প্রত্যেকেই এখন শবঘরের একেকজন বাসিন্দা, আর খানিক পরেই হয়ত তাদের মনুষ্যত্বের ব্যবচ্ছেদ করা হবে। তারা এ থেকে উত্তরনের পথের হদিস করে, কিন্তু সে পথ আর মেলেনা।
গল্পগ্রন্থের অন্যান্য গল্পগুলো অবশ্য কী ভারে, কী ধারে এগুলোর মত কাটেনা। তার মধ্যেও কিছু কিছু গল্পের হকিকত আলাদাভাবে দিতেই হয়। "গগনের চিকিৎসা তৎপরতা" গল্পে গগন চাঁদের কলংক দূর করার দাওয়াই খোঁজে, দাওয়াইয়ের সন্ধান না পেলেও আমরা জানতে পারি, চাঁদেরও কলংক এতদিন হয়ত ঘুঁচে যাবে ,কিন্তু মানুষের কলংক, সে দিল্লি দূর অস্ত।
"পরাণ" গল্পে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে জেলেপাড়ার জেলেদের প্রাত্যহিকতার ফিরিস্তি উঠে এসেছে। বঞ্চনা, শোষণ এসব যেন তাদের জন্মগত হিস্যা,এসব কড়ায়গন্ডায় তাদের বুঝিয়ে দেওয়াটাই যেন অলিখিত রীতি। তবে গল্পটা কেন যেন ঠিকমত দানা বাঁধতে পারেনি, চরিত্রগুলোও মাঝে মাঝে খাপছাড়া ঠেকে।
অন্যদিকে "গোপাল কামারের তলোয়ার" গল্পে লেখক বেশ কায়দামতো তারিয়ে তারিয়ে একটা জম্পেশ গল্প ফাঁদার চেষ্টা করেন, গোপাল কামারের নিস্পৃহতাকে ফুটিয়ে তোলেন, কিন্তু অন্য গল্পগুলোর তুলনায় এই গল্পের ভঙ্গিটি অনেক জোলো হয়ে যায়।সে তুলনায় "নচিকেতাগণ" গল্পে লেখক অনেক সাবলীল, মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে লেখা একমাত্র গল্প এটি। হানাদারদের হাতে অন্তরীণ একদল লোক, যারা জানে হয়তো খানিক পরেই তাদের খতম করে দেওয়া হবে, তারপরও তাদের কেউ মিথ্যে ফানুসের বুদুবুদ রচনা করে, ভাবে- হয়তো তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে।এই ভাবনাটা ধরা পড়ে এভাবে-
রাত শেষ হয়ে আসছে, একটু পরেই ভোরের আলো এসে পড়বে ভেন্টিলেটরের ফাঁকে, সেই সঙ্গে আসবে চড়ুইটা, কদিন থেকেই লক্ষ্য করছি আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে ছোট পাখিটা এসে ডাকাডাকি করে ভেন্টিলেটরে বসে; দেখে এই অপরিসর এই বাথরুমটায় তালগোল পাকিয়ে কজন মানুষ পড়ে আছে। কি বোঝে কে জানে খানিকক্ষণ লাফালাফি ডাকাডাকি করে আবার উড়ে যায় বাইরে। আমি তার অবাধ উড়ে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকি, ভেন্টিলেটরের ওপারের ফাঁকা আলোকিত শুন্যতা বিশাল পৃথিবীটার আভাস দেয়।
প্রতারক জোছনা বা পারাপার গল্পে লেখক আবার অনেকটাই মনস্তাত্ত্বিক, মানুষের একাকিত্বই গল্পগুলোর উপজীব্য। তবে মাওলা ব্রাদার্স প্রকাশিত এই গল্পগ্রন্থের একটাই খুঁত, একই গল্প আলাদা নামে দুবার থাকা। "ফজর আলীর গল্প" ও "নিরাশ্রিত অগ্নি" আদতে একই গল্পই, তবে ছাপা হয়েছে দুবার। এই গল্পটিতে লেখক ডিটেইলে অসাধারণ স্বচ্ছন্দ-
একথা মাথায় আসার সঙ্গে সঙ্গে তার চোখের সামনে একটা সবুজ গাছ ঘুরতে ঘুরতে দূর থেকে কাছে আসতে থাকে, ধীরে ধীরে তার নীচে সাদা, নীল, কতগুলো রঙ জেগে ওঠে, রংগুলো আরো স্পষ্ট হয়ে একসময় জামাকাপড় কি খালি গায়ের কতগুলো মানুষ হয়ে যায়...
এভাবেই কায়েস আহমেদ আমাদের নিয়ে যান গল্পের এক কুহকময় জগতে, মোহমুগ্ধ পাঠককে গাছে তুলে তিনি আলগোছে মই কেড়ে নেন, আর পাঠক এক অনিঃশেষ বারুদে ঠাসা এক গল্পজগতে খাবি খেতে থেকে।
মন্তব্য
চমৎকার একটা সিরিজ। সচলায়তনে সময় বিনিয়োগ উসুল হয় এরকম পোষ্টে।
মহাকালের খাঁড়া এবং লাশকাটা ঘর মনে আছে।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
ধন্য বোধ করলাম ভাইয়া ।
মহাকালের খাঁড়া আর লাশকাটা ঘর মনে রাখার মতই বটে।
-----------------------------------
আজি দুঃখের রাতে, সুখের স্রোতে ভাসাও তরণী
তোমার অভয় বাজে হৃদয় মাঝে হৃদয় হরণী।
--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।
অদ্রোহ... দারুণ চলতেছে।
থামলে কিন্তু খবরাছে
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
নজ্রুল ভাই, গ্যালারিতে থাইকা হাততালি দিলে হইব, দুপয়সা যোগ করন লাগতোনা?
--------------------------------------
আজি দুঃখের রাতে, সুখের স্রোতে ভাসাও তরণী
তোমার অভয় বাজে হৃদয় মাঝে হৃদয় হরণী।
--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।
আগাইতে থাকেন... যোগ দিমুনে
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
ওকে বস।
আজি দুঃখের রাতে, সুখের স্রোতে ভাসাও তরণী
তোমার অভয় বাজে হৃদয় মাঝে হৃদয় হরণী।
--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।
দারুণ হচ্ছে। কায়েস আহমেদ এবং তার লেখা নিয়ে তেমন কোন ধারণা নেই। তবে তোমার এই সিরিজ সত্যি সত্যি আগ্রহী করে তুলছে। আর আলোচনার ঢং টা চমতকার। তবে আলোচনার সময় একটু খেয়াল রেখো যেন গল্পের মূল কাহিনি টা যেন খুব বেশি চলে না আসে। তাহলে পরে পড়তে গিয়ে পাঠক সত্যিকারের মজাটা না পেতে পারে। আর আশা করি বাকিদের মত সিরিজ খেলাপি হবে না
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
একটা দুটো গল্পে শেষের চমকের আভাস ইচ্ছে করেই দিয়েছি। বলতে পারেন, নতুন একজন পাঠকও যদি কায়েস আহমেদ পড়ে, তবেই লেখাটা সফল।
আর আমি এখনও নবিশ লিখিয়ে, সিরিজ খেলাপি হওয়ার মত জাতে উঠতেও ঢের দেরি
আজি দুঃখের রাতে, সুখের স্রোতে ভাসাও তরণী
তোমার অভয় বাজে হৃদয় মাঝে হৃদয় হরণী।
--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।
ফুটো পয়সাঃ
'গগনের চিকিৎসা তৎপরতা' গল্পটি প্রথম পড়তে পাই অধুনালুপ্ত সাপ্তাহিক 'বিচিত্রা'র ঈদ সংখ্যায়। বিচিত্রার মত কুলীন পত্রিকাতে কায়েস আহমেদের অন্য কোন গল্প অন্ততঃ আমার চোখে আর পড়েনি। বই আকারে এই গল্প প্রকাশিত হয় ১৯৮৭ সালে। জাদুবাস্তবতা নিয়ে বাংলা সাহিত্যে ততোদিনে নীরিক্ষা শুরু হয়ে গেছে। এই গল্পটি যতোটা না আপাতঃ উন্মাদ তরুণ গগনের তার চেয়ে বেশি গ্রাম্য ডাক্তার বীরেনের। ছাপার অক্ষরে ছয় পৃষ্ঠার এই গল্পে গগনের জন্য বরাদ্দ দেড় পৃষ্ঠার মতো, বাকিটা পুরোই বীরেনের গল্প। বীরেনের গল্পে গ্রাম্য ডাক্তারের জীবন ও পরিপার্শ্বের যে চিত্র দেখতে পাই তা কেবল বর্ণনায় ভারাক্রান্ত নয়। উপন্যাস না হোক একটা বড় গল্পের সমান কাহিনী সে ধারণ করে। সে কাহিনী বীরেনের, তাঁর স্ত্রী হিমানীর, তাঁদের কন্যাদের, তাঁদের প্রতিবেশীদের, গ্রামের চিকিৎসা ব্যবস্থার, গ্রামের সমাজ-অর্থনীতির। এই গল্পে একমাত্র ব্যতিক্রম গগন। কঠিন বাস্তবের প্রতীক বীরেনের পৃথিবীতে ইল্যুশনের পৃথিবীর একমাত্র বাসিন্দা গগন। গগনের নামটি প্রতিকী - সে আকাশ তাই বুকে ধারণ করে ঘায়ে আক্রান্ত চাঁদকে। চাঁদকে স্পর্শ করতে জাম গাছের চূড়ায় ওঠে। সেখান থেকে পপাত ধরণীতল হয়ে বীরেনদের পৃথিবীতে ফিরে আসে, অবশ্যই মৃত - হাতে ধরা বেটনোভেটের সরু টিউব। বীরেন যেখানে পৃথিবীর মানুষের চিকিৎসা করতে পারে সেখানের গগনের চিকিৎসা তৎপরতা আকাশে গিয়ে ঠেকে। মাথার ভেতর বিরাট আকাশ ধারণ করা গগনই তাই এই গল্পের নায়ক, এই গল্পের উপলক্ষও সে। সাড়ে চার পৃষ্ঠার বীরেনরা দেড় পৃষ্ঠার গগনদের পাশে থেকেও আকাশকে ধারণ করতে পারেনা।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
কোন এক বিচিত্র কারণে এই গল্পটা পড়ার সময় মনটা বিক্ষিপ্ত ছিল। একারণে কিছু কিছু ব্যাপার নজর এড়িয়ে গিয়েছিল। তবে গল্পটা আরেকবার পড়ে নিতে কসুর করিনি বটে।
ফুটো পয়সার জন্য মেলা ধন্যবাদ পাণ্ডবদা!
--------------------------------------------
আজি দুঃখের রাতে, সুখের স্রোতে ভাসাও তরণী
তোমার অভয় বাজে হৃদয় মাঝে হৃদয় হরণী।
--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।
নতুন মন্তব্য করুন