নোলানের খোয়াবনামা

অদ্রোহ এর ছবি
লিখেছেন অদ্রোহ [অতিথি] (তারিখ: শুক্র, ০৫/১১/২০১০ - ৮:৪৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

১.

স্বপ্ন নিয়ে কাঁটাছেড়া এ পর্যন্ত নেহায়েত কম হয়নি, কিন্তু সত্যি করে বললে তার কতটুকুই বা আমরা জানি। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে এটুকু বলা যায় স্বপ্নের কথা প্রায়ই আমার মনে থাকেনা, আর যেটুকুও মনে থাকে সেটুকুও বোধহয় অনেকটাই আটপৌরে। কোন উঁচু স্থান থেকে নিচে পড়ে যাওয়া, পরীক্ষার হলে সময় খুব দ্রুত ফুরিয়ে আসছে অথচ একটি প্রশ্নের উত্তরও ঠিকঠাক দিতে পারছিনা বা কোন কিছু আমাকে তাড়া করছে, আমি ক্রমাগত ছুটছি- এসব স্বপ্নই ঘুরেফিরে আমার ঘুমে হানা দেয়। মজার ব্যাপার হল, আচমকা যখন ঘুম ভেঙ্গে যায় তখনই স্বপ্নটা মাথায় গেঁথে থাকে। একটু তলিয়ে দেখতে গিয়ে জানলাম, আমাদের ঘুমের একটা সুনির্দিষ্ট স্তরেই এই স্বপ্ন দেখার কাজটা ঘটে। এই স্তর আবার ঘুমের মাঝেই বেশ কবার ঘটে থাকে। তো এই পর্যায়ে এসে যখন ঘুমটা কেঁচে যায় তখনই ওই স্বপ্নটা ছাপ রেখে যায়। এজন্যই বোধহয় আমাদের সুখস্বপ্নগুলোর স্মৃতি খুব একটা মনে থাকেনা, অথচ দুঃস্বপ্নের স্মৃতি সবারই কমবেশি থেকে থাকে।

২.

স্বপ্নের নিখুঁত ঠিকুজির সুলুকসন্ধান বিজ্ঞানীরা এখনো ঠিক পাননি, এক্ষেত্রে আবার নানা মুনির নানা মত। কেউ কেউ এমনকিও একথাও ঠাউরে থাকেন, স্বপ্ন আদপে এক ধরনের ঐশীবাণীই বটে। তাদের মতে, স্বপ্নই এক অজানা জগতের সাথে আমাদের যোগাযোগের চাবিকাঠি। এমন দাবি হয়তো অনেকের কাছেই কষ্টকল্পনা ঠেকবে, কিন্তু ওবিই বা আউট অফ বডি এক্সপেরিয়েন্সের কথা মাথায় রাখলে এক লহমায় এ দাবি উড়িয়ে দেওয়া যায়না। অনেকেই হয়তো খেয়াল করে থাকবেন, আমাদের ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য কাজগুলোর অনুভূতি অনেকসময় স্বপ্নে বেশ প্রকট হয়ে ওঠে। ধরা যাক, আপনি স্বপ্নেই কোন জায়গা থেকে পড়ে যাচ্ছেন, ওই মুহুর্তে কিন্তু আপনার অনুভূতি পুরোটাই ভয়াবহ রকমের জান্তব, অথচ পুরো ব্যাপারটাই কিন্তু আপনার ঘুমের মাঝেই ঘটছে। দেহ থেকে আত্মার এই সাময়িক বিচ্ছেদের সময় এই ধরনের অভিজ্ঞতার গোমরটা আসলে তাহলে কোথাও? এই প্রশ্নের উত্তরও ব্যাপকই ঘোলাটে, এ বিষয়ে গবেষণা এখনও জোরেসোরে চলছে, তাই বিভিন্ন তত্ত্বের কথা বলা হলেও একেবারে চূড়ান্ত প্রতিষ্ঠা এখনো কোনটি পায়নি। কেউ কেউ বলে থাকেন, আমাদের চেতনা দেহ থেকে ভিন্ন একটি সত্ত্বা বা বলা ভাল দেহবিহীন চেতনা এবং চেতনাবিহীন দেহ দুই-ই সম্ভব। এই জন্যই দেহবিচ্ছিন্ন হয়েও স্রেফ আমাদের চেতনার কারণে আমরা স্বপ্নের মাঝেও স্বাদ, গন্ধ, স্পর্শের মত অনুভূতিও পেতে পারি। তবে এটা একটা থিওরি মাত্র, এরকম এন্তার থিওরি আছে এবং সেগুলো নিয়ে আগাপাশতলা ব্যবচ্ছেদ আজ অবধি জারি রয়েছে। আরেকটা কথা বলে রাখা ভাল, স্বপ্ন পারলৌকিক বা অন্য জগতের সাথে মেলবন্ধনের যোগসূত্র এমনটা যারা ভেবে থাকেন, তাদের মতে স্বপ্ন আসলে জাগরণেরই বিকল্প একটি রুপ। কিন্তু এই যুক্তি খোঁড়া মনে হয় একারণে যে , স্বপ্ন আসলে অবচেতন মনেরই একটা দশা মাত্র, আর স্বপ্নের সময় আমাদের ব্রেইনের সংকেতগুলো এ ধারণাই দেয়।

৩.

একটা মজার ঘটনার কথা বলি। আমাদের এক বন্ধু বলছিল তার স্বপ্নের কথা। মাসতিনেক আগে সে স্বপ্ন দেখে সে কয়েকজন অচেনা ছেলের সাথে একটা হোটেলের কামরায় আড্ডায় মশগুল। ঐ সময় আচমকা তার ঘুম ভঙ্গে যায়। পরে তার রুমমেটকে সে ওই স্বপ্নের বয়ান দেয়। মজার ব্যাপার হল, ঠিক কদিন আগে আমাদের বান্দরবান ট্যুরে ঐ বন্ধুই আরো কজনের সাথে এক কামরায় রাত কাটায়। বলাই বাহুল্য, তাদের পরিচয়টা ওই ট্যুরেই পয়লা ঘটেছিল। স্বপ্নের অলোকদর্শন ক্ষমতার এমন নজির খুব বেশি বিরল নয়। আর এ ধরনের প্রোফেটিক স্বপ্নের জন্যও স্বপ্ন নিয়ে বিভিন্ন উদ্ভট থিওরি হালে পানি পেয়ে যায়। অলোকদর্শন (যদি ব্যাপারটা আসলেই থেকে থাকে) স্বপ্নের একটা গুরুত্বপূর্ণ অনুষংগ, সমস্যা হল নিতান্তই কাকতাল বলে এ ধরনের স্বপ্নকে হয়তো কনফার্মেশন বায়াস বা অন্যকোন পরিসংখ্যানের গেরোয় ফেলে দিয়ে দিব্যি নাকচ করা যায়, তাই বলে ব্যাপারটা কি আদতেই এক লহমায় উড়িয়ে দেওয়া যায় কি?

৪.

বলতে দ্বিধা নেই, স্বপ্ন নিয়ে এসব ভাবনার খোরাক পয়লা পাই গুনী ফিল্মমেকার ক্রিস্টোফার নোলানের সাম্প্রতিকতম ছবি "ইনসেপশন" দেখার পর। প্রেস্টিজ, মেমেন্টো, ডার্ক নাইটের মত বহুল পরিচিত বা ফলোয়িং এর মত স্বল্প পরিচিত সিনেমাগুলো দেখার পর এমনিতেই নোলানের ভক্ত বনে গিয়েছিলাম, তাই ইনসেপশন নিয়ে কৌতূহলের পারদটা খুব চড়াই ছিল। হাতের কাছে পাওয়া মাত্র দেখে ফেলতে তাই কসুর করিনি মোটেই। সিনেমাটি তুঙ্গে ওঠা সেই প্রত্যাশা পূরণ করেছে কিনা এমন সওয়ালের জওয়াব দেওয়ার আগে স্বপ্ন নিয়ে নোলানের চিন্তাভাবনাটা একটু বলা দরকার। ইনসেপশনের ধারণা নোলান অনেকদিন ধরেই পেলেপুষে বড় করেছিলেন, তবে ঠিক কীভাবে এটাকে ফুটিয়ে তুলবেন সেটা নিয়ে শুরুতে তার মনে একটু দ্বিধাই ছিল। ভাবনাটা দানা বাঁধতে শুরু করে যখন নোলান এমন একটা জগতের কথা কল্পনা করেন যেখানে সবার স্বপ্নগুলো একটি অবিচ্ছিন্ন স্বপ্নরাজ্যে মিশে একাকার হয়ে আছে। সম্পূরক চিন্তা হিসেবে তার মাথায় তখনই আসে, আরে তাই যদি হতো, তবে স্বপ্ন নিয়ে নয়-ছয়ও হতে পারে বৈকি। মোদ্দা কথা হল, ইনসেপশনের মূল যে বুনিয়াদ, অর্থাৎ স্বপ্নচুরির আইডিয়া তখনই তার মাথায় আসে। নোলানের এই স্বপ্নবাজি শুরু হয় ষোল বছর বয়েসে, যখন এক ল্যুসিড ড্রিমের পর তার মাথায় এই চিন্তা আসে। নোলান অবশ্য বলতে কসুর করেননি, বোর্হেসের লেখা পড়ে তিনি এই দুরুহ কাজে হাত দিতে বেশ ভাল রকমের প্রণোদিত হন।

বলা যায়, এই ভাবনা অঙ্কুরিত হতে বেশ সময় নিয়েছে। গোড়ায় তো নোলান ভেবেই রেখেছিলেন ম্যুভিটা হবে ভৌতিক আবহের। কিন্তু হরর ম্যুভিগুলোর সেই চিরকালীন সমস্যা- আবেগ বা অনুভূতিগুলো শেষমেশ খেলো হয়ে যাওয়ার কারণে এই ধারণা থেকে তিনি সরে আসেন। এইখানে অবশ্য আমি নিজে নোলানকে বাহবা দেব, কারণ স্বপ্নের মত একটা দুর্বোধ্য ভাবনা লালনা করার জন্য হরর ব্যাকগ্রাউন্ড আদপেই ঠিক যুতসই হয়না। এভাবে বছর দশেক ব্যয় হয় স্ক্রিপ্টটাকে ঠিকঠাক করে মূল ব্যাপারগুলোকে একসুতোয় গাঁথার জন্যে। এটাও মেলা আগের কথা, ঠিকঠাক বললে ২০০১ সালের দিকে। তবে তখনই ঠিক করেন সিনেমাটা তিনি রয়েসয়ে বড়সড় বাজেট নিয়ে বানাবেন। স্বপ্নে কিন্তু মানুষ এক নিমেষে অসাধ্য সাধন করতে পারে, আর মানুষের মনের ক্ষমতার দৌড় কদ্দুর, তা নিয়ে আজ অবধি কোন সঠিক মাপজোখ পাওয়া যায়না। শেষমেশ নোলান ঠিক করেন, স্বপ্ন নিয়ে কারবার করতে হলে বিশাল একটা স্কেলেই কাজ করা সমীচীন। আজ তাই দীর্ঘদিনের স্বপ্নবাজির ফসল আজকের ২০১০ সালের ইনসেপশন।

৫.

যাই হোক, একজন দর্শক হিসেবে যদি বলি, সিনেমাটা দেখতে গিয়ে কোথাও টাল খেতে হয়নি, পুরো সময়টা জুড়েই রোলারকোস্টারে চড়ার মত একটা টানটান উত্তেজনার স্বাদ পেয়েছি, একথা বলতেই হবে। তবে স্বপ্নের ভেতর স্বপ্ন ব্যাপারটা আমাকে আসলেই তাজ্জব করে দিয়েছে। স্বপ্নের ভেতর আরেকটা স্বপ্নের কথা না হয় মানা গেল, কিন্তু তার ভেতরেই আরেকটা স্বপ্ন? ব্যাপারটা কিঞ্চিত ঠাহর করতে পারতেই আমার মাথায় যে প্রশ্নের উদয় হল, এই দ্বিতীয় স্তরের মাঝেই আরেকটা স্তরও কি অসম্ভব? আদতে নোলান কিন্তু তাই দেখালেন, আর এটাই দর্শকের একটা পেলব অনুভূতির রেশ কাটিয়ে মাথার ভেতর ভাবনার ঝড়ে বইয়ে দেওয়ার নোলানের নিজস্ব কারিকুরি। আর কিছু কিছু ব্যাপার, যেমন স্বপ্নের স্তরগুলোর গভীরতা যতই বাড়তে থাকবে ততই তাদের সময়ের ব্যপ্তিও বাড়তে থাকবে। সোজা কথায় বললে বাস্তবে যখন আমরা ঘুমের যে সময়টুকু নিয়ে স্বপ্ন দেখি, তার স্থায়িত্বকাল কিন্তু খুবই কম। কিন্তু ওই সময়েই স্বপ্নের ব্যপ্তিকাল অনেক বেশি। এ ব্যাপারগুলো মোটামুটিভাবে অনেকের কাছে বোধগম্য, ম্যুভি দেখার সময় কোন জগতটা বাস্তব আর কোন জগতটা স্বপ্নের, আর স্বপ্নের হলেই এর কোন স্তরের এ নিয়ে কোন খটকায় অন্তত আমাকে পড়তে হয়নি। তবে আমার কাছে যেটা মনে হয়েছে, স্তরগুলো নিয়ে ঘোরতর কুহক নোলান বুঝেশুনেই এড়িয়ে গেছেন, অন্তত এই ক্ষেত্রে তিনি দর্শককে ঘোল খাওয়াতে চাননি চিনি।

একইভাবে স্বপ্ন ছিনতাই বা স্বপ্নের মাঝে আরেকটা ভাবনার বীজ বুনে দেওয়ার ব্যাপারটাও নোলানীয় কারদানিই বটে। স্বপনের ভেতরকার জগতটাকে গড়ে তোলা ও নিয়ন্ত্রণ করার মত বিটকেলে ব্যাপারগুলোও নোলান আশ্চর্য দক্ষতায় দেখিয়েছেন। সিনেমার কাহিনি মূলত এ নিয়েই, ডমিনিক কবের(লিওনার্দো দি ক্যাপ্রিও) নেতৃত্বে একদল কর্পোরেট স্পাইয়ের স্বপ্ন চুরির মিশনের ওপর ভর করেই কাহিনি এগি্যেছে। বলাই বাহুল্য, ব্যাপারটা এত সরল আর থাকেনা, ধীরে ধীরে এক জটিল আবর্তে তারা সবাই বাঁধা পড়ে যায়। তারপর...থাক, কাহিনির বয়ানে আর না যাই, সে গপ্পো পরেও ফেঁদে বসা যাবে। তবে একটা কথা না বললেই নয়, কাহিনিতে কবের স্ত্রী মলের(ম্যারিওন কোটিয়ার্ড) ভূমিকা শুরুতে খুব একটা প্রকট না থাকলেও শেষমেশ কিন্তু এই চরিত্রটির উপস্থিতি আলাদাভাবে ঠাহর করা গেছে। আর যে বারদুয়েক আমি সামান্য সময়ের জন্য ধাঁধায় পড়ে গিয়েছিলাম, সেটাও ওই মলকে নিয়ে তৈরি করা ধোঁয়াশার কারণেই।

সত্যি করে বললে , সিনেমাটির অসাধারণ কন্সেপ্ট বাদ দিলে আলাদাভাবে উচ্চকিত হওয়ার খুব বেশি কিছু বোধহয় নেই। সিনেমার একেবারে শেষের দৃশ্যের হালকা রহস্য ছাড়া তব্দা খেয়ে যাওয়া নোলানীয় মোচড়ও দেখা পাওয়া ভার, তবে আমার নিজস্ব খেদ থেকে থাকবে এই কারণে এই দুর্দান্ত আইডিয়াটার শেষটা একটু জোলোই হল। স্বপ্নবাজির ব্যাপারগুলো স্তব্ধ করে দেওয়ার মতই ছিল, থ্রিলটাও ছিল পুরোদমে, কিন্তু ওই যে নোলানীয় সিগনেচারটা ঠিক যেন দানা বেঁধে উঠতে পারেনি। তবে নোলানের আত্মপক্ষ সমর্থনে কিন্তু এই জিনিসটাই চলে আসে, তিনি অকপটে স্বীকার করেন এই সিনেমা দেখতে গিয়ে দর্শকদের কোন জট না ছাড়ানো জটিল ধাঁধার সন্ধান দেওয়া তার অভিপ্রায় ছিলনা মোটেই। তাই নোলান নিজেই যখন বলেন, সিনেমাটা আসলে একটা রোলার কোস্টার রাইড, আর ব্যাপার আসলে একটাই, রাইডটাকে স্রেফ উপভোগ করা- তখন আমাদের আশায় তিনি আক্ষরিক অর্থেই জল ঢেলে দেন। তবে স্বপ্ন নিয়ে আমার ভাবনাগুলোকে উস্কে দেওয়া জন্য নোলান একটা ধন্যবাদ পেতেই পারেন বৈকি।

ফুটনোটঃ শুরুতে স্থির করেছিলাম, ইনসেপশন নিয়ে একটা গোছানো রিভিউই লিখব, পরে রিভিউ লিখতে গিয়ে পাছে বেরসিক স্পয়লার অ্যালার্টের উটকো খপ্পরে পড়ে যাই, সে চিন্তায় ওই প্রজেক্টে ইস্তফা দেই। শেষমেশ পোস্টটা দাঁড়ালো স্বপ্ন নিয়ে কিছু উড়ুক্কু বাতচিতের গপ্পো।


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

শুরুতে স্থির করেছিলাম, ইনসেপশন নিয়ে একটা গোছানো রিভিউই লিখব, পরে রিভিউ লিখতে গিয়ে পাছে বেরসিক স্পয়লার অ্যালার্টের উটকো খপ্পরে পড়ে যাই, সে চিন্তায় ওই প্রজেক্টে ইস্তফা দেই। শেষমেশ পোস্টটা দাঁড়ালো স্বপ্ন নিয়ে কিছু উড়ুক্কু বাতচিতের গপ্পো।

মোটেও না। পাঠক হিসেবে আমি চাই ঠিক এমন একটা রিভিউ যা গল্প বলে সময় নষ্ট করবে না, বরং ম্যুভির থিমটাকে ব্যাখ্যা করবে নিজস্ব কায়দায়। তোর (তুই করে কী বলা যাবে) রিভিউটা তাই আমার বেশ ভালো লেগেছে।

---আশফাক আহমেদ

অদ্রোহ এর ছবি

ভাবনাটা ঠিকঠাক ধরতে পেরেছিস, এজন্য থ্যাঙ্কু। আর বন্ধুদের তুমি করে ডাকাটা আসলেই কেমন জানি বেখাপ্পা শোনায়, তুই-ই সই হাসি

--------------------------------------------

আজি দুঃখের রাতে সুখের স্রোতে ভাসাও ধরণী
তোমার অভয় বাজে হৃদয় মাঝে হৃদয় হরণী।

--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।

...অসমাপ্ত [অতিথি] এর ছবি

সিনেমাটার থেকে আপনার উড়ুক্কু বাতচিতের রিভিউ বেশি ভালু পাইলাম। হাসি

অদ্রোহ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

--------------------------------------------

আজি দুঃখের রাতে সুখের স্রোতে ভাসাও ধরণী
তোমার অভয় বাজে হৃদয় মাঝে হৃদয় হরণী।

--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

পুরাপুরি রিভিউ দিলেই ভালো হত।

সত্যি করে বললে , সিনেমাটির অসাধারণ কন্সেপ্ট বাদ দিলে আলাদাভাবে উচ্চকিত হওয়ার খুব বেশি কিছু বোধহয় নেই।

আমি এর সাথে পুরোই সহমত। স্বপ্নের ভেতরে স্বপ্ন দেখে, তার ভেতরেও স্বপ্ন দেখানো একটা চমৎকার কন্সেপ্ট। তবে পরিচিত সকলের উচ্চকিত প্রশংসা এবং আইএমডিবি রেটিং এ আকাশছোঁয়া অবস্থান এই ছবির প্রতি একটু বেশিই আগ্রহী করে তুলেছিলো। তারপরে রয়েছে খোমাখাতার বন্ধুদের একটা বড় অংশের স্ট্যাটাস - " কী দেখলাম, কিছুই বুঝি নাই"...

সে কারণে সিনেমাটা দেখবার সময় ছিলাম সতর্ক, প্রয়োজনে পিছিয়ে দিয়ে আবার দেখেছি। ভালো- অবশ্যই, একদফায় সিনেমা সম্পুর্ণ করবার তাড়া- গতি- চরিত্র নির্বাচন-শেষ দৃশ্যে অন্য কিছুর ইঙ্গিত; সবই আছে। কিন্তু নোলান সাহেবের চিরন্তন সেই সংলাপের যাদু; হতবাক করে দেয়া কোন কারিশ্ম্যাটিক মোচড় নেই...

ইনসেপশন তাই, আমার কাছে, নোলানের সিনেমাই- তবে, নট এজ ডার্ক এজ ডার্ক নাইট অর ফলোয়িং ওয়াজ...
_________________________________________

সেরিওজা

অদ্রোহ এর ছবি

আমি অবশ্য ব্যক্তিগতভাবে প্রেস্টিজ-মেমেন্টোকে একটু বেশি এগিয়ে রাখব, নোলানের জাত এ দুটো দিয়েই সবচেয়ে ভাল বোঝা যায়। আর ফলোয়িং দেখেছিলাম কোন আশা না নিয়েই, সেদিক দিয়ে সেটা আশার মাত্রাকে পুরোপুরি ছাপিয়েছে।

ইনসেপশনের পুরোপুরি রিভিউ লিখতে গেলে স্পয়লার অ্যালার্ট(এটার ভাল বাংলা কী হতে পারে? ) এড়ানো বেশ শক্ত হয়ে যেত। ম্যুভিটা দেখে সবারই নিজস্ব কিছু ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ থাকবে, সেটা নিয়ে কিছু বাতচিত হবে-আমি মূলত এটাই চাই।

ইনসেপশনের ব্যাপারে পর্যবেক্ষণের সাথে একমত।

--------------------------------------------

আজি দুঃখের রাতে সুখের স্রোতে ভাসাও ধরণী
তোমার অভয় বাজে হৃদয় মাঝে হৃদয় হরণী।

--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।

মূলত পাঠক এর ছবি

স্পয়লার অ্যালার্ট-কে আমি লিখি ভণ্ডুলবার্তা।

অদ্রোহ এর ছবি

পন্ডাভাস কেমন মনে হয়? চোখ টিপি

--------------------------------------------

আজি দুঃখের রাতে সুখের স্রোতে ভাসাও ধরণী
তোমার অভয় বাজে হৃদয় মাঝে হৃদয় হরণী।

--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

আমি অবশ্য ব্যক্তিগতভাবে প্রেস্টিজ-মেমেন্টোকে একটু বেশি এগিয়ে রাখব, নোলানের জাত এ দুটো দিয়েই সবচেয়ে ভাল বোঝা যায়।

পুরোপুরি একমত। প্রেস্টিজ খালি দেখতেই আছি।

অদ্রোহ এর ছবি

হাসি

--------------------------------------------

আজি দুঃখের রাতে সুখের স্রোতে ভাসাও ধরণী
তোমার অভয় বাজে হৃদয় মাঝে হৃদয় হরণী।

--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।

মূলত পাঠক এর ছবি

উড়ুক্কু বাতচিত জমলো ভালোই।

অদ্রোহ এর ছবি

থেঙ্কু মূলোদা। আরও কিছু বললে খারাপ হতোনা বৈকি।

--------------------------------------------

আজি দুঃখের রাতে সুখের স্রোতে ভাসাও ধরণী
তোমার অভয় বাজে হৃদয় মাঝে হৃদয় হরণী।

--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।

অতিথি লেখক এর ছবি

কালই কিনব ঠিক করলাম। আমারও প্রথমে মুভি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে স্বপ্নের ঠিকুজি-কুলুজি উদ্ধার করাটা বেখাপ্পা ঠেকছিল, কিন্তু পড়তে পড়তে বেশ লাগল। মুভি দেখার আগ্রহ চাগিয়ে দেয়ার জন্যে ধইন্যাপাতা।

ফারাবী

অদ্রোহ এর ছবি

দেইখা ফ্যালেন, হাজার হোক নোলান নমস্য নির্মাতা, ঠকবার সুযোগ নাই।

--------------------------------------------

আজি দুঃখের রাতে সুখের স্রোতে ভাসাও ধরণী
তোমার অভয় বাজে হৃদয় মাঝে হৃদয় হরণী।

--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।

নৈষাদ এর ছবি

চলচ্চিত্রটা দেখা হয়নি, দেখার ইচ্ছা জাগল। তবে স্বপ্ন নিয়ে আপনার 'উড়ুক্কু বাতচিতের গপ্পো' ভাল লাগল।

অদ্রোহ এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ নৈষাদদা।

--------------------------------------------

আজি দুঃখের রাতে সুখের স্রোতে ভাসাও ধরণী
তোমার অভয় বাজে হৃদয় মাঝে হৃদয় হরণী।

--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।

সাইফ তাহসিন এর ছবি

দারুণ লাগল, এখন ২য় পর্বে স্পয়লার অ্যালার্ট ট্যাগ লাগায়া একটা কড়আ রিভিউ ছাইড়া দেন মিয়া ভাই, ৫ তারা

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

অদ্রোহ এর ছবি

পড়ছেন ভালু কথা, তারা টারা দিয়া শরম দ্যান কেন...হাসি

--------------------------------------------

আজি দুঃখের রাতে সুখের স্রোতে ভাসাও ধরণী
তোমার অভয় বাজে হৃদয় মাঝে হৃদয় হরণী।

--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।

তারাপ কোয়াস এর ছবি

'উড়ুক্কু বাতচিতের গপ্পো' ভালো পাইলাম।
আইএমডিবি'র রেটিং দেখে প্রত্যাশা ছিল আরও বেশী কিছু। সিনেমাটা দুইটা জায়গায় ভালো লেগেছে(স্বপ্নের ভেতর স্বপ্ন আর একদম শেষ দৃশ্যের রহস্যময়তা)।

এই সিনেমার তুলনায় 'মি: নোবডি' অনেকগুণ ভালো লেগেছে যদিও এর রেটিং ছিলো ইনসেপশনের চেয়ে বেশ কম।


love the life you live. live the life you love.

অদ্রোহ এর ছবি

আমি বলব, নিঃসন্দেহে ইনসেপশন ওভাররেটেড, অন্তত নোলানের অন্য কাজগুল গণায় ধরলে তো বটেই।

মিস্টার নো বডি দেখা হয়নাই, এবার যোগারযন্তরের পালা।

বিটিডব্লিউ, আপ্নের প্রোপিকটা পসন্দ হইসে।

--------------------------------------------

আজি দুঃখের রাতে সুখের স্রোতে ভাসাও ধরণী
তোমার অভয় বাজে হৃদয় মাঝে হৃদয় হরণী।

--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

মাথার তারতোরে প্যাচ লাগাইন্যা সিনেমা। নোলান কাকু যাই কউক, প্যাচটা ঠিকই লাগাইছে। এখন পাবলিকের পিডার ভয়ে কয়, "আমি কিছু কৈতে চাই নাই!"

সিনেমা হলে দেখছিলাম ইনসেপশন। আরও বার কয়েক দেখতে হবে, ঘরে কাইতচিৎ হয়ে। তখন আসল কাহিনি মালুম হবে। এর আগ পর্যন্ত ইনসেপশন নিয়া কোনো কথার শুরুবাৎ নাই।



বিএসএফ—
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ

অদ্রোহ এর ছবি

শুধু পপকর্নই ছিল, নাকি আরও কেউ ছিল সাথে? চোখ টিপি

যাকগা, আরও কয়েকবার দেইখা লন, মাথাটা মকশো কইরা লন, এরপর বাতচিত শুরু হইবে খন।

--------------------------------------------

আজি দুঃখের রাতে সুখের স্রোতে ভাসাও ধরণী
তোমার অভয় বাজে হৃদয় মাঝে হৃদয় হরণী।

--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।

অতিথি লেখক এর ছবি

প্রেস্টিজ দেখার পর নোলানের ভক্ত আমি। তাই তার কোনো ছবি পারত পক্ষে মিস করিনা। কিন্ন্তু তার খোয়াব নামা দেখি নাই এখনো। কারণ সবাই বলে এই ছবি নাকি হলে গিয়ে একবার দেখলে হবে না। বেশ কয়েকবার দেখা লাগবে। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি ডিভিডি বের হোক। তারপর নরম সোফায় দুই পা তুলে দিয়ে একহাতে রিমোট নিয়ে মাথাটা পুরা ফাঁকা করে অন্য হাতে স্নিকার নিয়ে খেতে খেতে দেখব।

অনন্ত

অদ্রোহ এর ছবি

কারণ সবাই বলে এই ছবি নাকি হলে গিয়ে একবার দেখলে হবে না। বেশ কয়েকবার দেখা লাগবে।

নোলানের ভক্ত হয়ে থাকলে এই ছবি বোধহয় একবার দেখাই যথেষ্ট।

--------------------------------------------

আজি দুঃখের রাতে সুখের স্রোতে ভাসাও ধরণী
তোমার অভয় বাজে হৃদয় মাঝে হৃদয় হরণী।

--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।