বিহবল গল্পের পর...

অদ্রোহ এর ছবি
লিখেছেন অদ্রোহ [অতিথি] (তারিখ: শুক্র, ২৯/০৪/২০১১ - ১:৫৮পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

শাহাদুজ্জামানের সাথে পয়লা মোলাকাত হয়েছিল কয়েকটি বিহবল গল্প বইটিতে। আক্ষরিক অর্থেই গল্পগুলো পড়ে বিহবল হয়েছিলাম, বাঁধাগতের বাইরে একেবারেই আলাদা ঢঙ্গে লেখা, তারিয়ে তারিয়েই পড়েছিলাম। এরপর প্রথম মওকাতেই পড়ে ফেললাম তাঁর দ্বিতীয় গল্পগ্রন্থ, পশ্চিমের মেঘে সোনার সিংহ। এই বইটিতেও নিরীক্ষা নিয়ে লেখকের প্রয়াস লক্ষণীয়, প্রথাগত ধারার বাইরে গিয়ে এই বইতে আমি আবিষ্কার করি নতুন একজন শাহাদুজ্জামানকে।

১৮৯৯ সংখ্যাটা শুনলে কবিতাপ্রেমীদের মাথায় ঝট করে একটা নামই আসার কথা। কাব্যপ্রিয় আমাকে বলা যাবেনা কোন অর্থেই, তাই শিরোনামের মাহাত্ম্য টের পেতে আমাকে কিছুদূর অবধি পড়ে যেতেই হল। ছোটগল্পের মানদন্ডেও গল্পের কলেবর একেবারেই পৃথুল নয়, শুরু হতে না হতেই শেষ হয়ে যায়। কিন্তু এর মাঝেই জীবনানন্দের প্রতি উৎসারিত প্রগাঢ় অনুরাগ ঠাহর করতে বেগ পেতে হয়না বৈকি।

শুরুর গল্পটা পড়ে বইটা ছেড়ে ওঠা মুশকিল হয়ে পড়ে, এরপর তরতর করে বাকিগুলো পড়ে ফেলতে কসুর করিনা। তবে এর মাঝে একটি গল্পের কথা আলাদাভাবে বলতেই হয়, আন্না কারেনিনার জনৈক পাঠিকা। এই গল্পের শুরু পুরনো বইয়ের দোকানে লেখকের আন্না কারেনিনা বইটি কেনার পরের এক বিচিত্র অভিজ্ঞতার মাধ্যমে। গল্পটাকে বলা যায় গল্পের মধ্যেই যেন আরেকটা গল্প, অনেকটা আমার দারুণ পছন্দের একটা ছবি দ্য ফল এর মত। আন্না কারেনিনা বইয়ের মার্জিনে একজন পাঠিকার কিছু মতামত, মতামত না বলে অবশ্য দর্শন বলাটাই যুৎসই। হাসান ভাই নামের একজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে মমতার ছুঁড়ে দেওয়া কিছু আপাতসরল জিজ্ঞাসা লেখককে তাড়িত করে, বইটা পড়ার সময় লেখকের সামনে উন্মোচিত হয় একজন আনকোরা কিন্তু মনোযোগী পাঠিকার নতুন অলিন্দ। এইসব প্রশ্ন থেকে উপজাত হিসেবে বেরিয়ে আসে কিছু অমোঘ প্রশ্ন, মমতা-হাসানের সম্পর্কের একটা হালকা আঁচও পাওয়া যায় এতে। তাই গল্পে লেখকের পাঠক সত্ত্বার চেয়ে অনুসন্ধিৎসু সত্ত্বা প্রবল হয়ে ওঠে অনেকটা এভাবে-

এ ছাড়াও আরও কয়েকটি টুকরো মন্তব্যে লক্ষ করি নানা সামাজিক প্রসঙ্গে আমাদের এই পাঠিকার মনোযোগী পর্যবেক্ষণ।আন্না কারেনিনায় দেখা যাচ্ছে, সে সময় ধনাঢ্য রুশদের মধ্যে নিজের ভাষা ছেড়ে মাঝে মধ্যে ফরাসী বলার একটা ফ্যাশন ছিল। লেভিনের বন্ধুর স্ত্রী ডল্লি যখন তেমনি তার মেয়ের সঙ্গে ফাঁকে ফাঁকে ফরাসী বলছিল লেভিন তখন ভাবছিলেন- ছেলেমেয়েদের সঙ্গে ফরাসী ভাষায় কেন কথা বলছেন উনি? কি অস্বাভাবিক আর কৃত্রিম। ছেলেমেয়েরাও টের পায় সেটা, এই ফরাসী শেখা আর স্বাভাবিকতা ভোলা। মমতা পাশে লিখেছেন- ঠিক যেমন আজকাল এদেশের বড়লোক পরিবারগুলোতে ইংরেজি বলা। ওদেরগুলোও মনে হয় কি অস্বাভাবিক আর কৃত্রিম।

এইভাবে একটি বইয়ের "মার্জিনে মন্তব্যে"র সূত্র ধরে লেখকের সামনে এক অনালোকিত জগতের দুয়ার খুলে যায়। এই ঠাস বুনোটের শহরে একজন অচিন পাঠিকার হারানো ঠিকুজির তিনি সন্ধান করে চলেন, আমরাও পড়ে ফেলি গল্পের মধ্যে আরেকটি গল্প।

তবে বইটির যে গল্পটা আমার চোখে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ আদল নিয়েছে সেটা হল, ইব্রাহীম বক্সের সার্কাস। অন্যান্য গল্পের মত এটি স্বল্পবপু নয়, তবে গল্পের কিছুদূর এগিয়ে এটাও লেখকের ভুয়োদর্শনমূলক বলে মনে হওয়াটা স্বাভাবিক। গল্পের কাহিনি এক প্রত্যন্ত গ্রামে একজন তরুণ চিকিৎসকের কিছু অভিনব অভিজ্ঞতা নিয়ে। সদ্যপাশকৃত এই ডাক্তার বদলি হয়ে চলে আসেন এই দুর্গম জনপদে। এই পরিস্থিতিতে যেটা হওয়াটা খুব স্বাভাবিক; গ্রামের কুসংস্কারপীড়িত মানুষের ভ্রান্ত ধারণা, রোগ বালাই নিয়ে তাদের উদ্ভট খেয়াল, আধুনিক চিকিৎসা সম্পর্কে অজ্ঞানতা এসবই ডাক্তারকে মোকাবেলা করতে হয়। এই পর্যন্ত গল্পটিকে আটপৌরে মনে করলে আসলে খুব বেশি দোষ ধরাও যায়না। কিন্তু এরপর প্রাত্যহিকতার আবডালে আরেকটি অতীন্দ্রিয়, অতিপ্রাকৃত

জগতের হদিস পান ডাক্তার, যেখানে বাস করে ইব্রাহিম বক্সের মত খামখেয়ালি, রহস্যময় একজন লোক, বকরি বুড়ির মত একজন আপাতপমূর্খ কিন্তু দুর্বোধ্য গ্রাম্য প্রবীণার। গ্রাম্য সংস্কারের আড়ালে ইব্রাহিম বক্সের কৌতূহলী মন আর বৈজ্ঞানিক সত্ত্বার ঠিকুজি ডাক্তারকে দ্বিধায় ফেলে দেয়, এতদিনের আধুনিক কলাকৌশলের সাথে এসব উন্মার্গিক অথচ সৃষ্টিশীল প্রজ্ঞার সন্ধান তাকে ফেলে দেয় ভয়ানক টানাপোড়েনে। এক লহমায় ইব্রাহিম বক্সের চিকিৎসা বিষয়ক মতবাদকে উড়িয়ে দিতে যেমন পারেননা, ঠিক তেমনি পারেননা নিজের যুক্তিবাদী সত্ত্বার সাথে টক্কর দিয়ে সবকিছু মেনে নিতে। অবশ্য নিয়তি অচিরেই তাকে এই সংকট থেকে মুক্তি দেয়, সেই গণ্ডগ্রামে ডাক্তারগিরির পাট চুকিয়ে অচিরেই তিনি ফিরে যান নিজের শেকড়ে। গল্পটা একদিক দিয়ে খানিকটা প্রথাগতই বটে, এখানেই তিনি নিরীক্ষার আশ্রয় নিয়েছেন সবচেয়ে কম। চরিত্রগুলোকে স্বাভাবিক বিকাশের পথ দেখিয়েছেন, ঘটনাগুলোকে একসূত্রে গেঁথেছেন দক্ষ হাতে।

তবে অন্যগল্পগুলো নিয়ে কিছু না বললে অন্যায়ই হবে। শিং মাছ, লাল জেল এইসব গল্পে লেখক আসলে একটি থিমের ওপর কিছু ছোট ছোট চুটকি ফেঁদেছেন। গল্পটা ভীষণ রকম সুখপাঠ্য, এ ধরনের গল্প পড়ার আনন্দ অসামান্য, তবে এসব গল্প ভুলে যাওয়াটাও অনেকটা সহজ। অন্যদিকে পন্ডিত গল্পে লেখকের বিদ্রুপের তীর্যক সুর অনেকটাই স্পষ্ট, সখেদে তিনি অর্থগৃধু বুদ্ধিব্যবসায়ীদের অন্তসারশূন্যতা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেন, বাস্তবের কর্কশ জমিনের সাথে সংশ্রবহীন তত্ত্বকথার ঝান্ডাধারীদের একহাত দেখে নেন। এসব গল্পে লেখক অনেকটাই স্বতঃস্ফূর্ত, পাঠক হিসেবে এ ধরনের গল্পের প্রতিও আমার একটা বাড়তি পক্ষপাত আছে অবশ্য।

খুব স্থির একটি স্থির চিত্র গল্পটি আদপে স্রেফ একটা স্ন্যাপশট, যেখানে একটা খুব সংক্ষিপ্ত ঘটনার মাধ্যমে লেখক অনেকগুলো উপসংহার টেনেছেন। এখানে কাহিনি খোঁজাটা হবে অরণ্যে রোদন, তবে নিরীক্ষার ছাপ এই গল্পেও সুস্পষ্ট। উড্ডীন গল্পের ক্ষেত্রেও এই কথা অনেকটা খাটে, এই গল্পটা আমি ঠিক ধরতে পারিনি, মাঝেমাঝেই রাশটা ছুটে গিয়েছে বলে মনে হয়েছে। আয়নার ওপিঠ লাল একজন পঙ্গু মানুষের গল্প, অনেকটা ডাইভিং বেল অ্যান্ড দা বাটারফ্লাই ছবিটার কথা মনে করিয়ে দেয়। এই ঘরানার গল্পের একটা বিষাদমাখা সুর থাকে, সেটা আমাকে ছুঁয়ে যায় বৈকি। কিন্তু কতটা দাগ কেটেছে এ সওয়াল পুঁছলে সেটার উত্তর দিতে আমি খানিকটা ভাববই। চীনা অক্ষর অথবা লংমার্চের গল্পটিকে আমার কিছুটা কমজোরি মনে হয়েছে, ঠিক দানা বেঁধে উঠতে পারেনি ,কেন জানি মনে হয়েছে এটা হয়েছে "একটি হতে গিয়েও না হতে পারা " গল্প।

আরেকটি গল্পের কথা আলাদাভাবে বলব, নিজকলমোহনায় ক্লারা লিন্ডেন। একজন ভিনদেশী রমণী দোভাষীর সাহায্য নিয়ে গন্ডগ্রামে সন্তান প্রসবের ওপর গবেষণা করতে আসেন। অনেক চটকদার পিলে চমকানো তথ্যই তিনি জানতে পারেন, নিজের গবেষণার সাফল্যের কথা ভেবে তিনি উচ্ছ্বসিতও হয়ে ওঠেন। অন্যদিকে এদেশীয় দোভাষীর কাছেও ব্যাপারটা হয়ে দাঁড়ায় দুর্বোধ্য এক প্রহেলিকার নাম, গ্রাম্য মিথের অভিনবত্ব তাকে চমকিত করে। প্রবীণ ধাত্রীর কাছে এর আবেদন আবার সম্পূর্ণ ভিন্ন। গল্পের শেষলাইনটি আসলে অনেক কথাই বলে দেয়-

নিজকলমোহনায় তখন দুপুর। ঢেঁকিঘরে হাওয়া, সেখানে শ্বেতাঙ্গ, বাদামি, শ্যামবর্ণ তিনজন নারীর মিথস্ক্রিয়া।

বইটিতে আমরা একজন শক্তিমান লেখকের দেখা পাই, জগৎ ও জীবন সম্পর্কে যার নিবিড় পর্যবেক্ষণ রয়েছে, সমাজ- সংস্কার নিয়ে যার অভ্রভেদী দৃষ্টিভঙ্গি আছে। লেখক নিরীক্ষার প্রশ্নে কোন আপস করেননি, হয়ত গল্প হিসেবে সবগুলো ঠিক উতরে যেতে পারেনি, কিন্তু প্রত্যেকটি গল্প আলাদাভাবে ভাবতে বাধ্য করবে, চিন্তার খোরাক জোগাবে এটুকু হলফ করে বলা যায়। তাই, একজন পাঠক হিসেবে পশ্চিমের মেঘে সোনার সিংহ পড়ে লেখকের কাছ থেকে প্রত্যাশার পারদও অনেকখানি চড়ে যায়।


মন্তব্য

ধৈবত(অতিথি) এর ছবি

মূল লেখা যেহেতু পড়িনি তাই কন্টেন্ট সম্পর্কে বলতে পারছিনা, কিন্তু তোর সমালোচনার স্টাইলটা আমার ভালো লাগে। চালিয়ে যা।

অদ্রোহ এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ। তোদের উৎসাহ পেলে চালিয়ে যাব বৈকি।

--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

তাই, একজন পাঠক হিসেবে পশ্চিমের মেঘে সোনার সিংহ পড়ে লেখকের কাছ থেকে প্রত্যাশার পারদও অনেকখানি চড়ে যায়

শাহাদুজ্জামানের "পশ্চিমের মেঘে সোনার সিংহ" প্রকাশ হয় ১৯৯৯ সালে, বিহ্বল গল্প ৯৬ সালে। ২০০০/০১ সালে প্রথম তাঁর বইদুটো পড়ি। পড়ে আপনার মতো আমারও প্রত্যাশার পারদ অনেকখানি চড়ে গিয়েছিলো
কিন্তু প্রত্যাশার দায় মেটানোর দায় শাহাদুজ্জামান নেননি। এরপরে তাঁর অনেক পুস্তক হয়েছে, কিন্তু প্রত্যাশার পারদটা ধীরে ধীরে নেমেই গেছে।

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

ফাহিম হাসান এর ছবি

আর্মস্টারডামের ডায়েরি?

ফাহিম হাসান এর ছবি

নজরুল ভাইয়ের সাথে একমত। প্রত্যাশার পারদ চড়েছিল, দ্রুত নেমে যাচ্ছে ইদানিং।

অদ্রোহ এর ছবি

আসলেই, এরপর বলার মত সেই অর্থে আর কোন গল্প পাইনি তার কাছে। বিরতিটা একটু প্রলম্বিত হয়েই গেছে।

--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।

আশফাক এর ছবি

পড়তে হবে। কোথ থেকে কিনলি? আজিজ?

অদ্রোহ এর ছবি

না, বইমেলা থেকে কিনেছিলাম। আজিজে ঢুঁ মারলে পেতে পারিস।

--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।

অদ্রোহ এর ছবি

ইদানীং ঠিক না, অনেক আগে থেকেই আসলে আর কোন গল্প পাইনি তাঁর কাছ থেকে। ক্রাচের কর্নেল তার সবচেয়ে জনপ্রিয় কাজ হতে পারে, কোনভাবেই তার শ্রেষ্ঠ কাজ নয়।

--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

পশ্চিমের মেঘে সোনার সিংহ আর বিহবল গল্প- দুটো বইই একত্রে পড়েছিলাম। গল্পগুলোও ভালো লেগেছিলো- লেখকের প্রতিটা গল্পে নীরিক্ষার একটা সুর থাকে; এইটাই খুব আগ্রহদ্দীপক ছিলো।...

রিভিউ লিখে যা।

অদ্রোহ এর ছবি

দুটো গল্পগ্রন্থেই থেমে থাকা লেখকের ক্ষমতার প্রতি বড় অবিচার।

--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।

অদ্রোহ এর ছবি

পড়ে ফেল, পস্তাবিনা।

--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।

নীলকান্ত এর ছবি

পড়ি নাই , পড়তে হবে।

লেখা ভালো লাগছে রে।


অলস সময়

শওকত এর ছবি

তার 'আমস্টারডামের ডায়রি' এবং সদ্য প্রকাশিত 'চিরকুট '- দুটি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ।

showkat97@gmail.com

অদ্রোহ এর ছবি

হুম, চিরকুট তো একতি দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত কলামের সংকলন, শুধু বই আকারে প্রকাশ করেছেন এই যা। তবে এখন তার উপন্যাস ঃতে দুঃখ পড়ার অপেক্ষায় আছি।

--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

বৈকি।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।