মিহিদানা দিনলিপি-ভালোবাসার সুর

অম্লান অভি এর ছবি
লিখেছেন অম্লান অভি [অতিথি] (তারিখ: বিষ্যুদ, ১১/০৩/২০১০ - ১০:৪১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

নজমুল আলবাবের ‘মিহিদানা দিনলিপি’ পাঠের পর একটি তাৎক্ষণিক উপসংহার

'সন্ধ্যার অন্ধকার মিলিয়ে যেতেই নেমে আসে মিহি কুয়াশা'-কুয়াশার পরতে পরতে আলোর ঝলকানি ফেলে কবি'র চাঁদ। স্মৃতি তার হারানো সম্পদ খোঁজে অতীতের কোঠরে। এই ভাবে কুয়াশা মিলায় শুণ্যতায়।
যাপিত জীবনের টানাপোড়েন প্রাপ্তি আর হিসেবের খাতা খোলা হয় কবিতার রন্ধ্রে রন্ধ্রে। আলো আসবেই কিন্তু 'নাই কোনো ভরসার আলোক বিন্দু..'।
কবির বনবাসের প্রতিক্ষায় অথবা বনবাসের অভিজ্ঞতায় রচনা করে মৃত্যুর সম্ভব্য মধুরতা। আবার 'আলবার'র সময় ০৪ এ সেই সম্ভব্য মৃত্যুকে দীর্ঘ মনে হয়। 'সরল রেখার জীবন এইবার তবে ছুটি নাও।'
ছুটি নেয় কবি কিন্তু নিজেকে হারিয়ে ফেলে অন্যের বৈভবে 'নাতাশার নানির গাড়ীতে'। অন্যরকম অধরার মুখচ্ছবি 'মৌলির বাবার চোখ' এ। প্রকৃতি তার সন্তানকে দেয় অফুরন্ত আবেগ আর প্রকাশের দোত্যনা 'বৃষ্টির গান' শোনায়- 'ইভের ঠোঁট এতটা/ কোমল ছিল না নিশ্চিত'। আদমের কাছ থেকে নিশ্চিত হয়ে এবার 'আমার এখন আকাশ ছুঁতে ইচ্ছে করে'। আগুনচাপা বুকে অন্য সুরকে ধারণ করে 'মেঘ মেঘ দিনে বেলাদি'। আপ্তবাক্যের মত দীর্ঘ বাক্যের পর বিরতিতে উচ্চারণ 'আমি কপালে পরব....'।
হায় বিষন্নতা বিদায় নিল ভেবে কেন যে পড়াবন্ধ করলাম না প্রথম পংক্তিতে 'নতুন করে পুরনো শব্দ' কবিতায়।
'ভালোবেসে সখি নিভৃতে যতনে ......' কতই না বর্ণনা সখির কাঙ্খিত আলিঙ্গনের 'বৃষ্টি অথবা তোমার বন্দনা'য় বৃষ্টি হতে সাধ জাগে আলবার এর।
'ধেয়ে আসছে অশ্লীল আলোর ঝলকানি' -'জ্বরগ্রস্ত বাক্যবিন্যাস' কবিতার অঙ্গনে। এরপর ‘সম্পাদকীয়’, ‘মিহিদানা’, ‘সপ্তাহান্তের কোমল ক্লাসরুম’ পড়তে পড়তে চোখ আর মন নিবিষ্ট হয় 'খোলা চিঠি'র দেহে। কবিতার বক্তব্য 'তুমি কেন এমন ভুলো'- হায় আমরা যদি এমন করেই মেনে নিতাম সব হেয়ালীর ইচ্ছা গুলো!
মিহিদানার মিষ্টি স্বাদ মনের ঘরে রেখে যায় ফিরে ফিরে ভালোবাসার সুর, সহজিয়া ভাষাতে সুখের সমুদ্দুর।


মন্তব্য

তাহসিন আহমেদ গালিব এর ছবি

'সন্ধ্যার অন্ধকার মিলিয়ে যেতেই নেমে আসে মিহি কুয়াশা'

সমস্ত লেখায় এক ধরণের নাটকীয়তা আছে।

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

বইটা কিনেছি। পড়া হয়নি এখনও। তবে অপু ভাই কবি হিসাবে তো বটেই, মানুষ হিসাবেও আমার খুবই প্রিয়। আগ্রহের সাথে পড়ব জন্যই জমিয়ে রেখেছি। প্রচ্ছদটা অসাধারণ! আমার দেখা এবারের বইমেলায় অন্যতম সেরা প্রচ্ছদ এটা।

আপনার অনুভূতি ভাগাভাগি করে নেয়ার জন্য ধন্যবাদ, অভি'দা।

শাহেনশাহ সিমন এর ছবি

ভালো লেগেছে বইটা।

নজমুল আলবাবের কাছে কারনে-অকারনে আমি ঋণী, এর একটা হচ্ছে কবিতার প্রতি আমার আগ্রহ জাগানো হাসি
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

মাহবুব লীলেন এর ছবি

কবিতার প্রায় সময়ই যা হয় তা হলো পুরো বইটার কয়েক্টা মাত্র ভাল্লাগে বা ভালো লাগার মতো ভালো হয়

কিন্তু নজমুল আলবাবের বইটা বোধহয় পুরোটাই ভালো লাগার মতো একটা ভালো বই

০২

নাগরিক যন্ত্রণা নিয়ে অনেক অনেক লেখা হয়। তার বেশিরভাগই হাহুতাশ
কিন্তু মিহিদানার কবিতাগুলো পড়লে মনে হয় নাগরিক যন্ত্রণাকে মেনে নিয়ে তার ফাঁক দিয়ে একটু একটু করে পথ বের করার একটা ক্রমাগত চেষ্টা করে যাচ্ছে কেউ

০৩

মেনে নেয়া মানুষের অনুভূতি নয়; মানিয়ে নেয়ার পথ বের করাই বোধহয় মিহিদানার সবচে বড়ো বৈশিষ্ট্য

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

মেনে নেয়া মানুষের অনুভূতি নয়; মানিয়ে নেয়ার পথ বের করাই বোধহয় মিহিদানার সবচে বড়ো বৈশিষ্ট্য

কবিতা তেমন বুঝি না, এরপরেও লীলেন ভাইর এই কথাটার সাথে হাত তুল্লাম ঃ)

নজমুল আলবাব এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ অভি।
কৃতজ্ঞতা জানবেন।

------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।