রাস্তায় বের হলেই বোতাম দেখি। আর খুব অবাক হয়ে লক্ষ্য করা শুরু করলাম, বোতাম জামার খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা অংশ। মাহফুজ আগে কখনো শার্ট পরতনা, টি-শার্ট পরত, এখন অফিস নিয়ম করেছে শার্ট পরতেই হবে, আমি ওর জন্য শার্ট কিনি আর বোতাম দেখি। দেখলাম, শার্টের বোতাম সাধারণত এক রঙেরই হয়, টি-শার্টের বোতাম ঐরকম শেডের হতে পারে। পাঞ্জাবিতে আবার বোতামের বাহারের জন্য নানারকম দাম। সোনারঙ, রুপারঙ, চন্দনকাঠ। মেয়েদের কামিজ বা বাচ্চাদের হরেকরকম জামায়ও বোতাম-বাহার। আমি কখনো খেয়ালই করিনি আগে, অথচ শহরে একটা বোতাম-বিপ্লব হয়ে গেছে, বেশ বুঝতে পারছি। ছোটবেলার সেই নীল কাগজে চাইনিজ লেখায় সাঁটা বোকা-গরীব টিপবোতাম কোথায় হারিয়ে গেল কে জানে। মা সেলাই করত আর আমি টিপবোতাম ভাজি করে রান্নাবাটি খেলতাম। স্কুলড্রেসের বেল্ট কতদিন বোতামসুদ্ধ চিবিয়ে নষ্ট করেছি আর মার খেয়েছি।
একদিন খেতে বসে মাহফুজকে বললাম আমার বোতাম-বকবক। মাহফুজ বলল, একদিন আমি যখন বাসায় ছিলামনা, মিতা এসেছিল বাসায়।
___ কে মিতা?
___ মিতার সাথে আমার প্রেম ছিল, তো ও একটা শার্ট নিয়ে এসেছিল…
___ দাঁড়াও, দাঁড়াও ফাজলামি কর আমার সাথে? এজন্যই আমি তোমাকে কিছু বলিনা। একটা সিরিয়াস ব্যাপারের মাঝে সবসময় ফাজলামি।
___ কোনটা সিরিয়াস? বোতাম না মিতা?
___ দেখ আমি অনেকদিন তোমাকে বলিনাই, তুমি হাসবা দেখে, কিন্তু এই বোতামটা কোথা থেকে আসল বল?
___ আমিও তো এতদিন তোমাকে মিতার কথা বলিনাই, তুমি…
মাহফুজের হাসি চেপে রাখার প্রবল চেষ্টার এই ভঙ্গি অসহ্য লাগে আমার। পানি খাও, বিষম খাবা, বলে আমি খাওয়ার টেবিল ছেড়ে উঠে যাই।বুঝতে পারছি, মাহফুজ বিশুদ্ধ ফাজলামি করছে, তারপরও পরদিন সকালে মাহফুজ অফিস যাবার পর ওর ফেসবুকের ফ্রেন্ডলিস্ট খুব মন দিয়ে দেখি। বেশিরভাগই কমন ফ্রেন্ড আমাদের, ওর প্রতিটা খুঁটিনাটিই জানি আমি, খুবই ছকে বাঁধা বেড়ে ওঠা মাহফুজের। অফিস থেকে তাড়াতাড়ি বাসায় আসতে পারলে বাঁচে, ভীষণ ভালবাসে কার্টুন দেখতে, মাঝে মাঝে তো ওর মানসিক বয়স নিয়েই সন্দেহ হয় আমার।তারপরও মাহফুজ ঘুমিয়ে গেলে, মিতা নামে কেউ নেই এ ব্যাপারে শতভাগ নিশ্চিত হবার পরও আমি সেদিনের খাবার টেবিলের অর্ধেক হওয়া গল্পটা মনে মনে শেষ করতে থাকি। নিশ্চই মিতা বলেছিল ওকে নতুন শার্টটা পরে দেখাতে, মাহফুজের পরে থাকা শার্টটা কী মিতার সামনেই খুলেছিল?
সেদিন সব বন্ধুদের খেতে বললাম। ব্যস, মাহফুজ বলে দিল সবাইকে বোতামটার কথা। সাব্বির শুরু করল, “ তোদের বারান্দার পাশের কদমগাছটায় যে ভূতটা থাকে, তার তোদের পড়ার টেবিলটা খুব পছন্দ হইসে। সে রাতের বেলায় টেবিলটায় বসে লেখে, তারই শার্টের বোতাম”।
“অথবা এই বাড়িতে একটা খুন হয়েছে। ওই যে তোরা বুয়াকে রেখে চিটাগাঙ গেলি বেড়াতে। দারোয়ান ব্যাটা পয়সা খেয়ে কোন গ্রুপকে ঢুকাইসে। লাশ গুম করার সময় বোতাম খুলে পড়ে গেছে”। এটা সায়রার বক্তব্য।
“ধুর এইসব থ্রিলার আর হরর বাদ দে, তুই যে মাহফুজের জন্মদিনের জন্য শার্টটা কিনলি সেদিন, তারপর লুকায় রেখেছিস, বাসায় এসে সাইজ দেখতে গিয়ে হয়ত খুলে পড়েছে, নতুন শার্ট দেখে তোর মনে হচ্ছে অচেনা বোতাম…” এতদূর বলেই অদিতি বুঝেছে অন্যায় করেছে, জিভ কাটল। আর মাহফুজ নতুন জামা, নতুন জামা বলে লাফালাফি শুরু করল। আমি হাসব কি কাঁদব কি রাগব বুঝতে না পেরে হতভম্ব বসে থাকলাম।
সেদিন আবিষ্কার করলাম, নিউমার্কেটের চিপায় একটা ছোট্ট দোকান আছে, যেখানে নানানরকমের বোতাম পাওয়া যায়। সেখান থেকে অনেকগুলো বোতাম কিনে বাসায় ফিরলাম। কিন্তু কোন বোতামই টেবিলের ওই বোতামের সাথে মেলেনা। আমি ভাবছি, বোতামটা তো একটা জামায় ছিল, জামাটা একটা মানুষের ছিল, মানুষটা কে? গত দুইমাসে বাসায় কারা এসেছে, তাদের লিস্ট করলাম, কিছুতেই কোন কূলকিনারা করতে পারিনা। ভার্সিটি বন্ধ থাকলে মাহফুজের বোন সুমনা প্রায়ই এসে থাকে আমাদের বাসায়।তাহলে কি সুমনার কোন বন্ধুর বোতাম? কিন্তু সুমনা তো কখনোই ওর কোন ছেলেবন্ধুকে আনেনি এ বাসায়, নাকি আমাদের না জানিয়ে এনেছে, মাহফুজের সাথে কী এ ব্যাপারে কথা বলা ঠিক হবে? ইদানীং দেখছি বুয়ার সাথে দারোয়ানের খুব ভাব হয়েছে, যাওয়া-আসার পথে সারাদিনই পান খেতে খেতে গল্প করে, পেপারে প্রতি সপ্তাহেই তো খুনের খবর বের হচ্ছে, বাড়িওয়ালা ভাবির সাথে কথা বলতে হবে দারোয়ানকে নিয়ে।
এরপর একদিন সাবিহা আসল বাসায়। আমার এই বন্ধুটাকে আমি বেশ ভয় পাই, বুঝতে পারিনা ঠিকমত। একমাথা রোদ মাথায় নিয়ে হাঁটে শুধু শুধু, আর প্রায়ই আমাদের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় কোন কারণ ছাড়াই। বিয়ে করেছে নিরঞ্জন গঙ্গোপাধ্যায় কে, এক বছর হল।
__ তোর বাসায় একটা জিনিস ফেলে গেছি মনে হয়। একটা বোতাম। কোথাও খুঁজে পাচ্ছিনা। খুঁজে দেখবি তোর বাসায়?
__ তুই ফেলে গেছিস? তোর বোতাম? সবজে-বাদামি রঙের?
__ হুম।
__ তুই ওই বোতাম নিয়ে কী করিস?
__ নিরঞ্জন আর আমার সেপারেশন হয়ে গেছে।
__ মানে?
__ নিরঞ্জনের বাড়িতে কিছুতেই মেনে নিলনা। ওর ছোট বোনও ওর সাথে কথা বন্ধ করে দিয়েছিল। নিরঞ্জন ভেবেছিল আস্তে আস্তে সবাই মেনে নেবে। বাড়ির সাথে একদম এমন বিচ্ছিন্ন হয়ে বাঁচা শেখেনি ও। শেষপর্যন্ত বিয়েটা ভেঙে দিল নিরঞ্জন। সামনের ভাইফোঁটায় অঞ্জলি নিশ্চয় ফোঁটা দেবে ওকে, বল? নিরঞ্জন আর আমি লোডশেডিঙ হলেই ছাদে উঠতাম, আর কোথা থেকে অদ্ভুত একটা বাঁশি শুনতে পেতাম। এত মনখারাপ করা একটা সুর, অথচ আমাদের দুজনেরই তখন মনে হত, আমরা পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ। আলো চলে আসলেই বাঁশি আর বাজতনা, চারদিকে ঝলমল করত আলো কিন্তু নিরঞ্জনের মুখে দেখতাম রাজ্যের আঁধার। সেপারেশনটা হয়ে যাবার পর, বাঁশিওয়ালাকে খুঁজে বার করি, ওনার বাঁশিটা চাই। কিন্তু উনার একটাই বাঁশি, একটাই জামা, স্কুলে পরা সুখী মানুষের জামার গল্পটা মনে আছে তোর? আমি বলি, কেন বাজান বাঁশি? উনি বললেন, এবাদত করি গো আম্মা, তেনার সাথে কথা কই। বাঁশিওয়ালা চলে গেলে দেখি উনার জামার একটা বোতাম পড়ে আছে। আমি রেখে দিলাম। আমার সুখের দিনের সুর। বাঁশিওয়ালার সুখী জামার একটুকরো সুর বা বোতাম।
আমি আর কোন কথাই বলতে পারিনা। বোতামটা এনে দেই। সাবিহা চলে যায়। মাহফুজ সেদিন গাজরের হালুয়া খেতে চেয়েছিল, সুমনা কে ফোন করি এই শুক্র-শনিবার এখানে এসে থাকার জন্য আর গাজর সেদ্ধ বসাই।
মন্তব্য
অনেক সুন্দর.........
ছোটো ছোটো বাক্য, মন ছুয়ে যায়। ভালো লেগেছে।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
বাহ্- চমতকার লেগেছে গল্পটা!
আনন্দী খুব ভাল লাগল।
একটা বোতাম নিয়ে এত কান্ড!?
সাধু!
ভাল্লেগেছে।
জহিরুল ইসলাম নাদিম
যা হওয়ার তাই হতো। বোতাম তো ছুতো ।
ভালো।
_________________________________________
Any day now, any day now,
I shall be released.
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
সাবিহার আবির্ভাবের আগ পর্যন্ত গল্পটা শুধু ভালো লেগেছে বললে কম বলা হবে। ঐ পর্যন্ত গল্পটা যে গতিতে, যে ধরণের পথ ধরে আগাচ্ছিল সাবিহা আসায় তা পুরোটাই পালটে গেছে। সাবিহার আবির্ভাব থেকে গল্পটাকে আরেকটা গল্প মনে হয়েছে যেখানে তাড়াহুড়া করে কাহিনীর আদি-অন্ত বলে বোতামের রহস্য উদ্ঘাটন করা হয়েছে।
সাবিহার কাহিনী আলাদা গল্প হতে পারে। আন্তঃধর্মীয় বা আন্তঃসাংস্কৃতিক বৈবাহিক সম্পর্কগুলোকে কাছ থেকে দেখার দুর্ভাগ্য আমার হয়েছে। এটা নিয়ে বড় পরিসরে গল্প ও উপন্যাস হওয়া দরকার।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
পান্ডবদার মন্তব্যের সঙ্গে সহমত। বোতামকে ঘিরে একটি দাম্পত্য সম্পর্কের নানা দিক ধীরে ধীরে খোলস ছাড়াচ্ছিল, খুব মজা পাচ্ছিলাম। অন্যদিকে সাবিহার গল্পটা কিন্তু আলাদা ক্ষেত্র দাবী করে। আর তোমার কথনভঙ্গি নিয়ে নতুন করে আর কি বলবো। শুধু লিখে যাও - আবারও বলছি লেখা তোমার জাতীয় দায়িত্ব।
ভাল লেগেছে, যদিও উপসংহারটিকে একটু আরোপিত মনে হয়েছে... কিন্তু প্রথম অংশটুকু দূর্দান্ত!
লেখাটা সামগ্রিকভাবে ভালো লাগলো কিন্তু কিছু অংশ নিয়ে একটু অভিযোগ আছে। সেই অংশগুলি অবশ্য পাণ্ডবদাই বলে দিয়েছেন। শেষের তাড়াহুড়াটুকু শুরুর জমাট ভাবটা কিছুটা নষ্ট করে দিয়েছে।
তবে আপনার বলার ভঙ্গি এবং বর্ণনা বরাবরের মতোই চমৎকার
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
সকালে পড়েছি একদফা। এক ধরনের ঈর্ষামিশ্রিত মুগ্ধতা নিয়ে পড়তে পড়তে একদম শেষ অংশে এসে কেমন যেন তাল বদলে গেলো। কেমন যেন অনুবাদ অনুবাদ মনে হতে লাগল হঠাৎ করে।
এখন আরেকবার পড়লাম। এবার মনে হচ্ছে সাবিহার গল্পটা মাথায় রেখেই পুরোটা লেখা। কিন্তু সাবিহার আবির্ভাব এখানে খুব বেশি আকস্মিক হয়ে গেছে।
|| শব্দালাপ ||
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
ভাল্লাগছে।
==============================
হা-তে এ-ক প্র-স্থ জো-ছ-না পা-ড়ে-র ঘ্রা-ণ
আলোকবাজি
==============================
হা-তে এ-ক প্র-স্থ জো-ছ-না পা-ড়ে-র ঘ্রা-ণ
খোমাখাতা
ভালৈছে
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
আগাগোড়া ভালো লেগেছে। একটা সংসারে যেন রহস্য কাহিনী ঢুকে গেছে।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-
সেই সুদুরের সীমানাটা যদি উল্টে দেখা যেত!
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
ভালো।
খুব ভালো লেগেছে। এত বাজে রেটিং পাবার কথা না লেখাটার।
খুব ভালো লাগলো.........।।
শেষ দু'টা অনুচ্ছেদ যেন এই গল্পে আগন্তুক। মানে এর আগের অনুচ্ছেদগুলি যেভাবে, যে ভঙ্গিতে লিখেছেন তার সাথে ঠিক মেলেনা। একটু সুর কেটে যাওয়ার মতো অনুভূতি হয়। তবে আমার কাছে মনে হয়েছে শেষ অনুচ্ছেদ দু'টা সহই একই তালে গল্পটা বলা যেত যদি সাবিহার কাহিনীতে এসে গল্পটা আরেকটু বিস্তার পেতো। প্রথম অংশটা খুবই ভালো লেগেছে। আর সামগ্রিকভাবে গল্পটা বেশ ভালো লেগেছে।
আমার কিন্তু পুরো গল্পটাই ভাল লেগেছে। এটা সত্যি যে শেষের দিকটা খুব বেশী হুড়োহুড়ি করে বড় হয়ে যাচ্ছে ভেবে শেষ করে দেওয়া হচ্ছে টাইপ মনে হয়েছে। জীবনটা তো এমনই, কত তুচ্ছ ঘটনাকে আমরা কল্পনার ডাল-পালা ছড়িয়ে বিশাল করে ফেলি, অথচ কিনা তার সমাধান কিংবা পেছনের কারণটা দেখা যায় হাস্যকর রকমের সহজ।
সাবিহা'র গল্প যেখান থেকে শুরু হল, পাঠক হিসাবে আশা করছিলাম আরো খানিকটা বর্ণনা। কবে কি করতে গিয়ে একটা বোতাম সাবিহার বাড়িতে না পড়ে তার বান্ধবীর স্বামীর লেখালেখির টেবিলে পাওয়া গেল।
আর লেখার কথা কি বলব, অসাধারণ প্রানবন্ত গতিময় লেখনী।
দৃশা
আমি কোথায় জানি পড়েছিলাম, এই গল্পের শেষে উদ্ভূত পরিস্থিতির একটা এংলিশ নাম আছে: deus ex machina! বেশীর ভাগ পাঠক, সমালোচক এই পরিস্থিতির সমালোচনা করে থাকেন, আমি আর নতুন কিছু কী বলব, তবে এটা ঠিক যে আপনার লিখা পড়তে যেয়ে, এখনই উদ্ভট কিছু একটা উন্মোচিত হবে, এই রকম আশঙ্কা করছিলাম, শেষে সব উত্তেজনার অতৃপ্ত সমাপ্তি হল!
ছেড়া পাতা
ishumia@gmail.com
সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ পাঠ আর মন্তব্যের জন্য
গল্পের শেষটা আসলেই কেমন জানি হয়ে গেছে। আমার টেবিলে একটা বোতাম পড়ে ছিল বেশ কিছুদিন। তখন এই গল্পটা আর নীচের এই কবিতাটা লিখেছিলাম। সাবিহার ঘটনার আগে পর্যন্ত গল্পটা লিখে কবিতাটা লিখি। তারপর আবার গল্পটা শেষ করতে গিয়ে কবিতাটা গল্পে ঢুকে গেল। সব মিলিয়ে একটা খিচুড়ী
বোতাম
পড়ার টেবিলে একটা সবজে-বাদামি বোতাম পড়ে আছে,
বেশ কিছুদিন।
ভাবতে ভাল লাগছে বোতামটা একজন বাঁশিওয়ালার।
শহরে রাত নামলে যিনি বাঁশিতে কথা বলেন ঈশ্বরের সাথে।
আমরা সারাদিন শহরে থুতু-কফ ফেলি, পলাশের চারা মাড়াই,
অন্ধ ফকিরকে অন্ধ না বলে সন্দেহ করি।
আর রাত হলে বাঁশিওয়ালা আমাদের সবার হয়ে এবাদত করেন।
আমার ভাবতে ভাল লাগে তিনি যীশু, শহরের পাপ পান করে বাঁশিতে ক্যান্সার, ধুঁকছেন।
বাঁশিওয়ালার সুখী জামার একটুকরো সুর বা বোতাম পড়ে থাকে আমার টেবিলে।
বোকা-রাত শেষ হলে কানে যে যার গান গুঁজে সকালে বের হই ব্যক্তিস্বাধীনতায়, যার যার নিজস্ব পাপের খোঁজে।
কবিতাটাও পছন্দ হলো। আলাদা পোস্ট হিসেবে দিলেও মন্দ হতো না।
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
এটা আগে পড়া হয়েছিলনা। আমার পুরোটাই ভাল লেগেছে। কবিতাটাও। পুর্ণ সচলতার দাবি জানালাম, আরো গল্প লেখ।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
এই মন্তব্য তো আগে দেখিনাই, পূর্ণ সচল করে দিল তো!!!
ভাল লেগেছে আপনার গল্পটা। সচলত্বে অভিনন্দন।
ধন্যবাদ
আমার একটা গল্পের লোডশেডিঙের বাঁশি আর আন্ত:ধর্ম বিয়ে- প্রসঙ্গ দু'টো একই সাথে পেয়ে একটু চমকালাম। আপনি অনেক ভালো লেখেন।
তাই নাকি । কোথায় পড়া যাবে আপনার গল্প? অনলাইনে আছে?
সচলাভিনন্দন! এই উপলক্ষে এক কালে পোস্ট দেয়ার কনভেনশন ছিল।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
পোস্ট দিয়েছিলাম তো পাণ্ডব দা
http://www.sachalayatan.com/anandi_kalyan/33533
অনলাইনে নেই। তবে আপনার কাছে থাকার একটা সম্ভাবনা আছে মুনিয়া যদি আপনাকে পিডিএফটা পাঠিয়ে থাকে। এর বেশি বলতে বিব্রত লাগছে।
আচ্ছা, আপনি তাহলে জিমি । দুঃখিত, চিনতে পারিনি এতক্ষণ।
মুনিয়া পাঠিয়েছিল তো, আপনাদের গল্পগুলি পড়ে খুব ভাল লেগেছিল। সচলায়তনে লেখার আমন্ত্রণ রইলো।
অসাধারন ! সিম্পলি অসাধারন গল্প ।
__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার
নতুন মন্তব্য করুন