দু'জনে

আনন্দী কল্যাণ এর ছবি
লিখেছেন আনন্দী কল্যাণ (তারিখ: বুধ, ০১/১২/২০১০ - ২:০৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

রাষ্ট্রনায়ক

গুটিশুটি মেরে হাঁটুতে মুখ গুঁজে বসে থাকি,
আর কফি খাই।
বেশ লাগে।

বাইরে দুই-তিনটা বিশ্বযুদ্ধ হয়,
তিন-চারটা জাতিসংঘ হয়,
সাত-আটটা পারমাণবিক বোমা হয়।
আমি একটা আঙুলও নাড়াইনা।
এমন নিরপেক্ষতার নজিরে নজরানা পাই একটা-দুইটা দেশ।
নিষ্ক্রিয়তাই সকল ক্ষমতার উৎস।

অপ্রমাণিত

কাঠ-চেরাই কলে পৌঁছে গেছি,
থুবড়ে পড়ে আছে মল্লিকাবন,
আর গহন।
এবার ফিনকি দিয়ে কাঠের গুঁড়ো,
গহনের ব্যবচ্ছেদ।

কিছুইনা।
শুধু হতে চেয়েছিলাম একটা কুর্চিগাছ।
বসন্ত ছিল বোন।
আর মাতোয়ালি পাখিরা।

এখন খুবজোর টেবিলের পায়া,
চেয়ারের হাতল।
এই হওয়া হল।
কুর্চির ফুল না,
ঝোলে ভেজা তোয়ালে।
অপ্রমাণিত।


মন্তব্য

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

১ম কবিতা ... অদৃশ্য আঙুল ঠিকই নড়ে।

২য় কবিতা ... বহুবার রিসাইকেল হয়েও প্রাণ ফিরানো কখনো যায় না, তবু এই রিসাইকেল বলে ইকোফ্রেন্ডলি!


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

আনন্দী কল্যাণ এর ছবি

আঙুল/ অদৃশ্য আঙুল নাড়িয়ে তো পাওয়া যায়ই। তবে কিছু না করাটাও যে একটা করা, সেটা বলতে চেয়েছিলাম।

বহুবার রিসাইকেল হয়েও প্রাণ ফিরানো কখনো যায় না

ভাবনাটা অসাধারণ!!!!

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

১. অনিন্দ্যের সাথে একটু দ্বিমত, কবির সাথে প্রায় সহমত। কেন? আমার জানামতে কালানুক্রমিক ধারাগুলো এই রকমঃ

1. Enthusiastically initiation
2. Confusion
3. Chaos
4. Search for the guilty
5. Punish the innocent
6. Praise who has not participated

সেক্ষেত্রে দৃশ্যমান বা অদৃশ্য আঙুল (কবি এখানে বানান ভুল করেছে) না নাড়ালেও এক-আধটা দেশ মেলে।

২. কুর্চিফুল ফোটালেও টেবিলের পায়া বা চেয়ারের হাতল হওয়া ঠেকে থাকেনা। ফুল ফুটিয়ে বা না ফুটিয়ে এসব কিছু হওয়া মন্দ কিছু নয়। পৃথিবীটাই খাদ্য-খাদক সম্পর্কে আবদ্ধ। কোন একটা পর্যায়ে খাদক হতে না পারলে খাদ্য হওয়াই নির্বন্ধ। আচ্ছা, কুর্চি কি বৃক্ষ? একটু সন্দেহ হচ্ছে।

৩. দুটো কবিতার ক্ষেত্রে ভালো লাগাটা দুই রকমের। তবু ভোট দিতে হলে 'অপ্রমাণিত'কেই দেবো। এর স্টাইলটা সিম্পলী অসাধারণ!



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

আনন্দী কল্যাণ এর ছবি

ঙ লিখতে পারছিলাম না, এখন পারছি :)। ঠিক করে দিচ্ছি।

আমি যতদূর জানি, কুর্চি বৃক্ষ। মগবাজার ইস্পাহানি কলোনিতে একটা কুর্চিগাছ আছে।
অদ্ভুত মিষ্টি গন্ধ, সাদা ফুল, আর ফুলটা দেখতে একদম ফুলের মত।

প্রথম কবিতাটার ব্যাখ্যা পড়ে দারুণ লাগল। আমি নিজেই ঠিকঠাক বুঝতে পারছিলাম না কি লিখেছি, এখন পারছি হাসি

অনেক, অনেক ধন্যবাদ, পাণ্ডবদা।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

কুর্চি! হ্যাঁ এইবার এই বদটারে চিনতে পারলাম। অত্যন্ত জঘন্য টেস্টের একটা ঔষধ বানানো হয় এটা থেকে - পেটের অসুখের জন্য। ফুল-গাছ দুটোই দেখতে অনেকটা রঙনের মতো। আমাদের স্থানীয় ভাষায় একে মটকিলা/মটকুড়া বলা হত। তাই একটু বিভ্রান্ত হয়েছিলাম। কিন্তু এর কাঠ দিয়ে জ্বালানী ছাড়া আর কিছু হওয়া সম্ভব না।

কুর্চির একটা নিকটাত্মীয় আছে কূটজা নামের। সেটা দিয়ে হয়তো চেয়ার টেবিল বানানো যেতে পারে, আমি নিশ্চিত না।

মগবাজারের ইস্পাহানী কলোনীতে ঢুকবোনা, ওখানে অনেক দীর্ঘ নিঃশ্বাস জমা আছে।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

শাহেনশাহ সিমন এর ছবি

আপনারো? খাইছে
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

শাহেনশাহ সিমন এর ছবি

ডুপ্লি ঘ্যাচাং
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

আনন্দী কল্যাণ এর ছবি

পাণ্ডবদা, আমি যেই কুর্চিগাছটা দেখেছিলাম, সেটার ছবি দিলাম নিচে। হ্যাঁ, চেয়ার-টেবিল বানানো সম্ভব নয়। কিন্তু, খুবজোর চেয়ারের হাতল বা টেবিলের পায়া। নাহয়, কবিতার অসম্ভবতায় ভরসা রাখলাম হাসি

আর দীর্ঘশ্বাস কেনু???

Picture 020

Picture 023

আনন্দী কল্যাণ এর ছবি

হয়তো, আমি ভুল জানি, এমনও হতে পারে। কলোনির একজন মালি বলেছিলেন, এই গাছটা কুর্চি। আর সেসময় মাধুকরী পড়ে মাথায় খালি কুর্চি ঘোরে। আমিও কুর্চিগাছ খুঁজে পেয়ে খুশি হয়ে ছবি তুলে রেখেছিলাম। এতবছর ধরে ভেবেছি, এই গাছটা কুর্চি, এখন যদি তা না হয় মনখারাপ হয়ে যাবে মন খারাপ

অবশ্য মনখারাপের জন্য তো আর গাছের নাম-ঠিকানা বদলানো যাবে না হাসি
এই গাছটা কি কুর্চি?

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

আমি ধরে নিচ্ছি তুমি আমাকে কোন প্রশ্ন করোনি।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

দিগন্ত বাহার [অতিথি] এর ছবি

অপ্রমাণিত ! ক্ষ্যামতা থাকলে পাঁচাইতাম। হাসি

আনন্দী কল্যাণ এর ছবি

পাঁচানোর দরকার নেই। আপনার ভাল লেগেছে, সেটাই যথেষ্ট হাসি

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

কবিতা দুটি খুব ভালো লাগলো।

এবার ফিনকি দিয়ে কাঠের গুঁড়ো

মন মাতানো রূপক!
-----------------------------------
যে মাঠে ফসল নাই তাহার শিয়রে
চুপে দাঁড়ায়েছে চাঁদ — কোনো সাধ নাই তার ফসলের তরে;

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

আনন্দী কল্যাণ এর ছবি

অনেক, অনেক ধন্যবাদ আপনাকে কবি হাসি

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

নিষ্ক্রিয়তাই সকল ক্ষমতার উৎস।

চমৎকার লিখেছেন, দুটোই ভালো লাগলো।

======================================
অন্ধকারের উৎস থেকে উৎসারিত আলো, সেইতো তোমার আলো।
সকল দ্বন্ধ বিরোধ মাঝে জাগ্রত যে ভালো, সেইতো তোমার ভালো।।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

আনন্দী কল্যাণ এর ছবি

পড়বার জন্য অনেক ধন্যবাদ হাসি

সুরঞ্জনা এর ছবি

কিছুইনা।
শুধু হতে চেয়েছিলাম একটা কুর্চিগাছ।

আপনার কবিতা বড়ই ভাল লাগে আনন্দীদি।
হাসি
............................................................................................
স্বপ্ন আমার জোনাকি
দীপ্ত প্রাণের মণিকা,
স্তব্ধ আঁধার নিশীথে
উড়িছে আলোর কণিকা।।

............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্‌ চিনে।

আনন্দী কল্যাণ এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ, সুর হাসি

জি.এম.তানিম এর ছবি

ভালো লাগলো, কবিতার মধ্যে কত বড় গল্প...
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।

-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।

আনন্দী কল্যাণ এর ছবি

দেঁতো হাসি

শাহেনশাহ সিমন এর ছবি

ভালো লাগলো ২টাই হাসি
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

আনন্দী কল্যাণ এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ হাসি

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

দুইটাই দারুণ...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

আনন্দী কল্যাণ এর ছবি

ধন্যবাদ, নজরুল ভাই হাসি

ফকির লালন এর ছবি

ভালো লাগলো।

আনন্দী কল্যাণ এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ, পড়বার জন্য হাসি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।