আমাদের উচিত মানুষের সেবায় নিজেদের নিয়োজিত করা। আর অসুস্থ মানুষের সেবা করার চাইতে ভালব্যপার আর হতেই পারেনা। তাই আসুন আমরা অসুস্থ মানুষের সেবা করি। আমরা একটা হাসপাতাল দেই। সমস্যা কি? আপনি আর আমি দু'জনেই তো ডাক্তার। আমাদের মতো আরো ডাক্তার অনেক আছে। তাদেরকেও বুঝিয়ে শুনিয়ে দলে নিয়ে আসা যাবে। আসেন উদ্যোগটা নিয়েই ফেলি। আমি কিন্তু ইয়ার্কি মারতেছি না। সত্যি বলছি, আসেন একটা হাসপাতাল দেই।
আমি কেন ইয়ার্কি মারব! ডাক্তাররে ডাক্তার বলা কি অন্যায়! আচ্ছা সত্যি করে বলেন তো আপনার বাসায় এখন কয় রকমের কয়টা ট্যাবলেট আছে? আমার কাছে অন্তত ১৫ রকমের গোটা পঞ্চাশেক ট্যাবলেট তো আছেই। আমিও আপনার মতো পাতলা পায়খানা হলে এমোক্সিসিল, মক্সিল অথবা টাইসিল কিনে খেয়ে নেই দুটো। আমাশয় হলে ফ্লাজিল বা ফিলমেট। মাথাব্যাথ্যায় নিশ্চিত নাপা, এইস বা প্যারাপাইরল। এখন আবার এসব প্যারাসিটামলের নতুন ভার্সন বেরিয়েছে। মুল নামের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে প্লাস বা এক্সট্রা আর উপাদানে গিয়ে জুড়েছে ৬৫ মিলিগ্রাম ক্যাফেইন। এইটা খাইলে মনে বল বেশি পাই। ভাবি, কড়া ওষুধ পড়ছে। আর চিন্তা নাই। আর কোথাও ব্যাথা হলে নিশ্চিত এফেনাক বা ক্লোফেনাক খাই সঙ্গে এসিডিটির জন্য রেনিডিন, রেনিটিডিন বা নিওট্যাক।
কিছু ব্যপার যদিও আমাদের কাছে ক্লিয়ার না। যেমন কোনগুলা এন্টিবায়োটিক, কোনগুলা এন্টিব্যাকটেরিয়াল, কোনগুলা এন্টিভাইরাল, কোনগুলা এন্টিফাঙ্গাল, কোনগুলা এন্টিপ্রোটোজোয়ান, কোনগুলা এন্টিহেলমিনথিক, কোনগুলা এন্টিইনফ্লামেটরি, কোনগুলা এন্টিহিস্টামিন... ধুর বাদদেন। এইসব ফাউপ্যাঁচাল। আমার রোগ সারলেই হইছে। রোগ সারার ওষুধের নাম আমরা জানি। হাসপাতাল দিলে সমস্যা হবেনা। আসেন একটা হাসপাতাল দেই।
কিছু মমিন আছে দেখবেন, 'বালের গেঁয়ান' দেবে কানের কাছে এসে ঘ্যানঘ্যান করে। কত কি যে বলে এইগুলা। শুনলে আপনার মাথা আউলায়ে যাবে। এদের গেঁয়ানের কোন সীমা পরিসীমা নেই। বলে এন্টিবায়োটিক মেলা রকমের। কোনটা জীবানুর শরীরের বাইরের চামড়ায় গিয়া ঝামেলা পাকায়, কোনটা ঝামেলা পাকায় জীবানুর শরীরের ভিতরের চামড়ায়, কোনটা গিয়া জীবানুর প্রোটিন বানাইতে দেয়না, কোনটা বানাইতে দেয়না নিউক্লিয়িক এসিড, কোনটা জীবানুর জরুরী দরকারি কিছু মালমশলা তৈরীতে বাগড়া দেয়। আবার নতুন বলে ওষুধ আসছে জেনেটিক। এগুলোর নাম নাকি 'এন্টিসেন্স এজেন্ট' আবার কেউ বলে 'নিউবায়োটিক। এতোসব এন্টিবায়োটিকের নাকি আবার দুইটা ভাগ, ব্রডস্পেকট্রাম আর ন্যারোস্পেকট্রাম। খালি এন্টিবায়োটিক না, আরো আছে এন্টিব্যাকটেরিয়াল। ভাই মাথা নষ্ট। এতো ঝামেলায় যাইয়েননা। মাথা ব্যাথা করলে প্যারাসিটামল খান। জ্বর হইলেও প্যারাসিটামল খান। একটায় না সারলে দুইটা খান। গেয়ানিরা আবার বলে জ্বর কোন রোগ না, রোগের উপসর্গ। দেখেন দেখি ভাই, রোগের উপসর্গের জ্বলায় আমার ইয়ে দিয়ে লাল সুতা বেরোচ্ছে। আর উনি আসছেন রোগের হিসাব নিতে। আগে রোগের উপসর্গ সারাই, রোগ হইলে পরে দেখা যাবে।
ভাই গেয়ানীদের কথায় কান দিয়েন না। এন্টিবায়োটিক আপনার লিভার আর কিডনি'র বারোটা বাজায় বলে যারা চিক্কর পাড়তেছে। আসেন তাদের গলা চাইপা ধরার ব্যবস্থা করি। কোন ওষুধ খাইলে জীবানু উল্টা ১৫ গুণ বেশি বাচ্চা দেয় এতো নাম মুখস্ত রাখার দরকার নাই। তিন রকমের তিনটা ওষুধ খাইলেই হইছে। এক ওষুধ আরেক ওষুধের লগে মিল্লা ঝামেলা পাকালে পাকাক। আমাগো হাসপাতালে হাজারে দুইচারটা রোগী মরলে এতো খোঁজ হইবনা। আর বড় কথা হইতেছে হায়াত-মউত মানুষের হাতে না। কেউ মরলে আমাগো কি দায়!
আমারে একবার এক বলদে কি কয় জানেন। কয় যে, নিয়মমতো এবং মাত্রা বুইঝা ওষুধ না খাইলে বলে ওষুধ-প্রতিরোধী জীবানু তৈরী হয়। সেই জীবানু আর পুরান ওষুধে মরে না। এখন বলে বাজারে সব তৃতীয়/চতুর্থ প্রজন্মের ওষুধ চলতেছে। কয়দিন পরে যখন এইগুলা জীবানুদের কাছে ডালভাত হয়ে যাবে তখন কি হবে, এই চিন্তায় বলে মাইক্রোবায়োলজিস্ট'গো ইয়ে দিয়ে ইয়ে বের হচ্ছে সমানে। বুঝছেনতো ভাই। আমাগো ওষুধের দিন আর বেশিদিন নাই মনে হইতেছে। শেষ সুযোগে একটা হাসপাতাল দেই আসেন।
কি কন? মাথা ব্যাথা করতেছে। দুইটা নাপা এক্সট্রা নাইলে এইস প্লাস খাইয়া লন। বেশি ব্যাথা করলে দুইটা এমোক্সিসিল ৫০০ খাইয়েন। গা-হাত-পা চুলকায় নাকি? মনে হয় এলার্জির সমস্যা। ও দুইটা হিস্টাসিন খাইলেই যাইবোগা। শরীর ম্যাজম্যাজ করলে এসপিরিন খায়াফালান। রাইতে ঘুমের সমস্যা নাইতো আপনার? অবশ্য এইটা আজকাল কোন ব্যাপারনা। রিলাক্সেন আছেনা! চাইলে কিটোফেন'ও খাইতে পারেন। ভাই আমি আপনি দুইজনই তো ডাক্তার, আলোচনা করলে সব রোগেরই ওষুধ বাইর করতে পারব ইনশাল্লাহ...
আসেন নিজেদের এই ক্ষমতা কেবল নিজের কাজে না ব্যবহার করে মানুষেরও কাজে লাগাই। আসেন একটা হাসপাতাল দেই...
মন্তব্য
সব শালা ডাক্তারদের টাকা খাওয়ার ফন্দি, প্যারাসিটামল এর ব্যবস্হাপত্র লিখে ৫০০ টাকার সম্মানী নেয়ার তাল !! চলেন হাসপাতাল টা দিয়াই ফেলি
ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন কইরা ফোন্দিয়েন
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
কি কইতে চাইলেন কিসুই মাথায় ঢুকলোনা। একবার মনে হইল উলটাপালটা ওষুধ খাওয়া নিয়ে শেষে মনে হয় একটা বাঁশ দিবেন, কিসের কি! নাকি এইটা ধারাবাহিক? সেইরকম কিসুওতো লেখা দেখলাম না।
খোলাসা কইরা বললে আরাম পাইতাম।
আমি তো বাঁশের কোন কমতি দেখলাম না। অনবদ্য লেখা! খোলাসা করে বললে তো এমন রসাত্মক রচনা না, বরং প্রবন্ধ লিখতে হত - যা আমার মত মেডিকেল-মূর্খ মানুষ কখনও পড়ে দেখার সাহস পেত না।
হুম। ঠিকাছে।
সহ্য করে নেন রে ভাই। নিতান্ত অযোগ্য লেখক। কষ্ট করে পড়েছেন যে তাই ধন্যবাদ
____________________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ !
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
আপনার লেখা আমি পড়ি না, গোগ্রাসে গিলি। এইটা আগেরগুলার মত সোজাসাপ্টা না, এই জন্যে প্রথমে বুঝতে একটু সমস্যা হয়েছিল।
আরেকটা কারণ হতে পারে পড়ার সময় চিন্তাভাবনার সূতোটা লেখকের হাতে ছেড়ে দেয়া। ব্যাখ্যা করি -
প্রথম ৩টা প্যারা পড়ার পরে মনে হয়েছিল যা লিখেছেন আসলেই সেরকম কিছু করতে চাইছেন।
৪ নম্বর প্যারায় ডাক্তাররাই বিশাল বাঁশ খেল কয়েকটা। এইখানে মনে হল আপনি আসলেই বদ্ধ পরিকর আগে উপসর্গ সারানোর জন্য।
৫, ৬ প্যারায় এসে যখন উলটাপালটা ওষুধের প্রতিক্রিয়া বলে দিলেন, তখন বিভ্রান্ত হয়ে গেলাম একটু। সেই বিভ্রান্তি শেষের দুই প্যারায় কাটেনি। এইখানে লেখাটা আরেকটু বড় করতে পারতেন, আরেকটু শক্তভাবে উপসংহার টানতে পারতেন।
ভুল বুঝবেন না ভাই, আমি 'বালের গেঁয়ান' দিতে চাইনি।
পাঠকের প্রতিক্রিয়া সরাসরি জানা যায় দেখেই না ব্লগের এই জয়জয়কার। আপনি আপনার মত লিখতে থাকুন।
ধুর! ভুল বোঝার কোন অবকাশই নেই। যা বলছেন সেজন্য ধন্যবাদ। দয়া করে ভবিষ্যতেও শুদ্ধ জ্ঞান দিতে ভুলবেন না। জ্ঞানে না কুলাইলে গালাগালি দিয়েন। তাও দিয়েন। প্লিজ...
____________________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ !
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
হে হে হে! বাঙালির ওষুধ হল আসলে তিনটা...
প্রথম ওষুধ হলো গরম পানি... এটা দিয়ে ছোট খাটো সব অসুখ সারে... হাতে পায়ে ব্যথা... গরম পানিতে সেঁক দেন, গলা ব্যথা গরম পানিতে গার্গল করেন ইত্যাদি।
এর পরে যেই ওষুধটা কাজে দেয় সেটা হলো বিয়ে... পাগলামির মতো সিরিয়াস অসুখও নাকি তাতে সেরে যায়। বিষণ্ণতা, বৈরাগ্য এরকম আরো অনেক রোগের জন্যেই এই মহৌষধ কার্যকর।
সবশেষে সবচে পাওয়ারফুল যে ওষুধ রয়েছে সেটি হলো সোজা বাংলায় 'মাইর'। আর এজন্যেই বলে মাইরের উপরে ঔষধ নাই...
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।
দ্বিতীয় ওষুধটার ডোজটা বলে দেন তো। মানে কোন রোগের জন্য দিনে কয়বার, খাওয়ার আগে না পরে, বোতল ঝাঁকিয়ে নিতে হবে কিনা...
____________________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ !
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
দিনে কয়টা বিয়ে মানে? বেশির ভাগ মানুষ তো একবারই দ্বিতীয় ওষুধ গ্রহণ করে চিরতরে সুস্থ হয়ে গিয়েছে। এই ওষুধ পেলে আর অন্য কিছু খাওয়া লাগবে না, আর ঝাঁকানোর কথা বলছেন? তীব্র ঝাঁকিতে জীবন ছুটে যেতে চাইবে।
(ডিস্ক্লেইমার: দ্বিতীয় ওষুধের ব্যবহার না করেই মন্তব্য দিতে হলো, বিভিন্ন বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে ধার করা...)
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।
=)) জটিল, তা আপনার হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলে ভিজিট কত?
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
অসাধারণ শ্লেষ এবং অতীব প্রয়োজনীয়।
---------------------------------------------------------
ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল
অবরুদ্ধ মাঠ থেকে তুমি লাফিয়ে নেমোনা প্লিজ পাথরের পথে
---------------------------------------------------------
ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল
অবরুদ্ধ মাঠ থেকে তুমি লাফিয়ে নেমোনা প্লিজ পাথরের পথে
________________________________________
http://ahmedurrashid.
ধন্যবাদ ভাই
____________________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ !
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
আমি ডাক্তারদের দুই চোক্ষে দেখতে পারি না
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
হে হে ...
____________________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ !
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
আমি প্রথমে ধরতে পারি নাই কী বলতে চাইতেসেন ...
বস, ট্যাগে একটা রম্যরচনা ঝুলায়ে দিলে পারতেন...।
---------------------------------------------------------------------------
- আমি ভালোবাসি মেঘ। যে মেঘেরা উড়ে যায় এই ওখানে- ওই সেখানে।সত্যি, কী বিস্ময়কর ওই মেঘদল !!!
আপনার এই লেখাটার অনেকগুলো কপি করে আমার শ্বশুরকূলের জীবিত সবার হাতে ধরিয়ে দিতে চাই। তাদের মধ্যে যারা নিজবুদ্ধিতে সমানে ঔষধ খেয়ে দেহরক্ষা করেছেন তাদের জন্যতো কিছু করার নেই, বাকীদের বোধোদয় যদি হয়। তবে হাসপাতাল দিতে চাইলে উনারা একদিনে ডজনখানেক হাসপাতাল দিয়ে ফেলতে পারবেন বলে মনে হয়।
আপনার লেখাগুলো বিশ্রীরকম ভালো।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
অনেক ধন্যবাদ
____________________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ !
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
আপনার সেন্স অফ হিউমার তো দারুণ!
লেখা সবগুলোই পড়েছি, এবং ভালোও যথারীতি লেগেছে, ভবিষ্যতের 'মজার ভঙ্গিতে বলা দরকারী কথা'গুলোর জন্য আগাম প্রশংসা জানিয়ে রাখলাম এখনি!
ওহ হো বলতে ভুলে গেছি, দেশে থাকতে আমিও ওরকম একজন পাশ না করা বিখ্যাত ডাক্তার ছিলাম
ধন্যবাদ
____________________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ !
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
নতুন মন্তব্য করুন