হিমু ভাইয়ের ইমেইল পেলাম আচমকা। আমাকে একটা ভিডিও’র লিঙ্ক দিয়ে সেটা দেখতে বললেন। আমি দেখলাম। এবং ওনার মতই একটা অনন্য সম্ভাবনার কথা ভেবে দারুণ খুশি হয়ে উঠলাম। ভিডিওটি একজন অণুজীববিজ্ঞানীর বক্তৃতা। পল স্ট্যামেটস নামক এই বিজ্ঞানী গবেষনা করেছেন ছত্রাকের উপর। ছত্রাকের মধ্যে আবার দুটি ভাগ। একভাগ এককোষী, আরেকভাগ বহুকোষী। পল স্ট্যামেটস মূলত কাজ করেছেন বহুকোষী ছত্রাকের উপর। এককোষী অথবা বহুকোষী দুধরণের ছত্রাকের সঙ্গেই সবার পরিচয় আছে। যে ছত্রাক দিয়ে পাউরুটি বানানো হয় সেটা এককোষী ছত্রাক। আর যে মাশরুম খাওয়া যায় সেটা বহুকোষী। পল স্ট্যামেটস’র বক্তৃতা বিষয়ে কিছু বলার আগে ছত্রাকের সঙ্গে পরিচিত হয়ে নিলে ভাল।
বহুকোষী ছত্রাকের জন্ম হয় অনেকভাবে। বাতাসে ছত্রাকের যে স্পোর ভেসে বেড়ায় উপযুক্ত পরিবেশে তা থেকে বহুকোষী ছত্রাক জন্মাতে পারে। যে জায়গায় ছত্রাক জন্মে, এক অর্থে সে জায়গাটিকে ছত্রাক দখল করে ফেলে। এই দখল অবশ্য আমাদের নেতাদের ভূমি দখলে মতো নয়। বরং এই দখলে সেখানে অন্য প্রাণির উপকার-ই হয় বেশি। বহুকোষী ছত্রাক শেকড়ের মতো করে ছড়িয়ে পড়ে মাটিতে। এই শেকড়ের মতো ছত্রাকের অংশকে বলে মাইসেলিয়াম। মাইসেলিয়াম থেকে মাশরুমের মতো করে মাটির উপরভাগেও ছত্রাক জন্মাতে পারে। মাইসেলিয়াম থেকে মাশরুম তৈরি হয় আসলে মাটির উপরে বাতাসে ছত্রাকের স্পোর (বীজ) ছড়িয়ে দেয়ার জন্য। মাশরুম থেকে ছত্রাকের স্পোর ছড়িয়ে যায় বাতাসে। সেই স্পোর থেকে আবার মাইসেলিয়াম, মাইসেলিয়াম থেকে আবার মাশরুম। প্রক্রিয়াটি চলতেই থাকে। আর এই প্রকৃয়াতেই ছত্রাক উদ্ভিদ জগতকে বাঁচিয়ে রাখে। উদ্ভিদ জগত টিকে থাকলে টিকে থাকে প্রাণি জগতও। সব জিনিসকে পচিয়ে আবার মাটিতে ফেরত পাঠায় ব্যাকটেরিয়ারা। এই ব্যপারটি অনেকেরই জানা। কিন্তু বেশিরভাগই জানেননা যে এই ঘটনাটি উদ্ভিদের ক্ষেত্রে একভাবে ঘটে না। কাঠের মূল উপাদান সেলুলোজ আর লিগনিন। এই দুটি পদার্থকে বেশিরভাগ ব্যাকটেরিয়া হজম করতে পারেনা। এই কাজটি করে ছত্রাক। যেসব পোকামাকড়ের শক্ত খোলস থাকে তাদেরকেও গাছের খাবার বানিয়ে দিতে পারে কেবল ছত্রাক। ব্যপারটা সহজে বোঝা না গেলে বরং থাক। কেবল ছত্রাকের একটা ব্যপার জানা থাকলেই চলবে। সেটা হচ্ছে, ছত্রাকের বিশেষ বিশেষ পদার্থ হজম করার অদ্ভুত গুণ আছে।
এবার পল স্ট্যামেটস’র বক্তৃতা থেকে কিছুটা বলি। ছত্রাকের যে শেকড়ের মতো অংশ। যাকে বলে মাইসেলিয়াম, সেটি মাটিকে ধরে রাখে। বলা যেতে পারে বাতাস আর মাটির প্রবাহের বিরুদ্ধে মাটিকে একটা স্থিতি দেয়। মাইসেলিয়াম তার চাইতে ৩০ হাজার গুণ বেশি মাটি ধরে রাখতে পারে। মাটিতে থাকা অখাদ্য কুখাদ্য যা আর কেউ হজম করতে পারেনা ছত্রাক সেসব পদার্থ ভেঙ্গে গাছ, ব্যাকটেরিয়া আর পোকার খাবার বানিয়ে দেয়। এভাবে একটা বৈরী পরিবেশকে জীবের বসবাস উপযোগী করে তোলে ছত্রাক। ১৩০ কোটি বছর আগে এভাবেই ছত্রাক পৃথিবীকে জীবের উপযোগী করে গড়ে তুলতে শুরু করে। রুক্ষ পাথুরে সেই পৃথিবীকে জীবের বসবাস উপযোগী করে তোলা আর কারো পক্ষে বোধহয় সম্ভবও ছিল না। এখন থেকে সাড়ে ছয় কোটি বছর আগে যে মহাজাগতিক বস্তুর (সম্ভত ধুমকেতু) থাক্কায় পৃথিবীর অন্তরাত্মা কেঁপে গিয়েছিল তখনও পৃথিবীতে ছিল কেবল ছত্রাকই। কেবল বর্জ্য আর দূষণের সেই পৃথিবীতে এমনকি উদ্ভিদের পক্ষেও বাঁচা সম্ভব ছিল না। কারণ সেই বর্জ্য এড়িয়ে সূর্যের আলো পৌঁছাতে পারত না পৃথিবীতে। ছত্রাকেরা অবশ্য বহাল তবিয়তেই ছিল। তাদের বেঁচে থাকার জন্য সূর্যের আলোর প্রয়োজন হয় না। এমনকি রেডিয়েশন থেকেও ছত্রাক শক্তি সঞ্চয় করতে পারে। ছত্রাক বৃদ্ধি পায় ভয়ঙ্কর দ্রুত। মাটির নিচে জালের মত করে মাইসেলিয়াম ছড়িয়ে দিয়ে ছত্রাক বেড়ে চলে। ছত্রাক বাড়ে বাতাসে স্পোর ছড়িয়েও।
গাছ পাথর থেকে শুরু করে সবকিছু হজম করে ফেলার ছত্রাকের এই গুণ দেখে পল স্ট্যামেটস তার গবেষনাটি করেন। ডিজেল এবং পেট্রোলিয়াম জাতিয় বর্জ্য মেশানো মাটিতে তিনি চাষ করেন মাশরুম। তুলনামূলক পরীক্ষার জন্য তিনি একই রকম বর্জ্য মেশানো মাটিতে আলাদা আলাদা ভাবে ব্যাকটেরিয়া, এনজাইম আর মাশরুম চাষ করেন (এনজাইম চাষ করা যায় না, মিশিয়ে দিয়েছিলেন)। পরীক্ষা শুরুর ৬ সপ্তাহ পর পল চমকপ্রদ ফলাফল পান। তিনি দেখেন যে, এনজাইম অথবা ব্যাকটেরিয়া বর্জ্য মেশানো মাটিতে বিশেষ পরিবর্তন আনতে পারেনি। পরিবর্তন এনেছে মাশরুম। পেট্রোলিয়াম জাতিয় পদার্থের “কার্বন-হাইড্রোজেন” বন্ধনকে মাইসেলিয়ামের “পারঅক্সিডেজ” নামক এনজাইম ভেঙ্গে ফেলেছে। হাইড্রোকার্বন কে ভেঙ্গে ছত্রাক তৈরি করেছে কাবোর্হাইড্রেড (শর্করা)। ফলে বর্জ্য মেশানো মাটিতে ছত্রাকের বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়েছে জীবনের অনন্য সেই চক্র। ছত্রাকের স্পোর খেতে এসেছে পোকা, পোকা সেখানে ডিম পেড়েছে, ডিম থেকে জন্ম নিয়েছে পোকার লার্ভা, লার্ভা খেতে এসেছে পাখি, পাখি বয়ে এনেছে বীজ আর তা থেকে সেই দারুণ দূষিত মাটিতে গজিয়েছে ঘাস। সেই দূষিত মাটি আর অবশ্য ততদিনে আর দূষিত নেই। পরীক্ষার শুরু থেকে মাত্র ৮ সপ্তাহের মধ্যে ছত্রাক সেই মাটি থেকে দূষিত পদার্থের পরিমান নামিয়ে এনেছে শুন্যের কোঠায়।
কেবল কারখানার বর্জ্য নয়। পল স্ট্যামেটস পরিক্ষা করেছেন জৈব-বর্জ্য নিয়েও। চার ধরণের ব্যাকটেরিয়াকে কলিফর্ম বলা হয়। কোন নমুনায় কলিফর্ম পাওয়া গেলে ধরে নেয়া হয় সেই নমুনা কোন না কোনভাবে পাকস্থলী জাত বর্জ্যের সংস্পর্শে এসেছে। তার মানে কলিফর্ম বাস করে মূলত প্রাণির পাকস্থলীতে আর ছড়ায় মলের মাধ্যমে। কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়ারা স্বাস্থ্যের জন্য দারুণ হুমকি। পল স্ট্যামেটস পরীক্ষা করে দেখেছেন ছত্রাক বর্জ্যের কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ ৪৮ থেকে ৭২ ঘন্টার মধ্যে ১০ হাজার ভাগের একভাগে কমিয়ে ফেলতে পারে। কেবল এ-ই নয়, পল দেখেছেন, ছত্রাক বসন্ত আর ফ্লু ভাইরাসে বিরুদ্ধে দারুণ কার্যকর। নিরাপদ কীটনাশক হিসেবেও ছত্রাকের জুড়ি নেই। সত্যি কথা বলতে, ছত্রাকের গুণকীর্তন করে শেষ করা যাবে না। ছত্রাকের গুরুত্ব বোঝাতে কোন আবেগের ধার না ধরে সহজ করে বললে বলা যায়, ছত্রাক না থাকলে উদ্ভিদ ধ্বংস হয়ে যাবে। উদ্ভিদ ধ্বংস হয়ে গেলে ধ্বংস হয়ে যাবে প্রাণিকুলও। অবশ্য সেটি নিয়ে আমাদের চিন্তা অতোটা নয়। আমাদের চিন্তা মানুষের হাত থেকে বাঁচার। মানুষ যেভাবে পরিবেশকে দূষিত করছে সেই দূষণ থেকে বাঁচতে ছত্রাকই এখন সবচে বড় ভরসা।
এদেশীয় প্রেক্ষাপটে দূষণ কমাতে ছত্রাক কাজে আসবে কিনা সেই পরীক্ষাটি করে দেখা কঠিন কিছু নয়। এদেশে বিশ্বমানের অণুজীববিজ্ঞান বিষয়ক পরীক্ষাগার নেই। নেই গবেষণার পুঁজি। তবে আশার কথা দুষণ কমাতে ফাঙ্গাস ব্যবহার করা যাবে কিনা আর করা গেলেও কীভাবে যাবে সেটা জানার জন্য খুব বেশি আয়োজনের প্রয়োজন নেই। সরকার কিংবা চাইলে যে কোন উচ্চমধ্যবিত্তও সেটা যাচাই করে দেখতে পারেন। পল স্ট্যামেটস তার বক্তৃতায় এরোম্যাটিক হাইড্রোকার্বন জাতিয় দূষণ কমাতে কেবল মাশরুম আর মাইসেলিয়ামের কথা বলেছেন। কোন ধরণের মাশরুম নিয়ে কাজ করেছেন তিনি, একটু ঘাঁটাঘাটি করলে সেটি বের করা যেতে পারে। পল স্ট্যামেটস’র গবেষনা প্রবন্ধ এক্ষেত্রে কাজে আসতে পারে সবচাইতে বেশি। এধরণের কাজের পেটেন্ট করে ফেলা যায় কিনা আর গেলেও পল স্ট্যামেটস বা অন্য কেউ সেটা করেছেন কিনা আমার জানা নেই। আইনগত কোন সমস্যা না থাকলে কালচার সংরক্ষণ করে এমন কোন কোম্পানি থেকে যদি পলের গবেষনা করা বিশেষ মাশরুমের বীজ কেনা যায় আর সেটা দিয়ে এদেশীয় কারখানার বর্জ্য থেকে মুক্ত হওয়া যায় কীনা সেটা পরীক্ষা করা যায় তাহলে ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া সম্ভাবনা খুবই বেশি। একবছরের একটা প্রজেক্ট নিলেই সেটা সম্ভব বলে আমার স্বল্প জ্ঞানে মনে হয়। আর বহুকোষী ছত্রাক নিয়ে এধরণের গবেষনার জন্য খুব বেশি আর বিশেষ কোন যন্ত্রপাতিরও প্রয়োজন হওয়ার কথা নয়। অল্প একটু সহায়তা আর উদ্দ্যোগ কেবল প্রয়োজন।
ভূমিকার বদলে:
হিমু ভাই আমাকে পল স্ট্যামেটস’র বক্তৃতার লিঙ্কটি দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে আশা ব্যক্ত করেছিলেন যেন আমরা এই বিষয়ে গবেষনা করি। একটা অণুজীববিজ্ঞানের পরীক্ষাগারে মুখ গুঁজে পড়ে থাকার সুযোগ ছাড়া ব্যক্তিগতভাবে আমার এজীবনে বিশেষ কোন চাওয়া নেই। তাই গবেষণার কাজটি করতে পারলে আমার চাইতে খুশি বোধহয় কেউ হত না। কিন্তু দুঃখের বিষয় বহুকোষী ছত্রাক নিয়ে এধরণের পরীক্ষায় খুব কম হলেও যে আয়োজনটুকু করতে হয় সেটা করাও ব্যক্তিগতভাবে আমার ক্ষমতার অনেক বাইরে। ব্যক্তিগতভাবে সেজন্য হিমু ভাইয়ের কাছে দুঃখ প্রকাশ করছি। তবে গবেষণার ব্যপারটা সরকার, কোন কোম্পানি অথবা মহলকে প্রস্তাব করে দেখা যায় হয়ত। সেটা সম্পর্কে কেউ কোন তথ্য দিতে পারলে কৃতজ্ঞ থাকব।
যারা পল স্ট্যামেটস’র বক্তৃতাটি শুনতে চান:
মন্তব্য
কোনো একটা ডায়িং ফ্যাক্টরির এফ্লুয়েন্টস যোগাড় করে এর উপর একটা কোনো কমন ছত্রাক ছড়িয়ে ফল দেখা যাবে না?
চেষ্টা করা যেতে পারে কিন্তু ব্যপারটা বৈজ্ঞানিক হবে না হিমু ভাই।
প্রথমত, নির্জলা রাসায়নিকে ছত্রাকের বীজ ছড়ালে সেটা থেকে কিছুই না পাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে সবচাইতে বেশি। কারণ কেবল কারখানার বর্জ্য রাসায়ক থেকে ছত্রাক তার প্রয়োজনীয় সবরকমের খাদ্য পাবে না। রাসায়নিক থেকে হয়ত তার একটি, দুটি অথবা খুব বেশি হলে কয়েকটি পুষ্টি উপাদানের প্রয়োজন মিটতে পারে কিন্তু তার একই সঙ্গে অনেকগুলো পুষ্টি উপাদান প্রয়োজন হয়। সবগুলো বর্জ্য থেকে পাওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। ব্যপারটা ধরেন এরকম যে, গাছ কাটা কাঠুরের পেশা কিন্তু সে গাছ খায় না। তাকে খেতে দিতে হবে ভাত। গাছ থেকে তার অন্য প্রয়োজন মেটে। এজন্য কারখানার রাসায়নিকের সঙ্গে ছত্রাকের বাকি সব খাদ্য উপাদানের চাহিদা মেটাতে অন্য কিছু যোগ করতে হবে। সবচাইতে ভাল হয় গাছপালা হয় এরকম জায়গার মাটি বা কম্পোস্ট সার মেশালে।
ছত্রাকের কার্যকারিতা দেখতে হলে প্রথমে কারখানার রাসায়নিকে বিভিন্ন বিষাক্ত উপাদানের পরিমাণ জানতে হবে। ছত্রাকের বীজ ছড়িয়ে নির্দিষ্ট সময় পরপর মেপে দেখতে হবে সেসব রাসায়নিকে পরিমাণ কমছে কিনা অথবা কতটা কমছে।
আর তাছাড়া একটামাত্র ছত্রাক নিয়ে পরীক্ষা করলে ব্যর্থ হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। বরং যেসব এলাকায় কারখানার বর্জ্য ফেলা হয় সেসব এলাকায় গিয়ে খুঁজে দেখা যেতে পারে দূষিত এলাকার কোথাও ছত্রাক জন্মেছে কিনা! কোথাও ছত্রাক জন্মে থাকলে সেটা তুলে এনে বৈজ্ঞানিকভাবে পরীক্ষা করে দেখা যেতে পারে।
বাতাসে হাজারো ছত্রাকের স্পোর ভেসে বেড়ায়। তাই আমি যদি একটা পাত্রে কেবল একটা ছত্রাক নিয়ে পরীক্ষা করতে চাই তাহলে সেখানে অন্যান্য ফাঙ্গাসও জন্মাবে। এজন্য হয় এই পরীক্ষাটি ল্যাবরেটরীতে করতে হবে অথবা খোলা জায়গায় করলে বেশ বড় জায়গা নিয়ে করতে হবে।
বুঝতে পারছিনা আপনাকে ঠিক ঠিক বোঝাতে পারলাম কিনা
____________________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ !
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
বুঝতে পেরেছি। তবে লিখতে গিয়ে ভুল করেছি আমিই।
তবে এ ব্যাপারে খুব জোরেসোরে কাজ শুরু হওয়া দরকার। একটা উদাহরণ দিতে পারি, বুড়িগঙ্গা ড্রেজিঙের পর এর তলদেশের মাটি তুলে রাখা হচ্ছে নদীর পাশেই। দূষণ ছড়াচ্ছে সেখানেও। যদি সাধারণ অক্ষতিকর ছত্রাক দিয়ে সেই দূষণকে দমন করা যায়, সেটা একটা বিরাট অর্জন হবে।
আপনি প্রয়োজনে এ নিয়ে কোনো এনজিও বা পরিবেশ আন্দোলনে সম্পৃক্ত প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করুন।
বহুকোষী ছত্রাকের সুবিধা অনেক। সবার আগে হচ্ছে তারা সাধারণত মানুষের কোন ক্ষতি করে না।
এনজিওরা আসলে এ জাতিয় গবেষনার জন্য ফান্ড পায় কিনা অথবা ব্যয় করে কিনা তা আমার জানা নেই। আর পরিবেশ আন্দোলন যাঁরা করেন তারা সাধারণত মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধি আর সরকারকে বিশেষ কিশেষ ক্ষেত্রে চাপে রাখার জন্য আন্দোলন করেন বলে জানি। বিজ্ঞানের গবেষনা বিষয়ে তাদের আগ্রহ নেই বলেই দেখেছি সবসময়। বরং তারা হয়ত সরকারকে এরকম গবেষনার জন্য বলবে। অবশ্য সবই আমার স্বল্প জ্ঞানে বলা। ভালোমত খোঁজ নিচ্ছি।
____________________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ !
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
খুব ভাল লাগলো লেখাটি। অনেক তথ্য জানতে পারলাম।
অফ দা টপিক: একটা অনুরোধ ছিল আপনার কাছে; কৃত্রিম জীবন নিয়ে গবেষণা সর্ম্পকিত কোনো লেখা যদি
দিতেন তবে অনেক কৌতুহল মিটাতে পারতাম।
ধন্যবাদ। অনেকগুলো লেখা মাথায় নিয়ে ঘুরছি অথচ লেখা হচ্ছে না। কৃত্রিম জীবন নিয়ে লেখার চেষ্ট করব যদিও এ বিষয়ে আমি প্রায় কিছুই জানিনা। আগে পড়তে হবে।
____________________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ !
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
দারুণ পোস্ট!!!
সেলুলোজ থেকে এনার্জি জেনারেশনের মাইসেলিয়াম পদ্ধতিটাও মজার লেগেছে। বাংলাদেশে এই নিয়ে গবেষণা করলে তাকে পাগলই ঠাওরানো হবে আসলে।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
ধন্যবাদ মুর্শেদ ভাই।
আপনি ঠিকই বলেছেন। একটা দশবছরের ছেলে লাঠি নিয়ে শিবিরের সভায় পাহারা দিলে তাকে মানসিক প্রতিবন্ধী বলা হয় না। অথচ একবার আমার এক দূর্সম্পর্কের আত্মীয় আমার কাছে "ফাউস্ট" বইটা দেখে বলেছিল, নাসারাদের বই কেন পড়তেছ!!! আর "ব্যাঙের ছাতা" নিয়ে ব্যক্তিগত পর্যায়ে কেউ গবেষনা করতে গেলে তো তার খবরই আছে!
____________________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ !
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
চমৎকার লেখা।
সিনজেন্টা বাংলাদেশ ধরণের প্রতিষ্ঠান...?
ধন্যবাদ। সিনজেন্টা সম্পর্কে আমার জানা নেই তাই বলতে পারছি না।
____________________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ !
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
যদি সত্যি এমন টা করা যায় কতই না ভালো হবে!
ভালো লাগল পড়তে , ভাবতে ,স্বপ্ন দেখতে
_________________________________________
ৎ
_________________________________________
ওরে! কত কথা বলে রে!
লেখা পড়ে অনেক ভালো লাগলো। আমি আমার প্রফেসরকে সারমর্ম লিখে পাঠিয়েছি---- আমরা সলিড ওয়েস্ট নিয়ে কাজ করি। যদি পারি ফান্ডের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছি।
********************************************************
আমার লেখায় বানান এবং বিরাম চিহ্নের সন্নিবেশনের ভুল থাকলে দয়া করে ধরিয়ে দিন।
********************************************************
আমার লেখায় বানান এবং বিরাম চিহ্নের সন্নিবেশনের ভুল থাকলে দয়া করে ধরিয়ে দিন।
যাকে বলে মাইসেলিয়াম, সেটি মাটিকে ধরে রাখে। বলা যেতে পারে বাতাস আর মাটির প্রবাহের বিরুদ্ধে মাটিকে একটা স্থিতি দেয়। মাইসেলিয়াম তার চাইতে ৩০ হাজার গুণ বেশি মাটি ধরে রাখতে পারে।
এই তথ্যটির গুরুত্ব অপরিসীম। মাইসেলিয়াম কোন ক্ষমতাবলে এই কাজটি করতে পারে সেটি জানতে পারলে ভূমিক্ষয় রোধে সেই টেকনিকটি ব্যবহার করা যাবে। অ-স, টেকনিকটি আপনার জানা থাকলে বিস্তারিত আলোচনা করুন।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
মাইসেলিয়াম আসলে মাটিতে জালের মতো ছড়িয়ে পড়ে। সেই শেকড়েরও ক্ষমতা আছে স্বতন্ত্র ভাবে নতুন মাশরুমের জন্ম দেয়ার। গাছের শেকড়ের গোড়া থেকে কেটে দিয়ে যেমন তার পুরো নেটওয়র্কটাই শুকিয়ে যায় মাইসেলিয়াম সেরকম নয়। এর একজায়গায় কাটা গেলে বাকি অংশ মরে যায় না। বরং নতুন ছত্রাকের জন্ম দিতে পারে। খুব ঘনভাবে জালের মতো মাটিতে ছড়িয়ে পড়ে বলেই মাইসেলিয়াম মাটিকে ধরে রাখতে পারে। পল স্ট্যমেটস যেমন বললেন, এক ঘনইঞ্চি মাটিতে মাইসেলিয়ামের কোষগুলো সোজাসুজি আট মাইল পর্যন্ত দীর্ঘ হতে পারে। আমার জ্ঞান এটুকুই পান্ডব'দা।
____________________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ !
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
সম্ভাবনাময়, অবশ্যই। তবে মাইসেলিয়ামের ব্যাপক হারে ব্যবহার সম্পূর্ণ নিরাপদ কিনা সেটা নিয়ে আরো গবেষণার দরকার। যেমন স্ট্যামেটস নিজেই দেখিয়েছেন, ছত্রাকের মাশরুম অংশটি রাস্তা ফুঁড়ে উপরেও উঠে আসতে পারে। এমন অবস্থায় যদি শহরের মাটির নিচে এই ছত্রাকদের আস্তানা হয়ে দাঁড়ায়, তাহলে ঘর-বাড়ি-রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হবার সম্ভাবনা কেমন?
যে ধরণের ছত্রাক মানুষের শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর নয়, তেমন একধরণের ছত্রাক দিয়ে তিনি পেস্ট কন্ট্রোলের উদাহরণ দেখিয়েছেন। এই ছত্রাকগুলির মানুষের উপর কোনো প্রভাব নেই, কিন্তু পোকামাকড়ের উপর কাজ করে, এবং জানা মতে এক-একটি ধরণের কীটের উপর কেবলমাত্র এক-একটি স্ট্রেন (এক ছত্রাকের বিভিন্ন প্রজাতি) কাজ করে। কিন্তু কোনো মিউটেশনের ফলে যে অন্যান্য পশুপ্রাণী অথবা মানুষের উপর কাজ করতে পারে এমন কোনো রাসায়নিক ওই ছত্রাক তৈরী করে ফেলতে পারে কিনা, তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
এই বিষয়টি আলোচনায় আনার জন্য অনার্য্য সঙ্গীত ও হিমুকে ধন্যবাদ।
কৌস্তুভ
এমনিতেই যথেষ্ট পরিমান ছত্রাকের বীজ আমাদের চারপাশে সবসময় আছে। স্বাভাবিক ভাবে অনেক কিছুই সে নষ্ট করে দেয়। কিন্তু সিনেমার মতো করে শহর ধ্বংস করে ফেলার তার কোন সম্ভাবনা নেই। আমরা চাইছি সব জিনিসকে ভেঙ্গে ফেলার ছত্রাকের গুণটিকে উপযুক্ত ব্যবস্থায় ইতিবাচক কাজে লাগাতে।
____________________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ !
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
বর্ষা'পু এবং বোহেমিয়ানকে ধন্যবাদ।
বর্ষাপু, তোমার প্রফেসর ফান্ড পেলে দারুণ হবে। তবে ওনাকে বল উনি কাজ করলে যেন এদেশে এসে করেন। খুব ভয়ঙ্কর কোন ল্যাবরেটরির দরকার হবে না কাজটা করতে।
____________________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ !
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
চমকপ্রদ!
খুবই ভালো লাগল।
আশা করছি ইতিবাচক পথে কাজ এগোবে।
|| শব্দালাপ ||
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
আমাদের বি সি এস আই আর কি এখনো বেঁচে আছে? নব্বই দশকের গোড়ার দিকে তারা বায়োগ্যাস ও পানি পরিশোধন নিয়ে বেশ মেতেছিল। জানিনা তাদের গবেষনাগারের অবস্থা কি।
---
গতবছর হাইকোর্ট এর ঘোষনা অনুযায়ী এই বছর মানে ২০১০ এর জুন নাগাদ সকল শিল্পকারখানার বর্জপানিকে পরিবেশ সহনযোগ্য করে তারপর খোলা পরিবেশে ছাড়াতে হবে। কিন্তু এই নির্দেশ অমান্য করলে কেমন দন্ড হবে, সেটা পরিস্কার নয়। বাংলাদেশ ব্যাঙ্ক থেকেও নাকি সব বানিজ্যিক ব্যাঙ্ক ও প্রাতিষ্ঠানিক লগ্নিকারি সংস্থার কাছে বর্জ পানি শোধনাগার স্থাপনের জন্যও অল্পসুদে ঋনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। নতুন গঠিত পরিবেশ রক্ষা ফান্ডেও দূষিত পানি শোধনের জন্য থোক বরাদ্দ আছে। ঋন খেলাপি, গ্যাস/বিদ্যুত এর বিল খেলাপি, শুল্ক ফাঁকির মত, আমাদের সাংসদেরাই তো সবচাইত বড়সর সব পরিবেশ দূষনের জন্য দায়ী। তাই এই খাতে ভাল আইন প্রনয়নে তাদের আগ্রহ কম হওয়ারই কথা।
---
গ্যাস/বিদ্যুত/প্রকল্পগুলোকে এখন আর জাতীয় ক্রয় নীতি অনুসরন করতে হবে না। এতে নতুন নতুন যেসব ফার্নেসওয়েল নির্ভর বিজলীকল বসবে, সেগুলোর প্রাক নির্বাচনে পরিবেশরক্ষাকে কতটুকু গুরত্ব দেয়া হবে, সেটা ভাবার বিষয়।
---
সাম্প্রতিক দুটো বড় বর্জ পানি শোধন প্রকল্প, ঢাকা ও চট্টগ্রাম ইপিজেড, এর দুটোতেই যান্ত্রিক/রসায়নিক প্রযুক্তি খাটানো হয়েছে; অনুজীব প্রযুক্তি নাকি অনেকটা জমি খরচ করে ফেলে, এই উছিলায়।
---
আমি শুনেছিলাম আইসিডিডিআর্বির ভাল অনুজীব গবেষনাগার আছে। শুধু পরিবেশ দূষন ও উদরাময়ের যোগাযোগের কারনেও মনে হয় আইসিডিডিআর্বি ছত্রাক গবেষনায় কিছুটা সময় দিতে পারে।
---
ঝাপায়া পড়... পিছে আছি
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
অনেক তথ্য জানা গেলো, যদিও শিক্ষামূলক আলোচনায় আমার আগ্রহ বরাবরই কম(অনেক সময় লাগলো শেষ করতে)।
বিষয়টি নিয়ে আপনি যে পরিশ্রম করেছেন সেজন্য একখান বিশাল ধন্যবাদ।
__________________________________
যাক না জীবন...যাচ্ছে যখন...নির্ভাবনার(!) নাটাই হাতে...
__________________________________
যাক না জীবন...যাচ্ছে যখন...নির্ভাবনার(!) নাটাই হাতে...
হোয়াইট রট ফাংগাস ব্যবহার করে টেক্সটাইল ডায়িং এফ্লুয়েন্টস পরিশোধন করে দেখিয়েছি এইখানে:
doi:10.1016/j.memsci.2008.08.006
Removal of structurally different dyes in submerged membrane fungi r eactor—Biosorption/PAC-adsorption, membrane retention and biodegradation
Journal of Membrane Science, Volume 325, Issue 1, 15 November 2008, Pages 395-403
Faisal Ibney Hai, Kazuo Yamamoto, Fumiyuki Nakajima, Kensuke Fukushi
আমার ওয়েব পেইজ:
http://www.uow.edu.au/~faisal/
পুরো আর্টিকেল চাইলে মেইল করবেন দয়া করে। বাংলা টাইপিং পারিনা বলে আলোচনায় অংশ নিতে পারলামনা।
এই দেশের প্রেক্ষিতে আপনার উদ্ভাবন কিভাবে কাজে লাগানো যায় সে বিষয়ে একটা পোস্ট দিতে পারেন। আর বাংলা লেখা কিন্তু দারুণ সহজ। ফোনেটিকে ঘন্টাখানেক চেষ্টা করলেই পারবেন। অভ্র ডাউনলোড করে আজকেই একবার চেষ্টা করে দেখুন না।
____________________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ !
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
দুর্দান্ত
-------------------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার
দারুণ পোস্ট, অনেক কিছু জানলাম।
তাহলে যে মাশরুমটা খাওয়া যায় না সেটা বহুকোষী ছত্রাক না?
জ্বি। পান্ডব'দা, ওইগুলাও বহুকোষী ছত্রাক। আমি কেবল বোঝানোর জন্য ওভাবে লিখেছিলাম। (আপনি ভুল বুঝবেন তা ভাবিনি )
____________________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ !
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
এইমাত্র অনার্য জানাল সে কিছুদিনের জন্য ঢাকার বাইরে আছে, তাই সবার মন্তব্যের জবাব দিতে পারছে না । ঢাকায় এসে মন্তব্যের/প্রশ্নের জবাব দিবে । সকল পাঠক এবং মন্তব্যকারীদেরকে ধন্যবাদ ।
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
থ্যাঙ্কিউ দোস্ত। আজকে ঢাকায় আসছি। কাল আশা করি দেখা হবে।
____________________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ !
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
মন্তব্যের জন্য সবাইকে অনেক ধন্যবাদ। হঠাৎ করেই ঢাকার বাইরে যেতে হয়েছিল বলে সবার প্রশ্নের জবাব সময় মত দিতে পারিনি। সেজন্য দুঃখ প্রকাশ করছি।
____________________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ !
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
নতুন মন্তব্য করুন