কী করব আমরা !!!

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি
লিখেছেন অনার্য সঙ্গীত (তারিখ: শুক্র, ০৪/০৬/২০১০ - ৩:৫৬পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

এই লেখাটা কেন লিখছি ঠিক বুঝতে পারছি না। অনেক্ষণ ভেবে ভেবে নিজের কাছে গ্রহনযোগ্য একটাই কারণ বের করতে পারলাম, সচলদের সঙ্গে অনুভূতিগুলো ভাগ করে নেয়ার। তাতে কিছুটা শান্তি পাব মনে হচ্ছে। সকলে নিশ্চয়ই এতক্ষণে জেনে গেছেন, পুরোনো ঢাকায় ভয়াবহ অগ্নিকান্ডটির কথা। টিভি চ্যানেলগুলোতে প্রতি মুহূর্তেই আপডেট জানাচ্ছে। অবশ্য চ্যানেলগুলোর কথাবার্তা একশোভাগ একরকম নয়। বিশেষত মৃতের সংখ্যার ক্ষেত্রে। বেশিরভাগ চ্যানেলেই বলছে এই সংখ্যা এখন পর্যন্ত অন্তত ৭০। উদ্ধার কাজ চলছে। মৃতের সংখ্যা আরো বাড়ার আশংকা আছে। একুশে টিভির লাইভ ক্যামেরায় তাদের সংবাদদাতা এইমাত্র জানালেন মৃতের সংখ্যা দেড়শো।

আমি ঠিক কী করব বুঝে উঠতে পারছি না। অনেকটা অস্থির লাগছে। আমার আগামী ৫০ বছরের অস্থিরতাতেও কোন লাভ হবে বলে মনে হয় না। তারপরও সব ভুলে, গান ছেড়ে ঘুমিয়ে যেতে পারছি না। সেই অস্থিরতা শেয়ার করতেই এই পোস্ট। বোধহয় কথা বলে কিছুটা সময় পার করার জন্য। কিছুটা অস্থিরতা ভুলে থাকার জন্য।

সন্ধ্যায় শাহবাগে বসে আড্ডা দিচ্ছিলাম। হঠাৎ চমকে উঠে দেখি সারা আকাশ লাল হয়ে গেছে। ভেবেছি আগুন লেগেছে কোথাও। সেই আগুনের ভয়াবহতা দেখে চমকে উঠেছি। কী কারণে আগুন লেগেছে ভেবে বের করতে পারছিলাম না আমরা বন্ধুরা কেউই। কোন বিস্ফোরণের শব্দ শুনিনি। অথচ সারা আকাশ কয়েক মুহূর্তের জন্য বিস্ময়কর ভাবে লাল হয়ে থাকলো। পরক্ষণেই আবার সেই আলো নেই। এরকম ব্যপার আমাদের ভাবনায় কেবল কিছু বিস্ফোরিত হলেই হতে পারে। অথচ এত কাছে থেকেও কোন শব্দ শুনতে পাইনি।

পরে জানলাম পুরানো ঢাকায় একটা বিদ্যুতের ট্রান্সফর্মার বিস্ফোরিত হয়ে আগুন লেগেছে আশেপাশের কয়েকটা বাড়িতে। ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি এসে দেখে সেই গলি গাড়ি যাওয়ার মতো প্রশস্থ নয়। কী সর্বনাশ! কৌশলে সেই আগুন নেভাতে নেভাতে এতগুলো প্রাণ ঝরে গেল। আরো মৃতদেহ ভেতরে রয়ে গেছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিট আহত মানুষে ছয়লাব।

কত মানুষ কাঁদছে। কত মানুষ সবকজন স্বজনকে হারালো। কত মানুষ হয়তো পুড়ে চিরতরে পঙ্গু হয়ে যাবে। কত মানুষ হয়তো মরে বেঁচে গেছে।

আমরা কার কাছে যাব! কাকে অভিযোগ করবো! কী করবো আমরা...!


মন্তব্য

মর্ম এর ছবি

আমরা হতভাগার দল শুধুই দেখবো মন খারাপ
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...

~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...

স্নিগ্ধা এর ছবি

...............

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

---------------

অনিকেত এর ছবি

মন খারাপ

সাইফ তাহসিন এর ছবি

মন খারাপ
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

সবজান্তা এর ছবি

খবরটা শুনে গতকাল একটা কথাই মাথায় আসলো... আমার বাসাতে যে তেলাপোকাগুলি আছে,সেগুলির জীবনও এই দেশের মানুষের চেয়ে অনেক বেশি নিরাপদ, নিশ্চিন্ত।


অলমিতি বিস্তারেণ

সাঈদ আহমেদ এর ছবি

মন খারাপ
একই কথা ভাবছি দিনমান

-----------------------

-----------
চর্যাপদ

কল্পনা আক্তার এর ছবি

এই মুহুর্তে আমরা যা করতে পারি তা হলো রক্তের যোগান দেয়া। আহতদের জন্য অনেক রক্তের প্রয়োজন আমি আমরা সাধ্য মতো চেষ্টা করে যাচ্ছি আপনারাও যে যেভাবে পারেন এগিয়ে আসুন।
........................................................................................................
সব মানুষ নিজের জন্য বাঁচেনা


........................................................................................................
সব মানুষ নিজের জন্য বাঁচেনা

দুষ্ট বালিকা এর ছবি

আপু, সাহায্য করতে চাই। রক্তের জোগান দিতে পারবো দরকার হলে। কী করে একটু জানাবেন?

-----------------------------------------------------------------------------------
...সময়ের ধাওয়া করা ফেরারীর হাত থিকা যেহেতু রক্ষা পামুনা, তাইলে চলো ধাওয়া কইরা উল্টা তারেই দৌড়ের উপরে রাখি...

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

জুয়েইরিযাহ মউ এর ছবি

উফ!! শুধু লাশ লাশ আর লাশ...
টিভিস্ক্রীনে এক তিন/চার বছরের পিচ্চির মুখ ভেসে উঠলো... কী মায়াময় ফর্সা লালচে টুকটুকে... কে বলবে ঘুমন্ত নয় প্রাণহীন মাংসপিন্ড এক...

একজন বাবা সন্তানকে তুলতে গিয়ে দেখেন হাত চলে এসেছে আর সন্তান মেঝেতে পড়ে...
উফ!! কী যন্ত্রণাদায়ক...
এরকম কত কত ঘটনা শোনানো আর দেখানো হচ্ছে...
ভাল্লাগছেনা কিছুই ভাইয়া...

----------------------------------------------------
জানতে হলে পথেই এসো,
গৃহী হয়ে কে কবে কী পেয়েছে বলো....


-----------------------------------------------------------------------------------------------------

" ছেলেবেলা থেকেই আমি নিজেকে শুধু নষ্ট হতে দিয়েছি, ভেসে যেতে দিয়েছি, উড়িয়ে-পুড়িয়ে দিতে চেয়েছি নিজেকে। দ্বিধা আর শঙ্কা, এই নিয়েই আমি এক বিতিকিচ্ছিরি

দুষ্ট বালিকা এর ছবি

জানি এই লাশগুলোই এখন সত্যি, কিন্তু তাও টিভি খুলে এই নির্মম ছবিগুলো দেখতে চাই না, চাই না চাই না! মন খারাপ

-----------------------------------------------------------------------------------
...সময়ের ধাওয়া করা ফেরারীর হাত থিকা যেহেতু রক্ষা পামুনা, তাইলে চলো ধাওয়া কইরা উল্টা তারেই দৌড়ের উপরে রাখি...

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

তাজিন [অতিথি] এর ছবি

মন খারাপ ........

অভদ্র মানুষ [অতিথি] এর ছবি

কল্পনা আক্তার লিখেছেন:
এই মুহুর্তে আমরা যা করতে পারি তা হলো রক্তের যোগান দেয়া। আহতদের জন্য অনেক রক্তের প্রয়োজন আমি আমরা সাধ্য মতো চেষ্টা করে যাচ্ছি আপনারাও যে যেভাবে পারেন এগিয়ে আসুন।
........................................................................................................
সব মানুষ নিজের জন্য বাঁচেনা

....................... অদ্ভুত শক্ত সমর্থ কন্ঠের মতন শোনালো। যে কন্ঠ শক্তি যোগাতে পারে। বৃষ্টির দিনে ঘরে বসে খিচুড়ি আর গরুর মাঙসের সঙ্গ দিতে মনমরা হয়ে থাকার চেয়ে কাজের কাজ কিছু করা ভালো। অনুভূতি....দোষারোপ.....ইত্যাদী ব্লা ব্লা করার বহুত সময় পাওয়া যাবে। পোড়াদেহগুলোর যতগুলোকে বাঁচানো সম্ভব আমাদের দায়িত্ব নেয়া উচিৎ।

অভদ্র মানুষ

অতিথি লেখক এর ছবি

আমরা কপাল চাঁপড়াবো, কিছুদিন পর ভুলে যাব। আবার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলে আবার সেই কপালকেই চাঁপড়াবো।

>>>আইজুদ্দিন<<<

মামুন হক এর ছবি

ক্ষতিগ্রস্থ মানুষগুলোর পাশে গিয়ে দাঁড়া ভাই, সাধ্যমতো সাহায্য করার চেষ্টা কর। এছাড়া করার আর কীইবা আছে?

অতিথি লেখক এর ছবি

মন খারাপ
পলাশ রঞ্জন সান্যাল

মাসকাওয়াথ আহসান এর ছবি

এই মৃত্যু উপত্যকাই কী আমার দেশ! আর কত মৃত্যুর সর্বনাশা অংক কষবো আমরা। তিরিশ লাখ থেকে গুনছি। হয়তো পনেরো কোটিকে জেগে উঠবার বার্তা পাঠাতে তারা আত্মহননের পথ বেছে নিচ্ছে। তাপানুকূল কুম্ভকর্ণের ঘুম না ভাঙা পর্যন্ত ওরা মৃত্যু আর শোকের মাতম তুলতে থাকবে। দেশপ্রেমের এসিড টেস্ট।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।

অনুপম ত্রিবেদি এর ছবি

এই নরকের নিশ্চিত মৃত্যুকে মেনে নিয়েই আমাদের তিলোত্তমা জীবন !!!

===============================================
ভাষা হোক উন্মুক্ত

==========================================================
ফ্লিকারফেসবুক500 PX

সাইফ শহীদ এর ছবি

বিগত রাত থেকে আজ সকাল (আমেরিকার সময়) পর্যন্ত অনেকবার দেখলাম পোড়া মানুষদের ছবি। এটি কি শুধুই একটি দূর্ঘটনা?

মনে পড়লো কাজের মধ্যে একদিন হঠাৎ করে বেজে উঠলো ইমারজেন্সি ঘন্টা। শুনলাম 'ফায়ার ড্রিল' হচ্ছে। লিফটের বদলে সবাই সিড়ি বেয়ে নামলাম। নেমে কোথায় যেয়ে দাড়াতে হবে সেটাও পরিস্কার ভাবে লিখে ও ডায়াগ্রাম একে সব দরজার পাশে ঝোলানো আছে। বছরে ২/৩ বার করা হয় এই ড্রিল। এই ড্রিল করার জন্যে প্রতি বারে ২৫,০০০ ডলারের বেশী খরচ হয় বলে আমার হিসাব। এই খরচের কি কোন দরকার ছিলো? - তখন ভেবেছিলাম আমি।

ঢাকার পোড়া মানুষদের ছবি দেখে বুঝলাম এদেশের মানুষরা কেন এই খরচটা করে।

সাইফ শহিদ

http://www.saifshahid.com

সাইফ শহীদ

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।