১.
ভাইরাসের সবচাইতে বড় দুর্বলতা হচ্ছে সে বিশেষ কোন প্রাণীর জন্য তৈরি। যে ভাইরাস পাখির কোষে আক্রমণ করতে পারে সে ইঁদুরের কোষে পারে না। ভাইরাসের আক্রমণের প্রথম অংশ প্রাণিকোষের ভেতরে ঢোকা। কোনো প্রাণিকোষের বাইরে সে জড়বস্তু ছাড়া আর কিছুই নয়।
ভাইরাসের একটি বিশেষ ক্ষমতা হচ্ছে সে যেকোন প্রাণিকোষের ভেতরেই বাচ্চা দিতে পারে।
সব মিলিয়ে ব্যাপারটা এরকম, ভাইরাস সব প্রাণিকোষের ভেতরেই বাচ্চা দিয়ে সেই কোষের দফারফা করে দিতে পারে কিন্তু সব প্রাণিকোষের ভেতরে সে প্রবেশ করতে পারে না।
এইখানে হয়তো আনন্দে বগল বাজানো যেত এই ভেবে যে, ভাইরাস তাহলে মারাত্মক কিছু না। যেকোন কোষের ক্ষতি করতে পারলেই বা কী! ক্ষতি করার আগে তাকে তো কোষের ভেতরে ঢুকতে হবে! ওইখানে বাবা ভাইরাস তুমি আটকা! চাইলেই আমার কোষের ভেতরে তুমি ঢুকতে পারছ না!
কিন্তু আনন্দে বগল বাজানো যায় না। কারণ ভাইরাসের আছে অনন্য একটা ক্ষমতা। সেটা হচ্ছে তারা নিজেকে বদলে নিতে পারে। তারা পরস্পরের সঙ্গে মিলে ক্ষমতা ভাগ করে নিতে পারে! একটা ভাইরাসের যদি যুদ্ধবিমান থাকে আর একটা ভাইরাসের যুদ্ধ জাহাজ তাহলে তারা সন্ধি করে দুজনেই জল-আকাশ দুই জায়গাতেই আক্রমণের ক্ষমতা অর্জন করে ফেলতে পারে!
নিজেকে বদলে নেয়ার অথবা নতুন ক্ষমতা অর্জন করে নেয়ার ভাইরাসের এই ক্ষমতা অবশ্য সীমাহীন নয়। যে ভাইরাসটি আজকে রুই মাছের ক্ষতি করছে সে আচমকা হামিং বার্ডের ক্ষতি করে ফেলতে পারবে এরকমটা খুব সহজে হওয়া কথা না। কিন্তু যে ভাইরাসটি রুই মাছের ক্ষতি করছে সে নিজেকে একটুখানি বদলে নিয়ে কাতলা মাছের ক্ষতি করার ক্ষমতা খুব সহজেই অর্জন করে ফেলতে পারে।
২.
বাদুড় এমনিতে আমার পছন্দ। ছোটবেলায় বাচ্চা সাইজের বাদুড় ধরে দেখেছি বেশ তুলতুলে। ধরে নিয়ে গবেষণা করার চেষ্টা করলে খামচি কামড় দেয়ার চেষ্টা করে বটে তবে সেটা নিশ্চয়ই দোষের কিছু না! বাদুড়ের যে ব্যাপারটিতে আমার খানিকটা আপত্তি আছে সেটা হচ্ছে তারা স্তন্যপায়ী প্রাণী। এরাই একমাত্র স্তন্যপায়ী প্রাণী যারা উড়তে পারে।
স্তন্যপায়ী বলে এদের কোষের সঙ্গে অথবা কোষের কার্যকলাপের সঙ্গে অন্যসব স্তন্যপায়ী প্রাণীর অনেকখানি মিল আছে।
আজকে যদি সাতক্ষীরায় একটা লোক কোনো ভাইরাসে আক্রান্ত হয় আর দুদিন পরে সিলেটে কেউ সেই একই ভাইরাসে আক্রান্ত হয় তাহলে স্বাস্থ্য গবেষকদের মধ্যে বেশ একটা আতঙ্কের সৃষ্টি হবে সেই ভাইরাসের ছড়িয়ে যাওয়ার ক্ষমতা দেখে। আমি নিজে গবেষক গোত্রের কেউ না হলেও এরকম কোনো ঘটনা দেখলে আমি সবার আগে জানতে চাইব বাদুড়ের শরীরে কোনোভাবে ওই ভাইরাসটি বেঁচে থাকতে পারে কি না! কারণ যে ভাইরাসটি মানবকোষে সংক্রমণ ঘটায় তার পক্ষে পাখিদের সংক্রমণ ঘটানো সহজ নয়। একমাত্র ওই বাদুড় ছাড়া। বাদুড়ের সংগে মানুষের অনেক মিল। তারা দুজনেই স্তন্যপায়ী প্রাণী। আর এক বাদুড়ই পারে এইমাত্র সাতক্ষীরার সন্দেশ খেয়ে পরের মুহূর্তেই চা খাওয়ার জন্য সিলেট যেতে।
বাদুড়ের প্রতি তাই আমার একটাই ক্ষোভ। আরে ব্যাটা তুই স্তন্যপায়ী কেন হলি! আর হলিও যদি তাহলে তুই উড়তে কেন পারিস! আর উড়তেই যদি পারবি তাহলে এতগুলো ভাইরাসের বাহক(career) কেন হলি! (বাহক বা ক্যারিয়ার হচ্ছে তারা যারা কোনো জীবাণু বয়ে বেড়ায়। মশা যেমন ম্যালেরিয়ার জীবাণুর বাহক।)
বাদুড় একই সঙ্গে অনেকগুলো বিপজ্জনক ভাইরাসের বাহক [১]। বাদুড়ের ভেতরে এইসব ভাইরাস আরামে পড়ে থাকে। আর সুযোগ পেলেই ছড়িয়ে পড়ে নাস্তানাবুদ করে দেয় অন্যান্য স্তন্যপায়ী প্রাণীদের।
৩.
মানুষের মাথার রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা একদিক থেকে সুবিধার নয়। জীবাণুরোধী ওষুধ খেলেই তা রক্তে ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু রক্তের সব ওষুধ মাথায় প্রবেশাধিকার পায় না। আর তাছাড়া মানুষের মাথায় শরীরের সব ধরনের প্রতিরক্ষা কোষের অবাধ যাতায়াত নেই। জীবাণুর জন্যেও অবশ্য ব্যাপারটা সত্যি। শরীরের অন্যসব অঙ্গে যেমন, সেরকম সহজে জীবাণুরা মাথায় প্রবেশ করতে পারে না। কিন্তু একবার প্রবেশ করতে পারলে বেশ বড় রকমের ঝামেলা বাধে। মাথায় একে তো সব ধরনের রক্ষী কোষ থাকে না তার উপর ওষুধ খেলেও তা সবক্ষেত্রে গন্তব্যে পৌঁছে না। তাই একবার সেখানে জীবাণু প্রবেশ করতে পারলে বলে তারা নির্বিঘ্নেই বসত করতে পারে।
মাথায় যদি জীবাণুর সংক্রমণ ঘটে তাহলে তাকে দুইটা নামে ডাকা যায়, প্রথমটা মেনিনজাইটিস। খুলির ভেতর মগজের সবচে বাইরের যে স্তর সেখানে জীবাণুর (যে কোনো ধরণের জীবাণু) সংক্রমণ হলে তাকে বলে মেনিনজাইটিস। মাথায় জীবাণু সংক্রমণের দ্বিতীয় রকমটিকে বলে এনসেফালাইটিস। সংক্রমণকে এনসেফালাইটিস বলা হয় যদি জীবাণুর সংক্রমণ মগজের বাইরের আস্তর ভেদ করে ভেতরে পৌঁছে তবে।
ভাইরাল এনসেফালাইটিস মানে ভাইরাসের সংক্রমণে সৃষ্টি হওয়া এনসেফালাইটিস।
[ওডিন (আমাদের তন্ময় দা) বলে এইখানে একজন ডাক্তার আছেন। আছে আমার দোস্ত মেহদীও। তারা কেউ যদি এই ব্যাপারটা একটু বুঝিয়ে বলত!]
৪.
সম্প্রতি দেশে যে ভাইরাল এনসেফালাইটিসের (Encephalitis: দেশের শীর্ষ পত্রিকাগুলোর অন্তত একটিকে দেখেছি এই শব্দটিকে 'এনকেফালাইটিস' লিখতে!) সংক্রমণ দেখা দিয়েছে সেটির জন্য দায়ী নিপাহ ভাইরাস। এটি অবশ্য এবারই দেশে প্রথম নয়। বাংলাদেশে এই সংক্রমণ শুরু হয়েছে ২০০১ সাল থেকে। WHO বলছে ১৯৯৮-৯৯ সালে মালয়েশিয়ায় শুরুর পর ১৯৯৯ সালে এই রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যায় সিঙ্গাপুরে। ২০০১ সালে এই রোগ ছড়ায় একই সঙ্গে ভারত এবং বাংলাদেশে। এরপর ভারতে ২০০৭ এর সংক্রমণ বাদ দিলে ২০০১ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত কেবল বাংলাদেশেই এই রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা গেছে। ২০১১ তে বর্তমান প্রাদুর্ভাবের ঘটনাটি সহ মোট ১০ বার নিপাহ ভাইরাসজনিত এনসেফালাইটিসের এই প্রাদুর্ভাব ঘটল বাংলাদেশে [২]।
বিডিনিউজ ২৪ বলছে এবার নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশে মারা গেছে কর্তৃপক্ষের হিসাবে এখন পর্যন্ত ১৭ জন। একই খবরে তারা বলেছে বাংলাদেশে ২০০১ থেকে এ পর্যন্ত এই রোগে আক্রান্ত ১৭৪ জনের মধ্যে মারা গেছেন ১২৭ জন [৩]।
৫.
নিপাহ ভাইরাস প্যারামিক্সোভিরিডি পরিবারের হেনিপাভাইরাস গোত্রের দুটি মাত্র প্রজাতির একটি (Nipah Virus: আমি জানি না কেন পত্রিকাওয়ালারা 'নিপাহ'-এর 'হ'টাকে গায়েব করে এটাকে 'নিপা' বানিয়ে ফেলেছেন)। এই ভাইরাসের বাহক বাদুড়। বাদুড়ের লালাতে এই ভাইরাস থাকতে পারে। তাই বাদুড়ের লালার সংস্পর্শে এসেছে এরকম যেকোন খাবার থেকে ছড়াতে পারে এই ভাইরাস। আক্রান্ত মানুষ থেকেও এই ভাইরাস সংক্রমিত হতে পারে সুস্থ মানুষের মধ্যে [৪.১]। এবং ব্যাপারটি সেখানেই শেষ নয়।
বাতাসের মাধ্যমে ছড়াতে পারে বলে নিপাহ ভাইরাসের সংক্রমণের হার খুব বেশি। বাতাসে ছড়ানোর ব্যাপারটা বুঝিয়ে বলা দরকার। বাতাস বলতে, হাঁচি-কাশি বা অন্য কোনোভাবে বাতাসে ছড়িয়ে যাওয়া রোগীর ফুসফুস বা মুখের জলীয় পদার্থ যা বাতাসে ভেসে বেড়াতে পারে। এরকম সবকিছুর মাধ্যমে নিপাহ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর থেকে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়তে পারে এই রোগ [৪.২]। কারণ অবশ্যই হাসপাতালের মান। সংক্রমণশীল রোগের রোগীদের জন্য হাসপাতালে বিশেষ নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থায় চিকিৎসা দেয়ার সুবিধা না থাকলে এরকম ঘটতে পারে সহজেই। বাংলাদেশের সেরা হাসপাতালগুলোতেও সেরকম সুবিধা আছে বলে আমার জানা নেই।
নিপাহ ভাইরাস শুকরের মধ্যে উচ্চমাত্রায় সংক্রমিত হতে পারে। সংক্রমিত হতে পারে গৃহপালিত আর সব স্তন্যপায়ী প্রাণীর মধ্যেও। এইসব প্রাণী থেকে অন্য প্রাণী অথবা মানুষের মধ্যেও সংক্রমিত হতে পারে এই ভাইরাস। তবে সবচাইতে বড় বিপদের কথা হচ্ছে এই ভাইরাসের প্রাকৃতিক খনি বাদুড়। বাদুড়ের নিপাহ ভাইরাস জনিত এনসেফালাইটিস হয় বলে কোনো প্রমাণ নেই তবে এই প্রাণীর মাধ্যমে নিপাহ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে দূরদূরান্তে [৪.৩]।
৬.
শুকরের উপর গবেষণায় দেখা গেছে নিপাহ ভাইরাস প্রথম সংক্রমণ ঘটায় শ্বসনতন্ত্রে। লসিকাতন্ত্র(রক্তের মতো এক ধরনোর তরল পরিবাহী তন্ত্র। অনেকটা রক্ত পরিবহনের মত করেই পরিবাহিত হয়।) আর সংবহণতন্ত্রের(রক্ত পরিবহনতন্ত্র) অনেক অংশে এই ভাইরাসের উল্লেখযোগ্য মাত্রায় উপস্থিতি দেখা গেছে। দেখা গেছে, শ্বসনতন্ত্রে বাচ্চাকাচ্চায় জ্ঞাতিগোষ্ঠীতে বেড়ে গিয়ে এই ভাইরাস সংক্রমণ ঘটায় স্নায়ুতন্ত্রে।
মাথায় 'ব্লাড-ব্রেইন ব্যারিয়ার' (blood-brain barrier) বলে একটি পর্দা আছে। বলা যায় এটি মস্তিষ্কে ঢোকার সদরদুয়ার। এই দুয়ার ভেদ করে সবাই প্রবেশ করতে পারে না। এমনকি শরীরের সব রক্ষীকোষও না। এই পর্দাটি শরীরে প্রবাহিত রক্ত আর স্নায়ুতন্ত্র এবং মস্তিষ্কে প্রবাহিত বিশেষ তরলের (Cerebrospinal fluid) মধ্যে একটি অতি প্রয়োজনীয় বিভেদ সৃষ্টি করে রাখে। স্নায়ুতন্ত্রে সংক্রমিত নিপাহ ভাইরাস এই 'ব্লাড-ব্রেইন ব্যারিয়ার' ভেদ করে মস্তিষ্কে পৌঁছে যেতে পারে। সেখানেই মূলত এনসেফালাইটিস রোগটির সূত্রপাত [৫]।
নিপাহ ভাইরাসের ইনকিউবেশন পিরিয়ড (incubation period) ৪ থেকে ৪৫ দিন। তার মানে, এই ভাইরাস সংক্রমণের পর রোগের লক্ষণ প্রকাশ পেতে ৪ থেকে ৪৫ দিন পর্যন্ত সময় লাগে [৬]।
নিপাহ ভাইরাসজনিত এনসেফালাইটিসের অনেকরকম উপসর্গ দেখা দিতে পারে। মাথাব্যথা, জ্বর, মাংসপেশীর খিঁচুনি, শ্বাসকষ্ট, মাথা ঘোরা, শরীরের উপর নিয়ন্ত্রণহীনতা, গলা ফুলে যাওয়া, বমি, জ্ঞান হারানো, প্রলাপ বকা, এরকম অসংখ্য উপসর্গ আছে এই তালিকায় [৭]।
এই ভাইরাসের দ্বারা সংক্রমিত হওয়ার পরেও যারা সৌভাগ্যবশত সুস্থ হয়ে উঠেছেন তাদের মধ্যে পরবর্তীতে আবারো এনসেফালাইটিসের লক্ষণ ফিরে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। সম্ভাবনা আছে স্নায়ুতন্ত্রের কর্মক্ষমতা বদলে যাওয়ার, স্থায়ী খিঁচুনি রোগের লক্ষণ দেখা দেয়ার এমনকি ব্যক্তিত্ব পরিবর্তিত হয়ে যাওয়ারও [৮]।
নিপাহ ভাইরাস জনিত এনসেফালাইটিসে মৃত্যুহার ৪০ থেকে ৭৫ ভাগ পর্যন্ত হতে পারে। ২০০৭-৮ এ বাংলাদেশে যে ৩ বার এই রোগের প্রাদুর্ভাব হয়েছে তার মধ্যে দুবার মৃত্যুহার ছিল ১০০ ভাগ। সৌভাগ্য বশত সেই দুইবার সংক্রমণের হার ছিল বেশ কম [৯]।
৭.
না। কোনো চিকিৎসা নেই। দুইটি গবেষণায় কিছুটা আশাব্যঞ্জক ফলাফল পাওয়া গেছে বলে আমি পড়েছি [১০, ১১]। কিন্তু সত্যিকারের রোগ নিরাময়কারী ওষুধ অথবা প্রতিরোধী টিকা কোনোটাই মানুষের হাতে এই মুহূর্তে নেই। ক্লোরোকুইন নামের একটি ওষুধ(ম্যালেরিয়ার চিকিৎসায় ব্যবহৃত) ল্যাবরেটরিতে আশাব্যঞ্জক ফলাফল দিলেও প্রাণীর শরীরে নিপাহ ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে কোনো কার্যকর ফলাফল দেখাতে পারেনি [১২]।
সংক্রমণ এড়িয়ে চলা ছাড়া তাই এই মুহূর্তে কোনো উপায় নেই। সংক্রমণ এড়াতে বাদুড়, বাদুড়ের খাওয়া ফল বা অন্য যেকোন খাবার থাকে দূরে থাকা ভালো। আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শও এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে যেতে পারেন কেবল চিকিৎসক অথবা অন্যান্য চিকিৎসাকর্মীরা। এবং সেটা অবশ্যই প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বনের পর।
৮.
নিপাহ ভাইরাসজনিত এনসেফালাইটিস বাংলাদেশের মানুষের জন্য বিশেষভাবে বিপজ্জনক।
যে বাদুড় নিপাহ ভাইরাস ছড়ায় তারা প্রাকৃতিক ভাবেই এই ভাইরাস বহন করে চলে। এখন পর্যন্ত পরিক্ষিত সব বাদুড়ই এই প্রমাণ দিয়েছে। এই বাদুড় সারা বাংলাদেশেই বাস করে [১৩]।
এদেশের গ্রামেগঞ্জের সাধারণ মানুষের মধ্যে খাদ্যগ্রহন বিষয়ক সচেতনতা খুবই কম। ফলজাতীয় খাবার ধুয়ে খাওয়ার অভ্যাস তাদের অনেকের মাঝেই নেই।
এদেশে রোগীর সেবা করেন তার আপনজনেরা। সেটাতে দোষের কিছু নেই। কিন্তু যারা রোগীর সেবা করেন তারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রোগীর সেবা করার সময় কিভাবে সতর্ক থাকা উচিত সে সম্পর্কে জানেন না। রোগীর ব্যবহৃত খাবার, আসবাব অথবা পোশাক, রোগীর লালা, তার শরীর থেকে নির্গত অন্য যেকোনো তরল অথবা শরীরের কোনো বর্জ্য অথবা আরো যা কিছু রোগ ছড়ানোর জন্য দায়ী হতে পারে সেসব জিনিস রোগীর সেবাকারী স্বজনদের সরাসরি সংস্পর্শে আসে প্রায় শতভাগ ক্ষেত্রেই। দক্ষিণ এশিয়ার যে চারটি দেশে নিপাহ ভাইরাস জনিত এনসেফালাইটিসের প্রাদুর্ভাব সবচে বেশি দেখা গেছে (বাংলাদেশে ১০ বার, ভারতে ২ বার, মালেশিয়া এবং সিঙ্গাপুরে ১ বার [১৪]) সেসব দেশের মধ্যে বাংলাদেশে মানুষ থেকে মানুষে এই রোগ ছড়ানোর হার সবচাইতে বেশি। বাংলাদেশে সংক্রমণের ৫০ ভাগ ঘটে মানুষের মাধ্যমে। এই রোগের প্রাদুর্ভাবও বাংলাদেশেই বেশি [১৫]।
অন্য দেশের বিপরীতে বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হওয়া নিপাহ ভাইরাসের অনেকগুলো ধরন আছে। এদের স্ট্রেইন(strains) ভিন্ন ভিন্ন। তার মানে হচ্ছে সবগুলো একই প্রজাতির ভাইরাস হলেও তাদের মধ্যে সূক্ষ্ম পার্থক্য আছে [১৬]। এই পার্থক্য এইসব ভাইরাসের জন্য কার্যকর ওষুধ অথবা টিকা তৈরির পথে সবচে বড় অন্তরায় হতে পারে! একই কারণে শরীরে প্রাকৃতিক ভাবে তৈরি হওয়া রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা এই নিপাহ ভাইরাসের বিরুদ্ধে অকার্যকর হয়ে যেতে পারে।
এবং বাংলাদেশের চিকিৎসাসেবা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মানসম্মত নয়।
৯.
নিপাহ ভাইরাস নিয়ে গবেষণা হয়েছে খুবই অল্প। সারা পৃথিবীতেই ভাইরাস নিয়ে গবেষণার সুযোগ নিতান্ত কম। অথচ মারাত্মক এইসব ভাইরাস এখনো মানব প্রজাতিকে নিশ্চিহ্ন করে ফেলতে পারেনি অনেকটা ভাগ্যের দয়াতেই। কতদিন ভাগ্য দয়া করে বসে থাকবে জানি না। খুব বেশিদিন থাকবে সেরকম কোনো আশাও দেখি না এই সময়ের নতুন রোগগুলো দেখে।
আমি খুব আশা করে থাকি, পৃথিবীর মানুষ একদিন একে অন্যকে মেরে ফেলার জন্যে অস্ত্র না বানিয়ে কেবল বিজ্ঞানাগার বানাবে। কিভাবে মানুষ মেরে ফেলতে হয় সেই প্রশিক্ষণ দিয়ে বোকা ছেলেমেয়েগুলোকে মানুষের জন্য অভিশাপ না বানিয়ে তাদেরকে গবেষণা করতে শোখানো হবে। যুদ্ধবিমান আর যুদ্ধ জাহাজ কেনার টাকাগুলো ব্যয় করা হবে গবেষণার পেছনে।
বিশ্বের যেকোন দেশেই সবচে বেশি মানুষ মরে যায় রোগের কবলে পড়ে, অশিক্ষায়। অথচ আমার জানা মতে বিশ্বের কোনো দেশেই শিক্ষা অথবা গবেষণার জন্য সর্বোচ্চ বরাদ্দ নেই। সব সময়েই যথেষ্ট বরাদ্দ আছে কেবল মানুষ মেরে ফেলার আয়োজনের পেছনে!
সবকিছুর পরেও আমি খুব আশা করে থাকি একটা মানুষের পৃথিবী দেখার...
তথ্যসূত্রঃ
১. Bats Prove To Be Rich Reservoirs for Emerging Viruses
২,৯,১৪. Chronology of Nipah virus outbreaks
৩. বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম
৪.১,৪.২,৪.৩,৬,৭,৮. বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা: Nipah Virus
৫. Invasion of the Central Nervous System in a Porcine Host by Nipah Virus
১০. Crystal Structure and Carbohydrate Analysis of Nipah Virus Attachment Glycoprotein: a Template for Antiviral and Vaccine Design
১১. Nipah Virus: Vaccination and Passive Protection Studies in a Hamster Model
১২. Chloroquine Administration Does Not Prevent Nipah Virus Infection and Disease in Ferrets
১৩,১৪,১৫,১৬. Recurrent Zoonotic Transmission of Nipah Virus into Humans, Bangladesh, 2001–2007
বানান কৃতজ্ঞতাঃ বুনোহাঁস
ব্যাক্তিগত ব্লগে প্রকাশিত
মন্তব্য
এমন কঠিন বিষয়কে এত সহজ করে প্রকাশের ক্ষমতা আমাকে যুগপৎ মুগ্ধ ও ঈর্ষান্বিত করে। ভাইরাস ও ব্যাক্টেরিয়া সংক্রমণের বিষয়ে জানার আগ্রহ শতগুনে বাড়িয়ে দিলেন, এ বিষয়গুলির উপর আরো লেখা চাই।
আপনার সাথে সহমত হয়ে সুমনের স্বরে বলতে ইচ্ছে করে,
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
তথ্যবহুল পোস্ট ।
অনেক কিছু জানলাম ।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
ভাই আমার তো এখন জর জর লাগতেছে ।যাই হোক লেখা টা অনেক সহজ ভাষায় লিখছেন।
--------------------------------
Sad, Sorrow and Sadness
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
ভয়ংকর।
প্রতিরোধের প্রাথমিক ধাপগুলো কি? ফলমুল খাওয়া বন্ধ করা আপাততঃ? পানি দিয়ে ধুলেই কি জীবানুমুক্ত হবে?
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
বাদুড় এবং বাদুড়ের সংস্পর্শে আসা যে কোন কিছু থেকে দুরে থাকা জরুরী। এই সময়ের মৌসুমী ফলগুলোর মাধ্যমে বাংলাদেশে নিপাহ ভাইরাস ছড়ায় বলে একটা হাইপোথেসিস আছে। খবরে পড়লাম বিশেষজ্ঞরা বলছেন এবার বাংলাদেশে নিপাহ ভাইরাস ছড়িয়েছে খেজুরের রসের মাধ্যমে।
কেবল পানি দিয়ে ধুলে কোন কিছু জীবাণুমুক্ত হবার সম্ভাবনা নেই প্রায়। আমি আসলে জানিনা নিপাহ ভাইরাস মুক্ত পরিবেশে কতক্ষণ টিকে থাকতে পারে অথবা কতদিন সক্রিয় থাকতে পারে। সম্ভাব্য সংক্রামিত ফল/খাবার পানি দিয়ে ধুয়ে খাওয়া কতটুকু নিরাপদ তাও জানিনা। এইসব ব্যাপারে কোন গবেষণা হয়েছে বলে আমার জানা নেই। নিপাহ নিয়ে গবেষণা খুবই কম হয়েছে। তারপরও আমি কোনভাবে জানতে পারলে অবশ্যই আপনাকে জানাবো।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
বাদুড়, এবাদুড় কিছুই কি সুবিধার না?
প্রবন্ধে
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
দারুণ সহজবোধ্য করে লিখেছেন।
আচ্ছা বাদুড় কোন ধরণের খাবার বেশি খায়, বা ফলমূল? আর প্রতিকারের উপায়গুলো সম্পর্কে একটু বিশদ আলোকপাত করলে ভালো হয়।
কয়েকদিন ধরে আমার গলাব্যথা, জ্বর, না জানি কী হলো!
==============================
হা-তে এ-ক প্র-স্থ জো-ছ-না পা-ড়ে-র ঘ্রা-ণ
খোমাখাতা
যে ধরনের বাদুড় নিপাহ ভাইরাস ছড়ায় সেগুলো ফলমুল খায়। এরা খেজুরের রস খায় কিনা অথবা খেলেও কিভাবে খায় সেটা আমার জানা নেই। কিন্তু বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞরা বলছেন এবার নিপাহ ছড়িয়েছে খেজুরের রস থেকে।
প্রতিকারের আরো বিশদ উপায় আছে বলে আমার জানা নেই। থাকলে আমি খুশিই হতাম।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
অসাধারণ প্রবন্ধ!
জীবাণুর ভক্ত পাঠক আমি।
অনেক ধন্যবাদ দ্রোহীদা।
ভাতিজা আছে কেমন?
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
খুব ভালো পোস্ট। তোমার স্বপ্ন সত্যি হোক।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
মন্তব্য এবং বানান ঠিক করে দেয়ার জন্য অনেক কৃতজ্ঞতা।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
এই রোগের প্রাথমিক লক্ষণগুলো কী কী?
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
লজ্জায় ফেলা ইমোটিকন দিয়ে একেবারে নাস্তানাবুদ করে দিলেন!
এই রোগের প্রাথমিক লক্ষণগুলো লিখেছি ৬ নাম্বার এ। আপনার চোখ এড়িয়ে গেছে বোধহয়।
আপনাদের সঙ্গে মেলায় আড্ডার অতীত এইবার খুব ভোগাচ্ছে
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
ভাবতেই ভয় লাগে নিপা নামের একটা মেয়েকে এক সময় পছন্দ করতাম
অনেক আগে আমার এক বন্ধু ছিল নীপা নামে।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
সচলে নীপা নামে কে আছে, তাকে তাড়াতাড়ি ব্যান্ড করা হউক ! ভাইরাস ছড়ানোর আগেই !! আর নীপা নামে কারো সাথে যার সম্পর্ক আছে, তাকেও !! হা হা হা !!!
পৃথিবীটা তো দেখি অনুজীবেরই বসবাসের যোগ্য, মানুষের না !
পোস্ট ভালো হয়েছে রতন !!
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
অনেক ধন্যবাদ রণ'দা। পৃথিবীটা আসলেও মানুষের রইল না আর!
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
খুব ভালো লেখা। অনেক কিছু জানলাম।
ধন্যবাদ।
কুটুমবাড়ি
মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
চমৎকার পোষ্ট, বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত জানা ছিলনা একেবারেই, শুধু নাম জানতাম।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
এদিকে আজকাল খুব মৌসুমী ফ্লু-জ্বর হচ্ছে। সাধারণ ফ্লু থেকে নিপাহের ভাইরাস আলাদা করার উপায় আছে নাকি ??
... পরিশ্রমী লেখা খুব ভাল্লাগে।
সাধারণ ফ্লু থেকে এনসেফালাইটিস আলাদা করার বিষয়টা যদি কোন ডাক্তার বলতেন তাহলে ভালো হত। এই বিষয়ে দুয়েকলাইন কেতাবি জ্ঞান ছাড়া আমার আর কিছু জানা নেই। হিউম্যান ফিজিওলজিতে আমি অকাট মূর্খ!
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ হে ভ্রাতা
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
লেখাটা পড়তেই বেশি ভাল লাগছিল। খুব সুন্দর উপস্থাপন। মাঝখান থেকে যে অনেক কিছু জানা হয়ে গেল টের পাইনি।
গত সপ্তাহ জ্বর-সর্দি নিয়ে কাটিয়েছি। এখন সুস্থ, কিন্তু মাথাটা যেন খুলতে চাচ্ছেনা।
-রু
মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
দুর্দান্ত লেখা! স্রেফ দুর্দান্ত! কুর্ণিশ করা ছাড়া আর কোন কথা নাই।
আর শুধুমুধু আমার নাম নিয়া লাভ নাই, এতো চমৎকারভাবে এতো সহজ করে এত গুছিয়ে আর কেউ লিখতে পারে বলে আমি বিশ্বাস করি না।
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না
লজ্জায় ফেলা ইমোটিকনের জন্য দিক্কার তোমারে!
আহা তোমার মত বিনয় যদি থাকতো আমার!
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
বাহ্! বাহ্! চমৎকার! আরে নাহ, ধুর, নিপাহ ভাইরাস না। ভাইরাস নিয়ে ভয় পাবো কী, আমি তো লেখা পড়েই মুগ্ধ! এত সহজ ভাষায় গুছিয়ে লেখার জন্যে অনেক (গুড়)
নিপাহ ভাইরাস মুক্ত পরিবেশে কতদিন সক্রিয় থাকতে পারে, বা ফলমূল শুধু পানিতে ধুলেই চলবে কিনা, এই তথ্যগুলো জানতে পারলে এখানে আপডেট দিয়ে রাখার অনুরোধ রইল। আপাতত শেয়ার করলাম তারকার সাথে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
নতুন কিছু জানতে পেলে আপডেট দেয়া চেষ্টা করব। মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
দাদা, লেখাটা খুব ভালো হইছে। পইড়া আরাম পাইলাম। লেখুম লেখুম কইরাও লেখা হয়নাই। এই রোগে এক্কেবারে প্রথম দিকে জ্বর আর মাথাব্যাথা টাই থাকে। শুধু রোগী দেখে প্রথমে কিছু বোঝা মুস্কিল। তবে মোটামুটি ২৪ ঘন্টার মাঝেই ঘাড়ের পেশী শক্ত হয়ে যায় (নেক রিজিডিটি)। তখন অতি অবশ্যই রোগীকে হাসপাতালে নিতে হবে। প্রলাপ বকা কিংবা শরীরের উপর নিয়ন্ত্রনহীনতা বেশ পরে হয়।
মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ। আপনিও একটা পোস্ট দিয়ে ফেলুন। যত জানতে পাবো ততই ভালো।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
তোর লেখা এতো সাবলীল ক্যামনে হয়? পড়ার সময় মনেই থাকেনা যে কিসব কঠিন বিষয় নিয়ে লিখেছিস! অনেক, অনেক ধন্যবাদ এই লেখাটার জন্য। এর দরকার ছিলো কারণ চারিদিকে আতংক আছে কিন্ত বুঝিয়ে বলার মতো তথ্য খুবই কম।
এক্ষুনি ফেসবুকে শেয়ার দিলাম।
... ... আমিও ... ...
==========================================================
ফ্লিকার । ফেসবুক । 500 PX ।
তোমারেও দিক্কার লজ্জায় ফেলা ইমোটিকনের জন্য!
হ! মানুষের একটা পৃথিবী হবেই একদিন।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
মন্তব্য ওলট-পালট! ঘ্যাচাং
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
এই বিষয়ের তোর লেখার ক্ষমতা আর জ্ঞান নিয়া নতুন কইরা কিছু বলার নাই।
আমি চিন্তিত অন্য কারণে- বার বার সাতক্ষীরার সাথে সিলেটের নাম টাইনা আনায়
অলমিতি বিস্তারেণ
নতুন কইরা আর কী বলবি! আকাট মূর্খ তো আমারে আগেই কইছস!
আরে চিন্তা করিস না। ইন্দোনেশিয়া হইলে পরে ভাবিস!
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
কঠিন বিষয় নিয়ে জলবৎ তরল গদ্য লেখার ব্যাপারটা মনে হয় আপনার সহজাত। এরকম টিচার পেলে বায়োলজি ছেড়ে দিতাম না। আগেও বলেছি, আমার বায়োলজি জ্ঞান মাধ্যমিক স্তরের, আপনার লেখা আমার জন্য দারুণ প্রাপ্তি।
গরমের সময় সুইমিং পুলের পানিতে গোসল করে মারা যাওয়ার নিউজ শুনি মাঝে মাঝে। সেটাও নাকি একধরণের ভাইরাসজনিত মেনেনজাইটিস। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মৃত্যু হয় তাতে।
মাঝে মাঝে মনে হয় বেঁচে থাকাটাই বিস্ময়কর।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
এত বিপদ চারপাশে, বেঁচে থাকাটা সত্যিই বিস্ময়কর!
মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ তাসনীম ভাই
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
তথ্য আর উপস্থাপনা, দুটোতেই
এইসব লেখা বছর ১৫ আগে পড়লে বায়োলজি ঠিকই নিতাম
মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
সে-বাদুড় এ-বাদুড় নয় তো?
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
কি জানি! সারা দেশটাই বাদুড়ে ছাওয়া! একই জাতের হইতেও পারে!!!
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
ভাইরাল এনসেফালাইটিসের জন্য দায়ী নিপাহ ভাইরাস যার বাহক বাদুড় ।এ
বিধায় , এবাদুড় থেকে সাবধান ।
।তাই, ভাইরাস আক্রান্ত (বাহক এবাদুড়) মানুষ থেকেও সাবধান
খেয়াল কৈরা
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
ও! তাইলে এ-বাদুড়ের সাথে নিপার সম্পর্ক!
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
আর রোগটাও স্নায়ুর রোগ। এই রোগে ব্যক্তিত্ব পর্যন্ত বদলে যায়
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
যাক এইবেলা কোন ভাইরাসকে ভালোবাসতে বললেন না।
লেখা যথারীতি সাবলীল, গুনমুগ্ধ পাঠকেরা এবারো জানলো অনেক কিছু।
এত সুন্দর নামের ভাইরাসের আক্রমন এত ভয়ংকর হবে ভাবা যায়?
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
ভাইরাস কিন্তু বিজ্ঞানের অনেক জরুরী কাজে লাগে
মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
৯ নং পয়েন্টের জন্য ধন্যবাদ দিতে ভুলে গিয়েছিলাম। ওটা হুবহু আমারই কথা!
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
গুড পোস্ট!!
১) যে কোন রোগে (ভাইরাস/ব্যাকটেরিয়া অনুজীব দ্বারা) আক্রান্ত হবার সাথে মানুষের স্বাস্থ্যগত অবস্থা এবং পুষ্টি একটি বড় বিষয়। এই কারণে সবল মানুষেরা কম আক্রান্ত হয় দুর্বলদের থেকে।
২) ভাইরাস জাতীয় অনুজীবরা সাধারণত কোন জীবিত কোষ (micro/macro organism)) ছাড়া বংশ বৃদ্ধি করতে পারে না। তবে সধারণত ২৪-৪৮ ঘন্টা পর্যন্ত বেচে থাকতে পারে এবং এই সময়ের মধ্যে কোন সুবিধাজনক হোস্ট (host) পেলে পুনরায় বংশবৃদ্ধি (reinfection) করতে পারে। তবে বেশি আদ্রতাপূর্ণ (moisture) পরিবেশে জীবিতকোষের বাইরে বেচে থাকার সময়টাও বেড়ে গিয়ে দাড়ায় ২৪-৭২ ঘন্টা পর্যন্ত।
প্রিয় অতিথি লেখক,
হেপাটাইটিস বি ভাইরাস নাকি মানুষের শরীরের বাইরে সাত দিন পর্যন্ত বাঁচে। এই এখানে বিষয়টা দেখতে পেলাম। গ্লাক্সোস্মিথক্লাইনের একটা পেপারে দেখেছিলাম এই ভাইরাস একফোঁটা শুকনো রক্তেও ৩০ দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে।
আপনার প্রতিমন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ এবং আপনার হেপাটাইটিস বি ভাইরাস সংক্রান্ত তথ্যের সাথে শতভাগ একমত। ইংরেজীর in general শব্দের বাংলা অনুবাদে আমি লিখেছি "সাধারণত" আর আপনি যেই উদাহরণ দিয়াছেন সেটা ব্যতিক্রম (exceptional)। সব ভাইরাস যদি ৭-৩০ দিন বেঁচে থাকত খোলা হাওয়ায় তাহলে মানুষ এবং অন্যান্য প্রাণীরাও অনেক আগে হাওয়া হয়ে যেত
আসলে বেশির ভাগ ভাইরাস বিশেষ করে যারা খাবার বা পানির (fecal-oral route) মাধ্যমে ছড়ায় তারা বেশিদিন প্রকৃতিতে বেঁচে থাকে না আর যারা রক্তের (blood or body fluid) মাধ্যমে ছড়ায় (যেমন, হেপাটাইটিস বি) তারা আরও বেশিদিন বেচে থাকতে পারে তখনই (providing that) যখন কিনা এই জাতীয় ভাইরাস রক্ত বা অন্যান্য ফ্লুইডে থাকে (কারণ তারা সেখান থেকে খাবার [nutrients]পায়)
ভাইরাস খাবার গ্রহন করেনা। খাবার গ্রহন করার জন্য কোষে যেরকম ব্যবস্থা থাকার প্রয়োজন সেটি ভাইরাসের নেই। ভাইরাস 'অকোষীয় কণা' (acellular particle)।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
বুঝতেই পারছেন ট্রান্সলেশনে কত কাঁচা আমি। কথাটা তাহলে ঘুরিয়ে বলছি "কারণ তারা সেখানে রিপ্রডিউস (reproduce) করার মত যা যা দরকার তা পায়। ধন্যবাদ
একটা সুরক্ষিত দূর্গের মত পায় বলতে পারেন। মৃত কোষে ভাইরাস রিপ্রডিউস করেনা। আপনিও বোধহয় সেরকমই বলতে চেয়েছিলেন। আমি আরেকবার বললাম কারণ অনেক পাঠক মন্তব্য থেকে ভুল বুঝতে পারেন।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
ভাইরাস সাধারণত নয়, কখনোই জীবিত কোষের ভেতরে ছাড়া বংশবৃদ্ধি করতে পারেনা।
সব ভাইরাসের ক্ষেত্রে এই কথাটি প্রযোজ্য নয় বলেই জানি। আমি ভাইরোলজিস্ট নই, কিন্তু এটা জানি যে ভাইরোলজি খুব কম বয়সী একটি বিজ্ঞান। ভাইরাস সম্পর্কে আমরা খুবই কম জানি। এটা সত্যি যে অনেক ভাইরাসই মুক্ত পরিবেশে অকার্যকর হয়ে যায়। কিন্তু তারমানে এই নয় যে সব ভাইরাসের ক্ষেত্রেই সেরকম হবে। দীর্ঘস্থায়ী প্রোটিনে মোড়া নিউক্লিয়িক এসিড মুক্ত পরিবেশেও কখনো কখনো দীর্ঘস্থায়ী হতেই পারে।
মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
ধন্যবাদ। আসলে অনুজীববিদ্যায় কোন কিছুই ডেফিনিট (definite) নয়। যেমন ১৯৯১ সালের আগে সবাই জানত ভাইরাসকে টেস্ট টিউবে জন্মানো যাবে না। কিন্তু ১৯৯১ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশী বিজ্ঞানী ড: আখতারুজ্জামান মোল্লা প্রথম ভাইরাসকে জীবিত কোষের বাইরে কালচার (culture) করে দেখান। (http://www.sciencemag.org/content/254/5038/1647.abstract?sid=2b2df6a4-9fbe-405c-978b-09f7f35d9c4c; http://www.nytimes.com/1991/12/13/us/polio-synthesized-in-the-test-tube.html)
আপনার মন্তব্যের পরের অংশের সাথে একমত।
আপনার লেখার বেশ বড় একজন ভক্ত আমি, তাই একটা অনুরোধ করছি। জীবাণু এবং অনুজীব শব্দের ব্যবহার নিয়ে। সকল "অনুজীবই কিন্তু জীবাণু নয়" এই বিষয়ে একটা লেখার আবদার জানিয়ে গেলাম।
আখতারুজ্জামান মোল্লা স্যারের কথা জানি। উনি কেন নোবেল প্রাইজ পাচ্ছেন না সেটা নিয়ে কাইকুঁই করতে করতে আমরা গ্রাজুয়েশন করেছি। কিন্তু আমি যতদূর জানি, স্যার ভাইরাস কালচার করেন নি। ভাইরাসের টুকরো অংশ নিয়ে টেস্টটিউবে জোড়া দিয়ে সক্রিয় ভাইরাস তৈরি করেছিলেন। সেটা ছিল পোলিও ভাইরাস। আমার জানামতে এখনো ভাইরাসকে জীবকোষ/সেল কালচারের বাইরে কালচার করা যায় না। অবশ্য আমি যে খুব জানি তা নয়। ভাইরাস বিষয়ে আমি পুরোপুরি মূর্খ। আপনার ভিন্ন কিছু জানা থাকলে জানাতে অনুরোধ করছি।
অণুজীব এবং জীবাণুর মধ্যে কিভাবে পার্থক্য করতে চাচ্ছেন তার আমার কাছে স্পষ্ট হয়নি। অণুজীববিজ্ঞানে আমরা অনেক বৃহৎ প্রাণি নিয়েও পড়াশোনা করেছি। যেমন, কৃমি অথবা মাশরুম। জীবাণু বলতে কি ক্ষতিকর অণুজীবের কথা বলতে চাচ্ছেন? আপনিও কিন্তু চট করে এ বিষয়ে একটা লেখা দিতে পারেন সচলায়তনে।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
ড: মোল্লার নোবেল পাবার সময় হয়ত এখনও হয় নি তাই পাচ্ছেন না
মোল্লা et al যা করেছেন সেটা হল They gently extracted a soup of the proteins from human cells, then dropped into it strands of the genetic material of the polio virus. After five or more hours, complete, assembled polio viruses appeared in the mixture.
না আমারও এই তিন (ড: মোল্লা, জীবকোষ এবং সেল লাইন) বিষয়ের বাইরে ভাইরাস কালচারের কথা জানা নেই।
আমি অনুজীব বলতে বুঝিয়েছি সকল microorganisms আর জীবাণু বলতে pathogens। আমি লিখে আপনাকে দিতে পারি সম্পাদনা করার জন্য, কারণ আমি সরাসরি লিখলে সেটা কেউ পড়তে পারবে না আর পড়তে পারলেও বুঝতে পারবে না। তাই আপনিই লিখুন।
ধন্যবাদ
জীবাণু ভাইয়ের এই লেখাটা প্রিন্ট করার অনুমতি চাই।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
লজ্জায় ফেলা ইমোটিকন দিলেন! মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
ব্যক্তিগত প্রয়োজনে প্রিন্ট করতে কোন সমস্যা নেই। সেটাই করতে চেয়েছেন কি?
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
আচ্ছা, এজন্যই বুঝি এইচ আই ভি বানরের দেহে থাকলেও বানরের ক্ষতি করে না?
দুই বছর পরে এসে আপনার প্রশ্নের জবাব দিচ্ছি! এই মন্তব্যের কথা জানতামও না! কত পুরনো পোস্টের নতুন মন্তব্যের কথা যে জানিনা তা কে বলবে!
এইচআইভি ভাইরাস বানরের দেহে থাকে না। বানরের দেহে থাকে এসআইভি (সিমিয়ান ইমিউনোডেফিসিয়েন্সি ভাইরাস) এবং এটা বানরের শরীরে এইডস রোগ সৃষ্টি করতে পারে।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
আমরা ভাইরাসের মেঘের মধ্যে বসবাস করি। আমাদের যে বেশি কিছু হয় না তার জন্য দায়ী বিবর্তন। ভাইরাসেরও আছে নিজের জিনোমকে অনুলিপি করে ছড়িয়ে দেয়ার অধিকার।
ধন্যবাদ।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
নতুন মন্তব্য করুন