এই সময়ের সবচে ভয়ঙ্কর তথ্য হচ্ছে কীভাবে একটি মিউট্যান্ট H5N1 ভাইরাস বানিয়ে ফেলা যায়। যেটা্ বাতাসের মাধ্যমে সংক্রামিত হয়ে দুনিয়াকে একেবারে নরক বানিয়ে দিতে পারে! কিন্তু সেই রেসিপি দেয়ার আগে ভাইরাস এবং ভাইরাসের সংক্রমণ বিষয়ক একটুখানি তথ্য দিয় শুরু করি। এই তথ্যটুকু জানা থাকলে এই লেখাটি বুঝতে সুবিধা হবে বলে মনে হয়।
ভাইরাস কী?
- ভাইরাস শব্দটির মানে হচ্ছে বিষ। প্রোটিনের ঠোঙায় মুড়ে রাখা কিছু জেনেটিক পদার্থ (ডিএনএ অথবা আরএনএ) ভাইরাস তৈরি করে। ভাইরাস নিজে প্রাণ নয়। কিন্তু সে প্রাণিকোষের উপাদান ব্যবহার করে নতুন ভাইরাস তৈরি করতে পারে।
ভাইরাস মাত্রই কি সংক্রামক?
- হ্যাঁ। ভাইরাস নিজে নিজে বংশবিস্তার করতে (নিজেকে সংখ্যায় বাড়িয়ে নিতে) পারেনা। নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতেই তাকে সংক্রামক হতে হয়।
তাহলে ভাইরাস মাত্রই মানুষের জন্য ক্ষতিকর?
- একেবারেই না। কম ভাইরাসই মানুষের জন্য ক্ষতিকর। ভাইরাস 'পোষক নির্দিষ্ট'। তার মানে হচ্ছে, নির্দিষ্ট ভাইরাস কেবল নির্দিস্ট পোষককেই সংক্রামিত করে। যে ভাইরাস বিড়ালের কোষকে সংক্রামিত করতে পারে, সে কুকুরের কোষকে সংক্রামিত করবে না।
বেশ। তাহলে বেড়াল কুকুরের ভাইরাসকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই!?
- অতোটা নিশ্চিত হওয়া যাবে না। ভাইরাসের বিশেষ ক্ষমতা হচ্ছে সে নিজেকে বদলে নিতে পারে। বিড়ালের ভাইরাস যদি কোনভাবে মানুষকে সংক্রামিত করার মতো করে নিজেকে বদলে নিতে পারে তাহলে তা মানুষের জন্যও ক্ষতিকর হয়ে উঠবে।
এরকম হয়?
- হ্যাঁ। অহোরহ!
ভাইরাসের সবচে বড় ক্ষমতা কী?
- নিজেকে বদলে নেয়ার ক্ষমতা।
ভাইরাস কীভাবে ছড়ায়?
- সেটা নির্ভর করে ভাইরাসের প্রকারের উপর। কেউ বাতাসের মাধ্যমে ছড়ায়, কেউ পানির মাধ্যমে ছড়ায়, কেউ রক্ত ইত্যাদি শারিরিক উপাদানের মাধ্যমে ছড়ায়!
ভাইরাস থেকে বাঁচার উপায়?
- প্রথমত, শরীরের নিজস্ব প্রতিরোধ ব্যবস্থা ভাইরাসের বিরুদ্ধে দারুণ কাজ করে। এছাড়া পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানুষেরা অনেক ভাইরাসের জন্য টিকা তৈরি করেছেন, এখনো করছেন। এগুলো খুবই কার্যকর। ভাইরাসের বিরুদ্ধে সীমিত হলেও ওষুধ রয়েছে। ক্ষেত্রবিশেষে এগুলো কার্যকর। কিন্তু সবার আগে, সংক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করার বিকল্প নেই!
ভাইরাস নিয়ে কীরকম গবেষণা করা হয়?
- ভাইরাস নিয়ে কাজ করা শক্ত। যেহেতু সে নিজে কোন প্রাণ নয়, তাকে নির্দিষ্ট পোষক কোষে 'চাষ' করতে হয়! আর সংক্রামক বলে গবেষণাগারের নিরাপত্তার বিষয়টিও খুব কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। কিন্তু তবুও গবেষণা হয়। পৃথিবীর অসংখ্য ল্যাবে ভাইরাস নিয়ে উল্লেখযোগ্য কাজ হয়।
গবেষণা করে ভাইরাসকে বদলে ফেলা যায়?
- জীববিজ্ঞানের ক্ষমতা ব্যাখ্যা করা কঠিন। জীববিজ্ঞান প্রায় সবকিছুই করতে পারে, পারছে এবং পারবে। গবেষণাগারে কেবল ভাইরাস নয় অন্য অসংখ্য প্রাণিকেও বদলে ফেলা যায়! নতুন করে তৈরি করা যায়!
ভাইরাস নিয়ে গবেষণা কেন করা হয়?
- ব্যবসায়ীদের জন্য জবাব হলো: ভাইরাস থেকে নিরাপত্তা, ভাইরাসকে ওষুধ হিসেবে ব্যবহার ইত্যাদি নানা প্রয়োজনে ভাইরাস নিয়ে গবেষণা করা হয়। সঠিক জবাব হচ্ছে, সকল গবেষণাই করা হয় জানার জন্য। কৌতুহল নিবৃত্ত করার জন্য।
গবেষণাগারে তৈরি ভাইরাস কী বিপজ্জনক হতে পারে?
- হ্যাঁ পারে। যদি সেটিকে বিপজ্জনক হিসেবে তৈরি করা হয়।
এই বিপদের মাত্রা কীরকম?
- নিরুপণ করা হয়েছে বলে জানা নেই। তাত্ত্বিকভাবে, একটি ডিজাইন করা ভাইরাস তার পোষক প্রজাতিকে নিশ্চিহ্ন করে ফেলতে সক্ষম!
ভাইরাস সম্পর্কিত গবেষণা নিয়ে কি হৈচৈ হয়?
- খুব হয়।
কেমন?
- একটির বর্ণনা দিচ্ছি এই লেখাতে।
আপনাদের নিশ্চয়ই বার্ড ফ্লু অথবা এভিয়েন ইনফ্লুয়েঞ্জা'র কথা মনে আছে। ফ্লু অথবা ইনফ্লুয়েঞ্জা কী তা তো আপনারা জানেনই। বার্ড ফ্লু হচ্ছে এভিয়েন ইনফ্লুয়েঞ্জা'র চলতি নাম। এভিয়েন ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস এই রোগটির জন্য দায়ী। এই ভাইরাসটি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মানুষকে সংক্রামিত করে না। কেবল একটি বিশেষ ভাইরাস মানুষকে সংক্রামিত করতে দেখা গেছে। যে ভাইরাসটি মানুষকে সংক্রামিত করে তাকে H5N1 ভাইরাস বলে। এই নামকরণের জটিল সমীকরণ আছে। কিন্তু সেই আলোচনা এই লেখাটিতে নয় (মূল নামটি কেবল বলে রাখি, avian influenza A/H5N1 virus অথবা Highly pathogenic avian influenza A/H5N1 virus)।
বার্ড ফ্লু কীভাবে ছড়ায়?
- পাখিদের মধ্যে এটি ছড়াতে পারে সাধারণত বাতাসের মাধ্যমে (বাতাসে নির্গত দৈহিক জলকণা/তরলকণার মাধ্যমে)।
বার্ড ফ্লু বিশেষত কেন ভয়ঙ্কর?
- প্রথমত, এই ভাইরাসটির দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার ক্ষমতার কারণে। এবং দ্বিতীয়ত, মানুষের মাঝে এই ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ার যে বিরাট সম্ভাবণা রয়েছে সেজন্য। এটি সারা বিশ্বে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্য এবং অর্থনীতিতে নেতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে।
বার্ড ফ্লু তাহলে মানুষকে সংক্রামিত করতে পারে!
- হ্যাঁ। বিশেষত H5N1 ভাইরাসটি পারে।
কীভাবে ছড়ায়?
- যারা সংক্রামিত হয়েছেন, দেখা গেছে তারা সবাই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সংক্রামিত পাখি'র সংস্পর্শে এসেছেন (যারা মুরগি'কে সামাজিকভাবে পাখি হিসেবে দেখেন না। তাদেরকে মনে করিয়ে দিচ্ছি, মুরগি একপ্রকার পাখি!)। সুতরাং আক্রান্ত পাখির সংস্পর্শে আসলে এই ভাইরাস মানুষের মাঝে ছড়াতে পারে। আক্রান্ত পাখির শরীরের অংশ (বিশেষত রক্ত) রান্না না করে প্রকৃয়াজাত করে খাওয়া থেকেও এর সংক্রমণ হতে দেখা গেছে। তবে ভালোমত রান্না করে খেলে সংক্রমণ হয় না।
পাইছি! বার্ড ফ্লু'র মুরগি দেড় টাকা কেজি দরে কিন্না রাইন্ধা খায়ালামু! মুহাহাহা!
- জ্বি না। তা করা যাবে না। আক্রান্ত/সংক্রামিত পাখির সংস্পর্শেই আসা যাবে না (স্বাস্থ্য কর্মীরা পর্যাপ্ত সতর্কতা অবলম্বন করে যেতে পারেন)। সংক্রামিত/সংক্রমণের ফলে মৃত পাখি থেকে এই রোগ ছড়াতে পারে।
বুঝলাম। মানুষের এতো ভয়ের কী আছে?
- ওই যে বলেছিলাম। ভাইরাস নিজেকে বদলে নিতে পারে! H5N1 পাখি থেকে মানুষের মাঝে ছড়াতে পারে। আক্রান্ত/সংক্রামিত পাখি থেকে নিরাপদে থাকলে এটি প্রতিরোধ করা যায়। কিন্তু এই ভাইরাসটির মানুষ থেকে মানুষের মাঝে ছড়ানোর যে ব্যপক সম্ভাবণা রয়েছে সেটি খুবই আতঙ্কজনক। এই রোগটি মানুষ থেকে মানুষে বাতাসের মাধ্যমে ছড়াতে শুরু করলে সারা বিশ্বেই সেটি জনস্বাস্থ্যের জন্য বিরাট হুমকি হয়ে দাঁড়াবে!
ওহ! কিন্তু আমাদের শরীরের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা তো রয়েছেই। আর ভাইরাস বিরোধী ওষুধ। আর তাছাড়া
একটা টিকা বানিয়ে ফেললেই তো হয়!
- মানুষের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার কাছে এই ভাইরাসটি একেবারেই অচেনা। বেশীরভাগ মানুষের শরীরে এই ভাইরাসটির বিরুদ্ধে কোন বিশেষষায়িত প্রাকৃতিক প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেই। এই রোগটির ব্যপকতা সাধারণ ইনফ্লুয়েঞ্জা'র থেকে বেশি। ভাইরাস বিরোধী ওষুধ দ্রুত প্রয়োগে কিছুটা সফলতা পাওয়া যায় কিন্তু সেটি যথেষ্ট নয়। ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের টিকাও অপর্যাপ্ত।
কিছু বুঝি নাই!
- এভিয়েন ইনফ্লিয়েঞ্জা বিষয়ে বিস্তারিত লেখা ছাড়া বোঝানোর উপায় নেই। সময় পেলে লেখার চেষ্টা করব। এখন কেবল তিনটে বিষয় মনে রাখুন:
১. H5N1 ভাইরাসটি মানুষের মাঝে এভিয়েন ইনফ্লুয়েঞ্জা রোগ সৃষ্টি করতে পারে।
২. এই ভাইরাসটি মানুষ থেকে মানুষের মাঝে ছড়িয়ে পড়তে 'সক্ষম হয়ে' উঠতে পারে।
৩. এই ভাইরাসটি মারাত্মকভাবে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়তে সক্ষম।
আর বিশেষ কিছু জানতে বাকি আছে?
- একটি বিষয়, যে ভাইরাস পাখিদের থেকে পাখিদের মাঝে একটি ভাইরাস যত দ্রুত ছড়াবে, পাখিদের থেকে (উদাহরণ হিসেবে) বিড়ালের মাঝে সাধারণত তত দ্রুত ছড়াবে না! একই শ্রেণীর প্রাণিদের কোষের রকম-সকম-গঠনে মিল থাকে। তাই যে ভাইরাস পাখিদের সংক্রামিত করে তার কাছে বিড়ালের কোষ অনেকখানি আলাদা কোন পোষক।
আবার যে ভাইরাসটি বিড়ালকে সংক্রামিত করে সেটি তুলনামূলক সহজে মানুষকে সংক্রামিত করতে পারে। কারণ বিড়াল আর মানুষ দুজনেই স্তন্যপায়ী শ্রেণীর প্রাণি। তাদের কোষের গঠনে বিরাট মিল রয়েছে।
আচ্ছা, এই ভাইরাসটি কীভাবে মানুষ থেকে মানুষে ছড়িয়ে পড়তে পারে? অথবা কখন এটি খুব ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে?
সেই গবেষণাটি করেছেন দু'দল বিজ্ঞানী। তাঁদের নেতৃত্ব দিয়েছেন দু'জন। একজন ইউনিভার্সিটি অব উইস্কনসিন-ম্যাডিসনের ইয়োশিহিরো কাওয়াওকা (Yoshihiro Kawaoka)। এবং অন্যজন রটারডামের ইরাসমুস মেডিকেল সেন্টারের (Ron Fouchier)। রন ফৌশিয়ের ( দুজনেরই নামের উচ্চারণ নিয়ে সন্দিহান আছি!)।
এনাদের গবেষণা এবং তার ফলাফল প্রকাশ নিয়ে বিজ্ঞানমহলে এবং নিরাপত্তা মোল্লাদের মহলে দারুণ হৈচৈ হচ্ছে গতবছর থেকে। সেই গল্প লিখতে বসে এতোক্ষণ এতো বকবক করলাম।
আপনারা যারা বিজ্ঞানের পত্রিকাগুলোতে চোখ রাখেন তারা নিশ্চয়ই দেখেছেন গতবছরের সেপ্টেম্বর থেকে সব পত্রিকায়, নানা মহলে কানাঘুঁষা হচ্ছে H5N1 ভাইরাসের উপর করা দুটি গবেষণা এবং তার ফলাফল প্রকাশ নিয়ে।
আলোচনার বিষয় দুটি,
১. এই দুই গবেষকদল H5N1 কে খানিকটা বদলে দিয়ে একটা মিউট্যান্ট তৈরি করেছেন। এই মিউট্যান্ট ফেরেটদের মাঝে বাতাসের মাধ্যমে ছড়াতে পারে। ( ফেরেট হচ্ছে খানিকটা ভোঁদড়ের মত দেখতে একপ্রকার স্তন্যপায়ী প্রাণি। ল্যাবরেটরিতে অনেকক্ষেত্রে গবেষণার জন্য ব্যাবহার করা হয়!)
গবেষণাগারে তৈরি করা মিউট্যান্ট ভাইরাসটি সাধারণ H5N1 এর চাইতে অনেক বেশি সংক্রামক এবং সেই হিসেবে বিপজ্জনকও। মুক্ত পরিবেশে এই ভাইরাসটি কল্পনাতীত রকমের বড় বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে।
২. তাঁরা তাদের গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করছেন শিগ্গীরই।
বলে রাখা ভালো, গবেষাপত্র প্রকাশ করলে সেখানে কোন গবেষণাটি কীভাবে করা হয়েছে সেটিও প্রকাশ করা হয়। গবেষণাপত্র অণুসরণ করে ওই গবেষণাটি অন্য কেউ পূণর্বার করে দেখতে পারে। বিজ্ঞানের গবেষণাপত্রের গ্রহনযোগ্যতা এই বিষয়টির উপর দারুণভাবে নির্ভরশীল। এই হিসেবে গবেষণাপত্র প্রকাশের পর উপযুক্ত ল্যাবরেটরিতে যে কেউ এই ভাইরাসটি তৈরি করে ফেলতে পারে।
প্রসঙ্গে আসি, এই গবেষণাপত্র প্রকাশের বিষয়ে সবচে বেশি হল্লা করলেন, আমেরিকার "ন্যাশনাল সায়েন্স অ্যাডভাইজরি বোর্ড ফর বায়োসিকিউরিটি (এনএসএবিবি)"। বাকি লেখায় সহজে বলার সুবিধার্থে আমরা এদেরকে বলব, 'মোড়ল'।
এই প্রসঙ্গে একটি বিষয় বলে রাখা দরকার, সেটি হচ্ছে, মোড়লেরা যে সময়ে এই মিউট্যান্ট H5N1 বিষয়ে নাক গলাতে শুরু করেছেন ততদিনে এই গবেষণা এগিয়ে গিয়েছে অনেকখানি। গবেষণা দুম করে বন্ধ করে দেয়ার মত ক্ষমতা অথবা সেই বাস্তবতা তখন ছিল কীনা সেটা প্রশ্নসাপেক্ষ! তবে একটি বিষয়ে মোড়লদের মাথাব্যথা (অন্তত আমার দৃষ্টিতে) গ্রহনযোগ্য ছিল, যে ল্যাবগুলি এরকম মারাত্মক রকমের ভাইরাস তৈরি করেছে, গবেষণা করছে এবং ভবিষ্যতে গবেষণা করতে চায় সেগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা কেমন! নিরাপত্তা ব্যবস্থা বলতে, চলচ্চিত্রের মত কেউ এসে ল্যাবের ভাইরাস চুরি-ডাকাতি করে নিয়ে যাবে সেজন্য নিরাপত্তা নয়! নিরাপত্তা হচ্ছে এই ভাইরাসটি যাতে পরিবেশে ছড়িয়ে না পড়ে সেটি একশোভাগ নিশ্চিত করার জন্য যেরকম ব্যবস্থা থাকার দরকার সেটি। সাধারণ কোন ল্যাবের নিরাপত্তা ব্যবস্থাই একটি উপন্যাস লেখার মতো চমকপ্রদ (অনেক যন্ত্রণাদায়কও)! আর এরকম বিপজ্জক ভাইরাস, যেটি কিনা বাতাসের মাধ্যমে ছড়াতে পারে সেটি নিয়ে গবেষণা করার জন্য যেরকম নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রয়োজন সেটি এককথায় 'ভয়াবহ'!
সংশ্লিষ্ট গবেষকরা দাবী করেছেন, যে দুটি ল্যাবে এই গবেষণা করা হয় সে দুটি'র নিরাপত্তা মাত্রা ছিল '৩: বর্ধিত' (Biosafety level 3: Enhanced)।
আগ্রহী পাঠকের জন্য গবেষণাগারের জৈবনিরাপত্তা'র মাত্রা সম্পর্কিত তথ্যটি সংক্ষেপে দিয়ে দিচ্ছি। বলে রাখি এটি সংক্ষেপিত। নিরাপত্তার পুরো বর্ণনা মহাকাব্যের মত!
- জৈবনিরাপত্তা মাত্রা ১ (biosafety level 1: BSL-1): সংক্রামক নয়, সাধারণভাবে সুস্থ মানুষের মাঝে সহজে রোগসৃষ্টি করেনা এরকম জীবাণু নিয়ে গবেষণা করা যাবে। ল্যাবকোট এবং দস্তানা পরে কাজ করতে হবে।
- জৈব নিরাপত্তা মাত্রা ২ (biosafety level 2: BSL-2): সংক্রামক কিন্তু সহজে চিকিৎযোগ্য রোগের জীবাণু নিয়ে গবেষণা করা যাবে। নিরাপত্তা বেষ্টনীতে কাজ করতে হবে। ল্যাবের প্রবেশাধিকার হবে সংরক্ষিত।
- জৈবনিরাপত্তা মাত্রা ৩ (biosafety level 3: BSL-3): মারাত্মক অথচ নূন্যতম চিকিৎসা রয়েছে এরকম রোগ সৃষ্টি করে এবং সহজে ছড়িয়ে পড়ে না এরকম জীবাণু নিয়ে গবেষণা করা যাবে। ল্যাবের সকল কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রিত হবে শক্তভাবে।
- জৈবনিরাপত্তা মাত্রা ৩ বর্ধিত (biosafety level borderline BSL-3/BSL-4): এটি জৈবনিরাপত্তা মাত্র ৪ এর মতই। মারাত্মক সংক্রামক জীবাণু নিয়ে কাজ করা যাবে। গবেষণাগার হতে হবে বিচ্ছিন্ন। আলাদা শক্তি, বায়ু সরবরাহ ব্যবস্থা থাকতে হবে।
- জৈবনিরাপত্তা মাত্রা ৪ (biosafety level 4: BSL-4): মারাত্মক, চিকিৎসাহীন রোগসৃষ্টিকারী জীবাণু নিয়ে কাজ করা যাবে। গবেষকদের জন্য বিশেষ ধরণের (অনেকটা নভোচারীদের পোষাকের মত) পোষাক থাকবে। সম্পূর্ণ গবেষণাগারের বাতাস হবে নিয়ন্ত্রিত। ল্যাবরেটরি থেকে এমনকি বাতাসও পরিবেশে আসলে তা সবার আগে হতে হবে জীবাণুমুক্ত (সাধারণত অতি সূক্ষ্ম ছাকনির মাধ্যমে এটা করা হয়)। সত্যিকারের জৈবনিরাপত্তা মাত্রা ৪ গবেষণাগার সারা পৃথিবীতে রয়েছে হাতেগোনা।
যে দু'জন গবেষকের কথা বলছি, ফৌশিয়ের আর কাওয়াওয়াকা, তাঁদের কারোর ল্যাবই জৈবনিরাপত্তা মাত্রা ৪ এর নয়। যে বিষয়টি নিয়ে কেবল মোড়লেরা নয়, কথা বলেছেন সারা বিশ্বের সংক্রমণ বিজ্ঞানের গবেষকরাও। এই প্রসঙ্গে ফৌশিয়ের নিজে বিশেষ মন্তব্য করতে রাজি হননি। যেহেতু তার গবেষণা কেবল নেদারল্যাণ্ডস এবং যুক্তরাষ্ট্রে পূণঃনীরিক্ষিত (reviewed) হয়েছে। এবং এই দুটি দেশেই H5N1 ভাইরাসটি তৃতীয় মাত্রার জীবাণু, চতুর্থ মাত্রার নয়। সেজন্য ফৌশিয়ের তার ল্যাবের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত নন। অন্য গবেষক কাওয়াওকা এই প্রসঙ্গে ন্যাচারের সঙ্গে কথা বলেননি!
প্রসঙ্গত, কাওয়াওকা তাঁর গবেষণাপত্র প্রকাশের জন্য দিয়েছিলেন ন্যাচার'কে। ফৌশিয়ের দিয়েছিলেন সায়েন্স'কে। আগ্রহীরা নিশ্চয়ই জানেন, ন্যাচার এবং সায়েন্স পৃথিবীর সবচে ভালো এবং সন্মানিত বিজ্ঞান পত্রিকা।
সুতরাং প্রথম যে বিষয়টি নিয়ে বাজারে আগুন লেগে গেল সেটি হচ্ছে, এই মিউট্যান্ট H5N1 মানুষের জন্য সবসময়ের সবচে ভয়ঙ্কর বিভীষিকা হয়ে উঠতে পারে। এটি প্রকৃতিতে ছড়িয়ে পড়লে অতিদ্রুত সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে মানুষকে সংক্রামিত করতে পারে! তাই এটি নিয়ে গবেষণা করার প্রয়োজন ছিল জৈবনিরাপত্তা মাত্রা ৪ এর গবেষণাগারে। (যেই ল্যাব কিনা দুনিয়াতে আছেই মোটে গোটাকয়েক!)
কেউ কেউ এই প্রসঙ্গে বললেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা'র উচিত এই সময়ে কিছু একটা ব্যবস্থা নেয়া। কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলল, আপাতত তারা কিছু বলতে পারছে না। এই গবেষণার উপর লিখিত বিস্তারিত কিছু তারা এখনো পড়েনি!
দ্বিতীয় যে বিষয়টি নিয়ে আরো বেশি হৈচৈ হল, সেটি হচ্ছে, এই গবেষণাপত্রের প্রকাশণা। এই ভাইরাস কীভাবে তৈরি হয়েছে এবং এটি কী করতে সক্ষম বা কতটা বিপজ্জনক সেটি প্রকাশিত হলে যে কেউ এই ভাইরাসটি তৈরি করতে পারবে। এইক্ষেত্রে সমস্যা দুটি, একটি হচ্ছে বড় রকমের গর্দভেরা এই ভাইরাসটিকে অস্ত্র বানিয়ে নাশকতার জন্য ব্যবহার করার চেষ্টা করতে পারে। অন্য সমস্যাটি হচ্ছে, এই ভাইরাসটি নিয়ে পরবর্তীতে সারা পৃথিবীতেই গবেষণার ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হতে পারে। সেরকম হলে জৈবনিরাপত্তার বিষয়টি কতটা নিয়ন্ত্রিত থাকবে সেটি একটি বড় প্রশ্ন!
এরপর এরকমক্ষেত্রে যা হয়, চলচ্চিত্রের মত সব ঘটতে লাগল। আমি সংক্ষেপে বলি,
মোড়লেরা বললেন, না। এই তথ্য প্রকাশিত না হোক! কেউ কেউ বললেন, আংশিক প্রকাশিত হোক। কেউ কেউ বললেন, নির্দিষ্ট গবেষক/প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রকাশিত হোক।
কিন্তু এই চিন্তাগুলি আসলে অবাস্তব। তথ্য নির্দিষ্ট ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রকাশ করা এবং সীমিত রাখা বাস্তবে অসম্ভব। আর তাছাড়া এই প্রকৃয়াটি বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রাকে দারুণভাবে ব্যহত করবে।
এই বিতর্কের মাঝে জানুয়ারির ২০ তারিখে ফৌশিয়ের, কাওয়াওকা এবং আরো ৩৭ জন গবেষক ঘোষনা দিলেন তারা ২ মাসের জন্য এই ভাইরাসটি নিয়ে গবেষণা বন্ধ করছেন। এই বিতর্কিত বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য সুযোগ দিতে তাঁদের এই সিদ্ধান্ত। অথচ এর ঠিক তিন দিন আগে জেনেভাতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অবস্থান নিল গবেষণাপত্রদুটি পূর্ণভাবে প্রকাশের পক্ষে! এই পর্যায়ে আসলে মোড়লেরা ছাড়া বিজ্ঞানমহলের বেশীরভাগেই তথ্যের মুক্ততার পক্ষে অবস্থান নেন।
এই বিতর্কে ন্যাচারের বক্তব্য আমাকে সবচে চমৎকৃত করে। সময় নিলেও ন্যাচার এই গবেষণাপ্রবন্ধ পূর্ণভাবে প্রকাশের পক্ষে অবস্থান নেয়। ২ মে ন্যাচারে প্রকাশিত হয় কাওয়াওকা'র গবেষণাপত্র (১৮ই মে প্রকাশিত হয় সম্পাদিত আকারে, সেই সম্পাদনা অবশ্য বিশেষ উল্লেখযোগ্য কিছু নয়)।
পরবর্তীতে মোড়লেরা পূণর্বিবেচনা করে গবেষণাপত্র দুটির সম্পাদিত সংস্করণ প্রকাশের পক্ষে প্রস্তাব করে। সায়েন্সে ফৌশিয়ের'র গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয় দু'দিন আগে, গত ২২ মে।
আর এতসব হৈচৈ এর মাঝে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা উপলব্ধি করে সারা বিশ্বের জন্যেই জৈবনিরাপত্তা বিষয়ক সুনির্দিষ্ট নির্দেশনার প্রয়োজন। সেই নির্দেশনা শীঘ্রই আসছে বলে শুনছি। আমরা আশা করে আছি সেই নির্দেশণা বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রাকে ব্যহত করবে না, বরং সুসংহত করবে।
সুতরাং?
সুতরাং যে কথা ভয়ঙ্কর তথ্যের বিষয়ে আপনাদের বলতে চেয়েছিলাম, তথ্য কখনো ভয়ঙ্কর নয়। গবেষণা এবং বিজ্ঞান কখনোই ভয়ঙ্কর নয়। বিজ্ঞানের আবিষ্কারের হিংসাত্মক ব্যবহার ক্ষেত্রবিশেষে মানুষের জন্য ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে ঠিকই। কিন্তু গুটিকয় দোপেয়ে শ্বাপদের জন্য যদি বিজ্ঞান থেমে থাকে তাহলে সেটা মানুষেরই থেমে থাকা হবে। কে না জানে, বিজ্ঞান যতটুকু এগোয় মানুষও ঠিক ততটুকুই এগোতে পারে।
সুতরাং নির্ভয়ে সবার জন্য এই সময়ের সবচে স্পর্শকাতর তথ্যের, সবচে ভয়ঙ্কর(!) তথ্যের লিঙ্ক দিয়ে দিলাম:
রন ফৌশিয়ের'র গবেষণাপত্র: Airborne Transmission of Influenza A/H5N1 Virus Between Ferrets
ইয়োশিহিরো কাওয়াওয়াকা'র গবেষণাপত্র: Experimental adaptation of an influenza H5 HA confers respiratory droplet transmission to a reassortant H5 HA/H1N1 virus in ferrets
কীভাবে মিউট্যান্ট H5N1 ভাইরাস বানাতে হবে তার বিস্তারিত রয়েছে এই গবেষণাপত্র দুটিতে। পড়ে ভেবে দেখুন তো আর কতরকমভাবে কীভাবে এই ভাইরাসটিকে বিপজ্জনক করে তোলা যায়? আর কতভাবে এটি বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে? সবরকম বিপদের নকশা আমাদের জানা জরুরি। কতরকমভাবে বিপদ হতে পারে জানতে পারলেই আমরা জানতে পারব সেই সবরকম বিপদ থেকে কীভাবে নিরাপদ থাকা যায়!
ব্যক্তিগত ব্লগে প্রকাশিত।
মন্তব্য
হ। কিছু না বুঝলেও বুঝলাম যে ভাইরাস খাইলে তোমার কাছ থেকে অষুধ নেয়া লাগবে
কেমন আছেন লীলেন্দা?
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
অসাধারণ লিখেছেন!
ভাইরাসটার ভয়াবহতার স্বরূপটা আরেকটু ব্যাখ্যা করা যায়?
ধন্যবাদ।
পেপার দুইটা নিয়ে বিস্তারিত একটা লেখা লিখতে পারলে ভালো লাগতে। কিন্তু সময় পাব কিনা জানিনা। এই লেখাটাই খানিকটা অবসর নিয়ে ঝটপট লিখেছি। ন্যাচারের এই লেখাটিতে ভাইরাস দুটি সম্পর্কে খুব সংক্ষেপে জানতে পারবেন। উল্লেখযোগ্য মিউটেশন এবং তার কার্যকারিতা এখানে খানিকটা রয়েছে: লিঙ্ক
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
আজকাল আপনার লেখা পড়লেই আতঙ্কিত হতে হয়। লেখা নিয়ে কিছু বলার নাই নতুন করে, তবে লেখার বিষয় পড়ে ভয় পেয়েছি। বেশ কটা প্রশ্ন মাথায় এল, কিন্তু দৌড়ের উপরে আছি বলে করতে পেলাম না। পরে সময় করে করব বলে টু ডু তে টিক দিলাম।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
খুশির খবর দিয়ে কিছু লেখার কথা মাথায় থাকল। এই লেখাটির বিষয়বস্তু কিন্তু আমার জন্য বেশ খুশির। নতুন দুইটা চমৎকার ভাইরাস তৈরির খবর মন্দ হবে কেন!
আপনার প্রশ্নের জবাব দেয়ার চেষ্টা করব।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
এই ধরণের জীবানুকে প্রতিহিংসার অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যায় না। হলিউড যে হারে এই জাতীয় সিনেমা বানিয়ে বাজারে ছাড়ছে, এসব থেকে ফ্যানটিকরা জ্ঞান অর্জন করছে না তা বলা যায় না। তাছাড়া মনে হয় আর ৫০ বছর পর মারাণাস্ত্র হিসেবে বায়ো অস্ত্রই সবচেয়ে কার্যকর হয়ে উঠতে পারে।
বাংলাদেশের জন্য একটা সুখবর হলো যে আমরা এত জীবানুর মধ্যে বসবাস করি যে, আমাদের এন্টিবডি দুনিয়ার মধ্যে সবচেয়ে দুর্ধর্ষ হয়ে উঠছে। আমরা ডারউইন থিউরিতে টিকে যাবো বোধহয় শেষ পর্যন্ত।
আজকাল কারো ভাইরাস জ্বর হয়েছে শুনলে আপনার কথা মনে হয়। ভাইরাসের সাথে আপনার বন্ধুতা নাই, এটা বিশ্বাস হয় না।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
যা বলেছেন দাদা
-------------------------------------------------
ক্লাশভর্তি উজ্জ্বল সন্তান, ওরা জুড়ে দেবে ফুলস্কেফ সমস্ত কাগজ !
আমি বাজে ছেলে, আমি লাষ্ট বেঞ্চি, আমি পারবো না !
আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !
এই কথাটি গ্রহনযোগ্য নয়। আমরা জীবাণুর চাইতে বেশী দূষণের ভেতরে বাস করি। কিন্তু জীবাণুর ভেতরে বাস করলেও, সেটি যে আমাদের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থাকে অপ্রতিরোধ্য করে তুলছে সেরকম বলা যায় না। অনেক জীবাণুই কোন দীর্ঘস্থায়ী কার্যকর অ্যান্টিবডি তৈরি করে না। দীর্ঘ ব্যাখ্যা এড়িয়ে গিয়ে বলি, আমাদের শরীরের অ্যান্টিবডি দুনিয়ার সবচে শক্তিশালী এই তথ্যটি অবাস্তব।
এবং যদি প্রাকৃতিক নির্বাচনের কথা বলে থাকেন তাহলে সেই প্রকৃয়ায় আমরা এত দ্রুত বিবর্তিত হচ্ছি না। অণুজীবেরা বরং অনেক বেশী দ্রুত বিবর্তিত হয়।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
আপনি বলেছেন গবেষণার কথা। আমি বলছি সাধারণ দর্শনের কথা। চারপাশে চোখ রাখলে দেখি বস্তিবাসীরা যেরকম জীবানুবেষ্টিত পরিবেশে বাস করে, তাতে তাদের মরে উজাড় হয়ে যাবার কথা ছিল। কিন্তু দেখা যায় জটিল রোগগুলিতে বড়লোকেরাই বেশী আক্রান্ত। অনেক আত্মীয় বন্ধুদের মধ্যে দেখেছি বিদেশ থেকে এসে দেশের পানি খেলেই পেটের অসুখে ভুগছে। কিন্তু সারাবছর ওসব খেয়েই আমরা দিব্যি সুস্থ আছি। এটার ব্যাখ্যা কি?
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
সার্স গণচীনে বা বার্ড ফ্লু থাইল্যান্ডে যে বিপর্যয় ডেকে এনেছিল তার কথা মনে আছে নিশ্চয়ই। এর পেছনে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দুর্বুদ্ধি থাকার সমূহ সম্ভাবনা আছে। কিছু বদ লোক যে মিউট্যান্ট বানাচ্ছে না এই নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারবে না। তাই বিষ আবিষ্কারের পাশাপাশি আয়ুধের ব্যবস্থাটা থাকা দরকার।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
এই বিষয়ে আগে একবার একটুখানি কথা হয়েছিল পাণ্ডব'দা।
বায়োটেররিজম প্রতিরোধে সেরকম উপযুক্ত ল্যাব, যোগ্য গবেষকদল এবং পর্যাপ্ত অনুদান থাকা দরকার। আমাদের সেই সামর্থ নেই। থাইল্যাণ্ডের কথা নিশ্চিত নই কিন্তু চীনের আছে বলে জানি।
মজার ব্যপার হচ্ছে এখন পর্যন্ত যে কয়েকবার বায়োনিরাপত্তা মাত্রা ৪ এর ল্যাব থেকে পরিবেশে জীবাণু ছড়িয়ে পড়ার দূর্ঘটনা ঘটেছে সেসসব ঘটেছে মূলত চীনেই। বার্ড ফ্লু প্রথম মানুষের মাঝে দেখা যায় হংকং এ। একটি পোল্টি মহামারীর সময়ে।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ পাণ্ডব'দা।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
ভয় পাইসি!
ভয় পাওয়ার মত কিছু নয়। এটি একটি আবিষ্কার ভেবে খুশি হতে পারেন।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
পড়ে যদিও অনেক কিছু বুঝলাম। জানলাম। তবে খটকা থেকেই যায় যে শুধু এই ভাইরাসটিই নয় এমন আরও কত মিউট্যান্ট ( ভাইরাস কিংবা অন্যকিছু ) আমাদের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। মজার বিষয় হল হলিউড তো এখন মানুষের মিউট্যান্ট সাপ্লাই দিচ্ছে সিমেনায় ভরে ভরে।
ডাকঘর | ছবিঘর
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
মুহাহাহা! পাইছি এবার! রন ফৌশিয়ের আর ইয়োশিহিরো কাওয়াওয়াকার গবেষণাপত্র ডাউনলোড দিচ্ছি এক্ষুণি। তারপর এমন একটা ভাইরাস বানামু যেই ভাইরাস কাজ করবে শুধু সচলায়তনে- যেখানেই অনার্য সঙ্গীত নাম দেখবে, সেইখানেই এই নাম কিল করে বসায়া দিবে আমার নাম!
সুতরাং... ডরে কাঁপাকাঁপি শুরু করে দেন!
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
অতো কষ্ট না করে বললে আমি নিজেই নাম বদলে দিতে পারি!
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
নির্বিষ ভাইরাস-ব্যাকটেরিয়া দিয়া এই কাজ হয় না!
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
আপনার লেখাটা পরে ভালো লাগলো.খুব সহজ ভাষায় লিখেছেন। আমি ঢাকায় আইসিডিডিআরবি তে .BSL 2/3 তে কাজ করে আসছি.....এখন পিএইচ্ডি করছি .আপনি কি করেন জানতে পারি?
ধন্যবাদ আপনাকে
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। আমি পড়ছি।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
ভাই ভয় পাইছি। মুরগী দেখতাছি ডাইনোসারের থিকা ও ভয়ংকর।
আমার তো মনে হয়, ভবিষ্যত পৃথিবীতে থাকবো শুধু ভাইরাস, মানুষগো দিন শেষ।
যাই মইর্যা যখন যামুই বসরে একটা ঝাঢ়ি দিয়া আসি, এই বৃষ্টির দিনে অফিসে আনাইছে। পাষন্ড কহিকা!
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
চমৎকার হচ্ছে, শুরু থেকেই একটা সহজাত আকর্ষণী লেখনীর ছোঁয়া।
ভাইরাস নিয়ে আসমানি কিতাব কি বলে? ইয়াহুদি নাছারারা তো কোনদিন এই দিয়েই বিশ্ব শাসন করবে বলে মোল্লারা ভয় পাচ্ছে।
facebook
ধন্যবাদ। আসমানী কিতাবে আগ্রহ নেই বলে জানা নেই কিতাবে কী বলে। তবে শুনেছি কিতাবকে দিয়ে সবকিছুই বলানো যায়!
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
আপনার লিখায় কোন সুখবর পাইনা । ভাইরাস কত বিপদজঙ্ক হতে পারে শুধুমাত্র এই পরীক্ষন করতে গিয়ে বদলোকের হাতে অস্ত্র তুলে দেয়ার কি মানে সেটা আমার ভোঁতা মাথায় ঢুকেনা। তার চেয়ে কি এই ভালো হয়না এই ধরনের বিপদজনক মিউটেনট ভাইরাসের কি কি এন্টিডোট হতে পারে সেগুলাসহ বিজ্ঞানপত্রিকায় প্রকাশ করা যাতে এগুলার মিসইউজ না হয়। তা নাহলে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে মানুষের ভয়ঙ্কর ক্ষতি হয়ে যাবার পর আমরা হয়ত এন্টিডোট বানানোর পিছনে দৌড়াতে থাকবো।আর এসব মিসইউজ ঠেকানোর ব্যাপারে কিছু সুনির্নিদিষ্ট নিয়মনীতি ও থাকার কথা নিশ্চয় যদি ও আমার এ ব্যাপারে কোন ধারনা নেই, আপনার জানা থাকলে আপনার অন্য কোন জীবানু বিষয়ক লেখায় আমাদের সাথে শেয়ার করতে পারেন।
কৌতুহল নিবৃত্ত করার জন্য প্রচেষ্টা অথবা রহস্যের অনুসন্ধান হচ্ছে বিজ্ঞানের শেকড়।
বিজ্ঞান বদলোকের হাতে অস্ত্র তুলে দেয়না। বদলোক বিজ্ঞানকে অস্ত্র হিসেবে ব্যাবহার করতে পারে। কিন্তু বদলোকের জন্য দুধকলা দিয়ে বিশেষ বাহিনী পোষা হয়। বদলোককে ওরাই বরং সামলাক।
ভাইরাসের জন্য অস্ত্র কী হতে পারে সেটি গবেষণায় জানা গেলে তা-ও নিয়মমাফিক প্রকাশিত হয়।
কিন্তু ভাইরাস কীভাবে বিপজ্জনক হতে পারে, কত বিপজ্জনক হতে পারে সেটি জানতে বিজ্ঞান অবশ্যই চেষ্টা করবে। বিজ্ঞানের সেই তথ্য কীভাবে কেউ অন্যায় কাজে ব্যাবহার করবে সেই হিসেব করে বিজ্ঞান থেমে থাকবে না। বিজ্ঞান বরং তথ্য কীভাবে নেতিবাচক কাজে ব্যবহৃত হতে পারে সেটা নিয়েও গবেষণা করবে।
জৈবনিরাপত্তি বিষয়ক একটি নীতিমালা বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা শিগ্গীরই দেবে বলেছে। সেটি দেখা যাক কেমন হয়। এটা ছাড়া সব দেশেরই নিজস্ব নিরাপত্তার নীতিমালা রয়েছে। জৈবনিরাপত্তা প্রসঙ্গও তার ভেতরে পড়বে।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
ধন্যবাদ
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
ভাইরোলজি আমার খুব প্রিয় একটা বিষয়। ইনফ্যাক্ট, মাইক্রোবায়োলজি আমার সবচেয়ে প্রিয় সাবজেক্ট।
মাইক্রোবায়োলজি পড়ার সময় ব্যাক্টেরিয়াগুলোকে খুব আপন মনে হয়। বুঝা যায় সহজে। দুই একটা বাদে বাকি সবগুলো নিয়ম মেনে চলে। মাগার ভাইরাসগুলার আগা-মাথা নাইক্কা। একেকটা একেক কিসিমের। এগুলোর এই বৈচিত্রের কারণে এরা আমার খুব প্রিয়।
এই মিউট্যান্ট বড় ভাইকেও ভালো লাগছে, তার উলটাপালটা ক্ষমতার জন্য। একটা জিনিস, মাইক্রস্কোপে পর্যন্ত দেখা যায় না, তা পারে সকল মানুষকে অক্কা পাওয়াতে। ক্ষমতা চিন্তা করলেই টাস্কি খেতে হয়।
বড় হয়েতো আর ভাইরাস হতে পারবনা (পারলে হয়ে যেতাম), ভাইরোলজিস্ট হবো কিনা চিন্তায় আছি।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। আপনার ভবিষ্যতের জন্য শুভকামনা।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
দারুণ। আচ্ছা H1N1 কোনটা? বছর দুয়েক আগে একখান টীকা নিলাম এইটার
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
H1N1 সোয়াইন ফ্লু ভাইরাস এই দুটির মিল রয়েছে তবে পুরোপুরি এক নয়।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
বুচ্ছি, কাঁচঘেরা ল্যাবরেটরিতে বালিকাপরিবেষ্টিত হয়ে আপনি এইসব অপকম্ম করে বেড়ান!
গত হপ্তাতে একটা সেমিনারে দেখলাম এক জীবাণুর কতপ্রকার স্ট্রেন, তাদের বিবর্তন কীভাবে কোন মহাদেশে হয়ে কীভাবে ছড়াল, এই নিয়ে ভালো একটা প্রেজেন্টেশন। আর Contagion সিনেমাটাও এই নিয়ে বেশ ভালো দেখিয়েছিল, দেখেছেন নাকি?
কন্টাজিয়ন দেখব দেখব করে দেখা হয়নি। কন্টাজিয়নের স্পেশাল বিজ্ঞাপনটা দেখেছিলেন? একটা আস্ত বিলবোর্ডকে পেট্রিপ্লেট বানিয়ে এটা সেটা ইনোকুলেট করেছে! তারপর সেটা দিন দিন সত্যিকারের কন্টাজিয়নের মডেল হয়ে উঠেছ!
কাঁচঘেরা ল্যাবরেটরিতে বালিকা নিয়ে একটা গল্প লিখব। জ্বালা ধরিয়ে দেয়া টাইপ! মু হা হা হা
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
এত কঠিন বিষয়কে এত সুন্দর করে উপস্থাপন করেন, দেখলেই অবাক লাগে।
ধন্যবাদ।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
এসো নিজে করির বাইরে যে সহজ একটা বিজ্ঞান আছে, এইটা তোমার লেখা না পড়লে বুঝতাম না।
(উল্লেখ্য, ক্লাস এইট পর্যন্ত সাধারণ বিজ্ঞান বলে একটা বিষয় পড়ছিলাম, যেইখানে খালি এসো নিজে করি, এসো নিজে করি মিছিল ছিলো।)
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
দেশে আসতে ইচ্ছা করে অপু ভাই। আর সিলেটেও
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
চলে আসো। আর কতো বৈদেশ থাকবা?
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
আপনে আমার বিজ্ঞান শিক্ষক হয়া যান
এই নিবেদন মোর
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
মাস্টারি করি না করি আপনার বাড়িয়ে গিয়ে তো বসেই থাকতাম! দেশে আসলে আবার থাকব
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
সহজ ভাষায় লেখা দারুণ একটা পোস্ট। অনেক কিছু জানলাম।
ধন্যবাদ। কয়েকদিন দেখছি মন্তব্য করছেন। ভালো লাগলো আপনাকে দেখে।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
আমি নিশ্চিত আমার বার্ডফ্লু হয়েছে। বার্বিকিউর চুলায় কয়লার আগুন ঠিক মত ধরাতে না পেরে গত সপ্তাহে অর্ধকাচা মুরগী খেতে হয়েছে। এর পর থেকেই ঠান্ডা লেগে আছে।
লেখা পড়ে বরাবরের মত ভয় পাইছি।
রিক্তা
--------------------------------
হে প্রগাঢ় পিতামহী, আজো চমৎকার?
আমিও তোমার মত বুড়ো হব – বুড়ি চাঁদটারে আমি করে দেব বেনোজলে পার
আমরা দুজনে মিলে শূন্য করে চলে যাব জীবনের প্রচুর ভাঁড়ার ।
এটা তো ভয় পাওয়ার মত লেখা নয়!
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
সামান্য টাইপো-
" ন্যাচারে ফৌশিয়ের'র গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয় দু'দিন আগে, গত ২২ মে।"
এখানে ন্যাচার এর জায়গায় সাইন্স হবে (যেটা আগে উল্ল্যেখ করেছেন)
অনেক ধন্যবাদ। ঠিক করে দিলাম।
আগ্রহী পাঠক পেলে ভালো লাগে।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
আপনার লেখার ভাষা এত সুন্দর যে বিজ্ঞানের কঠিন ব্যাপারগুলোকেও আপনি খুব সহজভাবে প্রকাশ করতে পারেন।
এত সুন্দরভাবে এই গুরূত্বপূর্ণ ব্যাপারটা প্রকাশ করার জন্যে অনেক ধন্যবাদ।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
লেখা তো অ্যাজ ইউজুয়াল ভালো হয়েছে, সহজপাচ্য। কিন্তু আমি শুধু জানি মুরগির ডিমের হালি এখন ৪০ টাকা। আমার ডিম পছন্দ, তবে মনে হয় না আমার ছেলেপুলে, নাতি-নাতিনিরা আর মুরগির ডিম খাবার সৌভাগ্য পাবে, আমার বেতনে তো নাইই!
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
ধন্যবাদ।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
সবসময়ের মতই সহজ আর সাবলীল ভাষায় চমৎকার বিজ্ঞান লেখা তোমার। চমৎকার লাগলো।
শুধু তথ্য প্রকাশের স্বাধীনতার জন্য মানুষ প্রজাতির জন্য এত বিপদজনক একটা ভাইরাস তৈরীর গবেষণার বিস্তারিত প্রকাশ করাকে কেন যেন সমর্থন করতে পারলাম না।
ঘরে বসে সুলভে এবং সহজে ভয়াবহ শক্তির কার্যকর পারমাণবিক বোমা বানানোর পদ্ধতি নিয়ে গবেষণা হলে সেটাও কি এমন করে প্রকাশ দেয়াই উচিৎ হবে?
ধন্যবাদ যুধিষ্ঠির'দা।
এই তথ্যের প্রকাশের সঙ্গে অনেক বিষয় গুরুত্বপূর্ণ!
তথ্য কোন বিশেষ গোষ্ঠীর জন্য প্রকাশ করাটা আসলে অবাস্তব। প্রকাশিত তথ্য সেভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। বিজ্ঞানের একটি গবেষণার পথ ধরে আরো হাজারো নতুন গবেষণার সুযোগ তৈরি হয়। বিজ্ঞানের তথ্য গোপন রাখলে সেই হাজারো সম্ভাবণাও শেষ হয়ে যাবে।
ঘরে বসে সুলভে পরমাণু বোমা কিন্তু বানানো সম্ভব নয়! নাশকতার জন্য সেই চেষ্টা যারা করবে তাদেরকে চিহ্নিত করার জন্য এটাসেটা বাহীনি তো রয়েছেই। যেটির পক্ষে বলছি তা হচ্ছে, পারমাণবিক বোমা কীভাবে তৈরি হতে পারে, কীভাবে এরকম বিশাল শক্তি তৈরি সম্ভব সেই বিজ্ঞান যেন সহজলভ্য হয়। সেই তথ্য যেন লুকানো না হয়।
নাশকতার চেষ্টা যারা করে তারা কিন্তু তথ্য সংগ্রহের জন্যেও সেইরকম চেষ্টা করে। তাদের কাছ থেকে তথ্য লুকানো সহজ নয়! এই গোষ্ঠীকে নিয়ন্ত্রণের দায় অন্য কারো। এদের ভয়ে সাধারণ কেন তথ্য থেকে বঞ্চিত হবে!
কীভাবে বোমা বানানো যায়, বন্দুক কীভাবে কাজ করে ইত্যাদি কিন্তু খুব সহজ বিজ্ঞান। সবাই জানে এই তথ্য। সবাই বোমা বানায় না। সেই চেষ্টাও করে না। ছুরি তো সবার বাড়িতে আছে। ঘরের উঠোনে থাকা জীবাণু মানুষ মেরে ফেলতে পারে! নাশকতার জন্য ভয়াবহ সব অস্ত্র মানুষের নাগালেই থাকে! কিন্তু মূলত নাশকতার জন্য দায়ী নগণ্য সংখ্যক কিছু লোক! তথ্যকে বন্দী না করে তাদেরকে বন্দী করা উচিত বোধহয়!
এই প্রসঙ্গ নিয়ে আসলে অনেক যুক্তি তর্ক দিয়ে অনেক আলোচনা হতে পারে। আমি নিজে তথ্যের মুক্ততার পক্ষে। আমিতো আরো ভাবছিলাম, দুটি পেপার মিলিয়ে ভাইরাস বানানোর রেসিপিটা ব্লগে লিখে দেব বাংলায়
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
ব্যাপারটাকে এইভাবে দেখো। ধরো কারও যদি তোমার বাসায় চুরি করার কঠিন ব্রত থাকে, একটা তালা কিন্তু তাকে আটকাতে পারবে না। তাও আমরা বাসায় তালা দেই। কারণ সেটা চোরকে একটু হলেও নিরুৎসাহিত করে। একেবারে খোলা রেখে দিলে যার চুরি করার একটু ইচ্ছেও নেই, সেও হয়তো একটু উঁকি মারতে চাইবে। যাকগে, সেটা নিয়ে আলাদা আলোচনা হওয়া বোধহয় ভালো।
চমৎকার।
বাই দ্য ওয়ে, আমরা ফুল ফ্যামিলি একবার বার্ড ফ্লুতে আক্রান্ত হয়েছিলাম। মারাত্মক অসুস্থ হই নি। তবে ইনফ্লুয়েঞ্জার ভয়াবহতা সম্বন্ধে ওয়াকিবহাল, ভাইরাসকে সমঝায়ে চলি।
তবে আমি যুধিষ্ঠিরের সাথে একমত। এই তথ্য কি সত্যিই পাব্লিক ডোমেইনে থাকা উচিত?
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
ইনফ্লুয়েঞ্জার বিশেষ সমস্যাটা হচ্ছে ওই! তার দ্রুত, বিশেষত বাতাসের মাধ্যমে বিস্তারের ক্ষমতা!
তথ্য আসলে পাবলিকের থেকে লুকালে কেবল বেচারা পাবলিকই বঞ্চনার শিকার হবে! নাশকতা যারা চায় তারা তথ্য ঠিকই পেয়ে যাবে! পাবেনা কেবল পাবলিক! এই প্রসঙ্গে খানিকটা যুধিষ্ঠির'দার মন্তব্যের জবাবে বলেছি।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
অনেকদিন আগে এস-ভি ৪০ ভাইরাস নিয়ে এ ধরণের একটা লেখা দিয়েছিলাম। তবে ওই যুগে বিজ্ঞানীদের হাতে মিউট্যান্ট জীবাণু তৈরী করার ক্ষমতা ছিল না।
এখন সমস্যাটা বায়ো-টেররিসম নিয়ে। এইটা আবার কোনও রাডারে ধরা পরে না।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
আপনার লেখাটা পড়লাম। অনেকদিন লেখেন না বোধহয় এরকম আর। লিখতে পারেন মাঝে মধ্যে! বায়ো টেররিজম নিয়েও একটা লেখা দিতে পারেন সময় পেলে। পড়তে আগ্রহী।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
খাইছে। অবস্থা তো খারাপ দেখা যায়। বলদগুলা নেচার নিয়মিত পড়লে মুশকিল আছে। আপনে না আবার নাশকতার হাতিয়ার প্রকাশের দায় কেস খাইয়া যান দেখেন।
কেস খাওয়ার সম্ভাবনা আছে ভাইরাস তৈরির পদ্ধতি বাংলায় বর্ণনা করে লিখলে।
আমাগো আম্মা কেমন আছে?
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
এত সহজ করে লিখেন আপনি এই জটিল বিষয়গুলো!
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
জানতে চাই !
তাইলে প্রথম আলু কি বিপজ্জনক ভাইরাস ?
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
নতুন মন্তব্য করুন