মহাপ্রলয়ের বিষয়ে কখনোই কিছু লেখা হতনা হয়ত। লেখার কোন কারণও ছিল না।
যদিনা রাজকন্যা আধনয়না'র সঙ্গে আমাদের দেখা হয়ে যেত।
রাজকন্যার কথা জানি সে বহুদিন হয়। কেবল জানতাম না তার নাম। সুতরাং সিঙ্গাপুরে আমার প্রথম বিকেলেই তানভীর ভাইকে বললাম, 'চলুন রাজকন্যা দর্শনে যাওয়া যাক'। তানভীর ভাইও কোয়ান্টাম কম্পিউটিংয়ের জটিল চিন্তা থেকে খানিক অবসর নিয়ে চললেন আমাকে নিয়ে।
রাজকন্যা থাকে কোথায় তা কেউ জানে না। কিন্তু সে কাজ করে স্টার বাকস-এ। ঘটনাটা এরকম, তানভীর ভাই স্টার বাকসে কফি খেতে যেতেন। কফির সঙ্গে কোয়ান্টাম কম্পিউটিংয়ের জটিল চিন্তার মিশেলে তার সময় ভালো কাটতো বলেই যাওয়া। ঘরের কাছেই স্টার বাকস। পায়ে চটি গলিয়ে টুপ করে গিয়ে কফির মগে চুমুক দেয়া যায়। এরকম এক সন্ধ্যায় কফির মগে চুমুক দিতে গিয়ে তানভীর ভাই আবিষ্কার করলেন, কফির মগে ক্রিমের ফোমে কোকো দিয়ে একখানা হৃদয়ের চিহ্ন আঁকা।
কে না জানে, হৃদয়ের চিহ্ন আঁকা কফি পাকস্থলীতে যেমন যায় তেমনি হৃদয়েও ঘুরপথে পৌঁছতে পারে।
তানভীর ভাইকে নিয়ে স্টার বাকসে কফি খাওয়ার উসিলায় সেই রাজকন্যা'কে দেখতে যাচ্ছি। পথে ওনাকে জিজ্ঞেস করলাম, রাজকন্যার নাম কি? উনি বললেন, জানি না। কী মুস্কিল! বালিকার নাম না জানলে চলবে? তানভীর ভাই খানিকটা বিব্রত হয়ে বললেন, নাম কীভাবে জানবো? সে তো আর ফোমের উপর কোকো'র গুঁড়ো দিয়ে নাম লিখে দেয় না! আমি বললাম, সেও বটে।
বালিকা'কে তাহলে কী বলে ডাকব? রাজকন্যা নিটোলাক্ষি? তানভীর ভাই খুশি হতে পারলেন না। বললেন, তার অর্ধেক চোখতো দেখাই যায় না! চায়নিজ ট্রেণ্ডের সিংগাপুরি বালিকা সে! আমি বললাম, তাহলে নিটোলাক্ষি বদলে আধনয়না করে দেয়া যাক। রাজকন্যা আধনয়না নামটার সঙ্গে হ্যারি পর্টারের হাফ ব্লাড প্রিন্সের খানিকটা মিল রয়েছে। কাব্যিক হওয়ার জন্য আদর্শ। সিংগাপুর নামটা কেবল কাব্যের ভালোবাসা করে দিল! সিংহল নামটা কী চমৎকার মানিয়ে যায় এরকম গল্পের সঙ্গে। সিংহল কি শ্রীলঙ্কার নাম না হয়ে সিংগাপুরের নাম হতে পারত না?
বকবক করতে করতে স্টার বাকসে পৌঁছে গেলাম। একপাশে সোফায় আরাম করে বসার ব্যবস্থা আছে। আমরা বসতেই হাসিমুখে বালিকা এগিয়ে এল। তানভীর ভাইকে বলে দিতে হলনা। আমি চিনলাম। রাজকন্যা আধনয়না। তার শিফন চুল, বোঁচা নাক, টানা চোখ একেবারে রবীন্দ্র-স্টাইলে যতটুকু না হলে নয় ততটুকু, আর অবশ্যই ঝিলমিলে দাঁত। ঝিলমিলে দাঁত ছাড়া চায়নিজ গোত্রের বালিকা দেখার দূর্ভাগ্য এখনো হয়নি আমার। প্রকৃতিকে মনে মনে ধন্যবাদ দেই আমি।
তানভীর ভাইকে সুযোগ না দিয়ে রাজকন্যাকে বললাম, আমি একটা স্টার্ক ব্লাক কফি খাবো, আর (তানভীর ভাইকে দেখিয়ে) উনি সবসময় যেরকম খান সেটাই। রাজকন্যা আমার স্টার্ক মার্কা ব্লাক কফির আবদার শুনেই বোধহয় খানিকটা প্রশ্নাতুর চোখে তাকাচ্ছিল। আমি অতিথি, বিকেল বেলায় ব্লাক কফি চাই আর সকালে ঘুম চোখে এসে কাপুচিনো চাই, কফির দোকানের কর্মীর প্রশ্ন নিয়ে তাকানোর কথা নয়। তাকানোর নিয়ম নেই। কিন্তু বালিকার চাহনি দেখে বুঝলাম, সে তানভীর ভাইকে গড়পড়তা অতিথির তালিকায় রাখেনি। তিনি অথবা তার বন্ধুদের খাওয়া দাওয়ার পছন্দে তার একটা নিরব মত থাকতে পারে বলেই সে মনে করে। আমি অবশ্য রাজকন্যাকে জটিলতায় রাখলাম না। বললাম, 'আয়েশ করে তোমার বানানো কাপুচিনো খেয়ে দেখব পরে। এখন আমার খাঁটি ক্যাফেইনের দরকার। মাথা ফ্রেশ করতে হবে। তোমাদের দেশ এত সুন্দর যে মাথা ঝিম ঝিম করে!' এবার ভালোমতো দেখা গেল রাজকন্যার ঝিলমিলে হাসি। বললাম, 'তোমাকে খুবই সুন্দর লাগছে বালিকা, তোমার কফিও নিশ্চয়ই সুন্দর হবে'। বালিকার হাসি আরো চওড়া হল। বলল, ব্লাক কফির আবার সুন্দরের কী আছে? আমি বললাম, আছে নিশ্চয়ই। যথাযথ গরম পানিতে ঠিকঠিক পরিমাণ মত অ্যারাবিকা এসপ্রেসো ঢেলে দুটো ঘুঁটা দিয়ে পরিবেশন করতে হবে আগে থেকেই গরম করে রাখা সিরামিকের লম্বা হাতলওয়ালা মোটা মগে, এসব নিশ্চয়ই তুমি আমার চাইতে ভালো জানো'। বালিকা আবার হেসে ফেললল। আমি অনুসন্ধানী দৃষ্টি নিয়ে তার চোখের দিকে চাইলাম।
তানভীর ভাই বললেন, ওরকম ড্যাব ড্যাব করে চেয়ে আছ কেন? বললাম, বালিকাদের দিকে ড্যাব ড্যাব করে চেয়ে থাকারই নিয়ম। এখন অবশ্য আমি বোঝার চেষ্টা করছিলাম, হাসতে গেলে রাজকন্যার চোখ বন্ধ হয়ে যায় কিনা! সমস্যা হচ্ছে, ইনি তো এমনিতেই আধনয়না! হাসতে গেলে চোখ আরো খানিকটা বন্ধ হয়ে যায় কিনা বুঝতে পারছি না!
- হাসতে গেলে চোখ বন্ধ হলে সমস্যা কী? তানভীর ভাই প্রশ্ন করলেন।
- আমার ধারনা, হাসতে গেলে যাদের চোখ বন্ধ হয়ে যায় তারা পারসোনালিটি ডিজর্ডারে ভোগে! হিটলারের হাসি দেখেছেন? আইখমানের?
- বল কী! সত্যি নাকি? তানভীর ভাই যতটা না অবাক তার চাইতে বেশি কৌতুহলী।
- নিশ্চিত নই। আমি বললাম। পরীক্ষা করে দেখা গেলে বেশ হত।
- তোমার ল্যাবেই তো অ্যানলিসিস করে দেখতে পারো।
- সে কী আর সম্ভব! মানুষের ডিএনএ নিয়ে দৌড়ঝাঁপ করা তো আর আমার কাজ নয়। আর তাছাড়া ঠিক ঠিক পরীক্ষাটা করতে হলে অনেকগুলো নমুনা দরকার। আলাদা করে প্রোজেক্ট নিয়ে না নামলে সে পাওয়া সহজ না। আমার কাছে যে দুয়েকটা নমুনা আছে সেসবের কেবল ডিএনএ সিকোয়েন্স করে রেখে দিতে পেরেছি। আসল কাজে লবডঙ্কা! কোনভাবে আপনার রাজকন্যা আধনয়নার একখানা চুল চুরি করতে পারেন, আমার নমুনায় যোগ করে রাখতাম?
তানভীর ভাইকে বেশ দুঃখী মনে হল। পারসোনালিটি ডিজর্ডারের পরীক্ষাটা আমি করতে পারছিনা বলেই বোধহয়। এর মধ্যে রাজকন্যা এল কফি নিয়ে। আমাদের আলোচনা এগোল না। আমি একেবারে ধন্যবাদের ডালি ঠেলে দিলাম মেয়েটার দিকে। তানভীর ভাই আনমনা হয়ে কফির কাপে চেয়ে রইলেন। সেখানে সেই পুরনো হৃদয়ের চিহ্ন!
আমি ওনাকে বাস্তবে ফেরাতে প্রশ্ন করলাম, মানুষের অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলোর মধ্যে কোনটা সবচে অস্বস্থিকর বলেন তো? উনি কৌতুহলী হয়ে বললেন, তা তো ভেবে দেখিনি। কোনটা বলোতো? আমি বললাম, হৃদপিণ্ড! এই জিনিসটা দেখতে এমনিতেই কিলবিলে। একগাদা নালি বের হয়ে গেছে অক্টোপাসের মত শরীর থেকে। তবে সবচে বাজে বিষয়টা হচ্ছে, এই বস্তু সবসময় ঢিবঢিব করে কিলবিল করতে থাকে। যেন আলাদা জীবন্ত একটা প্রাণি! বিশ্রী!
তানভীর ভাই বোধহয় আমার সঙ্গে একমত হলেন। চামচ দিয়ে দ্রুত মিলিয়ে দিলেন কফি মগের হৃদপিণ্ডের চিহ্ন । আমি বললাম, হৃদপিণ্ডের চিহ্ন মিলিয়ে দিলেই কী আর সব মিলিয়ে যাবে? বালিকাকে একদিন দাওয়াত করুন। ২১শে ডিসেম্বরের আগেই করুন। ধরা ধ্বংস হয়ে গেলে কেম্নেকী!
তানভীর ভাই বালিকার বিষয়ক কথায় পাত্তা দিলেন না। বললেন, তুমি কি বিশ্বাস করো মায়ানদের ক্যালেণ্ডার মেনে পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে?
বললাম, আরে ধুর! মজা করছিলাম। মায়ানদের বিজ্ঞান কি আর অতো উন্নত ছিল! পৃথিবী ধ্বংসের ঠিকঠিক তারিখ তারা কীভাবে বের করবে?
আমাদের কথাবার্তার বিষয় দ্রুত বদলাচ্ছিল। আশেপাশে বাঙালি থাকলে ঠিক পাগলের ডাক্তার ডেকে নিয়ে আসত! পৃথিবী ধ্বংস বিষয়ক আমার জবাব শুনে তানভীর ভাই ভয়ানক কৌতুহলী হয়ে তাকালেন। আমি কফির মগে একটা লম্বা চুমুক দিয়ে ঢক করে পাকস্থলীতে ঠেলে দিলাম ক্যাফেইনের আগুন। এই প্রসঙ্গটা এরকম দুম করে উঠে আসবে বুঝতে পারিনি। তবে সমস্যা নেই। এই বিষয়ে তানভীর ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলা যায়। যেরকম ভাবছিলাম, তানভীর ভাই ঠিক প্রশ্নটাই করলেন।
- তুমি কি মনে কর মায়ানরা বিজ্ঞানে উন্নত হলে পৃথিবী ধ্বংসের ঠিক ঠিক তারিখ বের করতে পারত?
- হ্যাঁ মনে করি। আমি মৃদু হাসলাম। বোঝাতে চাইলাম, ইয়ার্কি মারছি না।
- কীভাবে? সেই হিসেব করতে হলে বিজ্ঞানে কীরকম উন্নত হতে হবে? আমরা কী অতোটা উন্নত? তানভীর ভাই অনেকটা হুড়মুড় করে প্রশ্নগুলো করলেন।
- আমার মনে হয় আমরা অতোটা উন্নত। তবে এই ধারনাটা আমার নিজের। আপনি তো জানেনই আমি স্রেফ একজন ছাত্র।
- ছাত্র তো সবাই। তোমার হিসেবটা কীরকম বলো দেখি? পৃথিবী ধ্বংস হবে কীভাবে? উল্কা এসে পড়বে? নাকি যেরকম হওয়ার কথা, সূর্য ঠাণ্ডা হয়ে গেলে তারপর? তানভীর ভাই আবার হুড়মুড় করে একগাদা প্রশ্ন করলেন।
- আমি বললাম, আমার হিসেবটা ঠিক এই গ্রহ ধ্বংস হয়ে যাওয়ার নয়, আমার হিসেব, মানুষ বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার। আর সে সূর্য ঠাণ্ডা হয়েও নয়।
- খুলে বলো। খুবই আগ্রহ বোধ করছি। তানভীর ভাই খানিকটা ঝুঁকে এলেন আমার দিকে।
আমি বললাম, একটা এককোষী ব্যাকটেরিয়া গড়ে কত প্রজন্মে একবার মিউটেটেড হয়ে বদলে যায় জানেন?
তানভীর ভাই মাথা নাড়লেন। ওনার জানা নেই।
আমি বললাম, একলক্ষ প্রজন্মে। বলতে পারেন, একলক্ষবার তার জিনোম কপি হলে একবার তা বদলে যায়। একলক্ষ সংখ্যাটা কিন্তু অনেক এককোষী জীবের প্রজন্মের জন্য খুবই ছোট।
তানভীর ভাই হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়লেন। আমি আমার আইডিয়াটা বলে চললাম।
আপনি যেহেতু বায়োকেমিস্ট্রি থেকে খানিটকটা দূরে আছেন তাই খুব শর্টকাট নিয়ে বলি। একটা এককোষী জীব নির্দিষ্ট সময় পর বদলে যেতে পারে। বদলে গিয়ে তার প্রাণঘাতী হয়ে ওঠারও নির্দিষ্ট সম্ভাবণা রয়েছে। প্রাণের সূত্রপাতই হয়েছে এককোষী জীব থেকে। কিন্তু যদি আপনি সকল এককোষী জীবকে হিসেব না করে কেবল মানুষের জন্য সংক্রামক রোগের জীবাণুদের হিসেবে নেন তাহলেও মানুষ এককোষী জীবের বিবর্তনের কাছে একেবারে শিশুর মত অসহায়।
তানভীর ভাই একই সঙ্গে অবিশ্বাস এবং কৌতুহল নিয়ে তাকিয়ে আছেন। আমি কথা বলছি।
একটা উদাহরণ দেই। বাংলাদেশে একপ্রজাতির বাদুড় একটা ভাইরাস বয়ে বেড়ায়। নিপাহ ভাইরাস। এইটা মানুষের মাথায় সংক্রমণ ঘটায়। সহজ ভাষায় রোগটার নাম এনসেফালাইটিস। এটার মৃত্যু হার কত জানেন? একশোভাগ। একশোজন আক্রান্ত হলে একশোজনই মারা যায়। শুধু এই একটা ভাইরাসের যদি একটা মিউটেশন হয় যেটা তাকে বাতাসে ছড়ানোর উপযোগী করে দেবে, তাহলে বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষ কয়দিনে লাশ হয়ে যাবে জানেন?
তানভীর ভাইয়ের চোখ ছোট হয়ে আছে। ভ্রু কুঁচকে আছে খানিকটা। উনি বুঝতে পারছেন।
আমি বললাম, আপনাকে আসলে হিসেব করতে হবে, এককোষী জীবের শুরু, মানুষের সঙ্গে তার মিথস্ক্রিয়া, মিউটেশনের গড় এবং সব মিলিয়ে মানুষের বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা। কথা থামিয়ে আমি ওনার দিকে কৌতুহলী হয়ে তাকালাম।
তানভীর ভাই বললেন, কিন্তু মানুষ তো বিজ্ঞানে উন্নত। এককোষী জীবের সঙ্গে ক্ষতিকর মিথস্ক্রিয়া থেকে নিজেকে বাঁচানো ইতিহাসও মানুষের চমৎকার।
- কিন্তু সেই ইতিহাস আশা ব্যঞ্জক নয়। যেমন যে উদাহরণটা দিলাম, সেই নিপাহ ভাইরাসের কোন প্রতিষধক নেই। খুব সৌভাগ্যবান হলে বছর পাঁচেক সময় নিয়ে ল্যাবরেটরিতে একটা ভাইরাসের প্রতিষেধক বানানো যায়। আর আপনি চাইলে পাঁচ দিনে একটা ভাইরাসের পাঁচশো মিউট্যান্ট বানাতে পারবেন।
তানভীর ভাইকে আবার দুঃখী মনে হল। আমি থামলাম না।
গত একশোবছরে এককোষী প্রাণির মিউটেশনের হার বেড়ে গেছে অনেকখানি। আমরাই আমাদের পরিবেশকে সেরকম করে ফেলেছি। ওজন স্তরে ছিদ্র, হাজারো রাসায়নিক, ইত্যাদি ইত্যাদি শতেক কারণের কথা তো সবাই জানে।
- মূল বিষয়টা বলোতো? তোমার হিসেবে সব মিলিয়ে এককোষী জীবের কারণে মানুষ বিলুপ্ত হচ্ছে কবে? তানভীর ভাই খানিকটা অবিশ্বাস নিয়ে প্রশ্ন করলেন।
আমি বললাম, আমি হিসেব করবো কীভাবে? আমি কেবল জানি মানুষ বিলুপ্ত হওয়া সম্ভব। হওয়া উচিত। প্রকৃতির নিয়মের কারণেই তা হওয়া উচিত। কিন্তু এত এত নিয়ামক মিলিয়ে সঠিক দিন তারিখ হিসেব করা তো আমার পক্ষে সম্ভব না!
তানভীর ভাইয়ের বিস্ময় দেখে এবার আমার গণিত না জানার পুরনো দুঃখটা মাথা চাড়া দিয়ে উঠলো।
বললাম, আমি তো বায়োলজিস্ট। গণিত আমার চোখে অধরা প্রেমিকার মত। দূর থেকেই সে সুন্দর। আর তাছাড়া গণিতের সঙ্গে আমার সহবাস থাকলেও আমি এই হিসেব নিয়ে মাথা ঘামাতাম না।
তানভীর ভাই খুব অবাক হয়ে প্রশ্ন করলেন, গণিত না জানলে তুমি তোমার গবেষণা চালাও কীভাবে? যতই তুমি বায়োলজিস্ট হও, গণিত ছাড়া তো গবেষণা সম্ভব না।
আমি বললাম, কাজ চালানোর মত একটু আধটু গণিত জানি। কিছু কাজ টেকনিশিয়ানরা করে দেয়। কিছু কাজ সফটওয়ারে করে দেয়। কিছু কাজ করতে কয়েকদিনের জন্য প্রয়োজনীয় খানিকটা গণিত শিখে নেই। আর বেশি ঠেকলে তুর্কী বান্ধবীর বাসায় হাজির হই একবোতল সাদা ওয়াইন নিয়ে।
তানভীর ভাই আমার সব কথাই সিরিয়াসলি নিলেন। মজা করে কী বলেছি ধরতে পারলেন না। বললেন, তোমার নিয়ামকগুলো আমাকে দিতে পারো?
আমি বললাম, নিশ্চয়ই। এসব তো চাইলেই পাওয়া যায়। কেন বলুন তো?
তানভীর ভাই কথা বললেন না। উঠতে চাইলেন। আমি ঝটপট একটা ফ্যাট ফ্রি ইয়োগার্ট-ফ্রুট ড্রিংক নিয়ে নিলাম। রাজকন্যা আধনয়নাকে ঠিকমত বিদায় জানানো হল না।
সন্ধ্যাতেই বাসায় চলে এলাম আমরা। আমি তানভীর ভাইয়ের চেহারা দেখে বুঝলাম ওনার সঙ্গে দিন দুয়েক কথা বলা যাবে না। কীসব বকবক করে নিজেই সিংগাপুর ভ্রমনের ভালোবাসা করে দিলাম ভেবে মনটা খানিক উদাস হল। তানভীর ভাইয়ের গুম হয়ে থাকা, আমার টিভিতে অরুচি, গ্যাজগেজে শহরের আলো, এসবকিছুর মাঝে উপায়ন্তর না দেখে আমি কিন্ডলের পাতায় চোখ গুঁজে দিলাম। এক পলকে এক পৃষ্টা কেন পড়ে ফেলা যায়না সেই দুঃখে মনটা আরো খানিক খারাপ হল। মানুষের চিন্তার তুলনায় তার শারিরীক ক্ষমতা এরকম কুৎসিত মাত্রায় কম হল কেন সেই বিষয়ে তানভীর ভাইয়ের সঙ্গে আলোচনা করা যেত। হলনা।
পরদিন সকাল বেলা তানভীর ভাইয়ের লক্কড়ঝক্কড় কফি মেশিনের ঘড়ঘড় শব্দে ঘুম ভাঙল। কফির দানা ভাঙছে না যেন নাট-বল্টু ভাঙছে! আমি কাউচ ছেড়ে কিচেনে গিয়ে বললাম, সুপ্রভাত।
তানভীর ভাই বললেন, কফি খেয়ে চলো কফি খেয়ে আসি।
আমি চোখ বড়বড় করে তাকালাম।
উনি বললেন, বাসায় ব্লাক কফি খেয়ে চলো রাজকন্যা আধনয়নার হাতের কাপুচিনো খেয়ে আসি।
আমি বললাম, একশোবার।
সারা পথ তানভীর ভাই আর বাক্যব্যয় করে শক্তিক্ষয় করলেন না। আমিও কিন্ডল-এ খুলে রাখা বইটার শেষ কয়েকটা পাতাপড়ে ফেলতে মন দিলাম। বই বন্ধ করলাম স্টার বাকসের দরোজায় পৌঁছে।
স্টার বাকসে ঢুকতেই সেই ঝিলমিলে হাসি দেখা গেল। রাজকন্যা আমাকে মনে রেখেছে। জিজ্ঞেস করল, স্টার্ক ব্লাক কফি, তাইতো? আমি ধন্য হয়ে গেলাম। মনে কাপুচিনোর সাধ থাকলেও চেপে গিয়ে বললাম, একদম ঠিক! রাজকন্যার হাসি বিস্তৃত হল। তানভীর ভাই রাজকন্যাকে বললেন, কাগজের গ্লাসে দাও আমাদের কফি। আমি বুঝলাম, আমরা এখানে বসতে আসিনি।
কফি নেয়ার সময় আমাকে এবং রাজকন্যাকে একেবারে অবাক করে দিয়ে তানভীর ভাই রাজকন্যাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি আমার সঙ্গে একদিন সন্ধ্যায় কফি খেতে যাবে? রাজকন্যায় মুখের ভাব কেমন হল সে আমি দেখার চেষ্টা করলাম না। তৃতীয় ব্যক্তি হিসেবে নিজের অস্তিত্ব গায়েব করতে দেয়ালে টানিয়ে রাখা সস্তা রিপ্রিন্ট পেইন্টিংয়ের শিল্পকর্ম আবিষ্কার করতে লাগলাম।
রাজকন্যার, কথা কানে এল। সে মৃদু স্বরে বলছে, হ্যাঁ যাবো। সিংগাপুরী বালিকাদের মুখের ব্লাশিং কেমন হয় দেখা হল না! তানভীর ভাই আমাকে পেছন থেকে হড়হড় করে টেনে নিয়ে বের করলেন।
আমি জিজ্ঞেস করলেন, কেউ কি পালাচ্ছে?
উনি বললেন, না, কেউ পালাচ্ছে না। কিন্তু আমরা দৌড়চ্ছি।
- কেন?
- কাল রাতে তোমার বলা সবগুলো নিয়ামক দিয়ে আমার ডিপার্টমেন্টের কম্পিউটারকে মানুষ কবে বিলুপ্ত হবে সেই হিসেব করতে দিয়েছি। সেটার রেজাল্ট দেবে আর দশ মিনিটের মাথায়। দ্রত পায়ে হাঁটো।
আমি অবাক হয়ে বললাম, ডিপার্টমেন্টে গিয়েছিলেন নাকি রাতে?
- আরে না। বাসা থেকেই হিসেবটা চালিয়েছি। ফলাফলটাও বাসাতে বসে দেখা যেত। কিন্তু ভাবলাম, কী না কী ফল পাই। রাজকন্যার সঙ্গে কফি খাওয়ার সাধ মিটিয়ে নেয়া যাক।
- আমি পাত্তা না দেয়ার মত করে হেসে বললাম, ঠিক ঠিক।
পুরো বিষয়টা এতদিন স্রেফ একটা আইডিয়া হিসেবে ছিল। তানভীর ভাই সেটা সত্যি সত্যি পরীক্ষা করে দেখছেন। কম্পিউটার যদি বলে হিসেব মত আগামীকাল মানুষ বিলুপ্ত হয়ে যাবে তবুও আমি বিশেষ পাত্তা দেবোনা হয়তো। কোন অবাস্তব কারণে এই হিসেবটাকে একটা আজগুবি বিষয় মনে হয় আমার। গণিত না মানার মত মূর্খামি আর হয়না। কিন্তু আমি নানাবিধ মূর্খামি জীবনে করেছি। নিজের পক্ষে আমার কাছে একটাই যুক্তি, মানুষ বিলুপ্ত হলেই বা আমার কী করার আছে?
তানভীর ভাইয়ের ডিপার্টমেন্ট ফাঁকা ফাঁকা। বিশেষ লোকজন নেই। দুয়েকজনকে উনি মর্নিং বললেন। আমিও ভদ্রতা মার্কা হাসি দিতে দিতে এগোলাম। ওনার রুমের কম্পিউটারটা চলছে। কেবল মনিটরটা বন্ধ করা। উনি সেটা চালালেন। ১০ মিনিট পার হয়ে গেছে। আমি খুব কৌতুহল নিয়ে তাকালাম। তাকালেন তানভীর ভাইও।
স্ক্রিনে জ্বলজ্বল করছে একটা নাম, কিয়ান শেন।
আমি বললাম, এটা কী?
তানভীর ভাই বললেন, তাইতো, এটা কী!
চেয়ারটায় বসে কীবোর্ডে আঙুল চালালেন উনি। দু'মিনিটের মধ্যে আমি জানলাম, তানভীর ভাইয়ের মুখের ত্বকে রক্তের পরিমান বেড়ে গেলে ওনাকে কেমন দেখায়!
উনি বেশ লজ্জিত স্বরে বললেন, একটা ভুল হয়ে গেছে। কালকে তোমার কথাগুলো বেশ ভাবাচ্ছিল। তুমি যেরকম বলেছিলে, এককোষী জীবের বিবর্তনে মানুষের বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবণার নিয়ামক, সেসব নিয়েই কাজ করছিলাম। কিন্তু কয়েকদিন আগে, আরেকটা হিসেব করতে শুরু করেছিলাম। স্টার বাকসের মেয়েটার সম্ভাব্য নাম কী হতে পারে সেটা বের করার চেষ্টা করছিলাম একটা সফটওয়ার বানিয়ে। কাল রাতে তোমার বলা হিসেবগুলো করতে করতে কখন ওই মেয়েটার নাম বের করার সফটওয়ার চালিয়ে ঘুমিয়ে গেছি মনে নেই। আমি ভেবেছি আমার কম্পিউটার মানুষ বিলুপ্ত হওয়ার হিসেবটাই সারারাত ধরে করবে!
আমি প্রাণ খুলে হাসলাম। তানভীর ভাই কাচুমাচু হয়ে তাকিয়ে রইলেন।
আমি বললাম, বেশ, শেষ পর্যন্ত বালিকাকে কফির দাওয়াত তো দিলেন এইসব চিন্তার স্রোতে পড়ে।
উনি বললেন, দেখো তো কী বিপদ!
আমি বললাম, বিপদ কীসের। যান কফি খেয়ে আসুন সন্ধ্যাবেলা। মানুষ বিলুপ্ত হলে হোক।
উনি বললেন, ঠিক বলেছ। মানুষ যদি নিয়মের মধ্যে পড়ে বিলুপ্ত হয়, তাহলে সেটাই হওয়া উচিত। দিনক্ষণের হিসেব নিকেশ তুলে রাখলাম।
আমি হাসলাম। বললাম, আপনি তাহলে ডিপার্টমেন্টেই থাকুন। আমি খানিক হেঁটে শহরটা দেখে আসি। বিকেলে শুয়ানের সঙ্গে দেখা করতে ভুলবেন না আবার। আমি সরাসরি বাসাতেই ফিরে যাবো।
তানভীর ভাই অবাক হয়ে প্রশ্ন করলেন, শুয়ান কে?
আমি বললাম, রাজকন্যা আধনয়নার আসল নাম। শি শুয়ান। কিয়ান বলে তাকে ডাকলে আপনার প্রেম আঁতুড়েই মরবে!
তানভীর ভাই খুব অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলে তুমি নাম জানলে কী করে?
আমি বললাম, আদিম পদ্ধতি। জিজ্ঞেস করে।
তানভীর ভাই বললেন, হ্যাঁ তাইতো। ভালো বুদ্ধি!
আমি মনে মনে বললাম, শি শুয়ান, অসাধারণ চিন্তাশক্তি আর বাচ্চাকাচ্চা মানুষ করার অভ্যাস না থাকলে তোমার খবর আছে!
[যার সঙ্গে সিঙ্গাপুরে এত কাহিনী, এই গল্প তার জন্যেই।
ব্যক্তিগত ব্লগে প্রকাশিত]
মন্তব্য
তানভীর ভাই ও রাজকন্যা আধনয়নাকে অভিবাদন !
লেখা তারায় তারায় তারাময়
__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার
ধন্যবাদ
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
ঠিক, এই কারনেই বই পড়তে বসলে আমার বিরক্ত লাগে। বিশেষ করে বইটা যখন মনমতো হয়না অথচ বেশ নামকরা বই !
গল্পটা ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ ।
ধন্যবাদ
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
কি যে দারুন লাগল পড়তে !!
জমজমাট!
ধন্যবাদ
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
সকাল সকাল লেখাটা পড়ে মনটা গার্ডেন গার্ডেন হয়ে গেলো।
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
ধন্যবাদ
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
অসাধারণ লেখা। পাঁচ তারা কম হয়ে যায়।
তানভীর ভাই ও রাজকন্যা আধনয়নাকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা।
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
অনেক ধন্যবাদ।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
অনার্যদা, লেখাটা পড়ে মন্তব্য করতেই হলো !! একদম একটানে পড়ে ফেলার মতো দুর্দান্ত আর তারসাথে রাজকন্যা আধনয়নার সাথে তানভির ভাই এর কফির কাপের মুগ্ধতা !!
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
অনেক ধন্যবাদ
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
মারাত্মক
ইয়ে, ওই বিশেষ বাদুড় বাংলাদেশের কুন জায়গায় থাকে অন্যায্যদা? খুবই ডেন্চারাস জীব কিন্তু! এইটা নিয়া বেশ একটা থ্রিলার হয়, পাগলা বিজ্ঞানী ওই ভাইরাসের মিউটেশন করতে ব্যস্ত আর তার ল্যাব এ হানা দিয়ে সব পন্ড করে দিল নায়খ...এদিকে ল্যাবে কাজ করা সুন্দরী এসিস্ট্যান্ট এর সাথে নায়খের ইটিশ পিটিশ...সিনেমার নাম ভাইরাল প্রেম!
..................................................................
#Banshibir.
এইটা বাংলাদেশে সবখানেই থাকে। খুবই কমন।
ভাইরাল প্রেম নামটা শুনে পাপী মন অন্যকিছু ভাবতে চায়। আপনি বরং গল্পটা লিখে ফেলেন।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
দু বছর আগে নিপাহ ভাইরাসের আক্রমণে লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলায় বেশ কিছু মৃত্যু ঘটেছিল। এর আগে ফরিদপুরে এর প্রাদুর্ভাব হয়েছিল।
শি শুয়ান কে?
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
রাজকন্যা আধনয়না
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
নাহয় স্পর্শ দাদা একটু ভোলাভালা, তাই বলে তাকে এমনি করে টীজ করবেন?
ভোলাভালা মানুষরাই খালি হৃদয়ের চিহ্ন আঁকা কফি পায়! আমি বড় হয়ে ভোলাভালা হব
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
পাঁচতারা দেওয়ার জন্য লগিন করলাম। তানভীরের ঘটনা তাহলে এই
--------------------------------
হে প্রগাঢ় পিতামহী, আজো চমৎকার?
আমিও তোমার মত বুড়ো হব – বুড়ি চাঁদটারে আমি করে দেব বেনোজলে পার
আমরা দুজনে মিলে শূন্য করে চলে যাব জীবনের প্রচুর ভাঁড়ার ।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
চ্রম চ্রম বেশ একখান লেখা
পাঁচতারা
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
ধন্যবাদ
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
নিপাহ ভাইরাস শুনে ভয় পাইছি
এইটা ভয় পাওয়ার মতই।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
৫ আর ১ =৬ তারা দিলাম। যব্বর হইছে লেখা
ধন্যবাদ
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
একটু সমালোচনা করি? লেখার স্টাইলে কোথায় যেন জাফর ইকবাল স্যারের ছাপ পেয়েছি। সেটা কি স্টাইলে নাকি ঘটনা বিন্যাসে নাকি বাক্য গঠনে ঠিক ধরতে পারছি না।
এটা শুধু আমারই মনে হচ্ছে কিনা সেটা অবশ্য ঠিক বুঝতে পারছি না।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
সমালোচনা কতটা করবেন সেটা আপনার ইচ্ছে। সেখানে তো আমার বলার কিছু নেই।
জাফর স্যারের লেখার ঢঙ আমার লেখায় আছে। এটা সচেতনভাবে আরোপিত নয়, আবার আমার অজানাও নয়। আমার এভাবেই লিখতে ভালো লাগে। পাঠক এটা কীভাবে নেবেন সেটা পাঠকের সিদ্ধান্ত।
জাফর স্যারের লেখার আঁচ এড়িয়ে লিখতে পারলে খুব ভালো হত। কিন্তু সচেতন ভাবে সেটা মাথায় রেখে লিখতে কষ্ট হয়। যেভাবে কীবোর্ড চলে সেভাবেই চলতে দিতে ইচ্ছে করে
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
ঠিকাছে। কীবোর্ড যেভাবে চলছে সেভাবেই চলুক, কারন সেটা খুব ভালই চলছে
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
দারুন লাগল! ব্যাতিক্রমধর্মী...
ধন্যবাদ
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
ভালো লাগলো!
ধন্যবাদ
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলাম কাকে নিয়ে কফি খেতে যাওয়া যায়। যাই হোক, সুন্দর লেখা।
ধন্যবাদ
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
অনার্য সঙ্গীত, লিখায় জাফর ইকবালের ছাপ নেই। কোথাও নেই।
আর থাকলে থাকুক। আমি এতেই মুগ্ধ। মহা মহা মুগ্ধ।
ধন্যবাদ।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
খুব মজা পেলাম পড়ে - খাসা রম্য
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
ধন্যবাদ।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
কেউ কোনদিন এই রকম হৃদয়-ওলা কফি খাইতে দিল না। আফসোস থাকে গেল।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
"মানুষ বিলুপ্ত হলেই কী আর না হলেই কী" জাতীয় চিন্তাগুলোকে সরিয়ে রেখে অ্যাকাডেমিক দৃষ্টিকোন থেকে ভাবলে, ব্যাক্টেরিয়া-ভাইরাসের আক্রমণে হোক আর প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মে হোক সম্ভাব্য কত বছর পর মানুষ বিলুপ্ত হতে পারে? অথবা কত সময় পরে অন্য কোন নরোত্তম প্রজাতির উদ্ভব হতে পারে?
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
মানুষ বিবর্তিত হবে। আসলে ইতিমধ্যেই যথেষ্ঠ হয়েছে, এবং হচ্ছে। কিন্তু জৈবিক মিথস্ক্রিয়ার কারণে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবণা খুবই কম। যেটা হতে পারে, মানুষের একেকটা গোত্র/গোষ্ঠী বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে সংক্রমণে, যেমন আগেও হয়েছে। কিন্তু পুরো মানুষ প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবণা আছে বলে আমার জানা নেই।
আলাদা করে 'প্রজাতি' বলা যাচ্ছে না কিন্তু মানুষ খুব দ্রুত বিবর্তিত হচ্ছে। মানুষের মাঝে এখনই ভিন্ন জেনেটিক বৈশিষ্ঠের অনেকে রয়েছেন
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
ভাল লেগেছে।
ধন্যবাদ।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
ভালো লেগেছে, খুব। অন্য ধাঁচের সায়েন্স ফিকশন পড়লাম। ফিকশনের গল্পের আড়ালে শিখায় ফেললেন কতকিছু।
আপনি কি এখন গবেষণা করছেন? তাহলে শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে নিয়েন প্লিজ, চমৎকার পড়াবেন আপনি।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
ভালো লেগেছে
ধন্যবাদ
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
মনে রাখার মত অনেকগুলো লাইন আছে- মনে রাখলাম।
অসাধারণ অনার্যদা!!
ধন্যবাদ
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
লেখাটা টানা পড়ার পর একটাই শব্দ মাথায় এসেছে - সুন্দর...
আমরা যারা বিজ্ঞানে অজ্ঞান ওদের কাছে আপনার কলম কিন্তু অন্ধের লাঠি মশাই। সায়েন্সকে এইভাবে কাহিনীতে ঘুলে মিলে লিখতে থাকুন
ডাকঘর | ছবিঘর
ধন্যবাদ
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
তানভীর তো আনন্দে ডগমগ হয়ে তোমার লেখা পড়ার জন্য গতদুইদিন ধরে তাড়া দিচ্ছে। লেখা মজারু হইছে। কল্পকাহিনি ট্যাগ খেয়াল করিনি প্রথমে, একবার মনে হল এই ছেলেটা কবে এসে ঘুরে গেল আহা একটু বললো ও না।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
খুব ভাল লাগল
পৃথিবী
ধন্যবাদ
আপনার নিক'টা খুবই চমৎকার
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
খুবই ভালো লাগলো। একবার গোগ্রাসে পড়ে ফেললাম। পরে আবার আস্তে আস্তে পড়বো।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
ধন্যবাদ তুলিদি
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
তানভীর ভাইয়ের সাথে তো কথা হল, এখন আধনয়না বাকী !
facebook
ছি ছি! অপরের বান্ধবী দেখতে এত আগ্রহ ক্যান!
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
অসাধারণ। বেশ অনেকদিন পর এরকম চমৎকার একটা কল্পকাহিনী পড়লাম।
ধন্যবাদ
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
আহা ছেলেটাতো গেছিল পড়াশোনা করতে.. এখন খালি কফি খায় নাকি?
আর বলবেন না! তানভীর ভাই এখন কফিময়!
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
স্টারবাকসের কফির কথা আর বইলেন না। এই কফি খাইতে গিয়া আড়াই ঘন্টা আগে বোর্ডিং কইরাও ফুকেটের ফ্লাইট মিস কইরা আত হাজার টাকা গচ্চা দিসি সপ্তাহ দু'ইয়েক আগে!!
লেখা ফাটাফাটি হইসে।
ফারাসাত
ধন্যবাদ
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
অনেক কিচু বায়রায় আসতেসে!
আপনের লেখার হাতের জবাব নাই! ঃ)
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।
আরো অনেককিছু বায়রাবে! ওয়েঠ অ্যাণ্ড ছি!
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
নতুন মন্তব্য করুন