ধরে খেয়ে ফেলার মত দুই বৈজ্ঞানিকের কথা বলেছিলাম, মনে আছে?
মনে না থাকলে দুই লাইনে মনে করিয়ে দেই। আপনার ত্বকের কোষ নিয়ে সেটা দিয়ে আপনার একহালি যকৃত বানিয়ে ফেলা যায় (বস্তুত একহালি আপনাকে বানিয়ে ফেলা যায়) আর সেটা কীভাবে করা যায় তা দেখিয়েছেন দুজন মানুষ। যেহেতু পৃথিবীর মানুষদের শ্রদ্ধার চাইতে বেশি কিছু দেয়ার মত নেই তাই এই দু'জন মহামানবকে এবার শ্রদ্ধাভরে চিকিৎসায় নোবেল পুরষ্কার দেয়া হয়েছে।
দুই লাইনে মনে করিয়ে দিলাম দুই বৈজ্ঞানিকের কথা। আর মনে করিয়ে দিলাম, মানুষের শরীরের যেকোন কোষ (যে কোষে পূর্ণ ডিএনএ আছে) নিয়ে সেটা বদলে যা ইচ্ছে করা যায়। যেমন ধরুন আপনার হৃদপিণ্ডে ক্ষত হয়েছে। নিজের ত্বকের কোষ দিয়ে দুটো বানিয়ে নিতে পারেন। একটি কোন পছন্দের বালক অথবা বালিকাকে দিয়ে দিলেন হয়তো। বিজ্ঞান হৃদয় দেয়া-নেয়ার জটিল সমস্যাকে মানুষের হাতের নাগালে নিয়ে এসেছে। কিন্তু এ বেশিদিন আগের কথা নয়। আগে কেবল মিথ্যা মিথ্যা হৃদয় দিতে হত। মানে বড়রকমের একটা গর্দভকে ধরে নানান বাক্যবাণে তাকে বুঝিয়ে ছাড়তে হত যে আমার হৃদয় তোমাকে দিলাম, ইত্যাদি। এইখানে বনি ব্যসলারের কথা মনে পড়ে গেল। ওনার সঙ্গে আমার হৃদয় ঘটিত কোন সম্পর্ক নেই। সম্পর্ক মুগ্ধতার।
বনি ব্যসলার ব্যাকটেরিয়ার 'কোরাম সেন্সিং', মানে ব্যাকটেরিয়ারা কীভাবে কথা বলে, যোগাযোগ করে ইত্যাদি নিয়ে গবেষণা করেন। অতিমানবীর কাছাকাছি রকমের বিজ্ঞান বক্তৃতা দেন। এবং ভয়ানক রকমের ভালো ভালো জিনিস আবিষ্কার করেন।
উনি ওনার বিজ্ঞান বক্তৃতা প্রায়শই অণুজীব বিজ্ঞানের খুব পুরনো একটা তথ্য দিয়ে শুরু করেন। তথ্য পুরনো হলেও উনি এত চমৎকার করে বলেন যে, একই জিনিস বারবার শুনে বারবার মুগ্ধ হতে হয়। বনি ব্যসলারের বক্তৃতার সেই চমৎকার অংশটা আমার মত করে বলি।
আপনি আসলে কী?
হাস্যকর প্রশ্ন হয়ে গেল। আপনি হোমো সেপিয়েন্স। যেহেতু দিব্যি চলে ফিরে বেড়াচ্ছেন। আর নাকমুখ কুঁচকে বিজ্ঞান ব্লগ পড়ছেন।
বনি ব্যসলার বলেন, আপনি আসলে ব্যাকটেরিয়া।
শরীর বলে যে কোষীয় কাঠামোটাকে আপনি মানুষের বলে দাবী করছেন সেখানে আপনার কোষ রয়েছে যতটা ব্যাকটেরিয়ার কোষ রয়েছে তার দশগুণ!
বলতে পারেন, ব্যাকটেরিয়ার কোষ থাকলেই হবে না। আপনার জিন শরীরের সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে! সব কলকব্জা চালায়।
কিন্তু ওই যুক্তিও খোঁড়া। আপনার যতটা মানুষের জিন রয়েছে, আপনার শরীরের ব্যাকটেরিয়াদের রয়েছে তারচে একশোগুণ বেশি জিন। আপনার জিনেরা আপনার শরীরে যতই হম্বিতম্বি করুক, ব্যাকটেরিয়ার জিনেদের কাণ্ডকারখানার কাছে সে পাত্তা পায়না!
সুতরাং আপনি নিজেকে যতই মানুষ বলে দাবী করুন। কোষীয় হিসেবে আপনি ১ ভাগ মানুষ আর ৯ ভাগ ব্যাকটেরিয়া। জিনের হিসেবে আপনি ১ ভাগ মানুষ আর ৯৯ ভাগ ব্যাকটেরিয়া।
সব মিলিয়ে আসলে আপনাকে দুটো তথ্য দিতে চাইলাম। একটা হচ্ছে, মানুষের শরীর ব্যাকটেরিয়াদের রাজত্ব। (এই রাজত্ব থেকে বাঁচার উপায় নেই। জীবাণুমুক্ত মানুষ স্বাভাবিক পরিবেশে বেঁচে থাকতে পারেনা।)
আরেকটা কথা, যেটা প্রথমেই বলেছি, মানুষের কোষ বদলে যা ইচ্ছে করা যায়। (আরো যদি বৈজ্ঞানিকভাবে বলি, তাহলে, মানুষের কোষের জিনের আচরণ বদলে যা ইচ্ছে করা যায়।)
এবার আপনাকে ব্যাকটেরিয়াদের মহাশক্তির কথা বলি। মানুষের কোষ প্রয়োজন মত বদলে নেয়া যায় সে আমরা জানি মাত্র বছর ছয়েক আগে। আর মানুষের শরীরে বসে ব্যাকটেরিয়ারা এই কাজ করছে অন্তত চার হাজার বছর ধরে! এরা মানুষেরই কোষ নিজেদের মত করে বদলে নিতে পারে বলে এই সেদিন দেখালেন তোশিহিরো মাসাকি নামের একজন গবেষক। এরপর থেকে এই বিষয়টা মনে হলেই আমি হেসে ফেলছি! কীরকমভাবে মানুষেরা ব্যাকটেরিয়ার হাতের পুতুল!
একটুখানি বিস্তারিত বলি। অনেক বৈজ্ঞানিক বিস্তারিত লিখব না। অতকিছু আমি জানিও না।
কুষ্ঠরোগের জীবাণুর নাম জানেন? মাইকোব্যাকটেরিয়াম লেপরি। এই বংশের আরো অন্তত একটা ব্যাকটেরিয়াকে আপনারা চেনেন। মাইকোব্যাকটেরিয়াম টিউবারকিউলোসিস। যক্ষা রোগের জীবাণু। জাঁদরেল বংশ, কী বলেন?
এরা মজার কিছু উপায়ে মানুষের শরীরের ভেতরে থাকে। কে না জানে, মানুষের শরীরের ভেতরে ব্যাকটেরিয়ারা চাইলেই হেসেখেলে বেড়াতে পারেনা। মানুষের শরীরের রক্ষী কোষেরা তাদের নানা উপায়ে মারে। ব্যাকটেরিয়াদের তাই মানুষের শরীরে টিকতে হলে নানান অভিনব পদ্ধতিতে বাঁচতে হয়। এইসব উপায়গুলো নিয়ে আস্ত বই লিখে ফেলা যায়। আমি কেবল, মাইকোব্যাকটেরিয়ামের কথাটা একবারে বলে দেই। এরা শরীরের যে রক্ষী কোষ সেসবের ভেতরে গিয়ে বসে থাকে (সব প্রজাতি কিন্তু এটা করে না)। অনেকটা পুলিশের পকেটে গিয়ে চোরের লুকানোর মত।
কুষ্ঠ হলে কী হয় সে তো আপনারা জানেনই। প্রাথমিকভাবে ত্বকের অনুভূতি নষ্ট হয়ে যায়। আরো এটাসেটা হয়। কিন্তু আমরা ওই অনুভূতি নষ্ট হওয়ার অংশে জোর দেব। কুষ্ঠ হলে অনুভূতি নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণ কুষ্ঠের জীবাণু, মাইকোব্যাকটেরিয়াম লেপরি, শরীরের স্নায়ুতন্ত্রের যে প্রান্তীয় অংশ (মানে যে অংশ প্রান্তে থাকে আরকি) সেখানের কোষের ভেতরে গিয়ে আস্তানা গাড়ে। কোষের ভেতরে ব্যাকটেরিয়া আস্তানা গাড়লে যা হয়, কোষগুলো খুব নাজেহাল হয়ে পড়ে।
সম্প্রতি মাসাকি দেখালেন, স্নায়ু কোষে কেবল আস্তানা বানিয়েই কুষ্ঠের জীবাণুরা থেমে থাকেনা। এদের লক্ষ্য যে স্নায়ুর বিশেষ কোষ (নিউরণ নয় কিন্তু। শোয়ান কোষ। গ্লিয়া বলে এদেরকে। শোয়ান কোষের আসল উচ্চারণটা হবে 'শ্ভান'-এর মত।) সেই কোষের কিছু জিনের কাজে বাধা দিয়ে আর অন্যকিছু জিনের কাজে তাড়া দিয়ে, কোষটাকে বদলে ফেলে। কোষের কিছু জিনে খোঁচাখুঁচি করে সেটাকে বদলে ফেলা যায়, সে মানুষে আবিষ্কার করেছে মাত্র কয়েক বছর। আর মানুষের কুষ্ঠ হচ্ছে অন্তত ৪ হাজার বছর ধরে।
বিজ্ঞানে ব্যাকটেরিয়ার কাছে মানুষ ৪ হাজার বছর পিছিয়ে রয়েছে' বললে আপনারা কেউ কি আমার নামে মানহানির মামলা করবেন?
সাধারণ ব্যাকটেরিয়া কোষের ভেতরে ছানাপোনা দেয়া ছাড়া আর বিশেষ কিছু করে না। শোয়ান কোষে কুষ্ঠের জীবাণুরাও সবার মত ছানাপোনা দিতে পারে। কিন্তু এরা আরো যেটা পারে সেটা হচ্ছে ওই কোষকে বদলে 'স্টেম সেল' বানিয়ে ফেলতে পারে (আসলে স্টেম সেলের মত কোষে বদলে নিতে পারে)। 'স্টেম সেল', মানে 'স্টেম কোষ' কী জিনিস সে তো আপনারা জানেনই। স্টেম সেল হচ্ছে শরীরের সব কোষের প্রাথমিক অবস্থা। ময়দা যেমন রুটি-বিস্কুট-কেকের প্রাথমিক অবস্থা, সেরকম। শোয়ান কোষকে স্টেম সেলে বদলে নিতে পারলে তখন কুষ্ঠের ব্যাকটেরিয়াদের মানুষের শরীরের ভেতরে টগবগিয়ে চলতে খুব সুবধা হয়। স্টেম সেলকে শরীরের রক্ষী কোষেরা কিছু বলে না। তারা তো আর জানেনা ওই স্টেম সেলের পেটের ভেতরে রয়েছে কুষ্ঠের জীবাণু! কুষ্ঠের জীবাণুওয়ালা স্টেম সেল পেশীর ভেতরে গিয়ে পেশী-কোষে রূপান্তরিত হতে পারে।
সেই যে বলছিলাম, মাইকোব্যাকটেরিয়াম বংশের দুই জীবাণু শরীরের রক্ষী কোষেদের ভেতরে গিয়ে বাসা বাঁধতে পারে। এরা হচ্ছে যক্ষা আর কুষ্ঠের জীবাণু (আরো হয়তো অনেকেই পারে, আমার জানা নেই)। স্টেম সেলের ভেতরে থাকা কুষ্ঠের জীবাণুদের জন্য রক্ষী কোষের পেটে ঢোকা খুব সহজ হয় যায়। পেটের ভেতরে কুষ্ঠের জীবাণু ভরা স্টেম কোষেরা নাকি শরীরের বিশেষ রক্ষী কোষ, যারা জীবাণু ধরে গিলে খায় (ম্যাক্রোফেজ), তাদেরকে সংকেত দিয়ে ডেকে আনতে পারে। স্টেম সেলের বার্তা পেয়ে নাচতে নাচতে কাছে আসা রক্ষী কোষেদের তখন কুষ্ঠের জীবাণুরা চলমান ফ্ল্যাটবাড়ি হিসেবে ব্যবহার করে।
আমি মহামূর্খ। কিন্তু তবুও ধারনা করি কুষ্ঠের জীবাণু ভরা স্টেম সেল কেবল পেশী কোষ নয়, আরো অনেক কিছুতে বদলে যেতে পারে, যায়। আরো হয়তো অনেক জীবাণু এরকম মানুষের শরীরের কোষেদের বদলে নিতে শিখেছে। অনেকেই হয়তো কুষ্ঠের জীবাণুদের কাছ থেকে শিখবে। কুষ্ঠের জীবাণুরা হয়তো আরো শতেক কাজ করতে পারে মানুষের কোষকে নিয়ে। আরো অনেক জীবাণু হয়তো কুষ্ঠের জীবাণুর কাছ থেকে প্রয়োজনীয় জিন নিয়ে তাদের মত যাদু শিখে যাবে।
আমরা শুধু কখনো শিখবনা, মানুষকে মেরে ফেলার যথেষ্ট উপায় এমনিতেই রয়েছে, মানুষকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করা দরকার! আমরা কেবল গায়ের জোরে নিজেদের বুদ্ধিমান প্রাণি বলে দাবী করতে থাকবো।
মানুষ নামের প্রাণিটা হাস্যকর রকমের নির্বোধ!
যারা এই বিষয়ে বৈজ্ঞানিক খুঁটিনাটি জানতে চান তারা তোশিহিরো মাসাকি'র গবেষণাপত্র পড়ে ফেলুন: http://www.cell.com/retrieve/pii/S0092867412015012
যারা তোশিহিরো মাসাকির গবেষনার উপর একটা বৈজ্ঞানিক আলোচনার মত পড়তে চান তারা পড়ুন মিশাইল ভেগনেয়ারের এই লেখাটি: http://www.sciencedirect.com/science/article/pii/S0092867413000020
সাধারণ কোষকে স্টেম সেল-এ বদলে নেয়া বিষয়ক আবিষ্কার এবং নোবেল পুরষ্কার পাওয়ার গল্পটি বিস্তারিত লিখেছিলাম। ইচ্ছে হলে পড়ুন এখানে: চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরষ্কার ২০১২: জাদুকরী কোষ, কোষের জাদুকর
[এই লেখাটির জন্য হিমু ভাইয়ের কৃতজ্ঞতা পাওনা। উনি নজরে না আনলে হয়তো এই অসাধারণ গবেষণাপত্রটা নজরে আসত না। এত মুগ্ধ হওয়া হতনা। এই লেখাটাও লেখা হতনা।]
ব্যক্তিগত ব্লগে প্রকাশিত।
মন্তব্য
ভাই এমনিতেই মানবজন্ম নিয়া কাহিনীর মধ্যে আছি, খালি মনে হয় সুইসাইড খাই। তারপর আবার ব্যাক্টেরিয়া দিয়া অপমান করান !!!
লেখাটা ভালো হইছে, আমি বায়োলজিতে ক-অক্ষর গোমাংস। তারপর অনেক কিছু বুঝলাম। ধইন্যা পাতা।
ভাই একটা আইডিয়া, ধরেন একটা ব্যাক্টেরিয়া কি বানান যায়না যেইটা খারাপ লোকের ব্রেন সেল চেন্জ কইরা ভালো মানুষ বানাইয়া দিবো কিংবা অলস মানুষরে অনু তারেক.... টাকা পয়সা যা লাগে দিমুনি...
ব্যাকটেরিয়া টাকাপয়সা পাত্তা দেয় বলে শুনিনি। কিছু ব্যাকটেরিয়া আছে টাকা খেতে পারে, এদেরকে বলে দেখেন।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
অনেক কঠিন বিষয় (আমার কাছে!) অনেকটা সহজ করে তুলে এনেছ। লেখাটা পড়ে যা বুঝলাম আমার নিজের শরীরের ভিতরেই একটা আস্ত জগত আছে সেখানেও বেচেঁ থাকা, বাচিঁয়ে রাখা বা ক্ষমতার জন্য সারাক্ষন কোন না কোন যুদ্ধ পরিচালনা হচ্ছে। যেখানে রক্ষাকারী সিপাহির পাশাপাশি ভোল পাল্টানো রাজনীতিক’রা (যক্ষার ব্যাকটেরিয়া) বসবাস করে ও অহর্নিশ ধ্বংস যজ্ঞ চালিয়ে যায়!
এ বিষয়ে আরো লেখা চাই’রে অনুজীব
........................................................................................................
সব মানুষ নিজের জন্য বাঁচেনা
ধন্যবাদ কল্পনা'দি
এই লেখাটি কিন্তু কুষ্ঠের জীবাণু, Mycobacterium leprae'র কার্যকলাপ বিষয়ক
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
এরর খাইলাম
Warning: in_array() expects parameter 2 to be array, string given in mollom_validate_analysis() (line 1709 of /www/sachalayatan/s6/sites/all/modules/mollom/mollom.module).
মডুদেরকে মেইল করে দেখুন। অথবা কিছুক্ষণ পর আরেকবার চেষ্টা করে দেখুন।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
হায়! হায়!! তুমি ব্যাক্টেরিয়ারে সর্বশক্তিমান কইলা!?! তোমার তো কবীরা গোনাহ্ হইবো। এখনও সময় আছে, তাগুত আর বাতিলের পথ ছাইড়া সিরাতুল মোস্তাকীমের পথে আসো।
* * * * * * * * * *
প্রথম বইঃ অণুজীবের পৃথিবী
দ্বিতীয় বইঃ স্টেম সেল দিয়ে স্টান্টবাজি
তৃতীয় বইঃ নিজের শরীরটাকে চিনি, সুস্থ থাকি
চতুর্থ বইঃ ব্যাক্টেরিয়া ভয়ঙ্কর, ভাইরাস ভয়ঙ্করতর
পঞ্চম বইঃ গল্প সঞ্চয়ন
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
হায় হায়, এতকিছু ভেবে তো শিরোনাম দেইনি! খবরাছে মনে হচ্ছে
আপনার মন্তব্যের দ্বিতীয় অংশটা আপনার সিগনেচার ভেবেছিলাম প্রথমে!
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
- এসব কথায় চিঁড়ে ভিজবে না। আমি যা বলেছি সেটা তুমি ভালোভাবেই বুঝেছ।
কয়েক বছর আগে তোমার প্রথম বইয়ের নাম চেয়েছিলে - সেদিন দিতে পারিনি। আজকে পরের চারটি বইয়ের নাম দিয়ে দিলাম। এখন কাজে লেগে পড়ো।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
জোর সহমত জানাইলাম!!
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
এইপাড়ে আমি যক্ষার ওষুধ গিলছি। ডাক্তারের দাবীমত আমার শরীরে কোটি কোটি যক্ষার জীবাণু ঘাঁটি গেড়ে বসে আছে, তাই দু'মাস ধরে বিচ্ছিরি কিছু ওষুধ খেতে হচ্ছে। তবে এটা ছোঁয়াচে কিছু না আর ডরম্যান্ট। যক্ষার জীবাণুদের কুকীর্তি পড়তে বেশ লাগল।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
আপনি নিশ্চয়ই জানেন এবং বোঝেন তবুও মনে করিয়ে দেই, কোন কারণে কোনভাবেই ওষুধ খাওয়ার নিয়মের ব্যতিক্রম করবেন না। ওষুধের কোন ডোজ ভুল করবেন না। এবং যতদিন (সম্ভবত কয়েকমাসের ওষুধ দিয়েছে) ওষুধ খেতে হয় ঠিকঠিক ততদিন ওষুধ খাবেন। যক্ষার জীবাণুদের মত ওষুধ সহনশীল জীবাণু বিরল!
প্রসঙ্গত, আমার এই লেখাটি কিন্তু কুষ্ঠের জীবাণু Mycobacterium leprae'র কান্ডকারখানা বিষয়ক, যক্ষার জীবাণুর নয়।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
হ্যাঁ, টাইট শিডিউল। যক্ষাও ব্যাকটেরিয়া ঘটিত রোগ বলে ব্যাকটেরিয়া বললেই এখন নিজের কথা মাথায় আসে।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
এইরকম ডরম্যান্ট যক্ষার কবলে আমিও পরছিলাম। লিম্ফনোড ডাইসেক্ট করে যক্ষার জীবাণু পাওয়া গেছে। ৬ মাসের কোর্স। মোটা মোটা লাল রংয়ের ট্যাবলেট। প্রথমদিন ওষুধ খেয়ে বাথরুম গিয়ে দেখি "লালে লাল দুনিয়া, আম্মা তেরা খুন কিয়া খুনিয়া"। যেই ডর পাইসিলাম!! পরে মনে হইল "ডরাইলেই ডর, হান্দায়া দিলে কিয়ের ডর"।
তয় যক্ষার একটা ভালো সাইড এফেক্ট আছে। তাড়াতাড়ি ওজন কমায়ে দেয়। আমার ওজন ৭৫ থেকে ২ মাসের মাথায় ৬১ তে নেমে আসছিল। যেটা আমি ৩ বছর চেষ্টা করেও পারি নাই। কারো যদি তাড়াতাড়ি ওজন কমানোর ইচছা থাকে যক্ষা বাধায়ে দেখতে পারেন। তবে নিজ দ্বায়িত্বে করবেন। আমারে কিন্তু দোষ দিতে পারবেন না কইলাম!!!
- কাজী
চমৎকার
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
ধন্যবাদ
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
শিক্ষার প্রধান উদ্দেশ্য জ্ঞানের প্রতি মানুষকে আকৃষ্ট করা, ভয় পাওয়ানো নয় এইটা আমাদের পাঠ্যবইএর বিজ্ঞান লেখকগণ যত তাড়াতাড়ি বুঝবেন ততই আমাদের জন্য মঙ্গল। আপনার ভাষায় যদি পাঠ্যবই লেখা হতো কি চমৎকার একটা ব্যাপারই না হতো।
লেখায়
ফারাসাত
ধন্যবাদ
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
পাঠ্যবইয়ের কাঠখোট্টা ভাষায় লিখা বিজ্ঞান পড়েই হয়তো উনি এতো সুন্দর লিখার অনুপ্রেরণা পেয়েছেন।
এই লেখাগুলোকে স্কুলের পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত করার জোর দাবী জানাই। অন্ততপক্ষে একস্ট্রা রিডিং এসাইনমেন্ট হিসেবেও যদি পুশ-ইন করা যায় ... ... ...
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
ধন্যবাদ শামীম ভাই।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
অসাধারণ!
মানুষ হয়েও ব্যাকটেরিয়ার জয়ধ্বনি তোলা এ লেখায় কোন প্রতিবাদ করলাম না - আমরা তো আবার গায়ের জোরে শ্রেষ্ঠ
পান্ডব দা'র নসিহত মনে রেখে চললে বহুত ফায়দা
ধন্যবাদ।
নির্বোধ হলে নানারকম ফায়দা আছে। হইতে পারতেছি না। এইটাও বোধহয় একরকমের নির্বুদ্ধিতা
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
আপনি আসলে ব্যাকটেরিয়া
__________________
জানি নিসর্গ এক নিপুণ জেলে
কখনো গোধূলির হাওয়া, নিস্তরঙ্গ জ্যোৎস্নার ফাঁদ পেতে রাখে
ধন্যবাদ
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
মনটা একটু খারাপ হয়ে গেল। চিন্তা করছিলাম জিনতত্বের নতুন কিছু একটা আবস্কার করে ফেলবো, কিন্তু ব্যাটেরিয়ারা দেখি অনেক আগেই সেসব করে রেখেছে।
আব্দুল্লাহ এ.এম.
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
কি কারবার!! পড়ে মজা পেলাম।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
অসাধারণ
অন্য রোগের ব্যাকটেরিয়াগুলোরে নিয়েও লেখা যায় না ?
ডাকঘর | ছবিঘর
ধন্যবাদ।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
ছিলো রুমাল, হয়ে গেলো একটা বেড়াল
তারপর গেছোদা'র মত ছুটে বেড়াতে লাগল...
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
এই ধরনের জিনিষ এত সহজ করে লেখার জন্য আপনি প্রশংসার দাবিদার
------------
'আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !
ধন্যবাদ
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
বিজ্ঞান মাথায় ঢোঁকে কম তারপরও লেখাটি অনেক কিছু অনেক সহজভাবে বোঝাল। ধন্যবাদ অনার্য দা।
ধন্যবাদ আপনাকেও
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
অসাধারন আপনার ভাষা।
এত সহজ ভাবে লিখলেন, দারুন লাগল।
অনেক ধন্যবাদ
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
আ ! এইটা কি বলেন, পুরাই আউলা ঝাউলা।
কোন আন-কমন বিষয়কে সহজ করে বোঝাবার আপনার নিজস্ব এই তরিকা, বড়ই মনোহর।
ধন্যবাদ
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
অসাধারণ লেখা।
আহা,আগে যদি কেউ এত সহজে সুন্দর করে বিষয়গুলো বুঝাই দিত!
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
ধন্যবাদ
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
প্রথমে বলতে চাচ্ছিলাম যে ব্যাকটেরিয়াকে নোবেল দেয়া হোক, পরে ভাবলাম মানুষকে দেয়া মানে তো ব্যাকটেরিয়াকেই দেয়া! লেখা ভাল লাগল।
ধন্যবাদ
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
লেখা পইড়া কথা হারায়া গেছে।
_____________________________________________________________________
বরং দ্বিমত হও, আস্থা রাখো দ্বিতীয় বিদ্যায়।
ধন্যবাদ
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
মানুষকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য কত রকম কাজ করার আছে...কিন্তু কর্তাদের সময় কোথায় এসব ভাবার ? এখনো ডায়রিয়া, ম্যালেরিয়াতে, অনাহারে কত অজস্র শিশু মারা যায়, কিন্তু বোমারু বিমান বানানো বন্ধ হয় না ।
বিজ্ঞানের কঠিন কথা সহজে বলার কারনে ভাল লেগেছে ।
__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার
ধন্যবাদ
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।
ধন্যবাদ
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
অসাধারণ একটা লেখা। আপনার বিজ্ঞানের লেখাগুলো এত সাবলিল হয় যে গল্পের মত পড়ি। লেখাটা পড়েছি আইফোন থেকে গতকাল। আজ শুধু কমেন্ট করতে পিসি থেকে লগইন করলাম। এ ধরনের লেখা বোধহ এভাবেই আকর্ষণ করে।
টুইটার
ধন্যবাদ নিয়াজ ভাই
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
বাপরে, কি অবস্থা !!
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
শিরোনাম দেখে ডরাইছিলাম। কিন্তু পড়তে গিয়ে শিহরিত হইলাম!! আমার শরীরে আমি মাত্র ১%!!!
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
বনি ব্যসলার ওরকমই বলেন!
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
হিউম্যান জেনেটিক্স ছেড়ে ব্যাকটেরিয়া জেনেটিক্সে চলে যাওয়া উচিত বলছেন?
আর কত দৌড়াদৌড়ি করবেন! এইবার হাউজ পলিটিক্সে গিয়ে থিতু হন
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
নতুন মন্তব্য করুন