স্বাধীনতার বিরোধিতা করার পরেও উগ্র মৌলবাদী ধর্মভিত্তিক সংগঠন জামায়াতে ইসলামী এই দেশে রাজনীতি করে। এই রাষ্ট্র ধর্মনিরপেক্ষ হওয়ার পরেও কেবল সাধারণের ধর্মীয় অনুভূতি, ধর্মের প্রসঙ্গে মানুষের দূর্বলতাকে পূঁজি করে রাজনীতির মাঠে টিকে থাকে এই দল। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে পরিকল্পণা করে অগনিত বুদ্ধিজীবি হত্যাকারী সংগঠন ছাত্র শিবির (তৎকালীন 'ইসলামী ছাত্র সংঘ') এই দলেরই অংগসংগঠন। কিন্তু ইতিহাসের নৃশংসতম গণহত্যার ইতিহাস নিয়েও ধর্মভিত্তিক উগ্র মৌলবাদী রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামী এবং তাদের ছাত্রসংগঠন শিবির কীভাবে একটি স্বাধীন গণতান্ত্রিক দেশে রাজনীতি করছে সেই প্রসঙ্গে এই লেখাটি নয়।
ধরে নেই, কোন অজানা কারণে জামায়াতে ইসলামী এবং ছাত্রশিবিরের রাজনীতি এই দেশে সিদ্ধ। সেই হিসেবে,গণতান্ত্রিক দাবী আদায়ের লক্ষ্যে তাদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ, মিছিল, প্রতিবাদও সিদ্ধ এবং গ্রহনযোগ্য। কোন রাজনৈতিক দলের অংশ না হয়ে সাধারণের জন্যেও এসব গণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু সেই গণতান্ত্রিক অধিকারের সীমা কতটুকু?
খুঁজে দেখার প্রয়োজন পড়েনি। সকল যুক্তিতেই জামায়ার শিবির তাদের সকল গণতান্ত্রিক অধিকারের সীমা ছাড়িয়ে পরিকল্পিতভাবে দেশে নৈরাজ্য তৈরি করছে, হত্যা করছে, ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম পরিচালনা করছে, সাধারণের ভেতর আতঙ্ক তৈরি করছে। [১] [২] [৩] [৪] [৫] [৬] [৭] [৮] [৯] [১০] [১১] [১২] ...
জামায়াত শিবির উগ্র ধর্মীয় মৌলবাদী দল। তাদের কার্যক্রম যে ঠিকঠিক গণতান্ত্রিক হবেনা সেটি বুঝতে পারা যায়। কিন্তু সে যে দলই হোক, গণতান্ত্রিক অধিকারে সীমা ছাড়িয়ে গেলে তাদেরকে প্রতিহত করার জন্য সরকারের রয়েছে আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা। দূর্ভাগ্যজনকভাবে গত কয়েক সপ্তাহে সারা দেশে জামায়াত শিবিরের নৈরাজ্য বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়াতো দূরে থাক বরং আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদেরকেই নাজেহাল হতে দেখা যাচ্ছে জামায়াত শিবিরের সন্ত্রাসীদের হাতে।
জামায়াত শিবির (বিশেষত শিবিরের প্রশিক্ষিত ক্যাডাররা) সারা দেশে গত কয়েকদিনে যে নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছে সেটি ঠেকাতে প্রশাসন কেন ব্যর্থ তা বুঝতে কষ্ট হচ্ছে। শিবির বরং অভিনব কৌশলে নৈরাজ্য বহাল রাখছে। তারা পথচারীর বেশে হামলা করছে, চোরাগোপ্তা হামলা করেছে, বোমা ইত্যাদি অস্ত্র নিয়ে হামলা করেছে, প্রশিক্ষিত ক্যাডার বাহিনী দিয়ে হামলা করেছে, পরিকল্পনা করে আচমকা একটি এলাকায় একযোগে হামলা করেছে! জামায়াত শিবিরের সন্ত্রাসের হাত থেকে রক্ষায় পাচ্ছেনা আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও।
প্রশ্ন হচ্ছে, কোন দল/গোষ্ঠীর সন্ত্রাসী কার্যক্রম কেন আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো প্রতিহত করতে পারছে না! কেন আমরা দেখছি আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাই হামলার মুখে পড়ছে? এই গোষ্ঠী কি এতই শক্তিশালী যে রাষ্ট্র তাদেরকে প্রতিহত করতে অক্ষম? কতটা শক্তিশালী শিবিরের ক্যাডাররা? কতটা প্রশিক্ষিত?
যদি শিবিরের সদস্যরা সন্ত্রাসের জন্য এমনভাবে প্রশিক্ষিত হয়ে থাকে যে এই দেশের আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোও তাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করতে অক্ষম তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে গোয়েন্দাদের নজর এড়িয়ে কীভাবে এরা এভাবে বেড়ে উঠল? আমাদের গোয়েন্দা বাহিনীর কাজ কী? তারা তাদের দ্বায়িত্ব পালনে কেন ব্যর্থ?
শিবিরের অব্যহত সন্ত্রাসের জবাবে গত কয়েকদিনে শক্ত অবস্থানে যাওয়ার কথা শোনা যাচ্ছে সরকারী দলের কাছ থেকে। আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর দুয়েকজন কর্তাব্যক্তিও কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার কথা বলেছেন। কিন্তু এসব ফাঁকা বুলি বলেই মনে হচ্ছে। সরকারী দল আওয়ামী লীগ এবং শরিক দলগুলো জামায়াত শিবিরকে রাজনৈতিকভাবে কীভাবে প্রতিহত করবে সেটি তাদের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। এমনকি জামায়াত শিবিরের মত সংগঠনের ক্ষেত্রেও সেই সিদ্ধান্ত অগণতান্ত্রিক হবেনা সেটাই আশা করি। কিন্তু সরকার নিজে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাহায্যে জামায়াত শিবিরের অব্যহত সন্ত্রান দমনে যে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে সেটি কোনভাবেই গ্রহনযোগ্য নয়। একটি স্বাধীন দেশের সরকারের জানা উচিত দেশের অভ্যন্তরের রাজনৈতিক/অরাজনৈতিক সংগঠনগুলো নৈরাজ্য সৃষ্টির কোন আয়োজন করছে কিনা। যদি আয়োজন করে থাকে তবে তা বাস্তবায়নের আগেই প্রতিহত করাও সরকারের দায়। এইক্ষেত্রে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর দূর্বলতা দেশের নাগরিক সাধারণকে আতঙ্কিত করে।
একই সঙ্গে জামায়াত শিবিরের সন্ত্রাস দমনে আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর অকৃতকার্যতা বিভিন্ন বাহিনী এবং প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে জামায়াত শিবিরের অবস্থানের কথা জানান দেয়। জামায়াত শিবির এই দেশটিকে তাদের প্রভূ পাকিস্তানীদের করায়ত করে রাখতে ব্যর্থ হওয়ার পর থেকেই তাদের দ্বিতীয় পরিকল্পনা হিসেবে বাংলাদেশকে আরেকটি পাকিস্তান বানানোর প্রচেষ্টায় লিপ্ত। প্রশাসন এবং রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন বাহিনীর রন্ধ্রে রন্ধ্রে খুঁটি গেড়ে বসার দীর্ঘ মেয়াদী আয়োজনও সেই প্রচেষ্টার অংশ। আজকে এতদিন পরে এসে তাদের সেই আয়োজনের সুফল তারা পাচ্ছে কিনা সে কে বলবে!
দূর্ভাগ্যজনকভাবে এই মুহূর্তে অনেক বাক্যব্যয় করে, সময় নিয়ে জামায়াতের আয়োজনের শেকড় খুঁজতে যাওয়ার অবস্থানে আমরা নেই। বাংলাদেশ তো আর কোন উগ্র জামায়াত শিবির গোষ্ঠীর কাছে পরাজিত হতে পারে না। বিশেষত, এই গোষ্ঠী যখন এই দেশের অগণিত সন্তানের হত্যাকারী আর এই দেশের স্বাধীনতার বিরোধীদের রক্ষা করতে সচেষ্ট! এই সময়ে তাই দ্রুত এবং কার্যকরী উপায়ে জামায়াত শিবিরের সন্ত্রাস-নৈরাজ্য বন্ধ করতে হবে সরকারকেই। হিংসাত্মক কাজের তাদের সকল বর্তমান এবং ভবিষ্যত আয়োজন বন্ধ করতে শক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে। এবং এই পরিস্তিতি সামলে উঠে প্রথম সুযোগেই একটি স্বাধীন দেশের গণতন্ত্রীয় শাসন উপেক্ষা করার দুঃসাহস তারা কীভাবে দেখায় সেটিও খুঁজে বের করতে হবে।
আর সব আয়োজনের পরে জামায়াত শিবির এবং সকল ধর্মভিত্তিক মৌলবাদী সংগঠন/গোষ্ঠীকে এই দেশের রাজনীতিতে নিষিদ্ধ করতে হবে। কারণ, সরকার জামায়াতকে প্রতিহত করতে দারুণভাবে সফল হলেও সে কেবল সাময়িক সমাধান হয়ে দাঁড়াবে যদি উগ্রমৌলবাদী এইসব গোষ্ঠী এবং এর অংগসংগঠনসমূহ বাংলাদেশে রাজনীতি করার সুযোগ পায়। বিদেশী শক্তি আর অর্থে লালিত মৌলবাদী গোষ্ঠীগুলোকে অবাঞ্চিত করার এই কাজে দীর্ঘ রাজনৈতিক আয়োজনের প্রয়োজন হয়ত হতে পারে। কিন্তু সেই দায়ও মুক্তিযুদ্ধ এবং ধর্মনিরপেক্ষতার পক্ষের সকল দল-গোষ্ঠী-ব্যক্তিকে নিতে হবে। এই দায় পূরণের সময় আমরা যত পিছিয়ে দেব, ততই এইসব উগ্র মৌলবাদী গোষ্ঠী শক্তিশালী হয়ে উঠবে। মৌলবাদী গোষ্ঠীর শক্তিশালী হয়ে ওঠা যে বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক কিছু নয় সে তো এই দেশের প্রতিটি মানুষ এখন উপলব্ধি করছেন জামায়াত শিবিরের নৈরাজ্য থেকেই!
মন্তব্য
ধর্শনিরপেক্ষতা -> ধর্মনিরপেক্ষতা
--------------------------------
বানান ভুল থাকলে ধরিয়ে দিন!
ডুপ্লি______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
ধন্যবাদ। ঠিক করলাম।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
(Y)
লীগ কেন নিষিদ্ধ করতে পারছে না, সেটা আলোচনার বিষয় । রাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাস (এখানে অনেকে ৭১ থেকেই শুরু করেন, যেটা মারাত্বক ভুল।) পর্যালোচনা করলে যা দেখি তাতে নিষিদ্ধ করা অত্যান্ত বিপদজনক। আর আমি চাইও না জামাতকে নিষিদ্ধ করতে । কারন এখন অন্তত আঙুল তুলে দেখাতে পারি ছোট বাচ্চাদের বলতে পারি "এরা খারাপ,এদের থেকে দূরে থাকো"। নিষিদ্ধ হলে সেটা আর পারা যাবে না। এরা সব দলে ছড়িয়ে যাবে।
জামায়াত শিবির আর জেএমবি'র মধ্যে তো আনঅফিশিয়ালি কোন পার্থক্য নেই! উগ্র ধর্মান্ধ মৌলবাদকে কোন সুযোগ দেয়ার উপায় নেই!
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
জেএমবি’র পৃষ্ঠপোষক ছিলো জামাত, সেটা জেএমবি’র লোকজন বিভিন্ন সময় স্বীকার-ও করেছে।
আমাদের দেশে সামরিক সমস্যার সমাধান রাজনৈতিকভাবে (যেমন, বিডিআর বিদ্রোহ দমন) ও রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান সামরিকভাবে (যেমন, পার্বত্য চট্টগ্রাম) করার খারাপ উদাহরণ আছে। দেশের সাধারণ মানুষের জানমাল, দেশের স্বাধীনতা-সাবভৌমত্ব এসব যখন হুমকির মুখে পড়ে তখন নিরাপত্তাবাহিনীকে কঠোর অবস্থানে যেতে হবে। এটি রাজনৈতিক সমস্যা নয়।
রাজনৈতিক সরকার হোক আর সামরিক সরকার হোক, কোন সরকারের আমলেই ইসলামী মৌলবাদী দল ও জঙ্গী গোষ্ঠীগুলোর ব্যাপারে নিরাপত্তাবাহিনী কঠোর কোন পদেক্ষেপ নেয়নি। ক্রসফায়ার-এনকাউন্টারের বৈধতার বিতর্কে না গিয়েই বলা যায় এতে পালে পালে উগ্র বাম, স্বল্প সংখ্যায় আওয়ামী লীগ-বিএনপি ক্যাডার নিহত হলেও জামায়াত-শিবিরের কেউ নিহত হয় না। একইভাবে অপারেশন ক্লিনহার্ট, অপারেশন স্পাইডারওয়েবের মতো বিশেষ অভিযানেও জামায়াত-শিবির নিরাপদ থাকে। চার উদ্দীনের সরকারের সময় জামায়াত-শিবিরের কেউ গ্রেফতার হয়নি, দুদক তাদের বিরুদ্ধে কোন অনিয়ম খুঁজে পায়নি। জামায়াত-শিবিরের কর্মীরাও গর্ব সহকারে এইকথা বলে। এটা নেহাত বিচ্ছিন্ন কোন ঘটনা নয়। পুলিশের ওপর ক্রমাগত হামলার পাশাপাশি পুলিশের একাংশের নিষ্ক্রিয়তাও লক্ষণীয়। এই নিষ্ক্রিয়তাকে অবহেলা করলে একসময় ১৭৫৭-এর জুন মাসের মতো নিষ্ক্রিয়তাও দেখতে হতে পারে। আজকের সকল অবহেলা, উপেক্ষাকে আগামীকাল জীবন দিয়ে শোধ করতে হতে পারে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
ঠিক এই আতঙ্কটাই পেয়ে বসেছে :(
অজ্ঞাতবাস
আইনপ্রয়োগকারিদের নিষ্কৃয়তা চোখে দেখা যায়। কিন্ত বাংলাদেশের স্থায়ী শাসনযন্ত্র মানে আমলাতন্ত্র, যেটা চোখে পড়েনা, কিন্তু বিচার ও আইনপ্রয়োগের ওপরে যাদের গভীর ও কার্যকরি অনুভাব আছে, জামাত-জঙ্গীবাদ-যুদ্ধপরাধ প্রশ্নে এদের প্রকৃত অবস্থান নিয়ে কথা বলা জরুরী হয়ে পড়েছে।
আমরা দেখেছি সরকার জামাতের সাথে পুলিশের স্থানীয় প্রশাসনের সখ্যতাকে উচ্চপদের কর্মকর্তা বদলী করে প্রতিহত করতে সচেষ্ট হতে। কিন্তু মন্ত্রনালয়-সচিবালয়ে জামায়াত-সমর্থন প্রতিহত করতে আম্লকির কার্যক্রম পরিস্কার নয়। বরং আমরা ইমাম-মখা-চৌফিকদের জুমার নামাজের খুতবার মত কথা বলতে দেখি। ৯০ এর দশকে বাংলাদেশী প্রশাসন (পররাষ্ট্র) এর খুবই সীমিত অভিজ্ঞতায় দেখেছি, বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্য করতে বিদেশে যারা যায়, তাদের অনেকেই বাংলাদেশকে টুপি-দাঁড়ী সম্বলিত ধর্মভীরু আই-ও-সির ও পাকিস্তান ও সৌদিদের সাথে প্রান্তিককৃত পরিচয় দিতে অভ্যস্থ - ঢাকা থেকে তাদেরকে এভাবেই নিজেদের পরিচয় দেবার প্রশিক্ষণ ও নির্দেশ দেয়া হত। আমাদের দেশের আমলাতন্ত্রের বয়োজ্যেষ্ঠ একাংশ বাংলাদেশের স্বাধীনতায় নাখোশ, এদের একাংশ ৭১ এ পাকিস্তানের শাসন জারী রেখেছিল, এদের অনেকেই জিয়ার হাত ধরে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করেছিল, রাজনৈতিক ক্ষমতার আসনে যারাই গিয়ে বসুক, প্রশাসনিক অদলবদল আনুক, পাকিস্তান প্রশিক্ষিত ও পাকিস্তানতন্ত্রে অভ্যস্থ এই দলটি কিন্তু অবিরত থেকে গেছে ক্ষমতায়। এদের অনেকের 'বেস্ট ফ্রেন্ড' রা এখনো ইস্লামাবাদ সরকারের আমলা।
এদের মধ্যকার সবচাইতে ভয়ঙ্কর আমলাগুলোকে উপদেষ্টা হিসাবে ক্ষমতাশীল দলের প্রধানমন্ত্রীর সমান্তরাল ক্যাবিনেট চালাতে দেখা যায়। পুলিশ-বিচার-প্রশাসনের জামায়াতপ্রেম দশকের পর দশক ধরে চালু রাখতে এই দলটার একটা ভুমিকা আছে বলে আমার সন্দেহ হয়।
(Y)
অজ্ঞাতবাস
সঠিক যায়গায় আলো ফেলেছেন। রাজনৈতিক নেতারা গালি খায় (তারাও দোষী অবশ্যই); কিন্তু আমলারা চাদরের নিচে থেকে আকাম চালিয়ে যায়। সরকার পরিবর্তনের সাথে সাথে আকামের তীব্রতায় পরিবর্তন এলেও ধরনে ও মূলে পরিবর্তন আসে না।
সাথে যোগ করা যায়, আজকের সুশীল আগামীকালের আমলা।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
(Y)
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
(Y)
আমলাতন্ত্র যতটা নিয়ন্ত্রণ করে তার বাইরেও তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী যে সমিতিগুলো আছে বিভিন্ন অধিদপ্তরে কিংবা মন্ত্রণালয়ে তার ভেতর জামাত ভয়ংকর শক্তিশালী। সবাই ধরে নেয় জামাত খালি চোখে দেখা যায়, ঘাপটি মারা জামাতরা প্রকাশ্যে জামাতের সমালোচনা করে এসেছে আমাদের চাইতে বেশি --- সময়ের সাথে সাথে চারিদিকে এইযে নেপথ্যে থেকে জনপ্রশাসন এর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে জামাত তার দায়ভার রাজনৈতিক নেতাদের পাশাপাশি মন্ত্রণালয়ে বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় নিয়োগ পাওয়া লোকজনকে’ও নিতে হবে।
আমলাতন্ত্র ব্রিটিশ প্রেতাত্মার উপর ভর করে দাঁড়িয়ে আছে, কোন সংস্কার নেই, সংস্কার করা প্রয়োজন, শুধুমাত্র ডিজিটাল পদ্ধতির প্রবর্তন করে হবেনা, আমূল সংস্কার প্রয়োজন।
এই বিষয়ে একটা চিঠির কপি ফেসবুকে ঘোরাঘুরি করছে - সেটার গুরুত্ব আছে।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
চিঠিটার লিঙ্ক দিতে পারেন দিগন্তদা?
এইখানে দেখুন।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
দীর্ঘ পরিকল্পনা-আয়োজনের সুফল এরা ভোগ করছে। এই অবস্থার পরিবর্তন না করতে পারলে সরকার যেটাই ক্ষমতায় থাকুক, বাংলাদেশের খবর আছে!
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
(Y) (Y)
আমলাদের কেউ কেউ সেল ফোনের কলার টিউন পর্যন্ত পাল্টে ফেলেছে- "যদি রাত পোহালেই শোনা যেতো..."
জামাত শিবিরের বর্তমান কার্যক্রম সম্পর্কে বিএনপি'র অবস্থানকে আলোচনার বাইরে রাখছেন কেন? পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন মূল্যবোধের বিপক্ষে যে আক্রমন চলছে বিএনপি তার প্রধান নেতা, জামাত সহযোগী। টিভি টক শো গুলোতে বিএনপি নেতারা এই ইস্যুতে প্রকাশ্যেই জামাতকে ডিফেন্ড করছে। আমেরিকার পত্রিকায় খালেদার নামে প্রচালিত নিবন্ধটিও এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য। পরিস্থিতি যে দিকে যাচ্ছে, জামাত নিষিদ্ধ হওয়া এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র, কিন্তু মিলিয়ন ডলার কোশ্চেন হলো হোয়াট ইজ নেক্সট?
আব্দুল্লাহ এ.এম.
জামাতের নৈরাজ্যই প্রমাণ করে তারা "সেই সময়" কি ভূমিকায় ছিলো।
জামাত-শিবিরের নৈরাজ্য রুখতে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিরবতা কতটা স্বেচ্ছায় আর কতটা উপরের নির্দেশনা নির্ভর, সেটা জানা প্রয়োজন।
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
জামাত শিবির নিষিদ্ধ করার দাবীটা জোরালো করা যায় কিভাবে?
দৃশ্যতঃ তেমন কোন আন্দোলন বা চাপ নেই সরকারের উপর - সবাই কেমন যেন চাচ্ছেন মনে মনে - পত্রিকা / প্রাইভেট চ্যানেল্গুলো দায়সারা এ ব্যাপারে - তারকা বুদ্ধিজীবিদের ও খুব বেশি ততপরতা নেই বরং নানা জায়গায় তাদের অবস্থান উলটো জায়গায় । বাম্পন্থীদের অবস্থান জাশি নিষিদ্ধের পক্ষে হলেও টপ প্রায়োরিটি হিসেবে এখনো তাদের কর্মসুচীতে এটি দেখছিনা।
সবচেয়ে ঘাটতি আমাদের ছাত্র আন্দোলনে - তেমন কোন আদর্শিক নড়াচড়াই নেই এ জায়গাতে :(
নানাভাবে এই দাবীতে সরকারকে চাপে রাখতেই হবে - কিন্তু কিভাবে?
সবচেয়ে ঘাটতি আমাদের ছাত্র আন্দোলনে - তেমন কোন আদর্শিক নড়াচড়াই নেই এ জায়গাতে
আদর্শিক এই নড়াচড়া শুরু হতে একটা কাজ করলেই বহুদূর এগিয়ে যাওয়া যাবে, ছাত্র সংসদ মানেই শিবির এর খবর হয়ে যাবে। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ চালু হওয়া খুব, খুব প্রয়োজন।
জামাত শিবির (খামাচো) বাংলাদেশের রাজনীতির একটা অপ্রিয় বাস্তবতা।
এই দলটির লালন পালন বর্ধনে বিএনপি-জাতীয় পার্টি-আওয়ামীলীগ এই তিন দলেরই কমবেশী দায় আছে।
জিয়ার আমলে জামাত শিবিরের জন্ম হলেও এদের বর্ধন প্রতিপালন এরশাদের আমলে। এরশাদের পুলিশ এদের প্রশ্রয়ের চোখে দেখতো বলে মনে হয়। কারণ ঢাকা চট্টগ্রাম শহরে জামাতের কোন কর্মী এরশাদের পুলিশের লাঠির বাড়ি খেয়েছে আমি অন্তত দেখিনি/শুনিনি। এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে ওদের ভূমিকা ছিল ছাগলের তিন নাম্বার বাচ্চার মতো। এরশাদের আট বছর সুখেই ছিল জামাত শিবির। এরা দল গুছিয়েছে, ক্যাডারদের ট্রেনিং দিয়েছে, লজিং মাস্টার/কোচিং সেন্টার সহ নানান সামাজিক পদ্ধতিতে দেশব্যাপী নেটওয়ার্ক করেছে।
বিএনপির পুলিশতো এদের জামাই আদরেই রেখেছিল। এদেরকে স্পর্শ করতো না সরকারের পার্টনার বলে। বিএনপির দশ বছরে এরা বেড়ে মহীরূহ হয়েছে। বিএনপির আমলে এরা একাত্তরে যে পতাকার জন্মের বিরোধিতা করেছিল(এখনো যে পতাকার বিরুদ্ধেই কাজ করে) সেই পতাকা উড়িয়েছে মন্ত্রী হয়ে। আজকে জামাতের যে দেশব্যাপি হরতালের নামে নৈরাজ্যের উৎসব, সেই উৎসবের সক্রিয় সমর্থক আজকের বিএনপি।
ভাবা গিয়েছিল আওয়ামী পুলিশ এদেরকে বেত মেরে সোজা করবে। কিন্তু উল্টো আওয়ামী পুলিশ এদের হাতে মার খাচ্ছে নাজেহাল হচ্ছে। পুলিশের প্রতি আক্রমনের দুঃসাহস দেখে মনে হচ্ছে এদের প্রতি এমন কোন প্রশ্রয়ের ঈঙ্গিত আছে যা পুলিশের চেয়ে অনেকগুন শক্তিশালী। সেই শক্তি ওদের হয়তো বলেছে আতংক ছড়াতে। সমাজে, প্রশাসনে।
শোনা যাচ্ছে পুলিশকে নিষ্ক্রিয় থাকতে বলা হয়েছে। কেন নিষ্ক্রিয় থাকবে? পুলিশ হাজার দুর্নীতিবাজ অকর্মন্য হলেও বসে বসে কোন রাজনৈতিক দলের ক্যাডারের মার খাবে, এটা মানা যাচ্ছে না। এমনকি জামাত খামাচোরা যে ইস্যুতে আন্দোলন করছে সেই ইস্যুটাই বেআইনী। শিক্ষকেরা তাদের ন্যায্য অধিকার নিয়ে নিরীহ সমাবেশ করতে গিয়ে বেদম মার খায়, আর এই খামাচো-রা এমন সহিংস আন্দোলন করেও পার পেয়ে যায়। ব্যাপারটা মেলানো যাচ্ছে না। নিষ্ক্রিয় থাকার নির্দেশটা কি গুজব নাকি সত্যি?
গত চল্লিশ বছরে বাংলাদেশে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে সবগুলো প্রধান রাজনৈতিক দল সহিংস আন্দোলন করেছে। ওইসব আন্দোলনেও জনগনের ক্ষয়ক্ষতি স্বীকার করতে হয়েছে। সম্পদ আর প্রান উভয়ই ক্ষয় হয়েছে। কিন্তু এমন কোন দল দেখা যায়নি, যারা কোন রকম কর্মসূচি ছাড়াই শান্তিপূর্ন দিনে, শান্তিপূর্ন রাস্তায় পথচারী বা পুলিশের উপর আচমকা চোরাগোপ্তা হামলা করে গাড়ি ভাঙচুর অগ্নিসংযোগ খুনাখুনি শুরু করে। গাড়িতে মানুষ রেখে আগুন দেয়। এবং তার নাম দেয় আন্দোলন! এই দুর্বত্তগুলোকে রাজনৈতিক দল বললে রাজনীতির অপমান। এদেরকে গনতান্ত্রিক রাজনৈতিক উপায়ে শায়েস্তা করার কোন মানে হয় না। এদের জন্য দরকার বিশেষ কোন কেসাট্টা পদ্ধতি যা চল্লিশের দশকে ইতালীতে প্রয়োগ করা হয়েছিল মাফিয়া দমনে। এই জামাত শিবির খামাচো-দের জন্যও তেমন আইন দরকার।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
যোবায়ের হোসেন রিমু খুন হয়েছিলেন এরশাদ আমলেই! আরো এমন কত প্রজন্মের বারুদ নির্মম নৃশংসতার স্বীকার হয়েছে এরশাদ আমলে। এরশাদ আমলে খুন হয়েছিলেন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ময়েজউদ্দীন, সেই খুনের খুনী আযম খান ছিলো এরশাদের পালক-পুত্র। এই বন্য-বরাহ এরশাদ বিচার হয়নি এখনো।
জামাতে পিছলামি সহ ধর্মভিত্তিক সকল রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার জোর দাবি জানাই, জাহানারা ইমামের বাংলায় আর একটি বার সকলে মিলে না জাগতে পারলে এই শকুনদের হাত থেকে কেউ রেহাই পাবে না।
আমার প্রশ্নটাও ঐখানে ব্যর্থ কেন?
ধন্যবাদ পোস্টের জন্য, ভাল থাকবেন।
তুহিন সরকার
এই পোস্টের প্রয়োজন ছিলো। ^:)^
নতুন মন্তব্য করুন