আমার ভাবনায় কোনো শেকল নেই। কখনো ছিলোও না।

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি
লিখেছেন অনার্য সঙ্গীত (তারিখ: মঙ্গল, ০২/০৪/২০১৩ - ১:৩৫পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ব্যক্তিগতভাবে আমি খুবই লজ্জিত এবং কুণ্ঠিত একজন মানুষ।

সাধারণ হিসেবে জীবনের অর্ধেকের খানিকটা কম সময় পার করে ফেলেছি। এবং এতোটা সময়ে আমি কেবল বেঁচে থাকা ছাড়া আর কিছু করিনি। সবাই বেঁচে থাকে, বেঁচে থাকা কৃতিত্বের কিছু নয়। খাওয়া এবং বাচ্চা দেয়াও কৃতিত্বের কিছু নয়। আমি অনেক হিসেব করে দেখেছি, আমি বেঁচে না থাকলেও হতো। তাতে মানুষের কিছু আসতো যেতো না।

এতোকাল বেঁচে থাকা ছাড়া কিছুই করিনি, এই ভাবনা আমাকে প্রতিমুহূর্তে কুণ্ঠিত করে রাখে! আমি নিজের চোখের দিকে চাইতে পারিনা, লজ্জায় নত হয়ে যাই!

আমাদের অদ্ভুত এই গ্রহে এমনসব সুরস্রষ্টারা জন্মান যাঁরা নিতান্ত শিশু বয়সে সৃষ্টি করেন ঐন্দ্রজালিক সুর। আমি এতো অবাক হই যে, আমার বিশ্বাস হতে চায় না। কিছুদিন আগে হিলারি হানের বেহালা কনসার্টে গিয়েছিলাম। ক্ষীণ এক অলৌকিক মেয়ের মতো তিনি বাজাচ্ছিলেন বাখ। এখন ভাবলে মনে হয় সেটা স্বপ্নের মতো কোনো একটা ব্যপার ছিল!

প্রথমবার যখন এক বন্ধুকে ভালোবেসে ফেলেছি, আমার বিশ্বাস হতে চায়নি! বন্ধুকে বললাম, তোকে ভালোবেসে ফেলেছি। বলে আমরা দুজনেই খুব হাসলাম। এখনো সেই ঘটনা আমার বিশ্বাস হতে চায়না। মনে হয় ঘোরের মধ্যে আছি। ভালোবাসার মতো দারুণ একটি বিষয়ও হয়তো কোনো কৃতিত্বের বিষয় হতে পারতো। কিন্তু সে-ও হয়নি। যাঁদেরকে ভালোবাসা উচিত, তাঁদেরকে ঠিকঠিক ভালোবেসে ওঠা হয়না। আম্মার খেয়াল রাখার দরকার ছিল। আমি আম্মার খেয়াল রাখিনা। আম্মা আমার খেয়াল রাখেন ৯ হাজার কিলোমিটার দূর থেকে। ওনার কখনো ভুল হয়না। আমার কেবলই ভুল হয়ে যায়। আমার সহোদরাদের খোঁজও আমি কিছু রাখিনা। ওরা আমার খোঁজ রাখে। ভালোবাসায় আমি নিতান্ত ব্যর্থ একজন মানুষ। ভাবলেই আমি দারুণ ক্ষীণ, নিতান্ত ক্ষুদ্র বোধ করি নিজেকে।

তেজস্ক্রিয় ইউরেনিয়াম থেকে প্রকৃতিকে বাঁচানোর জন্য খাটে আমার বন্ধু। এন্টার্কটিকায় সিল আর পেঙ্গুইনের দঙ্গলের ভালোমন্দ খুঁজে ফেরে আমার বন্ধু। মানুষ বাঁচাতে ছত্রাকের একেকটা প্রোটিন আলাদা করে ফেলে আমার বন্ধু। আমি নিতান্ত অযোগ্য হয়েও খুব জোর করে নিজেকে তাদের বন্ধু বলে পরিচয় দিতে থাকি। বিশেষ লাভ হয়না, জানি। তবুও চেষ্টা করি। আমার আরেকটু মানুষ হয়ে উঠতে ইচ্ছে করে প্রতিমুহূর্তে। অদ্ভুত এই গ্রহটাতে বেঁচে থাকার দায় মেটাতে ইচ্ছে করে। আমার খুব ভাবতে ইচ্ছে করে, আমি অকেজো আর অপ্রয়োজনীয় নই!

আমার বন্ধুরা, স্বজনেরা কতজনে এই সচলায়তনেই কী অসাধারণ লেখেন। তাঁদের শব্দের কারিকুরিতে, চিন্তার বিশালতায় আমি প্রতিমুহূর্তে মুগ্ধ হয়ে ফিরি। আমার সত্যিই তাঁদের মতো লিখতে ইচ্ছে করে। হয়না, পারিনা। আমার বন্ধু-স্বজনদের কণ্ঠে কী অলৌকিক সুর খেলা করে, কেউ কেউ কাঠ-লোহার যন্ত্রের থেকে প্রাণ সৃষ্টি করেন! আমার খুব তাঁদের মতো হতে ইচ্ছে করে।

সব ইচ্ছে পূরণ হয়না। আমার অকেজো আমিকে নিয়ে আমার সংশয়ও কখনো ফুরোয়না!

অন্য মানুষেদের নিশ্চয়ই বড়ো বড়ো অর্জন রয়েছে জীবনে। তাঁরা নিশ্চয়ই মানুষের জন্য মহান কিছু করেছেন। আমি কিছু করিনি কখনো। এতো কুণ্ঠা নিয়ে অন্য মানুষ কীভাবে বেঁচে থাকে আমার জানা নেই। আমি খুব ভেবেচিন্তে অসংখ্যবার সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে আমি ঠিক এই গ্রহের উপযোগি কেউ নই। এই গ্রহের সঙ্গে আমি সামঞ্জস্যপূর্ণ নই একেবারেই। আমার বেঁচে না থাকলেই হয়, সে-ই ভালো, সেটাই সহজ।

আশ্চর্যজনকভাবে আমি বেঁচে থাকি। অলীক এক তীব্র অহংকার আমাকে বাঁচিয়ে রাখে। সেই অহংকার একজন স্বাধীন মানুষ হওয়ার অহংকার!

নিজেকে মানুষ ভেবে আমি ভয়াবহ অহংকারী। মানুষের করা উচিত নয়, এমন কোনো কাজ কখনো আমি করিনি। পরিচিত মানুষের সঙ্গে আমি খুব যন্ত্রের মতো কথা বলা শিখে নিয়েছি। আমি খুব ছোট আর খুব অকেজো আর খুব কুণ্ঠিত একজন মানুষ, তা আমার পরিচিতজনেরা টের পান না। আমার অহংকার আমাকে নিজেকে প্রকাশ করতে দেয় না।

নিজেকে নিয়ে এরকম ভয়াবহ অহংকারী বলেই মানুষ হবার জন্য যা যা মেনে চলতে হয় আমি সেসব অলৌকিক বাণীর মতো মেনে চলি। মানবিক বোধকে আমি মাথা নুইয়ে শ্রদ্ধা করে চলি। আমি নিশ্চিত, আমার অপরাধের জন্য কেউ কখনো কাঁদেনি। আমি আরেকজন মানুষকে তাঁর স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত করিনা। আর আমি নিজের স্বাধীনতাও একটা স্পর্ধিত পতাকার মতো উড়িয়ে বেড়াই।

আমি খুব দূর্বল, কুণ্ঠিত আর ভীতু একজন মানুষ হলেও, আমার স্বাধীনতার প্রসঙ্গে আমি আপস করিনা। কিন্তু মানুষের স্বাধীনতার যারা বর্গা নিতে চায়, সাধারণ দৃষ্টিতে তারা খুব শক্তিশালী হয় বলে, আমার খুব ভয় করে।

এই যেমন, বিটিআরসির সঙ্গে রয়েছে একটা দেশের সরকার। স্বদেশের সরকারকে আমার সন্মান করা উচিত ছিল। কিন্তু আমি তা করছি না। বিটিআরসি নামের প্রতিষ্ঠানটির উপর খুব ঘেন্না আর বিরক্ত লাগছে। মানুষের দীর্ঘ কাফেলার দিকে গলির কোণা থেকে ঘেউ ঘেউ করা লোমহীন কুকুর যেরকম বিরক্তি তৈরি করে, বিটিআরসি আমাকে সেরকম বিরক্ত করছে।

জানলাম, আমার ভাষা, আমার কথা, সে সত্য হোক আর না হোক, যদি কারো বিশ্বাসের অনুভূতিতে আঘাত করে তাহলে বিটিআরসি আমাকে শাস্তি দিতে পারে। আমাকে আমার কথা সত্য কিনা সেই বিবেচনা নয়, আমাকে বিবেচনা করতে হবে তা কোনো নির্বোধের বিশ্বাসকে আহত করে কিনা! আমার যা মনেহয়, আমি যা ভাবি সেই কথাগুলো আমি বলতে পারব না। আমাকে সবসময় মনে রাখতে হবে, আমার শব্দের উপর পাহারা রয়েছে। আমার চিন্তার উপর শেকল রয়েছে।

বিটিআরসির নীতিনির্ধারকরা এবং সরকারের যারা ভোটের হিসেব করেন, তারা নিশ্চয়ই বুঝতে পারবেন না যে একটা মানুষ সব সয়েও কোনোরকমে বেঁচে থাকতে পারে। বেঁচে থাকা একটা মানুষের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তা সে আমার মতো অকাজের বেঁচে থাকা হলেও। কিন্তু কোনো মানুষ পরাধীন হয়ে বেঁচে থাকতে পারেনা। মানুষ হবার প্রথম শর্তটি হচ্ছে স্বাধীন হওয়া। সময়ের ফেরে যেসব মানুষ পরাধীন, তাঁরাও প্রতিমুহূর্তে স্বাধীনতার জন্য ছটফট করে বাঁচেন।

আমার সত্যি এই কথাগুলো বলতে খুব ভয় করছে। কিন্তু বিটিআরসিকে না বললেই নয়, আমি আমার কথা উপর কোনো শৃংখল মেনে নিচ্ছি না। আমার বলতে খুব ভয় করছে, তবুও বলছি, কেউ যদি আমার ভাবনার জন্যে আমার উপর খবরদারি করতে আসে, সেই খবরদারির আমি পরোয়া করিনা।

আজকে জেনেছি, "আমার ব্লগ' নামের ব্লগটিতে বাংলাদেশ থেকে "প্রবেশ' বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। গণতান্ত্রিক সরকারের এই কুৎসিত আচরণ দেখে রাজনীতিক গোষ্ঠীর উপর ঘেন্না ধরে গেলো! কয়েকবছর আগে যখন বাংলাদেশে অগনতান্ত্রিক হাঁটু-সরকার খবরদারি করছিল, সেই সময়ে সচলায়তনে প্রবেশ বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। সেই ঘটনা আমাদেরকে অবাক করেনি। ব্যক্তির স্বাধীনতায় সকল পক্ষ আস্থা রাখবে, সেই আশা করিনা। কিন্তু সত্যিই আশা করে ছিলাম, গণতান্ত্রিক সরকার মানুষের ভাবনার স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করবে না।

আমি একজন খুব কুণ্ঠিত মানুষ। কিন্তু আমি একজন মানুষ। আমি একজন স্বাধীন মানুষ। আমি আমার ভাষার উপর, আমার ভাবনার উপর কোনো ব্যক্তি-গোষ্ঠীর চাপিয়ে দেয়া নিয়ম মানছি না। আর কারো ভাষার উপর, ভাবনার উপর শৃংখল চাপিয়ে দেয়া হলে আমি সবসময়ই তাদের পাশে রয়েছি।

এই সময়ে যাঁরা ভাবনার মুক্ততা নিয়ে আপোষ করেন না, তাঁদের কী হবে ঠিক জানা নেই। কিন্তু আমরা যে সকল সময়ে রয়েছি এবং সকল সময়ে থাকবো, সেটা আমি ইতিহাস থেকে জেনেছি। বস্তুত ইতিহাসের পাঠ থেকে সাহস নিয়েই আমি আমার সকল ভয় আর দূর্বলতা উপেক্ষা করে এই লেখাটি লিখছি। আমি বোধ করি, মানুষের স্বাধীনতার উপর খবরদারি করতে যাওয়া উজবুকদের অন্তত খানিকটা ইতিহাসের পাঠ নেয়া উচিত। তাদের নিজেদের স্বার্থেই।

মানুষ জন্মগতভাবে স্বাধীন এবং মুক্ত। এই সহজ সত্য যারা বুঝতে পারেনি, ইতিহাস এইসব উটকো উজবুকদের বিষয়ে খুব সুখকর কথা বলেনা।


মন্তব্য

চরম উদাস এর ছবি

চলুক

ভাবনায় আমারও কোন শেকল নেই, ছিলনা কখনো, থাকবেও না। যতক্ষণ না কল্লা কেটে নিয়ে যাচ্ছে ভেবে যাবো, যতক্ষণ না হাত কেটে নিয়ে যাচ্ছে কি ভাবছি লিখে যাব। যার কুয়োতে বসে সারাজীবন কাটিয়ে দিতে মন চায় সে দিক, আমাকেও কুয়োতে টানলে আমি মানব কেন? যে সবকিছুর উত্তরে বলে, ঠিক ঠিক সে বলুক। আমার মনে প্রশ্ন আসলে আমি করবোনা কেন?

মর্ম এর ছবি

বিটিআরসি যে এ কাজ করবে সেটাই স্বাভাবিক, মাথা ব্যথায় মাথা কাটার নিদান তো ওদের পুরনোই।

তবে, ম-তে 'মাথা' বুঝে নেয়াটা এবার নতুন লাগল!

এটা একটা 'সুযোগ' আর এর সদ্ব্যবহারে সাধ্যের অনেকটাই দেবে বিটিআরসি। দেশে এখনো প্রধান রাজনৈতিক দল দুটোই আছে, সত্য হচ্ছে কোন দলই চায় না এমন একটা স্বাধীন মাধ্যম থাকুক যেখানে সাধারণ মানুষ এসে নিজের কথা বলবে। ওরা বোধ হয় নিরাপদ বোধ করে না।

শেকল পড়ানোর চেষ্টা তো আর নতুন কিছু না, এদ্দিন বাতাসেই পড়ানোর চেষ্টা চলছিল, এখন যা হোক একটা অবয়ব দাঁড় করিয়ে সে চেষ্টা করছে।

এসব চলবেই। ওরা ওদের কাজ করুক, আমরা আমাদের।

সচল থাকুক সচল।

~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...

তানিম এহসান এর ছবি

আমি একজন স্বাধীন মানুষ। আমি আমার ভাষার উপর, আমার ভাবনার উপর কোনো ব্যক্তি-গোষ্ঠীর চাপিয়ে দেয়া নিয়ম মানছি না। আর কারো ভাষার উপর, ভাবনার উপর শৃংখল চাপিয়ে দেয়া হলে আমি সবসময়ই তাদের পাশে রয়েছি। সেটাই।

ধুসর জলছবি এর ছবি

চলুক
ভাবনায় শেকল যারা বসাতে চায় তাদের এটুকু ভেবে নেয়া উচিত ছিল যে শেকল বসালে কেউ ভাবা কমায় না বরং তাতে ভাবনার জোর আর প্রয়োজন দুটাই আরও বাড়ে। কণ্ঠরোধ করতে চাইলেই মানুষের গলা দিয়ে সবচেয়ে জোরে চিৎকার বের হয়ে আসে। যারা লিখবে তাদের গুহায় নিয়ে আটকে রাখলেও সেখানকার দেয়াল লেখায় ভরে যাবে। তারা যা করছে তা শুধু ভুল না, এরা নিজেদের কবর নিজেরা খুঁড়ছে। ইতিহাস তার সাক্ষী।

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

নিজের মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ সচেতন নন। আপনি বলছেন আপনি কুন্ঠা নিয়ে বাঁচেন, কিন্তু আমি নিশ্চিত আপনি জানেন বাংলাদেশের অধিবাসীদের একটা বিরাট অংশ আপনার চেয়েও হাজার গুণ কুন্ঠিত হয়ে বেঁচে থাকে। অন্যের কাজে লাগে নি এই বোধ থেকে নয়, বেঁচে থাকাটাই উচিৎ কিনা সেই সংশয় থেকে। এই বিরাট জনগোষ্ঠী যতদিন শিক্ষার আওতায় না আসছে ততদিন রাষ্ট্রযন্ত্রের এই রংবাজী চলতে থাকবে, আফটার অল, ভালো জনপ্রতিনিধি শিক্ষিত এবং সচেতন জনগোষ্ঠীর মধ্যে থেকেই তৈরী হয়। আমি আশাবাদী, সেদিন খুব বেশি দূরে নয়। শাহবাগ যে স্ফুলিঙ্গ তৈরি করেছে, সেটা দাবানলে পরিণত হবেই, আজকের রংবাজ মাস্তান প্রশাসনকে সেই আগুনে পুড়তে হবেই।

সচল জাহিদ এর ছবি

ব্যাক্তিগত জীবনে অধিকাংশ সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি মুক্ত মত প্রকাশের জন্য।
ব্যাক্তিগত জীবনে অধিকাংশ সফলতার পেছনে রয়েছে মুক্ত মতের প্রকাশ।
মতপ্রকাশ মানুষ হিসেবে আমার অধিকার।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

ছি ছি কী বইলছেন? তউবা করে লাইনে আসেন। নাউজুবিল্লাহি মিন জালেক।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

ফাহিম হাসান এর ছবি

মতপ্রকাশ মানুষের মৌলিক অধিকার। এর উপর যে কোন ধরনের হস্তক্ষেপ বন্ধ হোক।

দ্রোহী এর ছবি

তারানা_শব্দ এর ছবি

চরম কষ্টের মধ্যেও না হেসে পারলাম না মন খারাপ

"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"

কুমার এর ছবি

ওরা আমার মুখের ভাষা কাইড়া নিতে চায়, ওরা কথায় কথায় সেকল পরায় আমার হাতে পায়।

রাহী এর ছবি

"বিআরটিসি" না স্থলে "বিটিআরসি" হবে মনে হয়।

লেখা অসাধারন ভাল লেগেছে।

আমরা মনে হয় বেঁচে আছি, পাঁচ বছর পর পর ভোট দিয়ে নতুন নতুন উপায়ে "মারা খাবার' জন্য। তবে বারবার "মুক্তিযুদ্ধের চেতনার" কথা বলা এই সরকার একবার ফেসবুক, তারপর ইউটিউব, সবশেষে ব্লগ ও ব্লগারদের দের উপর যেভাবে খড়গহস্ত হ; তাতে ভয় হয় অন্য কোন দল ক্ষমতায় আসলে তারা কি করে দেখাবে!!

শাব্দিক এর ছবি

লেখাটা প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত খুব ভাল লেগেছে, বিশেষ করে-

আমি একজন স্বাধীন মানুষ। আমি আমার ভাষার উপর, আমার ভাবনার উপর কোনো ব্যক্তি-গোষ্ঠীর চাপিয়ে দেয়া নিয়ম মানছি না। আর কারো ভাষার উপর, ভাবনার উপর শৃংখল চাপিয়ে দেয়া হলে আমি সবসময়ই তাদের পাশে রয়েছি।

চলুক চলুক চলুক

---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

জামাত-শিবির-রাজাকার হন নাই, বেঁচে থাকার জন্য এটাই বা কম কি !
মত প্রকাশের অধিকার রহিত করলে, গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থা থাকলো কি ?
হেঁ হেঁ হেঁ, দ্বিতীয় বাক্যে আপনি আমার ধর্মনুভূতিতে আঘাত দিয়েছেন। খাইছে

স্যাম এর ছবি

তেজস্ক্রিয় ইউরেনিয়াম থেকে প্রকৃতিকে বাঁচানোর জন্য খাটে আমার বন্ধু। এন্টার্কটিকায় সিল আর পেঙ্গুইনের দঙ্গলের ভালোমন্দ খুঁজে ফেরে আমার বন্ধু। মানুষ বাঁচাতে ছত্রাকের একেকটা প্রোটিন আলাদা করে ফেলে আমার বন্ধু। আমি নিতান্ত অযোগ্য হয়েও খুব জোর করে নিজেকে তাদের বন্ধু বলে পরিচয় দিতে থাকি। বিশেষ লাভ হয়না, জানি। তবুও চেষ্টা করি। আমার আরেকটু মানুষ হয়ে উঠতে ইচ্ছে করে প্রতিমুহূর্তে। অদ্ভুত এই গ্রহটাতে বেঁচে থাকার দায় মেটাতে ইচ্ছে করে। আমার খুব ভাবতে ইচ্ছে করে, আমি অকেজো আর অপ্রয়োজনীয় নই!

আমার বন্ধুরা, স্বজনেরা কতজনে এই সচলায়তনেই কী অসাধারণ লেখেন। তাঁদের শব্দের কারিকুরিতে, চিন্তার বিশালতায় আমি প্রতিমুহূর্তে মুগ্ধ হয়ে ফিরি। আমার সত্যিই তাঁদের মতো লিখতে ইচ্ছে করে। হয়না, পারিনা। আমার বন্ধু-স্বজনদের কণ্ঠে কী অলৌকিক সুর খেলা করে, কেউ কেউ কাঠ-লোহার যন্ত্রের থেকে প্রাণ সৃষ্টি করেন! আমার খুব তাঁদের মতো হতে ইচ্ছে করে।

সব ইচ্ছে পূরণ হয়না। আমার অকেজো আমিকে নিয়ে আমার সংশয়ও কখনো ফুরোয়না!

চলুক চলুক

সংশয় অশেষ থাকুক ... আপনাকে আমাদের প্রয়োজন ---

অন্যকেউ এর ছবি

এই সময়ে যাঁরা ভাবনার মুক্ততা নিয়ে আপোষ করেন না, তাঁদের কী হবে ঠিক জানা নেই। কিন্তু আমরা যে সকল সময়ে রয়েছি এবং সকল সময়ে থাকবো, সেটা আমি ইতিহাস থেকে জেনেছি।

গুরু গুরু

_____________________________________________________________________

বরং দ্বিমত হও, আস্থা রাখো দ্বিতীয় বিদ্যায়।

অতিথি লেখক এর ছবি

মতপ্রকাশের দুয়ার বন্ধ করার রাস্তা দেখানোর জন্য একদিন এই আওয়ামিলিগকেই পস্তাতে হবে! খাল কেঁটে কুমির আনা হলো আজ! কথায় আছেনা- "আওয়ামিলিগ যখন ডুবে, তখন সবাইকে নিয়ে ডুবে; আর যখন উঠে তখন কারো ধার ধারেনা"! স্বাধীনতার স্বপক্ষ শক্তি বলে কি আর কিছুই থাকবেনা? দেশে কোটি কোটি টাকার অবৈধ ভিওআইপি হচ্ছে সেদিকে বিটিআরসির কোনো খবর নাই, বাঁশের কেল্লা সহ অন্যান্য জামাতি ব্লগে বঙ্গবন্ধু ও ওনার পরিবারের সদস্যদের চরিত্রে ফালুদা বানানো হয়েছে তার পরও বিটিআরসির টনক নড়েনি! আর যে ব্লগ, ব্লগাররা তথ্য উপাত্ত দিয়ে স্বাধীনতার সত্যি ইতিহাসের জ্বলন্ত মশাল উঁচিয়ে রেখেছে তাদের করা হলো গ্রেপ্তার! সেলুকাস! কি বিচিত্র এই দেশ!

বটতলার উকিল

তারেক অণু এর ছবি
অতিথি লেখক এর ছবি

মৃত্যু একবার, তাই শারীরিক মৃত্যুর আগে কোন মরণ নয়। আমাকে আমার চিন্তায়, বলায় আর লিখতে না দেওয়া মানেই আমার মননের মৃত্যু। মননের মৃত্যু হলে অসাড় এই শরীর, অনুভূতিহীন ভাবনা নিয়ে বেঁচে থাকাটা আমার কাছে যন্ত্রনাদায়ক। তাই কে কি বললো, কার কোন অনুভূতিতে আঘাত লাগলো সেটা নিয়ে আমিও কখনো চিন্তিত নই, ছিলাম ও না। অনুভূতিতে আঘাত নামক সস্তা প্রলাপেই আমার বিশ্বাস নেই। মানুষকে অন্ধকারে রাখার জন্যে, কুসংস্কারে ডুবিয়ে রাখার জন্যে অনুভূতিতে আঘাত নামক সস্তা বাহারি পোশাকের জন্ম দিয়েছে প্রতিক্রিয়াশীলরা। সেই পূর্ব নির্ধারিত বিশ্বাসের পোশাকে আমি কখনো ঢুকিনি, ঢুকতে চাইনি। তাই পূর্ব নির্ধারিত আর রুপকথার গল্পে আমি কখনো বিশ্বাস রাখিনি। আমি তাই লিখে যাবো আমার সব অবিশ্বাস।

মাসুদ সজীব

এক লহমা এর ছবি

খুব ভালো লেখা।
(সামনে নিয়ে আসার জন্য পরিচালকদের ধন্যবাদ।)

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

সুবোধ অবোধ এর ছবি

কত সাধারণভাবে লেখা কী অসাধারণ একটা লেখা। চলুক

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।