দেশ ছেড়ে আসলে বোধহয় মানুষের শরীরে প্রোল্যাকটিনের উৎপাদন বেড়ে যায়! কারণে অকারণে কণ্ঠ বন্ধ হয়ে আসে। প্রথম যখন এসেছি, তখন থাকি প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত বড় একটা স্টুডিও ফ্ল্যাটে। বারান্দা দিয়ে পাহাড়ের সারি দেখা যায়। অক্টোবরের ঠাণ্ডা পাত্তা দেয়ার মতো কিছু নয়। কিন্তু তখনো আমার চামড়ার বাঙালিপনা যায়নি। শরতের বাতাসেই হুহু করে কাঁপতে থাকি। নিতান্ত প্রয়োজন না হলে বারান্দায় যাই না। দূর্ভাগ্যবশত, খানিক পরপরই আমার নিতান্ত প্রয়োজন হয়। আমি বারান্দায় গিয়ে পাহাড়মুখি বাতাসে জোরে জোরে শ্বাস ফেলতে থাকি। মন্ত্রের মতো জপতে থাকি, হরমোন হরমোন হরমোন হরমোন...!
বারান্দায় যাওয়ার প্রয়োজন ওই শ্বাস নেয়ার। কারণে অকারণে কণ্ঠ ভার হয়ে আসে। চোখ ভরে ওঠে। নিজেকে আস্কারা দেই না। দৌড়ে বারান্দা চলে যাই। হরমোন হরমোন বলে নিজেকে বুঝ দেই। নিজের কাজে কর্মে হেসে ফেলি কখনো কখনো। সৌভাগ্যবশত, আমার সেই জীবনের কোনো দর্শক নেই।
বিরক্তিকর মানবিক যন্ত্রণা থেকে দূরে থাকার নানা উপায় আছে আমার। সবারই আছে বলে মনে হয়। সবচে সহজ উপায় হচ্ছে নিজেকে ব্যস্ত রাখা। দেশে ছাড়ার বেশ আগে থেকেই আমি সেই কাজে পটু। রাজ্যের বই পড়ে ফেলছি, দুনিয়া খাদ্য-অখাদ্য সিনেমা দেখে ফেলছি। কেবল গান শুনছি না। গান শুনলে নানা চিন্তা মাথায় আসে। চিন্তা করতে চাই না। পালাতে চাই।
কৌতুহল বশত আবিষ্কার করেছিলাম, বাংলায় বিজ্ঞানের বই আর না থাকুক, মনোস্তত্ত্বের বই আছে শয়ে শয়ে। সবগুলোর কথা জানিনা, কিন্তু বেশিরভাগই নিতান্ত অখাদ্য। জ্যোতিষবিজ্ঞান যেমন হাস্যকর। বাংলাদেশের জনপ্রিয় মনোস্তত্ত্বের বই তেমনি বিরক্তিকর! সেবার এক চিকিৎসা মনোবিজ্ঞানের সহকারি অধ্যাপককে জিজ্ঞেস করলাম, ভাবনা থামানোর কোনো ওষুধ আছে? ধরুন কোনো একটি বিষয় আমি ভাবতে চাইনা, কোনো একটি ওষুধ খেয়ে কি সে সম্ভব? ডাক্তার বললেন, ওরকম তো সম্ভব নয়, কিন্তু ভাবতে না চাইলে তাতে সহায়তা করার মতো ওষুধ আছে। গুপ্তধন পাওয়ার মতো অনুভূতি হলো আমার। ডাক্তারকে পটিয়ে সেই ওষুধ চেখে দেখলাম। সেই ঘটনাকে জীবনে করা নির্বুদ্ধিতার তালিকায় প্রথম সারিতে রেখেছি। সেই অনুভূতিকে জীবনের সবচে যন্ত্রণার অনুভূতির তালিকায় রেখেছি। একইসঙ্গে মনোচিকিৎসকের উপর শ্রদ্ধা হারিয়েছি! এতোকথা লেখার মানে হচ্ছে একটা উপলব্ধি। মানবিক যন্ত্রণার ওষুধও মানবিক। ওর কোনো শর্টকাট নেই। সেই কথা জেনেছি দীর্ঘদিন হয়।
মানুষ হয়ে জন্মেছি। এবং হরমোন গ্রন্থিগুলোতে বোধকরি কোথাও কোনো সমস্যা নেই। সেইজন্য নানা কিম্ভুত অনুভূতি আমার উপর ভাগ বসাতে চায়। আমি ছলে-বলে-কৌশলে পালাতে চেষ্টা করি। হরমোন হরমোন জপমালা হচ্ছে সেই কৌশলের অংশ। দেশ থেকে এসে যখন সব ফাঁকা লাগতো। আর কারণে অকারণে চোখ টইটম্বুর হয়ে যেতে চাইতো তখন নানা বৈজ্ঞানিক তথ্য দিয়ে নিজের গাধামি নিজেকে বোঝাতে হতো।
কান্না আসছে কেন?
-বিবর্তনের ব্যাখ্যা বলে...
- আরে ধুর অতো বিবর্তনীয় ব্যাখ্যা করবার টাইম নাই। শরীরে প্রোল্যাকটিনের দরকার। প্রোল্যাকটিন হচ্ছে হরমোন। সদ্য শিশুর জন্ম দেয়া মায়েদের শরীরে এই হরমোন একেবারে বাড়াবাড়ি মাত্রায় থাকে। মায়েদের মনে অলৌকিক শান্তির অনুভূতি তৈরি করে এই হরমোন। কান্নাকাটি করলে একটা শান্তি শান্তি ভাব আসার একটা কারণও এই হরমোন। স্তন্যদাত্রী মায়েদেরযে শান্তির অনুভূতি সে-ও এই হরমোনে তৈরি করে। হরমোন হরমোন হরমোন। ওই হরমোন খানিকটা হলেই শান্তি মিলবে!
দেশে ছেড়ে এসে, জার্মানির এক গাঁয়ে বসে আমি হরমোন আর মানুষের শরীরতন্ত্রের নানা জটিল জ্ঞান আহরণ করি। খানিক হরমোনে মিলে যন্ত্রণা পাকায়। শরীরে খানিকটা হরমোন হলে ঝামেলা শেষ হয়। ম্যাঙ্গানিজের পরিমাণও বোধহয় বেড়ে গেছে রক্তে! কমানো দরকার!
এইসব নানাবিধ বৈজ্ঞানিক জ্ঞান আহরণ করে লাভ হয় যে, চিন্তা ভাবনা "লাইনে' চলে আসে। বিরক্তিকর আবেগ কমে যায়। এবং নিজের কাজকর্মে হাসি আসে। লাফানো থামানোর সহজ উপায় হচ্ছে কেনো লাফাচ্ছি তা ভেবে দেখা। সেই ভাবনায় আর কোনো উপকার না হোক অন্তত লাফানোতে ছন্দপতন হয়।
সেই পরবাসে আমাকে আমাকে সকাল বিকাল "হরমোন জ্ঞান' ব্যবহার করতে হয়। ক্লাস এবং ল্যাবের বাইরের বাকিটা সময় আমি তখন মনিটরে চোখ গেঁথে বসে থাকি। রাজ্যের সিনেমা, ডকুমেন্টারি, ধারাবাহিক দেখে লাশ করে ফেলি। বাংলাদেশের কিছু দেখলেই চোখ ছলছল করে ওঠে। হরমোন হরমোন বলে জপ করতে হয়। তারপর নিজের কাজকর্মে হেসে ফেলতে হয়।
ক্রিকেট বিশ্বকাপের আগে পর্যটন কর্পোরেশন "বিউটিফুল বাংলাদেশ' নামে বিজ্ঞাপন বানিয়েছে। সেই বিজ্ঞাপন দেখে ধ্বক কর উঠলো বুক। আমি দৌড়ে বারান্দায় চলে গেলাম। হা করে পাহাড়ের বাতাস গিলতে লাগলাম!
শাহবাগে মানুষের ভিড়। বন্ধুরা সেখানে, স্বজনেরা সেখানে। আমার পক্ষে এক বছরের চন্দ্রা'কে পাঠিয়েছি। ওর মা সেই ছবি তুলে পাঠিয়েছে আমাকে। দেখে আমার চোখ ছলছল করে উঠলো! আমি হরমোনের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে নিজেকে বাঁচালাম!
মুক্তিযোদ্ধা বাবা রাতভর ছেলের জন্য রাজাকার-বিরোধী পোস্টার এঁকেছেন। সেই পোস্টার নিয়ে ছেলে গিয়ে একা একা দাঁড়িয়েছে অচেনা বাঙালিশূন্য শহরে। সেই ছবি দেখে আমার চোখ ছলছল করে উঠলো! দুনিয়ার এশহরে একজন, ও শহরে দু'জন, সে শহরে কয়েকজন বাঙালি মিলে রাজাকারের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে আছে একসঙ্গে। সেই ছবি দেখে কনকনে ঠান্ডায় জানালা খুলে আমাকে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতে হলো।
চন্দ্রাকে ফোন করলে সে তার নিজের ভাষায় আমার সঙ্গে নানা গল্প জুড়ে দেয়। আমি বলি, "একটু বাংলা বলবি? তোর ভাষা বুঝবার যোগ্যতা তো আমার নেই'! চন্দ্রা পাত্তা দেয় না। তার কথা শেষ হলে পরে ফোন দেয় ওর মায়ের কাছে। আমি কাজের কথা বলে দ্রুত ফোন রাখি। নেট ঘেঁটে প্রোল্যাকটিনের কার্যপ্রাণালী বুঝতে চেষ্টা করি। হরমোনটাই সব যন্ত্রণার মূল!
কারণে অকারণে আমি আবিষ্কার করি আমি মানুষ হিসেবে দূর্বল। কখনো খুব রেগে গিয়ে যে প্রতিজ্ঞা করি, সেই প্রতিজ্ঞা রক্ষা হয়না! অনেক ভেবেচিন্তে যে হিসেব করি, সেই হিসেব মানা হয়না। আমি খুব দূর্বল মানুষ। আমাকে দিয়ে হয়নি, হবেনা। আমি নিজেকে শান্তনা দেই। নির্বুদ্ধিতা সব যুক্তিতেই নির্বুদ্ধিতা। আমি জানি। জেনেবুঝে নির্বোধের মতো আচরণ করি। নিজের অকৃতকার্যতায় হতবাক হয়ে যাই। তারপর স্থবির হয়ে বসে থাকি।
চারপাশে অমানুষের সারি দেখে দেখে আমি ক্লান্ত হয়ে যাই। আমি কোনো আশা করিনা। আশা করার কিছু নেই। অনেক ভেবে চিন্তে হতাশার জন্য কোন হরমোনটা দায়ী সেটা খুঁজে দেখতে চেষ্টা করি। কোন হরমোনটা মানুষকে অমানুষ বানায়? অথবা ঠিক কোন হরমোনটা থাকলে মানুষ ঠিক মানুষ হয়ে ওঠে?
নিকট অতীতের বড় একটা সময় ধরে আমার কৌতুহলের কেন্দ্রে ছিলো কিছু লোক। এই লোকগুলো সর্বশক্তিমান। তারা যা ইচ্ছে করতে পারে। যেভাবে ইচ্ছে করতে পারে। দারুণ নৃশংসতাকে "প্রয়োজন' বলে ভুলতে পারে। হাতে রক্ত মেখে হাসতে পারে। তারা যা-ই করুক, সেটার জন্য প্রয়োজনীয় যুক্তি বানিয়ে নিতে পারে! আমি খুব অবাক হয়ে এইসব লোকেদের কথা ভেবেছি দীর্ঘদিন হয়। এতো ক্ষমতা নিয়ে কেউ কীভাবে জন্মায়? এরা কী কখনো দুঃখী হয়? সত্যি সত্যি দুঃখী, যে দুঃখ কারো কাছে বিক্রী করে কোনো লাভ করার সম্ভাবণা নেই, যে দুঃখ ভাগ করে নেয়ার দারুণ কোনো ব্যবসায় হয়না, যে দুঃখ কেবল মানুষের একার, সেরকম দুঃখহয় এইসব লোকেদের? সবকিছু খুব সহজ ব্যবসা কীভাবে হয়ে ওঠে এই লোকগুলোর কাছে?
ছোট্ট জীবনে কী অসীম কৌতুহল নিয়েই না মানুষকে মরে যেতে হয়!
দীর্ঘদিন হয়ে গেল জীবনের বিস্তীর্ণ সমস্যা আমি হরমোনের ঘাড়ে চাপাই। সময়ের ঘাড়ে চাপাই। কারো না কারো ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে পালানোর অভ্যাস রপ্ত করে ফেলেছি দীর্ঘদিন হয়। কেবল জীবনের বড় বড় নির্বুদ্ধিতাগুলোর দায় কারো উপর চাপাতে পারিনা। যখন খুব তীব্রভাবে জীবনের কোনো কোনো ঘটনাকে বদলে ফেলতে ইচ্ছে করে, যখন খুব দারুণভাবে বছর কয়েক আগে ফিরে গিয়ে নিজেকে বাস্তবতার খুব সহজ কথাগুলো শুনিয়ে আসতে ইচ্ছে করে তখন হরমোন জপমালা আমাকে উদ্ধার করতে পারেনা।
তখন আবিষ্কার করি কতো করুণভাবে হেরে গেছি! আহা কতো করুণভাবেই না মানুষকে পরাজিত হতে হয়!
মন্তব্য
আপনার লেখা পড়েতো আমার এখন বাইরে যাওয়া দরকার পড়ে যাচ্ছে।
যারা এত ভাল লেখে তাদের এত পরে পরে লেখা অপরাধ।
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
দেশে কথা দিয়ে আসা সর্বশেষ বান্ধবীটারও বিয়ের দাওয়াত পেলি!
এখনো সময় আছে, এই দেশ থেকে পালা। বায়ু সুবিধার না এই দেশের। নাইলে খালি দাওয়াতই পাবি, বরযাত্রীর প্রধান চরিত্রের কুশীলব হওয়া হয়ে উঠবে না...
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ঘটনা সত্য! এখন খালি আপনার বিবাহের গুলাশ আর কোল্শ খাইয়াই দেশে যামুগা!
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
একবার এক বন্ধু বলেছিলেন, "ছ্যাঁক খাইনি, বিয়ে খেয়ে এসেছি"। Think positively!
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
আমার একটু চিন্তা না করার ঔষুধ দরকার।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
দিলেন তো মন খারাপ করিয়ে।
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
দুঃখিত
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
লেখা ভালো লাগল।
সঞ্জীব চট্টো'র লোটাকম্বল এর একটা লাইন মনে পড়ল, 'হরমোন, হরমোন -সবই হরমোন। বাবাকে তো আর বোঝাতে পারি না গান তো আর হরমোন গাওয়ায় নি।' (স্মৃতি থেকে লেখা )
শুভেচ্ছা
ধন্যবাদ।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
পুরো লেখায় বেশ কয়েকরকম ভাবনা এসে মিশেছে মনে হল। তার একেকটা নিয়েই অনেক কথা বলা যায়। থাক বরং। কিছু কথা আসলে আলোচনার না, অনুভবের। আপাতত ভয়াবহ আবেগপ্রসূত লেখা ভাল্লেগেছে এটুকু বলেই চুপ থাকি।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
মনখারাপকরা ভালো একটা লেখা। ছোটখাটো এসব অনুভূতি নিজেরও চেনা মনে হলো। Eternal Sunshine of the Spotless Mind সিনেমা দেখে মনে হয়েছিল নির্দিষ্ট কিছু স্মৃতি যদি মুছে ফেলা সম্ভব হতো! তবে ধীরে ধীরে উপলব্ধি করেছি, জীবনে সব স্মৃতিরই গুরুত্ব আছে, ভূমিকা আছে। সুখ, আনন্দ আর স্বস্তি যেমন প্রয়োজন, তেমনি কষ্টেরও দরকার আছে। দিনশেষে আমরা মানুষ। মানবিক কিংবা অমানবিক অনুভূতিগুলোই আমাদের সামনে এগিয়ে নিয়ে যায়। আপনার প্রবাসজীবন স্বস্তিদায়ক হোক আরও। শুভকামনা রইল।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
মনটা অন্যরকম হয়ে গেলো!!! আহা!!!
____________________________
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
সকালে উঠেই এই লেখাটা পড়ে কিছুক্ষণ হরমোন হরমোন করলাম। এমনিতেই জনবিচ্ছিন্ন। একা একা থাকি। এইসব লিখে কষ্ট দাও কেন?
যশোর ছেড়ে যখন প্রথম ঢাকায় পড়তে যাই। ভাবতাম কেন এখানে প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নেই একটা। শুধু শুধু ওই মরার ঢাকায় কেউ যায়? এখন এই ১০ বছর পর যশোরে ঠিকই প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে গেছে। এখন নিশ্চয়ই আমার মত কেউ বাড়ি থেকেই পড়তে যেতে পারে। আমার মনে হয় ১০ বছর পর এই যে দেশ ছেড়ে বিদেশে উচ্চশিক্ষা নিতে আসা এটাও আর লাগবে না। বিশ্বমানের সব গবেষণাকেন্দ্র আমাদের দেশেই থাকবে। তাও ভালো আমরা মোবাইল ইন্টারনেটের যুগে আছি। সেই চিঠিযুগে কীভাবে মানুষ পারতো পড়তে যেতে অত দূরে ভেবে পাই না।
যাক গিয়ে, তুমি যে স্ত্রী-কন্যা রেখে বিদেশ পাড়ি জমিয়েছ তা জানতাম না। তোমার কষ্টের মাত্রা বুঝতে পারবো না চাইলেও।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
আপনে পারেনও! চন্দ্রা আমার ভাগ্নী!
প্রবাসী মাত্রই হরমোনের রোগী! সাধারণ সত্য।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
পড়ার সময় আমার মনে হয়নি আপনি বউ-বাচ্চার কথা বলছেন। বরং ভাগ্নিই ভেবেছিলাম। পরে স্পর্শর মন্তব্য পড়ে না একটু কনফিউজড হয়ে গিয়েছিলাম। এখন দেখলাম যে নাহ আমার ধারণাই ঠিক ছিল!
আহা !
মনখারাপ করা লেখা
তবু কেন যেন ভালো লাগল পড়ে ।
তাহসিন রেজা
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
অসুস্থ হয়ে একা একা শুয়ে আছি কদিন হল, এমন সময় এমন লেখা মনের কোন জায়গাটায় আঘাত করে বুঝাতে পারবনা।
মনটা বড্ডও খারাপ হয়ে গেল ......
ভালো থাকবেন।
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
আপনিও ভালো থাকুন।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
সুবোধ অবোধ
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
এমন মুহুর্ত আসে সত্যি সত্যি, যখন ভাষাটা যায় হারিয়ে, যখন নির্বাক তাকিয়ে থাকতে হয় আকাশের দিকে, ভেতরের পৃথিবীটা এত দমবন্ধ করা হয় যে, খুলতেই হয় জানালা, এমনকি কনকনে ঠান্ডায়, একটুখানি নিঃশ্বাস নেয়ার আশায়।
হয়ত অত রাখ-ঢাক-সম্পাদনার ভার রাখেননি, তাই ফুটে উঠেছে মানুষের যাপিত জীবনের আদি ও অকৃত্রিম দহন।
.............................
তুমি কষে ধর হাল
আমি তুলে বাঁধি পাল
আপনার মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
মন খারাপ করে দিলি।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
মাঝেমধ্যে মন খারাপ করা ভালু
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
চমৎকার
------------------------------------------------------------------
মাভৈ, রাতের আঁধার গভীর যত ভোর ততই সন্নিকটে জেনো।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
এই যে আমি- দেশে থাকি। পরিবার-পরিজন, বন্ধু, প্রতিবেশী সবাইকে সঙ্গে করে বেঁচে আছি। সুখে আছি। এ লেখা পড়ে আমার মন খারাপ হয় কেন?
হুদাই সাত সকালে মন খারাপ করে দিলেন।
চিন্তা থামানোর কোন চিকিৎসা নাই
---- মনজুর এলাহী ----
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
ভালই তো চলছিল, সব দোষ(কিংবা গুণ) হরমোনের! কিন্তু তীরে এসে দিলেন তো তরিটা ডুবিয়ে। এখন যথারীতি হাবুডুবু খাচ্ছি।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
নিজেকে এলোমেলো করে দেওয়া একটা লেখা, সব শেষে শূণ্যতার মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেওয়া একটা দীর্ঘশ্বাসকে গভীর করে দেওয়ার মতো লেখা।
মাসুদ সজীব
আপনার মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
বেচারা হরমোন! কিন্তু, পরাজয়ই শেষ কথা বলে না, অন্ততঃ, মানুষ তাকে শেষ কথা হিসেবে মানতে রাজী থাকে না। তাই না?
ভাল দিন আসবে।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
ইসরাত
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
পরাজয়ে ডরেনা বীর।
হা হা হা! নিশ্চয়ই!
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
পরাজয়ে ডরেনা বীর।
--রা শা--
আপনার লেখাটি পড়ে আমার সন্তানের কথা মনে পড়ে গেল। সেও বিদেশে বড়সড় একটা স্টুডিও এ্যাপার্টমেন্টে থাকে। তার এপার্টমেন্টটি আবার পঞ্চাশ তলায়। সমস্যাটা বেশী হয় যখন সারা দিনমান বরফ পড়ে। বাইরে বেরুতে পারেনা। তখন হয়তো ফেলে যাওয়া জীবনের অনেক কথাই মনে পড়ে। সে আমায় বলেছিল, গণজাগরন মঞ্চের সাথে সহমত পোষন করার জন্য সে শিকাগোতে মাহবুব মুর্শেদদের সাথে পতাকা হাতে দাঁড়িয়েছিল। মাঝেমধ্যে তার সাথে আলাপ আলোচনায় কখনও সখনও আমরা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ি। সে আমায় বলে, সে তার মনের মধ্যে একটা শক্ত খোলশ তৈরী করে নিয়েছে। প্রয়োজনের সময় সে ঐ খোলশের মধ্যে ঢুকে পড়ে। সন্তান বাৎসল্যে অনেক কিছু লিখে ফেললাম। আপনিও আমার সন্তানতুল্যই, একটু ক্ষমাঘেন্না করে নেবেন। আর হ্যা, যে কথাটা বলতে চাই, 'এ মানব জনম এক পরম পাওয়া ! প্রতিটা মূহুর্ত বাঁচার আনন্দ উপভোগ করুন। বাঁচার মতো বাঁচুন। মন যখন যা চাইবে তাই করুন। এ মানব জীবন বড়ই অনিশ্চিত। আমি বলি, মানব জীবনে ভবিষ্যৎ বলে কিছু নেই। আছে অতীত আর চরমতম সত্য হচ্ছে বর্তমান, মানে ঠিক এই মুহূর্তটি । এ জগতে কে কবে আগামীকাল দেখেছে!'
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
আপনার মন্তব্য পড়ে ভালো লাগলো। তবে এই লেখাটা অনেক আগের। আর লেখায় অনেকটা আবেগ আরোপিত।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
আমার মনে হয়- বর্তমান বলে আসলে কিছু নেই। আমরা যাকে বর্তমান বলে মনে করছি, ধরা যাক ঠিক এই মুহূর্তটি, সেটাও আসলে অতি সাম্প্রতিক অতীত। সুতরাং মানব জীবনে আছে শুধু নিশ্চিত অতীত, আর অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ, বর্তমান বলে কিছু নেই।
মুছে দেয়া মন্তব্য______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
মাত্র আর ক'টা দিন। চা বিরতির পর ফিরে যেতে হবে। আবার সব হরমোন, হরমোন... হরমোন!
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
আপনার লেখার সাথে একাত্বতা প্রকাশ করলাম প্রবাসী হিসেবে। আপনার তবু সুবিধা আছে, দেখবার কেউ নেই। আমার এতো মানুষ দেখবার যে ভাবনাগুলোকে লুকিয়ে ফেলতে হয় মাঝে মাঝে। কেউ দেখে ফেলে এই ভয়ে।
রীতু
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
ব্যাপার না- ভালো হলে সেরে যায়...
কড়িকাঠুরে
ঠিক বলেছেন।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
খুব মায়া দিয়ে লিখছেন ভাইডি, এইবার হরমোন নিয়ে কড়া পাকের একখানা লেখা দ্যান
facebook
ঠিক আছে দেখি!
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
কাজেই অহেতুক নিজেকে কষ্ট না দিয়ে টুক করে একবারটি দেশে গিয়ে ভাবী-বাচ্চা(আপনার মেয়ের নামটা কিন্তু বেশ মিষ্টি!)কে
দেখে আসুন। অনেক শুভকামনা। বিজ্ঞান বিষয়ক লেখার পাশাপাশি আরো কিছু গপসপও লেখুন না বাপু
আর কিছু লিখতে পারিনা। লিখতে পারলে লিখব।
চন্দ্রা আমার ভাগ্নী!
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
...............................................................
“আকাশে তো আমি রাখি নাই মোর উড়িবার ইতিহাস”
নতুন মন্তব্য করুন