এই লেখাটা যখন লিখেছি তখন ইবোলা ভাইরাস এবং ইভিডি'র অনেক বিষয় অস্পষ্ট ছিল। আমি চেষ্টা করেছি লেখাটিতে সেই সময়ের সব থেকে সাম্প্রতিক তথ্য দেয়ার। ইবোলা পর্যবেক্ষণ এবং গবেষণা গতি বৃদ্ধি পাওয়ায় পরবর্তীতে ইবোলা সম্পর্কে আমরা অনেক 'নিশ্চিত' তথ্য পেয়েছি। সেই সকল তথ্য দিয়ে এই লেখাটিকে "আপডেট" করা হচ্ছে না। সেইজন্য সকল পাঠককে জানিয়ে রাখছি, এই লেখাটিতে দেয়া ইবোলা সম্পর্কিত সকল তথ্য সাম্প্রতিক (এবং সেই হিসেবে সঠিক) নয়।
ইবোলা বিষয়ক লেখা লিখতে গিয়ে কীবোর্ড দিয়ে কুৎসিত গালি বের হচ্ছে! বিরক্ত লাগে, লিখতে ইচ্ছে করে না। লিখে বস্তুত লাভ হয়না।
তাহলে এই লেখাটা কেন?
অনেকে প্রশ্ন করেন, জানতে চান ইবোলা বিষয়ে। একটা ব্লগে সকলের প্রশ্নের জবাব দিলে সুবিধা। কেউ কেউ খানিকটা দুঃশ্চিন্তাগ্রস্থ, কৌতূহল মিটলে তাঁরা হয়তো খানিকটা সুস্থির হবেন। আর তাছাড়া, খানিক ব্লগরব্লগর করলে ক্ষোভ কমে যায় বলে শুনেছি!
এই ব্লগটির দুটি অংশ। প্রথম অংশে আপনারা যা জানতে চাইবেন সেসব প্রশ্নের জবাব দেব। আপনারা যা মন্তব্য করবেন সেসব যতটুকু প্রয়োজনিয় মনে হবে লেখার সঙ্গে যোগ করে দেব। প্রশ্ন এই ব্লগের মন্তব্যে করলেই সবচে ভালো। ইমেইলে প্রশ্ন করা যাবে anarjo.sangeet এট জিমেইল-এই ঠিকানায়। ফেসবুক থেকে মন্তব্য করেও মন্তব্যের অংশে প্রশ্ন করা যাবে। আমি চেষ্টা করব কয়েক ঘন্টা পরপর সবার প্রশ্নের জবাব দিতে। যতক্ষণ প্রশ্ন পাবো ততক্ষণ। দ্বিতীয় অংশে ভাইরাস, জৈবনিরাপত্তা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে খানিকটা ব্লগরব্লগর করতে পারি হয়ত।
আপাতত প্রথম অংশে সাধারণ কিছু তথ্য দিয়ে রাখছি।
বলে রাখি, প্রথমিক তথ্যগুলো আমার লেখার চাইতে অনেক ভালো করে দেয়া আছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, সিডিসি ইত্যাদি ওয়েবসাইটে। ইংরেজি পড়তে আপত্তি না থাকলে বিশ্বস্থ ওয়েবসাইট থেকে প্রথমিক তথ্যগুলো আরো ভালোভাবে জানতে পারেন।
১. ইবোলা কী?
- ইবোলা একটি নদীর নাম। ইবোলা ভাইরাস একটি ভাইরাসের গোত্রের নাম। ফিলোভিরিডি পরিবারের অংশ এরা। এই পরিবারে আরো দুটি গোত্র রয়েছে। ইবোলা গোত্রে রয়েছে ৫টি ভিন্ন প্রজাতি। এদের মধ্যে তিনটি প্রজাতি মানুষের রোগ সৃষ্টি করে। ইবোলা ভাইরাস ডিজিজ (EBV) বলে পরিচিত এই রোগ। আগে বলা হত, ইবোলা হেমোরেজিক ফিভার। ইবোলার বাকি দুটি প্রজাতির একটি চীন এবং ফিলিপাইনে মানুষের ভেতর সংক্রামিত হতে দেখা গেলেও কোনো রোগ সৃষ্টি করে বলে জানা যায়নি।
২. কীভাবে ইবোলার সংক্রমণ হয়?
- এই প্রশ্নের জবাব দুইভাগে দিতে হবে। প্রথমত, বন্য প্রাণি থেকে মানুষের মাঝে ইবোলা সংক্রামিত হতে পারে। যদি সেই প্রাণিটি ইবোলায় সংক্রামিত হয়ে থাকে অথবা ইবোলার বাহক হয়ে থাকে। বাংলাদেশে যদি সেরকম হয়, তাহলে সবচে বেশি সম্ভাবণা বাদুড় থেকে সংক্রামিত হওয়ার। বাদুড় অনেকগুলো ভয়াবহ ভাইরাসের বাহক। এছাড়া যেহেতু সংক্রামিত অ্যান্টেলোপ (হরিণ জাতিয় প্রাণি। বাংলা নাম কী? কৃষ্ণসারমৃগ? সারং?) থেকে ইবোলা ছড়াতে পারে সেহেতু বাংলাদেশের গবাদিপশু সংক্রামিত হওয়ার সম্ভাবণা এবং সেখান থেকে মানুষের মাঝে ছড়ানোর সম্ভাবণা শূন্য নয়। গবাদিপশু অবশ্য ইবোলার প্রাকৃতিক বাহক নয়। কেবল দূর্ঘটনাবশত সংক্রামিত হতে এবং সংক্রমণে সহায়ক হতে পারে।
দ্বিতীয়ত, মানুষ থেকে মানুষের মাঝে ইবোলা ভাইরাস ছড়াতে পারে। প্রাণি থেকে ছড়াক অথবা মানুষ থেকে, ছড়াবে সবসময়ই শরীর নির্গত জলীয় পদার্থ থেকে। রক্ত, সর্দি জাতিয় পদার্থ, লালা, লসিকা সে যা-ই হোক, এখন পর্যন্ত আমরা জানি যে, শরীর থেকে নির্গত যেকোন তরল পদার্থ ইবোলা ভাইরাস বয়ে নিয়ে যেতে পারে।
৩. নিঃশ্বাস থেকে ইবোলা ছড়ায়?
- এখন পর্যন্ত আমরা জানি, ছড়ানো সম্ভব। মানুষের নিঃশ্বাসে জলীয় পদার্থ থাকে। ঠান্ডা কাঁচ/আয়নার উপর শ্বাস ফেললেই দেখতে পাবেন মানুষের নিঃশ্বাসে কীরকম জলীয় পদার্থ থাকে।
৪. কীভাবে নিরাপদ থাকবো?
- যে জিনিসটাকে ভয় পাওয়া দরকার তাকে ভয় পান। দূরে থাকেন। আফ্রিকার যেসব দেশে সংক্রমণ হয়েছে সেইসব দেশে ভ্রমণে যাবেন না। বাদুড় থেকে দূরে থাকবেন। সবসময়। বাদুড়ে খাওয়া ফলমুল থেকেও দূরে থাকবেন। এই সতর্কতা কেবল ইবোলা নয়, আরো কয়েকটি ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে আপনাকে খানিকটা নিরাপত্তা দিতে পারে।
সংক্রামিত দেশগুলো থেকে বাংলাদেশে আসা ব্যক্তিদের যদি সরকার বাংলাদেশে ঢুকতে দিয়ে থাকে (আমি জানিনা দেয়া হয়েছে/হচ্ছে কিনা) তাহলে নিজ দায়িত্বে তাদের সংস্পর্শ থেকে দূরে থাকুন। যদি কেউ সংক্রামিত হয়ে সুস্থ হয়ে গিয়ে থাকেন, তাহলেও তার সংস্পর্শ থেকে দূরে থাকুন। আমি দুঃখ প্রকাশ করছি যদি আমার কথা অমানবিক মনে হয়। সংক্রামিত অথবা ঝুঁকিতে থাকা সকল মানুষের প্রতি আমি সহানুভূতিশীল। কিন্তু সেই সহানুভূতির প্রমাণ দেয়ার জন্য অন্য কারো সংক্রমণের ঝুঁকিতে যাওয়া আমি নির্বুদ্ধিতা বলে মনে করি। পর্যাপ্ত জৈবনিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে দক্ষ ব্যক্তিরা সংক্রামিত অথবা ঝুঁকিতে থাকা মানুষদের সংস্পর্শে সেবা অথবা গবেষণার প্রয়োজনে যেতে পারেন।
৫. ইবোলা সংক্রমণের লক্ষণ কী?
- ইবোলা ভাইরাস ডিজিজের লক্ষণ অনেকগুলো মারাত্মক রোগের সঙ্গে মিলে যায়। প্রাথমিক ভাবে হঠাৎ জ্বর, ত্বকে ফুসকুড়ি, হঠাৎ মারাত্মক দূর্বলতা, মাংসপেশিতে ব্যথা, সঙ্গে মাথাব্যথা এবং গলাব্যথা দেখা যেতে পারে। পরবর্তী পর্যায়ে বমি এবং পাতলা পায়খানা হতে পারে। যকৃত এবং বৃক্কের কার্যকারিতা কমে যেতে অথবা একেবারে বন্ধ হয়ে যেতে পারে। কখনো কখনো শরীরের ভেতরে এবং বাইরে রক্তপাত হতে পারে।
শরীরের রোগপ্রতিরোধী কোষ, রক্তের শ্বেতকণিকা এবং অণুচক্রিকা কমে যায় ইবোলা ভাইরাস ডিজিজে। বেড়ে যায় রক্তে যকৃতনিঃসৃত এনজাইমের পরিমাণ।
ইবোলা ভাইরাস ডিজিজের লক্ষণগুলোর সঙ্গে মিলে যায় কলেরা, ম্যালেরিয়া, টাইফয়েড, প্লেগ, রিকেটশিওসিস (বিশেষ ধরণের ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ), শিগেলোসিস (ব্যাকটেরিয়াজনিত পেটের অসুখ), লেপ্টোস্পাইরোসিস (বিশেষ ধরণের ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ), মেনিনজাইটিস, হেপাটাইটিস এবং আরো কিছু ভাইরাসজনিত জ্বর এবং রক্তক্ষরণের লক্ষণ! সেইজন্য প্রাথমিক লক্ষণ থেকে ইবোলার সংক্রমণ নিশ্চিত করা সহজ নয়। [সূত্র: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা]
৬. ইবোলা ভাইরাস সংক্রমণের কতদিন পর রোগের লক্ষণ প্রকাশ পেতে পারে? সংক্রমণের পর সুস্থ হয়ে গেলে কতদিন পর্যন্ত শরীরে ভাইরাস থেকে যেতে পারে?
- ২-২১ দিন। তারমানে আজকে কারো শরীরে ইবোলা ভাইরাস প্রবেশ করলে পরবর্তী ২ থেকে ২১ দিনের মধ্যে রোগের লক্ষণ প্রকাশ পাওয়ার সম্ভাবণা সবচে বেশি। এই সময়ে সংক্রামিত ব্যক্তির শরীরে রোগের লক্ষণ প্রকাশ না পেলেও তার থেকে ভাইরাস অন্যদের মাঝে ছড়াতে পারে।
যদি কেউ ইবোলা ভাইরাস ডিজিজ থেকে সুস্থ হয়ে ওঠেন তবে তার শরীরেও পরবর্তী ৬১ দিন পর্যন্ত ভাইরাসের উপস্থিতি থাকার প্রমান পাওয়া গেছে। সুস্থ হয়ে ওঠার পর সর্বোচ্চ কতদিন পর্যন্ত কারো শরীরে ইবোলা ভাইরাস থাকতে পারে সেই তথ্যটি সম্পর্কে আমি এখনো একশোভাগ নিশ্চিত নই। নিশ্চিত হলে সেই তথ্যটি এখানে যোগ করে দেব। কিন্তু অন্তত ৬১ দিন যে সুস্থ হয়ে ওঠা রোগির শরীরে ভাইরাস থেকে যেতে পারে সেটার প্রমাণ রয়েছে। তার মানে, এই সময় পর্যন্ত সুস্থ হয়ে ওঠা ব্যক্তির শরীর থেকেও অন্যদের মাঝে ভাইরাস সংক্রামিত হতে পারে।
৭. একটি টিকা তৈরি এবং বাজারজাত করতে কত সময় লাগতে পারে? কী প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে একটি টিকা বাজারজাত করা হয়?
- একটি টিকা তৈরি করতে কতদিন সময় লাগবে সেটা বলা একেবারেই সম্ভব নয়। ধারণা করাও মুস্কিল। কেন মুস্কিল সেটি বোঝাতে গেলে টিকা তৈরির দুটি অংশের কথা উল্লেখ করতে হবে। প্রথমটি হচ্ছে, সেই গবেষণা যার মাধ্যমে একটি কার্যকর টিকা তৈরি করা হবে। দ্বিতীয়টি হচ্ছে, একটি সক্রিয় টিকা মানুষের জন্য নিরাপদ কিনা সেটির জন্য বাস্তব পরীক্ষণ।
সক্রিয় একটি টিকা তৈরির গবেষণার অনেকগুলো ক্ষেত্র থাকতে পারে। আবার সকল রোগের কার্যকর এবং গ্রহনযোগ্য টিকা তৈরি সম্ভব নয়। হয়তো কোন জীবাণুর বিরুদ্ধে তৈরি শরীরের অ্যান্টিবডি প্রাকৃতিকভাবে এত অল্পসময় টিকে থাকে যে কৃত্রিমভাবে সেই অ্যান্টিবডির জন্য টিকা তৈরি করা যৌক্তিক নয়। যেমন ধরুন, হয়তো কখগ জীবাণুর সংক্রমণ হলে শরীরে যে প্রাকৃতিক অ্যান্টিবডি তৈরি হয় তা মাত্র ৬ মাস টিকে থাকে। সেইক্ষেত্রে কৃত্রিমভাবে টিকা তৈরি করে যদি ওই একই অ্যান্টিবডি তৈরি করতে শরীরকে সংকেত দেয়া হয়, তাহলেও তা মাত্র ৬ মাস শরীরে টিকে থাকবে। একটি টিকার কার্যকারীতা যদি মাত্র ৬ মাস হয় তাহলে সেটি সাধারণ হিসেবে গ্রহনযোগ্য টিকা নয়। সেজন্য কখগ জীবাণুর জন্য টিকা উৎপাদন হয়তো গ্রহনযোগ্য প্রতিরোধ ব্যবস্থা হবে না।
টিকা তৈরির নানান ক্ষেত্র, আর তার নানান হিসেব। ছোট পরিসরে ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয়। যদি সকল বন্ধুরতার পরেও একটি টিকা তৈরি করা হয় তখনও হুট করে সেটি বাজার জাত করা সম্ভব নয়। প্রথমে প্রাণি এবং পরে মানুষের উপর সরাসরি পরিক্ষা করে দীর্ঘ সময় কঠোর পর্যবেক্ষণে রেখে তারপর নিশ্চিত হতে হয় সেটি ওই রোগটির জন্য বাস্তবে কার্যকর কি না! কোন একটি টিকা বাস্তবে রোগের বিরুদ্ধে কার্যকর হলে তারপর নিশ্চিত হতে হয় সেটি অন্য কোনভাবে মানুষের জন্য ক্ষতিকর কিনা!
সংক্ষেপে, একটি কার্যকর টিকা কতদিনে তৈরি করা যেতে পারে তার কোন নিশ্চয়তা দেয়া যায় না। একটি টিকা তৈরি করা গেলে সেটি বাজারজাত করার প্রক্রিয়ায় যুগ পেরিয়ে যায়।
৮. আমাদের শরীরে ইবোলার ইমিউনিটি নেই, সেই কারণে মহামারী হিসাবে ছড়িতে পড়তে পারে। শরীরে ভাইরাসের ইমিউনিটি ঠিক কিভাবে তৈরি হয় (ভ্যাক্সিনেশন ছাড়া)?
- অতি সংক্ষেপে জবাব দিতে চেষ্টা করছি। মানুষের শরীরে জীবাণুর বিরুদ্ধে দুই রকমের প্রতিরোধ ব্যবস্থা আছে। প্রথমটি সবসময় সক্রিয়। যেমন, দেহের ত্বক সকল জীবাণুর বিরুদ্ধে প্রাথমিক প্রতিরোধ। ত্বকে জীবাণুরোধী পদার্থের উপস্থিতি এবং মৃত কোষ ঝরে পড়ার প্রক্রিয়া জীবাণু থেকে সুরক্ষা দেয়। ত্বক নিজেই একটি দেয়াল বিশেষ, যা ভেদ করে জীবাণু প্রবেশ করতে পারেনা। রক্তে বিশেষ ধরনের প্রোটিন, লালায় ব্যাকটেরিয়ারোধী পদার্থ, জীবাণু ধরে গিলে খেয়ে ফেলা গিলেখাদক কোষ, এসবই জীবাণুর বিরুদ্ধে প্রাথমিক প্রতিরোধ ব্যবস্থা যা সকল জীবাণুর বিরুদ্ধে একই রকমভাবে কাজ করে।
শরীরের দ্বিতীয় প্রতিরোধ ব্যবস্থা হচ্ছে সেই বিশেষায়িত কোষ এবং প্রোটিনের দল যারা প্রাথমিকভাবে কোন অচেনা জীবাণুর বিরুদ্ধে অকার্যকর। শরীরে কোন জীবাণু প্রবেশ করলে বিশেষ ব্যবস্থায় এই বিশেষায়িত কোষেরা সেই জীবাণুকে চিনে নেয় এবং সেটির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের দীর্ঘমেয়াদী প্রস্তুতি নেয়। জীবাণু চিনে নেয়া এবং প্রস্তুতির এই প্রক্রিয়ায় খানিকটা সময়ের প্রয়োজন। কিন্তু যেহেতু এই কোষ এবং প্রোটিনেরা বিশেষায়িত, তাই এরা একবার জীবাণুকে চিনে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারলে তা জীবাণুর বিরুদ্ধে সবচে বেশি কার্যকর। টিকা দেয়া মানে হচ্ছে, কোন জীবাণু অথবা জীবাণুর অংশবিশেষ শরীরের এইসব বিশেষায়িত জীবাণুরোধী কোষের কাছে এমনভাবে উপস্থাপন করা, যেন তারা জীবাণুটি শরীরে প্রবেশের আগে থেকেই তাকে চিনে রেখে প্রস্তুত থাকতে পারে। শরীরের বিশেষায়িত জীবাণুরোধী কোষেদের এরকম জীবাণু চিনে রেখে প্রস্তুত থাকাকেই আমরা ওই জীবাণুর বিরুদ্ধে শরীরের 'ইমিউনিটি' বলতে পারি।
সেইজন্য টিকা না দিয়ে প্রাকৃতিক 'ইমিউনিটি' পেতে হলে ওই জীবাণু দিয়ে সংক্রামিত হতে হবে। এটি কিন্তু আমি কেবল শরীরের দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রতিরক্ষার কথা বলছি। প্রথম পর্যায়ের প্রতিরোধ তো শরীরের সব জীবাণুর বিপক্ষে সবসময় থাকে।
৯. যেসব দেশে ইবোলার প্রাদূর্ভাব দেখা গেছে সেসব দেশ থেকে কোন ব্যক্তি বাংলাদেশে এলে ওই ব্যক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশে ইবোলার সংক্রমণ শুরু হওয়ার ঝুঁকি কেমন? এই ঝুঁকি এড়াতে কী ধরনের সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে?
- ইবোলা সংক্রামিত অঞ্চল থেকে কেউ সংক্রামিত নয় এমন অঞ্চলে গেলে ওই ব্যক্তি (অথবা সংক্রামিত প্রাণি) থেকে ভাইরাস ছড়াতে পারে। ছড়ানোর ঝুঁকি কতটা হবে তা নির্ভর করে ভ্রমণরত ব্যক্তির বাহক হওয়ার সম্ভাবণা এবং তাকে স্থানীয় স্বাস্থ নিরাপত্তা ব্যবস্থা কীভাবে গ্রহন করছে তার উপর। বুঝিয়ে বলতে গেলে এই বিষয়টি নিয়ে আলাদা পোস্ট দেয়া দরকার হবে। কিন্তু এটুকু জেনে রাখতে পারেন যে, ভ্রমনরত কারো মাধ্যমে একদেশ থেকে আরেক দেশে ইবোলা ছড়াতে পারে। ভালোভাবেই পারে।
ভ্রমনরত কারো মাধ্যমে যাতে বাংলাদেশে ইবোলা না ছড়ায় সেইজন্য যে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে সে আমাদের সাধারণ মানুষদের করা সম্ভব নয়। এটা করতে হবে ব্যপকভাবে সরকারকে। অ্যাতো বিস্তীর্ণ বিষয়ের উপর এই সতর্কতার ধরন নির্ভর করে যে পুরো দস্তুর একটা সংগঠন প্রয়োজন হয় এসব ক্ষেত্রে। পরিস্থিতি এবং অঞ্চল ভেদে গবেষণা করে সম্ভাব্য সংক্রমণের ঝুঁকিতে কীরকম নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিতে হতে পারে সেই বিষয়ে স্পষ্ট তথ্য সংগ্রহ করে রাখতে হয়। প্রতিটি দেশকে সম্ভাব্য এরকম পরিস্থির মোকাবেলা করার জন্য সবসময় প্রস্তুত থাকতে হয়। আমি খুব কম জানি। তথ্য আমার কাছে সহজলভ্য নয়। কিন্তু যেটুকু জানি তাতে আমার মনে হয় যে বাংলাদেশের এই প্রস্তুতি নেই। আমি এখনো ইবোলা সংক্রমণ প্রতিরোধে বাংলাদেশের কী প্রস্তুতি রয়েছে সেই তথ্য সংগ্রহ করার চেষ্টা করছি।
১০. ZMapp নামের এটি ওষুধ ব্যবহারে ইবোলা আক্রান্ত রোগীরা সুস্থ হয়ে উঠছেন বলে কোথাও কোথাও দেখা গেছে। বাস্তবে এই ওষুধটি কতটা কার্যকর এবং গ্রহনযোগ্য?
- ZMapp (তিনটি ভিন্ন অ্যান্টিবডির মিশ্রণ) একটি পরীক্ষামূলক ওষুধ। পরীক্ষামূলক অর্থ হচ্ছে, যেসব প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে গেলে ওষুধটি কার্যকর এবং নিরাপদ বলে নিশ্চিত হওয়া যেত সেসব প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে এটি যায়নি। সেইজন্য এটি স্বীকৃত ওষুধ নয়। যৌক্তিক কারণেই এটি স্বীকৃত নয়।
প্রাথমিক একটি পরীক্ষায় গবেষণাগারে বানরের উপর প্রয়োগ করে দেখা গেছে এটি ইবোলা ভাইরাস ডিজিজ নিরাময় করতে পারে। যেহেতু এই মুহূর্তে মানুষের হাতে আর কোন উপায় নেই, আর ইবোলা সংক্রামিত দেশগুলো ইভিডি'তে বিপর্যস্ত, তাই এই ওষুধটি সীমিত পর্যায়ে মানুষের উপরেও প্রয়োগ করা হয়েছে। লাইবেরিয়া সরকার এই অপরিক্ষিত ওষুধটিকেই ব্যবহার করবার অনুমতি দিয়েছে। কেউ কেউ ব্যক্তিগত পর্যায়ে এই ওষুধ গ্রহন করেছেন। দেখা গেছে মানুষের উপর প্রয়োগেও ওষুধটি প্রাথমিকভাবে কার্যকর। কিন্তু সেই কার্যকারিতাও সঠিক গবেষণায় প্রমাণিত এবং প্রকাশিত হয়নি এখনো।
সম্ভাবণা রয়েছে যে ZMapp একটি কার্যকর এবং নিরাপদ ওষুধ হিসেবে স্বীকৃতি পাবে। কিন্তু আবার এই ওষুধটির কোন বিরূপ পার্শপ্রতিক্রিয়ার সম্ভাবণাও উড়িয়ে দেয়া যায় না। মানুষের শরীরে এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব কী হবে সেটাও আমরা জানিনা। সবমিলিয়ে এটি একটি পরীক্ষামূলক ওষুধ যা জরুরি পরিস্থিতিতে ব্যবহার করে খানিকটা ইতিবাচক ফল পাওয়া গেছে। কিন্তু এটি এখনো অন্ধের মতো সাপ নাকি দড়ি না জেনেই কিছু আঁকড়ে ধরে টিকে থাকার চেষ্টা!
১১. যেহেতু ইবোলার কোন স্বীকৃত চিকিৎসা নেই, তাহলে যারা সুস্থ হচ্ছে তারা কি ঊপসর্গহীন ভাইরাসটি বয়ে বেড়াচ্ছেন? তাদের থেকে কি সংক্রমণ হতে পারে?
- অনেক সংক্রামক রোগের জীবাণুই সুস্থ হয়ে ওঠার পরেও স্বল্পমাত্রায় শরীরে থেকে যেতে পারে। যিনি সংক্রামিত হয়ে সুস্থ হয়েছেন তার শরীরের হয়তো ওই জীবাণু কোন রোগ সৃষ্টি করবে না কিন্তু তার শরীর থেকে অন্যের মাঝে ছড়িয়ে গিয়ে রোগ সৃষ্টি করতে পারে।
ইবোলার জীবাণু সুস্থ হয়ে ওঠার ৬১ দিন পরেও সুস্থ হয়ে ওঠা ব্যক্তির শরীরে পাওয়া গেছে। কিন্তু সর্বোচ্চ কতদিন ইবোলার জীবাণু শরীরে থাকতে পারে এবং কতদিন পর্যন্ত সুস্থ ব্যক্তির শরীর থেকেও ইবোলা ছড়াতে পারে সেটা নিশ্চিত হতে পারছি না। নিশ্চিত হতে পারলে তথ্য যোগ করে দেব।
১২. আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি কাশির মাধ্যমে ছড়ানো জলীয় কণার সংস্পর্শে এলেই কি কেউ ইবোলায় সংক্রামিত হবেন?
- আমরা বলতে পারি যে হওয়ার সম্ভাবণা রয়েছে। শরীর থেকে নির্গত যেকোন তরল এই ভাইরাস বয়ে নিয়ে যেতে পারে বলে এখনো আমরা জানি। আরেকটা তথ্য দিয়ে রাখি, ইবোলা সংক্রমণ বিষয়ে গবষণার পরিমাণ খুব বেশি নয়। অনেক কিছুই আমরা "নিশ্চিত" করে জানিনা। আমর সম্ভাবণা বিচার করি।
তবে এই নয় যে, আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি-কাশির মাধর্মে নির্গত জলীয় কণা অথবা শরীর নিসৃত অন্য তরলের সংস্পর্শে এলেই কেউ ইবোলায় সংক্রামিত হবেন। কেউ কেউ সংক্রামিত না-ও হতে পারেন। এই বিষয়টা কয়েকটি সংক্রমণের নীতিমালায় উপর নির্ভর করে। কিন্তু সেই আলোচনা এখানে করার জন্য উপযুক্ত নয়। আমরা কেবল জেনে রাখতে পারি যে সংস্পর্শ থৈকে সংক্রমণ হতে পারে, কিন্তু হতেই হবে তেমন নয়।
১৩. যেহেতু বুঝতে সংক্রমণের পরেও অনেকটা সময় রোগের লক্ষণ প্রকাশ পাচ্ছে না, তাহলে কীভাবে সংক্রমিত ব্যক্তি/প্রাণি থেকে আমর সতর্ক থাকবো (যেহেতু জানতেই পারছি না, কে সংক্রামিত হয়েছে আর কে হয়নি)?
- এই নিরাপত্তা দেয়ার কাজটি করবে স্থানীয় প্রশাসনের স্বাস্থ্য এবং জৈবনিরাপত্তা বিভাগ। তারা আগে থেকেই নিশ্চিত হবে কারা সংক্রমণের ঝুঁকিতে রয়েছে। যারা সংক্রামিত হয়েছেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে তাদেরকে আলাদাভাবে পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে। এই প্রক্রিয়ার জন্য, আগেই বলেছি, নির্দিষ্ট বিশেষায়িত এবং শক্তিশালী প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন।
১৪. কেউ কেউ যে ইবোলায় সংক্রামিত হয়ে সুস্থ হয়ে যাচ্ছেন, তারা কীভাবে সুস্থ হচ্ছেন?
- আমাদের সৌভাগ্য হচ্ছে, খুব ভয়াবহ রোগেরও মৃত্যুহার সাধারণত শতভাগ হয়না। অনেকেই প্রাকৃতিক রোগপ্রতিরক্ষার শক্তিতে লড়াই করে সুস্থ হয়ে ওঠেন। এমনও দেখা গেছে কেউ ভয়াবহ রোগের জীবাণু বয়ে বেড়ায়, তার শরীর থেকে জীবাণু অন্যের মাঝে ছড়ায়, অথচ সে নিজে সেই রোগে আক্রান্ত হয়না (গুগল করে 'টাইফয়েড মেরি'র ইতিহাস পড়ে নিতে পারেন)। শরীরের প্রাকৃতিক রোগপ্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ভিন্নতার জন্যে এরকম হতে পারে। এইখানে এই বিষয়টি কেবল এতটুকুই ব্যাখ্যা করা সম্ভব।
১৫. আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত বাঙালিদের কখন নিরাপত্তার স্বার্থে দেশে ফিরে আসা উচিত হবে?
- এটি নির্ভর করবে অনেকগুলো বিষয়ের উপর। যদি দেশটি ইবোলার সম্ভাব্য প্রাকৃতিক বাহক বাদুড় প্রজাতিগুলোর ভৌগলিক আবাস্থল হয়ে থাকে তাহলে সেটি বিপজ্জনক। স্থানীয় প্রশাসন কীরকম নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে সেটা সবচে বেশী গুরুত্বপূর্ণ। সংক্রামিত অঞ্চলগুলো থেকে কেউ দেশটিকে আসতে পারছে কিনা সেটাও দেখতে হবে। অনেক দেশেই হয়তো সীমান্ত বন্ধ করে দেয়া হয় কিন্তু সে কেবল কাগজে কলমে। ঠিক ঠিক সীমান্ত বন্ধ হয় না। সবকিছু নির্ভর করে স্থানীয় প্রশাসনের স্বাস্থ্য এবং জৈবনিরাপত্তা ব্যবস্থা কীরকম শক্তিশালী তার উপর। শক্তিশালী নিয়ন্ত্রক থাকলে এমনকি একটি দেশের ভেতরেও সংক্রমণ নির্দিষ্ট অঞ্চলে সীমাবদ্ধ করে ফেলা যায়।
সবার কথা বলছি না, কিন্তু আফ্রিকার ইবোলা সংক্রামিত কোন কোন অঞ্চলের কিছু মানুষ এতো বেশি নির্বোধ যে তা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। সম্প্রতি একটি ইবোলা সংক্রামিত ব্যক্তিদের আলাদা করে রাখা চিকিৎসালয় (Quarantine) লুট করে নিয়ে গেছে স্থানিয় লোকজন। আক্রান্ত রোগীদের বাড়িতে নিয়ে চলে গেছে। অনেক স্থানে হাসপাতালে আলাদা করে রেখে দেবে সেই ভয়ে রোগের লক্ষণ প্রকাশ পাওয়ার পরেও সেটি স্বীকার করেনি কেউ কেউ। বাঙালিরা যে দেশে অবস্থান করছেন সেইসব দেশের সামাজিক পরিস্থিতি যদি এরকম হয় তাহলে পার্শবর্তী দেশে সংক্রমণ ছড়ানোর আগেই দেশে ফিরে আসা ভালো। স্থানীয় বাংলাদেশি দূতাবাসও এই বিষয়ে প্রয়োজনিয় পরামর্শ দিতে পারে। অন্তত তাদের তা দেয়া উচিত।
চলবে।
কয়েকঘন্টা পর আরো অনেকখানি লিখব বলে আশা করি। ততক্ষণে আপনাদের প্রশ্ন করার সুযোগ দিয়ে লেখাটা পোস্ট করে দিলাম।
ইবোলা বিষয়ক আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে নির্দ্বিধায় জিজ্ঞেস করুন মন্তব্যের অংশে অথবা ইমেইলে।
আমি যেহেতু খানিকটা সময় জার্মানিতে পড়েছি, তাই জার্মানির জৈবনিরাপত্তা পরিস্থিতির কথা বলতে পারি। রবার্ট কখ বলে জার্মানির এক অণুজীববিজ্ঞানী ছিলেন। চিকিৎসাবিদ্যার যেসব শিক্ষার্থী তাঁর নাম জানেন না, ধরে নিতে পারেন তারা বাংলাদেশের অলৌকিক শিক্ষাব্যবস্থার জোরে টিকে আছে। নয়ত তাদের টিকে থাকা উচিত হতনা! এতো জোর দিয়ে এই কথা বলার কারণ হচ্ছে বোঝাতে চেষ্টা করা রবার্ট কখ চিকিৎসা বিজ্ঞানের জগতে কতো উঁচুস্তরের প্রতিভা ছিলেন। রবার্ট কখের যে গবেষণাগার, সেটি বার্লিনে। এখন সেটির আধুনিকায়ন হয়েছে, বড় বড় বাড়ি আর ল্যাবরেটরি হয়েছে। সেই প্রতিষ্ঠানটি এখন রবার্ট কখ ইন্সটিটিউট নামে পরিচিত। (রবার্ট কখের গবেষণাগারটি এখন যাদুঘর হিসেবে সংরক্ষিত। আমার দূর্ভাগ্য, আমি যখন ওই ইন্সটিটিউটে কাজ করেছি তার আগেপিছে দীর্ঘসময় সংস্কার কাজের জন্য যাদুঘরটি বন্ধ ছিল)।
রবার্ট কখ ইন্সটিটিউট জার্মানির মানুষের জন্য সংক্রামক রোগের উপর নজরদারি করে। ইউরোপের এবং বিশ্বস্বাস্থের উপরও প্রয়োজনিয় নজরদারি করে এই প্রতিষ্ঠানটি। অনেকগুলো গবেষণা দল এবং গবেষণাগার নিয়ে পূর্ণ হয় রবার্ট কখ ইন্সটিটিউট। ওই গবেষণার দল আর গবেষণাগারগুলোর মধ্যে একটা ভাগ হচ্ছে বিশেষ ধরনের জীবাণু এবং জৈব নিরাপত্তা বিষয়ক। শুধু বিশেষ ধরণের জীবাণু এবং জৈবনিরাপত্তার বিষয়টি দেখার জন্য এই ভাগে রয়েছে ৭ টি ভিন্ন ভিন্ন গবেষণাগার। অণুজীববিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের জন্য ওই জায়গাটা স্বর্গের মতো। সেইখানে রয়েছে চতুর্থ পর্যায়ের জৈবনিরাপত্তা সম্বলিত গবেষণাগার। সেই গবেষণাগারে জগতের সবচে মারাত্মক আর সংক্রামক জীবাণু নিয়ে গবেষণা করা হয়। সে এক এলাহী কারবার। ওই গবেষণাগার থেকে একটা বালুকণাও দুম করে বাইরের পরিবেশে আসতে পারেনা। বাতাসটা পর্যন্ত তার নিয়ন্ত্রিত হয় আলাদাভাবে। সেখানে বাতাস ঢুকতে বেরোতে গেলেও তাকে পরীক্ষিত হয়ে বের হতে হয়!
ইবোলা ভাইরাস নিয়ে যখন হইচই হচ্ছে সরাবিশ্বে তারও খানিক আগে, সাধারণ মানুষের টের পেয়ে যাওয়ার আগেই, ইবোলা ভাইরাস চলে গেছে রবার্ট কখ ইন্সটিটিউটে। সেখানে চতুর্থ পর্যায়ের জৈবনিরাপত্তার ভেতরে রেখে সেই ভাইরাসকে নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। ভালোমত পরিক্ষা করে দেখা হয়েছে ভাইরাস নিষ্ক্রিয় হল কী না! তারপর সেই নমুনা চলে গেছে বিশ্বের নানান গবেষণাগারে। কতকটা তার ইলেক্ট্রন অণুবীক্ষণ যন্ত্রের নীচে রেখে দেখা হয়েছে সে কেমন দেখতে, তারপর সেই ছবি দেখে দেখে শিক্ষার্থিরা শিখতে শুরু করেছে তার রকম সকম।
গবেষণা আর গবেষণা!
সেই ভাইরাস কী খায়?
বলে কী! ভাইরাসে খাবে কেন! সে কী কোন প্রাণি নাকি! সে খায়না, শ্বাস নেয়না, বাথরুমে যায়না, প্রেম ভালোবাসার চক্করে নেই, চলাফেরা করেনা, সে নির্মোহ, তার অন্য জগৎ!
সে তবে চেয়ার টেবিলের মতো জড়?
না না, তা তো নয়। সে বাচ্চা দিতে পারে। নিজেকে বাড়িয়ে বাড়িয়ে চলে তার রাজত্ব। আর সে পারে নিজেকে বদলে নিতে। তার মানে সে যখন নিজেকে বাড়িয়ে নিতে চায় তখন খানিকটা বদলেও নিতে পারে নিজেকে। যেমন, ছিল লম্বা লম্বা পা, লাগিয়ে নিল দুটো ডানা। তাতে তার দৌড়ও যেমন, উড়তেও আর বাধা থাকলো না!
ইবোলা ভাইরাস কীরকম? কীভাবে মারব তাকে? কী করব ইবোলা ভাইরাস ধরলে?
নিরাপত্তা প্রথম এবং শেষ। আর কিছু করার নেই এই মুহূর্তে। পরীক্ষিত কোন ওষুধ নেই। হাজারে বিজারে মানুষ মরে যাচ্ছে!
এই অংশটাও, চলবে
মন্তব্য
আক্রমণ করে কী লক্ষণের প্রকাশ ঘটায় ইবোলা ভাইরাস? মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কী কী ঘটিয়ে যাবে সে?
আপনার প্রশ্নের জবাব মূল লেখায় যোগ করে দিলাম।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
জেনারেল একটা প্রশ্ন, একটি ভাইরাসের ভ্যাসকিন বের করতে কতোদিন সময় লাগে? বুঝতে পারি টাইম লাইনটা নির্দিষ্ট কিছু না, ক্ষেত্র বিশেষে কম বা বেশি সময় লাগতে পারে, কিন্তু জানতে চাইছি এক ভ্যাসকিন মার্কেটে আসার আগে কি কি ধাপ পেরুতে হয়?
আমাদের শরীরে ইবোলার ইমিউনিটি নেই, সেই কারণে মহামারী হিসাবে ছড়িতে পড়তে পারে। শরীরে ভাইরাসের ইমিউনিটি ঠিক কিভাবে তৈরি হয় (ভ্যাক্সিনেশন ছাড়া)?
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
একটু ব্যস্ত বলে কয়েকঘন্টা পর জবাব দিচ্ছি। আপনার প্রথম প্রশ্নটার জবাব দিতে আরো খানিকটা পড়তে হবে।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
অনার্য দা হয়তো বিশদ অভিজ্ঞতা আর জ্ঞান থেকে সুচিন্তিত উত্তর দিবেন। আমি যতটুকু জানি ততটুকু বলি। ভ্যাকসিন তৈরীতে প্রচুর সময় লাগে। ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে সময় বেশি লাগে, ক্ষেত্রবিশেষে ১০-২০ বছর ও লাগে। আমার জানা মতে ১০ বছরের আগে কোন ভ্যাকসিন বাজারে আসতে পারে না।
ভ্যাকসির তৈরির প্রথম ধাপে ভাইরাসের সংক্রমণ ধারা বের করতে হবে। তারপর ওই ভাইরাসকে inhibit করতে পারে এমন ভাইরাস খুঁজে বের করতে হবে। সেটা ভাইরাস নিজেও হতে পারে, অন্য ভাইরাসও হতে পারে। যদি এক ভাইরাস দিয়ে অরেক ভাইরাস কে দমন করা যায় তাহলে ঝামেলা চুকে গেল আর যদি না যায় তাহলে ভাইরাসের উপাদান (particle) বা ভাইরাসের প্রোটিন দিয়ে চেষ্টা করতে হবে। আর সেক্ষেত্রে screening করতে অনেক দিন সময় লাগবে। কিছু সময় একটি ভাইরাস অন্য ভাইরাসের particle কিংবা সম্পূর্ণ ভাইরাস টিকে ধ্বংষ করতে পারে না। সেইক্ষেত্রে বিজ্ঞানীরা প্রোটিনের সিনথেসিস করে যা ঐ ভাইরাসকে ধ্বংস করতে পারে। এই প্রোটিন টি রাসায়নিক, যা ভ্যাকসিন হিসাবে ব্যবহার হয়। ভ্যাকসিন আবিষ্কারের পর মানুষ কিংবা শিমপাঞ্জিতে সেটা পুশ করা হয়। তারপর এর কার্যকারিতা পরীক্ষা করা হয়, যদি ওকে হয় তাহলে সেটি বাজারে আসার অনুমতি পায়।
ভ্যাকসিন তিনপ্রকার : ১।জীবত ২। মৃত ৩। Attenuated
জীবত ভ্যাকসিন হলো জীবন্ত ভাইরাস শরীরে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। মৃত ভ্যাকসিন হলো মৃত ভাইরাস কে ঢুকিয়ে দেওয়া। attenuated গুলোও ভাইরাস কিন্তু এরা inactivated virus। যেমন হেটাটাইটিস এর ভ্যাকসিন হলো হ্যাপাটাইসিস ভাইরাসের surface protein।
ভাইরাস দুপ্রকার উপাদান দিয়ে গঠিত। ডিএনএ এবং প্রোটিন। ভাইরাসের প্রোটিন বেশি infective
তাই ভাইরাসের প্রোটিন ভ্যাকসিন হিসাবে ব্যবহার করা হয়। এই ভাইরাস প্রোটিন কে ভাইরাস particle বলা যায়।
-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।
কোটেশনের মাঝে রাখা অংশটুকু পড়ে বলতে হচ্ছে আপনার ভ্যাকসিন সম্পর্কে ধারণা সঠিক নয়; অথবা সঠিক ভাবে লিখতে ব্যার্থ হয়েছেন। কারণ এক ভাইরাস/ভাইরাসের অংশ বিশেষ দিয়ে আরেক ভাইরাস দমন করার কোন ব্যাপার-স্যাপার ভ্যাকসিনের কার্যক্রমের মাঝে পরে না। ভ্যাকসিনের মূল ব্যাপারটি হলো, রোগের কারণ ঘটার আগেই সংক্রামনকারী ভাইরাস বা ব্যাক্টেরিয়ার বিরূদ্ধে শরীরে নির্দিষ্ট এন্টিবডি তৈরী করে রাখার মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধের জন্য প্রস্তুত হয়ে বসে থাকা। (লক্ষ্য করুণ প্রতিরোধ, প্রতিকার নয় কিন্তু।) তাই ভ্যাকসিন (টিকা) ভাইরাস/ভাইরাসের অংশ বিশেষ দিয়ে তৈরী হলেও সংক্রামনকারী ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়াকে সে সরাসরি ইনহিবিট করে না। বরং মানুষ নির্দিষ্ট কোন রোগের জীবাণুর সংস্পর্শে আসার অনেক আগেই ভ্যাকসিনে উপস্থিত ভাইরাস/ভাইরাসের অংশ বিশেষ/ ভাইরাসের কোন প্রোটিন ইত্যাদি ( অথবা যাই থাকুক না কেন) শরীরের নিজস্ব রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতায় নতুন একটি নির্দিষ্ট এন্টিবডি যোগ করার জন্য স্টিমুলেট করে। যে এন্টিবডি সংক্রামণকারী ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করা মাত্র তাকে চিনে ফেলে এবং রোগের কারণ ঘটার আগেই তাকে নিষ্ক্রিয় করে শরীরকে রোগ থেকে প্রতিরোধ করে।
কোন কোন ভাইরাসে ডিএনএ নাও থাকতে পারে। যেমন এই পোস্টের আলোচ্য ইবোলা ভাইরাস সহ সার্স, হেপাটাইটিস সি প্রভৃতি আরএনএ ভাইরাস।
এই কথাটার কোন বৈজ্ঞানিক রেফারেন্স দিতে পারবেন?
দারুণ! ঠিক বলেছেন রকিবুল। আপনি না লিখলে আমাকে এই কথাগুলোই লিখতে হত।
মাসুদ সজীব, আপনার জানায় সম্ভবত একটু ভুল রয়েছে। অথবা আপনি লিখতে গিয়ে ভুল করেছেন।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
চলুক এ ভয়ানক বিভীষিকার কাহিনী। সাগ্রহ অপেক্ষায় আছি।
যতদিন আপনি এটিকে হালনাগাদ করতে থাকবেন, আশা করি এটিকে নীড়পাতায় সবার আগে ধরে রাখার বন্দোবস্ত করা হবে।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
এই পোস্টটা স্টিকি করার অনুরোধ করে গেলাম
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
সহমত।
ব্লগবাড়ি । ফেসবুক
১। শুনেছি মানুষ ইবোলা আক্রান্ত হলে সাথে সাথে তার লক্ষণ প্রকাশিত না হলেও - ৩ সপ্তাহের মধ্যে হয় অবশ্যই। এটা কি ঠিক?
২। ১ নং যদি ঠিক হয়, তাহলে সিয়েরা লিওন ও অন্যান্য ব্যপকভাবে ইবোলার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে এমন আফ্রিকান দেশগুলি থেকে ইবোলার দৃশ্যমান লক্ষণ-বিহীণ কোন ব্যক্তি ইবোলার প্রাদুর্ভাবমুক্ত দেশে আসলে বা ফিরলে - যেমন ঐসব দেশে কর্মরত বাংলাদেশি সেনাসদস্য বা বেসামরক ব্যক্তিবর্গ দেশে ফিরলে - তাদেরকে যদি ৩ বা ৪ সপ্তাহ কোয়ারান্টাইনে রাখা হয় তারা ইবোলামুক্ত কিনা তা নিশ্চিত করার জন্য - তাহলে কি ভাল হবে? আর তারপর যদি তাদেরকে ইবোলার ঝুঁকিমুক্ত হিসেবে সার্টিফাই করে ছেড়ে দেয়া হয়, তাহলে কি সেটা নিরাপদ হবে?
৩। ZMapp নামের ঔষধটি নাকি ইবোলার চিকিৎসায় সম্প্রতি দারুন সাফল্য দেখিয়েছে?
****************************************
আপনার প্রথম প্রশ্নটির জবাব দিয়েছি লেখায়। পরের প্রশ্নদুটোর জবাব কয়েকঘন্টা পরে দেব আশা করি।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
চিকিৎসা না থাকলে যাদের সুস্থ করা হচ্ছে বলে খবর পাচ্ছি তারা কি ইনফ্যাক্টেড আছে এখনও? উত্তর "হ্যা" হলে কি ধরে নেবো যে তাদেরকে আলাদা ব্যবস্থাতে রাখা দরকার?
-----------------------
আশফাক(অধম)
আপনার প্রশ্নটার আংশিক জবাব দিয়েছি। বাকিটা খানিক পরে ব্যাখ্যা করব আশা করি।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
ধন্যবাদ, আপনাকে। আমার মত লেম্যানদের জন্য প্রথম অংশই কাফি; তবে সাগ্রহে অপেক্ষায় আছি দ্বিতীয় পর্বের জন্য।
গোঁসাইবাবু
আপনি যতক্ষণ লিখতে থাকবেন, ততক্ষণ ফিরে ফিরে এসে পড়ে যাবো।
____________________________
আগ্রহ নিয়ে পড়ে যাচ্ছি ..
খুব ভাল উদ্যোগ
#
আচ্ছা এই ভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের লক্ষণ প্রকাশ পেতে পেতে ২-২১দিন লেগে যাচ্ছে, তো এই টাইমলাইনে না জেনেও তো
আরো অনেক মানুষই তার মাধ্যমে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে। তার হাঁচি/কাশির বা যেকোন সংস্পর্শে গিয়ে। যেহেতু এটা নিদির্ষ্ট সময়ের পরই জানা যাচ্ছে তাহলে কিভাবে অন্যেরা এই ভাইরাস থেকে নিরাপদ থাকতে পারে?
#
মনে করেন কেউ এমনভাবে আক্রান্ত হয়েছেন, তিনি সেভাবে সর্তক না হয়েই দিলেন হাঁচি বা কাশি তার সেই হাঁচির জলীয় কণা এসে অন্য কারো শরীরে লাগলো - বুম্! তিনিও আক্রান্ত হয়ে যাবেন না?
#
এ পর্যন্ত আম্রিকার তিনজন (মিশনারিজ) ডাক্তার এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন(একজনের অবস্হান গোপন রাখা হয়েছে)। দু'জন নাকি ইতিমধ্যেই এক্সপেরিমেন্টাল ড্রাগ Zmapp এর মধ্যমে সুস্হ হয়ে বাড়িও ফিরে গেছেন। একজন আবার সুস্হ হবার পর(৬১দিন ভাইরাস শরীরে থাকে , জানা নেই তিনি কতদিনের মাথায় মানুষের সামনে নিজেকে হাজির করেছেন) সাক্ষাৎকার দিয়েছেন নিজের অভিজ্ঞতা নিয়ে। এখন প্রশ্ন হলো, যদি সেভাবে ভ্যাকসিন আবিস্কৃত না হয়েই থাকে তবে এই দু'জনের সুস্হ হওয়াটাকে কি হিসেবে নেবো?
একটা ছোট্ট অনুরোধ, যকৃত, বৃক্ক এমন কিছু বাংলা শব্দের ইংরেজি টার্মগুলো যদি ব্রাকেটে দিয়ে দিতেন আমার মত অনেকেরই শরীর হাতড়ে ভাবতে হতো না কোনটা কি। ডাক্তার, আইনজীবি, শিক্ষক এঁদের মেজাজ সব সময়ই ঠাণ্ডা রাখতে হয় কিন্তু!
আপনিও কুল্ থাকুন ডক(প্রশ্নগুলো বেক্কলের মত হলেও)
সহজ ভাষায় সুন্দর করে লেখার জন্যে ধন্যবাদ .
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
বাইরে রক্তপাত বলতে কি নাক দিয়ে রক্ত পড়া, রক্ত বমি এরকম কিছু বোঝান হচ্ছে ?
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
বাংলায় বললে "এক্সটার্নাল ব্লিডিং"
তুই কি জ্যাতা আছত্রে? কই তুই?
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
হ জ্যাতা আছি, ইবোলা ধরেনাই এখনো
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
সবাইকে মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। প্রশ্নের জবাবগুলো লেখাতেই দিয়েছি। আলাদা করে মন্তব্যে আর দেইনি। সম্পূরক প্রশ্ন থাকলে অথবা আরো কোন প্রশ্ন থাকলে জানাবেন আশা করছি।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
সহজভাষায় লেখা এই জরুরি পোস্টটার জন্যে অনেক ধন্যবাদ।
আমার মাথায় যা প্রশ্ন এসেছিলো তার উত্তর ইতিমধ্যেই দিয়ে দিয়েছেন। আপডেটে চোখ রাখবো। আর আপাতত অনলাইনে শেয়ার করি।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
প্রিয় অনার্যদা, জনস্বাস্থ্যের জন্য অসীম গুরুত্বপূর্ণ পোস্টটির জন্য আমার আন্তরিক ধন্যবাদ। আপনি আমার মত জানতে চেয়েছিলেন যে, ইবোলা সংক্রমণ শুরু হলে সেটার প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার সামর্থ্য বাংলাদেশের আছে কিনা। এর উত্তর হচ্ছে, নেই। উপজেলা হাসপাতালগুলোতে একদমই নেই। সংক্রমণ হলে মহামারী নিশ্চিত। টারশিয়ারি ও স্পেশালাইজড হাসপাতালগুলোতে প্রিভেন্টিভ ইন্টারভেনশনের মোটামুটি ব্যবস্থা আছে।
যে প্রশ্নগুলো করার ছিল সেগুলোর উত্তর দেয়া হয়ে গেছে বলে করলাম না। কিন্তু এই পোস্টটার প্রশ্নোত্তর পর্ব শেষ হলে মন্তব্য সমেত লেখাটা কপি করে রাখার আশা রাখি।
একটা ভয় কাজ করে, বাংলাদেশে একজন ইবোলা রোগী ঢুকলেও এদেশে ঘনবসতির কারণে বিদ্যুতবেগে ছড়িয়ে পড়বে। সেই মড়ক ঠেকানোর কোন উপায় দেখছি না কল্পনাতেও।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
পোস্টটা স্টিকি করার অনুরোধ জানাচ্ছি।
ধন্যবাদ সহজবোধ্য ভাষায় লেখার জন্য। মাথায় যা প্রশ্ন এসেছে তার উত্তর আগেই দেওয়া হয়ে গেছে দেখে আর কিছু জিজ্ঞেস করলাম না। আগ্রহ নিয়ে পড়ে যাচ্ছি!
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
সহজ বাংলায় দরকারি তথ্য গুলো দেয়ার জন্য ধন্যবাদ।
ডা মো রেদওয়ানুল হক মাসুম
ভাল হয়েছে অারও লিখুন
আসলেই
ধন্যবাদ,আরো লিখতে থাকুন...অনেকগুলো প্রশ্ন করার ছিল....তার আগেই অন্যরা করছে....তাই আর করলাম না
নতুন মন্তব্য করুন