ক্যান্সারে কতো লোক মরে যায় জানেন? পৃথিবীর প্রতি ৬টি মৃত্যুর মধ্যে একটির কারণ ক্যান্সার। ২০১৫ সালের সারা পৃথিবীতে ক্যান্সারের কারণে প্রাণ হারিয়েছে অন্তত ৮৮ লক্ষ মানুষ। আমার কেনো জানি মনে হয় হাজারে-লাখে মৃত্যুর হিসেব এখন আর আমাদের বিচলিত করেনা। কোটিতে হিসাব দেই। ২০৩০ সাল নাগাদ বছরে ক্যান্সারে মৃত মানুষের সংখ্যা হবে ১ কোটি ৩০ লাখ।
আরো খানিকটা ভয় দেখাই। জীবনের কোনো এক পর্যায়ে আপনার ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ৪০%। তারমানে পরিসংখ্যানের হিসেবে, কোনো পরিবারে ৫ জন মানুষ থাকলে তাদের মধ্যে ২ জন ক্যান্সারে আক্রান্ত হবেন। আশার কথা হচ্ছে, ৩০-৫০ ভাগ ক্যান্সার প্রতিরোধ করা যায়। মানে সতর্ক থাকলে প্রায় অর্ধেক ক্যান্সার কখনো হবেই না। আপনার পরিবারের ৫ জনের ভেতর যে ২ জনের ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবণা ছিলো, তাদের মধ্যে একজনের কখনোই ক্যান্সার হবেনা, যদি আপনি এবং আপনারা সতর্ক থাকেন।
কিন্তু আপনি তো সতর্ক থাকার কথা ভাবছেন না। আপনার ভয় পেতে কষ্ট হয়। সবারই ভয় পেতে কষ্ট হয়। সেইজন্য এই লেখাটা পড়া শেষ হলেই আপনি ভয় পেতে ভুলে যাবেন। বেশ শান্তি শান্তি লাগবে। আর তাছাড়া, আপনি তো জানেনই পৃথিবীতে গড়ে ৩ জনের ভেতর যে ১ জনের ক্যান্সার হওয়ার কথা, সেই অভাগা আপনি নন! হতেই পারে না। আপনার কপাল কেনো খারাপ হবে! কপাল খারাপ হবে রাম, শ্যাম, যদু, এবং মধুদের।
সুতরাং আপনি যদি নিশ্চিত থাকেন যে আপনার কখনো ক্যান্সার হচ্ছে না, তাহলে আপনার সতর্ক না থাকলেও হবে। কিন্তু আপনার পরিজন? আপনার কন্যাটির কথা যদি ধরি? আপনার পরিবারের ফুটফুটে শিশুটির কথা বলছি, যার বয়স এখন দশেরও কম। ওকে যদি কিছু কিছু ক্যান্সার থেকে এখনই নিরাপদ করে ফেলা যায়? কেবল শিশুদের নয়, ২৫ বছরের কম যেকোনো মেয়েকেই যদি খুব বিপজ্জনক কিছু ক্যান্সার থেকে নিরাপদ রাখা যায়? সেই প্রসঙ্গে আসছি। কিন্তু তার আগে জরায়ু মুখের ক্যান্সার সম্পর্কে সামান্য তথ্য দেই।
উন্নয়নশীল দেশগুলোতে প্রতিবছর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যায় যে প্রকারের ক্যান্সারে মেয়েরা আক্রান্ত হয়, সেটি হচ্ছে জরায়ু মুখের ক্যান্সার (সবচে বেশি হয় স্তন ক্যান্সার)। জরায়ু মুখের ক্যান্সারে মৃত্যুর পরিমাণ উন্নয়নশীল বিশ্বে মেয়েদের ভেতর তৃতীয় সর্বোচ্চ। জরায়ু মুখের ক্যান্সার কীভাবে হয় জানেন? প্রায় সকল (৯৯ ভাগ) জরায়ু মুখের ক্যান্সারের সঙ্গে একটি ভাইরাসের সংক্রমণ জড়িত। হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (HPV)। প্যাপিলোমা ভাইরাসের অনেক প্রকার হয়। অসংখ্য প্রাণিকে এই ভাইরাস সংক্রামিত করে। আজকে এই লেখায় শুধু হিউম্যান পাপিলোমা ভাইরাস নিয়েই কথা বলব। সেইজন্য এই লেখায় “হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস” নামটিকে ছোট করে কেবল “প্যাপিলোমা ভাইরাস” লিখছি।
প্যাপিলোমা ভাইরাসে মানুষ কীভাবে সংক্রামিত হয়? সহজে বললে, এই সংক্রমণ এক প্রকারের যৌনরোগ। এই পৃথিবীতে সবচে বেশি সংক্রামিত যৌনরোগ হচ্ছে প্যাপিলোমা ভাইরাসের সংক্রমণ। তারমানে, এই ভাইরাস ছড়ায় যৌনসঙ্গীর থেকে। এইতো আপনার মুখে হাসি ফুটে উঠছে, আপনার হিসেবে সুস্থ (মানে সামাজিকভাবে নির্ধারিত নিয়মে। অপরের যৌনাঙ্গে কেনো সামাজিক মানুষের এতো আগ্রহ, সে আমাকে জিজ্ঞেস করবেন না।) যৌনজীবনে প্যাপিলোমা ভাইরাসের সংক্রমণের ভয় নেই। সেরকম মনে হচ্ছে না? কিন্তু একাধিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে বাস্তবতা সেরকম নয়। এই প্রসঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা হতে পারে, সেদিকে আজকে না যাই। আপনি শুধু জেনে রাখুন, কেবল একজন যৌনসঙ্গী থাকলেই প্যাপিলোমা ভাইরাসে সংক্রামিত হওয়ার সম্ভাবণা সারাজীবনে প্রায় ৯০ ভাগ। একাধিক থাকলে নিশ্চিত থাকুন, সংক্রমণ হবে।
মূল কথাটা হচ্ছে, কেবল সামাজিক রীতিনীতি ইত্যাদি শাককচুতে হবেনা। সকল মানুষ প্যাপিলোমা ভাইরাসে সংক্রমণের তীব্র ঝুঁকিতে রয়েছে। আর সেই ঝুঁকি আপনার মেয়েটির জন্য জরায়ু মুখের ক্যান্সারে ঝুঁকিও। আরেকটুখানি বলে রাখি, প্যাপিলোমা ভাইরাসের সংক্রমণে পায়ুপথ, পুরুষাঙ্গ, মুখ, মাথা, গলা ইত্যাদি অঙ্গেও ক্যান্সার হতে পারে। যদিও সেসবের সম্ভাবনা জরায়ুমুখের ক্যান্সারের তুলনায় বেশ কম।
এইবার প্যাপিলোমা ভাইরাস সম্পর্কে খানিকটা তথ্য। (ভাইরাসের প্রসঙ্গ এসেছে আর খানিকটা জ্ঞান দেবোনা, তা কি হয়!)
ভাইরাস কী জানেন তো? ছোটছোট প্রোটিনের পোটলায় মোড়ানো এক টুকরো ডিএনএ অথবা আরএনএ হচ্ছে ভাইরাস। ওই প্রোটিনের পোটলা কতো ছোট, সেটা বোঝার জন্য বলি, ভাইরাস জগতের সকল প্রাণির চাইতে ছোট। এমনকি একটা অদৃশ্য ব্যাকটেরিয়াও পিঠে নিয়ে বেড়াতে পারে সংক্রামিত ভাইরাসের পাল।
আপনারা তো জানেনই ডিএনএ হচ্ছে জগতের সকল প্রাণির জীবনের নিয়মাবলি। গাছে ফুল ফোটে কারণ গাছের ডিএনএ-তে লেখা থাকে “ফুল ফোটাও”। মনে করুন, যদি কোনোভাবে গাছের ডিএনএ-র ফুল ফোটানোর লেখাটা বদলে আপনি লিখে দিতে পারতেন ‘টাকা ফোটাও’, তাহলে গাছে ফুলের বদলে ফুটতো টাকা। “ফুল” মুছে দিয়ে যদি ডিএনএ তে লিখে দিতেন “চুল ফোটাও” তাহলে গাছ হতো ঝাকড়া চুলের বাবরি দোলানো। এই ব্যাখ্যার মধ্যে বৈজ্ঞানিক তথ্যের দারুণ সরলীকরণ হয়ে গেছে মানি। কিন্তু মূল কথা যেটা বলতে চাইলাম, সেটা হচ্ছে, সকল প্রাণি তার ডিএনএ-তে লেখা নিয়মে বাঁধা থাকে।
একটা ভাইরাস যে প্রোটিনের থলেতে মোড়া থাকে তাতে যন্ত্রপাতি থাকে সামান্যই। আর রকম ভেদে ওইসব যন্ত্রপাতির ধরনও থাকে ভিন্ন। কোনটায় হয়তো থাকে ছোট একটা কাঁচি এর একটুখানি আঠা। প্রাণির কোষে ঢুকে গিয়ে সেই 'কাঁচি' প্রাণির ডিএনএ একটুখানি কেটে ফেলে, আর 'আঠা' গিয়ে সেখানে অংশ জুড়ে দেয় ভাইরাসের ডিএনএ। ভাইরাসের ডিএনএ-তে লেখা থাকে “ভাইরাস বানাও”। আর প্রাণির কোষ কিছু না বুঝে ভাইরাস বানাতে থাকে নিজের দেহের মালমশলা দিয়ে।
ধরুন আপনি একটা রেসিপি বই দেখে বিরিয়ানি রাঁধতে গেলেন। আর আমার হলো আইসক্রিম খাওয়ার শখ। আমি চুপিসারে আপনার বিরিয়ানির বইয়ের কয়েকটা পাতা কেটে সেখানে জুড়ে দিলাম আইসক্রিমের রেসিপি। আপনিও কিছু না বুঝে বিরিয়ানির রেসিপি দেখে দেখে বানিয়ে ফেললেন আইসক্রিম। ভাইরাসের কাজও সেরকম, সে অন্য প্রাণির ডিএনএ-র মাঝে নিজের ডিএনএ জুড়ে দিতে পারে। আর প্রাণিকোষ কিছু না বুঝে বানাতে থাকে ঝাঁকে ঝাঁকে ভাইরাস।
ভাইরাসের সংক্রমণে কীভাবে ক্যান্সার হয় সেই গল্প একটা রগরগে উপন্যাসের মতো। আজকে সে বলে শেষ করা যাবেনা। শুধু বলে রাখি, প্যাপিলোমা ভাইরাস সাধারণত মুখ, গলা, যৌনাঙ্গ, পায়ুপথের আর্দ্র ত্বকে সংক্রামিত হয়। সংক্রামিত হতে পারে হাত-পায়ের তালুর মতো স্থানেও। সংক্রমণের স্থানে ভাইরাস যখন দ্রুত গতিতে বাড়তে থাকে, তখন সেই বৃদ্ধি হতে পারে ক্যান্সারের কারণ। প্যাপিলোমা ভাইরাসের সিংহভাগ সংক্রমণই নিজে থেকে সেরে যায়। বেশিরভাগক্ষেত্রেই সংক্রমণের কোনো লক্ষ্মণ দেখা যায় না। আপাত সুস্থ একজন মানুষ তাই এই ভাইরাস বয়ে বেড়াতে পারে এবং অপরের মাঝে সংক্রামিত করতে পারে।
এইবার আসি ক্যান্সার থেকে নিরাপদ থাকার প্রসঙ্গে।
বলেছিলাম আমাদের মতো দেশে মেয়েদের স্তন ক্যান্সারের পরেই সবচে বেশি হয় জরায়ু মুখের ক্যান্সার। জরায়ু মুখের (প্রায়) সকল ক্যান্সারের সঙ্গেই হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসের সংক্রমণ জড়িত থাকে। ভাইরাস সংক্রমণের পরে দীর্ঘদিন পর্যন্ত কোনো লক্ষণ না-ও দেখা দিতে পারে আর একজন মাত্র যৌনসঙ্গী থাকলেও সংক্রমণের সম্ভাবণা কম নয়। প্যাপিলোমা ভাইরাসের অনেকগুলো (২০০-এর বেশি) “টাইপ” রয়েছে। কিন্তু সবচে বেশি বিপজ্জনক হচ্ছে টাইপ ১৬ এবং ১৮। এই দুটি টাইপের ভাইরাস প্রায় ৭০ ভাগ জরায়ু মুখের ক্যান্সারের জন্য দায়ী। এখন পর্যন্ত সকল রকমের প্যাপিলোমা ভাইরাস থেকে নিরাপত্তা দেয়ার টিকা তৈরি হয়নি। কিন্তু বাজারে প্যাপিলোমা ভাইরাসের ২, ৪ অথবা ৯টি টাইপ-রোধী টিকা পাওয়া যায়। সবগুলো টিকাই টাইপ ১৬ এবং ১৮ থেকে নিরাপত্তা দিতে পারে। সেই সঙ্গে নিরাপদ রাখতে পারে যৌনাঙ্গের সেইসব ক্ষত থেকে, যেগুলো ক্যান্সার নয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, আপনার শিশুদের ৯-১৪ বছর বয়সের ভেতর টিকা দিলেই সবচে ভালো। টিকা দেয়া যেতে পারে ২০-২৫ বয়স পর্যন্তও। আপনার ডাক্তার এক্ষেত্রে আপনাকে সবচে ভালো পরামর্শ দিতে পারবে। আমার এক বন্ধুর কাছে শুনেছিলাম, তার ডাক্তার তাকে প্যাপিলোমা ভাইরাসের টিকা নিতে নিরুৎসাহিত করেছে। কেনো করেছে সে আমার জানা নেই। আপনাকে যদি কেউ নিরুৎসাহিত করে তবে তার যৌক্তিক কারণটা জিজ্ঞেস করতে ভুলবেন না।
আজকে এ পর্যন্তই। আমি চেষ্টা করেছি সকল তথ্য হালনাগাদ গবেষণাপত্র থেকে সংগ্রহ করতে। সংক্রমণ ও মহামারি সংক্রান্ত তথ্য সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলায়। সেইজন্য অনেকদিন পরে যদি কেউ এই লেখাটি পড়েন তবে একটু কষ্ট করে তথ্যগুলো যাচাই করে নেবেন। ব্লগের জন্য লেখা বলে আমি সকল তথ্যের উৎস আলাদাভাবে উল্লেখ করছি না। তবে বেশিরভাগ তথ্যই cancer.org এর Global cancer facts and figures এর তৃতীয় সংস্করণ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ওয়েবসাইট, সিডিসি-এর ওয়েবসাইট এবং Fields virology-র ৬ষ্ঠ সংস্করণ থেকে নেয়া।
ভালো থাকুন সবাই। ভালো থাকুক আমাদের মেয়েরা, মায়েরা, বোনেরা এবং ভালোবাসার সকল মানুষ।
মন্তব্য
পোস্টের সাথে দেশে কীভাবে এই টিকা নেয়া যাবে এই তথ্য জুড়ে দেয়া সম্ভব?
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
আমার আসলে এইটা জানা নেই। লোকাল ক্লিনিকেই দিতে পারার কথা। সেইজন্য বলেছি ডাক্তারের পরামর্শ নিতে।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
বিভিন্ন হাসপাতালে এই টিকা দেওয়া হয়। এখন পর্যন্ত যে কয় জায়গার ব্যাপারে জানতে পারলাম সেগুলো হলো: পিজি হাসপাতাল, সূর্যের হাসি ক্লিনিক, মেরিস্টোপস, স্কয়ার হাসপাতাল, সেন্ট্রাল হাসপাতাল, অ্যাপোলো হাসপাতাল, ল্যাব এইড, মেডিনোভা, গ্রিন লাইফ হাসপাতাল, প্যানারোমা (ধানমন্ডি), আল-মানার হাসপাতাল (মোহাম্মদপুর)। তিনটা ডোজ দিতে হয়। প্রতি ডোজের দাম হাসপাতালভেদে ১০০০ টাকা থেকে ৫০০০ টাকা। সেক্সুয়ালি অ্যাকটিভ হলে (বাংলাদেশের ভাষায় বিবাহিত হলে) ভ্যাকসিন দেওয়ার আগে Pap smear and VIA টেস্ট করে নিতে হয়।
সূত্র: মেয়ে নেটওয়ার্ক
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
ধন্যবাদ নাশতারান এই খবরটা জানাবার জন্য। কোথায় টিকাটা পাওয়া যাবে এটা খুবই জরুরী।
---------------------------------------------------
মিথ্যা ধুয়ে যাক মুখে, গান হোক বৃষ্টি হোক খুব।
জরায়ুমুখের ক্যান্সার হয় এটা শুনেছি কিন্তু বিশেষ আর কিছু জানতামনা। আপনার লেখা থেকে জানার সুযোগ হয়ে গেলো। অনেক ধন্যবাদ।
---------------------------------------------------
মিথ্যা ধুয়ে যাক মুখে, গান হোক বৃষ্টি হোক খুব।
আপনাকেও ধন্যবাদ সোহেল।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
চমৎকার লেখা। ছোট একটা ব্যাপার বলে যাই।
৫ জন মানুষ থাকলে ২ জন ক্যান্সারে আক্রান্ত হবেনই কথাটি একটু বিভ্রান্তি তৈরী করে। ৫ জন থাকলে ২ জনের ক্যান্সারে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা অনেক বেশী -- এভাবে বললেই ভাল হবে মনে হয়।
অনেক ধন্যবাদ প্রতীক। আমি বাক্যটি সামান্য বদলে দিয়েছি।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
ক্যান্সার নিয়ে বই পড়তেছি সপ্তাহ খানেক ধরে, ক্যানসারের ব্যাপার স্যাপার আমার কাছে পুরাই রহস্যও উপন্যাসের মত লাগছে। এই লেখাও দারুণ লাগলো। আব্দুন নুর তুষার রিসেন্টলি এই ভাইরাসের ভ্যাকসিন কোন কাজের না এই ধরনের কিছু একটা বলেছে মনে হয়।
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
এ্যান্টি ভ্যাক্সারের কথায় গুরুত্ব দেবার কিছু নেই।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
সমস্যা হচ্ছে, এসব অ্যান্টি ভ্যাক্সারের ফলোয়ার কম না। তাদের মুখের কথায় বিশ্বাস করার লোক কম না। তার উপর সে আবার ডাক্তার। সব মিলায়ে এই লোকগুলা সমাজের জন্য বিপজ্জনক। তার লেখাটা পাইলে তথ্য দিয়ে জবাব দেয়া উচিত বলে আমার মনেহয়। নয়ত লোকে তার লেখা পড়েই একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফিরে যাবে।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
..................................................................
#Banshibir.
সে আসলে খুব সতর্কভাবে দুইপক্ষ ম্যানেজ করে কথা কয়। কট্টর অ্যান্টি ভ্যাক্সারদের জন্ম হয় সম্ভবত এইভাবে।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
ক্যান্সারের পর ভাইরাসের ব্যাপারস্যাপার পড়ে দেখেন।
কিছুদিন আগে ক্যান্সার ভাইরাস নামের একটা বই পড়লাম। বইটা তথ্যে ঠাসা। কিন্তু ওই অতিরিক্ত তথ্যের জন্যই বইটা আমার খুব ভালো লাগেনি।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
খুব প্রয়োজনীয় লেখা।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------
“We sit in the mud, my friend, and reach for the stars.”
অলীক জানালা _________
ধন্যবাদ তাহসিন।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
সূর্যের হাসি ক্লিনিকে দেওয়া হচ্ছিল । But এটা সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। আমার মা সূর্যের হাসি ক্লিনিকের ম্যানেজার। উনিও এটা আসার পর আমাকে দেওয়ার জন্য আগ্রহী করেন( আমার মা ব্রেস্ট ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছিলেন)। পরবর্তীতে উনি বললেন যে, এখন এটা দেওয়া ঠিক হবে না কারণ এটা বাইরের দেশে approved প্রোডাক্ট না। ভ্যাকসিনটা নাকি আমাদের দেশে টেস্ট করার জন্য দেওয়া হয়েছিল USAID থেকে।
অধিকাংশ ভ্যাকসিনই বাইরের health NGO/ Organisation থেকে এশিয়ান কান্ট্রিগুলাতে আসে টেস্ট করার জন্য। এটা অনেকেই জানেন না। আর সরকারও আগে এ ব্যাপারে সচেতন ছিল না। But এখন কিছু কিছু সাইডইফেক্ট ধরা পড়াতে এসব ভ্যাকসিন মার্কেটে ছাড়ার আগে দেশের বিশেষজ্ঞ দিয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কিছু বিদেশি pharmaceuticals হেল্থ এনজিওগুলোর মাধ্যমে আমাদেরকে guinea pig হিসেবে ব্যবহার করছে। এমন না যে জরায়ুমুখ ক্যান্সারের ভ্যাকসিন সবই খারাপ। আমাদের দেশে যেগুলো এসেছে, সেগুলো বাইরের দেশগুলোতে সরকার অনুমোদিত নয়। তাই তারা আমাদের উপর প্রয়োগ করে তাদের ভ্যাকসিনের কার্যকারিতার ব্যাপারে গবেষণা করে অনুমোদন পাওয়ার জন্য। ভ্যাকসিনটা আমাদের জন্য নিরাপদ কিনা খতিয়ে দেখার জন্য Govt. থেকে আপাতত ভ্যাকসিন দেওয়া বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।
কোন ক্লিনিকে যদি এই ভ্যাকসিন চালু থাকে তবে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করে তারপর দিতে হবে। কারণ প্রতিটা ভ্যাকসিনের মূল্য অনেক, তাই যে কোন প্রাইভেট ক্লিনিক অসৎ উদ্দেশেও আগ্রহীদের কাছে অনুমতিবিহীন ভ্যাকসিন দিতে পারে। সুতরাং বেসরকারি কোন হাসপাতাল বা ক্লিনিক থেকে এটা না দেয়াই ভাল। শীঘ্রই যদি এটা approved হয় তবে দেশি কোন ফারমাসিউটিক্যাল থেকে প্রোডাক্টশন করা হবে যাতে এটার খরচ কমে যায় আর সবাই এটার খরচ বহন করতে পারে।
এখনকার সময়ে কেউ মারা গেলেই শুনি ক্যান্সারে মারা গেছেন| আচ্ছা এই বিজ্ঞানের যুগে এখনো কেন এর সম্পুর্ন প্রতিকার নেই নাকী এর পেছনে আছে বিশাল অর্থের খেলা? আপনি তো একজন রিসার্চার তাই এই কথাটির কি কোন সত্যতা আছে বলে কি মনে হয় আপনার?
ক্যান্সার সম্পর্কিত মানুষের সবচে বড় ভুল ধারণাটি সম্ভবত এক "ক্যান্সার" নামে অসংখ্য রোগকে চিহ্নিত করা। ক্যান্সার অসংখ্য রকমের হয়। এই অসংখ্য রকমের মধ্যে বিশেষ মিলটি হচ্ছে এগুলো সবই কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি। কিন্তু এই মিলটুকু বাদ দিলে ক্যান্সার থেকে ক্যান্সারের ভিন্নতা এতো বেশি যে এগুলোকে আলাদা রোগ হিসেবে চিহ্নিত করা বেশি যৌক্তিক।
উদাহরণ দেই, ২০ জন মানুষের ক্যান্সার ২০ রকমের হতে পারে। সবগুলোকে একই নামে ডাকা হলেও এই ২০জন মানুষের রোগের লক্ষ্মণ/ভয়াবহতা/প্রতিকার ইত্যাদিতে কোনো মিল না-ও থাকতে পারে! এই ২০টি ক্যান্সারের কোনো কোনোটি হয়তো সহজেই সেরে যাবে। কোনোটির হয়তো চিকিৎসা নেই। কোনোটি হয়তো খুব ধীরে বৃদ্ধি পাবে, কোনোটি হয়তো ৩-৬ মাসের ভেতর রোগির মৃত্যুর কারণ হবে।
সেইজন্য ক্যান্সারের চিকিৎসার কথা জানতে হলে আপনাকে বলতে হবে ঠিক কোন ধরণের ক্যান্সারের কোন পর্যায়ের চিকিৎসার কথা আপনি জানতে চাইছেন। অনেক ক্যান্সারের খুব ভালো চিকিৎসা আছে। প্রাথমিক পর্যায়ের ধরা পড়লে বেশিরভাগ ক্যান্সার সারিয়ে তোলা যায়। আবার অনেক ক্যান্সারের চিকিৎসা নেই। আপনি আপনার বাগানেই ১০ রকমের মশা পাবেন। কোনোটির কামড়ে সামান্য ব্যথা হবে, কোনোটি আপনাকে কামড়াবেই না। আবার এদের মধ্যে একটির কামড়ে ডেঙ্গু হবে, একটির কামড়ে হবে ম্যালেরিয়া।
ক্যান্সারের দুটো খুব ভয়াবহ ক্ষমতা রয়েছে। একটা হচ্ছে ছড়িয়ে পড়ার ক্ষমতা। ক্যান্সার শরীরের একটি অঙ্গ থেকে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে। একটা সড়ক দূর্ঘটনার কথা চিন্তা করুন। যদি দূর্ঘটনায় কারো হাত ভেঙে যায় তাহলে সমস্যাটি ওখানেই শেষ হয়, সেটার সহজে চিকিৎসাও করা যায়। কিন্তু দূর্ঘটনাটি যদি এমন হতো যে, হাত ভাঙার চিকিৎসা সময়মতো না করলে লোকটির পা ভাঙবে, কোমর ভাঙবে, ঘাড় ভাঙবে, মাথা ভাঙবে... তাহলে?! যখন লোকটির হাত ভাঙা থেকে পুরো শরীরের ৫-৭টি অঙ্গ ভেঙে গেছে, তখন কীভাবে তার চিকিৎসা করবেন?
ক্যান্সারের দ্বিতীয় ভয়াবহ ক্ষমতাটি হচ্ছে ক্যান্সারের কোষ ওষুধে সহনশীল (রেজিস্ট্যান্ট) হয়ে যেতে পারে খুব দ্রুত। প্রাকৃতিক নির্বাচন (ন্যাচারাল সিলেকশন। পরিচিত ভাষায়, 'বিবর্তন')-এর কারণে দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়া যেকোনো কোষের কমবেশি এই ক্ষমতা থাকে। সেইজন্য ক্যান্সারের ওষুধ দ্রুত অকার্যকর হয়ে যেতে পারে।
ক্যান্সারের ওষুধের গবেষণা এবং চিকিৎসার পেছনে বিরাট অংকের টাকার খেলা আছে সেটি সত্যি কথা। মোবাইল ফোনের গবেষণা এবং বিক্রিতে ক্যান্সারের চাইতে হাজারগুণ বেশি টাকার খেলা আছে। কোনো ক্যান্সারের ওষুধ আবিষ্কৃত হলে সেটা বাজারে আসার জন্য দীর্ঘ সময়ের দরকার হয়। এটি যৌক্তিক কারণেই হয়। ক্যান্সারের ওষুধের অনেক দাম হবে/হতে পারে, সেটাও স্বাভাবিক। সকল ব্যবসার পেছনেই যুক্তিগুলো আসলে একই
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
ধন্যবাদ ! আপনার লেখাটি আমার ভালো লেগেছে এবং অনেকেরই ভালো লাগবে এ আমার বিশ্বাস। এ রকম লেখা অব্যহত দিতে থাকুন অনেকেরই উপকারে আসবে। আবারও ধন্যবাদ।
নতুন মন্তব্য করুন