উপমান আর উপমিত সমাসের মাঝখানে পড়ে, কিঞ্চিৎ টানাহ্যাঁচড়ায় আমার সুকন্যাকে ভালো লেগে গেল। সুকন্যার চেহারাই সব, সেটাই দৃশ্যমান, ভালোলাগা তৈরির জন্যে সেটুকুই যথেষ্ট, এই উপসিদ্ধান্তে আসতে আমার সময় লাগে না; সুতরাং উপমান সমাসের নিকুচি করেই আমি সুকন্যার জন্যে আকুল-ব্যাকুল হয়ে উঠলাম, কুলকুল ঘামতে লাগলাম বিলকুল। এভাবেই সুকন্যার সাথে আমার প্রেমের শুরু হবে। আমরা দুর্দান্ত প্রেম শেষে হাঁপাতে হাঁপাতে লা--ল হয়ে উঠবো, কিংবা সে গোলাপি, আমি নীল হতে চাইবো। এই রংবেরঙের খেলাটাও পূর্ব নির্ধারিত শিডিউলে চালাতে আমাদের ভালোই লাগবে।
সুকন্যার জন্যে আমার অনেক প্ল্যানপ্রোগ্রাম ছিল, তবে সেগুলোকে যাচাই বাছাই করার প্রয়াস ছিল না। যেমন আমি চাইছি তাকে উল্টে বা পাল্টে শোকেসে রেখে দিতে, বা কাঠের ড্রয়ারের কোণে একটা মেঘ বানিয়ে বন্দী করে রাখতে, বা বালিশের ওয়াড়ের ভেতর পুরে রাখতে। এরকম আকাঙ্ক্ষাগুলো যথেষ্ট আশাবাদী, আমি বাস্তবায়নের পাঁচমুখী কর্মপন্থা রচনা করি। বার বার নোট নেই, কাটাকুটি ড্রাফটে সেগুলো নিখুঁত, নিটোল হয়ে ওঠে; সুসজ্জিত প্রেমপন্থা আমার! বাঁধিয়ে নিলে, ল্যামিনেটিঙয়ে বেশি খরচ হবে না হয়তো। সুকন্যার ত্বকের দামেই খরচ পুষিয়ে যাবে!
***
- অনীক আন্দালিব/১২.৬.৯
মন্তব্য
বুঝিনাই
আমারই সীমাবদ্ধতা
না না তা হবে কেন, আপনি নিশ্চই সেভাবে লেখেননি। যেভাবে লিখেছেন তার হয়তো কোন উদ্দেশ্য আছে।
প্রকৃতিপ্রেমিক, এখানেই আসলে যোগাযোগ বা সেতুনির্মাণের প্রয়োজনটা গুরুত্ব পায়। একটা কবিতায় লেখক কী ভেবে লিখেছেন, সেটা পড়ার সময়ে আমাদের মনে প্রথম কাজ করে। তার চেয়ে কবির কথাগুলোতে আমি পাঠক হিসেবে কতটা সম্পৃক্ত হতে পারছি সেটা কিন্তু স্বয়ং কবির চিন্তাচেতনার চাইতেও জরুরি।
যেমন এখানেও, আমি কী ভেবেছি সেটা গৌণ, বরং আপনার পাঠ-প্রতিক্রিয়া অনেক বেশি জরুরি, আমার কাছে, আপনার কাছে তো বটেই। আমার উদ্দেশ্য বিধেয় লেখার পরপরই শেষ। এরপরে আমিও পাঠকের সারিতেই।
ভালো লাগছে অনীক ভাই। এই ধরনের প্যাটার্ন গুলো বেশি এবস্ট্র্যাক না হলেই ভালো লাগে।
শুরুর দিকে ব্যাকরণ নিয়ে আবছায়াটা কাটছে না কিছুতেই।
ব্যাকরণের আবছায়াটা কেমন বলো তো? উপমান আর উপমিত হলো কর্মধারয় সমাসের দুটো শাখা। উপমান কর্মধারয়: যেখানে সাধারণ গুণের উল্লেখ করে কোন বস্তুর সাথে কোন বস্তুর/ব্যক্তির তুলনা করা হয়, যেমন- তুষারের মত শুভ্র=তুষারশুভ্র;
উপমিত কর্মধারয়: যেখানে সাধারণ গুণটি অনুপস্থিত, কিন্তু তুলনার বস্তুদ্বয় বর্তমান, যেমন- মুখ চন্দ্রের ন্যায়=মুখচন্দ্র।
এই প্যাটার্নেও কিছু রচনার চেষ্টা।
কবিতাতো খুব বেশী বুঝিনা
তবে পড়তে ভালো লেগেছে
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
কবিতা কেই-বা বুঝে?
আপনি পড়লেন আর ভাল লাগলো আপনার, সেখানেই কথা হতে পারে। ধন্যবাদ রানা মেহের।
আমিও বুঝিনাই ভাইজান।
*মাথা-চুলকাই*
______________________________________
আমার গরল বন্ধুরা সব কই রে !!!
______________________________________
লীন
সব কথা কি সরাসরি বলে ফেলা যায়? এখানেও সেই আড়ালটা রয়েছে। সুকন্যাকে নিয়ে যত কথা সেগুলো তো সরাসরিই বললাম। এই লাইনগুলো, একটানা ভেবে ফেলতে তোমার বেশি সময় লাগবে না। দেখবা, তিন চার সেকেণ্ডের মামলা। তারপরেই সেটাকে পরিবেশনের ঝঞ্ঝাট। সেখানেই হয়তো তোমার বোধে আসে নাই।
মাথা বেশি চুলকালে চুল পড়ে যাবে!
স্যরি, আমিও না।
...........................
সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
তুই কী বুঝে লিখলি জানি না, বুঝতে পারবো না মনে হয়। তবে নিজের মত অর্থ করে নিলাম।
(অবশ্য হয়তো সেটাই তোর এবস্ট্রাক্ট লেখার উদ্দেশ্য ছিল - পাঠককে স্বাধীনতা দেয়া)
লেখার সব যে বুঝলাম, তা দাবি করব না। তবে অনেকদিন পর আপনাকে ফিরতে দেখে ভাল লাগল। নিয়মিত লিখতে থাকুন।
সুলতানা, অতন্দ্র, পড়ার জন্যে ধন্যবাদ।
আসিফ, এই লেখাতে নিজের মতোই অর্থ করে নিতে হবে। সেখানেই পাঠকের মূল স্বাধীনতা! ভালো লাগলো তোকে এখানে দেখে!
কবিতা বিষয়ে আমার এক গুরু বন্ধু আছে। কবিতা ও এতদসম্বন্ধিয় না না ব্যাপারে সে আমাকে শিক্ষা প্রদান করে। ছন্দ মাত্রা ইত্যাদি ইত্যাদি। তার মতানুযায়ী কবিতা বোঝার জিনিস না, অনুভব করার জিনিস। তাই লেখক হিসেবে তোর বোধগুলো যাই থাক... পাঠকের কাছে এসে তা অনেক বদলে যাবে, একেক জন নিজের মত করে ভেবে নেবে সেটাই স্বাভাবিক। এই যে আমি ভাবছি, প্রেমিকার সাথে প্রাথমিক তুমুল ভালোবাসাবাসির পরে একসময় তাকে আসবাবেব মত মনে হয়ে যাওয়া, সম্পর্কটা মানবিক লেভেলে বিস্তার না করা...সেটাই এই কবিতার বিষয় তাও কেবল আমারি উপলব্ধি...
লেখা একটু কঠিন ভাষায়, যতদূর জানি এটাই তোর স্টাইল। ভাল লাগলো!
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।
এইখানেই আমি তোর সাথে প্রবল সহমত জানাচ্ছি। কবিতার ব্যাপারে, কোন শেষ কথা, বা সিদ্ধান্ত কেউই দিতে পারেন না। এমনকি কবিতার লেখকও নন। এটাই তার সবচেয়ে বড় সৌন্দর্য!
যেমন তুই যেভাবে কবিতাটাকে পাঠ করলি, "প্রেমিকার সাথে প্রাথমিক তুমুল ভালোবাসাবাসির পরে একসময় তাকে আসবাবেব মত মনে হয়ে যাওয়া, সম্পর্কটা মানবিক লেভেলে বিস্তার না করা" এভাবে তো আমি নিজেও ভাবিনি। আমার চিন্তার পাশাপাশি এই কবিতায় তোর অ্যাডেড ফ্লেভার কিন্তু দারুণ মানিয়ে যায়। এর জন্য তোকে অনেক ধন্যবাদ!
নতুন মন্তব্য করুন