[১]
নির্বাক ছবির সাথে সবাক ছবির দেখা হইলে এই-ই ঘটে। গদার বলছে। তখন তার মুখ বরাবর মাত্র একটা ক্রিম-পাই ছুঁড়ে মারছে নোয়েল গডিন (ইংরেজি ধারায় উচ্চারণ করলে)। ৮৫ সালের কান চলচ্চিত্র উৎসবে।
বেলজিয়ান গডিন ঐ কাজে সিদ্ধহস্ত। ঐটাই তার কাম। নৈরাজ্যই তার পথ। ভাব নেয়া লোক তার পছন্দ না। কারণ একের ভাব অনেকের অভাবের কারণ, ক্ষমতার। ৯৮ সালে বিল গেটসের ...
[১]
নির্বাক ছবির সাথে সবাক ছবির দেখা হইলে এই-ই ঘটে। গদার বলছে। তখন তার মুখ বরাবর মাত্র একটা ক্রিম-পাই ছুঁড়ে মারছে নোয়েল গডিন (ইংরেজি ধারায় উচ্চারণ করলে)। ৮৫ সালের কান চলচ্চিত্র উৎসবে।
বেলজিয়ান গডিন ঐ কাজে সিদ্ধহস্ত। ঐটাই তার কাম। নৈরাজ্যই তার পথ। ভাব নেয়া লোক তার পছন্দ না। কারণ একের ভাব অনেকের অভাবের কারণ, ক্ষমতার। ৯৮ সালে বিল গেটসের অফিসেও হামলা করছিল দলবল নিয়া। তার দলে ছিল ৩২ জন। নানা কিছিমের পাইটাই ছুঁইড়া তারা আওয়াজ দিছে ‘গলুপ গলুপ গলুপ’ (আমি এর অর্থ জানি না)। শেষে নাকি বলছে, ‘এইখানে আমাদের কাম শেষ’। কিন্তু গডিনের কথা আসলে পারতে চাই না। গদারের কথায় আসি। গদার বলছে, নির্বাক ছবির সাথে সবাক ছবির দেখা হইলে এই-ই ঘটে। সবাকে পাই ছুঁইড়া মারে। এইটা তার অভ্যর্থনা, সম্ভাষণ, হাল্কা ভাবে নিলে - হাইহ্যালোর তরিকা। কিন্তু ভিন্নমতে, গদার নাকি এই বাক্য বলে নাই। সে খালি ভাব করছে পাইয়ের ফ্লেভারটা তার পছন্দ হয় নাই। (গদার নিজেও আইকনোক্লাস্ট। তার ‘হেইল মেরি’ দেখলে বুঝা যায় এই বিষয়ে সে কতদূর যাইতে পারে।)
তাই এক ধরণের ছবি আরেকধরণের ছবিকে সহজে নিতে পারে না। তাদের মধ্যে খিটাখিটি হয়। প্রয়োজনে মারামারিও। ‘ছবি’ মানে কিন্তু ছবি উৎপাদনের তরিকা। ‘ছবি’ মানে তথ্য, তথ্য উৎপাদনের তরিকা। পাই মারামারির লঘু উদাহরণ না টাইনা বলতে চাই, ঘটনা গুরুতর। তরিকায় তরিকায় সংঘর্ষ হবেই। তা অবশ্যম্ভাবী।
[২]
একদা বাংলাদেশে তথ্যের মহাজন ছিল ‘গণমাধ্যম’। গণমাধ্যম শব্দটাই কারো কাছে হাস্যকর । তারা এইটা নিয়া সন্দেহ জানায়। গণমাধ্যমের মূল ইংরেজি ‘মাসমিডিয়া’ শব্দের আবিষ্কার ঘটে ১৯২০ সালের দিকে। তখন জিনিসপত্রের বিজ্ঞাপন বেশি মানুষের কাছে সস্তায় পৌঁছানোর ‘মাধ্যম’কেই গণমাধ্যম বলত তারা (দ্র: এন.টি. প্রাইগ, অ্যাডভার্টাইজিং অ্যান্ড সেলিং,১৯২৩)। শব্দটা ব্যবসায়িক। এরপর ধীরে ধীরে এই শব্দ সাংবাদিক হইয়া উঠল। কিন্তু ১৯৬০ এর দশকে ‘মাস’ বইলা আসলেই কিছু আছে কিনা এই নিয়া তর্ক জারি হইল। ‘মাস’ মানে বৃহৎ আকারের অনির্দিষ্ট আকৃতির পিণ্ড। ‘গণ’ এইরকম কিছু না। মাস বইলা আর আস্তা কোনো টুকরা নাই। একেক টুকরা একেক জিনিস কিনতে পায় ও চায়। সুতরাং বিশ্ববিদ্যালয়গুলাতে মাসমিডিয়া বাদ্দিয়া মিডিয়া স্টাডিস পড়ানো শুরু হয়। এই মিডিয়া স্টাডিসের কালে আসছে নয়া মিডিয়া। এই নয়া মিডিয়াকে নিয়া মিডিয়া স্টাডিসও বিপাকে। বিপাকে ফেইলা দেয়া এই ঘটনাটাকেই আমি ডাকতে চাই ‘মুক্তমাধ্যম’। মুক্তমাধ্যমের অনেক ক্ষমতা। এর কারণেই বাংলাদেশে তথ্য উৎপাদনের একচেটিয়া ক্ষমতা কথিত ‘গণ’মাধ্যমে’র হাতে আর নাই।
মুক্তমাধ্যমে অনেক ক্ষেত্রেই ব্যবহারকারীরা নিজেরা তথ্য সংযুক্ত করতে পারেন। প্রতিক্রিয়া জানাইতে পারেন। এবং সম্ভবত প্রায় সকল ক্ষেত্রে এইগুলা তারা প্রায় বিনা অর্থব্যয়ে করতে পারেন। মুক্তমাধ্যম তাই নানাভাবে কথিত ‘গণ’মাধ্যমের দিকে চ্যালেঞ্জ (পাই?) ছুঁইড়া দেয়। এবং অনেক মানুষকেই ফিরায়া দেয় তার প্রশ্ন করার অধিকার। অধিকার শব্দটা পছন্দ না হইলে বলা যায়, মার্ক্স যেইটারে ‘মিনস অফ প্রডাকশন’ বলসে, মোটাদাগে সেই উৎপাদনের উপায়গুলার দখল অনেকটা ফিরায়া দিসে এই মুক্তমাধ্যম। এখন আর বিনাবাক্যে রেডিও-টিভি-পত্রিকার পরিবেশিত তথ্য মাইনা নেয়ার আমল নাই। এই আমলে, নেটসক্ষম মানুষ ‘গণ’মাধ্যমের একচেটিয়া আধিপত্যের বিরুদ্ধে সরব।
[৩]
গত ১ বছর, মানে ২০১০ সালে, এমনে সরব হওয়া নেটসক্ষম মানুষের সোচ্চার কলরব অনেক অনেকবার শুনা গেছে। শুনা গেছে সচলায়তনের কণ্ঠও। সচলায়তনের লেখকরা যেমনে পারা যায়, যতভাবে পারা যায়, নানা ধরণের মাধ্যম ও তাদের পরিবেশিত তথ্যের সত্যতা নিয়া তাদের প্রশ্নগুলা নিঃসংশয়ে করছে। খালি তাই না, এমনকি মুক্তমাধ্যমেরও নানাবিধ ‘অপ’ব্যবহারকেও ছাড় দেয় নাই। তীক্ষ্মতার সাথে সত্যাসত্যের বিচার করসে। ‘শ্রদ্ধেয়’ বা ‘অশ্রদ্ধেয়’, কেউই ছাড় পান নাই সচলায়তনের তথ্যবিচারের হাত থাইকা। যা জানছে - বুইঝা জানছে।
আবার, এই ২০১০ সালেই প্রথাগত মাধ্যমগুলার সাথে সচলায়তনের সম্পর্ক একটা নতুন মাত্রায় প্রবেশ করছিল। কখনো সচলায়তনের লেখার অনুমোদিত মুদ্রণ, কখনো বিদ্রুপ, কখনো সরাসরি আক্রমণের শিকার হইছিল সচলায়তন। এই ঘটনাগুলা, কে ভালো কে খারাপ এই সাবজেক্টিভ আলোচনা বাদ্দিয়াও, বিভিন্ন ধরণের মাধ্যমের ভিতর ক্রমেই বাড়তে থাকা আন্তঃনির্দেশের (পাল্টাপাল্টি রেফারেন্সের) প্রবণতাকে সূচিত করসে। একই সাথে এইটাও স্পষ্ট বইলা দিছে, মুক্তমাধ্যমকে বাদ দিয়া বা এড়ায়া গিয়া ‘সত্য-উৎপাদনে’র কোনো পাঁয়তারা সফল হবে না।
[৪]
বন্ধুরা, ২০১০ সালে, উইকিপিডিয়া থাইকা উইকিলিকসের মতন প্রতিষ্ঠান, কিংবা একেবারে এককব্যক্তির ফেসবুক স্ট্যাটাস, টুইট থাইকা ব্লগের কমেন্ট - সর্বত্র শুনা গেছে মুক্তমানুষের কণ্ঠস্বর। এই হিসাবে এইটা ছিল একটা বিশেষ বছর। এমনটা আগে হয় নাই। আসেন এই বছরে আমরা আরো উঁচা আওয়াজে গলা ছাড়ি। ‘পৌঢ়’মাধ্যমের আবহমান চাপাবাজি থামাইতে মুক্ত ‘পৌর’মাধ্যমের বিকল্প কী?
সচলায়তনের পৌরসভায় চাপাবাজির জায়গা নাই। মহাজনমাধ্যমের কুতুবেরা, তোমাদের সকল চাপার ‘পাইপাই’ হিসাব নেয়া হবে।
মন্তব্য
---আশফাক আহমেদ
ধন্যবাদ।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
ভাই......ভালো আছেন?????
শুভ নববর্ষ(!)
আমি মেঘের দলে আছি, আমি ঘাসের দলে আছি
অলস সময়
হ ভাই
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
চমৎকার! চমৎকার বলেছেন!!
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
মাধ্যমগুলো শুরুতে সবাক থাকে, তারপর সেগুলোকে একটু একটু করে নির্বাক করা হয়। নতুন সবাক মাধ্যমের আবির্ভাব তাই পুরনোর কাছে মুখে পাই ছুঁড়ে মারার মতো লাগে। প্রকাশের ক্ষেত্র ও উপায় যত বেশি মানুষের একান্ত হবে, যত বেশি প্রসারিত হবে, নিয়ন্ত্রণের মাস্টারী বেত যত কমতে থাকবে মানুষ ততো বেশি নিজেকে মেলে ধরবে, চিন্তা আর ভাবের লেনদেন বাড়বে, বুদ্ধির জগতের ঠিকাদারদের ব্যবসা ততোই সঙ্কুচিত হবে।
গেল বছর (২০১০) কোন ঈদ সংখ্যা পত্রিকা কিনি নাই। নিজের পয়সায় ঈদ সংখ্যা কেনার পঁচিশ বছরের ঐতিহ্য ভাঙলাম। কেন? ঈদ সংখ্যাগুলো ব্রাহ্মণগুলোকে নেড়েচেড়ে দেখেছি তাদের কনটেন্টে খুব কম মাল আছে যার মান সচলায়তনের যে কোন সপ্তাহের পোস্টগুলোর মানকে ছাড়িয়ে যায়। উন্নত মানের মাল যেটুকু আছে সেটা ঈদ সংখ্যার দামের সাথে পোষায় না। ব্রাহ্মণমাধ্যমদের নয়া কৌশলের পথ বের করাটা ফরয্ হয়ে গেছে। সেখানকার মহাজনদেরও বাঁচার নতুন পথ খুঁজতে হবে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
একদম ঠিক।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
চমৎকার বিশ্লেষণ।
ধন্যবাদ।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
‘শ্রদ্ধেয়’ বা ‘অশ্রদ্ধেয়’, কেউই ছাড় পান নাই
পাবেও না।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
হ্যাঁ, পাইপাই হিসেব নেওয়া হবে। ৩.১৪১৫৯... কে ২২/৭ বলে চালাতে চাইলেও ছাড়া হবে না।
এইতো ম্যাসেজটা 'পাই'লেন
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
!
.........
আমাদের দুর্বলতা, ভীরুতা কলুষ আর লজ্জা
সমস্ত দিয়েছে ঢেকে একখণ্ড বস্ত্র মানবিক;
আসাদের শার্ট আজ আমাদের প্রাণের পতাকা
.........
আমাদের দুর্বলতা, ভীরুতা কলুষ আর লজ্জা
সমস্ত দিয়েছে ঢেকে একখণ্ড বস্ত্র মানবিক;
আসাদের শার্ট আজ আমাদের প্রাণের পতাকা
!
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
ধন্যবাদ।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
ধন্যবাদ।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
নতুন মন্তব্য করুন