একটা না-লেখা ভ্রমণকথা
জালিয়ানওয়ালা বাগ থেকে হরমন্দির সাহিব ১০ মিনিটের পথও না। গিয়েছিলাম ২০১০ এর এপ্রিলে। এপ্রিল নিষ্ঠুর মাস, মৃত জমিনে সে লাইলাক ফোঁটায়, স্মৃতি আর আকাঙ্ক্ষার মিশেলে … এলিয়টকে মনে পড়ে, গরমে। জালিয়ানওয়ালা বাগে ডায়ারবাহিনীর বুলেট গেঁথে আছে দেয়ালে। বাঁধিয়ে রাখা সেই দেয়াল। অসংখ্য মানুষ যায় আসে। আমি ঘাস দেখি, বেল গাছ দেখি আর ঐ কুয়াটার কাছে যাই।
চোয়াল শক্ত হয়ে আসে। ১০ মিনিটের হাঁটাপথ শেষে হরমন্দির সাহিব। এতদূর এইজন্যই আসা। পবিত্র স্বর্ণমন্দির। অনেকটা সময়, দিনে, রাতে, এই মন্দিরের বারান্দায় বসে কাটিয়েছিলাম। আধ্যাত্মিকতায় বিনিয়োগ নাই, তবু অত্যাশ্চর্য শান্তি। শান্তিবিলাসে ভুলে গিয়েছিলাম অপারেশন ব্লুস্টারের কথা। আজ না বলি। বুলেট লাগা অনেক দেয়ালে পলেস্তরা লেপে দিয়েছে জাতীয়তাবাদ। ভালো।
গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোডে ‘বার্লিনের দেয়াল’
স্যারজি, গাড়ি ছুটে যাবে ... হঠাৎ হ্যাচঁকা টান খেয়ে একটা ভাঙাচোরা টেম্পুধরণের বাহনে উঠে পড়লাম। অমৃতসর আসলে ওয়াগা যেতেই হয়। ওরা বলে ‘ভাগ্গা’। প্রায় ১ ঘন্টার পথ। এই সীমান্ত নাকি ভারত-পাকিস্তানের বার্লিনের দেয়াল। অমৃতসর থেকে লাহোরের প্রাচীন রাস্তার মাঝে, এই ওয়াগা-আটারি চেকপোস্টে হয় দারুণ এক ঘটনা, রোজ রোজ। সূর্যাস্তে পতাকা নামানোর সময়, এইখানে দুইদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী যৌথ সমরকলা প্রদর্শন করে। নাকি সমরনৃত্য বলব। তারা ঝুঁটিওয়ালা মোরগের মতো একে অপরকে ঠোকর মারতে যায়। চোখ রাঙিয়ে মারতে যায়, কিন্তু মারে না। খুব বিখ্যাত এই ঘটনা দেখতে দুইপারেই হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয়। ছুটির দিনে ২৫ হাজারের বেশি। পাকিস্তানের ধারে যদিও খুব অল্প লোক ছিল।
যাওয়ার আগে শুনি ক্যামেরা নিষেধ। গিয়ে দেখি অনেকেই নিষেধ মানে নাই। ছবি থাকলে ভালো বোঝান যেত, আপাতত বলে যাই। ওয়াগা সীমান্ত দুপুর থেকেই কয়েক হাজার মানুষ জড়ো হয়। তারা বাস বাসে আসে। নতুন বিয়ে করা দম্পতি, নবজাতকের মাবাবা, আবালবৃদ্ধবণিতা, গরিব বড়লোক সবাই। তারপর দীর্ঘ লাইন। লাইনের শেষে গ্যালারি, ভালো জায়গা পেতে যেতে হয় সকাল সকাল। গ্যালারিতে এত ভীড় যে পারলে একপায়ে দাঁড়িয়ে থাকেন। এখান থেকে চোখে পড়বে সাদা শার্ট ট্রাউজার পরা কনডাক্টরকে। সে ব্যাটন হাতে ব্যান্ড মাস্টার। সে চীৎকার করে। বোলো জয় হিন্দ। জনতা জবাব দেয়, জয় হিন্দ। সে বলে, ক্যায়া? সুনা নাহি। অওর জোরসে বোলো। জনতা বলে, জয় হিন্দ। সূর্যাস্তের তখনো ঘন্টা দুই বাকি। জওয়ানরা আসার আগে, এই সময়টা জনতাকে সুযোগ দেয়া হয় দেশপ্রেম প্রদর্শনের।
বন্দে মাতরম!
নারী মা-জাতি। দেশপ্রেম দেখাতে তাই কেবল নারীদের বেছে নেয়া হয়। দর্শকসারিতে থেকে একে একে উৎসুক নারী, নানা বয়সের, তারা গ্যালারির সামনে দাঁড়ায়। বৃদ্ধা দিদিমাকে নামিয়ে দেয় নাতি-নাতনিরা। তারপর হিন্দি ছবির মতো, দুইহাতে পতাকা ধরে মাথার ওপর দৌঁড়ায়। কেউ কেউ হোঁচট খায়। কিন্তু নোম্যান্স ল্যান্ড ছুঁয়ে ফেরত আসে। এরকম চলে এক ঘণ্টার মত। তখন হিন্দি গান চলে। সবাই গলা মিলায়। মোহে রাঙ দে বাসান্তি। এই গানের প্রেরণা শহীদ ভগৎ সিংয়ের কবিতা। সে পাঞ্জাবেরই সন্তান। জালিয়ানওয়ালা বাগের ঘাস আর হরমন্দির সাহিবের মার্বেল-মেঝে, দুইখানেই তার আত্মীয়পরিজনের রক্ত লেগেছিল কোনো দুই কালে। রাষ্ট্র প্রথমটা মুছে নাই, দ্বিতীয়টা মুছে দিয়েছে।
ঘিঞ্জি কলোসিয়ামে, মানুষের দৌঁড় দেখে।
পাকিস্তান থেকে ৩বার আওয়াজ আসে … আল্লাহু আকবার। আল্লাহু আকবার। আল্লাহু আকবার। সেকুলার ভারত ৩বার জবাব দেয় হিন্দুস্তাঁ হিন্দুস্তাঁ হিন্দুস্তাঁ।
‘বিটিং দা রিট্রিট'
ওয়াগা বর্ডারে এই ‘বিটিং দা রিট্রিট’ সবার কাছে নন্দিত নয়। হিংস্র অঙ্গভঙ্গী আর উস্কানিমূলক স্লোগান অনেকের কাছেই অরুচিকর। সেখানে একজন ফরাসি পর্যটক আমাকে জিজ্ঞেস করে, ইস দিস আ স্টেইট অফ ওয়ার? - দিস ইজ আ সোসাইটি অফ স্পেক্টাকল, মাই ফ্রেন্ড। উত্তর চেপে রাখি। এইখানে জাতীয়তাবাদ খেলা হয়।
কয়েকটা পত্রিকা থেকে ছিন্ন উদ্ধৃতি
দি টেলেগ্রাফ, এপ্রিল ৪, ২০০৪: আর কোনো উদ্ধত স্যালুট না। খুব শিগগিরি, সূর্যাস্তের বিদায়নুষ্ঠান “বন্ধুত্বপূর্ণ” হতে যাচ্ছে। … কর্তৃপক্ষীয় সূত্র বলেছে, দি বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স ও দি পাকিস্তান রেঞ্জার্স এই কয়েক দশক পুরনো আনুষ্ঠানিকতা, যাকে প্রক্সি-ওয়ার বলাই ভাল, তার সাথে জড়িত সৈনিকদের নতুন করে ভাবানো শুরু করেছৈ। … উদ্ধতই ছিল বটে। … স্যালুটগুলো ছিল কোপ মারার মতো।
দি টাইমস অফ ইন্ডিয়া, নভেম্বর ৮, ২০০৬: এমনটা আর থাকছে না ‘বিটিং দা রিট্রিট’ অনুষ্ঠান। বিএসফ সুর নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেয়ায় মঙ্গলবার এই অনুষ্ঠানে কোনো উত্তেজনা ছিল না।
দি টেলিগ্রাফ, জুলাই ২১, ২০১০: ভারত-পাকিস্তানের আক্রমণাত্মক সীমান্ত বন্ধ করার অনুষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। সৈনিকরা গুজ স্টেপিং [হাঁটু না ভেঙে পা ফেলার ভঙ্গি, দেখতে আকাশে লাথি মারার মতো; গুজ স্টেপ শব্দের আরেক মানে মাথামোটা] করতে গিয়ে হাঁটুর জোড়ায় ফাটল আর পায়ের পাতায় চোট পাওয়ার অভিযোগ জানালে এই সিদ্ধান্ত হয়।… এই সিদ্ধান্তের ফলে প্রতিদিন হাজার হাজার উচ্ছৃংখল জাতীয়তাবদী ও পর্যটককে আকৃষ্ট করা ভারত-পাকিস্তানের শত্রুতার প্রাতিষ্ঠানিক প্রদর্শনী বন্ধ হল।
‘খুশির হাওয়া'
এদিকে আজ (১৪ই মার্চ ২০১১) সৌরজগতে বিখ্যাত আনন্দবাজার পত্রিকা আরো একটা খবর দিল। আনন্দবাজার দি টেলেগ্রাফ, দি হিন্দু বা দি টাইমস অফ ইন্ডিয়ার মতো পুরনো প্রসঙ্গ টানে নাই। তারা অতীত-কাতরতা বা অতীত-বিলাসে বিশ্বাস করে না। উপসংহারের বদলে:
যৌথ কুচকাওয়াজ নিয়ে সাগ্রহ প্রতীক্ষায় দু’পারের মানুষ
- সীমান্ত মৈত্র [sic] • পেট্রাপোলরবিবার সকালে ঘুম থেকে উঠে আনন্দবাজার পত্রিকার পাতায় খবরটা চোখে পড়তেই স্মৃতিকাতর হয়ে পড়লেন উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁর পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দা স্কুলশিক্ষক সুশান্ত মোদক। বনগাঁ মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার সহ সম্পাদক সুশান্তবাবু ২০০৪ সালের এপ্রিল মাসে পাকিস্তানে গিয়েছিলেন ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ক্রিকেট ম্যাচ দেখতে। পঞ্জাবে ওয়াঘা [sic] সীমান্ত পেরোনোর আগে দেখেছিলেন দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কুচকাওয়াজ বা যৌথ রিট্রিট-এর অনুষ্ঠান।
সেই ছবি এখনও তাঁর স্মৃতিতে জ্বল জ্বল করে। ওয়াঘার সেই কুচকাওয়াজের অনুষ্ঠান এ বার বাড়ির কাছেই পেট্রাপোল সীমান্তে দেখা যাবে জানতে পেরে একই সঙ্গে কৌতূহলী এবং উত্তেজিত তিনি। বললেন, “অমৃতসর থেকে সড়কপথে প্রায় ৩০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে ওয়াগা সীমান্তে পৌঁছেছিলাম। দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর জওয়ানেরা প্রতিদিন সকাল ৬টায় কুচকাওয়াজের মাধ্যমে জাতীয় পতাকা তোলেন। আবার সন্ধ্যা ৬টার সময় কুচকাওয়াজের মাধ্যমেই জাতীয় পতাকা নামিয়ে নেওয়া হয়। বর্ণাঢ্য ও মনোরম সেই দৃশ্য অনেকের সঙ্গেই গ্যালারিতে বসে দেখেছিলেন সুশান্তবাবু। আজও সেই দৃশ্য ভুলতে পারেননি। এ বার হাতের কাছেই পেট্রাপোলেও সেই ছবি দেখার অপেক্ষায় আর তর সইছে না তাঁর।
শুধু সুশান্তবাবুই নন, ওয়াঘা সীমান্তের মতো পেট্রাপোলেও যৌথ রিট্রিট-এর খবর সংবাদপত্রে দেখার পরে বনগাঁবাসীর মধ্যেও এ ব্যাপারে প্রচণ্ড উৎসাহ তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে যাঁরা আগে কখনও এমনটা দেখেননি তাঁদের কৌতূহল যেন আরও বেশি। এমনই একজন বাবু বক্সি। পেশায় শিক্ষক মানুষটির কথায়, “ওয়াঘা সীমান্তে দু’দেশের সেই কুচকাওয়াজ স্বচক্ষে দেখার সৌভাগ্য কখনও হয়নি। টিভিতে হয়তো একবার দেখে থাকব। ভাবতেই ভাল লাগছে এ বার নিজের চোখে তা দেখতে পাব।”
এদিন পেট্রাপোল সীমান্তে গিয়ে দেখা গেল, সকলের আলোচনাতেই এই বিষয়। ভারত-বাংলাদেশের সীমান্ত পেট্রাপোল ও বেনাপোলে সত্যিই যে এই দৃশ্য দেখা যাবে তা অনেকেই ভাবতে পারেননি। এটা যেন শুধু ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যেই একচোটিয়া হয়ে গিয়েছিল। সড়কপথে বহির্বাণিজ্যের ক্ষেত্রে দেশের বৃহত্তম এই সীমান্তে বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীরাও এই খবরে যথেষ্ট উৎসাহী। শুধু তাই নয়, এর ফলে পর্যটকদের আনাগোনাও আগের তুলনায় বেড়ে যাবে বলে আশা করছেন স্থানীয় হোটেল মালিকেরা। বর্তমানে পেট্রাপোল সীমান্ত থেকে কলকাতা পর্যন্ত ১৭টি বেসরকারি বাস চলাচল করে।
পরিবহণ ব্যবসায় যুক্ত তথা পেট্রাপোল মানি এক্সচেঞ্জ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক দেবদাস মণ্ডল বললেন, “ভারত ও বাংলাদেশের যৌথ কুচকাওয়াজ শুরু হলে আরও বেশি করে পর্যটক আসবেন। ফলে পরিবহণ ব্যবসারও উন্নতি হবে। পাশাপাশি আরও বেশি মানুষের কর্মসংস্থানের দরজাও খুলে যাবে। সরকারি এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছি আমরা।”
শুধু এ পারেই নয়, দু’দেশের এই সিদ্ধান্তে খুশির হাওয়া বইছে ওপারেও। এ দিন সকালে বেনাপোল সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে আসা কয়েকজন বাংলাদেশির সঙ্গে কথা বলতেই তার আঁচ টের পাওয়া গেল। তাঁরা জানালেন, দু’দেশের মানুষই গত বেশ কয়েক বছর ধরে এক সঙ্গে সীমান্তে মাতৃভাষা দিবস পালন করে আসছেন। এ বার যৌথ কুচকাওয়াজ শুরু হলে দু’দেশের মানুষের মধ্যে সৌহার্দ্যের ভিত আরও মজবুত হবে বলে তাঁরা মনে করেন।
যৌথ রিট্রিট্র-এর সিদ্ধান্তে খুবই উচ্ছ্বসিত এমনই একজন হলেন সাহানারা খাতুন। তাঁর কথায়, “একদিকে বাংলাদেশের সবুজ-লাল জাতীয় পতাকা আর অন্যদিকে ভারতের ত্রিবর্ণ রঞ্জিত জাতীয় পতাকা নিয়ে দু’দেশের জওয়ানেরা কুচকাওয়াজ করছেন---ছবিটা ভাবলেই শরীরে রোমাঞ্চ হচ্ছে।”
এই অবস্থায় দু’দেশের মানুষের এখন সাগ্রহে প্রতীক্ষা সেই ‘ক্ষণ-এর।
একটা ছোট প্রশ্ন
জাতীয়তাবাদী মোরগ লড়াইয়ের ‘সাগ্রহ প্রতীক্ষা’য় থাকা আপনাকেই বলছি, ঠিকঠাক আনন্দবাজার পড়ছেন তো?...
মন্তব্য
দারুন।
আমার ভাবনায় একটা প্রাসঙ্গিক ফুটনোটঃ
কখনো কখনো জাতীয়তাবাদ রাষ্ট্র তৈরী করে আবার রাষ্ট্র তৈরী হবার পর ও নতুন জাতীয়তাবাদের জন্ম হয়। যেমন হয়েছে ইসলামিক রিপাবলিক অফ পাকিস্তানে। রাষ্ট্র, জাতি তৈরী করলো- বলা ভালো তৈরী করার চেষ্টা শুরু করলো। হলো কি?
এই যে ভারতীয় জাতীয়তাবাদ, এতো যে উল্লম্ফন এ ও কি রিপাবলিক অফ ইন্ডিয়ার মেকিং নয়? প্রচেষ্টার শুরু ১৯৪৭।
সফল হলো কি? পুরো ইন্ডিয়ান রিপাবলিক ঘুরতে পারিনি, বাড়ীর পাশের সেভেন সিস্টারে কাটানো সময়ে এই সফলতার কোন চিহ্ন দেখিনি।
ভারত রাষ্ট্র এখনো জোড়া না লাগা ক্ষতগুলো ঢাকার জন্য যে উল্লম্ফন প্রমোট করে সেটি কোন সফল জাতীয়তাবাদ না হয়ে জিঙ্গোইজমে পর্যবসিত হয়েছে।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
একমত মোরশেদ ভাই। এইধরণের জাতীয়তাবাদের 'খেলায়' জরুরি হইতেছে অপনেন্টকে বাঁচায়া রাখা। দরকার হইলে নতুন অপনেন্ট তৈরি করা। কিন্তু খেলা চালু রাখতে হবে।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে কিন্তু ১৯৪৭এর অনেক আগেই, ইংরেজ-বিরোধী আন্দোলনের সময়। আর এখন এই জাতীয়তাবাদের পিল সবাই গিলে ফেলেছে - শিক্ষিত সমাজ বেশী করে, নিরক্ষরেরা মিডিয়ার মাধ্যমে। সেভেন সিস্টারে বা কাশ্মীরে ফেল মেরে গেলেও বাকি ৯৫% মোটামুটি মানিয়ে নিয়েছে। বাঙালীরা এখন আর বর্গী এল দেশে বলে ভয় পায় না, বর্গীর উত্তরসূরী শচিনের সমর্থক যে সবাই।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
ঠিক।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
উপমহাদেশে পাকিস্তানের জাতীয়তাবাদের এই ধর্মীয় চেহারাটা আনুষ্ঠানিক। ইন্ডিয়া ও বাংলাদেশে অনানুষ্ঠানিক। ধর্মীয় জাতীয়তাবাদের মার্কেট ইন্ডিয়া বাংলাদেশ দুইটাতেই ভালো। একটাতে প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। আরেকটাতে বিএনপি জামাত জোট।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
জাতীয়তাবাদের মোরগ লড়াই এই প্রথম নয়। আড়াই হাজার বছর আগে গ্রীসে এই রকম মোরগ লড়াই হিসাবে অলিম্পিক গেমস শুরু হয়েছিল। এখন ক্রিকেটের বা ফুটবলের বিশ্বকাপ কোনটাই মোরগ লড়াই ছাড়া কিছু না। সমর্থকদের মনে করিয়ে দেওয়া হয় দেশের প্রতি আনুগত্যের কথা। ফরাসী পর্যটকের কাছে এটা দৃষ্টিকটু লাগা স্বাভাবিক, তারা এই পথ মাড়াননা আর, অবশ্য বিশ্বযুদ্ধ উপহার দেবার পর। আমরা প্রাচীন গ্রীসের থেকেও মানসিকতায় পিছনে পড়ে আছি, তাই আমাদের এই প্রাপ্য। তবে আনন্দবাজার তার পুজীবাদী ও দক্ষিণপন্থী চেহারা বহাল রেখেছে দেখে আমি খুশী।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
জাতীয়তাবাদের মোরগ লড়াই এই প্রথম নয়। আড়াই হাজার বছর আগে গ্রীসে এই রকম মোরগ লড়াই হিসাবে অলিম্পিক গেমস শুরু হয়েছিল। এখন ক্রিকেটের বা ফুটবলের বিশ্বকাপ কোনটাই মোরগ লড়াই ছাড়া কিছু না। সমর্থকদের মনে করিয়ে দেওয়া হয় দেশের প্রতি আনুগত্যের কথা। ফরাসী পর্যটকের কাছে এটা দৃষ্টিকটু লাগা স্বাভাবিক, তারা এই পথ মাড়াননা আর, অবশ্য বিশ্বযুদ্ধ উপহার দেবার পর। আমরা প্রাচীন গ্রীসের থেকেও মানসিকতায় পিছনে পড়ে আছি, তাই আমাদের এই প্রাপ্য। তবে আনন্দবাজার তার পুজীবাদী ও দক্ষিণপন্থী চেহারা বহাল রেখেছে দেখে আমি খুশী।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
আমিও খুশি
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
আমাকে একবার এক পাকিস্তানী বলেছিল, পাক আর্মি নিজেও জানে যে যুদ্ধ হলে তারা ইন্ডিয়ান আর্মির সাথে টক্কর দিয়ে কখনো পারবে না। কিন্তু তারপরও তারা ভারত বিষয়ে দেশে সবসময় উত্তেজনা জিইয়ে রাখে। কারণ, পাবলিকের টাকায় এত বড় হাতী পেলেপুষে রাখতে হলে এছাড়া তাদের আর গত্যন্তর নেই। যেদিন অপোনেন্ট থাকবে না, পাবলিকও সেদিন প্রশ্ন করবে এত বড় আর্মি পালার দরকারটা কী। তাই সে সুযোগও কখনো দেয়া যাবে না।
পাব্লিকের এ ছাড়াও আরো একশটা কারণে প্রশ্ন তুলা উচিৎ
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
আমার মনে হয় প্রসঙ্গটা একটু থিওরিটিকাল দিকে ঘুইরা যাইতেছে। আমি ভারত-বাংলাদেশে এই ড্রিল চালুর হওয়ার বিষয়টাকে প্র্যাকটিকাল ঝামেলা হিসাবে দেখতেছি। 'সাহানারা খাতুন'এর মুখে গুঁজে দেয়া আনন্দবাজারী কথাগুলাকেও ঝামেলা হিসাবে দেখতেছি। একটা লিঙ্ক দেই, বিষয়টা পরিস্কার হবে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকার ১৩ তারিখের একটা হেড এই রকম: Now, India to have a ‘Wagah in the East’। পুরা খবর এইখানে। এইখানে একটা কৌতুককর লাইন আছে : the two countries have decided to start Attari- Wagah border kind but nonaggressive joint retreat ceremony। মূল পোস্টে দেয়া খবরগুলায় দেখবেন, বছরের পর বছর nonaggressive হওয়ার সিদ্ধান্ত, আলোচনা ইত্যাদি বহু কিছু হইছে, কিন্তু ফাইনালি আক্রমণাত্মক চরিত্রে বদল আসে নাই। ভারত কী করবে এই নিয়া বলার এক্তিয়ার নাই। বা আছে নাকি নাই সেইটা ভিন্ন আলোচনা। কিন্তু, ভারতীয় জিঙ্গোইজমকে তুষ্ট করতে বাংলাদেশের ঐ ধরণের ড্রিলে (যেইখানে ট্যাক্সের টাকায় রাষ্ট্রীয় মেগালম্যানিয়ার ডিসপ্লে হয়) যোগ দেয়াটা বাংলাদেশের নাগরিক হিসাবে আপনারা কি সমর্থন করেন? আমি কিন্তু করি না।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
এটা সমর্থন করার কোনো সুযোগই তো নেই। ক্লিন ভাষায় এটা একটা স্টেইট ইতরামি।
==========================================================
ফ্লিকার । ফেসবুক । 500 PX ।
আপনার পর্যবেক্ষণ সত্যি দারুন।
Now, India to have a ‘Wagah in the East
খবরটা, আমি পড়েছি কিন্তু বুঝি নাই।শুধু জানতাম ওয়াগাহ ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত চৌকির নাম।
রাষ্ট্রীয় অর্থে এই ইতরামীর তীব্র নিন্দা জানায়।ইঁদুর-বিড়াল খেলার মাধ্যেম সম্পর্ক উন্নয়নের এই উদ্দেশ্যমূলক ভ্রান্তি নিয়ে খেলা অব্যহত থাকুক।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
পাকিস্তানের কাতারে সামিল হতে পেরে খুব ভাল লাগছে।
জাতীয়তাবাদী মোরগ লড়াইয়ে বাংলাদেশি পক্ষের সৈন্যদের হাঁটুর বাটিতে সুপার-গ্লু লাগানোর পরামর্শ দিয়ে গেলাম।
চমৎকার লেখায় উত্তম জাঝা।
টুটাফুটা জাতীয় সংহতির পক্ষে চারপাশে চৌদ্দটা 'শত্রুদেশ' থাকা লাভজনক।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
"নাঙ- এর দেশে নাঙ নাই, নাঙ আছে চৈতাবো"— আমাদের গ্রামে প্রচলিত একটা প্রবচণ। এর অর্থ হলো নিজের ঘরের পাশে 'সম্ভাবনা' রেখে দূরের কোনো জায়গায় সম্ভাবনার খোঁজ করা!
বেনাপোল সীমান্তে হাজারে বিজারে পর্যটকের ভীর লেগে যাবে এই সার্কাস প্রদর্শণীতে। দেশ আয় করবে কোটি কোটি বৈদেশিক মুদ্রা। এই রকম বালছাল টাইপের যুক্তিও সেদিন পড়লাম কোন পেপারে জানি! বাংলাদেশের এতো এতো পর্যটন এলাকা রেখে, সেগুলোর রক্ষণাবেক্ষণের দিকে কোনো দৃষ্টিপাত না করে, বিদেশী এবং স্বদেশী পর্যটকদের নিরাপত্তার বিধান না করে এখন বেনাপোলে ফাউল বিএসএফ- এর কথায় বেনাপোলে সার্কাসের প্যান্ডেল খুলে বসার পাঁয়তারা করছে বাংলাদেশ।
ভারতে, সীমান্তের ওপাড়ে গড়ে ওঠা মাদক কারখানাগুলোর ব্যাপারে কোনো সমাধানে না এসে, সেই মাদকের নির্দ্বিধায় বাংলাদেশের ভেতরে চলে আসার ব্যাপারে কঠোর অবস্থান ব্যাখ্যা না করে, সীমান্তে বাংলাদেশীদের হত্যা-নির্যাতন বন্ধে কোনো কঠোর পদক্ষেপ না নিয়ে কর্তারা ফিরে আসছেন সার্কাস করার আশ্বাস নিয়ে।
এই মোরগ লড়াই মার্কা সার্কাসে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্তে অবশ্যই 'না'।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
হ রাইতের বেলায় পাখির মতন গুলি কইরা সকাইলে আইসা এই ঢং। এই উদ্যোগটা নিলে আমাদের লুঙ্গি আরো একটু উদোম হবে এই যা।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
স্মাইলি পেস্ট করার লাইগা নায্রুল ইসলামরে আনন্দবাজারে ইন্টার্ন করতে পাঠানো হউক।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
অসাধারণ!
যুদ্ধ আর যুদ্ধাস্ত্র ব্যবসায় নতুন চরনদার হিসাবে পাকিস্তানের মতো বাংলাদেশকে পেলে মন্দ হয় না। মাশরিক-মাগরিব দুই দিকেই তাহলে জঙ জারী থাকতে পারবে।
এমন ছাগলামীতে বাতাস দেবার মতো পাঁঠার অভাব দেশে কখনোই ছিলো না।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
স্মল আর্মসেরও নিশ্চয়ই ব্যাপার আছে। খোঁজ নিলে বুঝা যাবে।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
জাতীয়তাবাদের (অথবা জিঙ্গোইজমে) খেলার অশ্লিল প্রদর্শনীর এই প্রস্তাবনাতেআমি এদিকেরও কিছু ভেস্টেড ইন্টারেস্ট গ্রুপ দেখতে পাই...।
চমৎকার বিশ্লেষণ এবং লেখা।
তাতো আছেই
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
প্রসূনের গরুগুলি ঘাস খায় বিওপির মাঠে
প্রসূনবাবুকে খুঁজতেছিলাম ..
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
বাহ, ভালোবাসা তো ভালোই হচ্ছে!! কিন্তু সেই পেট্রাপোলেই সীমাবদ্ধ থাকবে কেন? কয়েক হাজার মাইল সীমান্তের সবগুলো পয়েন্টে যৌথ চৌকি বসিয়ে মাসে একটা করে যৌথ কুচকাওয়াজ করাতে পারলে সীসার গুলির খরচ বাঁচতো, অবকাঠামো ব্যয় কমতো, আর কোরবানীর সময় গরু আর টায়ারগুলো নিরাপদে এপার ওপার করতে পারতো।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
তালিবান তাড়াতে গিয়ে কি পাকিস্তানের কি সামরিক বাজেটে টান পড়লো?
সামনের বাজেটে "সামরিকোৎকোৎকোৎকোৎপাদক" খাতে বরাদ্দ বাড়ানো উচিৎ।
নয়ত ভারতকে শেষমেষ নেপালে বা ভূটানে গিয়ে মাথা কুঁটতে হবে।
নেপালে তেনারা ভালই আছেন। [ভূটানে যাইতে হবে, অনেকদিনের ইচ্ছা :)]
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
এই স্মাইলি দেয়ার অপরাধে আবার ইন্টার্নশিপে পাঠায়োনা।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
চমৎকার
বুয়েট আর ডিএমসির দুই হলের মধ্যে লোডশেডিঙের সময় গালির প্রতিযোগিতা শুরু হয়। এটাকেও একটা ট্যুরিস্ট অ্যাট্রাকশন বানানো হৌক।
এ ছাড়া শহরের অলিতেগলিতে প্রতিবেশীরা বারান্দায় দাঁড়িয়ে পরস্পরের প্রতি আপত্তিকর অঙ্গভঙ্গি ও ফাকিউ প্রদর্শন করতে পারেন। এটিও প্রচুর পর্যটক টেনে আনবে। কর্তৃপক্ষ ভেবে দেখতে পারেন।
বাতিল্দারে রেফারি ... মামুদর রমান বনাম অভিক সর্কর
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
ওহ নো! টিশার্ট ছাপানো হৌক। টিকেট অগ্রিম বুকিং দিলাম। বাতিল্দারে রেফারি না, কমেন্টেটর হিসেবে চাই।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
লেখা ভালু পাইলাম।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
ধন্যবাদ
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
নতুন মন্তব্য করুন