‘যা কিছুই বলতে চাই
আমারই শব্দে বিনাশ
আমারই শব্দে’ (ইরশাদ কামিল)
শব্দ আর অভিপ্রায়ের মধ্যে আদি দ্বন্দ্বের নিষ্পত্তি হলে, সেটা হতেই হয় কোনো একদিন, দুর্বহ বোঝার মতো চেপে থাকে কোনো কোনো উচ্চারণ। কোনো কোনো শব্দ ফেরানো যায় না আর। কোন শব্দই বা যায়!
হাওয়ায় মিলিয়ে যাওয়া শব্দ ততক্ষণে রেখে গেছে দূরারোগ্য ক্ষত। অমোচোনীয় আঁচড় কেটে গেছে মুহূর্তের গায়ে । অথচ কেউ তাকে সাবধান করে করেনি। মানুষটি স্বীয় উচ্চারণের গ্লানি নিয়ে অসহায় বসে থাকে, একা। আর কোনো শব্দ তাকে কোনোদিন উদ্ধার করতে পারে না।
কিন্তু কেউ আছে, যে তার উচ্চারণের দায় বইতে পারে চমৎকার। স্রষ্টার উচ্চারণ, তার যাবতীয় সৃজনশীলতার অভেদ। তাই স্রষ্টা বলেন ‘কুন’! ‘হও’! … আর হয়ে যায়। সেই থেকে মানুষ দারুণ ভক্ত তার।
‘যখন কোথাও ‘কিচ্ছু না’টাও ছিল না
সে ছিল’ (ইরশাদ কামিল)
তাকে পেলে, ঠিক জানা হয়ে যেত, কী করে বইতে হয় নিজস্ব উচ্চারণের ভার। নিজের বানানো পৃথিবীতে বেঁচে থাকা সহজ নয়।
…
তাকে পেলে, ঠিক জানা হয়ে যেত, কী করে বইতে হয় নিজস্ব উচ্চারণের ভার।
জীবনে একজনকে ভালোবাসতে পারলে, ঠিক মত যদি পারা যায়, স্রষ্টাকেও পাওয়া যাবে। সাধকেরা জানেন। ভালোবাসার দুই রূপ। ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য এবং বাস্তব/আসল। একটা দিয়ে আরেকটায় যেতে হয়। যেতে হয়, কিন্তু যাওয়া সহজ নয়।
পাঞ্জাবের গ্রাম্যগাথায় আছে হির-রানঝার কথা। ঐযে গান, রানঝা রানঝা কারদিনি মে আপ্পে রানঝা হোই। রানঝার জপ করতে করতে আমিই কখন, রানঝা হয়ে গেলাম। আত্মবিনাশী প্রেমের ঘূর্ণাবর্তে হারিয়ে যাওয়ার অরূপকথা 'হির-রানঝা'। মেয়েটির নাম হিরই। যদিও ছেলেটির নাম জর্ডান। ইমতিয়াজ আলির রকস্টার তাদের গল্প।
…
‘ভালো সিনেমা হলো সেটই যেটায় তিনটা ভালো দৃশ্য থাকে,
আর খারাপ দৃশ্য একটাও থাকে না’(হাওয়ার্ড হক্স)
ইমতিয়াজ আলির প্রথম চিত্রনাট্য ‘আহিস্তা আহিস্তা ‘ দস্তয়ভস্কির গল্প ‘হোয়াইট নাইটস’। তার প্রথম ছবি ‘সোচা না থা’ একই গল্প। তারপরেরটাও - ‘যব উই মেট’। বালক, বালিকা আর তৃতীয় পুরুষ। যেখানে বালিকাটি, দুর্ভাগ্যচক্রে, তৃতীয় পুরুষটির স্ত্রী, নয়ত বিবাহোদ্যতা, বাগদত্তা। কী আসে যায় । ইমতিয়াজ নিঃসন্দেহে ‘ভালো সিনামা’ বানান।
রকস্টার কাঠামোর বাইরের সিনেমা নয়। বালক, বালিকা, তৃতীয় পুরুষ। বোনাস, আরো কিছু প্রসিদ্ধ সিনামার আর্দ্র দৃশ্য; দৃশ্যগুলো দুর্বল, একই সঙ্গে অনিচ্ছুক বটে।
বিরতি পর্যন্ত তবু ইমতিয়াজ ধস্তাধস্তি করেছেন কাঠামোর যাবতীয় চাহিদার সাথে। তবুও, বিচ্ছিন্ন প্রেমিকের গানে, পুরাতন স্মৃতির চিরায়ত স্যাঁতেস্যাঁতে ফ্ল্যাশব্যাক, বিরতির আগে পর্যন্ত পাওয়া যাবে না।
…
বিরতির পর রকস্টারের মৌল উপাদান ফ্ল্যাশব্যাক। কিন্তু সত্যিটা হলো, এই সিনামা ততক্ষণে কাঠামো-টাঠামো ছাড়িয়ে অন্য স্তরে চলে গেছে। উন্মাদ গান। অবিন্যস্ত সিকোয়েন্স।পুনরাবৃত্তি। এর মধ্যে যেহেতু একাধিক রকস্টার সিনামার প্রতি ট্রিবিউট, বাথটাবের উপরে ঝুলন্ত গিটারে আগুন, হাইস্পিড ক্যামেরায় জ্বলন্ত। এইসব গণ্ডগোলের মধ্যে পলিটিক্স। জিম মরিসনের স্পোকেন পোয়েট্রি।
‘এই যে ইকো ফ্রেন্ডলি, প্রকৃতিপ্রেমিক!
আমিও প্রকৃতি।
রেওয়াজ আর সমাজ
আমাকে কাটিস কেন
বাঁটিস কেন?
কেন সত্যের শিক্ষা দিস
যখন সত্য সহ্য হয় না?’ (ইরশাদ কামিল)
গানের মধ্যে স্বাধীন তিব্বতের পতাকা, কাশ্মীরের মানুষজন আর, খালিস্তান? তিব্বত, কাশ্মীর, খালিস্তানের সাথে এই সিনামার দূর-দূরের কোনো সম্পর্ক নাই। নাকি আছে?
ইমতিয়াজের সাথে আছে ধারণা করি। টিভিসিরিজ নির্মাতা চাক লোরের যেমন। তার সিরিজের প্রত্যেক পর্বের শেষে একটা কথাবার্তা লেখা কার্ড দেখা যায়। দেখাই যায়, পড়া যায না। ক্ষণস্থায়ী কার্ডটা দর্শককে পড়ে ওঠার সময় দেয় না। চাক লোরের ভ্যানিটি প্লেইট, পড়তে হলে, থেমে রিওয়াইন্ড করে পড়তে হয়। ইমতিয়াজের ভ্যানিটি প্লেট না পড়লেও চলবে। কারণ, আশা করা যায়, ইমতিয়াজ সময় নিয়ে তার কথাগুলো বলবেন। এবং এই সিনেমাটাও তাকে আবার বানাতে হবে, বাজি ধরা যায়।
যেহেতু মানুষকে তার অমীমাংসিত গ্লানির কাছে ফিরতে হয়, বারংবার।
...
রকস্টার
মুক্তির তারিখ: ১১ নভেম্বর ২০১১
পরিচালক: ইমতিয়াজ আলি
প্রযোজক: শ্রীআস্থাবিনায়ক সিনেভিশন
সঙ্গীত: এ আর রহমান
গীতিকার: ইরশাদ কামিল
অভিনয়: রণবীর কাপুর, নার্গিস ফাখরি, শাম্মি কাপুর
মন্তব্য
ছবিটা দেখিনি, দেখা হবেওনা, তবে আপ্নার রিভিউ লেখার ধরণটা ভিন্ন, পড়তে পেরে ভাল লাগ্ল।
শাফি।
'হাওয়া হাওয়া' গানটা ছোটবেলায় পড়া 'দ্য ডান্সিং প্রিন্সেস' রূপকথার গীতিরূপ। সিনেমা'র চাইতে এর গানগুলো টানে বেশি।
রিভিউ লেখার ধরণটা আগ্রহব্যঞ্জক।
কাছাকাছি একটা গান আছে প্রিয়দর্শনের পুরান একটা সিনেমায়।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
রিভিউ ভালো লাগল। সিনেমা এখনো দেখা হয়নি, তাই বুঝতে পারছি না সবকিছু।
_________________
[খোমাখাতা]
এটা অনেকদিন ধরেই দেখবো দেখবো ভাবছি, এবার মনে হচ্ছে দেখেই ফেলতে হবে
লেখার স্টাইলটা ভালো লাগছে
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
মুভিটা দেখার ইচ্ছে আছে। আপনার রিভিউটা ইউনিক লাগল
------------
'আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !
সাড্ডা হক, এত্থে রখ ...
রিভিওটা ভীষণ ভাবে মৌলিক। আর ইমতেহাজ আলির সম্বন্ধে কিই বা বলার আছে। এই সিনেমার সবচেয়ে বড় পাওনা এর লোকেশান এবং রনবীরের অনবদ্য অভিনয়, কাহিনীর কথা তো আর বলার অপেক্ষা রাখেনা।
আরে বাহ, প্রথমটায় তো বুঝতেই পারিনি এটা মুভি রিভিউ। ভালো লাগলো।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
রকস্টারের গানগুলো অসাধারণ। এর প্রতিটি গান সুফি আবেগে পরিপূররণ - প্রতিটি গানেই একবার না একবার নিজেকে হারিয়ে ফেলে আবার নিজেকে খুঁজে পাওয়ার এক আদম্য় বাসনার কথা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বলা আছে। আরেকটি ছবি - জিন্দেগি মিলেগি না দোবারা - সেই ছবির প্রতিটি গানেও ঠিক একই রকম বক্তব্য় ভিন্ন ভাবে প্রকাশ করা হয়েছে।
এ আর রহমান, ইরশাদ আর মোহিত চোঊহান যেভাবে মনকে ছোঁয়, ইমতিয়াজ ও রণবীরের কাজ ততজন দররশককে টেনে রাখবে বলে মনে হয়না। প্রাগে নায়িকাকে বড়লোক দেখাতে গিয়ে প্রাসাদ-শোফার-বেন্জ এ বাজেট খরচা না করে (যেটা গল্পে তেমন কাজে আসেনা), তার চাইতে বরনং 'হাওয়া হাওয়া'র মত গানে আরো বেশী খরচ করে সেটাকে সিনেমার আরেকটি 'বড় গান' করা যেত।
গানকে ১০ এ ১০। ছবি ও পরিচালক ১০ এ ৬। নায়িকা পাশ নম্বর পায়নি।
নায়িকার প্রতি এত নির্মম হয়েন না
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
আপনার রিভিউটা অন্যরকম,ভালো লাগল।
আপনি দারুন রিভিউ লেখেন তো !
“Peace comes from within. Do not seek it without.” - Gautama Buddha
বাহ, রিভিউটা একদমই অনন্য লাগলো। গত দেড় সপ্তাহ রকস্টারের গানগুলোই মূলত পথের সাথী - কি সুর, কি কথা, কি মিউজিক কম্পোজিশন ... মুহিত চৌহান মনে হয় জীবনের অন্যতম সেরা কাজ করে ফেলেছে এখানে। সাড্ডা হক গানটা ভয়ংকর প্রেরণা জাগায়!
দেখবো বলে ঠিক করে রেখেছি গান শোনার পরই।
আমি প্রচুর সিনেমা দেখি, এবং প্রায় সবরকমের জিনিসই দেখি। কিন্তু কখনো সিনেমার রিভিউ পড়ি না, পড়লেও আমি সিনেমার কাহিনি না জানার ব্যাপারে খুব কেয়ারফুল থাকি। তবে ভারতীয় হিন্দি ও বাংলা কোন সিনেমা দেখার আগে বিস্তারিত ফিডব্যাক নিয়ে, এমনকি কাহিনিও প্রায় পুরাটা শুনে নিয়ে ভালো লাগবে মনে হলে দেখতে বসি। হিন্দি সিনেমা দেখবার সময়ে গান-নাচ-প্রেম, 'বলিউড' ট্রেন্ড দেখবো মাথায় নিয়েই শুরু করি। 'যাব উই মেট' ভালো লেগেছিল, কাহিনি টাহিনি কিছু না জেনেই দেখেছিলাম। রিভিউ পড়ে 'রকস্টার' দেখার আগ্রহ হারায়ে ফেলেছি!
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
'বলিউড ট্রেন্ড' খুবই ইন্টারেস্টিং বিষয়। সময় পাইলে আরো লিখব। আপাতত তোমার আগ্রহ-হত্যার দায় নিলাম
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
গান শুনে মুভিটা দেখার আগ্রহ হয়েছিলো রিভিউ পড়ে আর দেখতে ইচ্ছা করছে না।
তাইলে না পড়াই ভালো ছিল
এইটা খুব ভালোভাবে বানানো সিনেমা না। কিন্তু আমি চিন্তা করার মতন কিছু এলিমেন্ট পাইলাম, এই আর কি।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
বলিউড-জিনিসপত্রে ঘ্যানর ঘ্যানর, প্যানর প্যানর খুব বেশি। বছরে দুইটার বেশি দেখা হয় না তাই।
আপনার দুর্দান্ত রিভিউ পড়ে, মনে বড় আশা নিয়ে ইউটিউবে গানগুলো ঘাঁটলাম। পাইনসা
হেডব্যাঙ করার মত উচ্ছ্বসিত-উদ্দাম-এক্সট্রাঅর্ডিনারী কিছু পেলাম না রে ভাই ড্রামস-গিটারে কোনো ওয়াও-ফ্যাক্টর পেলাম না। খুবই মিডিওকার কম্পোজিশন
তবে এরকম ব্যতিক্রমধর্মী রিভিউ পেলে...বলা যায় না, 'রকস্টার' দেখে ফেলতেও পারি
“Peace comes from within. Do not seek it without.” - Gautama Buddha
আমার রিভিউর উপর ভিত্তি কইরা সিদ্ধান্ত নিয়েন না ... আমি হয়ত হলে দেখার কারণে অন্যভাবে দেখছি। সিনেমার নেচার বদলায়া যায়, টিভিতে।ইউটিউবে তো বটেই
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
হাচা কতারে বাই ট্রান্সফরমার্স ডার্ক সাইড অব দি মুন সিনেমাতে গিয়ে দেখে মাথা নষ্ট হইল, পরে ১০৮০পি (HD) ৪০" স্ক্রিনে দেখে মনে হইছিল 'মজা পাইলাম না'।
শাফি।
হীণ্ডী শীণেমা আসলে কেউ অনেক ভালো না বললে দেখা হয়না। ইন ফ্যাক্ট আজকাল সিনেমা দেখাই হয়না! এখন আর রকস্টার দেখতে ইচ্ছা করতেসেনা!
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
না দেখলে ক্ষতি নাই ...
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
হ
facebook
রক নিয়া সিনামা বানানের আগে রক বিষয়টা কি সেইটা আগে একটু বুইঝা নেয়া উচিৎ। রক তো কোন আইসোলেটেড ফেনোমেনোন না। রক মিউসিকের পরিষ্কার একটা হিস্ট্রি আসে। ফিলোসফিকাল অ্যান্ড পলিটিকাল গ্রাউন্ড আসে। আৎকার উপরে তৈরী হওয়া কোন ঘটনা না রক মিউসিক। রীতিমতো একটা সংস্কৃতি আন্দোলন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী বিশ্বের অর্থনীতি, সমাজব্যবস্থা, শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি - এই সবগুলার সাথে রক আন্দোলন ওতোপোতভাবে জড়িত। ভালো কথা, সুর, কম্পোজিশনে যেমন ডুবে যাওয়া যায়, যারা সত্যিকারের রক ভক্ত, তারাও ডুবে থাকতে পারে রক গানে। তবে সেইটা কোনভাবেই ভারতীয় মেলোডির ভেতর ডুবে যাওয়ার মতো না। এ আর রহমানের মতো সঙ্গীতকার এই উপমহাদেশ কেন, পুরা পৃথিবীতেই খুব বেশি জন্ম হয় নাই। আমি ভাবতাম হবে, তবে তিনি প্রমাণ কইরা দিলেন, রক মিউসিক তারে দিয়া হবে না। ভারতীয় মেলোডির হারমোনি আর স্পিরিচুয়ালিটিতে ডুবে যাওয়া, আর রকের ডেলিবারেট ডিস্টর্শনে ডুবে যাওয়ার মধ্যে আকাশ পাতাল পার্থক্য আসে। সেইটা কেউ যদি কোনদিন ফিল না করে সিনেমা বানাইতে যায়, তাইলে তো "উন্মাদ গান"ই হইবো। রকস্টার নামে মার্ক ওয়ালবার্গ অভিনিত একটা সিনেমা আসে হলিউডের, পরিচালকে স্টিফেন হেরেক। যারা দেহেন নাই, তারা দ্যাখতে পারেন। অলমোস্ট ফেইমাস, টেনাশিয়াস ডি, ডোরস, দ্য ওয়াল - এইগুলাও দেখতে পারেন। স্কুল অফ রক তো প্রায় সবাই দেখসেন।
আপনার উল্লেখ করা সবকয়টা মুভি দেখছি
এত বেশি রক আর মেটাল নিয়া নাড়চাড়া করি দৈনিক যে অবধারিতভাবেই 'রকস্টার' মুভির গানগুলা আমার কাছে পাইনসা-পান্তাভাত মনে হয়েছে। আহা-উহু করার মত কিচ্ছু পাই নাই।
“Peace comes from within. Do not seek it without.” - Gautama Buddha
@উচ্ছলা ... সহমত ... রনবীর কাপুররে দেইখা কোন অ্যাঙ্গেল থেইকা কি আপনের রকস্টার মনে হইসে??? চমৎকার স্ট্রেইট সিল্কি চুল ... দাড়িটাও সুন্দর কইরা ছাটা ... কাপড় চোপড় পরিষ্কার ... ডিরেক্টর সাহেব তো "রকস্টার" কনসেপ্টটাই বুঝে নাই ... বয়ব্যান্ড আর রকব্যান্ডের কনসেপ্ট গুলায় ফেলসে
আগ্রহোদ্দীপক আলোচনা। আমিও একটু অংশ নেই। এই ছবিটার মূল ব্লান্ডারটা 'রক' ঢুকাইতে গিয়া। রক মিউসিক ওয়েস্টের প্রডাক্ট। ফুল স্টপ। কিন্তু গানগুলাকে রক মনে করে না শুনলেও চলবে। গ্যাংস্টার মুভি যেমন একটা জনরা, রকস্টার মুভিও সিনেমার আরেকটা জনরা। মজার বিষয় হইল, জনরা মুভির কিছু নিজস্ব কিছু কাঠামোগত চাহিদা থাকে। (অলিভার স্টোনের দা ডোরসের মতন, এই সিনেমাতের মিক্সড ফরম্যাটের ভিজুয়াল ব্যবহার করার চেষ্টা করা হইছে শুরুর দিকে)। এখন এই চাহিদাগুলা মিটাইতে গেলে, সুফিদর্শনকে ধাওয়া করা মুশকিল। আমি, অতএব, জনরা চাহিদা, এবং রক-ব্র্যান্ডিং দুইটাকে ডিঙায়া, উল্টাদিক থেকে সিনেমাটা দেখছি। এবং খুবই ব্যক্তিগত ধরণের আমোদ (এন্টারটেইনমেন্ট) পাইছি। এই লিখাটাও এই উল্টা দিক থেকে লিখা।
@ ভুল জন্ম, একটা বাজে সিনেমা দেখা অতটা খারাপ অভিজ্ঞতা না। যতটা খারাপ অভিজ্ঞতা হইল আরো-অনেক-ভালো-হইতে-পারতো এইকরম সিনেমা দেখা। আরো-অনেক-ভালো-হইতে-পারতো এইকরম অভিজ্ঞতা আমাদের 'সত্যিকারের' লাইফেও হয়, কি কও
অফটপিক: রকস্টারের চুল, বললেই কার্ট কোবেইনের চেহারা দেখতে পাইলাম।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
এক্কেরে হাচা কইছেন ভাই ... দূর থাইকা দেখা একরকম ... আর ভিতর থাইকা ............... থাউক আর না-ই কই
আরেকটা পয়েন্ট ... এইটা যদি এ আর রেহমানের একটা সলো অ্যালবাম হইতো ... তাইলে আমি "রকস্টার" কনসেপ্ট বাদ দিয়া শুধু সুফি মনে কইরা শুনতাম ... কিন্তু হিন্দি সিনেমা তো এহনো সাউন্ডট্র্যাক বিষয়টা আত্মস্থ করতে পারে নাই ... এহনো প্লেব্যাক সিংগিং-ই হয় ওইহানে ... সুতরাং
প্লে ব্যাক একটা ট্র্যাডিশন। ঐটাকে ঐভাবেই ট্রিট করা উচিৎ।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
রকের মধ্যে তো চল্লিশ রকম আছে ভাই। নিউএজ থেকে ব্রডওয়ে মিউজিকাল বহু ধাঁচের গানই রক-ব্র্যান্ডেড গায়করা করছে। জিম মরিসনের এইগানটা শুনেন। ব্রডওয়ে। এনিওয়েজ, এইটা রকের বেসিক ট্রেন্ড না। দ্বিমত নাই।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
টেনাশাস ডি - রক? আরেকটু খোলাসা করলে উপকৃত হইতাম।
ঠিক কি খোলাসা করতে বলতেসেন? "টেনেয়শিয়াস ডি" কি ধরণের রক ব্যান্ড? নাকি "টেনেয়শিয়াস ডি" আদৌ রক ব্যান্ড কিনা তা নিয়া আপনার সন্দেহ আসে? বেসিক্যালি ... এইটা একটা সিনেমার নাম ... এইহানে রক-এর আসল স্পিরিটটা পাওয়া যায় ... রক মিউসিশিয়ানদের লাইফ কিরকম তাও বোঝা যায় ... যদিও প্রথম দেখায় মনে হইতে পারে যে পুরা সিনেমাটা আসলে একটা চূড়ান্ত লেভেলের ফাতরামি
আরে আপনিও যব বলেন। আমিও তো বলি।
আমি এইখান থেকে পড়ি।
হে রাখাল, বেণু যবে বাজাও একাকী ... একই তো
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
হিন্দি ছবি কম দেখা হয়। একেবারে যে দেখি না তা না। মাঝে মধ্যে দেখা হয়। তবে সুদূর অতীতে জনগণের রেকমেন্ডেশনে "রবনে বানাদি জোড়ি" দেখার পর থেকে অন্তত হিন্দি ছবির ক্ষেত্রে রেকমেন্ডেশন জিনিসটা এড়িয়ে চলি।
রকস্টার দেখিনি, দেখার ইচ্ছা হয়নি, ভবিষ্যতেও হবে বলে মনে হয় না।
মাসখানেক আগে "সিংহাম" সিনেমার একটা দৃশ্যের অ্যানিমেশন দেখলাম একটা। পরেরদিনই সিনেমাটা দেখে ফেললাম। যাকে বলে একেবারে পয়সা উসুল।
আমার কাছে সিংহাম অনেক হলিউডি অ্যাকশন ছবির চাইতে বেশি ভাল লেগেছে। সিনেমার গল্পটা চমৎকার। গান্ধীবাদিদের গালে কষে চটকানা মারার মতো। অ্যাকশন দৃশ্যগুলো অন্য পৃথিবীর ফিজিক্স দিয়ে বানানো।
একটা মানুষকে থাপ্পড় মারলে যে সে মাটিতে টেনিস বলের মত ড্রপ খেতে পারে এই জিনিসটা আমি এই সিনেমাটা দেখার আগে কখনো চিন্তা করিনি।
আপাতত অপেক্ষায় আছি কোন একদিন সময় সুযোগ করে তামিল সায়েন্স ফিকশন ছবি "Endhiran" দেখে ফেলার। ইউটিউবে Endhiran-এর একটা অ্যাকশন দৃশ্য দেখে চোয়াল ঝুলে পড়েছিল। বুঝে উঠতে পারছি না পুরো ছবিটা সহ্য করার ক্ষমতা আছে কি না। এই জন্য দেখবো দেখবো করেও দেখা হচ্ছে না সিনেমাটা।
আগ্রহীরা Endhiran এর সেই চোয়াল ঝোলানো অ্যাকশন দৃশ্যটা দেখতে পারেন।
দাবাং ও ভালো আছে।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
দাবাং দেখেছি। সিংহামের মত অতো ভালো লাগে নাই। কিন্তু একটা দৃশ্য দেখে মুগ্ধ হয়ে গেছি।
সে দৃশ্যে দেখাচ্ছিল নেতা বক্তৃতা দিচ্ছেন। পুলিশ অফিসার সল্লু ভাই তার দলবল নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সল্লুর ভাইয়ের পাশে দাঁড়ানো কনস্টেবল যেভাবে প্যান্টের উপর দিয়ে দু পায়ের ফাঁকে আঁটকে যাওয়া জাঙিয়া টেনে টেনে ঢিলা করছিল, দৃশ্যটা এত বাস্তব, দেখে একেবারে মুগ্ধ হয়ে গেছি। ওই একটা দৃশ্যের জন্য পুরো সিনেমাটা পাশ মার্ক পেয়ে গেছে আমার কাছে।
এইত্তো, মুভি দেখতে হয় পবিত্র মন নিয়া।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
এই সিনামাটা "রোবোট" নামে হিন্দীতে ডাব হইসে ... এইটার অ্যাকশন দৃশ্যগুলা "মেট্রিক্স"-এর অ্যাকশন টিমের বানানো ... আমার এক বড় ভাই বলসিলো ... এই সিনেমাটা না দেখলে আপনার মনুষ্য জন্ম বৃথা হয়ে যাবে ... তাই আপনারও পুরাটা দেখা উচিৎ ... আমি গ্যারান্টি দিতে পারি ... এইটা কুনু অ্যাঙ্গেল দিয়াই রব নে বানা দি "ঘোরি" থুক্কু জোড়ির মতো না ... এনধিরান বা রোবোট দেখার পর আপনে নিশ্চিতভাবেই আর আগের মানুষ থাকবেন না (যেইটা বলতে চাইসিলাম সেই ইংরেজিতে ভালো শোনায় - you won't be the same person anymore)
শুরুর যে সিকোয়েন্সটা দেখলাম যে অজয় দাদা চলন্ত গাড়ি হাঁইটা নাইমা গেছে, এই জিনিসটা হলিউডের 'রেড' সিনামা থাইকা মারছে। দেইখা থাকতে পারেন হয়ত। ব্রুস উইলিস, মর্গান ফ্রিম্যান, হেলেন মিরেন আরো অনেক বড় বড় নাম আছে। সিআইএর বুড়া অপারেটারদের নিয়া কোপাকুপি একশন সিনেমা।
আর বাকি যে ট্রেন্ডগুলা দেখলাম, সেগুলা তো এখন গণহারে সব মুভিতে দেখাইতাছে। যদিও তামিল মুভিতে এগুলা বহুৎ আগে থাইকা চলতাছে।
রক ব্যান্ড এন্ড বয় ব্যন্ডের মধ্যে পার্থক্য কি ?
কারে জিগাইলেন? আমার ধারণা ব্যাপক পার্থক্য আছে। শিওর।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
একটা প্রধান দৃশ্যমান পার্থক্য বলি ... মেয়েরাও রকব্যান্ড করতে পারে ... কিন্তু বয়ব্যান্ডে কোন মেয়ে থাকতে পারে না ... যদি ছেলেমেয়ে দুই্ই থাকে তাইলে হবে শুধু ব্যান্ড ... আর যদি শুধু মেয়েদের ব্যান্ড হয় ... তাইলে হবে গার্লব্যান্ড
গোঁড়াতেই গলদ! ছবির নামকরেন ভুল।এই ছবির নাম "রকস্টার" না হইয়া "সুফিস্টার" হইলে মনে হয় আরও ভাল হইত। কারন ছবির গানগুলারে আর যাই হোক, রক গান বইলা কোনোভাবেই চালানো যাবে না। আর গানের সুরগুলাও হইসে অদ্ভুত! ইন্ডিয়ান ক্লাসিকাল আর সুফির এক আজব জগাখিচুড়ি, যার কোনও আগামাথা নাই।
এ আর রাহমান এমনিতে আমার খুব প্রিয় একজন সুরকার এবং গীতিকার। উনি আরও অনেক গুনে গুণান্বিত। উনার নিজের গাওয়া কিছু অসাধারণ গানও আছে। কিন্তু রক গান আমার মনে হয়না উনার "কাপের চা"। কিংবা ইংরেজিতে বললে বলতে হয় "রক ইস নট হিস কাপ অফ টি"। উনি সুফি, ইন্ডিয়ান ফোক এবং ইন্ডিয়ান ক্লাসিকাল এর সংমিশ্রণে হিন্দি গানের ইতিহাসে একটি নতুন ধারার সৃষ্টি করেছেন এবং সেই ধারা থেকে আর বের হয়ে আসতে পারছেন না। কথাটা শুনতে হয়তো খারাপ লাগবে, কিন্তু এ আর রাহমান এর গানগুলোকে অন্যান্য গানের থেকে সহজেই আলাদা করে চেনা যায় কারন তার গানের সুরগুলো একই ধারা অনুসরণ করে চলে এবং রকস্টারের ক্ষেত্রেও এর বাতিক্রম হয়নি।
আর ইমতিয়াজ আলির কথা আর কি বলবো! উনি তো পুতু পুতু প্রেম কাহিনীমার্কা ছবি থেকে নিজেকে বের করে আনতে পারছেন না। আর আমার মনে হয় সেই চেষ্টাও তার নাই।ছবির নাম দিলো রকস্টার আর দ্যাখাইল একটা ত্রিভুজ প্রেমের কাহিনী। উনারে আসলে সাত দিন একটা ঘরে দরজা জানালা বন্ধ করায়া রাইখা এসিডিসি আর নিরভানা এর কনসার্ট এর ভিডিও দেখানো দরকার। তাইলে যদি কিছু হয়। খালি চুল দাড়ি বড় রাইখা গানের মাঝখানে মাঝখানে ২/৪ টা কথা বললেই যে অইটা রক গান হইয়া যায় না, আর কনসার্ট এ ১/২ টা "সাজদা হাআআআক" লেখা ব্যানার থাকলেই যে রক গানের পরিবেশ তৈরি হইয়া যায় না এইটা ইমতু আর রানভীরকে কে বুঝাবে? ছবিটা দেইখা খুবই হতাশ হইলাম।
এ আর রাহমান এর গানগুলোকে অন্যান্য গানের থেকে সহজেই আলাদা করে চেনা যায় - এইটা খুবই স্মার্ট অপিনিয়ন হইছে।
নাম নিয়া আমার মাথাব্যথা নাই। বাণিজ্যিক সিনামার নামকরণ বাণিজ্যিক কারণে করছে। কিন্তু রকরে ধর্ম মাইনা সিনামা দেখতে যাওয়া আরেক প্রকারের মৌলবাদ।
ছবি দেইখা আমিও হতাশ হইছি। কারণ ভিন্ন।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
যব উই মেট ছবিটা দেখছিলাম স্টার গোল্ড এর কল্যাণে। টাইম পাস হিসেবে দেখতেসি, একটা সময় জমে দই! বিশেষ করে আংশুমানকে নিয়ে গীত যখন তার বাড়িতে ফিরে, আংশুমান একটা নীল টাওয়ালে পড়ে উদোম গায়ে প্রশ্ন তোলে, "কেন তাকে দুই মুশকো পাঞ্জাবী জোয়ান আখ খেতে নিয়ে যেতে চায়?"-এই সিনেই ছবিটা আমার কাছে পাশমার্ক পেয়ে গেসে।
নতুন মন্তব্য করুন