অনুবাদকের কথা
অলিভার গোল্ডস্মিথ-এর নাম আগে শুনলেও তাঁর লেখার সাথে আমার প্রথম পরিচয় হয় ‘দি সিটিজেন অভ্ দি ওয়ার্ল্ড’-এর মাধ্যমে। বইটি আমি প্রথম দেখি এবং আংশিক পড়ি ১৯৯৪ সালে, বাবার এক বন্ধুর বাড়িতে, কোলকাতায়। ভাষার দুরূহতা সত্ত্বেও বইটির বিষয়বস্তু ও প্রকাশভঙ্গির অভিনবত্ব আমাকে চমৎকৃত করে। লঘুরসের পাশাপাশি গভীর দার্শনিকতত্ত্বের সহাবস্থান যেভাবে তিনি ঘটিয়েছেন, বিশ্বসাহিত্যে তার নজির খুব বেশি নেই। ঠিক করে ফেলি, দেশে ফিরেই বইটি কিনে বাকি অংশ পড়ে ফেলতে হবে। তারপর নিউমার্কেট-বাংলাবাজার থেকে শুরু করে গুলশানের অভিজাত পুস্তকবিপণি অথবা কমলাপুর রেলস্টেশনের বুকস্টল। কিছুই বাদ রাখিনি। বৃথা।
ভেবেছিলাম, আর কোথাও না হোক, লন্ডনে বইটি পাওয়া যাবেই। লন্ডনপ্রবাসী ও লন্ডনপ্রত্যাগত একাধিক বন্ধুর মাধ্যমে জানতে পারি, বইটি কোথাও নেই। অবশ্য অনুসন্ধানপ্রকল্পটির পরিকল্পনা ও আন্তরিকতায় ঘাটতির সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেয়া যায় না।
মার্কিনপ্রবাসী অগ্রজ সহোদর মুহম্মদ জুবায়েরের চেষ্টায় অবশেষে বইটি আমার হাতে আসে। বইটির প্রিন্টার্স লাইনে যদিও এর টেকস্ট অবিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে, একটা সন্দেহ আমার থেকেই যাচ্ছে। কারণ বাবার বন্ধুর বাড়িতে যে সংস্করণটি আমি পড়ি, আকারে তা ছিল আমার সামনের বইটির প্রায় দ্বিগুণ। স্মরণশক্তি আমার সাথে প্রতারণাও করে থাকতে পারে। তবু কোনো প্রাজ্ঞ পাঠক এ সন্দেহ দূর করলে কৃতার্থ থাকব।
যা হোক, বইটি হাতে আসার পর আমার ঘুমন্ত অনুবাদকসত্তা একটু নড়েচড়ে বসে। আমার আগ্রহের বিষয়টি ভাইদেরকে জানাতেই রীতিমত হৈ-হৈ করে তারা উৎসাহ দেয়। ‘আমি?’ ‘আমাকে দিয়ে এসব হবে না’ জাতীয় কয়েকটা বাক্য বলে আমিও রাজি হয়ে যাই-- এমন একটি মহান সাহিত্যকীর্তির সাথে নিজের নাম জড়ানোর লোভ সংবরণ করা খুব সহজ কাজ নয়।
কিন্ত কাজে হাত দিয়ে বুঝতে পারি, লোভ সংবরণ করতে পারা অনুবাদ করার চেয়ে অনেক সহজ ছিল। বিষয়টি মোটেও ‘সারেন্ডার অ্যাট ঢাকা’-র (আমার অনূদিত মত নয়। আঠারো শতকের ইংরেজির সাথে হালের ইংরেজির পার্থক্য বিপুল। সংস্কৃতাশ্রিত বিদ্যাসাগরীয় বাংলা আর বর্তমান বাংলার মধ্যেকার পার্থক্যের সাথে এটি তুলনীয়। মূল রচনার রস ও সৌরভ অবিকৃত রেখে কতটা সাবলীলভাবে এই স্ব-আরোপিত দায়িত্ব পালন করতে পেরেছি, সেটা বিচারের দায় আমার নয়, বিজ্ঞ পাঠকের। আর এ বিষয়ে পাঠকের ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টির চেয়ে আমার জন্য বেশি জরুরি তাঁদের গঠনমূলক সমালোচনা, কঠোর হলেও।
আগামী পোস্ট থেকে মূল লেখায় যাব।
আনিসুর রহমান মাহমুদ
মন্তব্য
আনিস ভাই, সচলায়তনে স্বাগতম। লেখার অপেক্ষায় রইলাম।
হাঁটুপানির জলদস্যু
ধন্যবাদ, হাঁটুপানির জলদস্যু।
.......................................................................................
Simply joking around...
মূল লেখার অপেক্ষায় রইলাম। তবে পুরো লেখাটা যদি আপনার ইতিমধ্যেই অনুবাদ করা থাকে, তাহলে তা পিডিএফ আকারে পারলে মেইল করে দিবেন প্লীজ? খুব বড় লেখাগুলো (ধাপে ধাপে প্রকাশিত) সাধারণত অনুসরণ করা হয়ে ওঠে না।
________________________________
বিষন্নতা ছোঁয় আমায় মাঝে মাঝেই, কখনো কি ছোঁয় না তোমায়?
দারুণ আগ্রহ বোধ করছি। তাছাড়া মূল লেখাগুলোতে দাঁত বসানোয় খুব একটা সুবিধে করতে পারি না বলে আমি আজো অনুবাদ নির্ভরতা কাটিয়ে ওঠতে পারিনি। যাক্, দ্রুতই পোস্ট পাবো আশা করছি।
এজন্যে অগ্রীম অভিনন্দন জানিয়ে রাখলাম।
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
সামনে একটা মেগাসাইজ পোস্টের প্রতীক্ষায় রইলাম।
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
আগ্রহ জাগলো খুব।
দ্রুতই পোষ্ট করবেন, এই কামনায়...
অনুবাদটির অপেক্ষায় রইলাম।
— বিদ্যাকল্পদ্রুম
পড়ার অপেক্ষায় রইলাম। তবে একবারে পেলে ভালো হতো।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
নতুন মন্তব্য করুন