রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই গানটি গোপালচন্দ্র সেনের কণ্ঠে রেকর্ড করা হয় রবীন্দ্রনাথের জীবদ্দশায়। আমাদের চেনা সুরের চেয়ে একটু ভিন্ন বাউলাঙ্গের এই সুরে মূর্ত হয়ে উঠেছে চিরন্তন বাংলার চিরচেনা ছবি। পরবর্তীতে এটির সুর অনেক সহজ করে ফেলা হয়। আর বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে এটি গৃহীত হবার পর সকলের গাইবার সুবিধার জন্য সুরটা আরো সরল হয়ে যায়।
আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি।
চিরদিন তোমার আকাশ, তোমার বাতাস, আমার প্রাণে বাজায় বাঁশি॥
ও মা, ফাগুনে তোর আমের বনে ঘ্রাণে পাগল করে,
মরি হায়, হায় রে --
ও মা, অঘ্রাণে তোর ভরা ক্ষেতে আমি কী দেখেছি মধুর হাসি॥
কী শোভা, কী ছায়া গো, কী স্নেহ, কী মায়া গো--
কী আঁচল বিছায়েছ বটের মূলে, নদীর কূলে কূলে।
মা, তোর মুখের বাণী আমার কানে লাগে সুধার মতো,
মরি হায়, হায় রে--
মা, তোর বদনখানি মলিন হলে, ও মা, আমি নয়নজলে ভাসি॥
তোমার এই খেলাঘরে শিশুকাল কাটিল রে,
তোমারি ধুলামাটি অঙ্গে মাখি ধন্য জীবন মানি।
তুই দিন ফুরালে সন্ধ্যাকালে কী দীপ জ্বালিস ঘরে,
মরি হায়, হায় রে--
তখন খেলাধুলা সকল ফেলে, ও মা, তোমার কোলে ছুটে আসি॥
ধেনু-চরা তোমার মাঠে, পারে যাবার খেয়াঘাটে,
সারাদিন পাখি-ডাকা ছায়ায়-ঢাকা তোমার পল্লীবাটে,
তোমার ধানে-ভরা আঙিনাতে জীবনের দিন কাটে,
মরি হায়, হায় রে--
ও মা, আমার যে ভাই তারা সবাই, তোমার রাখাল তোমার চাষি॥
ও মা, তোর চরণেতে দিলেম এই মাথা পেতে--
দে গো তোর পায়ের ধূলা, সে যে আমার মাথার মানিক হবে।
ও মা, গরিবের ধন যা আছে তাই দিব চরণতলে,
মরি হায়, হায় রে--
আমি পরের ঘরে কিনব না আর, মা, তোর ভূষণ বলে গলার ফাঁসি॥
|
মন্তব্য
নতুন কিছু জানলাম..
( জয়িতা )
আমার সোনার বাংলা'র সুর গগণ হরকরার 'আমি কোথায় পাবো তারে' গানের সুর থেকে নেয়া...
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
খুঁজে যাই শেকড়ের সন্ধান...
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
ব্যাক্তিগত ব্লগ | আমার ছবিঘর
গগণ হরকরার কিছু গান শুনছি, মাথা খারাপ করার মত।
রবিন্দ্রনাথ আরো কিছু সুর নিয়েছিলেন গগণ হরকরা থেকে।
...........................
Every Picture Tells a Story
তারপরও এটা স্বরলিপির সুর না।
সেটা ভবিষ্যতে আপলোডামুনে।
তবে অসাধারণ তথ্য, এতো ভালো রেকর্ডিং পাইলেন কৈ?
_________________________
সর্বাঙ্গ কন্টকিত-বিধায় চলন বিচিত্র
_________________________
সর্বাঙ্গ কন্টকিত-বিধায় চলন বিচিত্র
মূল গানটা এতোবড় জানতাম না। ধন্যবাদ আনিস ভাইকে।
তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
আনিস ভাই,
কিছু জিনিস ঠিক স্পষ্ট হয় নি আমার কাছে।
গোপালচন্দ্রের গাওয়া এ গান স্বরলিপির ধারে কাছে দিয়েও যায় নি। উপরে আরেকজন এইটি উল্লেখও করেছেন।
কিন্তু আপনি কি বলতে চাইছেন এইটি গানটির মুল সুর? পরে সুরটি পরিবর্তিত হয়েছে? এবং সেটা হয়েছে বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে স্বীকৃতি দেবার পর???
আমার মনে হয় না। সোনার বাংলা-র বেশ পুরোনো অনেক ক'টি ভার্সন শুনেছি যাদের মাঝে আছে কণিকা, সুচিত্রা মিত্র, দ্বিজেন প্রমুখের গাওয়া ভার্সন। এর কোন কোনটি রবীন্দ্রনাথের জীবদ্দশায় হবার সম্ভাবনা প্রবল।
কাজেই আপনার বক্তব্যের সাথে ঠিক একমত হতে পারলাম না।
অবশ্য আমার জানার ভুলও হতে পারে।
তাই ভাবছিলাম, কোন তথ্যসুত্র উল্লেখ করলে আমাদের সকলের জন্যে সুবিধা হত।
'আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালবাসি'- গানটির মূল সুরকার রবীন্দ্রনাথ নিজেই। গগন হরকরার গানটি থেকে তিনি এর সুরের অনুপ্রেরণা পেয়েছিলেন, তেমনি তাঁর আরো অনেক গানই বিভিন্ন জায়গা থেকে অনুপ্রাণিত (অনেক বিদেশী গান থেকেও)।
মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার গানটির প্রথম দশ চরণ জাতীয় সংগীত হিসেবে গ্রহণ করে, এরমধ্যে প্রথম চার লাইন আবার শুধু যন্ত্র সংগীতের জন্য (সূত্র-বাংলাপিডিয়া)
যুদ্ধচলাকালীন সময়ে প্রখ্যাত সুরকার অজিত রায় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতে সুর সংযোজনা করেন (সূত্র- এখানে শুধু একটু করে বলা হয়েছে..."He has rendered Amar Sonar Bangla and Jago Anashan Bandee and composed many timeless songs on SBBK.")
বাংলাদেশ সরকার 'স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র' থেকে প্রচারিত এ সুরটিকেই গ্রহণ করে এবং এটিই এখন আমাদের মধ্যে প্রচলিত।
সুরস্রষ্টা আব্দুল আহাদ ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর মন্ত্রীপরিষদের সচিব তৌফিক ইমামের নির্দেশে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত 'আমার সোনার বাংলা' গানটির স্বরলিপি বিশ্বভারতী সংগীতবোর্ড কর্তৃক অনুমোদন করিয়ে আনতে যান৷ আবদুল আহাদ দুজন রবীন্দ্রসংগীত শিল্পীকে সাথে নিয়ে শান্তিনিকেতনে যান এবং তাঁর সংগীত শিক্ষাগুরু শান্তিদেব ঘোষের সহায়তায় গানটি বিশ্ব ভারতী সংগীতবোর্ড কর্তৃক অনুমোদন করিয়ে আনেন৷ (সূত্র)
আনিস ভাই যে গানটি দিয়েছেন সেটি নিঃসন্দেহে রবীন্দ্রনাথের মূল সুরে গাওয়া গান।
অনেক ধন্যবাদ তানভীর।
অনেক অজানা ঘটনা জানতে পারলাম এ বিষয়ে।
অজিত রায়ের ব্যাপারে কিছুটা দ্বিধা রয়েই গেল।
যুদ্ধচলাকালীন সময়ে প্রখ্যাত সুরকার অজিত রায় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতে সুর সংযোজনা করেন
"সুর সংযোজনা করেন" বলতে আসলে আপনি কি বুঝাতে চেয়েছেন? অজিত রায় 'সোনার বাংলা' তে সুর দিয়েছিলেন? নাকি 'যন্ত্রানুষঙ্গ' আয়োজন করেছিলেন?
বার বার একই বিষয়ে প্রশ্ন করার জন্যে দুঃখিত। কিন্তু আমার কাছে বিষয়টা আসলেই বেশ কৌতুহলোদ্দীপক মনে হচ্ছে।
আমি নিজেও একটু আধটু খোঁজ নিচ্ছি এই বিষয়ে।
আবারো ধন্যবাদ।
আমি যতদূর জানি, 'আমার সোনার বাংলা' জাতীয় সংগীত হিসেবে গৃহীত হবার পর অজিত রায় প্রথম দশ লাইন জাতীয় সংগীত হিসেবে গাওয়ার জন্য সুর দিয়েছিলেন। কোন লিখিত সূত্র পাইনি বলে সূত্রে যেভাবে আছে সেভাবেই উল্লেখ করেছি।
আনিস'দা অনেক অনেক ধন্যবাদ, তবে আমি আপনার থেকে আরো আরো অনেক গান পাওয়ার আশা নিয়ে বসে আছি।
--------------------------------------------------
দুঃখ তোমায় দিলেম ছুটি...
বুক পাঁজর আজ ফাঁকা।
দুঃখ বিদায় নিলেও সেথায়...
দুঃখের ছবি আঁকা।
দৃশা
রেয়ার কালেকশান বটে!
এই অপ্রচলিত সুরটার কথা শুনেছিলাম প্রথম সুনীলের লেখা একটা বইয়ে । আজকে শুনলাম ।
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
আনিস ভাই'র গানের গলা যেমন গানের সংগ্রহও তেমন !
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
অনেক কিছু জানা হলো। ধন্যবাদ।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
খুব ভালো পোস্ট বস।
সবার কথায় অনেক কনফ্যুশন এলো নতুন, অনেক জ্ঞানও নতুন।
হয়তো আপনার কাছ থেকেও ওই নিটি-গ্রিটি-তে আরো একটু ক্লিয়ার হ'তে পারবো আমরা।
অরিজিনাল-টা শুনে অনেক ভালো লাগলো।
অবশ্যই অনেক সকৃতজ্ঞ ধন্যবাদ আপনাকে।
০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০
"আমার চতুর্পাশে সবকিছু যায় আসে-
আমি শুধু তুষারিত গতিহীন ধারা!"
___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি
আহ্! এই পোস্টটা খুঁজে বের করব করব করেও করা হচ্ছিল না। দেরিতে হলেও এটার জন্যে অনেক ধন্যবাদ জানিয়ে গেলাম আজকে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
প্রিয়তে যোগ করা হয়েছিল না। আজকে আবার পড়লাম, শুনলাম, শেয়ার করলাম, দৃশাপাকে আরেকবার এই গানের ই-বুকের উদ্যোগের জন্যে দিলাম, আর আনিস মামাকে এই সংযোজনটার জন্যে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
সকলকে ধন্যবাদ...অনেক না জানা ব্যপার জানতে পারলাম...আনিস ভাইকে স্পেশাল ধন্যবাদ.
অনেক না জানা বিষয় জানতে পারলাম, যারা আলোচনায় অংশ নিয়েছেন, তাদের সবাইকে ধন্যবাদ এবং আনিস ভাই ও তানভীর ভাইকে স্পেশাল ধন্যবাদ।
আশা করছি বাংলাদেশের জতীয় বিষয় ও ঐতিয্য নিয়ে এ ধরণের আলোচনায় বারবার সবাই অংশগ্রহণ করবেন।
একলা একলা থাকতে মন চাইতেছে :[ :[
শিশিরে শিশিরে করি সমুদ্র সৃষ্টি...
শুন্যের ঘরে বসত আমার
শুন্যের মাঝেই গড়ি
যোগ বিয়োগের খেলায় মাতি
শুন্য, শুন্য সবই।
নতুন মন্তব্য করুন